পর্ব – ০১

বন্ধুরে তোর উদলা নাও ।
ছলাত ছলাত জলের তোড়ে,
মনের সুখে ও তর জুয়ানির গায়ের জোড়ে,
গান গেয়ে ও বৈঠা বেয়ে,
হেয়ালের কোন খেয়ালে বাতাসের বেগে তুমি ছুটছো ধেয়ে,
বলোনা অ মাঝি ভাই, পরের ভাল শোনতে চাই, এই বিয়ান বেলা তুমি কোথায় যাও ।
আমার আপন জন বাড়ী-ঘর কিছু নাই,
নাহলে আর তার কি দরকার, সে ঝামেলায় জড়াই,
আমি বান্ধিমু সংসার, যদি একজন মনের মতন ভালমানুষ পাই,
করমু ঘর লইয়া পর, যদিরে এ মনের ভিতর গোপনে তার সনে, বান্ধা পড়ে যাই,
এইযে কইলাম আমার মনের ব্যথা ও সত্য যত দুঃখের কথা, শুইন্নাও তুমি করলানাতো কোন রাও ।
গুণীজনের সংগী হয়ে জ্ঞান ও গুণ নিও,
বুদ্ধিহীনে বুদ্ধি আর যেটুকু সাধ্য তোমার নিদানের মানুষগুলি পার কইরা দিও,
মানুষ যেমনই হোক হলে সুবচন তা মাথায় রাখিও, যদি নিজের ভাল চাও তবে তা ভাবিও যখন সময় পাও ।
মিশে যাবো কোটি মানুষের ভিড়ে,
কোনদিনও আর তাই আসুমনা আমি এই গেরামে ফিরে,
মিথ্যার ব্যবসা ও লোভ, মোহ, স্বার্থ, নিন্দা ও হিংসা যেন সবারে রেখেছে ঘিরে,
সব সাধুই ধরতে চায় মান বাঁচাতে কই যাই, যেন শ্বাস নিবার দম নাই, ছাড়া গাঙ্গ পারের এই খোলা বাও ।    
আল্লা আছে কোন ডর নাই,
বড় শহর সবাই যেথা পর, ঐ অচিনে যাই,
আঁচলডারে বান্ধিয়া কোমড়ে, যাবোরে সে মহাভিড়েতে হারাই ।

পর্ব – ০২

মানুষ চলে ও বাঁচে তার দয়া ও দানে,
পড়েনা মাটিতে তত, দেখো দেওয়া ও বাজ যত ঐ আসমানে,
ওগো সবাসি তোমার হয়তো রয়েছে পুরস্কার, আপদ ও নিদানে আর ঝড় তুফানে তুমি না যদি ডরাও ।
এমন অলক্ষুণে কথা কভু কইতে নাই,
বাঁশের মাঁচায় বসো, নেও আমার মাথার এ গামছাটা বিছাই,
উঠে আসো তাড়াতাড়ি,
বেলাবেলি উজান ঠেলি ফিরতে হবে বাড়ী,
যাচ্ছি খেপে চলতে হয় হিসাবে ও মেপে, এত সময় আমি কোথায় পাই,
এই প্রথম এটাই শেষ, হবোযে নিরুদ্দেশ, ছোট্ট তোমার নাও যেন মহারাজার সোনার ঐ তরীটা একটু ভিরাও ।
তুমি গঞ্জে গেলে,
আর অ ভাই তোমার মনে চাহিলে,
আমার টাকা-পয়সা নাই, তুমি ইচ্ছে হলে নিতে পারো নিলে,
নাহলে ঐপারে দেও নামাই, এইটুকু আমার দয়া ও উপকার তুমি পারলে ভাই কইরা দাও ।
আমার কাছে শুধু আছে দুইখান কানপাশা,
নাই কোন আর স্বপ্ন আমার, ছোট্ট একটা শান্তি-সুখের ঘরের আশা,
আমি তোমারে ভাই, খুলে দিয়ে দেবো তাই, গঞ্জে পার করার তোমার নায়ের ভাড়া তুমি যদি চাও ।
ঢাকা যামু,
পাড়ায় গিয়া নাম লেখামু,
গতর বেইচ্চা, বাসাত কাম কইরা নাঅইলে গার্মেন্টসে চাকরী কইরা খামু,
ছোট-বড় ও গরীব-ধনী সবাই আমার ভাই, তারাকি বাঁচেনা এ জগতে নাই যাগো কোন চাচা কিবা মামু,
আমার নাই স্বামী কিবা কোন বন্ধু ভাই, মামা চাচা তাও, এবার পারলে একটা মুর্শিদি গান শোনাও ।  

পর্ব – ০৩

দিলে দিলে বাহিরে ও ভিতরে রুহ নামের অন্তরের,
কিসমতে যা মিলে তাই খামু, শোকর করুম ও গুণ গামু, জীবন-মরণ ও রিজিকের মালিকের,
হয়েছি নাহয় অতি কমদামী, তবুও গোপনে আমি ঐ জগতে হবো বিলীন, যখন চাহিবে মন রবো উধাও ।  
জানিনা ও চিনিনা,
তবু এসবের নাই কোন মোর ভয় কিবা ভাবনা,  
কে আছে কি নাই,
আমি তা কভু জানতেও নাহি চাই,
অ মাঝি ভাই, তা আমার কি দরকার, কিবা ঠিকানা তোমার, কোথায় তোমার বাড়ী-ঘর গেরাম গাও ।
আমার কেউ নাই, একলা ঘরত অসুইখ্যা বুড়া মা,
তিন গেরাম পরে, বিয়া দিছি বুজিরে গিরস্ত ঘরে, ঐ জাগার নাম নায়েরগা,
হায় হায় কয় কি, কেমনে অচল মায় একলা থাকে ও চলে খায়, তুমি কি তাহলে ভাই নিজে রাইন্ধা খাও ।  
আমি তোমার জীবন সংগী হবো,,
যত ছোট-বড় সকল সুখ ও দুঃখের ভাগ লবো,
যদি বউ করে নিতে চাও বাড়ী,
তাহলে ঢাকা যাবার বুদ্ধি আমি, দিলাম ছাড়ি,
হতে চাই দুজনের আপন, মম নতুন জগত ও জীবন স্বামী ও শাশুড়ি,  
যদি রাজি থাকো তুমিও তাই চাও আর কথা দাও, বন্ধু হতে চাহিলে তবে এখনই ভাই তোমার নাও ঘুরাও ।