নদীতীরে দাঁড়ালেই মনে হয়
কেবল পাগলপারা সুখ আছে।
ইন্দ্রাবতী! কালাহান্দি থেকে নেচে নেচে
তুমি, হে প্রণম্য নদী,
সহস্র ধারার চিত্রকূট হলে বস্তারে বনান্তে।
নদী, তুমি শুধু ভাঙনের  গান গাও,
মাঘের আশ্চর্য পোয়াতিরোদ্দুরে
জানো কি, মেঘেরা  ভেসে থাকে
জগদলপুর, সারাটি বস্তার জুড়ে।
নদী, তুমি তো দেখেছো মেঘেদের কান্না-
তুমি ভাবো বৃষ্টিপাত।
বস্তারে মেঘেরা বৃষ্টি নয়, বেদনা ঝরায়।
এসো নদী, তোমার হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাবো আজ।
দুহাতে অঞ্জলি ভরে তুলে নিই
ইন্দ্রাবতী।
পায়ে পায়ে নেমে আসি আলপথে
সরিষার সুখ ফুটে আছে হলুদনরম
ফুলরতি।
অদূরে দাওয়া, নিকোনো উঠোন,
শান্ত ক্ষত
মুগ্ধ শিশু, বিয়োনো জননী
স্তনটি নত।
ইন্দ্রাবতী সাথে, উঠোনে দাঁড়াই-
গনগনে শহুরে পোষাকে
কেঁপে ওঠে শিমলতা বুড়ো বুড়ি
সীমান্ত ছত্তিসগড়।
উঠে আসে যে সদ্যজননী, ভাঙতে ভাঙতে
সে এখন করোটিপ্রতিমা
স্তব্ধ নির্লিপ্ত   আঁচল খসে পড়ে,
দুটি বিপুল কান্নার মতো মাতৃস্তন থেকে
ঝরে পড়ে দুহাতে অঞ্জলিভরা  
ইন্দ্রাবতীর মায়ায় ।
উন্মাদিনী হালবি ভাষায় শব্দহীন
বলে যায়, আমি মাওবাদী নই।
কে বোঝাবে তাকে,
সালোয়া-জুডুম নই,
আমি বয়ে এনেছি নদীকে।
অঞ্জলি উন্মুক্ত  করি,
নিকোনো উঠোনে বয়ে যায় ইন্দ্রাবতী।

(বস্তারে উচ্চবর্ণের জোতদারদের নিজস্ব সেনাবাহিনী সালোয়া-জুডুমের আদিবাসীদের উপর  অত্যাচারের একটি বিশেষ ঘটনা মনে রেখে)