ওই দূরের নদী তীরে সবুজ পাতায় ছাওয়া গাছের নিচে
যখন বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে প্রেম জাগানিয়া ওই বাঁশির সুর
চলে যায়,চলে যায় সে আমার আঙিনার মাধবীর পথ ধরে
প্রেমে আত্নহারা সে দৌড়ে যায়, মাটিতে লুটায় তার রঙিন আঁচল
পায়ের নূপুর, চুড়ির নিক্কণ বাতাসে ছড়িয়ে বাজে, বাজে এই মনে
আমার অন্তরের নিভৃত কোণে করুণ বিরহ রাগে
আমি, তখন পুড়ি, পুড়ে যাই, পুড়ে যাই অ-প্রেমের বিদগ্ধ আগুনে
তুমি তো তাদের বন্ধু সুবল সখা, সেই সুবাদে আমারও
তাই তো দোস্ত তার হয়ে তোমাকেই বলা আমার
আমি সেই আয়ান, যার বুকে জ্বলছে অ-প্রেমের আগুন
যখন আকাশে ওঠে চাঁদ বাতাসে ভাসে মাধবীর সুগন্ধ সৌরভ
জানালার ফাঁকে জোছনা এসে পড়ে তার কোমল বিষন্ন মুখে
চেয়ে চেয়ে দেখি আমি সেই প্রেমিক বিচ্ছেদিয়ার বিষন্নতা
আমার হৃদয় নদী তোলপাড় ভাঙে, ভাঙে, ভাঙে আর ভাঙে
সুবল সখা, আমি তো পুড়ছি অ-প্রেমে, কেন পুড়ে অঙ্গার হৃদয়
তা জানি আমি, শুধু জানি না সে কেন পুড়ছে জন্মান্তরের প্রেমে
কখনও বাধা দেই না তাকে, তবুও কেন সে জ্বলছে প্রেমে
জ্বলছে বিচ্ছেদের তুখোড় আগুনে জানি না, জানি না আমি
সুবল সখা, কখনও প্রেম স্পর্শ করে নি আমাকে
তবুও প্রার্থনা- যার প্রেম স্পর্শ করে নি আমাকে তার জন্য
চাঁদ উঠুক, ফুল ফুটুক, সব সময় তাকে ঘিরে থাক বসন্ত
অন্তর থেকে বলি, চন্দ্রগ্রহণ না হয়, মেঘ যেন খেয়ে না
ফেলে জোছনা, চাঁদ যেন জেগে থাকে বাঁশবাগানের মাথায়
না হলে দোস্ত, উন্মাতাল প্রেমে চলতে গিয়ে পথের পাশে
লেবুবাগানের কাঁটাতারের বেড়ায় আটকে যাবে তার চিকন পাড়
শাড়ির আঁচল, পথের নুড়িতে হোঁচট খেয়ে ব্যথা পাবে সে
সুবল, প্রিয় বন্ধু আমার, তুমি আলো হাতে তার সঙ্গি হয়ে
নিয়ে যেও তারই- সেই প্রিয় মানুষের কাছে, সে থাকুক তার প্রিয়
বাহুডোরে, তার মলিন মুখ ছুঁয়ে যাক প্রেমময় গভীর চুম্বনে
আমার কথা ভেবো না, আমি পুড়ছি অহরহ,আমি তো পুড়ে যাবো
পুড়ে যাবো ওই ঘর ভাঙানো, মন তাড়ানো বাঁশির সুরে
সুবল সখা, ওই দেখ পূর্ণিমার জোয়ারে ভাসছে পৃথিবী
ওই শোন বাজে বাঁশি ওর মন ভাঙানো, ঘর পালানো সুরে
ওই শোন নূপুর বাঁধা পা পড়ছে আমার বুকের হাড়-পাজড়ে
সে যায় সে চলে যায় আমায় ছেড়ে সে যায় সে চলে যায়---