বুকের সাথী
অচিন্ত্য সরকার
এখন আমায় আর একা থাকতে হয়না।
সে এসেছে উড়ে, আমার বুক জুড়ে।
আমার সব একাকিত্বকে ভুলিয়ে,
হৃদপিন্ডের দু'পাশে দুই ফুসফুসের
সবকটা বায়ুথলির দখল নিয়ে,
বসে আছে সুখে দিনরাত্রি সারাক্ষণ,
আমার ভাবনা জুড়ে,জুড়ে আমার মন।
ও আমার বেশী বয়সের সাথী,
আগে কখনো সে বুঝতে দেয়নি
আমার প্রতি ওর প্রেম গভীর কতখানি।
চল্লিশ পেরিয়ে যখন আমি তেতাল্লিশ,
কম বয়সের সাথীর কাছে হয়ে বাসী,
একাকিত্বকে বেশ মানিয়ে নিয়েছি সুখে,
হঠাৎ তার তির বিঁধলো এসে আমার বুকে।
বছরের পর বছর যখন দারিদ্র্য আর
হতাশা নিয়ে যন্ত্রণাদগ্ধ হয়েছি রোজ,
ছুটে বেড়িয়েছি দিকবিদিক দিশেহারা,
পড়াশুনো বন্ধ নিদারুণ পরিস্থিতিতে,
চরম হতাশায় ভুগেছি সুদীর্ঘ এক যুগ,
সংসারের ক্ষুধার্ত ভিড়ে সম্পূর্ণ একা,
তখন একবারও কিন্তু দেয়নি সে দেখা।
দূরে থেকেছে দিতে লড়াইয়ের শক্তি,
আমার প্রতি তার এমনই প্রেমভক্তি।
চাকরি পেয়েছি,ঘরে এসেছে সুখ,
রাজ নন্দিনী এসেছে সব বুঝে শুনে
খোরাক যোগাতে তার হবে যে গুনে।
সুখের মুখ দেখা আমার বারণ,
হয়ত এখন আসার এটাই কারণ।
আস্থা,বিশ্বাস,প্রেমের মোহ খানখান
ঘরের মধ্যে ঘর শুকনো ইট পাথর,
মনের মধ্যে জমাট জন্ম আঁধার,
গায়ের গন্ধ ঢাকতে মিথ্যে আতর।
হাড়ের খাঁচায় রুদ্ধ,কাঁদে শূণ্য বুক,
কোলাহলে,অবহেলে দূরে গেলো মা,
শূন্যতা ভরাতে বুঝি এলো সে অ্যজমা।
এখন আমাকে ছাড়তে চায় না সে আর
ইচ্ছা,আমৃত্যু আমার সাথে,করবে ঘর,
তারই কেয়ার নিতে পন্ড কাজ আমার।
অর্ধেক শুষে নেয় আমার প্রাণবায়ু,
রোগভোগে অর্ধাঙ্গিনী কেটে নেয় আয়ু।
তবুও তো কেও এলো বুকে ভালবেসে,
আমৃত্যু বুকের সাথী পেলাম অবশেষে।