পর্ব - ০১
মনের মানুষ কারে কয়, কেমনে হয় কিবা কি তার আসল পরিচয় ॥
কষ্টগুলি নেবো ভাগ করে,
দেখেছি কতযে এমন যেন ওরে,
কেউ কারো নয় যূগযূগ থেকেও একঘরে,
নাহয় মিলন হবে কোন একদিন কখনও পরে,
চাইলেই দেবো যা আছে মোর ঢেলে তাকে ভরে,
অনেক দূরে দুজনার ঘরে দুজনেই নাহয় রলেম পড়ে,
আমি শুধু ঐ একটুখানি চাই,
যেটুকু প্রয়োজন আর যা আমার নাই,
নাহলে যেটুকু আমার আছে ওরে দুহাতে বুকে ধরে তাই,
আমার চাওয়া প্রয়োজন কিবা চাহিদা অতি সাধারন, বেশী কিছু নাই,
আমি ধন্য হবো, সংগী হয়ে পাশে রবো একটু সোহাগ দরদ সহানূভূতী যদি পাই,
বন্ধু চাহিলে শুধু ঐটুকু চাই আর তা পেলেই হবো খুশী, যেটুকু আমার ওরে না হলেই যেন নয় ॥
বসে গল্প হবে,
দুজনে গোপনে বিজনে নিরবে,
দেখলে সবে জানি তার কত কানাঘূষা হবে,
কোন মন্দ নহে, তাই যেন ধমনীতে বহে যেথা পূণ্য রবে,
চাইবনা কখনও আমি কিছুই,
শুনব তোমার কষ্টগুলো আমারটা রেখে ঢেকে বাকী থুই,
জানা পরিচয় হলে সমাপন যদি চাহে দুজনার মন, আমার সুখের সনে কষ্টগুলি তার করবো উদার উজার বিনিময় ॥
ধূয়েমুছে সব দীনতা,
যত কষ্ট আর তার সব শূণ্যতা,
মেনে লবো আমার,
দুঃক্ষ কষ্ট কিবা পরাজয় হার,
যদি একটু সুখ পায় মন ভরে আমার সংগীটার,
অমর এ পাঠ বাণী আর মন্ত্রগুলি,
মনের যত বন্ধ জানালা ও দুয়ারগুলি দিয়ে তার সব খুলি,
হাসি মোখে একটু পাওয়ার পরম সুখে জেনে বুঝে দেখে সবকিছু মেনে যেবা যারে বুকে টেনে লয় ॥
শুধু এইটুকু ভেবে,
তাড়িয়ে না দিয়ে কাছে টেনে নেবে,
সে যদি হয় মোর,
এক আঁধার রাতের সোনালী ভোর,
আলো ও ভালোর পিপাসায় কাতর যেই খোলা দ্বোর,
জীবনটা করিতে মধুর এক শান্তিপুর বাধিতে চাহে সে আমাতে জোড়,
ছোট্ট এ জীবন হবে সুখময় যদিও তা অতি অল্প সময়, জেনেশুনে সব প্রকাশে গোপনে দুদিনের বান্ধব হয় ॥
পর্ব - ০২
অনেক কষ্ট আছে আর সুখ যার নাই,
রাখবো ঢেকে লুকিয়ে মম এ বুকেতে জড়াই,
বলবনা কারো কাছে আমি তাই দেবো সম্মানের ঠাই,
আমার কাছে যেধন আছে ওরে সাত রাজার কাছেও তাহা নাই,
হলেও নগন্য যদিও আমার কিছু নাই সেইতো হবে আমার পরম বড়াই,
একটা বিশাল সরস মন তূল্য কি হয় মানিক রতন তার কাছে যেন সম ছাই,
আপদ ও নিদানের অন্ত নাই, বাঁচার উপায় তাই শুধু সঠিক হিসাব ও যাচাই বাছাই,
এ জীবন আর,
দুদিনের এ দুনিয়াটার,
আমি অনেক দেখেছি ও কত ছবি একেছি তার,
তবু ভালবাসি তবু যাই আর আসি যদিও জানি এ জগতে কেউ নহে কার,
সুখের লাগি হাহাকার দুঃখের ভারে কান্না,
কত রাত জাগি কত পথ হাটা শত পেরেশানি তাড়না,
সুখের কলরব নাঁচন আর কষ্টের অস্ফুট হাহাকার শুনিতে পাই দেখিতে যাই আসলে কেউ তার ভাগ নাহি কারে দেয় কিবা লয় ॥
এ জীবনে একজন,
খাটি বন্ধুরযে বড় প্রয়োজন,
কহিবে খুলে দিয়ে মন করিবে শ্রবণ,
প্রকাশিবে যত সুখদুঃখ সব গহীনে গোপন,
নিদানে আপদে দরদী আপন হবে দুজনার দুইজন,
সব সহিবে ভার বহিবে ও পাশেপাশে রহিবে যেজন আজীবন,
এমন বন্ধু পেলে, কে কি বলে তাতে কি আসে যায় আসলে, অবসাদ উপবাসে তার বলো আর কিসের ভয় ॥
এ জীবনের আছে কত লাভক্ষতি,
কত দায়দেনার এই বানিজ্য পসার ও ক্ষেতি-বেসাতি,
হলে সামান্য ভূল দিতে হয় তার মাসুল রহিলে ভোগের নেশায় মাতি,
এই চাষ বসবাস তারে করে বিশ্বাস হয়ে ভক্ত গোলাম দাস আজীবন দিবসরাতি,
হবে লাভের বেঁচাকেনা,
হলে জানাচেনা হবে মধুময় সে পরম লেনাদেনা,
যদি সে সত্যবাদী হয়ে ঐ মশালটা হাতে লয়ে একই কাফেলার ঝান্ডা বয়ে একই কথা সবে কয় ॥
সে মানুষ পাবো কোথায়,
যে কম কথা বলে সোজা পথে চলে কম আহার করে ও কম ঘুমায়,
নেই কোন বায়না,
তেমন বেশী কিছুই চায়না,
নাই যার কোন ভাবনা পেরেশানি তাড়না,
পায় বা না পায়, আছে কি নাই কারোটা কেড়ে নিয়ে খায়না,
পেতে বেশী মজা বেশী সুখ ধড়ফড় করেনা বুক, সে সন্ধানে দিগন্তে ছুটে যায়না,
একসাথে বসে খায় বারবার মোখপানে চায় বসে লেগে ঘষে গায় না এলে ঘরে ঘুমাতে নাহি যায় দুজনে দুজনার আয়না,
নহে নানা দোষে দুষ্ট,
অল্প যেটুকু পায় তাতেই সে হয় রহে তুষ্ট,
একটু আলোয় ও একটু ভালোয় পুলকিত হয় অনেক বেশী পরিপুষ্ট,
আমি যারে চাই যদি তারে খুঁজে পাই আমার মনের মানুষটা ওরে দিও তুমি গড়ে যেন সে ভিতরে বাহিরে ঠিক এমনই হয় ॥
পর্ব - ০৩
এ সংসারে যে জনার,
পছন্দের মানুষ নেই গল্প করার,
কথা বলার কিবা মন দিয়ে তা শোনার,
সে নমনীয় হয় পোষ মানে বিনয়ে মেনে লয় কিছুটা হার,
মন তার এমন যেন হয় কিছুটা কোমল সদয় মহৎ ও কিছুটা উদার,
ইচ্ছে আছে মনটাও তার তেমনি তৈয়ার সংগীরে দিতে ছাড়, হেন বাসনা কোন কিছুতে বাধ সাধেনা সেইতো এক মহাবিজয় ॥
বড় একা একা লাগে,
গোপনে নিরবে ঘুমহীন রাত জাগে,
বেশীক্ষণ কারইবা ভালো লাগে বিজন কুসুমবাগে,
মনের ঘর না যদি ভরে শোভা ও সৌরভের পরশ মধুর ঐ সোহাগে,
জোয়ার নেই ভাটায় পড়ে যেন পরিনত বালুচরে, ইচ্ছে করে চুলছিড়ে টেনে রাগে,
ঐ সে এক মরা নদী,
কি দোষ তার বলো ওরে সে যদি,
নিরবধি বুকভরা রোশ আর দারুণ খড়ার কষ্টের নিরব ক্রন্দন রাজার করুণার বৃষ্টির জল মাগে, তা নহে দোষময় ॥
সব আছে তবু কি যেন নেই,
বড় পেতে ইচ্ছে করে ঐ জিনিসটুকু সেই,
মন বলে নাহয় আমি তার, কোটি টাকায় মূল্য দেই,
সোনার হরিণ ঐ সুখ পাখীটা আজীবন রইতো যদি হাতের নাগালেই,
কি জানি হায় দিতেও মন চায়, কি সে ধন কোন্ সে জন ভেবে তা আমি আর আমাতে নেই,
গোপনে মেঘের সনে যেন উড়েউড়ে ভেসে বেড়াতে চায়, উদ্ভট ঐ ভাবনায় হারিয়ে সে ফেলে যেন খেই,
কাটেনা যখন আর, অবসর ক্ষণগুলি ঐ বিষাদময় ও বিশালাকার, কভূ জীবনে আসে যদি এমন কঠিন সময় ॥
ঘর আছে তবে সুখ নেই,
সুর্দশন সুবেশ সুবচন মনটা নহে তার সেই,
ধন আছে ঢের, একটু সুখের লাগি তার প্রয়োজন দেখিনা কিছুতেই,
কাছেই আছে সংগী, ক্ষণে রংগী ক্ষণে বৈরী জংগী নহে তবে পরম দরদী আপন যেই,
অল্প চাওয়া ও অল্প পাওয়া,
তাতেই মনের সুখে গহীনে হারিয়ে যাওয়া,
আলো ও ভালোর ঝিলে দুঃখ ও সুখ মিলে ডুবিয়ে নাওয়া,
যূগের জোয়ারে ভেসে নয়, যদি সে আমার মতই হয়, সব মেনে লয় ভার বয় আর আমার মতই সয় ॥
আছে একখানা তৃতীয় নয়ন,
লোভী নয় মহৎ উদার ও দয়ালু মন,
আপন আরশিতে আপনারে সে করে দরশন,
হলেও অল্প পাওয়া দেরীতে নাওয়া খাওয়া দ্বিধাহীন সমর্পন,
আলো ও ভালোর ঝিলের জলে ডুবিয়ে নাওয়ায় পাওয়া ঐ অমূল্য মানিক রতন,
শুধু বেশী ভাল বেশী দান আর,
পরের মংগল কল্যাণ সেবা ও উপকার,
একটাই কাজ, নাই কোন ভয়লাজ এ জগতে যার,
মধুর মিলন হবে আর ছেড়ে নাহি যাবে চীরদিন রবে দেখা পাবো কবে আমার ঐ মনের মানুষটার,
আকাশের রাজারে করিতে অনায়াসে জয়, অসীম অপার আলো ও ভালোর সমাহার সেযে মহাপূণ্যময় ॥