জয়গান
অচিন্ত্য সরকার
প্রেমিক :
তুমি যে এমন করে ফিরে আসবে আবার,
কৈশোর প্রেমের বিধাহীন অবাধ্যতার
দ্বিতীয় অভিঘাতে তা কোনদিন ভাবিনি!
প্রেমিকা:
কেন ভাবনি প্রিয়তম,কেন ভাবনি?
কেন মনে রাখনি,নব যৌবনের কুড়ি তুলে,
তোমাকেই যে দিয়েছিলাম বিশুদ্ধ প্রথম অঞ্জলি।য়তোমার হাতের সামান্যতম পরশ আমার শরীরে, মনে কি উত্তাল তরঙ্গ তুলতো,তুমি কি জানতে না?তোমার শরীরের পুরুষালী সুগন্ধে আমার লকলকে পুঁইডগা শরীরে কেমোন্যস্টিক চলন হতো,
তুমি কি বোঝানি..... সে চলন যে আজও হয়!!
প্রেমিক:
আ:চুপ করো, চুপ করো!
আমার সর্ব শরীর কম্পিত হচ্ছে!
আমার তরল রক্ত যেন
কঠিন ফলায় পরিণত হচ্ছে!!
প্রেমিকা:
তাই নাকি!তা কিসের ফলা শুনি,
নাঙলের? তা কোন জমিন চাই?
মানব জমিন,নাকি দেহ জমিন?
প্রেমিক :
কোন জমিন ই চাই না আমার!
এতোই যদি বুঝেছিলে সব,কেন হঠাৎ সব ছেড়ে,
আমার অজান্তে গিয়েছিলে চলে,দূরে বহু দূরে।তাড়নার বিক্ষুব্ধতায় ভেসে দূরে উত্তাল সমুদ্র বক্ষে দিকভ্রষ্ট পানসি নৌকার মতো...?
প্রেমিকা :
ঠিক বলেছো প্রিয়তম, তাই তো আজও সে দিকভ্রান্ত ভেসে চলেছে হাওয়ায় দোলায়,
এ ঘাট থেকে ও ঘাটে,তার সুজন মাঝির খোঁজে..... কিন্তু কে আর তাকে বোঝে!
প্রেমিক :
বোঝার কথা বলছো তুমি !যে তুমি সব বুঝেও না বোঝার ভান করে,ছেড়েছো স্বদেশ স্বজন,ভিনদেশী অচেনা আগন্তুকের হৃদয় চুমি। তোমার সেই চুম্বনের তৃতীয় সূত্রের বৈপরীত্য প্রতিঘাতে চুরমার হয়ে গেছে সব। অথচ তুমি না বোঝার ভান করে, দিব্য সাগরের বেলাভূমিতে গড়াগড়ি খেয়েছ মনের সুখে ।
প্রেমিকা:
ওগো, তুমি শান্ত হও,শান্ত হও। তোমার কথা যেমন মিথ্যে নয়,তেমন তা পুরোপুরি সত্যিও নয়। তবে সে সব সত্যি মিথ্যের টানা পেড়নে কার কি লাভ বলো.... আমার চলে যাওয়াটা যদি সত্যি হয়, তবে সেই আমার ফিরে আসাটা কি সত্যি নয়? এসো প্রিয়তম, বুকে এসো। ভুলে যাও সব অভিমান, কালের স্রোতরেখায় লেখা থাক শুধু তোমার আমার প্রেমের জয়গান।
প্রেমিক:
ঠিক বলেছো তুমি, সব সত্য মিথ্যার একটাই তো সার,তুমি ফিরে এসেছো আবার,
আগের সেই তুমি হয়ে.... আর কিবা চাই!
এস সব ভুলে,আবার দু'জনে
ছন্দে ছন্দে দুলে দুলে
প্রেমের জয়গান গাই....
প্রেমের জয়গান গাই।
দু'জন একসঙ্গে :
"আমরা দুজনে ভাসিয়া এসেছি যুগল প্রেমের স্রোতে অনাদি কালের হৃদয়-উৎস হ’তে। আমরা দুজনে করিয়াছি খেলা কোটি প্রেমিকের মাঝে বিরহ বিধুর নয়ন সলিলে মিলন-মধুর লাজে। পুরাতন প্রেম নিত্য-নূতন সাজে।"