বৃষ্টি আসছে দারুণ তোড়ে
বৃষ্টির প্রতিটি ফোঁটা যেন এক-একটি স্মৃতিময় বুলেট
প্রতিটা ফোঁটা টিনের চাল দিয়ে ভেদ করছে আমার হৃদয়,
বুলেটের মতো বিদীর্ণ করছে আমার হৃদয়ের মাংসপিণ্ডকে।
ছিন্নবিচ্ছিন্ন করছে আমার মাথা-মগজ, বুক বা বুকের ভিতরে জমে থাকা প্রিয়তমার টুকিটাকিকে।
কতোটা যন্ত্রণা বুকের জমা থাকলে গান শোনার সাহস হয় না, আপনারা তা জানেন না
হ্যাঁ; এখনো বৃষ্টি আসে, রাত গভীর হয়
আমার অশান্ত মন রবীন্দ্রনাথের মূর্ছনায় বিলীন হতে চাই
কিন্তু আমার আর রবীন্দ্র-সংগীত শোনার আর সাহস জুটে না; আমি ভয় পায় রবীন্দ্র—সংগীত শুনতে
রবীন্দ্রের প্রতিটি সফেদ অক্ষর তীরের মতো বর্ষিত হয় আমার বুকে, ভেদ করে যায় ভিতরের দেয়াল-দরজা ও দালান। তছনছ করে দেয় আমাকে।
প্রবল স্বপ্ন-প্রবণ হলে, ইচ্ছে করে আবার গোলাপ হাতে দাঁড়িয়ে থাকি ; ঐ চেনা পথে
তোমার অপেক্ষায়, তোমার প্রতিক্ষায় অনন্তকাল দাঁড়িয়ে থাকতে ইচ্ছে করে
কিন্তু পরক্ষনেই দারুণ বেগে ঝড় উঠে, পরাগের মতো ফুৎকারে উড়ে যায় আমার স্বপ্ন। হারিয়ে যায় আমি ধুলোবালির কোলাহলে। আবার হারিয়ে যায় আমি নদীর স্রোতের সাথে, অযাচিত গন্তব্যে।
প্রচন্ড ভালোবাসা দিয়ে, অন্তত একটি মুহূর্ত তোমাকে আপন করে পাবো— এমন স্বপ্নে বিভোর হয়ে
একবার ভেবেছিলাম, এই বর্ষা শেষে কোন ঝড় বা তুফান বিহনে
তোমার ভালোবাসার উষ্ণতা শুঁকে আমি মলিন হবো
বা জোছনা রাতে চাঁদের আলো যেমনি ভাবে আমাকে আলতো করে ছুয়ে দেয়, ঠিক তেমন করেই তোমার ছোয়া পাবো!
কিন্তু না; এই ভাবাবেগ কখনো সত্যি হয়নি।
তোমার ভালোবাসা আমাকে কখনো ছুঁতে পারে নি।
পরক্ষণেই আবার ব্যথা বা বেদনায় কাতর হয়ে যায় আমার বুক।
প্রতিটি রুদ্ধশ্বাসে অবশ হয়ে আসে আমার হৃদপিণ্ড, চোখ, কান, গলা, নাক, মেরুদণ্ড ও আমার দু হাতের ১০টি আঙুল।
আমি আবার চিত হয়ে তাকিয়ে থাকি আকাশ পানে।
ভাঙা চাঁদ দেখে বাঁচার জন্য নতুন করে কারণ খুঁজি।
আপনারা মনে করেন, আমি সুখেই আছি।
কিন্তু বিশ্বাস করুন সেই বর্ষা থেকে আজ অবধি প্রতিটি বর্ষণের প্রতিটি ফোঁটা, বিরহী বন্দুকের গুলি হয়ে ছেদ করে গিয়েছে আমার হৃদয়।
বিরহিত রক্তে রক্তাক্ত হয়েছে আমার শরীর।
আমি সুখে থাকার ভঙ্গিমায় হাসি সত্যিই, কিন্তু আসলে মনের অসুখ আমায় খুয়ে খুয়ে খাচ্ছে।
১৫ই আগষ্ট, ২০২০ইং