পর্ব – ০১

জীবন কারে কয় জীবন,
কেউ বলে খাও-দাও, ঘুমাও করো বিনোদন,
বিত্তশালী, বিদ্যান, পন্ডিত ও ক্ষমতাবান সে জবাব দিতে পারো কয়জন ।
যত বিজ্ঞ বিচক্ষণ,
কই সে সৌভাগ্যবান গণ,
হয়েছে কার বোধোদয় কিবা জাগরণ,
ঘন কুয়াশায়ও দূরে ভাল দেখতে পায় ঠিক যেন এমন,
সচেতন, সাধক, সুফী ও গবেষক জন, শুধু ফুটেছে যাদের একখানা তৃতীয় নয়ন ।
দুদিনের এ দুনিয়ায়,
রয়েছে অনেক কাজ ও অনেক দায়,
লাভ-ক্ষতির এক ক্ষেতি-চাষ ও বানিজ্য বসতি অজানায়,
মূর্খের বচন শুনে, অনেক হাসি পায়,
কেউ বলে আর কিছু নাই, মরে গেলে নাকি ভাই পিছনের সবকিছু শেষ হয়ে যায় ।
তা যে যাই বলুক, যার চোখে হোক যেমন,
দেনা-পানার হিসাবখানা ও মহাজনের বিশাল সে অদেখা দাদন,
দাতা ও গ্রহীতার যত লেন-দেন, যায়নি কভু তা যাবেনা মুছে ঐ বালামের কোন লিখন ।
বেঁচে থাকার সুখ ও মধুর,
নানা সমস্যা, আপদ, নিদান ও যাতনায় ভরপুর,
কঠিন ঐ দিনগুলি, দেখতে হয় মরমের ঐ চক্ষু খুলি যতদিন যার না হয়রে মরণ ।
জীবনের কত রুপ, কত রঙ ও ধরণ,
যে যেভাবে সবটুকু তার করেছে ধারণ কিবা দরশন,  
সুখ কারে কয়, তা কোথায় পাওয়া যায়, যার কাছে তা ধরা পড়েছে যেমন,
বিচক্ষণ প্রিয় পাঠকগণ,
চলুন গিয়ে দেখে আসি চতুর বিদ্যানেরা কে কোথায় এখন রয়েছে কেমন ।
প্রেমের একটা পড়েছিল হিড়িক,
ডিজিটাল যুগের হাল, গিলেছে যা আশপাশ চারদিক,
যুবক ও যুবতী,
কার কখন হয় কোন সে গোমতি,
দুখানা চোখ ও পাগল মনের বেসামাল বোধ ও গতি,
প্রেমের নেশায় খেই হারায়,
হেন দিশেহারা জানেনা আসলে তারা কে কি চায়,
যায় যাক সকলের মান কুলের জাতি, হেন মাতামাতি যেন কারো নাই আর মাথা ঠিক ।
সে এক চোখ ও মনের রোগ, আলগা বাতিক,
নহে তা সুখের বা মজার যা কিছু ওরে চোখ রাঙানো করে চিকচিক,
তা নহে সোনালী সুখের টলমল ঝিলের জল, হাসিছে নিরব উচ্ছল শত কল্পনা অলীক ।
কিছু নষ্ট মানুষের,
মিথ্যা মন্দ ও ভুলের বুঝি পূরেছে সের,
সারাক্ষণ কেন বউ-ছেলেকে যেন ঠকানোর ষড়যন্ত্রের ঘের,
কবে শুরু হবে খেলা, পড়বে সবার চোখে ঐ প্রায়শ্চিত্তটার ছবি তাদের কর্মফলের,    
হেন এক পরিবারের মা ও বোনের গোপন সরদারির গল্প, শোনাবো আজিকে সবারে এখন ।

পর্ব – ০২

ঘরে হাহাকার,
শুরু হয়েছে দেন-দরবার,  
সবে বলে এত তাড়াতাড়ি বিয়ের কি দরকার,
আসলে মা ও বোনেরা মিলেই যেন চালায় এ অঁচল মন্থর সংসার,
কোথায় কি ব্যবস্থা হবে, কে কি করবে খাবে, কেমনে চলবে বলে বলে মাথাটা খেয়েছে তার,
ভাবনার শেষ নাই, পথ খুঁজে নাহি পাই, কোনটা রাখি আর কোনটাযে কেমনে দিই বিসর্জন ।
অশিক্ষিত এক ডাইনী মার,
মা ও স্বার্থবাজ মেয়েরা যার হয়েছে সরদার,
ডুবিছে এক ঘর-তরীখান যেন সব তাই এলোমেলো ছারখার,
হায় এক দরদী মায়, সারাক্ষণ কেন শুধু চায়, দিয়ে যাবে রাণী বানায় সব মেয়েদেরকে তার ।
জ্ঞান নাই করেনি পঠন,
ছিল পাহাড় সমান অগণিত কতযে বিত্ত-ধন এমন,
কই সে সোনার মুকুটখান,
আলো ঝলমল বাদশাহী মহল হয়ে গেছে খানখান,
কত শত সহস্র রাজার, হয়েছে বিরান পরম সুখের সংসার, মহারাজ্য ও সোনার সিংহাসন ।
চাহিলেই ওরে মন,
হয়নাতোরে সকলের সব সাধন,
এইতো দুদিনের দুনিয়ার ঝলমলে এ ছোট্ট জীবন,
কেমনে হলো সব ধূলিসাৎ ও কেন ঠেকানো গেলোনারে ঐ সে পতন ।
আজ কেন তার,
কোন কিছু নাই বাকী আর,
কই তারা খুঁজে পাওয়া যায়না কেন, তাদের কোন ঠিকানা কিবা ঐ বংশধরগণ ।
মায়ের কেন হেন পক্ষপাত,
মেয়েদেরই পোয়াবারো ও যেন একেবারে বাজিমাত,
কেউ বলে পড়ছে তল আর,
একজন অতি প্রাণপণ টানিছে ঘানিটা তার,
বৃদ্ধ বাবার দেহে বল নাই, গোপনে বাসা যেন বেধেছে বালাই, ভর করেছে বয়সের ভার ।
মা রাণী ও কণ্যারা সোহাগের ফুল,
বাবা যেন কলাগাছ আর বড় ছেলে তার কাঠের পুতুল,
এমনইতো হয় পায়নি খুঁজে আজও যারা জীবনের শুরু ও শেষ কিবা মূল,
কারো কোন দোষ-ত্রুটি অপরাধ নেই, বউ-ছেলেরই যত সব দোষ-ত্রুটি, অন্যায়, অপরাধ ও ভুল ।
উঠেছে গজে যেথা শত অন্যায়-অবিচার,
কেমনে উন্নতি আর বলো কবে হবে এ অঁচল সংসারটার,
শুধু গায়ে খেটে কি আর হয়, দরকার এখন নগদ টাকার,
হাবাগোবা বড় ছেলেটা যেন আদর্শ, সহজ ও সরল মত ঠিক তার বাবার ।
মা-বাবা ও ভাই-বোন মিলেইতো হয় জীবন,
অবাঞ্ছিত, অনাহুত বা কোন বহিরাগত জন,  
নিশ্চয় তারা নয় উটকু ঝামেলা, এ ঘরের পুত্রবধূগণ,
যে যার তারা কাজ করেই খায়, বিধাতার দেওয়া রিজিকে আপন,
কে বলেছে তারা উড়ে এসে জুড়ে বসেছে, তারাতো এ ঘরে তাদের মায়েরই মতন ।

পর্ব – ০৩

একদিনতো করবেই দখল তোদের মায়ের আসন,
এইতো নিয়ম বিধির বিধান, মাতা আর তাদের এ ঘরেতে থাকবেনা যখন,
মিতব্যয় ও সামাণ্য সঞ্চয় তাতেই হয় উন্নতি ও উন্নয়ন,  
শুধু ভোগ নয় নহে কোন অপচয়, যেটুকু না হলেই নয় শুধু এমন ঐ প্রয়োজন ।
বিধাতার করুণায় হয়েছে আগমন,
কোন ঘরের বউ হোক তারা যেমন এক বা সাতজন,
কে দিলো বা শিখালো তাদেরে হায়, ঐ সে ভ্রান্ত ধারণা ও মন্দ দরশন,
কোথা হতে শেষে সহসা ঐ মেয়েটা এসে করছে হরণ, না তা নয় আসলে সেযে সৃজন ও গঠন ।
কেমনে একথা বলি,
তাদের সবারে আমি বয়কট করে চলি,
আপনকে করে আমি পর, পরম সুখের এ মাটির ঘরটা দুপায়ে দলি ।
অবশেষে তাই বুঝিলাম,
নিজের অস্তিত্ব বিনা এ জীবনের কি মূল্য কিবা দাম,
সামলাতে সবদিক হতে হবে তাই সবারে ভাই বুদ্ধিমান, অভিনেতা ও বড় কৌশলী ।
কেউ প্রেমে পড়ে তারপর বিয়ে করে,
ভালবাসায় কেউবা সাজায় সংসার বিবাহের পরে গিয়ে ঐ ঘরে,
যাই হোক তাই পরে বা আগে ভাই দেখেছি ভেবে সঠিক, এখান থেকেইতো শুরু হয় জীবন ।
নতুন বউয়ের হাহাকারে,
নির্যাতন ও জ্বালাতন যেন অকারণেই বাড়ে,
কজনে তা বলো সহিতে পারে, তাইতো এ রণে দেখি শেষে অনেকেই হারে ।
ঐ মায় কেন হায় ভাবেনা, কে বুঝাবে তারে,
আমারওতো মেয়ে আছে, এমন জীবনতো শেষে তাদেরও হতে পারে,
ঘুরিয়ে ছড়ি করে সরদারি, হুকুমজারি ও বাহাদুরি, বাপের ঘরে কি মেয়েদের কাটে আজীবন ।
যতই থাকুক বিত্তধন,
অ অহংকারি সব রুপবতী কন্যাগণ,
বাপের সংসারে যাদের এমন কুটিল, আগ্রাসী ও ডাইনী আচরণ,
ভেবে কি তোমরা তা দেখেছ কখন,
কি উপায় হবেরে তোমার, তুমিও পরের ঘরে যাবেরে যখন,
যায়না ওরে তা করা কিবা হয়নাতোরে পাওয়া, যখন যেমন কখনও চাহিলেই কারো মন ।
সেতো কভু কেউ নাহি জানে,
হবে কার সনে জোড়, কোন মানুষদের মাঝখানে,
হবেযে তার বসত কোন ঘরে কোনখানে,
যেতে কত দূরে কোথায় কারে, আহারে তার অজানা রিজিকের টানে ।
তবে খন্ডাবে কেবা,
বলো কে করিবে আর রদ তাহা,
কর্মের ফল কিবা ভাগ্যের লেখা যার হয়ে গেছে যাহা ।
আবু হকে কয়,
ওরে সে কথাতো কভু মিথ্যে নয়,
সবকিছু জানতে ও বুঝতে হলে তা ওরে নিশ্চয়,
নিতে হবে দায়, অনুভবে ও চেতনায় সবারে আগে মানুষ হতে হয়,  
হতে পারে তা কর্মের ফল যা কভু হয়না মিছে যায়না বিফল, খোদায় নহে তার দায়ী নিশ্চয়,
তাই ওরে সবে মেনে নিতে হবে, তা যে সত্য চিরন্তন সুখ-দুঃখ জয়-পরাজয় নসিবের লিখন ।  

পর্ব - ০৪

সব শাশুড়ী মা ও তার আদরের কন্যাগণ,
হও যতই চতুর ও বৈরী পাষাণ, হতে হবেই সাবধান ঠিক এখন,
হয়তো কঠিন সময় করতেই হবে আলিংগন, না হলে সবে জলদি সংশোধন,
কি করিবে তখন, যদিরে আহা কপালে হয় ঠিক তেমনই কষ্ট, দুর্বিষহ জ্বালাতন ও নির্যাতন ।    
বিয়ে করে,
সবাইতো জীবন গড়ে,
শত স্বপ্ন-আশায় ও কতনা যতনে ভরে,
বানিজ্য বসতির ক্ষেতি চাষ, যদিও সবে জানে একদিন যাবে মরে,
লাভের আশায় মনের মত করে সাত রঙে সাজায় ঘর, তবু কেউ কেউতো লোকসানেও পড়ে ।
হঠাৎ শেষ হবে সবকিছু একদিন,
রয়ে যাবে বাকী হিসাবখানা, বন্ধ আঁখি ও বদন মলিন,
যে তরীর ভাংগা বৈঠা ও ছেড়া পাল, সে মাঝির মোখে কেন নাইরে ভাবনার চিন ।
এক খেলাপী অপরাধী আসামী হয়ে,
অদেখায় বিশাল ঐ বোঝাটা তার নিজের মাথায় লয়ে,
সে যে মহাজনের, হিসাবের পাওনা কেউ তার ছাড় পাবেনা, দাদনের ঋন,
কজনের আছে জানা হয় সে খেয়াল, চক্ষু-কর্ণ  থেকেও কেন কাঙাল, মরণের কথা হয়নারে স্বরণ ।
এ কথা কার না জানা,
জগতের যত মূর্খ, বিদ্যান, বিত্তশালী, দীনহীন কিবা বধীর ও কানা,  
জীবন চাহে তার সংগী একজন,
করিতে আলো ও ভালোর চাষ সন্তানেরও আছে প্রয়োজন,
খোদায় চায় তার দুনিয়ায় আবাদ হোক এমন,
সে কোন্ এক মোহ কিবা মায়া-মমতায়, অটুট এ বাঁধন সত্য চিরন্তন,
বৃক্ষ যেমন তার দিয়ে ফুল-ফল আমরণ,
রেখে গিয়ে বীজ, ঝড়া পাতা, ডাল-পালা, শিকড়-বাকল, ছায়া ও বায়ু দিয়ে সাজায় এ ভুবন ।
সুখ আর নাহি হয়,
বাবা তার অন্তরায় কিবা দায়ী নয়,
ছেলে-বৌয়ের সুখটা কেন মা ও বোনদের মোটেও নাহি সয় ।
যদিরে কভু আসে ঠিক এমনই সময়,
বোনদের জীবনে, হয়ে তাদেরই কর্মের ফল ও তারই বিনিময়,
তারা কেউতো মূর্খ নয় সবাই বিদ্যান,
তবে আপনি মারিছে কেমনে তারা আপনার পায়ে তীক্ষ্ণ কুঠারখান,
আপনজনা করে পর, পুড়ছে কেন নিজের ঘর, দুঃক্ষটারে লয়ে ঘারে পরাজয়টা করিছে বরণ ।
জেনে-বুঝেই তারা স্বেচ্ছায়,
সবে মিলে অতি কৌশলে চতুর দেমাগটা খাটায়,
দুদিনের এ দুনিয়ায়,
যদিরে তারা সবে এ কারণেই হেরে যায়,
তবে কেমনে কাটিবে বেহাল কঠিন দশার অনন্ত ঐ পরকালটা হায়,  
কত আশায় বুকে লয়ে ভালবাসা, বিয়ে করে বৌ হয়ে এ ঘরে আসা, ঐ মেয়েটার সুখ করে হরণ ।
ঐ বিদ্যার কিবা দাম, চোখ থেকেও যেজন কানা,
কলুর বলদের কিসের প্রেম, জীবনটারে আজও যার এতটুকুও হয়নি জানা,
দেখেছি আমি আশিটা ঘরে,
মিথ্যে নয় বলছি তাই একেবারে হলফ করে,
নারী হয়ে কেমনে নারীর অনাহুত পিছে লাগে অকারণ হিংসায় ভরে ।

পর্ব – ০৫

শুধু মা ও বোনেরাই হয়, নতুন বউয়ের দুষমন,
অকারণ তারে কেন শুধু খোঁচা, খোটা ও হুকুমজারি সারাক্ষণ,
এ রণে দেখিব কে হারে কে জিতে তাদের ভাবটা কেন ঠিক যেন অনেকটা এমন,
নিছক যেন তামাসার ছলে, বাজি ধরে দূর্বিষহ করে তোলে দুটি নতুন মধুর নিস্পাপ সুখের জীবন ।
ভালবাসা কাহারে কয়,
জানলে বলোনারে তা কেমনে হয়,
বিনা ভক্তি, শ্রদ্ধা, আস্থা, সোহাগ, নির্ভরতা, মান্যতা ও বিনয়,
চাই দেওয়া নেওয়ার মন ও মানসিকতা, তারেইতো সবে কয় তার বিনিময়,
নাহলে তা কভু রয়না অটুট ও অক্ষয় হয়না মধুময়,
এ কারণেই কারো কারো হয় পরাজয়,
কেউবা হয়েও এমন অচেনা পর মাটি কামড়ে পড়ে রয় জনমভর, হয়ে সে গোজামিলের আপন ।
বউ হয়ে এসে এ বাড়ীতে,
অন্ন দিয়েছে জেনে ও মেনে খোদায় যে হাড়িতে,
উঠে-বসে, খেয়ে-পরে, চলে-ফিরে তাদের সনে বহুদিন ধরে এক সারিতে ।
যখন তা পড়ে স্বরণ.
ঐ সে কঠিন নির্যাতন ও জ্বালাতন,
কষ্ট ও বিষাদে নিরবে যখন হু হু করে কেঁদে ‍উঠে ব্যথিত মন,
তা যেমন বলে শেষ করার মত নয়, মনেহয় নয়রে কভু তা ওরে এক জীবনে ভুলার মতন ।  
এক নব গৃহবধূ কষ্টে কয়,
আপন-পরের আজিকে আমি পেলাম যে পরিচয়,
তাতে যেন বারবার হায় শুধু এই মনেহয়, বুঝি ওরে এ জগতে কেউ কারো নয় ।
আবু হকে বলে,
নিশ্চয় ওরে সবই পরে বুঝিবে সকলে,
পলকে নিমেষে নিষ্ঠুর যমদূত এসে, মরণ ফাঁসির রজ্জুটা যখন পড়াবে গলে ।
যেজন হয়েছে শাসক,
গুরুজন, অভিভাবক ও বিচারক কিবা পরিচালক,
সুখী হতে বা জিততে হলে,
কেউ থাক বা না থাক ওরে তার দলে,
সহিলে নিশ্চয় হবেই হবে ওরে জয়, যে কোন ছলে বা কৌশলে,  
ঘরে ও বাহিরে নিরপেক্ষ ন্যায় বিচারক না হলে,
মনে রেখো পরে দেখো, দুনিয়ায় ও আখেরাতে কত দুঃক্ষযে আছে কপালে,
মিথ্যা ও মন্দের কাছে যদিওবা কভু সে হারে, তবুও সবার আগেযে তারে মানুষ হতেই হয় ।  
সাম না কুল রাখে হায়,
কবে শোধিবে তার ঐ একপাহাড় দায়,
পড়েছে যেন ওরে দারুণ ফেরে ও নিয়তির চিপায়,
ঈর্ষায় মরে যায়, সবকিছুতে যেন তারে কেন কোণঠাসা ও বঞ্চিত করিতে চায় ।
বুঝিতে চেয়েও পারিনি, হয়নি অর্জন কারো মন,
কেন শুধু ঐ বৌটার নিজ প্রয়োজন আর অধিকারগুলি চাহিতে বারণ,
সবার হুকুমজারি, সব চাই ইচ্ছামত তাড়াতাড়ি, বউ-ছেলে ও ভাই-ভাবীর অশান্তির কারণ ।
কোনটা মিছে ও বেশী সুখ কোনদিক,
আবেগের ঘোরে হেথা ঝাপিয়ে পড়ে কত পাগল রসিক,
মিথ্যে আশার ছলনাময় জোছনার আলোয়, অনতিদূরের যখন দেখে বালুচর করে চিকচিক ।

পর্ব – ০৬

কি আশায় তারা প্রেম করে,
কত রঙীন স্বপ্ন আশা তাদের ঐ মনের ভিতরে,
দিনভর এখানে সেখানে তারা বেড়ায় ঘুরে, দুজনে দুজনার হাতটা ধরে,
আর অল্প কদিন পরে, তারা দুজনে বিয়ে করে, সুখে ঘরভরে সাতরঙে সাজাবে এ জীবন ।
তারা চায় এত বেশী যা আমার সাধ্য নাই,
কেন কেউ বুঝেনা, তাদের কানায় কানা ষোলআনা ও সবটুকু চাই,
নেবে ওরে দুহাত পেতে থালাভরে সবটাই,
কেন তারা এত স্বার্থপর, বড় হতে চায় ঘরের বউ ও তার বড় ছেলেকে মানে নিজেরে ঠকাই ।
রঙ ভরাই দিতে হবে তা বাতাসে ছড়াই,
যে মেলা দেখাতেই হবেযে সবারে, তার নিজের পিঠেতে চড়াই,
বউয়ের শত দোষ ও কত বদনামরে ভাই,
মেয়ে-জামাইর প্রশংসা আর আদর-কদরের যেন কোন শেষ নাই,
বোধ বিবেকের বুঝি হয়েছে মরণ, সব কথায়-কাজে তাইতো সদা দেখতে পাই ।
বলা যাবেনা কোন সত্য বা উচিৎটাই,
বলে দিলাম মনে রেখো, ওসব আমি শোনতে নাহি চাই,
কেবলই তা ছাড়া, বলতে হরষে দিশাহারা, শুধু তাদের যত গৌরব, যশ ও বড়াই ।
কেন আমি এক বোঁকার মতন,
অবিরাম তাদের তাবেদারি করেই চলেছি সারাক্ষণ,
কোন তার বিনিময় কিবা সুনাম ছাড়াই কি চলবে এমন ওরে সারাটা জীবন,
নাই যার কোন বোধ, বিবেক বিবেচনা ও বিচার, কি মূল্য তবে শিক্ষার, পথচলা অন্ধের মতন ।
অনেক শর্ত দিয়ে,
মা ও বোনদের সব শর্তই মেনে নিয়ে,
কেনরে সবারে না মানিয়ে, বুঝিয়ে ও সবদিক না গুছিয়ে,
আর ঠেকানো গেলোনা, অবশেষে সে বলদ করলোই গিয়ে ঐ মেয়েটারে বিয়ে ।
তাদের ঐ জুলুমেরই বুঝি হলো জয়,
যাদেরে গিলে খেয়েছে নানা কুসংস্কার, পক্ষপাত, অন্যায়, অবিচার ও অবক্ষয়,
শুনেছি সব লোকে কয়,
রমণীর গুণেই নাকি, সংসার সুখের হয়,
সবই কি মিথ্যে,নাহলে কেনরে মনেহয়,
এ ঘর হায় কেন, একখানা জেলখানা যেন সম হেন যাতনাময়,  
বিয়ের নামে অল্প দামে একটা শিক্ষিত মেয়েকে ঘরে নিয়ে গেলো বউ সাজিয়ে দাসী বানিয়ে ।
মা ও বোনেরা মিলে সবে,
বললো শোন্, তাহলে বাসর রাইতেই তবে,
বলে তোর বিলাই মারা চাই, নাহলে ওরে বলে রাখি তরে শেষে পস্তাবে,
বউয়ের আর কোন লেখাপড়া নয়, তাহলে কিন্তু দা থেকে আছাড়টা অনেক বেশীই লম্বা হবে ।
বলে দিলাম করলাম মানা,
না খবরদার, বউয়ের কোন কথাই কভু শোনা যাবেনা,
আমাদের কথামতই তাকে চালাতে হবে, যাই সে চায় বা ধরুকনা কেন বায়না,
আমরাই চালাবো তাকে, এ নিয়ে তোর নাই কোন ভাবনা,
বলে দিলাম বলবনা আর, একথা ওরে বলতে যেন নাহয় বারবার, কিছুই তারে তুই কিনে দিবিনা ।
এ বিশ্বটাতো এক খোদার পরিবার,
যার সংসার ও যে খাওয়ায়-পরায় তারই ষোলআনা ভাবনা ও দায়ভার,
সুখ কেড়ে নেয় অযাচিত অন্যায় শাসন ও দমন নিয়ন্ত্রণ,
যে দিয়েছে এত মোখ ও ক্ষুধা সেইতো তাদের যোগায় ও যোগাবে আহার আমরণ ।

পর্ব – ০৭

উর্ধে তাকা ওরে নির্বোধগণ,
খুঁজে দেখ কর সন্ধান, পাবেই পাবে দরশন,
ভরসা ও নির্ভর, কেউ নহে তার পর সেযে পরম বন্ধু-আপন,
তার ‍উপরেই সব ছাড়, পেয়ে যাবি পার, কেন ওরে দেসনা করে সবকিছু সমর্পন,
সে নামে কীর্তন কন্ঠ বাজা যে এ মহাজগতের মহারাজা মহাজন,
এ মহা বিশ্ব-ভুবন করছে ও করবেন মহাকাল লালন পালন, তবে কেন এত শর্ত, নিষেধ ও বারণ ।
তোর মনে রহে যেন,
এ বিষয়ে নহে আর কোন প্রশ্ন কেন,
মায়ের মাথায় হাত দিয়ে করা ঐ অংগীকারখানা,
কথা দে, কোনদিন তুই ভাংবিনা করলাম তোরে যত এই নিষেধ-মানা ।
নাহয় তোরা বুড়ো হয়ে যাবি তাতে কি ভাবনা,
কত জীবনইতো এ দুনিয়ায় আছে, কেটে যায় কোন স্ত্রী ও সন্তান বিনা,
যতদিন তোমার ভাইয়ের চাকরী আর সব বোনদের বিয়ে না হয় ততদিন তুমি ছাওয়াল নিবানা ।
মায় বলে ওরে বাছাধন,
শুনেছি নাকি ভাই-বোন পর হয় শুধু বউয়ের কারণ,  
মা ও বোনদের ঐ বাক্য ও বচন,
প্রশান্ত এক সুপুত্রধন ও ভ্রাতা চুপচাপ করিছে শ্রবণ,
আমি হলে বলতাম তাহলে, তবে কেন মা তুমি ও বাবা বলোনা তা আমারে এখন ।
দুজনে কেন তবে সেদিন করে বিয়ে,
ভালবাসা ও মায়া-মমতার মোহভরা এ সংসার সাজিয়ে,
তাই দেখিয়ে ও শিখিয়ে, আজ কেন ঠকাতে চাও আমাদেরে তা না দিয়ে,
কেন করলেনা মানা তা ফিরিয়ে দিলেনা, করেছিলে বিধাতার মহাদান তোমাদের সন্তান গ্রহণ ।
বোনেরা বলে ভাই,
তোকে ছাড়া বাবা-মার আর কেহ নাই,
বউ সন্তানের বল কি প্রয়োজন,
কথায় আবেগের ঢল, চোখে জল ঘনঘন তারা মুছিছে নয়ন,
নাহয় যায় যাক তারা সবে মরে, চিরদিন তুই মোদেরে রাখিস বুকে ধরে করে আপন ।
বুড়ো বাবামায় কই পাবে ঠাই,
তুই ছাড়া প্রিয় ভাই, আমাদেরতো আর আপন কেহ নাই,
সব শর্তগুলি তাই, আজীবন রাখিস স্বরণ ওরে ও অক্ষরে অক্ষরে তা করিস পালন ।
তারা কভু কেন করেনি অনুধাবন,
জানতে বড় ইচ্ছে করেযে আমার,
মা ও তার মেয়েদের ঐ দেহ-মনটা ছিল কি দিয়ে তৈয়ার,
নিজেদের ষোলআনা, তবে কেন তা মানিতে ও সবারে দিতে এত কষ্ট সবার,
এ ঘরের বউয়েরওযে রয়েছে চাওয়া কিবা পাওয়ার, নায্য তার সে হক, সম্মান ও অধিকার ।
কেউতো কারো বিকল্প নয়,
সবাই আপন, সবারই আছে প্রয়োজন আমারতো তাই মনেহয়,
বলবে যারা বিজ্ঞ ও বিচক্ষণ,
তাদের কাউকে ছাড়াই হয়নাতোরে ও চলেনা জীবন,
হিংসাটা মনের রোগ আনে ধ্বংস ও পতন,
কি সমস্যা তাতে করবে ভোগ, যে যার ভাগ্যটা আর কিসমতের অর্জন ।
যদি হয় সবাই মূল্যবান,
ঘৃন্য মানুষ তবে নিজেরে দাবী করা ঐ মুসলমান,
অন্যকে তার পাওনা না দিয়ে কিবা ঠকিয়ে যেজন নিজে হতে চায় বেশী লাভবান ।

পর্ব – ০৮

সহিবেনা তা আসমান,
জানিও তবে জমিন ফেটে হবে ওরে খানখান,
কোন বিকল্প নাই, ঠিক রাখা চাই খোদার বিধানে যার যা পাওনা সঠিক অবস্থান ।
মা ও বউ এই দুইজন,
নহে কেউ ওরে মূল্যহীন কিবা নিস্প্রয়োজন,
প্রতিদন্দি ও পরিপূরক বা সম্পূরকও নয়, কবে হবে তা অনুধাবন,
রয়েছে কঠিন সাজা ওরে নির্বোধ, বোকা ও মূর্খগণ,
অপরাধ ও অবিচার হোক যতই ঢেকে, কাউকে রেখে অকারণে কাউকে কভু দিলে বিসর্জন ।
মা, বোন, স্ত্রী ও কন্যাগণ,
হোক বা নাহোক এক মানসিকতা ও মন,
কিবা এক সংসার, পরিবার বা এক ঘর, কেউ নহে পর সবাই আপন ।
শান্তির কারণে তাই যদি হয় প্রয়োজন,
সদা নারীরা হয় অধিক পরশ্রীকাতর আর সৃষ্টি করে তা নয়ন,
হলে দন্দ-বিরোধ ও কলহ না হয়ে বনাগতি, করো দূরে গিয়ে বসবাস ও জীবন যাপন ।

মানুষ যারা অন্তরে পশুর মতন,
কেজানে তাদের ওরে আছে কিনা একটা ভিজা মাটির মন,
কেন কখনও তাদের হয়নি মনে একবারও এমন, তারা কি আসলেই মানুষ আপন নাকি দুষমন ।
তারা কি পর নিজের ঐ বউ-ছেলে,
তা কেমন বিজয় বা সুখ, তাদেরে ঠকিয়ে বা রেখে পিছনে ফেলে,
কি লাভ তাদেরে দিয়ে সুখের বদলে কষ্ট-বেদন,
তারাও মানুষ তাদেরওযে আছে মন, কত নাবলা স্বপ্ন, সাধ, আশা ও ভালবাসা জীবনের প্রয়োজন ।
বউ সন্তান সম্ভবা হলো,
এ খবর যখন ওরে জনে জনে ছড়ালো,
খুশী না হয়ে যেন কেউ ঘরে, তারা সবে নিরব হুংকারে গৃহকোণ ভরালো ।
কোন সাহসে বলো,
কেমনে তারা ঐ অংগীকার ভাংগিলো,
সবার একই কথা, ছেলে-বৌ এমন অবাধ্য ও এত দুঃসাহসী কেমনে হলো ।
মা ও মেয়েরা সবে ক্ষোভে ও আক্রোশে ফেটে পড়িলো,
ভিতরে ভিতরে গোপনে তারা কতযে চতুর বর্বর পশুর ফন্দি আঁটিলো,
উঠতে, বসতে ও চলতে সকলে জ্বালায় তারে, পরোক্ষ হুকুমের স্বরে বলে ওটা ফেলো ।
সবার মাথায় জ্বলে উঠলো আগুন,
জাগলো যেন এক খুনের বাসনা, শিরে উঠিল পায়ের খুন,
চলছিল এক গভীর ষড়যন্ত্র,
যখন ঘরেতে কায়েম ঝি ও মা এর দুরন্ত প্রবল এক স্বৈরতন্ত্র,
অবশেষে সবে মিলে বানালো বসে, এক নিষ্ঠুর কুটিল ও জটিল আজব ও অভিনব মন্ত্র ।
হলো একখানা গোপন পরিকল্পনা তখন,
তাদের এক আত্বীয়র নার্সিং হোমে, করা হবে সব আয়োজন,
রাখে আল্লা মারে কে, বাঁচালে খোদায় কেমনে কার হয় মরণ,
নিতে তার নায্য পুরস্কার, তৈরী হও সব অত্যাচারী ও ষড়যন্ত্রকারীগণ,
টাকার বলে, ছলে ও কৌশলে প্রসব কালে, প্রসূতি মা ও নবজাত শিশুর করিতে প্রাণ হরণ ।
ভর্ৎসনা, তিরস্কার ও জ্বালাতন,
এমনি করে সারাক্ষণ কাটিলো তার অশান্তির পাঁচ মাস যখন,
টের পেলো তার বাবা-মা, একদা যখন ঐ বউমার অস্থির ও চঞ্চল হলো মন,
এক সপ্তাহের কথা বলে বৌমা অতি কৌশলে, তড়িঘড়ি তার বাপের বাড়ীতে হঠাৎ করিল গমন ।
দয়াময় আল্লায়,
আবু হকে বলে, হলে কারো সহায়,
কেউ চায় বা না চায়, সে উতরে কিবা বেঁচে যায় ও এক সময়ে সবই পায় ।
সাধ্য কার তারে খাওয়ায়,
যেথা হতে খোদায় লয়েছে তার হাত গুটায় মোখ ফিরায়,
সাধ্য কার কে পারে তাকে ডুবায় ও মারে, খোদ খোদায় একটু ভালবাসে যারে ও বাঁচাতে চায় ।  

পর্ব – ০৯

আল্লাহর দুনিয়ায়,
কেউ নহে কভু ওরে অসহায়,
সব বিশ্বাসীদের দিনগুলি যে এমন করেই কেটে যায়,
পরম পাওয়ার সুখে এ ধরণীর বুকে ধন্য তারা সবর, আশা, বিশ্বাস, ভরসা ও নির্ভরতায় ।
যেই মা একদিন যখন,
তার চাহে মন কিবা হয় কোন প্রয়োজন,
সন্তানেরে জঠরে কিবা বুকে ধরে সে অচিন নিরুদ্দেশে করে পলায়ন,
সেই মা কালের বিবর্তনে আজ কেন দেখি এখন,
মিথ্যে নয় কেমনে হয়, আজ বন্য পশুর চেয়েও ঘৃন্য, জঘন্য, হিংস্র, বর্বর ও নিষ্ঠর দুষমন ।
কেন তারা হায় যেন এমন,
নেই কোন ভাবনা ভয়, নেই স্বরণ হবেযে কভু মরণ,
এখনও যারা ভোগে মাতোয়ারা রঙ মাখানো এ মাটির দুনিয়ায় করিছে ভ্রমণ,
তারা যেন মত্ত-বিভোর বিবেকের চোর, দুচোখে নেশার ঘোর, বিত্ত-ধনের বিলাস ও বিনোদন মাতন,
দলছুট কিবা দলবেধে হয়েছে কি একজোট সব কলুর বলদ,
হয়েছে যেন তারা পথহারা ও দিশাহারা, আকন্ঠ পান করেছে যারা, নেশায় বুদ এক কলসীভরা মদ ।  
একটু গহীনে ভাবো তবে,
সঞ্চয় করো সবে, নাহলে শেষে কি উপায় হবে,  
দানে পাওয়া মহারাজার সব ধন,
একটু ভাবো অ বিদ্যানগণ, নিরবে কিছুক্ষণ,
যখন চাহিবে মন, নিবে সে কেড়ে ও নিমেষে করিবে হরণ,
এক মিথ্যে ভুলের ঘের, যাই করো লোকের স্বপ্ন-আশা, ভালবাসা বা প্রাণ বধ,
বন্ধ হলে দুটি চোখ ও পড়ে গেলে দেহের বল, কি আছে তব ওপারে যাবার পথের সম্বল ও রশদ ।
সত্য সুনিশ্চয়,
মূর্খদেরে তা বলে দিতেই হয়,
এটা জ্ঞানী ও পুণ্যবানের দায়,
ঐ দূর্ভাবনা যার কেমনে তা কবে ওরে হবেযে আদায়,
ভাবের ভুবনে যাবেন যখন, ঐ ময়দানে পাঠক নিজেও তখন পাবেন তাদের স্বচ্ছ পরিচয় ।
আসিবেই এমন এক দারুণ কঠিন সময়,
সবাই ছুটছে বেচুইন, বড় অচেনা যেন ওরে কেউ কারো নয়,
বড় অস্থীর পেরেশান, যায় যায় বুঝি অবসন্ন প্রাণ, কোন্ সে ভীষণ তাদের ঐ অজানা ভয় ।
অজানা ভেদ ও সে গহীনের খবর,
না হয়ে মিলেনা কভু মুসাফির যাযাবর ও না হলে বিনয়ে কাতর,
বসত করে জলসা ঘরে, কিবা হলে আবু হকে বলে চকচকে ঝলমলে আবাস বাঁধানো শ্বেতপাথর ।  
যত অত্যাচারী, জুলুমবাজ, স্বার্থপর ও অবিচারীগণ,
কতনা ভালো হতো, বুঝলে আপন কাজের পরিনতি, সকল ক্ষতি ও মরণটারে পড়লে স্বরণ,  
ভাবনা পীড়িত ও ক্লান্ত অনুসন্ধানী মন,
আলো ও ভালোয় ভরা অবাক বিস্ময় ও চমকিত শিহরণ,
ঘরে কি বাহিরে দিনে বা রাতে, কেউ না কেউ তার দুহাতে কিবা বিছানো পাতে পাবেই সে দরশন ।
আমি বলছি যাই মিথ্যে নয়,
যদিরে কেউ তিন নয়নের বিবেকবান ও বিচক্ষণ হয়,
তবে তাদের এক দমে, অতি কম দামে ও অল্প শ্রমে হতেও পারে ঐ আখেরাত ও মহাস্বর্গটা জয় ।

পর্ব – ১০

সূর্যটা উঠে পশ্চিম আকাশে শেষে,
নড়বে না আর ডুববেনা সে, স্থীর হবে ঠিক মাথার উপরে এসে,
জগতের সকল প্রাণী হবে নিস্প্রাণ,
অনুভবে ও চেতনায় নিতে তাদের কর্মের কিছুটা প্রতিদান,
অবিশ্বাসী মানুষেরাই শুধু বেঁচে রবে, সব সত্য বাণীর দেখিতে খোদার সে কুদরতি প্রমাণ ।
শুকিয়ে সব তপ্ত ও জলহীন,
রঙীন এ ভুবন ঘোলাটে, ধূসর ও তামাটে মলিন,
এখানেই নয় শেষ, আর নহে করুণার ক্ষমা ও শোধ হবেনা কোন ঋন,
অবিশ্বাসী, উদ্ধত ও অহংকারী যত কলুর বলদ,
হবে ফেটে চৌচির দুনিয়ার যত পুকুর-দীঘির, খাল, বিল-ঝিল, নদী-নদ, সাগর, ঝর্ণা ও হ্রদ ।    
শুনেছি বাবামার প্রথম সন্তান,
ছেলে কিবা মেয়ে সবখানেই পেয়েছি সে প্রমাণ,
দেখেছি হয় কিছুটা সহজ ও সরল, আল্লাহর পরম নেয়ামত ও দান,
সুবাধ্য ও কোমল, কেউ বলে গাধা তা ঠিক নহে আসলে, অতিশয় সাদামাটা ও অতি সাধারণ ।
জীবনটারে সাজাতে,
আপন ভোগ-বিলাসে সবে মাতে,
ব্যস্ত ও পেরেশান তারা আরও বেশী রতন কামাতে,
কার কি আছে আর কি নাই, তা দেখার একটু সময় নাইযে তাদের হাতে,
যদিও আজ উঠেছে এখন তারা কুলীন জাতে,
তীক্ষ্ণ আলোয় ভরা এ দিনেও তারা যেন সবে, রয়েছে ডুবে সব হারানোর গহীন আঁধার রাতে ।
যে আমি নিজেই অসহায়,
কে কবে দেখেছ ভেবে, আমার কি প্রয়োজন মনটা কি চায়,
সাধগুলিযে আমার যেন বারবার, অক্ষম সাধ্যের কাছে হেরে গিয়ে আমারে শুধু নিরবে কাঁদায় ।
কি দোষ আমার, কেনযে আমায়,
কেন সবে দোষ ধরে, খোঁচা মারে, খোঁটা দেয় ও অপরাধী বানায়,
সে কিরে শুধু আমারই দায়, দেখবো বলো কেমনে হায় পড়েছে কিনা রাজভোগ সবার পাতে ।
স্বার্থ ও ধনের কাছে,
আজিকে সবকিছু আর সবাইযে হেরে গেছে ও হারছে,
সবাই স্বার্থবাজ ও কৃপণ,
শুধু পেতে ও খেতে চায়, কেন দিতে নাহি পাই কোন জন,
নাইবা আমি ওরে কিছু পাই, এ জগতে একজনও কিরে নাই মম একটু দুঃখের ভাগ নেবার মতন ।
ঠুনকো হয়েছে বুঝিরে তাই,
সম অধিকার, সম্মান ও নায্য বিচারটা কোথাও কেন জানি আজ নাই,
কেন নির্বাসনে আজি মোর যেতে চাহে মন,
আস্থা, নির্ভরতা ও ভারসাম্যহীনতার ভালবাসার ঐ পারিবারিক বন্ধন,
এখন আর নেই কিরে দিন সেই, ভরেনা মন কিছুতেই, কারোই মাটির মতন কোমল আগের মন ।
এ জগত যেন ভুলের উপর ভাসমান,                          
সবাই যেন ভাসছে অকূলে, কে কাকে দেবে জ্ঞান,
তারা শিখতে বা শিখাতেও রাজি নন, যত সব পন্ডিত ও বিদ্যান,
জ্ঞানীরা সব কোণঠাসা ও অসহায়, সরদারি সব তাদের হাতে তারাই ক্ষমতাবান ।
পুঁথিগত সীমিত বিদ্যা ও জ্ঞান,
আর কিছু সাজানো ও চোখ ধাঁধানো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,
এ যুগের বিদ্যা ও জ্ঞান, নয়তোরে ভাই এক কথা কিবা তা নহে এক সমান,
মানুষ হতে মানুষের বিদ্যার চেয়ে জ্ঞানের বেশী অবদান,
বিদ্যা দিয়েছে তাদেরে চকচকে জীবন, যদিও আজও চোখ ফুটেনি তবুও তারাইযে কালের মহান ।

পর্ব – ১১

কি সেবা, উপকার, মঙ্গল ও কল্যাণ,
সৃষ্টির তরে ঘরে ও বাহিরে কি আছে ওরে তাদের অবদান,
কই দেখিনাতো তাদের বানিজ্য বসতির ক্ষেতিচাষ, আলো ও ভালোর ঐ বীজতলাখান ।
নাই ভাবনা, পেরেশানি ও তাড়না,
না হতে পরিশোধ দাদন ও দায়গুলি সব অজানা,
অচিন দেশের নতুন সফর, নাই যার ঠিকানা ও সুদূর পথের সম্বল ও সামানা ।
কেনরে নাই ভয়,
দুখানা ডানা ও দুটি আঁখি যদিরে বন্ধ হয়,  
না করে শেষ বিধাতার প্রিয় গুণগান,
পোষ না মানা ঐ পাখীটা হয় অচেনা ফেলে যাওয়া তার দেহখান,
যদিরে নিরবে না কয়ে না বলে, এ দেহ থেকে হঠাৎ পালিয়ে যায়রে চলে, তব বশ না হওয়া প্রাণ ।
না সাজিয়ে সুবাসিত ফুল ও মিষ্টি ফলের বাগান,
ব্যস্ত লয়ে ভোগবিলাস ও বিনোদন, সেই শ্রমে যেন জীবন বিরান,  
আবু হকে বলে কেমনে তারা নাহলে, করছে ধুমপান ও মদ্যপান,
কিসের মানুষ যদিরে তারা হয় কিবা রয় পশুর সমান,
আজও তারা কানা, হয়নি যাদের স্রষ্টারে চেনা-জানা, হয়নি মানুষ রয়েছেযে তার অনেক প্র্রমাণ ।
ভাল স্ত্রী ও সুসন্তান,
যদি কেউ জীবনে এমন সংগী পান,
যে মানুষ পুণ্যবান, মাটির হৃদয়খান ও ষোলআনা সে বুঝমান ।
একজন পুরুষ হলে এমন ভাগ্যবান,
সতী স্ত্রী ও সুসন্তান আল্লাহর বেহেস্তী নেয়ামত ও দান,
জীবনের তানপুরাটা হয়না কভু টুটা-ফাটা, আমরণ বাজে লয়ে সুমধুর তান,
প্রিয় সংগী, নানা ঢঙে ঢংগী, সাতরঙে রংগী সৌরভ ছড়াবে ও আবেশে ভরাবে শোনাবে শত গান ।
হয়না সাজানো তাদের কুসুম কানন মেলা,
জীবনটা যাদের কাছে, ভাবে নিছক একটা যেন তামাসার ছেলেখেলা,
বড়ই একা ও অসহায় হয়ে পড়ে তারা, সব থেকেও যেন সর্বহারা এ দুনিয়ায় কেন এত ঝামেলা,  
সন্ধা বাতির আলো আঁধারীর খেলা,
ঝি ঝি ডাকা কান ঝালাপালা করা একলা ঘরে যেন কোন সে এক বিরহের বিষন্ন গোঁধূলী বেলা ।
কি দোষ দেবো বলো ঐ বউমার,
আর অবশেষে এখনযে হয়েছে কাছে তার,
জ্বলেপুড়ে সে খাক হওয়া আংগার,
একটা সহজ জীবন হয়েছিল বিনাদোষে অকারণ যার বড়ই কঠিন ও ভার ।
সব দোষই ছিল আসলে ঐ শাশুড়িটার,
সয়ে সয়ে আজ সে হয়েছে পাথর আর,
তাকে এমন বানিয়েছে পড়িয়ে, দেখিয়ে ও শিখিয়ে তাদের ঐ দূর্ব্যবহার ।
বুঝিরে আজ তাই,
শুধু স্বামী ও শ্বশুর ছাড়া বাকীরা সবাই,
যারা ছিল শ্রদ্ধা ও মমতার, তার কাছে যেন হয়েছে তারাই নগণ্য, অধম, অবজ্ঞা ও অবহেলার ।
মধ্যবিত্ত এক সম্ভ্রান্ত ঘরের শিক্ষিত মেয়ে,
সে পথ চিনেই আগামী কঠিন দিনে কাল হয়ে আসে ধেয়ে,
যদি সবার তরে আবার এ ঘরে শনির ঐ রশিটা বেয়ে বেয়ে,  
সুখের আশায় পথ চেয়ে থাকা এ আংগিনা কালো ধোঁয়ায় আবারও ফেলে ছেয়ে ।
এখনই সময় সাফ হওয়া চাই,
কি উপায় ভাই, নাহলে বুঝি ওরে হাতে আর বেশী সময় নাই,
ঐ নষ্ট মানুষগুলি সকলে, সোনা-রুপার বেহেস্তী ঝিলের জলে, ডুবিয়ে উঠে ভাল করে নেয়ে ।

পর্ব – ১২

গাঁধার নাকে বড় একখানা মূলা,
ওরে কে আছিস তোরা এদিক আয় তড়া করে ঝুলা,
নাহয় করা দরকার তাবিজ-তুমার, যেন পাথর গলে উড়ে যায় তা হয়ে তুলা ।
দেখছি হতবাক করা, মা ও বোনের কথাবলা, সব কাজ ও চলা,  
পুত-বউ ও নাতীরে না দিয়ে বা পাতের খাবার তুলে নিয়ে দেয় যায়না কিছু বলা,
তবুও ঐ ঝি-জামাই ও শাশুড়ির কেনরে মন ভরেনা, হলেও খানাটা তার ভরা পেট হতে গলা,
কে খবর লয় তা কই যায়, এত ‍উপার্জন ও গৃহস্থীর আয়, লোকে বলে ওরে বুঝি নাইরে ভাই ডুলার তলা ।
আয় কম ও ব্যয় বেশী যার,
সুপরিচালনায় প্রয়োজন সুবিচার, সমতা ও ভারসাম্যটার,
সব বাবা-মার,
পক্ষপাত কিবা জুলুম নয়, হওয়া ও থাকা চাই ন্যায়বিচার,
নাহলে তবে কে কেমনে হবে, অপার নিদানের ঐ অকূল অথই সায়রটা পার ।
তাদের কি নাই ওরে কঠিন ও বেহাল পরকাল আর,
হবেনা কি আখেরাতের হিসাব-নিকাশ ও বিচার তাদের যত জুলুম, অন্যায় ও পাপ-পুণ্যটার,
শুনেছি তাতে নাকি হয় নিশ্চিত অধঃপতন ও বেরহমত খোদার,
যদি স্বামীর বর্তমানে স্ত্রী আর বড় ভাইয়ের স্থলে ছোটবোন হয় কোন পরিবারের পরিচালক বা সরদার ।
দেখতে থাকি দেখা যাক,
যে সহিছে সে ই নাহয় আরও সহিতে থাক,
তারপর হয় কার কোন কর্মটার,
লাভ-ক্ষতি, পরিনতি, জয়-পরাজয় কিবা কোন ফলাফল তার ।
যে বিষয়গুলি হয় এ সমাজ ও দুনিয়ার,
কভু কোন সন্তান চাহেনা হোক কোন শাস্তি বা অপমান তার বাবা-মার,
হোক তা ওরে যাই,
কোন সন্তানের সে সাধ্যওতো নাই,
দুনিয়ায় কিবা আখেরাতে তাদেরে নিবে তড়াই, কিবা খোদার শাস্তি বা আজাবের হাত থেকে বাঁচাবার ।
শুনেছি ঐ খনার বচন,
পুতের ভাগ্যে হয় ধন আর বউয়ের ভাগ্যে নাকি জন,
প্রশ্ন জাগে তবে কি তা মিথ্যে, নাকি তাদের আসলেই নাই কোন সন্তানের প্রয়োজন ।
মায়ের সুখ ও ঘরের লক্ষী তার কন্যাগণ,
এইতো সুযোগ, মায় বেঁচে আছি যতক্ষণ,    
বিবাহিতা কিবা কুমারী, দেবো আমি তোদেরে যত পারি, নিবে বস্তা ও ঝুড়ি ভরি যখন যা চাহে মন ।
কত দেখেছি ছোট্ট এ জনমভর,
আজ কহে মন, সারাটা জীবন যেন আমি ছিলাম তাদের পর,
যে পুতে বেশী কামাই করে, টাকা দেয় নিয়মিত সংসারে ও রাখে ঘরের সবার সব খোঁজ-খবর ।
শুধু আমার বেলা কেন এত হেলা যেন শুকনো বালুচর,  
মায়াহীন মায়ার এ জগত দেখালো ভিন্ন পথ, কেনযে হয়েছিল তারা এত স্বার্থপর,
নাকি মাটির মানুষ হয়েও তাদের অন্তর,
জানিনা কি দোষ ছিল আমার, কেন জুলুমের খর্গ ঝুলানো মম মাথার উপর,
মায়া, মমতা ও বিবেচনাহীন যেন এক কঠিন পাথর,
সবাই তার খাবার-দাবার রাখে খেয়াল, হয় তাবেদার ও করে তার বউ-সন্তানের একটু আলাদা আদর ।
কই আমি পেলাম তাই,
আমি কি ছিলাম না ভালো, নাকি মোর কোন ভাল কাজ নাই,
আসে যদি নাহয় আসুক একটা ঝড়,
তারপর আলো ও ভালোর উপর সাজাবো করে সুন্দর,
ঝড়ের পরে নতুন করে, বাধিব আবার মায়া ও ভালবাসার ছোট্ট একটা কুড়েঘর ।

পর্ব – ১৩

মজলুমের তরে আমি সুবিচার চাই,
হে বিধাতা বলো তুমি কি পারোনা আর কি তোমার নাই,
বদলে সবার মানসিকতা, মনন, মন ও দিয়ে একটা তৃতীয় নয়ন,
যে মানুষ তুমি বড় সাধ ভরে ও অতি সখ করে এ দুনিয়ায় করেছিলে প্রথম সৃজন,
মায়া-মমতা ও ভালোয় ভরা, নাই কোন যেথা জুলুম, অন্যায়, অবিচার ও অপরাধ এমন একটা ভুবন ।
শুনেছি আজীবন,
এ জগতে নাকি মায়ের মতন,
হয়না কেহ হেন প্রিয় বন্ধু যেন ও এত আপন,
আমিওতো চাই অন্য সবার মতন, এ সত্যটারে বুকেতে ধরে আমরণ করিতে লালন ।
তবে কেন হায়,
পুতের কষ্টগুলি বুঝেনা মায়,
কেমনে কত কষ্টে তার দিন, মাস ও বছর যায়,
সারা দিনরাত কাটে তার হায়, শুধু কন্যাগণের সুখ ও ভোগের ভাবনায়,
কি করে পুতে অর্থ কামায় আর, ভাবেনা কেন কেমনে চলবে খাবে তার পুত্ররা ও তাদের সন্তানগণ ।
কিছু মূর্খ মাতাগণ,
নাই বিদ্যা, নাই জ্ঞান ও নহে বিচক্ষণ,
তাই বুঝি তাদের এত পক্ষপাত, জুলুম ও অবিচার এমন,
কলঙ্কিত করিছেন নাকি তারা জগতের সব মায়েদের ঐ সম্মানের আসন,
এলে বাড়ী ঝি-জামাই,
আহা তার মাথা আর ঠিক নাই,
করিবে কেমনে খুশী কি দিয়ে কি খাওয়াই, ঘুম টুটে ঘাম ছুটে করিতে তাদের শত আদর ও যতন ।
বাবারা’ও যেন হয়েছে কেমন,
অন্ধ ও মূর্খের মতন আজীবন করছেন সমর্থন,
মার জ্বালায় বউটা আমার অস্থীর ও হাহাকার, সারাক্ষণ মোরে করে জ্বালাতন,
কেনযে এমন তাই, আজও আমি বুঝিতে পারি নাই, মায়ের সব অন্যায়, শাসন ও দমন-নিয়ন্ত্রণ ।
শাহানশাহের শাহী দরবার,
সবাই পাবে ও নিতেই হবে সব তার শাস্তি-পুরস্কার,
যেথা নেই কোন পক্ষপাত, ভেদাভেদ কুল-জাত করবেন নিঁখুত ও নায্য বিচার,
তবে কি তা হতে পারে এমন,
হয়তো তারা জেনেছেন আখেরাত বলে কিছু নেই আর তাদের কোন হবেনা বিচার ও কভু মরণ ।
ভালবেসে একজনেরে বিয়ে করে,  
ঐ মানুষটাকে শেষে ওরে, বউ করে তুলে নিয়ে এসে ঘরে,
তবুও কেনরে বর ও ঐ পরিবারের মনটা যেন নাহি ভরে, উপহারের নামে অনেক যৌতুক পেয়ে ।
বড়দেরই যদি ছোটর কাছে হয় হার,
কেমনে তবে সুপথে যাত্রা হবে সফল অভিযান তার,
নিশ্চয় অঁচল হবে, মুখ থুবরে মাঝপথে পড়ে রবে অথর্ব এ সমাজ সংসার,
এই যদি হয় ওরে কেউ নহে কার,  
একটু সহায়তা ও সুখের লাগি নিরব এক হাহাকার, কি হবে উপায় তবে সুদূর সামনে এ জগতটার ।
কেজানে কি হবে ওরে,
হতেওতো পারে শেষে শেষ বিচারে,
সেকথা তখন সবার জানা ও হবেই হবেযে প্রমাণ,
কুটিল ঐ মানুষগুলি, যখন গোপন সব সত্যগুলির যাবে ঢাকনা খুলি, তারাযে খোদার নাফরমান ।

পর্ব – ১৪

আল্লাহ বড়ই মেহেরবান,
আলো ও ভালোর খোদায় চাষাবাদ চান,
সবাই যখন হবে বড়ই সুবিবেচক, বিচক্ষণ ও বুদ্ধিমান,
ঐ বীজতলা সুজলা ও সুফলা, পতিত জমি হবে আবাদ ফুলে-ফলে সাজাবে সকলে এ বিশ্ব জাহান ।
আমিতো এখন আর আমার নয়,
কিছু প্রাপ্তি কিছু হারানো, কিছু জয় ও কিছু পরাজয়,
ধনী হওয়া হলেওবা কভু, মানুষ হওয়া সে কিরে ভাই সকলের নসিবে হয় ।
বিদ্যা, রুপ ও বিত্ত-ধন কিছুই নহে অক্ষয়,
পরম প্রিয় স্ত্রী ও পুত্র-কন্যাগণ, বন্ধু-ভাই ও স্বজন কেউই বুঝি আপন নয়,
নাহলে কেন লোকের অনেক আপদ, নিদান ও ভয়,
প্রভাব প্রতিপত্তি ও শতকোটির সমাজপতি কিছুইযে নহে তার জয়,
মরণেও রয়েছে মানুষের বিশাল অর্জন, বিশ্বাস না হলেও ওরে তা সত্য সুনিশ্চয়,
সৃষ্টির সেরা যে মানুষ খোদায় অতি ভালবেসে করেছেন সৃজন, সেইতো হবে আসল পরিচয় ।
আঘাত ও বঞ্চনা পেয়ে পেয়ে,
মনের ঘরে বারবার আমিযে শুধু মার খেয়ে খেয়ে,
যেতে হবে খোদার জমিনে, বাঁধা আমি যে ঋনে শান্তির চারা লাগিয়ে,
অবশেষে ফুটলো কানার চোখ হলো জানা, আমার মানে আসলে শুধুযে স্ত্রী আর ছেলেমেয়ে ।
সাধ ও সাধ্যটা যখন আর এক নয়,
এ ধারণা ওরে দখল করেছে জোর করে ঐ মানসিক অবক্ষয়,
তা হয় হোক কি আসে যায়, সবে চায় জীবনে প্রয়োজন আরও অনেক বেশী ধন ।
সেই মানুষ কবে হবে ঘরে ঘরে,
এই চেতনা এই দায়, প্রত্যেকে আমরা পরের তরে,
তবে এ জীবনতো তোমার একার নয়,
একটাই মাটির দুনিয়ার জীবন, কোরআনে কয়,
তাহলে ওরে নিশ্চয়,  সে হবে তোমার এক হার ও মহা পরাজয়,
সবে মেনে লবে, হবে তা কবে, সেই শিক্ষা ও চিরসত্যটার ঐ মহান বাণী ও বচন ।
নহে এ জীবন,
তোমার অক্ষয় ও চিরন্তন,
আবু হকে কহে, তা নহে সাধনা ও সাধন,
বেশী পাওয়া ও বেশী খাওয়া আরাম আয়েশি ও বিলাসী জীবন,  
সে এক নেশার মাতন জীবনের প্রতিদিন প্রতি ক্ষণ, চাই হর্ষ, পুলক ও বিনোদন ।
কেউ দেখেনা কারো পানে ফিরে,
চোখ মেলে চেয়ে দেখো চারিদিকে ঘরে-বাহিরে,
আপনার ভুলের মাসুল অন্য কেউ কি দেয়, কখনও তা হয় কিরে,
স্বার্থটাযে মহাঅকূল, মিথ্যা, মন্দ, লোভ, মোহ ও ভুল মানুষেরে ধরেছে ঝাপটে ঘিরে ।
হাবুডুবু, প্রাণপণ তবু অনেক সাঁতরে সাঁতরে,
পরবাসী মুসাফির প্রিয় ও মধুর যখন কেউ তার আপন ঘরে,
অবশেষে রাজাবাবু হয়ে কাতর ও কাবু পড়ে নিয়তি ও নিদানের দামাল ঝড়ে,
দেখিবে যখন আর, কেউ নাই ও কিছু নাই তার, বেলা শেষে ফিরে এসে শুকনো বালুচর তীরে ।
কবে তার হবে আর জাগরণ,
শুধরে নেবার এখনও সময় আছে, হও তবে সংশোধন,
মজলুমের ফরিয়াদ সব করে দেয় বরবাদ, খোদার আরশে নাকি তা ধরায় কাঁপন,
দুঃসাহসী অহংকারী ও অত্যাচারীগণ,
ঐ শোন অশনি ঘন্টা বাজে, এলো বলে সব হরণের মরণ বিষাদ নিরব বিদায়ী সমন ।

পর্ব – ১৫

যেখানে অন্যায় ও অবিচার,
অধিকার, সম্মান ও হক না পাওয়ার নিরব ক্রন্দন হাহাকার,
কেন জ্ঞানের আলো ও ভালোটা বলে বেড়ায়না, নিজ গৃহ আংগীনায় ছড়ায়না কেহ তার ।
টানতে হবে ঘানী,
দিনভর বারোমাস সে কথা জানি,
কি শীত কি গরমে নিরবে তাই ঐ ভাগ্যটাই লয়েছি মানি ।
লাভ-ক্ষতি, প্রাপ্তী, খাসারা ও পেরেশানি,
কোন গতি, পরিনাম, পরিনতি ও দেনাপানা না ভেবে না জানি,
রোজই ঐ একই কাজ, তেজে সব ভয় ও লাজ, একমনে চুপচাপ চলেছিযে আমি টানি ।
তৈল আর খৈলগুলি গেলো কই,
দাদনের মহাজন কখনযে এসে তা চলে গেছে সব লই,
ক্লান্তি ও অবসাদ, অভিমান দিয়ে বাদ সবকিছু চুপ করে অন্তরে অন্তরে ঐ যাতনা সই ।
সে যে ভুলের মাসুল তব কর্মের ফল,
পাশে নাই কেহ, ক্লান্ত অসাড় দেহ, একটুখানি নাহি বল,
সামাণ্য কভু খসলে চূন, বাড়বে তার পেরেশানি শত গুণ নড়লে ঐ তেলের কল ।
সামনে দাউ দাউ অনল,
বুঝবে মজা কিবা তার সাজা ঘাটে নাই জল,
তলিয়ে যাবে ছুটে এলে আকাশ ছোয়া জলন্ত লাল ঘন লাভার ঢল,
দিতে হবে পারি, কোথা যাবে এ সীমাণা ছাড়ি, নাই স্বজন ও ঘর-বাড়ী, একটুখানি তা হলে রদ ।  
এক শিক্ষিত কলুর বলদ,
শুকিয়ে যায় জোয়ার-ভাটার সব নদ-নদী ও হ্রদ,
হয়তো জানেনা সবে, বেশী দিন টিকে থাকেনা জুলুমের কোন রাজ-মসনদ,
দেখা হলে তবে জেনে নিও সবে, ঐ কলুর বলদ কি তার বুদ্ধি, বোধ ও বিবেকটারে করেছে বধ ।
ঐ শাহী পাকজাত,
নাই যার কোন ত্রুটি-ভুল সামাণ্য পক্ষপাত,
ভরে যাবে দুইহাত তার, খোস নসিব যার বিছানো বিশাল ডালার পাত,
মহা বিচারক কাজী, হয়ে গেলে তার দিল খোস ও একটু সে রাজি, একেবারে মহাবাজিমাত ।
নিখুঁত খাটি তার বিচার,
সহজে ধরেনা তবে ধরলে আর নাই ছাড়,
তা হবেনা লুকিয়ে রবে, পালিয়ে যাবে কিবা ফাঁকি দিয়ে তুমি হবে পার,
যেমন কঠোর ও কঠিন ঐ শাস্তিগুলি তার,
তেমনি চমৎকার চোখ ধাধানো, মন ভরানো ও গা জুড়ানো তার সকল মহৎ পুরস্কার ।
নাই তার ক্ষমতার অংশীদার, তিনি যে একজন,
মহাজগতের মহাসৃষ্টির স্রষ্টা, দাতা, পালক, মালিক ও মহাজন,
দয়ার সাগর কেউ নহে তার পর, কানুন, বিচার ও শাসন এমন,
রাখিও স্বরণ, আবু হকের এ সত্য বচন, পাবে প্রমাণ হবে মূল্যায়ন জীবনটার হলে মরণ ।
থেকেও চক্ষু দুইখানা,
জগতের মানুষ অন্ধের মত কানা,
দেখতে পায়না, হয়নারে কেন তারে চেনা-জানা,
বুঝি তাই বলেইতো, সে হয়না মানুষ বিনা তার ঐ তৃতীয় চক্ষুখানা,
ছোট্ট এ জীবনটা আর, সাতরঙের সাজানো বাহার বিশাল অসীম অপার এ জগতখানা ।

পর্ব – ১৬  

সত্যগুলি ঢাকনা খুলি যখন কথা নাহি বলে,
বুঝি রঙহীন ও সংখ্যায় কম বলেই কি যায়না তারা ভাল মানুষের দলে,
দেয়না পরের নায্য অধিকার,
জুলুম করে ও ঠকায়, কোন বল আহা নাই যার,
অজানায় অদেখায় মাথা উঁচু করেযে উঠছে গজে তার গুনার পাহাড় ।
আগে মানুষ হতে হয়,
শুধু বাপ-দাদার পরিচয়ে মুসলমান হওয়া নয়,
একবার ঐ চোখটি ফুটেছে যার,
খোদার নুরে তারে দেখিবার খুলেছে সকল জানালা দুয়ার,
সেইতো আসল মানুষ, খাটি মুসলমান ও সেরার সেরা ঐ চাদরে ঘেরা সাচ্চা ঈমানদার ।
ঝেড়ে ফেলে ধুয়ে সব অবক্ষয়,
খোদার মহিমা ও তার করুণায় করিতে দুর্লভ সুদূর স্বর্গ জয়,
জ্বীন ও ফেরেস্তাদের সনে, গর্ব করা খোদায় চায় ঐ মানুষগণে, উঠুক ভরে সারাটা দুনিয়াময় ।  
স্রষ্টার মহাদান বিজ্ঞান করেছে সে আয়োজন,
কে পাও আর কে দেখিতে পাওনা, আকাশ-মাটির এ মহা বিশ্ব-ভুবন,
নিরবে বিজনে ঘরে বসে অনুভবে চেতনায় আনমনে ও চিন্তা-ভাবনায় জাগ্রত হয় ঐ দরশন ।
এমনইযে হয় ঐ দাদনের মহাজন,
মহারাজায় ও অধম প্রজায় একটা রুহানী ভাব হয়ে যায় যখন,
তাতে কার হলোনা আর কার হলো সাধন,
পাওয়া না পাওয়া আর লাভ-ক্ষতির ব্যবসাটা দুই দুনিয়ার একাকার হয়ে যায়যে তখন ।  
বোধ বিবেকের হলে জাগরণ,
এমন অবাধ ও অঢেল সুযোগ কোন বোকায় বলো করেনা গ্রহন,
দেখে দেখে ও পড়ে পড়ে,
ভোলা মন ও খোলা মননের গহীন গভীরে,
ভিতরে ও বাহিরে সে যে দুটি তার পাখনা মেলে এ বিশ্ব বিচরে,
শোনে শোনে ও বলে বলে আর আপন হাতে দিনে রাতে করে তার মনের মত গড়ে,
ধন্য দুদিনের পরবাসে এ সফর জীবন,
আঁধারের মাঝেও চারিদিকে, এমনি করেইতো মানুষে শিখে, নিজ গুণে মানুষ হয় মানুষগণ ।
মিথ্যে মোহের ঘোরেতে পড়ে ডুবে আছো ভাই,
অর্থ-বিত্ত ধন, বিদ্যা, রুপ-যৌবন ও সমাজে সেরা ক্ষমতার আসন হোক তব যাই,
আর কত, ভুলে যাও তাই,
ভেবোনা এমন, এ ধারণা ভুল হতে পারেযে বড়াই,
যত ভুল আর অপরাধগুলি করে ঝালাই,  
এখনই হও ভালো, কেন আর বাড়াবে আপদ ও বালাই,
আমি সব জানা মহাজ্ঞানী, সব আছে আমার কাছে ও মোর সম কেহ নাই ।
নীল সবুজের নিরব বিজন উদাসে,
গান করে ছুটে চলা ঝর্না ও সাগর-নদীর পাশে,
রঙ বদলানো মেঘ-ভেলাগুলি খেলছে অসীম নীল আকাশে,
যেথা বিশাল ঢেউয়ের উপর ছোট্ট ডিঙ্গাখানি দুলে দুলে নাঁচে ও ভাসে,
গহীন আঁধারে তারকারা আহলাদে গায়ে ঢলে পড়ে আর হরষে গল্প করে তারা হাসে,
রাজা-গোলামের দান-প্রতিদান, দাদনের ব্যবসাখান, বসে লয়ে ঐ খতিয়ান জীবনের হিসাবটা মিলাই ।
ছাড়ো মিথ্যা, মন্দ ও ঘুষ-চুরি চলো যাই,
মানুষ হবার যে তরিকার আবু হকে করিল বয়ান তা ওরে ভাই,
মহারাজার ঝিল-বাগিচার অতিথিশালার ঐ ঠিকানাটা, ভেবে দেখি যদি খুঁজে পাই,  
এবার সব ছল-চাতুরি ও বাহাদুরি, গেছে চলে হায়াতের তিন কুড়ি, তার কোন আর বিকল্প নাইরে নাই ।

পর্ব – ১৭

কে করিল এত বড় কবিতা বিরচন,
এত সময় কই, করিব অপচয় আমি তার কিছুক্ষণ,
সবইতো আমার জানা, কি পড়িব আর বিরক্তিতে তাই ভরে যায় মোর মন ।
সদা চলছেযে সেই মহাআয়োজন,
তাই শুধু বিশ্বাসীগণ, যে যার মত তার করছে হেথা নিজের নামটা নিবন্ধন,
যে যা বলুক ভাই আমি তবু তাই লেখে যাই, মহারাজার বাগ-বাড়ীতে পেতে তার খাস কুটুমের নিমন্ত্রণ ।
না করে মনের অনুসরণ,
মননের সনে মিতালির গবেষণ,
সেই শুনেছি কবে, আজও তা রয়েছে স্বরণ,
বলা ভাল কথা, করা ভাল কাজ, সুপথে চলা ও সদা সুচিন্তন ।
নেই দান তেমন ভাল কাজ, সম্বল সুবচন তবুও সুজন,
আবার তাও শুনেছি, ভালকথা শুনতেও ভাল লাগেনা, এমন আছে কতজন,  
সত্য চিরন্তন, তার ভান্ডারে কোনকিছুর কমতি নেই ও টান পড়েনা, হয় অসীম পুণ্য সাধন ।  
কার কাছে কোন খাতে কত পায়,
ঐ খতিয়ানটা লয়ে চুপচাপ বসে আছেন খোদায়,
জীবন যার ও খেয়েছে ঐ রাজার দাদন, সে ইতো শোধিবে তার দায়,
আবু হকে কয়, খেলাপী ঋন গ্রহীতার ভয়, তাতে আমার কিবা কার কি আসে কিবা যায় ।
আমি চাহি ঐ গুণ গাহি আমরণ,
নাহি কোন ক্ষোভ, লোভ মোহ অভিযোগ ও দুঃক্ষ-বেদন,
হোক ও থাকুক টিকে সবার, আলো ও ভালোটার সনে মধুর ও মমতার বন্ধন ।  
কে কি কহিল, করিল বা না করিল অধ্যয়ন,
সবে যেন সুবিচার পায় ও অমানুষগুলি হয়ে যায় সহসা সুজন,
তাতে মোর কি আসে যায় ভাবনা অকারণ,
কে বুঝিল আর, হলো কিবা হলোনা কার অনুধাবন, তা মানিল না কোন্ সে লোকজন ।
আধো আধো মনে পড়ে,
আকাশ হতে কোন আশায় কোন লোভেতে ওরে,
সেইযে কবে মাটির এ ভবে, একদা একটা ডুবোজাহাজে করে এসেছিলাম ।
গোপনে চুপিসারে,
কত ধন ভরিলাম নিজ ভান্ডারে,
কৌশলে কিবা গায়ের জোরে, ধারে কিবা ভারে,
কাড়াকাড়ি করে, দুহাতে ধরে ঝুড়ি ভরে ভরে মাথায় তুলে এ ঘরে আমি আনিলাম ।
পেলাম আর খেলাম,
নেঁচে গেয়ে মিছে উল্লাসে কেন কাটালাম,
কোন লাভে যদিরে সবই হারাবে, এত ভারী বোঝা আমি বহিলাম,  
তীর ভাংগা নদীর কূলে, আমিযে কোন ভুলে এত সাধের সুরম্য এ পাকাবাড়ী বন্ধিলাম ।  
জীবনের এক দীর্ঘ সময়,
সে কি তবে বলো হায় বড় অবহেলায় হলো শুধু অপচয়,
এত কষ্টের হারাম ও জুলুমের ধন,
কি লাভে হায় কোন আশায় আমি কারে এখন, যার লাগি মন হাহাকার করেছে আজীবন ।
আগে জানলে তা হবেযে নিলাম,
বিনা দামে সবকিছু আমার কেন নিদাবী এখন ছেড়ে দিয়ে গেলাম,  
বিভোর বেহালে সারাটা জীবন কালে, তবে কি আসলেই বিনালাভে আমি এই তরীটা বাইলাম ।
তিনকাল গিয়ে এখন বুড়াকাল,
দেখি মোর তরীটার নাইরে হাল ও ছেড়া পাল,
তলিটাও ফুটো, ভাংগাযে গলই দুটো, তার মাঝি কত কাঙাল,
নাই পাটাতন, বন্ধু-স্বজন, দুঃখের কথা কাহারে কই সাহায্য করিবার নাইরে কোন সংগী সাম ।

পর্ব – ১৮

ব্যবসা করিতে এসে,
অচিন এক অরুপ ভিনদেশে,
তবে কিরে ভাই, এমনি অমি সব হারালাম শেষে,
যারা কানা, হলোনা তাদের জানা, এ জীবনটা যে কি আর কিবা তার কত দাম ।
কথা ও পোষাক,
মনের ভিতরে যতই ঢেকে রাখ,
সবইতো দেখে ও জানে ঐ মহান প্রভু আল্লাহপাক,
তবেকি তারা বিবেক হারা, নাহলে কেমনে চায় মানুষ না হয়েও সৃষ্টির সেরা হবার দাম ।
ডেকে বলে খোদায়,
আমি রেখেছি তা ঢেকে ও লুকায়,
মন্দটা ভরা মনে, বড়ই পটু তারা মধুর কথা বলায়,
কাজে নয় সাজানো লোক দখোনো অভিনয়, নহে সত্য ও সঠিক নহে ভাল তাদের কাম ।
কে কথা কয় খবর লয়, ফিরে চায়,
যাদের কেউ নাই কিছু নাই, বেলা শেষে বড় নিরুপায়,
সবে দেখেও অজানায়, এতই অসহায় যেন মনেহয়, এই বুঝি প্রাণ যায় ।
তারা দিনভর,
বারো মাস সারাটি বছর,
খোঁচা লাগে ক্ষত ঘায়, জীবনে নাই যেন কোন একটু আরাম ।
কে হবে সহায় নাই যার কোন দাম,
যারা শেষে দুইই হারায়, সামাণ্য শেষ সম্বল ছালা ও আম,
কঠোর শ্রম বেঁচে কাম করে খায়, পায়ে পড়ে যা গড়িয়ে, নিত্য ঝড়িয়ে মাথার ঘাম ।
ভুঁইয়া, খান, সরকার ও চৌধুরী,
বিদ্যান, সমাজপতি ও কোটিপতি তবুও করে চুরি,
থাকে দূরে দূরে এমনই একটা বড়লোকি ভাব যেন এখনই যাবে উড়ি,
সবখানে তাদেরই বেশী প্রভাব, ক্ষমতা ও দাম, আছে রাশভারী গালভরা বড় উপাধী ও নাম ।
পেতে চায় প্রসংশা ও সুনাম,
নাই কূল এত ভুল, অন্যায় অপরাধ ও কলংক বদনাম,
কত জুলুম, অবিচার ও পাপ,
ছাড় নেই খোদার, পাপে নাকি ছাড়েনা কারেও হলেও সে পরম প্রিয় মা-বাপ ।
ওরে মোর প্রিয় ভাই,
সবাইকে সচেতন ও সাবধান করিতে চাই,
কইরে জীবন ভরা এত রণ করা পাহাড় সমান ঐ সঞ্চয়, সম্বল ও কামাই,
কেউ মন্দ হলে নাইরে আমার কোন ক্ষতি নাই,
নাম লিখিয়ে সুজনের দলে সুপথে চলে সবে ধন্য হলে তাই হবে মোর পরম পাওয়ার এক বড়াই ।
নিঃস্ব হয়ে এখন,
বুঝিলাম হায় এই বুঝি সেই মরণ,
যখন কেউ নাই ও কিছু নাই আর ধন-জন কিবা ক্ষমতার আসন,
ক্ষিপ্ত মেজাজ, রক্ত চক্ষু, বজ্র কন্ঠ ও ভয়ংকর সবল বাহুর বীর বাহাদুর কৌশলী অংগুলী হেলন ।
শুনেছি কত আজ পড়ছে স্বরণ,
সাধক, সুধী, দার্শনিক ও গুণীজনের মূল্যবান ঐ বয়ান ও বচন,  
জীবনের দিক দর্শন ও পথ দেখানো যে কত প্রয়োজন, বুঝিলাম হায় দিন ফুরালো যখন ।  
সবারে ছেড়ে তাই,
কোরআনের বাণীতে কোন ভুল নাই,
নাহলে কেমনে কেনরে শূন্যহাতে এক আঁধার রাতে চুপকরে সবে চিরতরে করছে গমন ।  

পর্ব – ১৯

গহীন তিমির রাতে একাকি হায়,
অতি কাছে ও আশে-পাশে কিছু নাহি দেখা যায়,
অচিন দেশ, অচেনা ঠিকানা ও অন্তহীন পথ এমন এক বহুদূর অজানায় ।  
সকলে মিলে ওরে,
উঠালো হেথায় তারা আমাকে ধরে,
অসাড় দেহ সাথে নাই কেহ চোখ দুখানা বন্ধ করে,
যেথা অসীম ভয় আর শিহরণ ঘের এমন অন্য এক নতুন দেশের সফরে,
আমার অদেখায় এমন এক উড়োজাহাজে চড়ে হায় জানিনা আবার কোথায় আমি রওনা হলাম ।
জীবন যার শুরু হলো এখন,
জ্ঞান নয় শুধু লেখাপড়া করা হলো সমাপন,
এবার যখন বাবা-মার আঙিনা ছেড়ে দূরে কোথাও গমন,
সত্য বলা, সুপথে চলা ও হালাল উপার্জন,
শুরু হলো নতুন পালা গড়া বীজতলা সাজানো বিশাল শোভন একখানা কানন ।
করিছে বিপরীত জুলুমকারীগণ,
ভুল আর অন্যায়, অপরাধ কলুষিত এ ভুবন সারাক্ষণ,
তাইতো নিরবে চেয়ে আছে মহাজন, কে কি করিছে আর কার কি মহান অবদান ও মহৎ সৃজন ।
কারে কয় কলুর বলদ,
আপনার পায়ে আপনি কুড়াল মারে, তামাসার ছলে নিজেরে করে বধ,
কলুর বলদ মানে,
নির্বোধ, মূর্খ কিবা বোকা কিনা কেজানে,
লোক মুখে শুনে ঐ উলুবন যাচ্ছে ভেসে মুক্তোর বানে,
হন্নে হয়ে যায় সে ছুটে, যেন সব সীমাণার বাঁধন টুটে অন্তরালের সেদিক পানে ।
তবে বৃথাই কি ভার বহে মূলার ঘ্রাণে,
অকারণ যখন বিরক্ত মন, তানপুরাটার সুমধুর তানে,  
কেন ধন্য নহে, ভাবে যেন সুখী নয় সে, অঢেল অগণিত বিধাতার দানে,
মজে যায় নেশার মুগ্ধতায় শেষে সব হারায় চতুর কাক ও শৃগালের লোভ আর মিথ্যার গুণগানে ।
এ জগতে বড় হতভাগা সে,
দিন যাবে তার হতাশা, হাহাকার, পেরেশানি ও হুতাশে,
হয়েছে প্রতিটি শব্দ ও বাক্য চয়ন হতে ঐ আকাশবাণী,
চির সব সত্যগুলি বন্ধ নয়ন খুলি যে জন না লবে মানি,
কে দিবে দরশন, দিবে মহাজ্ঞান, পথের সন্ধান ও নিবে স্বর্গে টানি ।
দুনিয়ার যত বাদশা, গোলাম, ভিখারী ও রাজা,
সব অপরাধী ও পাপী কারো নাই ছাড়, হবে নায্য বিচার সবারই সমান সাজা,
জানতেই হবে আর যদি না জানি,
টানতেই হবে কোন ভুল নাই, বন্দীশালা কোথায় যাবে পালাই, জাহান্নামের ঐ আগুনের ঘানী ।
আকাশে, মাটিতে, জলে একাকি চলে ও সদা বিচরি,
জগত জোড়া সদা খোলা ঐ পাঠশালাতে সব হালতে দিনেরাতে পড়ি পড়ি,
হবে জীবন, জগত ও স্রষ্টারে তার চেনাজানা ও পার হওয়া সাগর অকূল অপার ঐ রশিটা ধরি ।
কেউ শিখে নিজ হাতে করি করি,
কেউ লেখে গহীন রাতে দূরে দেখে চারদিকে ঘুরি ঘুরি,
হয় যারা মানুষ সেরা,
যায়না পুড়ে যদিও আগুনের বেড়ায় ঘেরা,
শেষে আর না পারিলে,
ভোগ, দোষ-ত্রুটি, ভুল, নিয়ম ও শাসনের সীমা ছাড়িলে,
মূলের গলদে হারি আচমকা একদিন লয়ে মাথাভারী ঋন, পালিয়ে সে যায়রে যাবে উড়ি ।
সাধ্য কার, কে ঠেকায় যার দান সে কাড়িলে,
কে পারে জেতাবে তারে কেউ নিজে হারিলে,
পরতে পরতে তার আলো ও ভালোর সে এক মন্ত্র পরশ,
ঐ ঝিলের জলে ডুবিয়ে নেয়ে গায়ে মাখিলে, তবে সে হিসাবটা হবে সরস,
এলোমেলো উত্তাল রিপুগুলি, ফেলে দিয়ে তার সব রঙতুলি পদতলে জুটে এসে হবে বশ ।
করে অপচয় অবহেলে,
শেষে মাটিতে সব উপচে দিয়ে ঢেলে,
কি পাবে শেষে শূন্যহাতে একাকি আঁধার রাতে ওখানে গেলে,
জীবনের অযাচিত সবটুকু সরদারি, বাহাদুরি যশ কিবা সৌরভ, বাহার ও রঙ-রস ।