রেশমি চুলে ছাওয়া মোর স্বপ্ননীড় আর
বহে যাওয়া সেই অস্থির নদীর তট;
দিগন্ত ধরে করতলে বায়বীয় সিঁড়ি বেয়ে
নীল নিশীথের নিরোধ আলো,
পত্রভেদী জ্যোৎস্নার ফোটা নিশিরন্ধ্রে
দীঘল ঊষার শিশির তঞ্চনে পুব জানালার কপাটে;
রাঙতা রাঙানো রবি
রোমাঞ্চ শুষে নেয় ভোরের সাধনার৷
বসন্ত বয়ে আনে অতীতের মরশুমী গন্ধ
শীত ঠেলে শিরীষ শাখা ধরে নেমে আসে
মনমরা ঝাউবীথি বন, গাঢ় সবুজের ধানী ক্ষেত ৷
স্মৃতির ধূলিকণা ঘনীভবনে কঠিন কৃষ্ণ কৃস্টাল;
কবেকার চিন্তার সভা; ভাঙেনিকো তার রেশ
নীরব সোহাগে লালিত,
পালিত মৃত ভাবনার ভূষণে
নিরঙ্কুশ প্রলয়ের প্রেত পিস্টন গতিপথে
ঝাপটায় বুনো পায়রার ডানা৷
যত সব মনোরমা ধূসর ম্লান মানসী,
নির্ঝর পর্বত হিমবাহ ধারা
শীতরাত পেরিয়ে শীর্ণ মোহ জীর্ণ হৃদে
উলঙ্গ অঙ্গ ফাগুনের বুকে;
ঋতুরাজ হিমহাসি ঝেড়ে নেশাতুর প্রেমে
বুক পেতে দেয়, স্বাগতে আনকো বসনে দেহময়৷
জাগরিত কিশোরকাল রূপসী রুপান্তরী
কোন অতীতের ভালোবাসা মুখ,
নীল-সিন্ধু সেচেও অধরা;
নেইকো আজ সে শিউলি-পলাশের রঙে
কিংবা শিমুলের রক্তদেহে৷
বিষন্ন ঝরা পাতার শোকগাঁথা
লিখে কোন পাথরের খাঁজে দীর্ণ লিপিকায়,
নাই বা হলো হীরা, পান্না, শৈবাল,
কাঞ্চন মতির চেয়ে কিসে কম
নুড়ি পাথরে লেখা ইতিহাস?
এ বুক ছুয়ে যাক ফেলে আসা বাল্যের সেই বালুতট!
হৃদয় প্রবাহে অনিবার স্রোতস্বিনী
ফিরে চায় মননে সৃষ্টি সেই
স্বপ্ন নদীর তট৷
২৬/০২/২০১৭
দেবগ্রাম
(কবিতাটি অকপট সাহিত্য পত্রিকার কবিপক্ষ সংখ্যায় প্রকাশিত)