এটি তৃতীয় নয়নে দেখা একটি জীবন দরশনমূলক কবিতা । রচয়িতার একান্ত ব্যক্তিগত দরশন, বিচিত্র রঙে সাজানো এ মহাবিশ্ব, জীবজগত এবং জীবনের শাশ্বত ও সার্বজনীন রুপ এর একটা কলম-চিত্র অংকনের প্রয়াস । এখানে তিনটি দিনের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণমূলক রুপায়ণ ঘটানোরও চেষ্টা করা হয়েছে । কোটি জন কোটি মন ও কোটি নয়ন বা দরশন, তাই তা হয়তোবা সকলের দৃষ্টিতে একই রকম না’ও হতে পারে । তবু এ প্রত্যাশা, বিচক্ষণ পাঠকগণ ছাইয়ের টাল উড়িয়ে দেখার মতই হয়তো তার শেষ অবধি করবেন পাঠ ও করবেন অন্বেষণ ।

পর্ব-০১

শনিবারে শনির দশা, আর মংগলবারে নাকি হয় মংগল ।
লোকের মোখে চুপকরে শুনি,
যাই বলো মন্দ-ভালো আসক্তি নেই, তা নাহি মানি নাহি গুণি,
চোখ বুজে নহে আর,
হয়ে মিথ্যা ও মন্দের চামচা ও চাটুকার,
যেটুকু সত্য আমি জানি, দুহাতে বুকে ধরে টানি, আলো ও ভালোর বীজ বুনি ।
তাইতোরে হয়নি ভালো,
পথটা পিছল ও হয়ে আছে আঁধারে কালো,
লোকে বলে হয়নি যাত্রা শুভ, তাই নাকি পাইনি আমি কাজ,
আমি বলি কি হয়েছে তাতে, দেখিবে কাল নাহয় পরশু পাবেই পাবে না পেলেও আজ ।
আবু হকে সবারে ডেকে বলে,
যারা ওরে কুড়ে আর নয় আশাবাদীর দলে,
ধর্য্য ধরো আশায় থাকো চেষ্টা করো, যায়নিতোরে সময় চলে ।
তারাই পায়না কিবা হারায় ও ঠকে,
যারা দূর্ভাবনা করে আর কারণে অকারণে শুধু বকবকে,
মুগ্ধ হয় পিছু লয় দেখে চকচকে, যত মূর্খ বোকা তারাইতো খাবে ধোকা যারা আলসে আর অথর্ব্য অঁচল ।
আমি কেনরে ঘরে বসা,
কেন নেই কাজ, হাতে নাই মোর কোন টাকা-পয়সা,
বুঝেছি কপালটা আমার ফাটা নিদানের কাছে মেনেছে হার, অঁচল তামার পয়সার মতই ঘষা ।
অপার সে সুযোগ ও সম্ভাবনা,
জগত জুড়ে কত নেয়ামত রয়েছে বোণা,
যার হয়নি দেখা তার ক্ষুদ্র এক কোণা তার দুঃক্ষতো যায়না,
ছুটে যাও খুঁজে নাও, তুমিতো ওরে নয়রে খোড়া কিবা কানা,
সবাইকি সবকিছু না চাইতেই পায় ও সবারকি ওরে সবকিছু থাকেরে শেখা বা জানা ।
কে বলেছে, কেন থাকবে তুমি ঘরেতে বসে,
ভাবছ কি এমন, তুমি কুড়াবে তারকা যখন গগন হতে তা পড়বে খসে,
অভিযাত্রীর সন্ধানী ভাব মেখে গায়ে, একথা জেনে লক্ষ্ণী তোমার ঐ দুখানা পায়ে, বেড়াও ভুবনটা চষে,
হতে সফল চাই নিজেতে বিশ্বাস, তার সংগ লয়ে যে করে অন্তরে বাস, চেষ্টা শ্রম সততা ও প্রবল মনোবল ।
ঐ লোকালয়,
কবে মোদের হবে জয়,
বিজন পোড়া বন,
করিছে অস্ফট হাহাকার ক্রন্দন,
আর মরে যাওয়া তার ঐ সব তরুগুলি,
করছে আর্তনাদ, করিছে ফরিয়াদ দুহাত আকাশে উঁচিয়ে তুলি ।
যাদের দায়,
তারা কই কেমনে ঘুমায়,
মিলে সবে,
আবার সাজাবে কবে,
পাখীর নাঁচন কাকলি বাজে,
ভরে শত ফুলেফলে যেমন রঙীন বনানী সাজে,
ধূ ধূ খাঁ খাঁ করা,
নিরব আহাজারি ভরা,
কোটি প্রাণের নিরাপদ শান্তির ঠাই আবার সবুজে ভরিতে চাই ঐ বিজন বিরান জংগল ।

পর্ব-০২

এমনতো নহে এ জীবনখানা,
রঙীন মেঘের ভেলায় চড়া আকাশের এক দোলনা,
পদতলে নরম তুলতুলে সবুজ ঘাস আর, ফুল বিছানো হবে তব বিছানা ।
রিজিক ও ভাগ্যটারে,
সাহসে ধরে বন্দি করে মনের কারাগারে,
আগে চাই নিজেরে চেনাজানা,
তাহলে হবে স্রষ্টার সনে পরিচয় ও গোপনে সে লেনাদেনা ।
এক আল্লাহতে অটল বিশ্বাস,
হয়ে তার ভক্ত গোলাম ও এক প্রিয় দাস,
নিত্য বারো মাস, করো আলো ও ভালোটার তালাস,
না পেলে তারে মন, হবেনা কখনও সাধন, করে এক ঘরেতেই বসবাস ।
করেনা যারা ভুতলে তার বানিজ্য বসতি ও ক্ষেতি চাষ,
ফেল ছাড়া করেনা তারা, কেমনে করিবে বলো তাহলে তবে তুমি পাশ,
তুমিকি ভেবেছ হয়েছে যখন অতি পুরাতন দাসখতের ঐ দলিলখানা হয়ে গেছে বিনাশ ।
যারা সত্য বলে,
ঝড়-বাদলেও সদা সুপথে চলে,
রোশনী হয়ে গহীন আঁধারে জলেতে জ্বলে,
সদা অকুতোভয় করিতে জয় দিগন্তহীন এ আকাশের তলে,
থাকবা নাথাক কেউ তাদের দলে, আপন তেজে ও বুকের বলে যারা বলীয়ান শুধু তারাইতো ওরে হয় সফল ।
মিথ্যে ঐ রটনা ও বচন,
আমার ঐ বাণী মহাসত্য ও চিরন্তন,
পেয়েছি আকাশ হতে দুহাতে লয়েছি টানি রাখিও স্মরণ,
পেতে তোমার চাওয়ার সব, সাধনা ছাড়া ওরে কভু হয়নাতো সাধন,
ভক্তি বিনয় বিশ্বাস ও কাতরে তার চরণে পড়ে, প্রয়োজন কায়ঃমনে ভজন ও পূজন ।
ওরে বিভোর মন,
সাহস ও বিশ্বাসে করো পণ,
জীবন মানেতো অনেক কাজ, শ্রম ও বিজয়ের রণ,
যাই হোক যার, তা দেখা কি দরকার, কার প্রাপ্তি বেশী কিবা কার কম,
ক্লান্তি ও হতাশায় থামা যাবেনা, শেষে আর পাবেনা, কিছুতেই নহে পিছপা হওয়া একদম,
কোন দায়-ঋন ভাবনা নাই, দিবে নিরাপদ সুখ মান ধন ও ঠাই, হবে ধন্য জীবন সফল ও শান্তি পরিমল ।
ছোট্ট এ জীবন,
নহে ওরে শুধু ভোগ বিনোদন,
সবে কয় নাকি মোটেও ভালো নয় হওয়া অতি বেশী ধন ।
তা হলে হায়, মানুষ নাকি অতিশয় বদলে যায়,
লোভ মোহ আরও ধন বিভোর হয়ে যায় আরও সে পাওয়ার নেশায়,
আরও ভোগ সে এক কালরোগ, মায়া যাদুর ঘেরে পড়ে নাকি হায়, শুনেছি শেষে সব হারায় ।
জীবন মানেতো মরণ,
আর মরণ মানে সবাই জানে, ধনজন প্রাণ সবকিছু হরণ,
তারপরেও যদি বলে আরও সে পায়, তবে বলো তখন হবে কি উপায়, তব দাদনের ঐ মহাজন,
করি মানা বেশী খেওনা হবে অম্বল, থাকিতে জীবন ভাবো মরণ, সংগে নিও ভাই আখেরাতের কিছু সম্বল ।

পর্ব - ০৩

ওরে নিও মনে করে,
সম্বল চাহি সংগে, কি লাভ তা থাকিলে ঘরে
হবে দরকার পদেপদে ক্ষণেক্ষণে দমেদমে তব ঐ সফরে,
সংগে তোমার, নাহলে যেতেও পারো ঘাটে ঘাটে বিপাকে ও নিদানে পড়ে,
কোন ঢাল তলোয়ার,
সিপাহী ও প্রহরী হয়ে ঘোড় সওয়ার,
পক্ষ দরদী হয়ে, হাতে লয়ে বারুদে ভরা ভয়ংকর হাতিয়ার,
স্ত্রী ও কন্যাপুত্রগণ, বিত্তধন স্বজন পড়শী বন্ধু ভাই, সংগে যাবেনা কেউ সংগী হবেনা তোমার,
দুরন্ত অশান্ত ঐ বাহুবল,
শক্তি সাহস আছে নাম-যশ ও যত কুটকৌশল,
লম্বাহাত পলকে বাজিমাত, রাতকে দিন ও দিনকে রাত, তবু হয় জয় আর জয়, হবে দম্ভ ও বাহাদুরি সব বিফল ।
চাই আঁধারে বাতি,
রোদ বৃষ্টিতে একখানা ছাতি,
শীতে অতি জরুরী সম্বল একটা কম্বল,
ক্ষুধায় গুড় মুড়ি চিড়া ও জল নাহলে দেহটাই অঁচল,
গুটিগুটি পায় এই যেন কেঁপে পড়ে যায়, রোগে ও বয়সে দূর্বল,
বিড়বিড় করে কি বলতে বলতে আবোল তাবোল,
একা চলতে হাতে লাঠি একখান চাই যদি সামনে পড়ে কোন সাপের ছোবল,
যদিরে ঐ পথটা হয় কন্টকময়, আঁধারে ঢাকা আর একাই চলিতে হয়, ভগ্ন বিজন অচেনা ও দারুণ পিছল ।
চিনবে নিজেকে পাবে খুঁজে জীবনের স্বাদ,
যাদের সুখের চেয়ে ঢের বেশী যেন দুঃক্ষ কষ্ট যাতনা ও বিষাদ,
আসলে মানুষ ভালো করতে চাহে হিত,
একদল ঠক ও প্রতারক, সেজে ভন্ড পরামর্শক পন্ডিত,
কেজানে কি হবে শেষটা, না হয়ে দূর্বল ও সুজনের এ দেশটা, হচ্ছে তার বিপরীত,
নাই সততা ভরা মন, ফুটেনি তাই তৃতীয় নয়ন, করছে লালন স্বার্থবাদী এক ভুল দরশন ও ভ্রান্ত মতবাদ,
একজন মালী হলে আমি তার,
করেছি পালন বলবো আমি কিছুটা দায়ভার,
প্রশ্ন হলে বিধাতার, এ ছাড়া কোন ভালো কাজ ছিল আর,
তুমি দিয়েছিলে মোরে, আমি করিনি বা পারিনি ওরে তাই মেনেছি হার,
আমি মানবোনা হে প্রভু তোমার, তব ঐ অভিযোগ ও অপবাদ মম অনীহা বা ব্যর্থতার,
আমি চেয়ে আছি রব, করিব শোকর ও ধন্য হব, তব করুণার বুঝিব তবে জনম আমার হয়েছে সামাণ্য সফল ।
কারো নাকানি চুবানি আর হাবুডুবু ও করুণ দশা,
আবার কারো নাকি লোকে বলে, যেন শুকনায় নৌকা চলে, আর সে নাকি রঙীন মেঘের এক দোলনায় বসা,
ঝাপটে ধরে বড় বড় ঢেউ,
এমন যারা শুনেছি তারা পিছু হটে যায়নাতো কেউ,
ভয় করেনা যাবে মরে,
অথই জলে ডুবেভেসে ঢেউয়ের সনে পাল্লা ধরে খেলা করে,
যদিও জানে কেউ বাঁচে কেউতো মরে, পড়ে ঐ সমুদ্র ঝড়ে,
সে কিরে সবাই পারে,
তাইতো দেখি কেউ জেতে কেউবা হারে,
না হলে এমন দেখতে পায়না বিবেকও ভোতা বলতে হবেনা তারে,
নাইবা করুক মোখে স্বীকার আপন দোষের ভার, নিতেই হবে তুলে ওরে নিজের ঘারে,
তারাই ওরে বিজয়ী দল, সব রণেতে হয় সফল, সামলে নিয়ে ঝড়-ঝাপটা আপদ ও নিদানের সব ধকল ।

পর্ব - ০৪

ঐ ধারণা মিথ্যে ও ভুল,
নড়েনা পড়েনা টলেনা যারা একচুল,
তারাই সঠিক পায়রে দিক, খুঁজে খুঁজে পৌছায় কূল ।
যারা ওরে ঘরে ঘরে,
ভুল আর অন্ধকারের কারাগারে রয়েছে পড়ে,
গণে গণে শোধতে হবে শোধবে তারা, তাদের করা সবগুলি ঐ ভুলের মাসুল,
আর উল্টো যারা, বিশ্বাস ও জানা ষোলআনা পেয়েছে কারা, কানায়কানা হয়েছে যা বদ্ধমূল ।
দিয়েছিলে কথা ও তার নিয়েছিলে ভার,
করবে খামার, মানুষ গড়ার আমার ঐ সোনাফলা বীজতলাটার,
কেমনে গেছ ভুলে,
যদি আমার সব দান ও দাদন লইরে তুলে,
ভেদ না জেনে কি তোমার সৃষ্টির মূলে, কিবা পেলে কি হারালে, হিসাবটা কষো সেযে তব বিফলতার যোগফল ।  
কি দোষ বলো ভাগ্যটার,
দেখেছিতো অনেক মূর্খ পন্ডিতের বাহার,
কিছুটা নিয়তির ফের, যদি বলো তা নাহয় ওরে আমার,
বাকী সব দোষ পূরো একসের তোমাদের যে যার ঐ স্বেচ্ছাচার কর্ম্মটার,
কেমনে পসিবে আলো ও ঘটিবে ভালো যে ঘরের বন্ধ সব জানালাদুয়ার,
কি লাভ হবে ওরে ঘরে বসে করে, চিৎকার চেঁচামেচি হতাশায় হাহাকার ।
নাঁচতে না জানলে উঠানইতো হয় বাঁকা,
কাজে না হলেও শুধু কথায় বড় হয়েই তাদের জিতে থাকা,
মিথ্যে সান্তনাটারে আত্মতৃপ্তি মানা আর তাই দিয়ে নিজ ব্যর্থতাটারে জিইয়ে ঢেকে রাখা ।
কি লাভ হয়রে তাতে,
ভাতে মরে গিয়ে, বড় হয়ে থাকা উঁচূ জাতে,
কিছু নেই নিজের পাতে, তবু নিজেরে নকল বড় করে ও অনাহুত বিফলে ভরে দোষী করা ভাগ্যের চাঁকা,
নিজের সনে প্রতারণা, নিজেরে দেওয়া ধোকা, তারাই করে যারা গর্ধভ অপদার্থ ও হদ্দ বোকার দল ।
মনন ও দরশন যাদের ভ্রান্ত,
পায়না খুঁজে কভু পাবেওনা ছুতে লক্ষ্ণহীন যে প্রান্ত,
মেঘ দেখে আর বজ্রের গর্জন শোনে যারা মুষড়ে পড়ে ও হয়ে যায় ক্ষান্ত ।
পায়না সঠিক দিক,
শুধু ভুল আর হারাবার হিড়িক,
কেবা রয়েছে ডুবে,
নানা ভুল আর হর্ষ বিলাস ও ভোগবিনোদন খুবে,
মেনে লয়ে হবো তার দাস,
বলেওছিলাম, বুঝেছি আমি ও সব করেছি বিশ্বাস,
তবু আজও কেনরে হয়নি করা খোদার জমিনে আলো ও ভালোর চাষ,
কেন অচেনা ভিনদেশে মুসাফির হয়ে এসে, না দিয়ে রাজার খাজনা কর দুদিনের যাযাবর বসবাস ।
কি হয়েছে ও বলো কি করেছ তার,
অযতনে পড়ে থাকা মানুষ গড়ার আমার ঐ বিশ্বজোড়া বীজতলাটার,
বুদ্ধি ও বল সকলই হয়েছে যেন বিকল, অসার ও অঁচল, মাথাভারী ঋন জীবন মূল্যহীন বিফল ও রসাতল ।

পর্ব - ০৫

করিবেন তা নিঁখূত যাচাই ও বাছাই,
টুটে যাবে, হবে নাজেহাল ও বেহাল সবাই,
জানি তার শত প্রশ্নের কোটিজনেরই কোন জবাব নাই,
কি লাভ হয়েছে খোদার, কোন গোলামেরে তার এই দুনিয়াতে পাঠাই,
দুনিয়ার যত বিদ্যান, বিত্তশালী ও ক্ষমতাবানদের ধন সুখ আর ক্ষমতার সব বড়াই,
অনুভবে চেতনায় ফুটেছে যার তৃতীয় নয়ন, তার মনন কথা-কাজ গবেষণ ও দরশন রেখেছেন জড়াই ।
সবার বুকভরা সুখ ও স্বপ্ন আশার,
সকল চাওয়া পাওয়ার, হয়না উনা যার এমন এক মজুদাগার,
রেখেছেন তার বিশ্বভুবন ছড়াই, বিলাতে যার যা নাই কিবা প্রয়োজন ও হবে দরকার ।
রেখে মেলে দুয়ার,
দিয়ে ঢেলে মন চাহিবে যার,
অভাগাজন দোষ দেবে কার বলো তার ভাগ না পেলে, ঐ করুণার ঝর্নার ঢল আজও বহমান অবিরল ।
মহান দাতা সৃজন ও রিজিক,
জীবন মরণ ও লালন-পালনের মালিক,
কার কি আছে দান ও পুণ্য কামাই,
বালাম দেখে ওজন করে, হিসাব লবেন তাই,
কুল মাখলুকের নিরাপদ শান্তির ঠাই,
নাই কারচুপি পক্ষপাত, নাহলে কারো কোন ছাড় নাই ।
হক্ক এর হাকিম মহা বিচারক,
নহে এমন কারো অনেক জিত কারোবা হবে ঠক,
আমিও তাই চাই, হয়ে তার চিরসত্য বাণীর নগন্য এক বাহক ও প্রচারক ।
প্রভু এ মহাবিশ্বটার,
এক বিধাতার জগত জোড়া এক পরিবার,
দেখিবে সবাই তার আপনার কর্ম্মের ফলাফল, কারো গুনায় পুণ্যটা আর কারোবা পুণ্যে গুনাহগুলি করিবে তল ।
যেথা আলো নেই হতে চলেছে বরবাদ,
কবে হবে হেথা আলো ও ভালোর উদ্ভাবনী নব চাষাবাদ,
বের হবে কবে ভেংগে যত সব মিথ্যা, মন্দ ও ভুলের সোনালী খাঁচার ফাঁদ,
জিম্মি হয়ে যারা বরণ করেছে কারা, একেবারে দিশাহারা, তবু গলা ফাঁটিয়ে বলছে তারা জিন্দাবাদ ।
আর যারা মুক্ত ও স্বাধীন,
তাদেরও দেখছি কেবলই বাড়ছে ঋন,
যারা সচেতন, প্রসন্ন বদন যদিও তাদের মনটা মলিন ।
নিরবতা, সহন ও সমর্থন মিথ্যে নয় সেওতোরে অপরাধীরই চিন,
ভাবছে হয়ত তারা থাক, ধনের ভান্ডারটা নাহয় পূরো হয়ে যাক, আর কয়দিন,
এ হার মানা কারণটা জানা সেতো অভিনয়, করবে সত্যটা জয়, তুলবে তোলপাড় ঝড় করে প্রতিবাদ,
আমারেও সংগে লবে, অনেক বড় হবে, যুগের চোখে বিফল ও কোনঠাসা ঐ আসল ভালো মানুষের দল ।
অ ভাই তোরা কে কে যাবি,
আমার সংগে গেলে হয়তো তারে খুঁজেও পাবি,
নাম দিতে ওরে তবে আয়,
পেতে সোনালী আলোর ভোরে ঐ সে কাফেলায়,
ঐ ডাকে শোন, হরষে তারা হয়েছে মাতোয়ারা দিগন্ত ছুয়ে বিজয়ের গান গায় ।
যাত্রা শুরুর এইতো সময়, ঐ দেখ বেলা ডুবে যায়,
নদীর ঘাটে শেষে, দেখিস যদি ওরে এসে, মাঝি তার তরী লয়ে বাড়ী চলে গেছে হায়,  
মুরশিদ যদি মোখ ফিরায়,
সাধ্য কার ওরে পার করিতে তোরে, কে আসিবে কারইবা পড়েছে দায়,
সে রাত কভু ভোর না হয় আর, ঐ আঁধার আলোটারে গিলে খায়, তবে কি হবে উপায়, জলদি করে চল ।

পর্ব - ০৬

ওরে পেয়েছি আমি সে খবর,
মহারাজার প্রাসাদ কুটুম-বাড়ী অপরুপ মনোরম ও মনোহর,
চোখ ফিরানো যায়না, শ্বেত পাথরের ঝিলিক যেন তীক্ষ্ণ আলোক পড়া আয়না, এত সুন্দর ।
পাখীদের কিচির মিচির ও মাছেদের কিলবিল,
জোছনায় অরুপ মায়ায় করিছে ঝিকমিক চকচক ও ঝিলমিল,
গাছগাছালির ফাঁকে ফাঁকে সরু হয়ে এঁকে বেঁকে বয়ে যাওয়া বিশাল এক প্রশান্ত ঝিল,
শুকনায় ও জলে শত ফুল ও ফলে, ফটিক জল সেজেছে যেন ধার করে নিয়ে আকাশের ঐ একরাশ নীল ।
কোমল ছোয়ায় বহে মৃদু সমীরণ,
পনপন ঝড়ঝড় শনশন জুড়িয়ে যায় অগনিত পোড়া মন,
দেখবিরে চল, বসেছে হাজার রঙের মেলা আর বহিছে যেন হেথা কার রুপের ঢল, মন ভরানো ছলছল ঝলমল ।
ঠিকঠাক সব আয়োজন,
ষোড়শী রুপসী পঞ্চরসি চঞ্চল হুরগণ,
বাঁধাহীন মদির নেশাতে বিলীন উঞ্চ শিহরণ,
পুলকিত দেহ-মন, হরষে ভরে সে ভোগ বিনোদন,  
এই আছে এই নাই, যেন আসা যাওয়ার সে ব্যস্ত বিচরণ,
নিপুণ হাতে গড়া, রুপ ঝড়ে পড়া, মন পাগল করা স্বচ্ছ বসন,
মহারাজার কথায় তারই হয়ে আমি করছি সবারে তাই নিমন্ত্রণ ।
হেথা যেতে চাহে যার মন,
সেজে লও, হও সাবধান ও সচেতন,
প্রয়োজন, তাই হোক তেমন কিছুটা পুণ্য সাধন ।
কে কে যাবি আমার সনে চল,
আগে ডুবিয়ে হেথা নাইতে হবে তারপরে বসন বদল,
তার ঐ অপার রোশনীর ঝিল,
হতেও পারে সাধন ঐ করুণায় এক তিল,  
সপ্ত সাধনার, পুণ্যময় আত্মার সকল চাওয়ার আছে মিল, যার সোনালী জল করছে সদা টলমল ।
জগতের যত হতভাগা,
এখনও যারা পায়নি ঠিকানা খুঁজে হয়নি ঠাই পায়নি জাগা,
চির শান্তি পরিমল,
যেথা বিধাতার ঐ চরণতল,
কিবা তার আরশের ছায়ায় খুশবো ছড়ায় পরম সুশীতল,
বিজ্ঞ বিচক্ষণ, থাকবা নাথাক বেশী বিত্তধন, যোগ্য হয়েছে যে মানবগণ ঐ সকল,
তবে কি শুধু মংগলবার, ছাড়া বাকী দিনগুলি তোমার, থাকবে ঘরে শুয়ে-বসে ওরে মূর্খ বোকার দল,
দিনগুলি সবই সমান, জয়-পরাজয় সুখ-দুঃখ কষ্ট-নিদান সবই খোদার দান, তা হয় পরীক্ষা নয়তো কর্ম্মফল,
তারা কবে মানুষ হবে, যারা মানুষ হয়েও নয় মানুষ কিবা কেউ কেউ তাদেরে কয় পাগল,
যত মন্দ-ভালো আসল-নকল পাস-ফেল সফল-বিফল সরল-গড়ল পাপী-তাপী ও হতভাগা নির্বোধের দল ।
নাকি ওরে বৃহস্পতিবার,
শ্রেষ্ঠ সে ঐ সাতটি দিনের যে ধারণার,
এমন কিছুই দেখেনি বা পায়নিতো সে সারা জীবনেও তার,
একদা এ দিনেই জন্ম হয়েছিল এ ভুবনে যার,
দেখেছে বরং সে আজীবন শুধু নহে উন্নয়ন, পিছুটান আর দুঃসহ অনটন সমাহার,
লক্ষ ভালোর লক্ষ্ণী গ্রহ, মিথ্যে এই ধারণা বহ, মানষিকতার আজ হলো মরণ নাহলে পুরাতন ঐ মন্ত্রটা বদল ।

পর্ব - ০৭

হয়নি পাওয়া পরের ধন,
কিবা ছাইয়ের টালের মানিক রতন,
ঘানি টানা জীবনখানা চলেছি টেনে নিরবে আজীবন ।
সারাটা জীবনই সে প্রাণপণ,
পড়ে গিয়েও উঠেছে আবার, এমনি করেই করেছে রণ,
ছিল বলে বিধাতার করুণার ছাড়,
সাঁতরে সাঁতরে হয়েছে সাত সাগর ও তেরো নদী পার,
নহে ভোগবিলাস বিনোদন, কতনা কঠিন টানাপোড়ন চেয়েছে তারে হারাতে বারবার ।
তাই বলে কি ওরে হয়েছে আমার হার,
কে সে জন রুদ্ধ দুয়ার, বলে এমন কথা আমি জবাব দেবো তার,
মহারাজার বীজতলাতে ঢালছি অবিরত জল,
করিনি বলে অন্যায় অবিচার, জুলুম ও জবরদখল, আলো ভালোর ফুটেছে ফুল ধরবে ফল ।
পরের মালে বোঝাই করে তার ঠেলাগাড়ী,
সারাবেলা ঠেলেঠেলে,
নিয়ে আসা কোছড়ে ঢেলে,
চিড়া, গুড় ও পানি খেয়ে ক্ষুধা পেলে,
সঠিক ঠিকানায়, পিঠে বয়ে মালিকের দায়, বেলাবেলি দিয়াছে পারি ।
ঐ সে সফর,
যদিও কেউ ছিলনা আপন সবাই পর,
নেই ধারণা ছিল কত পেরেশানি ও তাড়না, এসেছে কতযে দূরন্ত ঝড় ।
কত খুশী কত সুখ ঐটুকু পাই,
দয়াময় বিধাতায় দিয়েছিল তারে যখন যেটুকু পেয়ে তাই,
সাদাকালো, মন্দ কি ভালো, ছিলনা দুইহাতের ঐ কামাই,
ছিল ঢের কষ্টের ঘাম ঝড়ানো অল্প উপার্জন,
তবু ওরে কভু ক্লান্ত কিবা কাতর হয়নি তার পরিশ্রমী ঐ সাহসী মন,
দূর্গম ঐ পথের সম্বল ও বল,
তবু ডিঙিয়ে আপদ ও নিদানের শত অদেখা ঢল, সহন ও বহনের বিশ্বাস অটল অবিচল ।
কত পাওনা হয়নি পাওয়া,
দুহাত তুলে ও থালা পেতে চাওয়া,
মহারাজার দরবারে যার বারবার আসা যাওয়া,
শীত গ্রীস্ম বর্ষায়,
জোছনা রাতে ও অমানিশায়,
জোয়ারে ভাটায় ও চৌচির হওয়া ফাঁটায়,
প্রাতে ও সন্ধায়, দিগন্ত পানে শুধু হাটা আর হাটা ঐসে আশায় ঐ দেখা যায় সোনালী উদয়াচল ।