ভূমিকা – এটি একটি জীবন দরশনমূলক কবিতা, এক নগণ্য সৃজনশীল সৃজন । কাব্যে জীবনের গল্প । বিচিত্র এ মানব জীবনের চালচিত্র । সুখ-দুঃখ কষ্ট-বেদন পাওয়া নাপাওয়া কিবা পেয়েও হারানো প্রয়োজন সমস্যা মোহ-লোভ আবেগ আক্ষেপ ক্রোধ-ক্ষোভ অভিমান-অভিযোগ প্রাচুর্য্য-অনটন জয়-পরাজয় কিবা সফলতা ও ব্যর্থতার কথাসমূহ বা গল্প সেতো নহে অল্প । তাই দৃশ্যতঃ এটি কবিতা মনে হলেও তা আসলে ছোটগল্পের আদলে রচিত হয় একটি ছোটগল্প নয়তো কোন বড়গল্প বা ক্ষুদে উপন্যাস । জীবন মানেতো নানাবিধ প্রয়োজন অনেক অনটন ও একরাশ সমস্যার সনে গোপনে সন্ধি ও মিতালি করে বসবাস । জীবন মানে আলো ও ভালোর বানিজ্য-বসতির হেন এক ক্ষেতি-চাষ ও দায়বদ্ধতা যা প্রচন্ড শীত ও খরা-বর্ষায় বহমান আমরণ বারমাস । এটি তারই এক সুমিশ্রিত চিত্রকল্প, ঠিক যেন একখানা পাঁচমিশালি পাঁচালী ।
এটি দুজন পরিপূর্ণ মানুষের ভাললাগা ও ভালবাসায় গড়ানো নব জীবনের এক রসময় অংশ কাহিনীর কাব্য-উপন্যাস । এখানে কবি মহোদয়ের নিজস্ব রস, ছন্দময় বচন ও ভাষায় নায়ক-নায়িকা দুজনের কথোপকথন, মতামত, ভাললাগা ও নিভৃতে মন বিনিময়ের সংলাপ বর্ণিত হয়েছে । গহীনে গড়ে উঠা তাদের আন্তরিকতা ও অন্তরংগতা, একজন আদর্শ সমাজসেবক দাদাভাইয়ের সহযোগিতা এবং একজন বিচক্ষণ দর্শক ও লেখকের ভূমিকায় তার কলমে সে জীবন কাহিনীর বয়ান পরিপূর্ণতা পেয়েছে । এতে সন্নিবেশিত রয়েছে জীবনের ঐ কথাগুলিও যা অম্ল-তিক্ত বা অযাচিত হলেও অবিচ্ছেদ্য । তাই কোন কোন পাঠকের কাছে তা মনে হতেও পারে কিছুটা অনাবশ্যক বা পাঠে বিরস বোধয়ক, তথাপিও যা বাদ দিয়ে জীবন হয়না ।
এখানে আরও রয়েছে দুস্তর জীবন চলার পথের পাথেয় এমন কিছু মূল্যবান বাণী ও পাঠ যা খুলে দেবে অন্তরের অতল গহীন তলে ঢেকে রাখা অদৃশ্য ঐ তীক্ষ্ণ নয়নখানা, যা একবার খুলে গেলে ভিতরে থেকেও তা সবকিছু পরিষ্কার দেখতে পায় । অন্তরালের যে চোখকে আমরা মানুষের তৃতীয় নয়ন বা জীবনের সার্চলাইট হিসাবেও মূল্যায়ন করতে পারি । যে সার্চলাইট এর দীপ্ত আলো ঘন কালো অন্ধকারেও নিঃসংগ ও বিচলিত পথিকগণেরে পথ দেখায় এবং ক্লান্তিহীন, সুখ, আনন্দ ও সাফল্যময় করে দেয় ভিনদেশের এ ছোট্ট সফরখানি শুধু তার যেজন উহার প্রকৃত সাধক, প্রত্যাশী ও অনুসন্ধানী ।
উপরন্তু দীর্ঘ পথ চলার অনাকাঙ্খিত ক্রান্তিলগ্নে কারো কারো জন্য এখানে মিলেও যেতে পারে জীবনের দিকনির্দেশ, জীবন ঘটিত অনেক সমস্যার সমাধান ও অনেক জটিল প্রশ্নের সরল জবাব কিবা জীবন বিষয়ক এমন অনেক অজানা সত্য বা তথ্য যা হতে পারে বিপাকে বিভোর মনকে মানুষ বানাবার মন্ত্র ও তারই এক শুক্ষ্ণ নিবিড় আধ্যাত্তিক প্রয়াস ও প্রভাব । সমষ্টিগতভাবে তা হতেও পারে দুর্লভ এক পরম পাওয়া, সপ্তাকাশের দীপ্ত আলোকে অনন্য জীবন দরশন । যা অদৃশ্য এমন এক মহাগুরু বা মহামনিবের হাতের মুঠোয় থাকা মহাবিশ্ব, তার উম্মুক্ত অপার মহাজ্ঞানপীঠ এবং তারই দৃশ্যমান এমন একখানা মাত্র মহাগ্রন্থ – মহাজ্ঞানপাঠ তথা মানব জাতির পূর্নাঙ্গ জীবন বিধান (The Complete Code of Human Life i.e. the Smooth Way of Comfortable Crossing Towards the Death – Ultimate Destination of the Deeds & Achievements of the Life in the Earth & It’s Awards in the Life of the Sky and the Secrets of Plain Living & High Thinking of the Total Peace, Happiness & Success of Both Life in the Earth & Sky – the MAN actually Who has No Death, Whose Life is Endless and Which is the Best of All Creatures of the Almighty ALLAH/GOD – The Supreme Power and the Great Sole Builder, Creator, Feeder & Owner of Everything of the Everybody and the whole of the Unbounded Universes) যা আপদে ও নিদানে করতে বিপন্নদের ত্রাণ সদা করছে মানুষের অনন্ত এ জীবনটাকে সুখ ও শান্তির পথে আহবান, সুশৃঙ্খল পরিচালন বা নিয়মানু নিয়ন্ত্রণ । যে মহাজ্ঞান নিত্য তার সব ছাত্রকেই বলে দেয় ও মহাকাল তাই দেবে কোনটা তার দায়, প্রভুইবা তার কাছে কি চায়, কোনটাকে গ্রহণ করতে হবে আর কোনটাযে বর্জন, ওসব জানার অন্বেষায় এবং তা জেনে ও শিখে মানুষ হবার আশায় যারা হেথা করছে অধ্যয়ন, গহীনে গবেষণ ও অনুশীলন ।
এ ক্ষুদে কাব্য-উপন্যাসে চল্লিশ/ষাটোর্ধ দুব্যক্তির বৈচিত্র্যময় জীবন গড়ার গল্প রচিত হয়েছে । রুঢ় বাস্তবতার মুখোমুখি হয়ে জীবন চলার রণে ক্লান্ত দুজন সংসারী মানুষ । একজন নির্মম নিয়তি ও দীনতার নিষ্পেষণে শুধু সুখ বিহনে মনের কষ্টে সব ছেড়ে স্বেচ্ছা নির্বাসনের দৃঢ় সংকল্পে অটল । আর অন্যজন তার গ্রামীণ বিত্তশালী স্বামীর তিরোধানে জড়িয়ে স্বামীর ভিটা ও সন্তানগণে তার মায়ার কারণে শত ঝামেলায় গৃহকোণে ধড়ফড় অবরুদ্ধ এক বুদ্ধিদীপ্ত সাহসী রমণী । বাদলা হাওয়ার বৃষ্টির তোড়ে যেন ডানাভেজা দুরন্ত গতির দুটি উড়ন্ত পাখী লুটিয়ে এখন কাদামাটির উপর বড়ই বিমর্ষ ও হতাশা কাতর ।
এটি প্রবীণ ও দক্ষ কুশলী দুজন হার না মানা ও আশাবাদী আদর্শ মানুষের মধ্যে নিভৃতে গড়ে উঠা এক পরিচ্ছন্ন সার্থক প্রেমের গল্প । কোন রাহু কিবা ঝড়ের কবলে পড়ে বিধ্বস্ত হওয়া নয় বরং একটা নিবিড় শান্তি-সুখ ও সম্মানের ঠাই সন্ধান করা । পালিয়ে গিয়ে ও লুকিয়ে থেকে একটু সুখের অন্বেষণে কাবু হয়ে যাওয়া এক শহুরে ফিটবাবু এখন গ্রামে । জীবন যাদের কষ্টের বা অসুখের তাদের কাছে, এ জীবনটা আসলে ছোট্ট হলেও, আঁধারে ও দুর্যোগ দুর্বিপাকে তার অচেনা ঐ চলার পথটা মনেহয় যেন পিচ্ছিল ও অনেক দীর্ঘ । তবুও ভেংগে যাওয়া ঘরটা মেরামত করা এবং এলোমেলো জীবনে নতুনের আমেজ ও সুখের স্বাদ ফিরে পাবার বুকভরা আকুল আশার এক ক্ষুদ্র আয়োজন । তারপর, বিষন্ন ও ম্রিয়মাণ ঐ সাহসী ও প্রত্যয়ী, সহজ, সরল ও সুজন এমন মানুষ দুজন একে অপরের হাত ধরে নতুন জীবন গড়ে লভেছেন যেন পূরো এক সের হেন পরম শান্তি-সুখের এক পুনঃরুজ্জীবন ।
আলো ও ভালোর জ্ঞানের কথা অনেকের কাছেই বিরস বা বাহুল্য মনে হতে পারে । তাই কোন কোন লিখিত বা মুদ্রিত বিষয় এমনও হয় যে, কারো কাছে যা এমন ক্লান্তিকর ও বিরক্তিময় যে তা আর পড়তে ইচ্ছে করছে না অপরদিকে অন্যরা ঠিক তার উল্টো, পূরো বিষয়টা পাঠ করে নিয়ে তারা তার ভাবার্থ খোঁজেন আর ঐ নির্যাসটুকু ছেকে তুলে নেয়ার কাজে লিপ্ত হয়ে পড়েন ও তাতে একাগ্রভাবে লেগে থাকেন । এইতো জীবন, কেউ দুধ পান করতে চাননা, কারো মধু খেতেও অনীহা বা অরুচি আবার কেউবা এসব খাবার তার প্রিয় খাবারের তালিকায় রলেও বা মন তা খেতে চাইলেও সামর্থ্য নেই বলে হয়তো বছরে একবারও তা খেতে পাননা । আবার এমনও কত মানুষ রয়েছেন যারা দুধ বেঁচেও মদ কিনে খান ।
কত বিদ্যান, পন্ডিত ও বিত্তশালী ক্ষমতাধর বা প্রভাবশালীগণকে দেখি ধুমপান, মদ্যপান, যৌনাচার ও জুয়া এমনি আরও কত ভয়ংকর নেশায় অবলীলায় করছেন অগণিত টাকার অপচয় আর ঐ সে হরষে মেতে ছোট্ট এ মূল্যবান জীবনটার অবক্ষয় । আবার এই টাকার অভাবেই এ সমাজে দেখি কত লাখো বিপর্য্যস্ত জীবনের দীনতার কাছে হারমানা ও ধুকে ধুকে মাথা ঠুকে অবশেষে মৃত্যুর কাছে তার করুণ ও অসহায় পরাজয় । তাই অত্র কাব্য-উপন্যাসে বহুরুপী এ জীবনটাকে নিয়ে কিছু সুবচন বিচক্ষণ পাঠকগণের দৃষ্টিগোচর করতে পারায় সন্তুষ্টি ও কৃতজ্ঞতায় নিজেকে আমার পরম সৌভাগ্যবান মনে হয় । তাই বুঝি মম পঞ্চ হৃদয় প্রভুর চরণে সিজদায় পড়ে কেবলই আমাকে তার আরও শোকর আদায় করতে কয় ।
এ জীবন গল্পটি কে পাঠ করলো ও তাতে কিছু উপকৃত হলো আর কে তা থেকে বিমুখ ও বঞ্চিত হয়ে রইলো তা পাঠকগণের একান্ত নিজস্ব বিষয়, এখতিয়ার ও অভিপ্রায় । জীবন যার, কোন প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি কিবা জীবনের ষোলআনা লাভ-ক্ষতি ও দায়-দেনাটাও শুধুই তার একার । লেখকের তাতে তেমন কিছুই যায় বা আসেনা । তবে ওসব দেখে দেখে অনুভবে ও চেতনায় অক্ষমতা ও নানা দূর্ভাবনার শিকার হয়ে অসহায়ভাবে সময় পার করা ও শুধু কষ্ট পাওয়া ছাড়া যেন তার কিছুই আর করারও নাই ।
পর্ব – ০১
এক বিধবা পতিবত্নী,
চোখে জল ভরে স্মৃতিগুলি তার মনে পড়ে যখনি,
একটা অপার সুখের জীবন ছিল যার,
কেন আজিকে ওরে হেথা বিচরে শূন্যতা ও বিষন্নতার নিরব হাহাকার,
সাজানো রঙীন এক মায়াবী ফাঁদ,
ঐ মায়ার সংসার কেন মনেহয় তার সহসা এসে ভরিল যেন কোন্ অচিন বিষাদ ।
সেতো ওরে নহে কোন অপরাধ,
সবারইতো থাকতে পারে সমস্যা, প্রয়োজন এবং সাধ,
স্বভাবিক নিয়মের সনে জীবন বিধানেরতো নেই কোন আক্রোশ বা দন্দ-বিবাদ ।
কে বলেছে, নহে তা কোন নিন্দা কিবা অপবাদ,
এসেও কত ঝড় শত আপদ ও নিদান জীবন যার করিতে পারেনা বরবাদ,
কেউ কি কভু তার ভাগ নেয়, যখন আসে কোন দুঃক্ষ-ব্যথা, কষ্ট, অনটন ভাংগিতে সহনের বাধ ।
নিজস্ব রুচি ও পছন্দ মত জীবন গড়া,
নিজ স্ত্রী কিবা নিজের স্বামী নিজেই খুঁজে বের, বাছাই কিবা পছন্দ করা,
আত্ত সচেতনতা, সে ওরে অগ্রযাত্রার এক নব সুসংবাদ,
নাই কিরে তার, সে দায় কিবা অধিকার, যদি থাকে তবে তারে জানাই আমি প্রেরণা, সম্মান ও সাধুবাদ ।
যদিও মানুষ ওরে চাহে তা অনুক্ষণ,
জীবন মানেতো কিছু সুখ কিছু অনটন ও কষ্টবেদন,
নহে বেশী ধন, শুধু সুখ, আরাম-আয়েশ, ভোগ-বিলাস ও বিনোদন,
সেতো কিছু পাওয়া, কিছু না পাওয়া, হাসি-কান্না, হারিয়ে যাওয়া, সব সহন ও দেয়া কিছুটা বিসর্জন ।
কিছু কষ্ট, চাহিদা ও প্রয়োজন,
কিছু হয়না, আবার কিছুটা তার হয়ও পূরণ,
যার নেই তার সে ভার বহিবার কিবা তা সহিবার একটা সবল মন,
হারাতে তারে এলোমেলো করে দিতেও পারে, মেধা মন মনন ও সৃজনের অদেখা ঐ ভুবনটা আপন ।
একবার তার হয়েছে তালাক,
ভাগ্যের এমনইযে এক পরিহাস ও দুর্বিপাক,
দ্বীতিয় বিয়ার স্বামীটাও তার আহারে এখন আবার গেল মারা,
বুঝিনা তারা কেন দেখি হায় যেন আগে চলে যায়, এ সমাজের ভালমানুষ ছিল যারা ।
মনের কষ্ট মনেই লুকানো থাক,
এমনি নাহয় আরও কিছুদিন যায় নিরবে কেটে যাক,
তা যেন কারেও কভু কহিতে না পারা,
আহা ঘর যেন আর টানেনা ঘরে শুধু তার দুমুঠো খাবার ছাড়া,
স্ত্রীহীন পুরুষ যেমন আধমরা, ঘরহারা, ছন্নছাড়া ও এক প্রশান্ত উদভ্রান্ত পাগলপারা ।
আর কি কোন গতি আছে,
বলো অসহায় এক বিধবা সতীর কাছে,
কেমনে তার জীবন কাটে,
ওরে রসের তরীটা যার বাধা নাইরে ঘাটে,
মন চায় পারেনা হায় বলো কেমনে সে যায় সাতরঙ ঐ মেলার হাটে,
কম পায় ও বেশী হারায়যে তারা,
যতই হোক অনটন ও প্রয়োজন, আকুল ও দিশাহারা হয় যারা,
সুজন সংগী হয়ে, নিদানে বুকে লয়ে, যেজন পাশে রবে অনুক্ষণ হেন একজন প্রিয়বন্ধু পতি ছাড়া ।
পর্ব – ০২
মালিক ছাড়া পতিত জমি,
যেমন হতে পারে বেদখল কিবা যেতেও কমি,
অনাবাদি হলে বা অযতনে পড়ে রলে, হয়ে উঠে নানা দূর্বাঘাসে ভরা,
সবুজে ঢেউখেলা যেন চঞ্চল উচ্ছল সারাবেলা হয়ে ধূসর ও আধমরা,
কারো গায়ের জোরে কিবা জোয়ারের ঢেউয়ের তোড়ে, উর্বরা ফসলী জমি হয়ে পড়ে যেন নিত্য চরা ।
গেছে ঘরখানা আগুনে পুড়ে,
তবু পোড়ামন তার, এ পোড়াভিটা ছেড়ে আর যেতে চায়না দূরে,
দিনভর এক বনপোড়া পাখী,
আকাশে উড়ে উড়ে ঘুরে আর করে ডাকাডাকি,
আহাজারি করে বলে আমার ঘর কই সংগী কই, কারে লই এখন বাঁচি আমি কোথায় থাকি ।
ঘরবাড়ী ঠিকানা ওরে,
যেতে পারে দাউদাউ আগুনে পুড়ে,
সাগর নদীর প্লাবনে ভেসে কিবা ঝড়েতে ভেংগেচুরে উড়ে,
পড়ে গেলেও মানুষ খাদে, সে দেখি কিছুক্ষণ বাদে, আবার ওরে উঠে দাড়ায় ঘুরে,
বেশী হারায় ও কমকম পায়, পরাজয় ও হতাশায় জীবন যায়, দেহমনে হায় ম্রিয়মাণ হয়েছে যারা ।
সোনালী সবল উষায়,
খড়কুটো ধরে নতুন করে বাঁচার আশায়,
পার হওয়া হয়না নদী, মেঘ দেখে যারা ভয় পায় ও মুষড়ে যায়,
বৃক্ষতরুহীন বিজন নতুন চর, হেথা গিয়েও কতজনে বাধে ঘর, বল পায় খোদার ভরসায় যাদের বুকভরা ।
সবর, আশা ও সাহস আছে যার,
তারাইতো হারেনা, দেখি বীরত্বে লড়ে বারবার,
পড়ে গেলেও পথটা ছাড়েনা সেখানেই সে উঠে দাড়ায় আবার,
এইতো জীবন ডিঙিয়ে সাগর-নদী, মরু ও পাহাড় চিরকাল নিরবধি, আমরণ চলবে এমন ভাঙাগড়া ।
টলমল যৌবনবতী.
সেযে এক সুন্দরী ললনা শান্ত সুমতি রসবতী,
কেবলই যার আধা বয়স,
ঠাসা যেন পাকা কাঠালের কোষ, টসটসে যার ঘন আঠালো মিঠা রস ।
আবার বিয়েতে কি দোষ,
কে চাহে গোমতির বাধভাংগা কূলভাংগা রোশ,
বিজনে গোপনে রাত গহীনে তা যেন এক কালনাগিনীর ক্ষিপ্ত ফোসফোস,
চাইরে হেন একজন ওঝা, রণ-রংগিণী তার সাজটা বুঝা, থামাতে মানাতে হারাতে পারে যেন তারে পোষ ।
বিমর্ষ বিষন্ন মলিন বদন, তবু চাহি একটু হাসি,
মনটারে খোস রাখা চাই, যতই হোক বা রহুক নাই, সে উপবাসী কিবা উদাসী,
না যেন হয় তা আরও কষ্টের বারতা, মোখের কালি, গলার কাঁটা কিবা সুনাম ও শান্তি-সুখের তরে সর্বনাশী,
কি অপরাধ, লুকিয়ে ঢেকে সব প্রয়োজন, সাধ-বাসনা ও কষ্ট-বিষাদ, কিসের সরম কিবা ক্ষতি ।
ওরে অদেখা ঐ ঝড়,
ভাংগে কত সাজানো সুখের ঘর,
সব হারে তার কাছে যত রাজপুত ও সুদর্শন যুবাবর,
এলোমেলো করে ও কুৎসিত কালিমায় ভরে, যত সুখ, সুনাম ও সুন্দর,
চায়না সে বিদ্যা ও ধন, না ভরিলে ক্ষুধিত মন ও বুকের তিরাস, যখন হয় সে প্রবল ভয়ংকর ।
পর্ব – ০৩
তালাক খোদারই বিধান,
সেতো খোটা বা খুঁত নয়, কমেনা সম্মান,
মরণ এসেওতো কত জোড় ভেংগে দেয় যদিরে খোদায় চান,
তালাকি ও বিধবা রমণীর জীবন হয় আবারও সুখময় ও মধুময় যারা অতিশয় ধর্য্যশীল ও পুণ্যবতী ।
না হয়ে যারা আকুল ও পেরেশান,
বাসনার কষ্টগুলি লৌহ শিকল খুলি করুক যতই আনচান,
জোট বেধে হয়ে পূরো একসের যতই ছুতে চাক আসমান,
লেগেছে পিছু ভাংগিতে যত সুনাম ও সম্মান,
বুঝ ও হার না মানা ঐ পাপ ও কলঙ্কের আহবান করে পরাজিত অবসান,
জোড় বেধে ফের ছিড়ে মন্দের ঘের, সুপথে জীবন কাটাতে চান, তারাই আসলে গুণবতী বুদ্ধিমতী ।
আবার বিবাহ করায় যতনে ও নিরাপদ রহে তার ঐ যৌবনভরা সুন্দর দেহখান,
নিভৃতে কোমল হৃদয়টারে কুড়েকুড়ে খাওয়ার ঐ নিঃসঙ্গতা ও বিষন্নতার হবে অবসান,
স্বামী-স্ত্রীতে একে অপরের হয় প্রিয়জন, পুলকিত মন সুখের সাকিন ও শান্তির ঠিকানাটা খুঁজে পান,
হারিয়ে সংগী মাতাল এ দেহটার রংগী, কেজানে শেষে সাধু-চোরের বেশে কখন কার হয় কোন গতি ।
মেনে বিধাতার বিধান,
পুণ্য লভে ঐ দুজনেই হয় ঢের বেশী লাভবান,
সফল সফরখান আর ধন্য তার দুইজীবন, লাভ হয়েছে যার সুসন্তান,
স্বামী হারা স্ত্রী ও বউ ছাড়া জামাই,
বিনা রাখাল যেন বড় বেসামাল ভেড়া ও ষাড়ের পাল গলেতে লাগাম নাই,
বুঝি তাই মনিবে এটাই চান, মেনে তার সব বিধান, আপনি আপনার করুক শাসন এ জগতের সবাই ।
বিবাহ করে,
যারা তার আপন ঘরে,
এইতো রেওয়াজ ওরে বিধির বিধান,
মহাকাল ধরে শুয়ে কবরে তারা সুমিষ্ট ফল পাবেন ও পান,
পরের তরে বিলাতে যারা ফুলের মধু, শোভা ও সৌরভ আর ফল করিতে দান,
ওরে মাটির দুনিয়ায় মহারাজায় যেমনটি চায়, যেজন বানালো যতনে সাজালো একখানা বাগান ।
এমন একটা বীজতলা গড়ে,
যারা ওরে যতনে তার সারাটা জনম ভরে,
আপন হাতে দিনে রাতে, খোদার জমিনে যেখানেই জায়গা পান, আলো ও ভালোর চারা লাগান ।
এ জগতে নাক ডুবিয়ে মতি,
রাঙা সুখের গহীন ঝিলে ডুবিয়ে নাওয়ায় নাইরে ক্ষতি,
ভরিয়া পরাণ চুটিয়ে সুধা পান, হয়ে দুজনে দুজনার খেলনা মিটিয়ে বাসনা রতি,
সৎ ও সতী ঐ বাবামা তারা দুইজন, ক্ষেতিচাষ বানিজ্য বসতির হয় সাধন, এক মধুর স্ত্রীর প্রিয় পতি ।
ঐ রুপসী রমলা,
ছিল সে ঠিক যেন একখানা রাঙা পাকা কমলা,
তিন ঘরের সন্তান তারা পাঁচজন,
তার স্বামীরও ছিল সেটা দ্বীতিয় ঘর ঠিক অনেকটা যেন তারই মতন ।
ওরে শুধু সুখে ভরা নয়তো এ জীবন,
কখনও জোয়ারে ভাসে হয় ভাটায় চরা, ঐ নদীটার মতন,
কেজানে কে বলতে পারে, দুঃখের কাছে কার সুখটা হারে, কখনযে হয় পতন,
চোখ আর মোখ দেখে কি কভু বুঝা যায় কারো মন, সুখ-বেদন কিবা কেমন কার মনের গতি ।
পর্ব – ০৪
রাতে ঘুম আসেনা হায়,
অদেখা আগুনে দেহটা যেন পুড়ে যায়,
সন্তানেরা সবাই ওরে আলাদা ঘরে যে যার বিছানায়,
তা দেখেনা কেহ, কোন সে পিয়াসে যেন বারবার ঐ কলিজা শুকায়,
দারুণ শীতে ও রিমঝিম ঝরঝর বর্ষায়,
তা বুঝিবার সাধ্য কার, ঐ পিপাসার অস্ফট সে ক্রন্দন হাহাকার যেন হায় ওরে ত্রিগুণে বেড়ে যায় ।
যদি কখনও মোর ঘরে ঢুকে যায়,
চিৎকার দিলে লোকে জানিলে কে লবে তার দায়,
ফিরাবো কেমনে আঁধার রাতে, তারে আমি ঐ অবস হাতে, তবে কি হবে শেষে উপায়,
আহারে ঐ রাতবিরাতে, করিতে শীতল ঢালিতে জল মোর সারা গায় ও তপ্ত পাতে, কোন পাগলা মতি ।
অবুঝ মন, কি যেন শুধু সে চায়,
ছটফট করে বিজন ঘরে, তার শূন্য বিছানায়,
আর দিনভর মরি আমি হায় আমার বুড়ো শাশুড়ীমায়ের জ্বালায়,
আহারে যেমন তেমন তাহারে, এই মনটারে গহীন রাতের নেশার ভাগাড়ে সামলানো হয় মোর বড় দায় ।
আমার মাঝে এই আমার আমি,
কি সুখে দিবস যায় ও রাতকাটে হায় জানে তা শুধু অন্তর্যামী,
অন্ধকার বিছানায়,
হাতদুটি যেন মোর খুঁজে বেড়ায়,
প্রিয় চাওয়াটুকু তার যখন সে আর নাগালে নাহি পায়,
সব থেকেও যেন এ মনটা, হয়ে যায় ও রয় বড়ই মনমরা ও অতিশয় কমদামী,
যখন নিদহীন নেশায় বিলীন, সত্যটা মেনে লওয়া হয় কঠিন, একাঘরে পাশে নেই মোর রসিকা স্বামী ।
বুঝিনা আমি কি করিব এখন,
কোথা পাই ভালমানুষ একজন, কারে দেবো উথাল এই মন,
মাথা রেখে কোলে, সোহাগের দোলনায় দোলে, সব ভুলে হরষের ঝিলে অবগাহন,
উঞ্চ মধুর রসের একটু দামাল সুখের ঐ প্রয়োজন,
গোপনে ভিতরে ভিতরে, যখন সবাই ঘুমে ঐ রাত দুপুরে, আমারে কেবলই শুধু করে জ্বালাতন ।
বয়সটা তার মাত্র চল্লিশ,
যার চোখে মায়া ও চলন-বলনে যাদুর বিষ,
সে যদি হতো আমার, পেতাম উম্মোচনের অনুমতি ও অধিকার ইশ ।
সোনার ঐ তনুখান,
বক্ষ ভরাট স্তন দুটি উঁচু খাড়া ও টানটান,
হয়েছে যা শোভা, সৌরভ ও মধুর রসে ভরপুর, হাতের কাছে নয় কেন এত দূর, একেবারে কানায়কানা ।
টসটসে ঠাসা যৌবন,
টোকা দিলে যেন বাজে তা ঝনঝন,
মধুময় ভালবাসা হয় সারাটা দেহে ছড়িয়ে বাসনা টনটন ।
আমার তা ওরে জানা,
সে এক মদির নেশা পেরেশানি ও তাড়না,
আমি ছাড়লেও আমারে যেন তা, কভু ছাড়িতে চাহেনা বা ছাড়েনা,
চোখ ও মনের সে পীড়ন ও যাতনা,
হেন শিহরণ নাকে যেন একখানা তার রশি বেধে সারাক্ষণ দূরে বসে কাছে টানা ।
পর্ব – ০৫
তার মেধা ও যত পঞ্চ গুণ,
আহা পুড়ে দিতে চাহে যেন তা কোন সে আগুন,
পরিমিত সবই দেওয়া তার যেথা যতটুকু যাহা দরকার টক-ঝাল, মিঠাই ও তেল-নূন ।
রুপে ও রঙে যেন তার,
উপচেপড়া জল যেন টলমল ভরা কলসীটার,
সে আহারে, বহিতে যেন আর নাহি পারে তার ঐ রসের ভার,
চলিতে পারেনা অরুপ বাহারে সে এক নাবলা দুঃসহ নিরব যাতনা ও হাহাকার,
আজব এক উপবাসী,
ভিতরে গোপন ক্ষুধার চাপা কষ্ট বাহিরে অন্য হাসি,
তুষের ছাইয়ের তলে, নিরবে গোপনে খলখলে, জ্বলছে অণুক্ষণ অদেখা ঐ অনলখানা ।
আহারে এক নজর,
তাহারে আমি হঠাৎ দেখিবার পর,
ভাষা নেই বলে বুঝাবার, আহা তা কতযে সুন্দর,
সোহাগ পরশ বাসনায় তা মনটারে হায় করিল আমার ভীষণ কাতর,
আর ঐ সে লোভে, না পাওয়ার মৃদু অভিমান ও ক্ষোভে, দেহটার ভিতরে বহে কালবৈশাখী ঝড় ।
তার পিয়াস অনির্বাণ,
অতি চুপিসার কোন্ সে দুর্নিবার আহবান,
যাদুর নেশায় ওরে এ বুকের ভিতরে যেন বহে শনশন করে আনচান,
কে যেন আমারে ডেকে বলে ওরে তুই সাবধান,
অদেখা আগুনের ঐ সে লেলিহান, কি চায় সারা গায় কেনরে তা বহমান,
এগিয়োনা আর এক পা, বাড়িওনা দুটি হাত, হয়তো পুড়েও যেতে পারে তব সোনার ঐ দেহখান ।
আহা যেন থইথই,
সেকথা বলো আমি কেমনে কাহারে কই,
এনে দিলো সে, কিযে উচাটন,
তার ঐ মাতাল দেহটার, উচুঁনিচু ভাজের নিখুঁত গড়ন,
মানিতে যেন আর চাইছিল না তার, ঐ হার না মানা উঞ্চ মধু সম্ভার বহুভাজ বসনের বাঁধন ।
অদুটি পয়োধর এমন,
মিনতি করে যাচিছে এখনই হতে বিবসন,
ছিড়িতে চাহিছে তার বসন নামের যত ঐ সকল আচ্ছাদন,
ভরপুর মধু ভারে, ফেটেও পড়িতে পারে, যেন আহারে কষ্টে আছে বক্ষ সে ভার করতে বহন ।
চাহিছে যেন হোক এমন,
তার যা খুশী আর ইচ্ছে যেমন,
সহিতে ঐ আকুল পরশ আদর ও পীড়ন,
চাহে যতবার পিপাসা কাতর তার প্রিয় মধুকর সংগীটার মন,
উঞ্চ আলিঙ্গন, দলন, পীড়ন, পেষণ, রমণ, চুম্বন, দংশন, মন্থন, মর্দন কিবা লেহন ও চোষণ ।
করিতে শীতল তপ্ত এ দেহমন,
প্রফুল্ল বিনোদন ও থরথর কাপুনির অস্থীর ঐ প্রশমন,
সে কি তবে তার ঘাড় বাঁকানো রাগ যাচে উঞ্চ মদির সোহাগ, চাহেনা মানিতে কোন শাসন ।
এখনই ছিড়ে বসন যেন তা হবে বাহির,
মনেহয় যেন তারা হয়েছে হেন উগ্র, ক্ষিপ্ত-ক্ষিপ্র ও অধীর,
করেছে সারা মন আজব বশীকরণ, ছুড়ে দিয়ে এক তীক্ষ্ণ অদেখা মোহ-তীর ।
পর্ব – ০৬
কহিতে ও সহিতে না পারা,
হতে চায় যেন তারা মুক্ত, উড়ন্ত ও বাঁধন হারা,
চলে কি জীবন বন্ধু ছাড়া, নেশায় ভরা মাতাল করা মধুক্ষণ হয় কেমনে সে যাতনা নিবারণ ।
কেমনে বলো রাখিব সতীত্ব,
চাই দুজনার বিনোদন ভরা দেহ-মন ও চিত্ত,
সপ্তশুরে গাহিব গান ও স্বচ্ছ রেশমী পোষাকে মুই করিব নৃত্য,
হবে যে আমার রাজা আর, আমি পঞ্চরসে যাবো ভাসি ভালবাসি হবো যার সেবাদাসী ও ভৃত্য ।
এক দারুণ মজার খেলার সাথি,
হরষের রংগ রসে ডুবসাঁতার, হাতাহাতি ও মাতামাতি,
সকল সুখ-দুঃক্ষটার, হয়ে ভাগিদার সবটুকু রংগ আর, জীবন চলার সংগী আমরণ দিবা-রাতি ।
কারে দেই দেহমন করিবে আদর ও যতন,
শির হতে চরণ জাগাবে অধীর করা ঐ মদির শিহরণ,
কে হবে ও লবে মোর শুধু একজন,
বিনয়ে বিভোর এ দেহটার চতুর মধুচোর মহাজন,
পরম শ্রদ্ধাভাজন সপে দেওয়া দেহমন ও পতিত্ব,
সুখে ভরিবে সরস সমারোহে পুলকে করিবে মম সকল অংগ রংগে মাতিয়া বিভোর মাতাল নৃত্য ।
দেখি নষ্ট প্রেমের হাতছানি,
নিজেরে হেফাজত করা যদিও হয়েছে বড়ই কঠিন জানি,
একবার যদিরে পারে বাহিরে নিতে টানি,
মোরে বানাবে অসতী, নিলাম হবে সব গতি, ঘর হতে বের করে আনি,
ক্ষণিক রাঙাবে, শেষে নিমেষে ভাঙাবে আমার এত দিনে গড়া সুখ ও সুনামে ভরা এই মোর গৃহখানি ।
বধূয়ার প্রিয় সোহাগী স্বামীর,
হবেযে এক সাহসী সেনাপতি ও যেবা বিজয়ী বীর,
সে এক অদেখা শান্তিপুর,
ঐ পরশ বিনা আর নাহি বায়না রাঙা বধূর,
কেউ খুঁজে পায় কেউ পায়না, যদিও ওরে তা নহে বেশী দূর,
নোনতা সোহাগ ও আদরে দেহমন ভরে, হরষে জীবন হয়যে পরম সুখের ও মধুর,
টক-ঝাল-অম্ল ও নোনতা সুখে, দুহাতের বাঁধনে লুকিয়ে পতির বুকে, কানায়কানা অজানা রসে ভরপুর ।
দূরে নয় অতি কাছে,
ভরে পাত ডালভাত ও দুধে মাছে,
দুজনে দুজনার সেরা উপহার উঞ্চ ভালবাসার মরমিতা,
অল্প বাহারি জড়ির পার ঢাকাই শাড়ী, রেশমী লাল চুড়ি, স্নো-পাউডার আলতা ও রাঙা ফিতা,
নাইবা থাক কোন রাজ্য ও সিংহাসন,
দুহাতে বুকেতে নিলে টানি, মোখ লুকানো হেথা কিছুক্ষণ, আপন জগতে যেথা তারাইতো রাজারাণী ।
এ গাঁয়ের ওপাড়ার,
আছেন একজন রিটায়ার্ড প্রফেসার,
ভাল কথায় ও ভাল কাজে সবাই তারে সদা কাছে পান,
লোকের আপদে নিদানে দুর্যোগ ও দুর্বিপাকে তাদের পাশে ছুটে যান,
আমার মরহুম স্বামীর অতিশয় শ্রদ্ধাভাজন কাছের মানুষ ও প্রিয়জন ঐ দাদাজান,
সদুপদেশ, সাহায্য, সহযোগিতা ও পরোপকার ছিল যেন তার সরস ও সতেজ প্রাণের যোগান,
অনেক পরিবারে ও অনেকের জীবনেই রয়েছে যার অজানা অপার ও মূল্যবান হেন অনেক অবদান ।
পর্ব – ০৭
সে যেন এক বিজয়ী বীর,
অতিশয় রাশভারী, ধীর-স্থির ও গুরুগম্ভীর,
এলাকার গুরুজন সুধীজন মুরুব্বী,
শত আদর্শের যেন পূরো একসের, হেন এক জীবন্ত ছবি,
সবাই জানে, দরবার মজলিশ ও খানা জেয়াফতে টানে, সকলেই তারে মানে ও করে খুব সম্মান ।
একদা তাকে একবার,
চা পানের নিমন্ত্রণ করতে বাহক পাঠালাম বাড়ীতে তার,
উনি এলেন,
চা-নাস্তা ও পান খেলেন,
আমি বললাম, তিনি মন দিয়ে আমার সব কথা শুনলেন ।
তাকে বললাম,
দাদাভাই, এতদিনে ভাল করে বুঝলাম,
ঘরে একজন, সুজন সংগী, অভিভাবক ও গুরুজনের কিযে দাম ।
জীবনে তার কত প্রয়োজন,
যারে বিহনে চলেনা কোন সতী নারীর জীবন,
সুহৃদ, আছে ভাল মন অন্তরের আপন, এমন খাটি বন্ধু চাই একজন,
ঘরে বসে কোন অবলা মহিলায়,
সংসার, ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা ও বাহিরের এতবড় ব্যবসা বলুন কেমনে সামলায় ।
নাহলে হয়যে গাড়ীটা অঁচল,
কে করিবে আর দেখভাল তার, নাই যার তেল-জল, কোন সাহস ও বল,
কি আছে আর কি নাই,
আমার সব সমস্যা, প্রয়োজন ও কি আমি কেন চাই,
মনের ঝোলাটা খুলি, সব জড়তা ভুলি, সব কথাগুলি খোলাখুলি তারে আমি তুলে ধরলাম ।
পুরুষ মানুষের একফোটা ঘাম,
হয়ে রয় বুকে টেনে লয়, বিপাকে নিদানে প্রিয় সাম,
একজন প্রিয় সংগী বিনা সব যেন বিরস, মনেহয় অসীম ঐ শূন্যে হয়েছে নিলাম,
মনের আনন্দ, দেহের সুখ ও চোখের ঘুম হয়যে হারাম,
সবটুকু শান্তি, সাফল্য উন্নতি, ঘর-সংসার ও জীবনের সবটুকু বিজয় ও বিনোদন আরাম ।
তুলে নিয়ে অকপটে,
ঘরে-বাহিরে ছোটবড় যাই রটে ও ঘটে,
সব ঝড়-বাদল নিজের একখানা ঐ সে তার ছোট্ট মাথায়,
অজানায় সব আয়-ব্যয়, লাভক্ষতি, পেরেশানি, তাড়না, যত ঝামেলা ও ঋন-দায়,
একাকি বয়ে ও নিরবে সয়ে সব সামলায়,
তবু বুকে লয়ে ও সংগী হয়ে নিজে সুখী হতে আর বউটারেও তার ঢের বেশী সুখ দিতে চায় ।
সত্যি বলছি দাদাজান,
একা একা আমি আর পারছিনা, হয়ে গেছি বড়বেশী ক্লান্ত ও পেরেশান,
ছেলেমেয়েরা কথা শোনেনা,
ঘরেও তারা কেউ ঠিকমত লেখাপড়া করছেনা,
তাইবা কেজানে নিয়মিত তারা যাচ্ছে কিনা, তাদের স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় ।
পর্ব – ০৮
হবেন নামাজী ও শাসনে খুব কড়া,
ছেলেমেয়েদের নামাজ পড়াবেন ও দুবেলা করাবেন লেখাপড়া,
কে খবর লয়,
নাই কারো কোন ডর-ভয়,
এত উদাসীন কেন তারা কেমনে ওরে ছাত্র হয় নিয়মিত তারা স্কুলে যাওয়া ছাড়া,
এমন দুইজন লজিং মাষ্টার দরকার,
থাকা ও দুবার চা-নাস্তা সহ পাবেন চার বেলার খাবার,
তারপরেও একহাজার টাকা করে যাতায়াত বা হাতখরচ দেবো আমি তাদের দুজনার ।
মনেহয় দাদাজান তার,
এছাড়া এখন অন্য কোন উপায় নেই আর,
জানি অভাব নেই, এ সমাজে দুষ্ট লোকের নানা মন্দ কথা বলার,
একই বাড়ীতে যখন ব্যবস্থা হবে তার,
তাদের আসা-যাওয়া ও থাকা-খাওয়া, যদিও এ বিষয়টি সমূহ ভাবনার ।
আমি ভাই জানতে চাই,
তাতে আপনার মতামতখানা কি তাই,
তা ছাড়া কি করি বলেন, আমিযে আর ভেবে তার কূল নাহি পাই,
হাই স্কুলের একজন ভাল বিজ্ঞানের ও একজন ইংরাজির টিচার যার এখন আর অন্য কোন বিকল্প নাই ।
কেজানে কি অবস্থা ব্যবসার,
ওদিকে আমার একজন ভাল মেনেজারও দরকার,
বুঝেছি তা, শুধু এক ক্যাশিয়ার দিয়ে এত বড় ব্যবসা যে কিছুতেই চলবেনা আর,
বাজারের সব দোকানপাট, ডাকের গরুর হাট, রাইস মিল, ব্রিকফিল্ড, স’মিল ও সমুদয় ব্যবসা দেখার ।
নেই কোন ঝামেলা থাকা-খাওয়ার,
বেতন হবে তার, আপাততঃ মাত্র মাসিক নগদ ত্রিশ হাজার,
পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে হয় শীঘ্রই দিন,
আমি বলে দিচ্ছি, কেশিয়ারের কাছ থেকে এ বাবদ দশহাজার টাকা নিন,
ব্যবসা লাভে বাড়বে যত চলবে এ প্রথা ক্ষিপ্র নদীর মত, বাড়বে বেতন হবেযে অবিরত ততই উন্নতি তার ।
এ সংসারের ঘরে ও বাহিরে,
কতকিছু ওরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে পড়ে,
ছটফট ও ধড়ফড় করা আধমরা একজন ঘরের ভিতরে,
আরও কত অজানা অসুখ ওরে, ঢাকা পড়ে আছে এই নিঝুম শান্তিনীড়ে ।
দিন যায় মূল্যবান কিবা মূল্যহীন,
অজানায় দিনেদিনে মনের কাছে বাড়িছে এ দেহটার ঋন,
বাসনার উত্তেজনা টানটান,
চাহে সবটুকু জাতকুল মান ভেংগেচুরে করে দিতে একেবারে খানখান,
অযতনে অনাদরে নানা সমস্যা ও চাপের ভিড়ে,
যদিরে কলংকের ডাইনী এসে, মম সহনের ডোরখানা দেয়রে ছিড়ে,
কি উপায় হবে শেষে, কেবা রক্ষী কে প্রহরী আর বলো কে হবে ঐ হেরে যাবার জিম্মাদার ।
তারপর, এ ঘর-সংসার,
কে করিবে দেখভাল তাই এক বেহাল দশা তার,
গৃহস্তী-ক্ষেতি চাষ এবং দীঘি-পুকুর ও জলমহল সহ সকল মাছ ও গরুর খামার ।
পর্ব – ০৯
সন্তান ও এই অভাগী আমার,
সবার অভিভাবক ও পরিচালক হবার যোগ্যতা আছে যার,
ওগো দাদাভাই,
এমন একজন মানুষও আমার চাই,
যেজন হবে সুজন, সোনার মানুষ মাটির মন, স্বেচ্ছায় নিতে সম্মত মম এ রাজ্যটার সমস্ত দায়ভার ।
শূন্য যে তার ঐ রাজার সিংহাসন,
রাজ্যের কাজে রাণীসাহেবা বুঝি তাই যেন আনমন,
মন ভুবনের, যে বিশাল ভুবন-রাজ্যটা মোর একান্ত গোপন ও আপন,
সেই কবে থেকে করছে খা খা, যেন এক ছাড়াবাড়ী নাহলে নিঝুম ও গহীন বিজন পোড়াবন ।
কে বলেছে সে অভাগী, শুধু তার,
ঐ একটা হাহাকার ছাড়াতো কোন আর, ওরে ঘাটতি নেই কোন কিছুতেই ঐ রাণী সাহেবার ।
নহে পরাজয়,
কভু কোন হার মানা’ও নয়,
উঞ্চ-শীতল ও সবল ছায়াটুকু যেন ঐ সে সোহাগ ছাতার,
তা যেন হয় আর চিরকাল রয়, সব সতী মহিলার স্বামী এমন মহৎ, মহান, বিশাল ও উদার ।
অন্দর ও বাহির,
অকুতোভয় হবে সে এক সাহসী বীর,
নাহয় নাহোক বিদ্ধ শিকার, ছুড়তে পারে যেন সে লক্ষ্যে তীর,
মোর নাহি দ্বিধা ভয়, যদি সে রাজি হয় ও নিতে চায়, দেবো আমি তাকে ষোলআনা ঐ দায়ভার ।
পেলে ভাল মানুষ একজন,
অধূমপায়ী, নামাজী ও চাই তার একটা ভাল মন,
করবে দেখভাল, হবে টক-মিষ্টি-ঝাল, মিটাবে সবার সব প্রয়োজন ও করবে সোহাগ ও শাসন ।
বিনিময় করে মন ডালাভরা ভালবাসা লয়ে,
লাজ-হরণ প্রিয়জন, পরম ভক্তি, শ্রদ্ধা ও আস্থাভাজন হয়ে,
করে জয় এ সংসারের ছোটবড় সকলের মন, হবে মোর রংগী ও প্রিয়সংগী আর সবার আপন ।
যদি সে না হারে,
ঘাড়ে তুলে লয় সব সয় এমন হতে পারে,
সবুটুকু তার দায় ও অধিকার, ঢাকনা খুলে কোলে তুলে, দুহাতে সে সাতরঙে রাঙাবে হৃদয় ও মন ।
কোন মালিকানা নহে তার,
তবে পাবেন তিনি তিনআনা (০৩ শতাংশ) মাত্র নেট লভ্যাংশ সমুদয় ব্যবসার,
হবে সব সন্তানেরা আমার,
মম প্রিয় মরহুম স্বামী ও তাদের পিতার,
বাকী সব সম্পদ ও যত স্থাবর সম্পত্তির ওয়ারিশ বা পূরো হকদার,
তবে ষোলআনা ভরপুর কানায়কানা সুমধুর ও জানা-অজানা সবটুকু রস এই রমলার,
আর দেখা অদেখার ও জোয়ার ভাটার রসের পসার দেহমন জুড়ে থাকা তার বিশাল মৌবন রাজ্যটার ।
ঠিক আছে খুঁজে দেখবো তাই,
সব শুনলাম বুঝলাম, তুমি এত ভেবোনা ভাই,
ছেড়ে দাও সব আল্লাহর হাতে, সমস্যা প্রয়োজন তা হোক যাই,
তাছাড়া আমিতো আছি, তোমারই কাছাকাছি, এত ভাবনার কোন দরকার নাই,
আমি জানাবো তোমারে তাই, যদিরে মনের মত যোগ্য পাত্র কোন ভালো মানুষ কাউকে খুঁজে পাই ।
পর্ব – ১০
ওগো দাদাভাই,
এ জগতে এখন আমার কেহ নাই,
বাবা-মা, চাচা-মামা কিবা কোন আপন বড় ভাই,
ভালমানুষ আর সুখের সন্ধানে বলেন এখন আমি কোথা যাই,
আমার স্বামীর রেখে যাওয়া এতবড় ব্যবসা,
ছিল তার মনে আহারে কতনা শুভ পরিকল্পনা, রঙীন স্বপ্ন ও আশা ।
আজ তা বেহাল হয়ে যায় যদি,
কি জবাব দেবো কভু দেখা হলে তার সনে শেষদিন অবধি,
কি অবস্থা বাজারের মসল্লা পট্টির দোকানঘরগুলি, বিশাল আড়ত, গুদামঘর ও গদি ।
এত ঝামেলা কে সামলাবে,
এলোমেলো এ বিশাল বাগানটা বলো আবার কে সাজাবে,
না করে ঝংকার, করে তা শুধু হাহাকার,
আমার হৃদয় বীণার ঐ মরচে পড়া তার,
ঐ বাঁশরীটা ওরে যতনে দুহাতে ধরে, হাতে লয়ে আবার সোহাগ ভরে কে বাজাবে ।
কার গোশালে কে দেবে ধুয়া ভাই,
নাইরে পরকে দিয়ে এ জগতে এখন আর সে ভরসা নাই,
আমি ভেবে তার কূল নাহি পাই, কেবলই তাই বারবার আকুল ও অধীর হয়ে যাই ।
বড় আলেম সে নাহোক,
কিছু এলেম ওয়ালা হতেই হবে ঐ ভদ্রলোক,
বড় বিদ্যান না হলেও তবে,
পন্ডিত ও বিচক্ষণ তাকে যে ওরে হতেই হবে,
ভাল মানুষ বলবে তারে, পঞ্চমুখে মুগ্ধ গুণ বাহারে ধন্য ধন্য করবে,
পরম ভক্তিতে হবে সে মান্যবর, চেনা-অচেনা ছোট-বড় আপন-পর গ্রামের ও দূরের সবে ।
অ আমার দাদাভাই,
সব আছে মোর তবু কেন মনেহয় যেন কিছু নাই,
আমার সুখ ও ভালর বড়াই,
কে তা রাখবে ধরে, অজানায় কভু ওরে যায় যদি টুটে তাই,
যেতে চাইছে যেন জানিনা কেনযে যাচ্ছে হারাই, ঐ বন্ধু মানুষটি তাই আমি সহসা পেতে চাই ।
যার কাজ ওরে শুধু তারই সাজে,
পরকে দিয়ে কাজের কাজ হয়না কিছুই, শুধুই যেন ঠনঠন বাজে,
হয় শুধু টাকার অপচয়,
নষ্ট এ ছোট্ট জীবনের কত অমূল্য সময়,
সেকি মন মেনে লয় সহজে,
দেখি শুধুই বাহারি সাজ, মূল্যহীন যেন আসলে কাজে,
তবু কিছুই যেন নেই করার, হয়না শেষে কারেও আর কিছুই বলা দারুণ চক্ষুলাজে ।
সবাই বড় ব্যস্ত জানি,
কেমনে নিত্য আমি তাদেরে আনবো টানি,
দিবানিশি টানছে সবাই, যেন কারো চোখে ঘুম নাই, যে যার নিজের ঐ অঁচল ঘানি,
কারো হাতে একটুখানি যেন সময় নাই,
মনেহয় আমি বিজন নদীর পারে, তরীখানি লয়ে মাঝি গেছে চলে এখন তারে কোথা পাই ।
পর্ব – ১১
একটা অথই অকূল নদী,
আমি ওরে পার হতে শেষে আর নাইবা পারি যদি,
সূর্যটা ক্রমশঃ পড়ছে হেলে,
কোথায় যাবো আমি ভাই, এই মোর সবকিছু ফেলে,
কেমনে আমি তা আনবো ফিরাই, একবার গোধূলি বেলায় হারিয়ে গেলে,
একাকি ঘরে ও বাহিরে, নানান ঐ কাজের ভিড়ে, এত ঝামেলা বলো আমি ওরে কেমনে সামলাই ।
এখন বদলে সময় হয়েছে এমন, এ যুগের পূরো জগতটাই,
কেউ যেন কারো নয়, কেবলই পাই ঐ পরিচয়, দেবার মত একটু সময় যেন কারো হাতে নাই,
কি বলে কারে আহারে,
পাড়া পড়শী ও স্বজন বলবো কাহারে,
জীবনের কত সদাই লাগে রোজই, সেকি বলা যায় সবারে,
এত দায় কার পড়েছে আমার লাগি যাবে সে পরের দ্বারে, কিবা কিনে দিতে এনে রোজ বাজারে ।
একটা বছর করেছি পার,
সহনের সীমানাটা তার জানিনা কত লম্বা আর,
নিরব দুঃসহ অদেখা ঐ হাহাকার,
টের নাহি পাই নানা ঝামেলায় কেমনে মোর দিনটা হয়ে যায় পার,
একটা রাত আবার,
যখন ওরে আসে ফিরে আঙিনায় আমার,
এক বিধবা অবলার বুকের উপর সে যেন চেপে থাকা একখানা অদেখা অজানা বিশাল পাহাড় ।
আমি পারছিনাতো আর,
অন্তরালে যাহা মোরে করছে জ্বালাতন অপার,
জানিনা কেমনে কবে এরাত পোহাবে আর হবো আমি ঐ দরিয়াটা পার,
নানা ঝামেলা মাথায়, কত তাড়না আমারে তাড়ায়, মোর চোখে ঘুম নাই,
কি লয়ে আর বাঁচবো আমি করবো শেষে কিসের বড়াই,
নাজানি শেষে ঐ নষ্ট বিষের পরশে, জাতকুল মান যেটুকু আছে সবটাই তার যদিরে ফেলি হারাই ।
কি বুঝলেন দাদাজান,
সবইতো শোনলেন, এই মোর জীবনের সবটুকু বয়ান,
এখন কি তবে মোর সমস্যা ও প্রয়োজনগুলি সব অস্বীকার বা অবহেলা করতে চান ।
এখন বয়স্ক একজন,
ভাল ঘটক ডাকলে বলুন আমাকে তা হয় কেমন,
কেমনে করি আমি তা অস্বীকার স্বাভাবিক, সত্য ও সঠিক যে সকল প্রয়োজন ।
যা বলেছি তার মিথ্যেতো কিছুই নয়,
কিছুই নহে তার অবজ্ঞা উপেক্ষার, নাহি বাড়িয়ে বলা কিবা অভিনয়,
এবার আপনার ধারণা ও মতামত বলুন, কি করা যায় বা কোনটা উচিৎ ও শোভন হবে বলে মনেহয় ।
কি করবে মোর বড় জাতে,
ক্ষুধা লুকিয়ে আমি যদি শেষে, মরে যাইগো ভাতে,
কি এমন লাভটা আমার, কিইবা তেমন ক্ষতি স্বজন ও সমাজের বলুন হবেগো তাতে ।
তাতে কিসের সরম কিসের ভয়,
গুনাহের নয়তো বরং শুনেছি বিবাহ করা পরম পুণ্যময়,
নিশ্চয় তা অশোভন, অনৈতিক, অশালীন, অসামাজিক বা তেমন গুনাহের কাজতো কিছু নয় ।
পর্ব – ১২
জীবন তরীটা চলেনা একেলা,
সেতো নয়রে শুধু কয়দিন বা কয়বেলা,
সংগী ছাড়া হয় কি কভু, দারুণ মজার ঐ পাশা খেলা,
এ সংসার সমরাঙ্গনে প্রিয় বন্ধু বিহনে একাকি ঐপথ কেমনে যায়রে চলা,
প্রতিক্ষণে রণ,
এইতো ওরে মানব জীবন,
নিত্য আসে কত নবনব সমস্যা, প্রয়োজন, আপদ-নিদান, দায় ও ঝুকি ঝামেলা ।
সাজাতে রঙের একটু সুখের মেলা,
ছোট্ট এ জীবন তবুওতো নহে কিছুক্ষণ কেজানে কখন তার ফুরিয়ে যায়রে বেলা,
না করে অবহেলা ওরে খেলতেই হবে হয় যে খেলা,
দেহ গাড়ীটা পার হতে দুস্তর পথ ঐ শেষ ফাঁড়ীটা, চায় বন্ধুর সোহাগ পরশ ঠেলা ।
তাই তার একজন,
চাই সংগী বন্ধু সুবোধ ও সুজন,
হবে যেজন রসিক খেলোয়াড়, পাকা ড্রাইভার ও রংগীলা মাঝিরও হয়যে প্রয়োজন ।
তারপর এ বিষয়ে আর কোন কথা নয়,
কারো যেন মোখ কালো কিবা মন ভার না দেখিতে হয়,
বলে রাখি শেষে যেন আর, কারো কোন দ্বিধা কিবা সমালোচনার অবকাশ নাহি রয় ।
যা বলার বলুন এখন,
যত মোর সুহৃদ, স্বজন ও শুভাকাংখীগণ,
যদিও থাকে কোন বাধা, কিবা কারো কোন আপত্তি হয়,
ওরে তাতেও নাই মোর কোন ক্ষতি, বিরতি ও পরাজয় বা কোনই লাজ-ভয়,
আমি বলবো কথা, দেবো তার যাতায়াত ভাতা ও তাকে আমার বিশদ বিবরণ ও সবটুকু পরিচয় ।
এ জীবনটাযে শুধুই আমার,
রয়েছে আবার বিয়ে করা বা স্বামী গ্রহনের অধিকার,
সুখের কালে সজনের ডালেডালে নাঁচে তালেতালে দেখেছি আমি শত কুকিলের সমাহার ।
এ জগতে কেউ নহে কার,
বহিতে চায়না ও বহেনা কেউ কারো ভার,
যখন আসে ওরে দারুণ খরা, বুকেতে কারো জমে উঠে হাহাকার,
দেখেছি এ জীবনে কোন স্বার্থ বিনে, কেউতো ওরে ভাগ নেয়না কারো অদেখা দুঃক্ষটার ।
এ বিশাল ঘর-সংসার,
যত বিত্তধন, সন্তান ও তাদের মরহুম পিতার,
শুধু আমি জানি ও আমিই বুঝবো কি দায়, কি প্রয়োজন ও রয়েছে কোথায় কোন্ সমস্যা তার ।
দেখেছি কত, আপদে নিদানে কেউ কারো বন্ধু হয়না,
বিনা লাভে এ জগতে কেউ কারো তুলার বোঝাটাও বয়না,
স্বামী স্ত্রীর মত হয়ে দরদী এত, আর কেউতো তা লয়না বা সয়না,
স্বার্থের শৃংখলে বাধা অখিল সংসার,
কোন্ লাভে কি স্বার্থে কে নেবে বলো কবে, থাকিতে জীবন এ ভবে তুলে দুঃসহ বোঝাটা আমার ।
মানবতা, উদারতা আর,
কে রুধিল ওরে বোধ বিবেকের ঐ সে দুয়ার,
মানুষের মমতা আর অন্য সব গুণগুলিরে দলিত মথিত করে ও মানিয়ে হার ।
পর্ব – ১৩
যা একান্তই আমার,
সেখানে কেমনে হয় অন্য লোকের প্রবেশাধিকার,
ওরে তা হবার নয়, বলো কোন পরপুরুষকে কি কভু সমঝানো যায় ঐ গুরু দায়ভার ।
না করে বিয়ে ও ঘর সংসার,
কিবা ধোকা দিয়ে ও বোকা বানিয়ে কেহ প্রিয় স্বামী বা স্ত্রীকে তার,
সেতো প্রেম নয়, অবৈধ যৌনাচার,
ডিজিটাল প্রেমের সে এক বিকৃত ধিকৃত ধরণ ও বাহার,
তা নাকি পরকিয়া প্রেম, দুষ্ট-রসিক লোকে আহা কি সুন্দর এক নাম দিয়েছে তার ।
আবু হকে কয়,
হতে পারে ওরে তা হবেই মনেহয়,
একবার ঢুকিবে যে ঘরে, নিশ্চয় তা সে এক মহাঅবক্ষয়,
হেন পাপাচার ছোট্ট এ জীবনটার যেন হয়ে গেলো ভরাডুবি নিশ্চিত পরাজয়,
পড়ে যুগের ঝড়ে তা মহাসৃষ্টির তরে ভয়ংকর ও চরম অনিষ্টকর অদৃশ্য এক মহাঅনাচার ।
লানত ও লাঞ্ছনার চেয়ে নয় কিরে ভালো,
দুহাতে কুড়িয়ে লয়ে দেহমনে মাখিয়ে ঐ সে আকাশের আলো,
ছোট্ট এ জীবনটার যে ঐ গাঁথুনি দরকার,
নাহলে নাই মুক্তি, না পেলে বিশেষ করুণার ক্ষমা দয়াময় বিধাতার,
অদেখা ধংসের রঙ মাখানো সে ঘের অগ্নির কারাগার,
আছে যার শুধু্ই প্রবেশ দ্বার, তবে নাইরে তার বাহিরে ফিরে আসার কোন আর পথ বা দুয়ার ।
বিয়ে করা ও বাধা ঘর,
ভেংগে দিলেও তা এসে দুরন্ত দামাল ঝড়,
ক্ষতি কি দোষ নেই মেরামত করা ভাংগা সে ঘর কিবা নতুন করে তা গড়ানো আবার ।
তাই আমি করবো বিয়ে,
বাচঁবো আলো ও সকল ভালোয় শরিয়ত নিয়ে,
মনের আশা আমি সুখী হবো,
তবু দুঃক্ষ-কষ্ট যা আসে জীবনে তাই মেনে লবো,
পেতে ছাড় ও হতে পার, দুই দুনিয়ার জীবন রাঙাবো যেটুকু পারি পুণ্য দিয়ে ।
সেতো খোদারই বিধান,
তাতে কিসের বাঁধা, নেই কোন লজ্বা কিবা অপমান,
যদিরে তার জরুরত হয়,
যে যাই বলুক, যতই ওরে লোকে মন্দ কয়,
নিশ্চয় তা নয়তো কোন দোষ, অপবাদ, খোটা বা গুনাহের বিষয় ।
লাগবে আমার ঘরপতি,
আসবেন যার মন চায়, যদিরে হয় কারো সুমতি,
ধরবে বেহাল এ সংসারের হাল,
সে হবে মোর ছোট্ট নায়ের দখিনা পবনে উড়ন্ত রাঙা পাল,
আমার নয়া রসিক সয়া ও সুজন সেনাপতি,
ঘর হতে দেবে তারে সাহস ও মনোবল, আর তার রসদ ও সকল রসনার সাথি হবে বধূয়া সতী ।
এক নিপুণ কারিগর,
যতই আসুক আপদ, নিদান ও ঝড়,
সুখ বা দুঃখে দুজনে দুজনার বুকে সারাটা জনম ভর, রমণীরা বলে শুয়ে থেকে সুখ চরণের উপর ।
পর্ব – ১৪
কেউ কারো হবোনারে কভু পর,
হাতে হাত ধরে, এ মনের ভিতরে প্রেমের প্রাসাদ সাজাবো সুন্দর,
তাতে কার কিসের ক্ষতি, খোদার আইনে ও কৃপায় দুনিয়ার এ বসতি, কেনইবা হবে তাতে আপত্তি ।
লোকের নিন্দা কিবা সমালোচনা,
তাতে কার কি আসে যায়, ওসব আমি মানিনা ও করিযে বড়ই ঘৃনা,
ভাল মানুষের সোহবত ভালো,
হয় মধুময় ও সুন্দর, আলোকিত করে মন ও ঘর আকাশের আলো,
তাই যেন মোর ভাগ্যে জুটে, সে কপাল আর কভু না যায় টুটে, তেমন মানুষই আমার জীবনসংগী হয় ।
পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি গেলো,
একদিন একজন ভদ্রলোক এলো,
প্রথম দেখায়ই তাকেযে আমার ভালো লাগলো,
বিষয় হলো মোর নানা ভাবনার, মেনেজার পদে চাকরীর জন্য যে তার ছবি সহ সিভি জমা দিয়েছিল ।
কি সে খুঁজে বেড়ায়,
আর এক পাগল মন তারে কি দিতে চায়,
মনেরে বলি কথা শোন, অ মন তোর একি হালচাল মতিগতি হলো,
গোপন সন্ধানে সে ই কি ছিল কামনায় আমার, ষাটোর্ধ বয়স আর দেখতেও ছিল ঐ মানুষটি কালো ।
এ কোন ভালোর নেশার লুকানো আলো,
কেনরে তার মাঝেই বুঝিনা সে কেমনে তাই খুঁজে পেলো,
তার তরে এত শ্রদ্ধা, ভক্তি, বিনয় ও আস্থা সহসা ওরে কোথা হতে উড়ে এলো ।
মধুর গোপন ভাবনাগুলো এলোমেলো,
এ কোন দরদ, সুমতি ও সহানুভুতি তার তরে মোর কেনরে জাগিলো,
কেন ওরে জানিনা,
মন বলে শুনে রাখো সকলে, আমি আর কিছু মানিনা,
তাকে আমার বেশ ভাল মনে হলো, বুঝি গোপনে মন তারেই তার মনটা দিলো ও ভালবাসিলো ।
মনেতে হরেক কত প্রশ্ন জাগায়,
অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মকর্তা সে, যে থাকেন ঢাকায়,
বেশ ভদ্র, শিক্ষিত, বিনয়ি, রুচিশীল ও স্মার্ট রাজধানীর এমন এক নিরীহ শান্তিপ্রিয় বাসিন্দায় ।
কি যেন সে মনে মনে চায়,
নহে রাজা নয় ঋষি, নহে সে দীনভিখারী বাহিরের দেখায়,
মনেহয় কি যেন নাই ও চাহি তার,
তবু নহে বিব্রত সে, নেই তার না পাওয়ার কোন হাহাকার,
চাকুরীর ইন্টারভিউ দিতে তবে কেন সে এসেছে শত কিলোমিটার দূরের এক প্রত্যন্ত উপজেলায় ।
দাদায় হেসে বললো,
উনাকে যদি তোমার লাগে ভালো,
তারে বানাতে পারো কোম্পানীর মেনেজার,
আর দেখভাল করিবার দিয়ে অধিকার তব গোপন জগতটার,
আমার কাছে মনেহয়, মোর ধারণা যদি মিথ্যে না হয়, মানুষ সে দারুণ চমৎকার মোটেও মন্দ নয় ।
সে যে সপ্ত গুণের সমাহার,
দিতেও পারো তাতেই পোয়াবারো হবেযে তোমার,
একান্ত গোপন তোমার, ঐ নিঝুম আপন রঙীন মন ভুবনের সবটুকু দায়ভার,
মেধা তার শানিত ধার, ঐ সম্ভার মানবেনা কভু হার, করবেই করবে নিরবে রাণীসাহেবার মনটা জয় ।
পর্ব – ১৫
চলায়, বলায় ও মুগ্ধতায়,
অন্যরকম কোন্ সে এক গোপন ভাল লাগায়,
আগন্তুক ভদ্রলোক বেচারি চাকরীটা পেলো, তা কি ওরে সবারে খুলে বলা যায় ।
সে কথাতো জানেনা দাদায়,
ভরেছে কিছু না দিয়া, মজেছেযে মম হিয়া, তার প্রতি অতিশয় আস্থা ও শ্রদ্ধায়,
মনের কোণে রাখিল যতনে অতি গোপনে যাহা সে লুকায়,
পাশ করিলে সে, ভেবে আমি দেখবো শেষে, যাচাই ও বাছাইয়ের সব পরীক্ষায়,
বাড়তি আরও কোন দায়, তারে দেওয়া যায় কি না যায়, রহিল ডুবে সে হৃদয় তলায় মধুর ঐ ভাবনায় ।
মনে নানা জল্পনা কল্পনা,
অজানা স্বপ্ন আশার শুরু হলো এক জালবোনা,
মন কখনও কখনও হয় এমন, শোনেনা সে কারো বারণ কিবা নিষেধ-মানা,
তারে আরও ভাল করে,
হলে পরখ করা গোপন সে কষ্টিপাথরে,
মনটা যেথা রলো পড়ে বলো কি করে তারে আনি ধরে মিষ্টি সুখের আশায়,
নিভৃতে নিজের তরে যতনে কিছু করা, মনেতে প্রেমের পিরামিড গড়া, অনাগত আগামীর অপেক্ষায় ।
নিভাজ ত্বক, দৃষ্টি তীক্ষ্ণ, গহীন ও প্রতুল,
মোখভরা ঘন সাদা চাপদাড়ি,
মন চায় কেন হায়, তার কাছে ছুটে গিয়ে হারি,
মনেহয় বাতাসে ভাসে, তা উড়ে আর হাসে একগুচ্ছ ফুল,
কাঁচাপাকা কোঁকড়ানো ও কাঁধ অবধি এলোমেলো বাহারি লম্বা তার ঝাকড়া চুল,
তাতে বলো কার কি ক্ষতি,
হয় যদি সে সহজ সরল সৎ সুস্থ-সবল ও সুবোধ মতি,
কেন হবেনা বলো শ্রদ্ধা ভক্তি আস্থা বিনয় ও নির্ভরতা হেন আদর্শের প্রতি,
এমন সুজন মিলে কয়জন, সত্য বলা সুপথে চলা ও না করা কোন অন্যায়, অপরাধ ও ভুল ।
নহে সে ওরে ভান্ডারী,
তারই প্রিয় গোলাম, জাহানের যে স্রষ্টা-পালক ও একক কান্ডারি,
জ্বেলে দীপ্ত মশাল প্রাণের আশা ছাড়ি,
আঁধারে ভরা ঐ গহীন সাগর বনে যারা ধরেছে পারি আড়াআড়ি,
হতে পারে অগ্রে চলার ও অন্ধগণে পথ দেখাবার, দায় যে কাফেলার সে তাদের প্রথম সারি ।
অতিশয় তাড়াতাড়ি,
দূর্গম, দুস্তর ও অচেনা ঐ সুদীর্ঘ পথটা দিতে পারি,
দৃষ্টি টুটে যায়রে ছুটে গহীনে ও সুদূরে, মেঘেরে হারিয়ে উড়ে, সুনীল আকাশের অসীম সীমানা ছাড়ি ।
চুপকরে যেন শুধু তাকিয়ে দেখে,
তাই লয়ে সারাদিন কিজানি সে লেখে আর লেখে,
ফুটাতে বুঝি খোদার জমিনে সত্যের শতকুটি সুন্দর ও সুরভিত ফুল,
শোভা ও সৌরভ, মধু ও ফল, তাতেই দান তার হয়নি অবসান, রয়েছে তার বীজ অতুল,
আলো ও ভালোর গড়ে বীজতলা করিতে ক্ষেতিচাষ ও সকলের শান্তির বসবাস, যেথা সব বিজয়ের মূল ।
যারা মিথ্যা, মন্দ ও ভুলেতে মশগুল,
একেবারে ভিন, নহে রবিন্দ্রনাথ কিবা ওরে নহে সে নজরুল,
একজন একেশ্বরবাদী, খোদার পূজারী জবানে ও অন্তরে যার শুধু আল্লাহ ও রাসুল ।
পর্ব – ১৬
না করে দুনিয়ায় ঢের সম্পদ ও গাড়ী-বাড়ী,
লোকে বলে বিদ্রুপের ছলে, জীবনের প্রতিযোগিতায় সে নাকি গিয়েছে হারি,
আলো ও ভালোর দিশারী,
প্রিয় নবীজীর একজন ভক্ত ও অনুসারী,
প্রসন্ন বদন, চলন তার ধীর-স্থীর, গম্ভীর ও অতিশয় রাশভারী,
লক্ষ্য তার মালিক হবার, এ জগত যখন সবে নিঃস্ব কাঙাল হবে শূন্যহাতে যাবে ছাড়ি,
পাহাড়ী ঝর্নার ঝিল বাগানের ঘের, ঐ দূর আকাশের রাজকুটুমের সাজানো বিশাল ঐ সে প্রাসাদবাড়ী ।
শেষ নেই তার ঐ সোনালী আশার,
ক্ষুদ্র দান ও সামাণ্য পুণ্যের বিশাল ও অসীম ঐ উপহার,
ভজন, পূজন ও বিশ্বাসে দরিয়া পার,
লভিলে কভু বিনামূল্যের ঐ ভক্তি, বিনয়, আরাধনা ও উপাসনার,
সামাণ্য দানে পুণ্য এক পাহাড়,
কতজনে পেয়ে যাবে না চেয়ে অনায়াসে মহারাজার,
মহা পুরস্কার, করে জীবের একটু সেবা কিবা ক্ষুদ্র কোন কল্যান ও উপকার,
বিনিময় ও প্রতিদান তার, অনেক বেশী দাম যার, পাবে কবে নিলামে কিনার এমন বিশেষ ছাড় ।
মহান খোদার এক নগন্য গোলাম,
কেমনে হতে চায় তার একজন অতি প্রিয়জন সুহৃদ ও সাম,
সারা জাহানের এক মালিক আর,
দুনিয়ার যত ভক্ত, বিশ্বাসী ও অনুগত গোলাম তার,
কেমনে পায় এক গুনাহগার,
কেন এত ভরসা অপার, বুঝেছি বুঝি সম্বল তার বিধাতার করুণা ও ক্ষমার ঐ মহান অংগীকার ।
ভালটা অসীম ও অপার,
যেমনই জোতি ও অরুপ ঐ ভুবন ভরানো বাহার,
যদিরে ভাগ্যে জুটে, মন্দটা সাফ করে টুটে, হয় তা যত তাড়াতাড়ি,
আরশের শীতল ছায়া সীমানায়, কিনবে ও মালিক হবে যদিরে পায় কল্পনার ঐ সে বাগানবাড়ী ।
হতে পারে তা এক সিজদায়,
নাহয় বসে চড়ে, অদেখা ঐ চলন্ত সোনালী সিড়িটায়,
এখন বুঝি তাই সে হায়,
শির থুয়ে চরণে ও মোখ করে কেবলায়,
বুকভরা ভরসায় আর ঐ তার একখানা লক্ষ্য ও সোনালী আশায়,
মরণে সে, শক্ত করে হাতের ঐ রশিটা ধরেই দূর আকাশে, চির জনমের দিবে অসীম সুখের পারি ।
বিনাদামেই নাকি সে তা কিনবে,
একাকি হেটে গেলেও ঐ অচেনা পথটা নাকি সে চিনবে,
মিথ্যে নয় হলে বিজয় ঐ ঠিকানা,
মহারাজার ঐ সে কুটুমবাড়ী বেহেস্তখানা,
হবে যার শুধু একেবারে তার একার চিরস্থায়ী সে মালিকানা ।
বানিয়ে কুমার ও কুমারী,
অবাধ ও স্বাধীন দিবে তাদের সবারে ছাড়ি,
তা নহে বিষয় মম ভাবনার,
দিয়ে ঐ সবারে নব যৌবন উপহার,
দুনিয়ার হাজার পরীক্ষায় করে তারা পাশ,
অগণিত হুরদের সনে হবে দেখা, যেথা হবে একসাথে তাদের সকলের বসবাস ।
পর্ব – ১৭
এসব কথা কার হলো বিশ্বাস আর হলোনা কার,
ভোগ-বিনোদন যত চাহে মন যেমন ইচ্ছে যার,
যত রংগ হবেনা ঐ নেশা ভংগ, অবিরত মধুময় হর্ষ তামাসার,
তারা সবাইযে হবে তার সংগী যৌনতার, না মানা হার সেবাদাসী ও প্রিয় তাবেদার,
ওরে যার নামে, তা একেবারে বিনাদামে, হবে বরাদ্দ রাজকুটুমের পরম সুখের ঐ স্থায়ী আবাসখানা ।
সহাস্য ঐ চাঁদ বদন,
হবে পরম মধুর সুদীর্ঘ ঐ মিলন,
গুনগুন কন্ঠ সুধায় চারপাশে ঘুরঘুর বিচরণ ।
ঐ সবরের উপহার হবেযে এমন,
চোখ ও দেহমন, না ভরিবে নেশার মাতন যতক্ষণ,
আহা এক পুরুষে, কেটেছে হুতাসে ওরে যেসব নারীর দুনিয়ার জীবন,
দুরন্ত তার রতি বাসনার সংগী হবে সারাক্ষণ, মধু পিয়াসী পালাক্রমে আসি যুবাহুর চল্লিশ জন ।
হবে বন্ধুর ভাব খেলবে পাশা তাস,
নহে সংগী বিহন, মায়াময় ও মধুময় ঐ বসবাস,
হবে প্রণয় ও শত বিনোদন যখন যেমন অণুক্ষণ চাহে যার মন ।
আসা-যাওয়া, ধীরপদে আনাগোনা,
নেই আর কোন কাজ, পেরেশানি, তাড়না ও ভয়-লাজ কিবা কোন ভাবনা,
রংগ বাসনার ছবি আঁকা,
বাঁকা আঁখির ইশারাতে শুধু কাছে ডাকা,
অধীর প্রতীক্ষায় যেন ঐ যাদুর নেশায় দিবানিশি বসে থাকা,
আয়োজন রবে,
যার যেমন ওরে পছন্দ হবে,
নহে কমকম অঢেল সহস্র রকম বিনোদন, পানীয় ও দারুণ মজার সহস্র খানা,
হবে অভিসার যেমন ও যত ইচ্ছে যার, নেই কোন আর বিধি-নিষেধ, বাধা কিবা কোন বারণ মানা ।
প্রভু আর কেড়ে নিবেনা,
কভু তা ছেড়ে যেতেও কেউ আর তারে বলবেনা,
নহে জমিদারী, ঐ বাগানবাড়ীখানা,
কাজ নেই, চারপাশে শুধু বিনোদন আর নানান রকম খানাপিনা,
সাজানো ও ছড়ানো, নেই কোন নিষেধ মানা,
নহে মিরাসি ওরে নাহিযে তা কোন ইজারাদারী নিরেট নিখুঁত খাটি চিরস্থায়ী মালিকানা ।
দুটি চোখ জুড়ানো,
আর হরষে উদাস শুধু্ ঘুরে বেড়ানো,
পুলক ভরানো কত শিহরণ ও ভোগ-বিনোদন হেথা ছড়ানো,
কতজনের বলো জীবন বিদায় হলো, চিরসত্য সে খবর আজও তবে ওরে কেন নাহি জানো ।
কে সে দাতা মহাপ্রাণ,
কার এত অফুরান বিনামূল্য নেয়ামত ও দান,
কি লাভ তার কেন সে খাওয়ান,
আর বিনিময়ে তার গোলামের কাছে কিইবা ওরে তিনি চান,
প্রাসাদে বাহিরে, সবারে রেখেছে ঘিরে, মাটিতে আকাশে জলে ও বাতাসে বিছিয়ে ছিটিয়ে ভরানো ।
পর্ব – ১৮
দিগন্তহীন ও সীমানাহীন,
নাই কোন বকেয়া, হবেওনা আর কোন দায়-ঋন,
সারা দেহমন পুলকে পূরানো, যে সুধা হবেনা উনা কিবা শেষও আর কোনদিন,
ঝিল বাগানের বিশাল ঐ প্রাসাদ বাড়ী,
যতদূর চোখ যায় বহু ঘুরেও শত চেষ্টায় আমি পারিনি হায় দিতে পারি,
আকাশের মালিকের বিলাসে ভরানো তারই সাজানো রয়েছে অগণিত ফুল ও ফলের বৃক্ষ সারিসারি ।
মনকে আমি গোপনে শুধালাম,
মনে হলো, হাতে বুঝি আমি এক রতনই পেলাম,
জানলে বলোনা ওরে, খোদার সে নেয়ামত আসলেযে তার কত দাম,
কেউ পায় কেউ পায়না, আবার কেউ কম কেউবা বেশী, যখনই বিনাদামে তা হয় বা হবেরে নিলাম ।
তার আদব, বিনয় ও বচন,
ভরিল আমার দুই কর্ণ, নয়ন ও সবটুকু মন,
মনে হলো কেন মোর, যেন আগন্তুক ঐ ভদ্রলোকের আছে,
এমন কিছু সম্পদ ও ধন, যা নেই আমার কিবা অনেক বিদ্যান ও বিত্তশালীর কাছে ।
একপাত্রে অনেক গুণের সমাহার,
তাই বুঝি মোর কাছে ঢের সমীহ পাওনা হলো তার,
রয়েছে যার ঠিক এমনই একটা প্রভাব ও অনেক চড়া দাম,
মন আমার মনেরে প্রশ্ন করে, আমি কি তবে ওরে সে অপেক্ষায়ই বসে ছিলাম,
এতদিন তার লাগি, সহস্র রাত্রি জাগি, পরম শ্রদ্ধায় এখন আমি যার সালামের জবাব দিলাম ।
আবেশে আমি যেমনি ছিলাম,
তাদেরকে বসতে বলে ঠিক তেমনি ঠায় দাড়িয়ে রলাম,
জানিনা তাকিয়ে থেকে সে কোন মুগ্ধতায়, গোপনে আমি যেন কোন সুদূরে হারিয়ে গেলাম ।
অনুভব করিলাম দারুণ এক টান,
ভাটির বয়সের প্রেম হঠাৎ যেন আজিকে বহিতে লাগিল উজান,
অল্প সময়ের আলাপ-পরিচয়, করালাম হরেক রকমের নাস্তায় তাদেরকে আমি চা পান,
চলে যাবার সনে আমি কেমনে বললাম, অ ভাইজান মেহমানকে নিয়ে চারটা ডালভাত খেয়ে যান ।
বললো তখন সে,
পিছন ফিরে তাকিয়ে মৃদু হেসে,
খাবোতো নিশ্চয়,
অনেক খেয়েছি, তাই আপা আজ আর নয়,
সময় হলে কিবা যদি খোদায় চান,
ডাক দিলেই আসবো চলে, আমিতো নয় কোন মেহমান,
অন্য কোন একদিন, যদি কিসমতে থাকে ও ভাগ্যে হয়, দাওয়াত পড়ে আর বিধাতায় খাওয়ান ।
কে বলেছে নয়,
দামী বা কমদামী তা কেমনে হয়,
ধনে নহে কথায় ও কাজে মানুষের ছোটবড় পরিচয়,
সে সময় মিথ্যে নয়,
হচ্ছে ক্রমশঃ দ্রুত সম্মুখীন বুঝবে সে দিন কার কত ঋন, আর হয়েছে আসলে কার জয়-পরাজয় ।
যখন আসামী হবে,
মহারাজার মহাআদালতে হিসাব লবে,
সবার পাপ-পুণ্যটার, হয়েছে ও রয়েছে কতটুকু কার কি দান-অবদান,
দামী-কমদামী সেতো লোকের বানানো মিথ্যে ধারণা ও বুলি, গেলে চক্ষু খুলি দেখিবে সবাই সমান ।
পর্ব – ১৯
বড় মেনেজার,
তা কিছুটা যেন রহস্যের ব্যাপার,
এখানে চাকরী করছেন আজ ছয়/সাতমাস হয়ে গেছে পার,
এখনও একবারও সে নাকি ছুটি চায়নি বা নেয়নি, কোন্ কারণে বাড়ীতেও যায়নি তার ।
পড়লাম এ কোন্ ধাঁধার চক্রবাঁকে,
এখনই লোকে নাকি নানা কথা বলতে শুরু করেছে লয়ে তাকে,
দেখার মত কিছু নয় তবুও দেখে,
কেনযে অসীমে হারিয়ে যায় সে মাটিতে থেকে,
চোখ আছে তবে যেন মন নেই, নিজেরে সদা লুকিয়ে রেখে ঢেকে,
কোন গহীনে কেউ নাহি জানে হারিয়ে যায়, ফিরে আসে ফের, কোন্ ভাবেতে সে ডুবে থাকে ।
সে নাকি খুব কম কথা কয়,
কোন আড্ডা-গল্পে কখনো নাহি সামিল হয়,
চা, পান ও সিগারেট থেকেও নিজেই সে অনেক দূরে সড়ে রয়,
সারাদিন এটাসেটা কিছু নাহি খায়, কম হাসে ও নিজেরে চায় যেন সে ওরে দূরে সড়িয়ে রাখে ।
শুনেছি নাকি সে খুব ভাল রাইটার,
কেউ বলে লেখে সে অতিশয় দীর্ঘ তবে তার লেখা নাকি চমৎকার,
অসীম দিগন্তে ও গহীনে দেখার,
অন্তরালে নাকি, সুতীক্ষ্ণ একখানা চোখও রয়েছে তার,
শুনেছি সে মানুষ ভাল, কাজে পাকা, সৎ, অতিশয় দয়ালু, মহৎ ও উদার ।
শুধু তাই নয় এক আধারে তার,
রয়েছে লুকানো আরও অনেক অজানা গুণের সমাহার,
কেউবা তামাসার ছলে মজা করে তা’ও বলে, সে নাকি একজন মস্তবড় চিন্তাবিদ ও ফিলোসোফার ।
গহীনে তার গবেষণ,
আকাশে, মাটিতে ও জলে সুবিশাল যে ভুবন,
স্বর্গ ছেড়ে কেন মাটিতে এসে, এক মুসাফির বেশে আজব এ ছোট্ট ভ্রমণ,
মাটি হতে মানুষ করিয়া সৃজন, সেকি তবে অকারণ, বিধাতায় কেন করিল মাটির এ দুনিয়ায় প্রেরণ ।
মস্তবড় শিক্ষক সে একজন অতিব বিচক্ষণ,
মন তুমি মনেরে প্রশ্ন করো, দেখিবে সঠিক জবাবই দেবে তোমার বিজ্ঞ মন,
করিও তারে সাদরে খেয়ালে ও দেমাগে তড়িৎ গ্রহণ,
পাবে অদেখা হাওয়াই রথ, ওরে ঐ পথটা তোমার ঘন আঁধারে ঘিরিবে যখন,
কেউ বলবেনা আর কানা, হবে সব জানা ওরে তখন,
কমবে বোঝার ভার, লয়ে কে তুমি আর কেনইবা হলো মানুষের দুদিনের এ মাটির জীবন ।
তারে যাই বলো আর,
একজন দার্শনিক কিবা ফিলোসোফার,
রুদ্ধ থাকা তার সে ছোট্ট ঘরের সব কয়টি জানালা ও দুয়ার,
সেযে এমন সেরা মানুষ একজন, মন ভুবনের আপন ঘরের আপনি খুলেছে যার ।
মোখ দেখা স্বচ্ছ আয়নার মতন,
যতনে ঢেকে রাখা এমনই একটা মন ও গভীর মনন,
নির্বোধ অবিবেচক মানুষগণ,
অসচেতন ও অসাড় বা অচেতন যে আত্তার, একবার ওরে হয়েছে জাগরণ ।
পর্ব – ২০
আগাম জানা আর,
পশ্চাতে তার ও অনেক দূরে দেখিবার,
অন্তরালে ফুটেছে যার, দেখা যায়না এমন একখানা অপলক সুতীক্ষ্ণ তৃতীয় নয়ন ।
বিনয় ও সুবচন,
নিত্য যাহা ওরে সত্য চিরন্তন,
অল্প কথন, মিতাহার ও স্বল্পক্ষণ হয় যার নিদ্রা যাপন,
পঞ্চ ইন্দ্রিয় তার আকাশ বাতাস মাটি ও পানি হতে সদা করে বিধাতার নেয়ামত আহরণ ।
ইচ্ছে তার যদিরে হয় পূরণ,
আলো আর ভালোটারে সে বুকেতে করে ধারণ,
বিলিয়ে দেবে, সাদরে নেবে তা ওরে টেনে লুফে শিরে তুলে যেই জন,
সহজ সরল পথ ও বেশ-ভূষণ, জীবনটা যখন যেখানে যেমন অতি সাদামাটা ও সাধারণ ।
সদা সত্য কহন,
সহন, বহন ও নিজেরে করা শাসন,
অনুভবে ও চেতনায় হেন সুবিজ্ঞ ও সদা সচেতন রহে যেইজন ।
অরুপ অযুত রঙ ও বাহার,
সে রুপ দেখার ঐ চোখ আছে বলো কজনার,
ভরাও দেহমন হও বড় করে দরশন নিযুত কোটি যার রকম ও ধরণ,
অনিন্দ সুন্দর মনোরম ও মনোহর আর মহামূল্যবান তার কাছে বিধাতার সকল তুচ্ছ ক্ষুদ্র সৃজন ।
পড়ে, শুনে ও দেখে দেখে,
বিধাতার অবারিত বিশাল এ বিশ্ব প্রকৃতি থেকে,
অবিরাম অবিরত এক সুবোধ ছাত্রের মত ওরে সবার অগোচরে, চুপকরে সে শুধু শেখে ।
দরশন বিনা কেউ হয়না কবি,
স্বাক্ষী তার অসীম গগণের সব তারা ও শশী রবি,
যেথা যাহা সে দেখে, বসে বসে তা কাগজে লেখে, সত্যযে তার সবই,
আড়ালে থাকে কলমে আঁকে নিরাকার এক বিধাতার সহস্র ঐ রুপ-গুণ আর অপার দানের ছবি ।
আবু হকে বলে,
সেতো ওরে নাহি কভু যাবে বিফলে,
নহে ভাবনায় তাতে কি আসে যায়, কেউ থাকবা নাথাক তার দলে,
তাদের ভাষায় পাগল একজন,
হোকবা তাই, লোকে তারে যে যাই বলে বলুক হয় যার ইচ্ছে যেমন,
তাতে কি ক্ষতি, কিবা আসে যায়রে তেমন,
কেউ বলে তার ষোলআনা বিফল জীবন, কিবা কারো চোখে সে সুফি সাধক সুজন জ্ঞানী ও বিচক্ষণ ।
সেতো নহে ওরে মন্দ কাজ কিবা কুমতি,
নিজের পছন্দে বিয়ে করায় আপত্তি কোথায় কিসেরইবা কার ক্ষতি,
কারো জীবনের আছে নিজস্ব কিছু লক্ষ্য ও গতি,
প্রাপ্তবয়স্ক ছেলেমেয়েরা বেছে নেবে তাদের জীবন সংগী নিজ বিবি কিবা পতি ।
লয়ে তাদের ঐ সন্তান,
বাবামায় আজীবন রহে পেরেশান,
চিরকাল তারা যেন ছোট আর অবুঝই রয়ে যায়,
শিক্ষিত সচেতন বাবামা ও অভিভাবকের চোখে তারাযে হায়, ঝোপের শিরে জড়ানো কোমল স্বর্ণলতি ।
পর্ব – ২১
তাই নিজেদের ঐ দায়টুকু তাদেরে বুঝি, সারাক্ষণ শুধু ভাবায় ও তাড়ায়,
চিন্তিত মন নাজানি কখন কোন ভুল করে বসে, তাদের ঘাটতি অনেক সবর ও চেষ্টায়,
কেউ উদাসীন, কোন দরশন নেই তবে আছে আবেগ ও মোহ তাই প্রচুর ঘাটতি আস্থা ও নির্ভরতায়,
অস্থির হয়ে যান, নাজানি কখন হয়ে যায় আবার কোন লোকসান, জীবনে আসে কোন দূর্বিপাক দূর্গতি ।
না তাতে তেমন কোন ক্ষতি নেই,
তবে তারা কোন প্ররোচনায় পড়ে যদি সত্যই হারিয়ে ফেলে খেই,
আছে হেন কত ভুল দিয়ে যার আজীবন মাসুল, নেই কোন পূরণ বা সমাধান কিছুতেই,
বয়সের অপরিপক্কতায় জাগ্রত হয়না দায়, তাই সে ভাবনাগুলি ভাবায়, ঐ সম্ভাবনা কেমনে উড়িয়ে দেই ।
আত্তবিশ্বাস কমে যায়,
উদ্যম হারিয়ে ফেলে এগিয়ে যেতে ও ঝুকি নিতে নাহি চায়,
এমনওতো হতে পারে ও দেখেছি তাই কত ঘটে হয়,
চতুর্বিষয়ক দুরদর্শী মনন ও বিবেচনা তাদের তেমন বিচক্ষণ, তীক্ষ্ণ কিবা সুগভীর নয় ।
একটু ভুলে হেরে যাওয়া কত জীবন আছে,
মায়েরা তাদের কন্যার লাগি তাই সুযোগ্য পাত্র যাচে, খুঁজে ও বাছে,
কনেরাও পিছিয়ে নেই, দেখেছি অর্থ বিদ্যা ও রুপটাই হয় সংগী বাছাইর মানদন্ড তাদের কাছে ।
এই করে করে হায়,
নিভৃতে অজানায় বেলা বয়ে যায়,
ধূমকেতু হয়ে জ্বলে ক্ষনিকেই তা ঐ মহাশূন্যে হারায়,
চল্লিশ পার হলে আর, কি থাকে জীবনের শেষে, কে বলো বিয়ে করিতে চায় ।
তাই দিয়ে আসলে কি হবে হয়,
নাহলে কেন বলো জীবনের এ ব্যর্থতা ও পরাজয়,
দেখি তাদের রুপ যৌবন বিদ্যা ও ধন ঢের আছে তাদের কাছে, কথা মিথ্যে নয়,
সব থেকেও ঢের কেন বিয়ে করা নয়,
সে কি তবে ওরে নয় জীবনের অবক্ষয়, সোনার জীবন কেনরে এখন হলো বিষময় ও যাতনাময় ।
ভাবেনা একবারও চক্ষু খুলে,
গহীনে নিরবে কেনরে তবে কার কোন্ ভুলে,
জীবনে তালাকও আসে হয়ে তা এক বিপর্য্যয়,
নিয়তির নিয়মে কত জনেরইতো ঘর ভাংগে ও তারাযে বিধবা হয়,
তার উপর লাখো কুমারী মেয়ে, বিষন্নতায় মরে যৌবন হারিয়ে, যখন আজীবন তারা অবিবাহিত রয় ।
বিয়ের বয়স পার হয়ে যায়,
কে নেবে বলো জীবনের এ ব্যর্থতার দায়,
সে কি মিছে প্রয়োজন আছে, তাই দেহমন সংগী চায়,
ছোট্ট এ জীবন সংসার, একাকি বলো তার কি দাম আছে দুদিনের মায়া ও মোহের এ দুনিয়ায় ।
প্রকৃতি থেকে শুধু নিয়ে আর পেয়ে হায়,
অজানায় ও অবহেলায় কতযে বেড়ে গেছে কার বকেয়া ঋন-দায়,
এ জগত ও মহাসৃষ্টিকুল নিরবে রহে ব্যাকুল, যার কাছে ফুল ফল বীজ ও চারা কিছুই নাহি পায় ।
আক্ষেপে ও অভিমানে যদি এ পৃথিবী কভু শুধায়,
ঐ গাছ যদি ওরে একদিন, লয়ে তার মাথাভারী ঋন, খড়ি হয়ে পুড়ে শেষে ছাই হয়ে যায়,
ওরে বোকা মূল্যবান এ জীবন হলো যার অবসান ভুলে ও ধোকায়,
সকলই রলোযে বাকী, দেখি এখন সবই মিথ্যে ফাঁকি, আর শূন্য হাতেই যখন হলো তার চিরবিদায় ।
পর্ব – ২২
সবাইতো চায় সাফল্য ও বিজয়,
নাহলে তবে কেন কারোকারো হয় ভরাডুবি ও পরাজয়,
তাই বুঝি অভিভাবকগণের মনে জটলা বাধে অজানা অগণিত দূর্ভাবনা ও ভয়,
বাবামার বাছাই যে সঠিক তাওতো নিশ্চিত নয়,
সে কিরে তবে হয়তো এমন একটা কিছু্ই হবে সমূহ দ্বিধা ও সন্দেহের বিষয়,
যদিরে শেষে তারা কভু এমন, যার কোন আর নাইরে পূরণ, ঐ খেসারতে দুইজীবনই ক্ষতিগ্রস্ত হয় ।
ঘরটা তাদের ভেংগে যায়,
আপদ, নিদান ও কষ্টে পড়ে হয়ে যায় কতজন অসহায়,
না যদি খাটি বন্ধু হয় বিবি ও পতি,
বলো তবে পোষাবে কেমনে কবে হায় তাদের ঐ সে ক্ষতি,
পরম প্রিয়জন বন্ধু আপন যদি হয়ে যায় পর ও জেলখানা এই ঘর কিবা গোপনে অসৎ ও অসতী ।
তাই কোন তড়িঘড়ি নয়,
ধীরে সুস্থ্যে ভেবে-চিন্তে ঐ রশিটা ধরেই এগুতে হয়,
রয়েছে তার সহস্র প্রমাণ,
সুখ-শান্তিযে দয়াময় আল্লাহর দান,
বুড়ো পিতামাতা না হলেও তারা ওরে তেমন বিদ্যান,
সত্য জানি তারাই জ্ঞানী, বিচক্ষণ ও সদা সন্তানের চান মংগল ও কল্যাণ,
সব সন্তানের হোক, তাদের অভিভাবকগণকে যথার্থ সম্মান ও অধিকারটুকু প্রদানের সাধ্য ও সুমতি ।
জীবন মানেতো বিধাতার বিধানে জীবনের চাষ,
সুখ-দুঃখ সব মেনে লয়ে, আলো ও ভালোর দিশারী হয়ে দুদিনের এ ধরায় বসবাস,
মহারাজার কেমন গোলাম তারা মহামনিবের কেমন দাস,
তবে সৃষ্টির সেরা কেমনে হয়, ওরে না হলে তার সমুদয় দায় সমাপন ও না করিলে সব পরীক্ষায় পাশ ।
কোন সে নেশার ঘোরে তারা হেন মগন যেন অসাড় অচেতন,
নব সৃজনের তরে, বীজতলা গড়ে না করে, কোন বীজ বপন ও তার চারা রোপণ,
আর না করে তার, মহাসৃষ্টির যতন ও লালন পালন কিবা কোন উন্নয়ন, উল্টো দেখিযে মহাসর্বনাশ ।
কে সে মহান,
এত নেয়ামত ও মৃত্যুহীন প্রাণ,
কে ও কেন করিল দান, যদিও ছোট্ট এ মাটির জীবনখান,
যত প্রশ্ন তত উত্তর, হাজার সমস্যারও রয়েছে সুন্দর একখানা তার সমাধান ।
মোহ-বিভোরে,
মাটিতে থেকে আকাশে উড়ে,
শোনতে পাই, নিদানের ঘন্টা বাজে অনেক দূরে,
চক্ষু মেলে ও বিবেক দিয়ে, কেনরে তারা জগতটারে দেখলোনা একটু ঘুরে,
হয়ে তারা মাতোয়ারা,
মহা এ জীবনটার হিসাব ছাড়া,
দুদিনের এক পরবাস না করে তারা বিশ্বাস, পাতন ও পতন করে ভোগ-বিলাস ও হর্ষ মাতন উল্লাস ।
যাদের কোন অভিভাবক নেই,
তারা নিজেরাই যেন হয়েছে তাদের বিকল্প সেই,
গুরুহীন গুরুজন, স্বাধীনতা ভরা মন, তাই যেন দারুণ মজা সবকিছুতেই,
খোলা আকাশ ও মুক্ত বাতাস, মেঘেতে ভেসে ঘুরে বেড়াবে যেথা মন চায় চোখ যায় যার সেদিকেই ।
পর্ব – ২৩
দেখেছি শত আপদে নিদানে,
গুরুজন বিনে বুঝিবে তারা তা বলো এখন কেমনে,
জীবনের ক্রান্তি লগনে গোপনে ঐ ক্ষণে মরমে হয় কত আফসোস ও আকুতি,
তা যাই হোক ভাই, আবু হকে কহে তাদের সবার যেন ঠিক রহে জীবনের লক্ষ্য, পথ, প্রাপ্তি ও গতি ।
ঘুরছি আমি যার সন্ধানে,
ফিরে আসি তার যাচাই করিবার গুণমানে,
মন দিয়ে কথা শোনে, সংগী হয়ে গোপনে যেন কাছে টানে,
অতি কম কথা কয়, তা দেখে যেন এমনই মনেহয়, আসলে তা নয় সে কিছু নাহি বুঝে কিবা জানে ।
বিষয়টা আসলে ঠিক নহে তেমন,
নিরবে সে একাকি নিজেরে অন্তরালে লুকিয়ে রাখি, করে সুদূর বিজনে বিচরণ,
কেজানে নাকি সে ভিতরে ভিন, বাহিরেই শুধু তার গহীনে অচিন ভাবটা এমন,
হয়তোবা হবে সে, দূর বিদেশে সফরে এসে, গভীর মগন তপসে, ঠিক এমনই মানুষ কেহ একজন ।
শুধু যে জন দার্শনিক,
খুঁজে পেয়েছে তার সঠিক পথ ও দিক,
পেরেশান দিশাহারা হেন কত যাযাবর মুসাফির পথহারা পথিক,
কি আসে যায়, জীবন চলায় ন্যায়-অন্যায়, পাপ-পুণ্য, হালাল-হারাম ও ঠিক বা বেঠিক ।
বাকীদের ছোট্ট মাথায়,
শুধু সারাক্ষণ ঘুরপাক খায় ও তাদেরে ঘুরায়,
ধনীদের সনে ঘুচাতে ব্যবধান তাদের সমান অর্থকড়ি তাই তারা পেতে চায়,
আরও ধন ও ভোগ-বিনোদন কেমনে কোথা পায়, হার না মানা দেমাগে সেই মোহ-বাসনার হিড়িক ।
চিরকাল ওরে বানিজ্য বসতি,
আছে কেনা-বেঁচার ঠকজিত কিবা লাভক্ষতি,
ভাগ্যবান সে জন যার ফুটেছে নয়ন বা হয়েছে জাগরণ ও সুমতি,
কেটেছে ভোগের নেশার ঘোর, আলো ও ভালোর একখানা বীজতলা গড়েছে যেইজন ।
যে বিদ্যায় মানুষে মানুষ হয়,
কে পেয়েছে তার সন্ধান কিবা তার প্রকৃত পরিচয়,
চলো গিয়ে শুনি জীবন কারে কয়,
শুধু পুঁথি বা কোন বিদ্যাপীঠেই তার পঠন, উচ্চ শিক্ষা ও ডিগ্রী নয় ।
বিদ্যান লোক সাধারণ,
জানিনা কোনটাযে তাদের সফল জীবন,
কে জেনেছে তা পেয়েছে সে বারতা, কেমনে আসলে হয় সাধন ও কোনটাযে পরাজয় ।
যদিরে করে বাড়ী-গাড়ী,
এ জীবনটা আমার না’ই সাজাতে পারি,
বুঝি হয়েছে পরাজয় আর সমাজের কাছে আমি গেলাম হারি,
নেই যার টাকাকড়ি বস্তাভরা কাড়িকাড়ি,
জানেনা আসলে তারা, কতটা পথহারা ও কেনযে দিশাহারা আর কারে কয় আসল বিজয় ।
হয়ে একজন মনোযোগী ছাত্র সে,
বিশ্বটা বেড়ায় ঘুরে, দিন কিবা রাত দুপুরে মেঘেতে ভেসে,
সময় যদি ফুরিয়ে যায়,
এ জীবনটাকি কেউ ওরে, আর কভু ফিরে পায়,
কেউ কি ফিরে আসে আর,
ছেড়ে গেলে মাটির দুনিয়ার সব ধন-জন, প্রিয়জন পরিবার বাড়ী-গাড়ী ও ক্ষমতাটা তার ।
পর্ব – ২৪
একবার চলে গেলে শেষে,
দেখিবে হিসাবের ঋনে সকলেই গিয়েছে ফেসে,
নিঃস্ব কাঙালের বেশে, সবকিছু ফেলে থুই গিয়ে ঐ অচিন বিভূঁই দিগন্তের মরণের দেশে ।
ডাকে তারে ওরে তড়া করে আয়,
ঐতো বোঁকা কে যেন ডেকেডেকে তোরে হায়,
বলে বিচলিত ও বিষন্ন গলায়, ওরে বেলাটাযে বয়ে ঢলে যায়,
লেখা রয়েছে সব যার, বিশ্বজোড়া তার মুক্ত পাঠশালার বিশাল ঐ খোলা বইটায় ।
কৌশলে গোজামিলে কোনমতে তারা জিতে যেতে চায়,
ঘুরেফিরে বারবার অলক্ষ্যে সবার, যে যার মত করে তার শেষ করিতে মাথাভারী দায়,
লোকের অদেখায় তার গমনাগমন,
যেথা কেউ নাই ওরে সেই রুপ-সাগরে সদা তার বিচরণ,
আকাশ-মাটির এই মহাপ্রকৃতির খোলা ঐ গুরুধামে যার অসীম অপার অধ্যয়ন ।
দেখেছি জেনেছি তবে পারিনি বলে লোকের চোখে রয়েছি বিফল,
এ যুগে তারাই বেশী স্মার্ট ও বেশী বুদ্ধিমান, যাদের জানা বেশী ছল, মিথ্যা ও বেশী অপকৌশল,
চালবাজি প্রতারনা কারচুপি ও ধোকা,
ঠকবাজি মিথ্যা ফাঁকি ও আত্বসাৎ বা চুরি করে বাজিমাত হয় দারুণ সফল, সবারে বানিয়ে বোঁকা ।
নহে সে বুদ্ধিজীবি, নেই বুদ্ধির ঢল,
এমন দক্ষজনের নাহলে কেনরে হয় জীবনটা অঁচল,
তবু এই বয়সেও প্রেরণা ও কর্মোদ্দম রয়েছে কতইনা অঢেল ও অটল,
রয়েছে বুঝি ভাই আজও তার দেহটা সবল ও সঁচল,
তাই যদি না হতো, তবে কি এখনও সে যন্ত্রের মত, কাজের জন্য ছুটে আর হয় এতটাই কর্মচঞ্চল ।
হতেও পারেনি সে ঐ রাজনীতিবিদ,
কেড়ে নেওয়া দূর্বলের অধিকার, মনের সুখ ও চোখের নিদ,
হয়েছে জনতার কাছে ঠক, শঠ ও প্রতারক কুড়িয়েছে রোশানল ও জিদ,
হেন কোন বীর লয়ে ধনু-তীর, যারা কালোটাকার কুমিড় এমন কোন সদয় ও উদার ভাই কিবা বন্ধু-সুহৃদ ।
তাদেরে লয়ে গড়ে একটা ষাঁড়াশি দল,
অশান্তি হরদম দূর্বলের যম হয়ে উগ্র, হিংস্র ও নির্মম বাহুবল,
তাই পুঁজি হয় রুজি আর ঢাল ত্রাসে বেহাল, জগতের যত অন্ধকারের মন্দ সকল,
কেমনে হবে জানা থাকা চাইতো, মধুর বচনে মিথ্যে বুলি আর নকলের গায়ে রঙ মাখানো অভিনয় ও ছল ।
হলো আমারও তাতে, শত প্রশ্নের দারুণ কৌতুহল,
কেজানে এটা তার কোন্ ছল, নাকি কোন ছদ্দবেশ কিবা অপকৌশল,
তবু গোপনে বেড়ে গেলো তার প্রতি আমার আগ্রহ, সহানুভুতি, সম্মান, আস্থা ও মনোবল ।
তারপর একদিন হলো কথা বিনিময়,
মনিব ও মেনেজারের আজও হয়নি কেন ভালকরে জানা পরিচয়,
ছিল প্রয়োজন ছিলযে দায়, তাই খোঁজখবরি ও শুভেচ্ছা ছাড়া তা আর অনাবশ্যক কিছুতো নয় ।
মরহুম জনাব ফয়সাল নূর সাহেবের স্ত্রী মিসেস ফাহমিদা নূর বলছি । আচ্ছালামু আলাইকুম । ওয়া আলাই কুমুচ্ছালাম । মেনেজার সাহেব, আপনি কেমন আছেন । জ্বি মেডাম, ভাল আছি । সরি ভাই, অনেকদিন আপনার কোন খোঁজ-খবর নেওয়া সম্ভব হয়নি । না না ছিঃ ছিঃ এটা কি বলছেন । It’s OK । নতুন চাকরী কেমন লাগছে । থাকার জায়গায় কোন অসুবিধা বা খাবার-দাবারে কোন সমস্যা হচ্ছেনাতো । আপনি বাড়ী গিয়েছিলেন কি, টাকা পাঠিয়েছেনতো, বাড়ীতে সবাই কেমন আছে ।
পর্ব – ২৫
মেনেজার সাহেব, আমার ব্যবসায়িক যেকোন ভাল-মন্দ বিষয় কিন্তু আমাকে জানাবেন । কোন Negative কিছু থাকলেও দয়াকরে তা লুকাবেন না এবং আপনার যেকোন সমস্যা বা প্রয়োজনগুলিও আমার সংগে Share করবেন তাতে কোন দ্বিধা বা সংকোচ করবেন না Please । জ্বি আচ্ছা । সময় করে একদিন বিকেলে চা খেতে আসবেন, দাওয়াত রইলো । জ্বি আচ্ছা । আচ্ছালামু আলাইকুম । ওয়া আলাই কুমুচ্ছালাম । ধন্যবাদ, ভাল থাকবেন । আপনিও যেন ভালো থাকুন ।
আলাপের শুরুতেই মেনেজার সাহেব আমাকে সালাম দিয়ে অতঃপর সব কথায়ই শুধু জ্বি, জ্বি আচ্ছা, হ্যা, না, ঠিক আছে ইত্যাদি সংক্ষিপ্ত বচন এর মাধ্যমে আলাপচারিতা এবং সমাপনান্তে পুনঃরায় তার সালাম গ্রহন করে কথা শেষ হলো । কিছু জিঙ্গাসার না বোধক সরল জবাব, ভদ্রলোককে আমার স্পষ্টভাষী ও সত্যবাদী বলে মনে হয়েছে । তাতে তার প্রতি আমার ভক্তি, শ্রদ্ধা, আস্থা, রহস্য, কৌতুহল ও সহানুভুতি ইত্যাদি সবই যেন ত্রিগুণে বেড়ে গিয়েছিল । সবকিছু মিলিয়ে তাকে জানার আগ্রহটা কেন জানি আমাকে এতই আকৃষ্ট করে ফেলেছিল যে, তা যেন ধীরেধীরে অলক্ষ্যে অগোচরে বৃদ্ধি পাচ্ছিল আর আমার একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়গুলিকেও স্তিমিত করে দিয়ে ভীষণভাবে আমার মাথায় চেপে বসে তা আমাকে সারাক্ষণ তাড়া করছিল বা তাড়না দিচ্ছিল । কি নিয়ে ভাবছি আমি, এ কোন নতুন মাত্রা যোগ হলো । এটা আবার কোন্ ধরণের নতুন রোগ হলো আমার । পরের কোন ব্যক্তিগত বা পারিবারিক বিষয় কেন আমাকে পীড়া দেবে ও পীড়িত করবে ।
তারপর মাসাধিক কাল গত হলো । ইতিমধ্যে অবশ্য দু/চারবার আমার সংগে তার বিভিন্ন ব্যবসায়িক বিষয়ে আলাপ হয়েছে কিন্তু তথাপিও মেনেজার সাহেব অদ্যাবধি চা খেতে আমার বাসায় আসেননি । হয়তো এ বিষয়টিকে তিনি সৌজন্যমূলক কথার কথা ভেবে হেয়ালিভাবে নিয়েছেন, অর্থাৎ তেমন গুরুত্ব দেননি বলে তা ইতিমধ্যে হয়তো ভুলেও গেছেন । অথবা হয়তো তিনি আর একবার নিমন্ত্রণ প্রত্যাশা করছেন কিবা হয়তো সময় করেই উঠতে পারছেন না । নতুবা বাসায় আসতে হয়ত অস্বস্তি বোধ করছেন, কেজানে আসলে বিষয়টা কি বা উপরোক্ত ধারণাগুলির মধ্যে কোণটা সঠিক, তা একবার জানা দরকার ।
অন্য আর একদিন, কথাবার্তার এক পর্য্যায়ে বললাম, মেনেজার সাহেব আপনার কি একদিন সময় হবে, কষ্ট করে একবার এসে এককাপ চা খেয়ে যাবেন আর ঐ ফাঁকে আপনার সংগে গল্পও করা যাবে । আমার ব্যবসা, পবিরার ও সংসার বিষয়ক কিছু আলাপ আলোচনা ও পরামর্শ করার ছিল । দেখুন সব কথাতো আর সবাইকে বলা যায়না, তা উচিৎও নয় । আবার টেলিফোনেও সব কথা বলা হয়না । তাছাড়া আস্থা নির্ভরশীলতা এবং প্রত্যাশার ওতো একটা ব্যাপার আছে । তাই দয়াকরে একদিন আসুননা ।
ঠিক আছে মেডাম, I’m really Sorry, আসলে ব্যাপারটা আমি ভুলেই গিয়েছিলাম । না না ঠিক আছে, এমনতো হতেই পারে তাতে এত সরি হবার কি হলো । তাছাড়া কবি দার্শনিকগণ একটু ভোলামন বা উদাসী ই হয়ে থাকেন । মেডাম কোনদিন বা কোন্ সময়ে আসলে ভাল হয় ।
তা আপনার ইচ্ছে এবং সুবিধামত, যে কোন দিন বিকেলে । আপনার সাপ্তাহিক ছুটি কবে ।
মেডাম, আমার কোন সাপ্তাহিক ছুটি নেই, তাছাড়া ছুটি দিয়েইবা কি হবে । শুক্রবার এ জুম্মা, শনিবারে মাছ ও গরুর খামারগুলার দেখাশোনা, রবিবার দিন হাট, সোমবারে রাইসমিল ও স’মিলের হিসাব, মঙ্গলবারে আড়তদারি, বুধবারে ব্রিক ফিল্ডস ও বৃহসপতিবারে ব্যাঙ্কের হিসাব এভাবে সারা সপ্তাহ জুড়ে বিভিন্ন প্রোজেক্টগুলোর কাজ দেখার জন্য সিডিউল করে সাজানো আছে । অনেক জায়গায় হিসাবে বিরাট অঙ্কের টাকার ঘাপলা বা গড়মিল রয়েছে বলেও মনেহয় । সময় হলে আমি আপনাকে তার সব জানাবো । তবে এক শর্তে, ওসব বিষয় নিয়ে আপনি কোন Tension করতে পারবেন না ।
পর্ব – ২৬
ঠিক আছে, অসুবিধা নেই, আপনি আপনার সুবিধা মত ধীরে ধীরে সব গুছিয়ে নিন । তবে প্রতি সপ্তাহে অন্ততঃ একদিন ছুটির ব্যবস্থা রাখুন । দেখুন আমরাতো সবাই মানুষ, তাই সপ্তাহে একদিন অন্ততঃ Rest, Relax & Recreation এর প্রয়োজন আছে বৈকি । পুরাতন গাড়ীটা নষ্ট হয়ে পড়ে আছে আজ অনেকদিন, ওটাকে মেরামত করে ব্যবহার করা যাবে কিনা, নাহলে সেটি বেঁচে দিয়ে একটা নতুন গাড়ী কিনতে হবে । কেশিয়ার সাহেবকে বলবেন, আমাদের আগের ড্রাইভারকে যেন একবার আমার সংগে দেখা করতে ডেকে পাঠায় ।
একটা গাড়ীর ব্যবস্থা হলে, তারপর আমি নিজে সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলি ঘুরে ঘুরে দেখতে চাই । আপনার আপত্তি না থাকলে মাঝেমাঝে আমরা সপিং ও দূরে ঘুরতে বেড়াতেও যাওয়া যাবে । আপনাকে না পেলে যে আমার ব্যবসার কি হতো আল্লাহপাকই তা ভাল জানেন, বুঝি তা একেবারে লাটে উঠারই যোগাড় হয়েছিল । আল্লাহর মেহেরবানীতে আপনি কোথা থেকে উড়ে এসে আমার ব্যবসায় আপনার দক্ষ হাতের পরশ রাখলেন । সেজন্য আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আর আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ । সে যাই হোক, আপনি শীঘ্রই আমাকে Project-wise Total Bank Loans এবং আমাদের Present Balance /Fund এর অবস্থাটা জানাবেন । আগামী মাস থেকে আমাদের সব একউন্ট সমূহের Monthly Bank Statements গুলি নিয়মিতভাবে Procure করবেন ও তা আমাকে দেখাবেন । কিছু Planning Update এর জন্য সত্বর একবার আপনাকে নিয়ে বসা দরকার । আপনি কবে আসতে পারবেন বা আসছেন তা আমাকে আগের দিন জানাবেন । সেদিন দুপুরের ডালভাত ও বিকেলের চা আমরা একসংগে খাবো ।
সপ্তাহখানেক পর সিডিউল মোতাবেক একদিন দুপুরে হাতে করে দুতিন পেকেট মিষ্টি নিয়ে মেনেজার সাহেব এলেন ।
তাকে সাদর অভ্যর্থনা জানালাম,
তারপর পরস্পরে বিনিময় হলো শ্রদ্ধা ও বিনয়ের সালাম,
পরম সমাদরে আমি তাকে সোফায় আসন গ্রহন করতে আহবান জানালাম ।
শুধালাম আপনি আছেন কেমন,
বাড়ীতে কে কে আছে,
কে কোথায় এখন তারা কি করছে,
সবাই ভালো আছেতো আপনার স্ত্রী ও পুত্রকন্যাগণ,
জ্বি, আপন অবস্থানে সবায়, নেই কোন পিছুটান দায়, চলছে যে যার মতন,
না তবে তা পতন নয়, ক্ষুদ্র হলেও আহরণ ও আরোহণ,
বললো ছাত্র শুধু একজন,
বাকীরা সবাই বিবাহিত, পেশায় ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার ও মাষ্টার’স তারা মোট সাতজন ।
মাশাআল্লাহ, আপনার ধন্য জীবন,
তাই যদি হয় তবে আসুন আমরা দুজন,
সব ধন-জন হাতে হাত ধরি বিনিময় করিব এখন,
আমি রাজি, তবে তারাকি ওরে মা বলে মোরে মেনে নিবে কখন,
হেন কিছুটা আন্তরিক রস ও বিনোদন বচন,
আপা, এই পরম পাওয়ার সুখ, তৃপ্তি ও আনন্দ হয় জনভেদে তা যার কাছে যেমন ।
জানতে ইচ্ছে করে যাদের সন্তান,
হয়নি এত উচ্চ শিক্ষিত কিবা তেমন স্বচ্ছল ও ধনবান,
বাবামাকে লয়ে নহে যারা এত সচেতন,
রাখেনা চোখেচোখে ও খেয়ালে দেমাগে নিত্য সারাক্ষণ,
করেনা এত সোহাগ ও শাসন,
প্রতি কথায় কাজে চলতে বলতে উঠতে বসতে বাধা, বারণ, নিষেধ ও নিয়ন্ত্রণ ।
পর্ব – ২৭
কে বেশী তারা ভাল আছে,
জানবো প্রশ্ন করে গিয়ে আমি ঐ বাবামার কাছে,
বাবামার প্রতি সন্তানের উদাসীনতা ও অবহেলা যেমন মোটেও ভাল নয়,
তেমনি আবার তা’ওতো কাঙ্খিত নহে করবে তারা বাড়তি ভাবনা, পেরেশানি ও তাড়না অতিশয় ।
শত নিষেধ বারণ,
সে ওতো এক পীড়ন ও জ্বালাতন,
একটু ইচ্ছা পূরণ,
মনের সাধ একটু অবাধ বিচরণ,
বেড়ি নহে পায় হেন স্বাধীনতায় ঘুরে বেড়াতে চাহে মন,
জীবন যাদের অনটনে ভরা আর মানও তার অতি নগন্য কিবা অতিশয় সাধারণ ।
কেমনে কাটিছে তাদের জীবন,
যে বাবারা নয় মোটেও নির্ভর সন্তানের উপর এমন,
বরং বড়ই অভাবী, উদাসীন কিবা অতিশয় স্বার্থপর হয় যে সকল সন্তানগণ ।
নিজেই নিজের দায়,
পরিশ্রমের কাজ করেই খাবার যোগায়,
কে কোথায় এখন তারা আছেন কেমন,
যত অসহায় ও অতিশয় অস্বচ্ছল ঐ বৃদ্ধ পিতামাতাগণ,
চলছিল নেহায়েত সৌজন্যমূলক ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবন আলোচন,
বসার ঘরে প্রথমে সরবত ও পরে খাবার টেবিলে দুপুরের খাবারে করিনু আমি তারে আপ্যায়ন ।
খাবারের আগে ও পরে,
একটানা একাকি দুজন দুতিন ঘন্টা ধরে,
নিরিবিলি পরিবেশে জানিনা এতটা সময় কাটিল কেমন করে,
দু’জনের জীবনের সুখ-দুঃখের গল্প যা রয়েছে অন্তরে হলো তার অল্প কিছুটা ওরে ।
বাকীটা হবে অন্যদিন মেলা সময় পাবো যখন,
আজ হলো বিনিময় ও কিছুটা জানা পরিচয়, প্রিয় আলাপন ও কথোপকথন,
আপা আপনি কেমন আছেন,
এইতো ভাই, কি আছে কি নাই যেমনটি দেখছেন,
দেখলাম আর কই, আমিতো আপন কেহ নই, সবইতো তাই মোর কাছে এখনও অজানা গোপন ।
যেজন ওরে অচেনা, অজানা ও পর,
জীবনে রয়েছে কত আপদ নিদান ও তুফান-ঝড়,
তারে কি কভু বলা যায় মনের দুঃক্ষ-কষ্ট কিবা ওরে ঘরের খবর,
হয়তোবা তাই আপনিও ভাই, মনেমনে বুঝি এমনটাই ভেবে রেখেছেন ।
দুনিয়ার যত ঝামেলায়,
একাকি হায় ফেলে রেখে প্রয়াত বন্ধুটি আমায়,
কেনযে হায় আমার, যে সংগী বিহন জীবন কারাগার, গেছেন চলে চিরতরে বহু দূর অজানায় ।
মন্দ নয় তবে ভালইবা আর কত,
আমি যেন এক মালবোঝাই ঠেলাগাড়ীর ক্লান্ত চালকের মত,
না মেনে হার,
আজও আমি বইছিযে ঐ দুঃসহ ভার,
এক নিরীহ অসহায়, একটু সুখ-আরাম নিরবে গোপনে চায়, গাধার মত চুপচাপ দিবানিশি অবিরত ।
পর্ব – ২৮
খেলছি এই বিরস খেলা,
নেই কেন আমার সাজানো রঙের মেলা,
নাহয় যায় যাকনা ওরে ক্লান্ত, বিষন্ন ও বিপন্ন মোর সারাটা বেলা,
যখন একাকি লগন, একটু হরষ ও বিনোদন চাহে মন, পেতো যদি সে সুখ-সুরা নিত্য শুধু এক পেয়ালা ।
কি বলতে হঠাৎ কি বলে ফেললাম,
সহসা যেন আমিও তাই, প্রসংগ পাল্টে অন্য কথায় গেলাম,
বললাম না যেটুকু দেখছি আপা তাতো বেশ ভালই, কই কষ্টের ছাপ কইবা পরিশ্রমের ঘাম ।
দুজন মানুষের মিলে হয় একটা জীবন,
ওরে হয় কি সুখ, আরাম ও বিনোদন প্রিয়জন একজন প্রিয় বন্ধু বিহন,
সেইতো জীবন যখন যেমন, আল্লাহপাক যার ভাগ্যে যা লিখেছেন ও যাকে যেটুকু করেছেন দান বা বন্টন ।
লোকের কোন ধারণা,
আর প্রকৃত বা আসলটা জানা,
বিস্তর ফারাক থাকেযে এই দুইয়ের ভিতর,
আমার স্বামী মারা গেছেন আজ পার হলো তার এক বছর,
আমি জানি ও শুনেছি সেসব কথা, কতযে দৃঢ় আপনার মনোবল ও সবর,
ভিতরে বাহিরে কত জ্বালাতন, অবুঝ পোড়ামন অন্ধকার আমার আপন ভুবন ও অন্তর ।
সব থেকেও যেন নাই নাই কেন এমন মোর এই ঘর,
বাহিরে রঙমাখানো আর বহিছে ভিতরে ভিতরে যার এক অদেখা তুমুল ঝড়,
সে সাধ্য মোর নেই,
কষ্টগুলি সব ধুয়েমুছে সুখে ভরে দেই,
আমি হলেও কোন দূরের মানুষ ও একেবারে অচেনা পর,
যদিও পারিনা কাছে টানি, তবে আমি জানি ও পাই সব দুঃখী মানুষের নিরব মনের খবর ।
কেউ আসে ও কেউবা চলে যায়,
কেউ পায়, কেউ পায়না ও কেউবা আবার পেয়েও হারায়,
এইতো জীবন আপা এইতো জীবন,
কোথাও সাতরঙে রঙীন, কোথাওবা ধূসর বালুচর নাহলে কোথাও যেন এক প্রান্তহীন পোড়াবন ।
কারো জীবন জুড়ে,
দেখি যেন ওরে শুধু আসে ঘুরেঘুরে,
বারবার কত কষ্ট-বেদন আর অনটন ও টানাপোড়ন,
কারো আছে কারো নেই অঢেল বিত্তবেসাত ও ধন, অথই ভোগ-বিলাস ও সুখ-বিনোদন ।
যত সুখ ধন শেষ হবে হঠাৎই একদিন,
সোনার দেহটা মরণের কোলে পড়ে ঢলে হয়ে যাবে মাটিতে বিলীন,
শূন্য হাতে অজানায়, কত ভূতল কাঁপানো বাদশাহ রাজায়, লয়ে তার একবোঝা মাথাভারী ঋন ।
আজব সফরে এ ভিনদেশে এসে,
কেউ বানিজ্যে কেউ ভোগ ও প্রমোদে কেউ যাযাবর মুসাফির বেশে,
কত জনে ওরে, পড়ে মিথ্যে মোহ ও মন্দ নেশার ঘোরে, জিয়নে মরণে মায়াজালে গিয়েছে ফেসে ।
দেখিবে চেতনা ফিরে একদিন,
রংঙের ফানুস তার পড়েছে ভূতলে ছিন্ন বিবর্ণ মলিন,
তার কল্প-তামাসার ঐ মেলা নেই আর, রয়েছে অসাড় পড়ে হয়ে ধূলামাটিতে বিলীন ।
পর্ব – ২৯
কেউ দিনভর সারাবেলা,
কেউ সাজিয়ে বসে রঙের মেলা,
কেউ শুধু হেলা আর হরষের ধুমে মাতন খেলা,
কারো মূল্যবান এ জীবনটার হলো অবসান ফুরালো সারাটা বেলা,
আবার কারো নাই ধন, সে কারণ তার হয়নি বলে পুণ্য সাধন শুধু হাহাকার ও মরম জ্বালা ।
কেউ নাই আর কিছু নাই যার,
করিতে পারেনি কোন দান ও সেবা উপকার,
অন্ধজনে আলো বিলাতে হামেশা হয় মনটা আকুল ও উতলা,
কেউ পড়িতে শিখিতে পরীক্ষা দিতে, দিনশেষে কি ঘটে পাশ-ফেল ফয়সালা,
লাভ-ক্ষতির ঐ বানিজ্য-ক্ষেতি বসতির আপন মতি-গতির এই অল্প কয়দিনের আজব ভ্রমণ-মেলা ।
এই আছি এই নাই,
কেউতো তা ওরে জানেনা ভাই,
মিথ্যে নয় সব ঘটে হয়, অদেখায় অজানায় তাই,
কখন কার হঠাৎ ওরে, আসিবে প্রহরী নিবে ধরে, লয়ে সবার দেশে ফিরে যাবার এক অদেখা সমন ।
বিধির অমোঘ বিধান,
রয়েছে রবে পড়ে তার অফুরান নেয়ামত ও দান,
দিলেও ঢেলে ভরপুর জগতের সবারে ঐ ভান্ডারে কভু আহারে পড়েনি পড়বেনা টান,
কেন তবু দিয়ে, না দিয়ে কিবা ফের কেড়ে নিয়ে প্রিয় বান্দারে তার প্রভু বারবার পরীক্ষা করিতে চান ।
শুধু ম্যাডাম ম্যাডাম সারাক্ষণ,
দেখুন সাহেব, আমি আপনার ছোট বোনের মতন,
বয়সে আপনার অনেক ছোট, আজ থেকে তাই আপনি আমাকে করবেন তুমি সম্বোধন,
লম্বা আঁচলে চোখ দুটি ছাড়া সারা মুখ যার রহে করা আচ্ছাদন,
সে কেমনে হয় ছোট বোন, আজও আমি যার মোখখানাই একবারও করিনি দরশন ।
আমি আপনার শুধু কর্মচারী একজন,
তাছাড়া আর কি, আপনি আমার পরম শ্রদ্ধার মনিব ও মহাজন,
তা কি করে হয়,
বয়সটা যাই হোক কম-বেশী তা নয়তো ওরে মুখ্য বিষয়,
মানী জনকে কেনইবা তার যথার্থ সম্মানটুকু দেওয়া নয়,
আমি পারিবনা, সে পথ ছাড়িবনা, কভু হারিবনা করিবই যার যা পাওনা তা প্রদান ও প্রদর্শন ।
নিন্দুকের যত মিথ্যা বচন ও নিন্দা,
এ সমাজে মাঝে মাঝে সরমে কারো কারো হয়যে মরণ জিন্দা,
ভাবুনতো কি হবে আমার তখন,
এই চাকরীটা যদি যায় কি হবে উপায়, আর আপনারও হয় মান হরণ,
হঠাৎ সে তার চাঁদ মোখখানা করিল প্রদর্শন,
আকুল হলাম, ঐ অপরুপ রুপ দেখে তার হেরিনু তাহারে আমি আহারে ঐ প্রথম যখন ।
আমার মুগ্ধতা দেখিল তার চোখদুটি ছলছল,
বুঝিনি তার কি কারণ, কোন্ আবেগে হয়েছিলো সে এতটা অধীর ও বিহবল,
পলকে দেখিল নয়ন মারিল মনেতে ছোবল,
সে কি অরুপ বাহার, অপূর্ব সুন্দর তার পিনোন্নত ঐ ভরাট মাঝারি খাড়া স্তন যুগল ।
পর্ব – ৩০
নুয়ে তুলতে গিয়ে,
আমারে সে দারুণ চমকে দিয়ে,
বিজলীর মত ওরে এক ঝলকে ঝলসিয়ে,
দূর্লভ সে অমূল্য বিনোদ রতন পলকে দিল দেখিয়ে,
কেজানে তা ছিল কিনা আমারে তার ঐ রুপ দেখাবার কৌশল,
আবার দেখার নেশায় ডুবিয়ে রাখি, পাগল মোর এ দুটি তৃষিত আঁখি করে তল,
বুঝি আবেগে আচমকা বুক হতে মেঝেতে যখন খসে পড়ে গিয়েছিল তার সুন্দর শাড়ীটার আঁচল ।
সে কি তবে ছিল তার এক কৌশল,
শত প্রশ্ন এসে ক্ষণিকের তরে আমারে করিল চঞ্চল,
একটু সুন্দরের ঐ ঢাকনার তলে বহমান অপার যে সুন্দরের ঢল,
তা কেমনে হয়, বিশ্বাস করার মতও নয়, নিশ্চয় এটা হয়তো তার ছিল কোন ছল ।
বুঝেছি আমি তার মন,
বুঝিনি তবে কি করা উচিৎ কি করিব এখন,
একেবারে পা হতে মাথায় ছড়িয়ে মোর সারা গায় মাতাল ঐ আকর্ষণ,
যাই হোক তার কারণ, বুক জুড়িয়া আমার ঘুরিয়া ঘুরিয়া তার তরে তখন জাগিল এক মমতার ঢল ।
কাঁদিয়া উঠিল হিয়া,
করিব না, না করিয়া তাকে বিয়া,
কি করা যায়, কেমনে আমি ওরে বুঝিনা কি করিয়া,
দুঃক্ষটা তার দূর করিয়া আহারে দেবো তাহারে সামাণ্য একটু সুখ ও হরষে বুক ভরিয়া ।
এবার তবে বলুনতো ভাই,
কি দেখিলেন কি বুঝিলেন মোর মোখ দেখে তাই,
এখন হবে আপনার জ্ঞানের যাচাই,
মেডাম, বোন নাকি এমন অন্যকিছু এখন যার যাহা নাই,
কি আছে আমার কাছে ও কি নাই, আর কি আমি কেন ওরে হতে কিবা পেতে চাই ।
সরমে মরে যাই বলে তাই,
মরমের ঐ প্রিয় চাওয়াটাও আমরা সবাই,
নানান ছলে তা মুখে না বলে ইশারায় ভাই,
কেহ যেন টের নাহি পায়, হেন চুপিসারে চাই,
মোর প্রয়োজন, যা চাহে এই মন তা ওরে কোথা পাই,
আর ভাললাগা ও ভালবাসার কথাগুলি তারে কেমনে জানাই,
মনের মানুষটি ভাই, কেমনে বলি তা কেমনে বুঝাই, যদি রয় সে তার মোখটা ফিরাই ।
বয়স, বিদ্যা, ধন ও রুপ-জ্ঞান,
তবু বিধাতার কাছেতো সব মানুষই সমান,
যদিও কেউ নীচে, কারোবা হয় অনেক উপরে অবস্থান,
চলন বলন আচরণ কাজে ও গুণে বাড়ে-কমে হয় মান-অপমান,
জনে জনে এমনকি স্বজন ও পরম প্রিয়গণে, শুধু ধনেই গড়েছে জগতের যত ব্যবধান ।
দেখেছি অনেক এ সমাজে,
জীবনের অতিব ক্ষতি করে এমন যেসব কাজে,
কেন কেউ মরেনা ঐ ভয়ে-লাজে,
তারা কেন হায় শোনতে নাহি পায়, গগণ ফাটানো ভূতল কাপানো অশনি বাজে,
সবে চাহে এখনই সব ফেলে সব ছেড়ে বড় হয়ে যাই,
যত সব অশান্তি ও পতনের ঘের, ধুয়ে-মুছে ঐ মিথ্যে ভেদাভেদ যত অহংকার ও বড়াই ।
পর্ব – ৩১
ঠিক আছে অসুবিধা নাই,
বললাম মেডাম, মেনে নিতে পারি আমি তাই,
যদি হয় শুধু অফিসের বাহিরে,
কিবা যেথা এমন ওরে, আর কেহ পাশে নাহিরে,
হলেম নাহয়, আপনি আমার ছোট বোন আর আমি আপনার বড় ভাই,
এক শর্তে, এই এত সুন্দর মোখখানা আর,
যদি রাজি হোন, কোনদিন ঐ বাহার ঢেকে রাখা যাবেনা সামনে আমার ।
আপনি চাহিলে আমিও তাহা চাই,
আমারওযে ভাই একটু সুখের কোন জায়গা নাই,
ওগো উপচে পড়া তব ঐ রুপ মাধুরী,
কোন মধুকরে হঠাৎ এসে, মুখোশ পড়ে ছদ্দবেশে না পারে করে যেতে চুরি ।
তাই হতে পারি,
ছেড়ে এসে মোর ঘর-বাড়ী,
যদিগো পাই ঐ মিষ্টি মোখের অংগীকার,
আর অবলীলায় তার পানে সোহাগের হাত বাড়াবার অধিকার,
আকাশের চাঁদ কিবা পরী, এমন এক রুপসীর প্রহরী ও তার হার না মানা সাহসী জিম্মাদার ।
পাঁকা আম ঝুলছে গাছে কি লাভ তাতে,
যদি না পাই হাতে, কিবা না পড়ে তা মোর দুধ-ভাতের পাতে,
এমন দামী অনাহুত অকারণ যখন-তখন মাথা যাবে ঘামী, না পারি ঘুমাতে শান্তিতে রাতে,
হতে চাইনা আমি ব্যাঙ্কের হাজার কোটি টাকার কেশিয়ার,
কিবা শত শত রুপসী কুমারী বালিকা ও মহিলার কেয়ারটেকার ও হোষ্টেল সুপার ।
হতে চাইনা আমি মালিক তার,
কভু এমন একটা বিশাল গবাদী পশুর খামার,
খাবার টেবিলে নাই এক গ্লাস দুধ কিবা আর না পড়ে পাতে না পায় খেতে বাটিভরা মাংস যার ।
বলেন কি প্রয়োজন,
হিরার মুকুট ও সোনার সিংহাসন,
রাণী নাহি যার,
হতে চাইনা ওগো রাজা আমি তার,
অযুত সামন্ত, ধন-রতনের নাহি অন্ত ও সহস্র পাইক-পেয়াদার এমন কোন বিশাল রাজ্যটার ।
ওগো দারুণ পিয়াস যে বুকে,
চুপ করে আবেশে ভরে মদির নেশার পরম সুখে,
বারবার এ মন চাহে যতবার,
বিজন নিঝুমে মত্ত প্রেমের ধুমে, বারবার অপরুপ ঐ রুপ দেখিবার ।
আর কিছু মোর চাহিবার নাই,
ছেড়ে লাভ কি যদিগো সে সুযোগ পাই,
নাক ডুবিয়ে ভরে আকুতি তার, মোর এ আকুল হিয়া ও তৃষিত চোখ দুখানার ।
অ প্রিয় ভাইজান,
তবে কি দোষ করেছে তব ঐ দেহখান,
তবে কি তারে ঠকাতে চান, নাই কি কোনই চাহিদা তার, বলুন এ কেমন অবিচার আপনার ।
আকুল সে উঞ্চ সুধা,
নাক ডুবিয়ে পান করিবার ঐ দূর্নিবার ক্ষুধা,
যায়কি দেহটা থেকে তা কভু করা জুদা, যদিওবা কড়া শাসনের কাছে মানে সে সাময়িক হার ।
পর্ব – ৩২
মাটির মানুষ চাঁদ দেখে সুখ পান,
কই কেউতো তারে দেখিনি আহারে, ছুতে কভু নাহি চান,
সেতো বোকার এক বেহায়া বায়না,
তাই বুঝিরে ভাই এ জগতে কেউ তা ওরে কখনো চায়না,
আর চাহিলেইবা কি,
এ জীবনে মানতে হয়যে অনেক ফাঁকি,
সে কথাতো সবারই জানা, মনতো ওরে আর কখনও সবকিছু পায়না তার সে আকুল চাওয়ার ।
ওরে নাই সে আশা,
এক অসম অনাহূত ভালবাসা,
যাকে কভু আর, কাছে পাওয়ার কোনই সম্ভাবনা,
আকাশের চাঁদটারে মাটির কারাগারে বাধিতে পারা কিবা তারে ছোবারও কোন সাধ্য বা অধিকার ।
বড় ইচ্ছে করে তাই,
ওসব ঝেড়ে ফেলে নতুনে ঢেলে নিজেরে সাজাই,
আছে মাটির মন, ঠিক এমন একজন, আমার মনের মতন মানুষ যদিরে খুঁজে পাই ।
শুনেছি গুণীজনেরা বলে,
বিদ্যা রুপ ও ধন কিছুটা কম হলেওতো চলে,
কেন ওরে তবে, সুখতো নসিবেই হবে, এতটা বাছাবাছি তাহলে,
এমনতো নয় তা কম হলে তার জীবন ছারখার, আসলে যার তেমন কোন দাম নাই ।
কি হলো জানা কি করিলেন দরশন,
হিসাব করে মেনে চল্লিশ দিনের খোদার কুদরতি নিয়ম পালন,
কোন ক্ষতি কিবা তড়িঘড়ি নাই,
আপনার সুচিন্তিত মতামত ভাই, জানাবেন জানতে চাই,
বলবেন যখন হবে সময় ও যদিগো হয় সমাপন আপনার সব ভাবনা ও গবেষণ ।
আপা আমার কিছু কথা কিবা প্রশ্ন আছে,
তা হলো জানতে চাওয়া একজন বিচক্ষণ জ্ঞানী ও বিজ্ঞ জনের কাছে,
মানুষ কেমনে বড় হয়, মনটা আমার তা জানতে চায়,
রুপ-গুণ, অর্থ, বিত্ত-ধন, মন, মনন, চলন-বলন, আচরণ ও কাজে নাকি বয়স ও বিদ্যায় ।
মানুষ যখন হয়ে পড়ে অসহায়,
নিদান ও সময়ের ছোয়ায় বদলে যাওয়া ঐ অবস্থা ও ক্ষমতায়,
দেখি স্থান কাল পাত্র ভেদে, হতে পারে কিছু তার ব্যতিক্রম কিবা ঐ ব্যবধানও হয়ে যায় ।
সুখ কোথায় ওরে সুখ কোথায়,
সোনার বলগা হরিণের কাছে নাকি তা সোনার খাঁচায়,
হন্নে হয়ে সবাইযে ওরে ছুটে যায় আর ঐ সে আশায় কেবলই সুখটারে খুঁজে বেড়ায়,
সে আশায়, যাদুর চেরাগটা যদিরে একবার তার হাতে পায়,
কিবা ঐ সুখ পাখীটা যদিরে আরামে কাটে জীবনের বাকীটা, যে পথে গহীন বনে গিয়েছে ছুটে পালায় ।
কেউ বলে না,
মন্দ হয় যার কপালখানা,
প্রাসাদেও সুখ নাই হতে পারে হয় তা জেলখানা,
জীবনের এমন অনেক ফাঁদ আছে যা দূরে কি কাছে বাহিরের এই চোখে দেখা যায়না ।
অশ্রুহীন নিরব রোদন, ধরেনা বলে সুখের বায়না,
শত কষ্টে থাকা জীবনের কত গল্প রয়ে যায় লোকের কাছে আজীবন অজানা,
নহে তা একেবারে ভুল ধারণা, সেখানেও দেখেছি কতজন গুমরে কাঁদে ও নিরবে গোপনে ধড়ফড়ায় ।
পর্ব – ৩৩
আমার বিদ্যা কম তবে আছে ধারণা,
চকচক করিলেই শুধু ওরে, তা হয়নারে সোনা,
তাতে কি আসে যায় আমি নয়তোরে কানা, আমারতো তা খুব ভাল করেই হয়েছে জানা ।
কেউ চতুর কেউ সরল,
কেউ বুঝমান কেউবা গড়ল, কেউ কঠিন কেউ কোমল ও তরল,
কালো আর ধলো সেতো শুধু বাহিরে কেবল,
সুন্দর আবরণ, সোনালী খোলস বা মুখোশটা কারোকারো হতেওতো পারে এক অভিনব ছল ।
তা যে যাই বলে বলুক ভাই,
আমি ভালকরে তা জানি, বুঝি ও মানি তাই,
ধন-রুপ ও বিদ্যা নয়, আমি শুধু একটা ভালমন ও ভালমানুষ চাই,
সহজ সরল জীবনে সুখ-শান্তির তরে মানুষের সবচেয়ে বড় সম্বল,
সততা, সুস্থ্যতা, বড় চোখ, বড় মন, উন্নত মানসিকতা, সহন, বহন, একাগ্র শ্রম ও সাহসী মনোবল ।
দেখি তাদের অন্তরে বাহিরে দুই,
কথায় কাজে মিল কই, নিজেরে তুলে ধরে আসলটা লুকিয়ে থুই,
মিথ্যে নয় বড়ই কঠিন হয়, জানা কোনটা ছদ্দবেশ আর কোনটাযে কার রুপ আসল,
যা বলে সত্য নয়, নাই মহারাজার কাছে গিয়ে হিসাব দেবার ভয়, অনেক কিছুই মনেহয় অভিনয় ও নকল ।
বয়সে ছোট-বড় নয়,
জানি মানুষ কেমনে বড় কিবা ছোট হয়,
বিদ্যা, ধন ও ক্ষমতায় যদিওবা কারো কারো হয় সবার নয়,
সুখ ও সম্মান, বিধাতার নেয়ামত ও দান, কারোবা আবার দেখি তাতেও অবক্ষয়,
যার যেভাবে এ সমাজে, ধনীরা কে কোন কাজে, জানিনা আসলে কেমনে কবে লভেছে সে বিজয়,
কথায় নয় কাজে, ধনে নয় মনে বড় হয়,
মিথ্যে নয় বিজ্ঞ জনেরা কয়, এ জীবনে আসলে সে’ই হয় সবার বড় শুধু লোকে ও মনিবে যারে বড় কয় ।
ফুটিল আমার প্রাণ,
বললাম আপা, আমি আপনাকে করিযে সম্মান,
এ মান-সম্মান বিধাতার বড় নেয়ামত ও দান, জগতে চাহিলেই কভু তা ওরে কেউতো নাহি পান ।
শুধু দয়াময় বিধাতায় যারে চান,
বিদ্যা অর্থ বয়স রুপ কিবা নহে ক্ষমতায়, তারেই তা করেন দান,
না না, তা হয়না, শেষে নানান কথা ভাবতে ও বলতে শুরু করবে পাড়ার যত বাজে লোকজন ।
এবার অন্য কথায় আসি,
কান্না-হাসি, সুখ ও দুঃক্ষটাযে রহে চিরকাল পাশাপাশি,
কোন টাকাও পাঠাননি ভাই,
কেন এতদিনে একবারও ছুটিতেও বাড়ী যান নাই,
কি ভেদ কি কারণ, যা শুনেছি জানিনা আমি কতটুকু সত্য বা মিথ্যা তাই,
আমার বড় জানতে ইচ্ছে করছে তাই, আপনার জীবনের সুখ-দুঃখের সে গল্পটা শোনব আজ এখন ।
বলছি তা আপা করুন শ্রবণ,
ঐ সে গল্পটা যেন ছিল অনেকটা এমন,
এক রাণীসাহেবা কেড়ে নিয়েছিল রাজার সিংহাসন,
দীনতার ভারে রাজাসাহেব হারে, অগত্যা সে তার বশ্যতা করেছিল বরণ ।
হেন কোণঠাসা,
নেই ছিলনা সুখ, সম্মান ও ভালবাসা,
হারানো সিংহাসন ঐ রাজা ছিল এমনই মানুষ যেন বড় অসহায় একজন ।
পর্ব – ৩৪
নাই কোন ভূমিকা ও কোন প্রভাব ঠিক যেন তেমন,
যার অবদান, অধিকার ও ক্ষমতা কবেই হয়েছিল করা হরণ,
রাজা মহাশয় মেনেছেন পরাজয়, সে ই নাকি হয় বড় রয় যার বেশী সহন,
কোন প্রতিবাদ, অমত কিবা বিরোধিতা নয়, নিরব বন্দি দশায়ই করিছে সে জীবন যাপন,
অক্ষমতার অসহায় কবলে, উগ্রতার উম্মত্ত ছোবলে, যেন সেই কবেই তার হয়েছিল জিয়নে মরণ ।
এক ছাদের তলে,
তারা দুইজন যেন ওরে দুই দলে,
তেমন জরুরী কিবা কভু অতিশয় দরকার না হলে,
পাশ কেটে যায় কিবা এড়িয়ে চলে,
হ্যা না ছাড়া কেউ কভু তারা, কারো সনে যেচে কিবা কাছে গিয়ে কথা নাহি বলে ।
মোখ তুলে কেউ নাহি চায়,
কে কেমন আছে, কি প্রয়োজন কি চাহে কিবা কে কি খায়,
দুজনের কক্ষ দুই এবং বিছানাও ভিন্ন,
নাই ভালবাসার চাওয়া-পাওয়ার রেশ, সে আশাটুকুও বুঝি কবেই হয়ে গিয়েছিল ছিন্ন ।
নেই একটু দরদ কেউ কারো জন্য,
তুচ্ছ কথায় তর্কে জড়ায় কখনোবা হয় হিংস্র, বর্বর ও বন্য,
হয়েছে বুঝি সব শেষ,
হয়তো এখনই দুজনে তারা ছাড়বে দেশ,
ভাবছে বুঝি এ ঘরের চেয়ে, অনেক বেশী ভালো যেন অরণ্য,
শুনেছি নাকি শুধু দেখতে বাকি,পালিয়ে তারা হতে চায় ধন্য,
জেলখানা হয়েছে ঘর, দুজনেই তারা দুজনার কাছে একেবারে অচেনা পর এমনই অন্য ।
নেই ভক্তি শ্রদ্ধা মান্যতা ভয়,
সহানুভুতি ও বিনয় সবই যেন শুধু অভিনয়,
কেনরে নাই, কোথা গেলে তা পাই, সামাণ্য আস্থা ও নির্ভরতার লেশ চিহ্ন ।
তিক্ততার ঐ স্মৃতি মনেপড়া,
অকারণ যেনরে ক্রোধে ও ক্ষোভে ফেটে পড়া,
শুধুশুধু অপরাধী, দোষারুপ ও বকাঝকা করা,
যখন চায় মন কিছুটা হর্ষ, পুলক ও বিনোদন, সহসা ঐ ক্ষণ অভিমান ও বিষাদে ভরা ।
বিজন দ্বীপে কারাবাসে থাকা,
আঁধার সম ঘন কুয়াশায় যা রহে সারাক্ষণ ঢাকা,
তারা দুইজন যেন দুই মেরুর বাসিন্দা,
হেন জিয়নে মরা যেন প্রেমেও ঘুণে ধরা, ঘৃনায় ভরা এমনই ঐ দুজন মানুষ তবুও জিন্দা ।
রাতভর আহা কিযে ছটফট ধড়ফড়,
দেখেনা কেহ এই দেহ ও মনের ভিতর বহিছে কোন সে ঝড়,
শুধু দূরে ঠেলে দেয়,
নহে তা কেউরে কভু কাছে টেনে নেয়,
পর করে দেওয়া ঐ কুৎসা, অপবাদ, অকারণ বিবাদ, দোষারপ, তিরস্কার, বিদ্রুপ ও নিন্দা ।
ছত্রিশ বছর করেও তারা ঘর,
কেউকেউ ভাবে বুঝি তাদের উপর জ্বীনে করেছে ভর,
কেন তারা কেউই যেন কারো হয়নি বন্ধু আপন, হয়েছে বৈরী আজও রয়েছে তেমন পর ।
পর্ব – ৩৫
তবে কি তারা চীন-ভারত,
শুধু আড়চোখে দেখা পিছন ফিরে থাকা, চিরকাল বিরোধিতা দুইজন দু্ইমত,
হতেও পারে রাশিয়া কিবা আমেরিকা,
আর নেই এক তিল, কেড়ে নিয়ে গেছে চিল, সুখ যেন হয়েছে অসুখ কুহেলিকা মরীচিকা ।
আজও আমি শুনি অনুভবে,
ঐ একই কথা কেন বলছে যেন তারা সবে,
জানিনা তা সত্য কিনা, নাকি কোন মিথ্যা রটনা কিবা অপবাদ হবে ।
তাদের মায় প্রায়ই শুনি এই কথাগুলি বলে,
অকারণ উড়াঝাড়া চেচামেচি করে, থাকবেনা আর এই ঘরে, যাবে সে বহুদূরে চিরতরে চলে,
থেকেও এক পরিবারে এক ছাদের তলে,
রাগ হাকিমের নাকি রায়ত ভাল, তাই কিরে দেখি সবে তার দলে,
এসে পড়ন্ত বেলায় আক্ষেপের বুলি শোনায়, জীবনটা নাকি হায় গেছে চলে ষোলআনা বিফলে ।
এক বধূ, এক মাতা ও এক রমণী,
ক্ষিপ্ত, ক্ষুব্ধ, উগ্র ও ছিল সে দারুণ অভিমানি,
খিটখিটে ও চড়া মেজাজী,
ক্ষেপে উঠে তেড়ে আসে, না হলে তার কথায় রাজি,
সব হওয়া চাই তার রুচি ও পছন্দ মত নাহলে দ্রোহ ও দন্দ-বিবাদের বাঁশি উঠবে এখনই বাজি ।
না জানা বিষয়গুলি, আগে নিতে হবে জানি,
কারো ভালবাসা যায় কি পাওয়া ওরে কথার বাণে তারে আঘাত হানি,
কথায় কথায় স্বামীরে পিছনে ঠেলে, আঁচলে দুচোখের জল ঢেলে, সব সন্তানেরে নেয় তার দলে টানি ।
এ ঘরে আছে আর কিবা সুখের চিন,
ক্রোধ ও হিংসায় সুখ ও প্রেম হয়েছে কিরে চিরবিলীন,
পরকে সব দিয়ে ফেলেছ, করেছ তুমি শুধু পরের তরে আজীবন চিরদিন,
কিছুই দাওনি মোরে পাইনি আমি, হে মোর অযোগ্য স্বামী, বলো কবে তুমি শোধিবে তব ঐ ঋন ।
কি করেছ কি দিয়েছ বাবা,
মা বলেছে তুমি নাকি একজন বুদ্ধ ও মস্তবড় হাবা,
ছিল সে যেন এক সহনের কঠিন পরীক্ষা, বুঝি শান্তির যম ও নিয়তির নির্মম থাবা ।
এই বুঝিরে ছিল মোর কপালে লেখা,
তারা তাই বলে, যা তাদের মায়ের মোখে শোনা ও তার কাছে শেখা,
হয়েছি তাই বুঝি আমি এখন বড়ই মূল্যহীন,
নেই মোর কোন অবদান, কোন পাওনা শুধুই মাথাভারী ঋন,
আমার সুখ, সুনাম ও সততার বড়াই হয়েছে কবেই তাই অসীম ঐ নীল দিগন্তে বিলীন ।
আমি যেন এক মহা দেনাদার,
তবুযে নাই কোন মোর অভিযোগ ও হাহাকার,
তাই হতো মোর ঢের উপকার, যদিরে কমে যেত এ বুকে চাপা ভার,
বলিছে বারবার শোধ করিবে পাওনা আমার বলো কোনদিন,
রয়েছে বরং এখনও যেন বাকী কিছু দায়, সে ভাবনায় মনটা মোর সদা হয়ে রয়যে মলিন ।
আজও তা পরাণে পীড়া দেয়,
হরষের অনুভুতিগুলি নিমেষে, ডাইনীর বেশে এক ঝটকায় কে যেন এসে কেড়ে নেয়,
ওরে কষ্টের সে অভিমানের নেই অন্ত,
নাকের ডগায় আহা দেখি যেন হায় দোল খায় তা সদা ঝুলন্ত,
কালিমাময় ছবি আঁকা, কিছুতেই যায়না যেন তা ভুলে থাকা, ধূলিমাখা ঐ সে স্মৃতির শিকা ।
পর্ব – ৩৬
একটা সম্মানের কাজ আর,
এখন নিরাপদ থাকা খাওয়ার আবাসন চাইযে তার,
তাই এমনই একটা অবলম্বন আহা ছিল যেন তার ঐ সময় বড় প্রয়োজন অতিশয় দরকার ।
নিজ ঘর-সংসার ও পরিবার,
যদিও ওটাই ছিল তার সুখের ঠাই আস্থা ও নির্ভরতার,
দিনে দিনে যতনে নিজহাতে বহুদিনে গড়া ঐ তার প্রিয় ঘর, ভরিল বুঝি এসে কোন হাহাকার ।
ভেংগে ভালবাসার পিরামিড তার,
কে গড়েছে হেথা অবজ্ঞা, ঘৃনা, অপবাদ ও ধিক্কার,
অমূলক অভিযোগ, দোষারুপ আর বৈরীতার এক বিশাল পাষাণ পাহাড় ।
আস্তানাটা কথা ছিল ভরা থাকা যার,
তিলে তিলে আজ সব মিলে হয়েছে মহাতিরাস বালুকার,
যা ছিল ঢের শ্রদ্ধা, ভক্তি, বিনয়, মান্যতা, ভয়, আস্থা, নির্ভরতা ও ভালবাসার,
হয়েছে আজিকে তা অবহেলা অপমান তিরস্কার, অসম্মান ও অশান্তির এক মহা কারাগার ।
গোপনে খুঁজিছেন তাই,
দূর বিজনে গিয়ে সে পালাই,
তবে কোথায় যাবেন তাতো জানা নাই,
পাবেন কি নাহি পাবেন একটা সুখ-শান্তি ও সম্মানের ঠাই,
অচিন পুরে এমন একখানা ঠিকানা, যেথা তারে আর দেখিয়া চিনিবার মত কেহ নাই ।
একটুখানি নিরাপদ শান্তি চাই,
দন্দ নহে, কোন প্রতিশোধ নয়, তবু ভয় জাগে তাই,
যদি আবার আসে জ্বালাতন, সেই পুরাতন কুক্ষণ কভু ওরে আমারে খুঁজে পাই,
যেখানে কেউ তারে আর কোনদিন, ধিক্কার দেবার তরে আর পাবেনা ওরে জনমভর খুঁজে বেড়াই ।
করিবেন হিজরত অতঃপর,
আপন ঘর ছেড়ে তিনি হয়েছেন একজন যাযাবর,
মনে লয়ে সে বেদন আপনার ধনজন সব তেজে, করে আপন যে ছিল পর,
সতীসাধ্বী কোন স্বামীহারা স্ত্রী ও তার পিতৃহারা সন্তানদের করেছে অসহায় এসে এক দামাল ঝড় ।
ওরে যার নিজেরই নাই কোন ঠাই,
একটু সুখে বাঁচা ও একটা শান্তির মরণ যেন পাই,
মন চায় কিছু করে, ঐসব মানুষের তরে, যাদের কেউ নাই ও কিছু নাই,
হেরে গিয়েও নিজ ঘরে এক মুসাফির বিজয়ী বীর, পায় বা না পায় তবু ঐ ক্ষীণ আশায় দূরে পালিয়ে যাই ।
আজ আর নেই তার কোন ক্ষমতা, দায় কিবা অধিকার,
নাই কোন আসন যেথা বসে হয় ঘরের সালিস, মজলিশ, বৈঠক ও দেন-দরবার,
কোন মতামত, অনুমতি, শলা-পরামর্শ ও আলোচনার,
কিবা কোন জটিল বিষয়ে মন্তব্য সমালোচনা হলে দরকার, কথাবলা কিবা কোন ফয়সালার ।
সবকিছু রাণী সাহেবার,
অস্ত্রাগার, কোষাগার ও খাদ্য ভান্ডার,
আজীবন সহন, নিরব দহন ও দুঃসহ ঐ সে ভার বহিবার ।
সাতসাগর বারোনদী হয়ে পার,
নীতি ও আদর্শের এক আপোষহীন সাহসী সংগ্রামী যোদ্ধার,
আজীবন রণ আর,
সহন ও বহন এক দুঃসহ ভার,
লয়ে ঐ পরিচয় বুকভরা যেথা শুধু অনটন ও হাহাকার,
এই বুঝি ওরে হলো পুরস্কার,
অবশেষে সায়াহ্নে এসে পাওনা হয়েছে আজিকে তার, এক কমদামী অথর্ব স্বামী ও ব্যর্থ বৃদ্ধ বাবার ।
পর্ব – ৩৭
একখানা পুরাতন অঁচল ঘানি,
দিনভর আজীবন সারাবছর করে কত পেরেশানি,
একটা বুড়ো বলদে হায় তার জড়তা ভরানো পায় চলেছে যেন তা টানি টানি,
তেলে আর ঘামে, বিনা দামে ও বিনা আরামে, এ দেহখানি হামেশা হয়ে যেতো মাখামাখি একাকার ।
ক্ষতি নেই আমার,
আমিতো করছিওনা তা কভু অস্বীকার,
রাজ্যের যত উন্নতি সফলতা ও প্রাপ্তির সবটুকু কৃতিত্বই ছিলযে তার,
জানি নাহয় আমি ওরে, আনতে পারিনি ঘরে, টাকা ঝোলা ভরে, করে দুহাতে রোজগার,
আর আমি কেন শুধু তার একা হলেম ভাগিদার, যত বিফলতা পিছুটান অপবাদ ও না পাওয়ার ব্যর্থতার ।
আজিকে সন্তানেরা যার,
কেউ ডাক্তার, কেউ মাষ্টারস, কেউবা হয়েছে ইঞ্জিনিয়ার,
কি মহান করুনার দান বিধাতার,
নাহলে দুস্তর পথ ডিঙিয়ে, সাতসাগর পারি দিয়ে, এখানে আসার বলো সাধ্য ছিল কার ।
দুহাতের কামাই হারামের রোজগার,
অনেক ভোগ-বিলাস ও বাড়ী-গাড়ী যদিরে রহিতো আমার,
বলো তবে কি লাভইবা তখন হতো কার,
সন্তানেরা সবাই আমার, হতো যদি কেরানী, কেয়ারটেকার,
কিবা সিপাহী, দাড়োয়ান, খানসামা, ড্রাইভার ও চাপরাশি বা আরদালী বিনিময়ে তার ।
বহিত আমরণ ঐ অপবাদের ভার,
হয়ে মানুষ নামের মানুষ ও চোখ থেকেও কানা আর,
যেথা মিথ্যা, মন্দ, জুলুম, অন্যায় ও অবিচারের অস্ফট সকরুণ ক্রন্দন হাহাকার ।
ওরে শুধু দুদিনের এ দুনিয়া নয়,
মরণের পর অনন্ত অমর ঐ জীবনখানাও নিশ্চিত নিশ্চয়,
হয়ে মোর প্রকৃত পরাজয় ও সে ভাবনা ভয়, রয়ে যেতো সবার কাছে একেবারে অচেনা ও অন্ধকার ।
সবটুকু এ কৃতিত্ব যার,
আলো ও ভালোর পথ দেখাবার,
এখন তবে ভাবো সবে ভাল করে একবার,
সে রাজায় যদিরে চায়,
হতো কিনা তবে তা মাথাভারী বকেয়া দায়,
কি মূল্য তখন, হে বিদ্যান ও জ্ঞানীগণ, বলো তোমরা তবে তখন সবে দিতে তার ।
কেন নাহি ভাবনায়,
কেমনে তা হবেরে বা করিবে আদায়,
অনাদায় ঐ সে ঋন কিবা ধার,
সুদাসলে জমে জমে দিনে দিনে যা হয়েছে এক মস্ত পাহাড়,
বিশাল বোঝার উপর লয়ে শাকের আঁটি,
শীর্ন দেহের অচল পায়, অচিন ঐ ঠিকানায় কেমনে তুমি হায় যাবেরে হাটি,
ওরে অনেক দূরে মহারাজার ঐ শাহী দরবার, অসীম দান ও নেয়ামতের শোকর দয়াময় বিধাতার ।
চাহিদার রোজগার বিফলে,
যে কোন ছলে কিবা বলে ও কৌশলে,
করতে বা দিতেই হবে, সে কি তবে ওরে আমি শুধু স্বামী ও বাবা হয়েছি বলে ।
পর্ব – ৩৮
তা সাদাকলো যাই হোক,
ধন্য ধন্য বলবে আপন-পর সব লোক,
কোথা নেই, বলো কেমনে ফাঁকি দেই আমি ঐ রাজার চোখ,
আনা চাই ওরে মাথায় করে ঘরে একখানা টাকার পাহাড়, নাহলে আর নাই যেন নিস্তার ।
সবকিছু তার নজরে ও দখলে,
ক্ষমতার বাহুবল যার, দেখি যেন সবে রয় তার দলে,
যত চামচা চাটুকার, পঞ্চমুখে শুনি যেন তার, সবে চিৎকার করে ঐ রাণী সাহেবার জয়ধ্বনি বলে ।
সেনাপতি আর যত প্রহরী ও সৈনিক,
আঁধারে কিসের ভয়, বিধাতা নিশ্চয়ই দেখাবেন দিক,
ঐ চাঁদটা নাহয় ধ্রুবতারাটা সংগী হলে, ভুলটা শুধরে হয়তো হয়ে যাবে ঠিক,
তাই ঠিক করেছেন মনে মনে, রাজায় যাবেন স্বেচছা নির্বাসনে, হবেন নিরুদ্দেশের অচিন পথিক ।
বুদ্ধি যখন চুড়ান্ত এবার,
ভাবছে কোনদিকে খোলা তার ফটক ও দুয়ার,
চিরচেনা আবাসন ও ঠিকানা, আজ যেন বড়ই অচেনা হয়ে পড়েছে কাছে তার ।
তারে কে বলে দেবে,
হাতটা ধরে কে টেনে বাহিরে নেবে,
দেখিয়ে তার নিরাপদে পালিয়ে যাবার সুদূর অচিন পথটা সঠিক ।
ওরে ভাই একটু দুঃক্ষ ছাড়া হয়কি জীবন,
দেখুন, ঘরের কথা নাকি বাইরে বলা ঠিক নয় তাই বলেছেন গুরুজন,
মনের কথা যা ওরে গোপন,
তা পরকে বলা কি উচিৎ নাকি তা হয়রে শোভন,
সে ইতো শ্রেষ্ঠ মানুষ এ জগতে রয়েছে যার যত বেশী দহন, সহন ও তা বহন ।
গহীনে মোরে করে জ্বালাতন,
সদা যা চাহে ও কহে মোর এদুটি নয়ন ও পোড়া মন,
সবই জানি ও বুঝি, তবে কেমনে করি অস্বীকার জীবনের ঐ দামাল প্রয়োজন ।
হয় বা চলে কি জীবন,
তার সনে নহে যে বন্ধু আপন কিবা প্রিয়জন,
যায় কি সবারে তা বলা, তারচে ভাল নিভৃতে একাকি চলা, মনের যত চাওয়া ও শত ঐ কষ্ট-বেদন ।
অ ভাই আমি যদি হতে চাই আর,
এমন বন্ধু চির আপন ও প্রিয়তম প্রিয়জন সংগী আপনার,
হারজিত হোক যাই, বলুননা এখন দয়া করে খুলে তাই, এ বিষয়ে কি আছে আপনার বলার ।
আমার এ ঘর-সংসার,
সব সন্তান, যত তেজারতি আর,
কিছু নাহি চায় তার নাই কোন দায়, যদিরে মালিক হোন এই রমলার ।
সংগী ও রংগী আর সুখ-দুঃখের আমরণ ভাগিদার,
পাবেন যে তার, ষোলআনা সবটুকু মালিকানা পা হতে মাথার,
বড় অবলা ও একাকি যার শূন্যতা ও বিষন্নতার পথচলা এই আমি হতভাগীটার,
করে অংগীকার, জোয়ার ভাটায় যেন কখনও হায়, কোন অযতন ও অবহেলা আর না হয় কভু তার ।
পর্ব – ৩৯
চাই যতনে গড়তে আবার,
ছোট্ট একখানা পাতার ঘর ভিতরে যার,
গড়বো দুজনে একটু আশা ও একবিন্দু ভালোবাসার,
গহীন গোপনে পেতে চাই শুধু বুকেতে ঠাই সেইতো হবে ভাই রাজপ্রাসাদ আমার,
কেউ যেথা আর দেবেনা হানা, অন্য কারো সুযোগ হবেনা কভু দেখার, হেন পরম আস্থা ও নির্ভরতার ।
দিতে ঐ সম্মান, ক্ষমতা ও অধিকার,
তা দেখভাল আর আদর ও যতন করিবার সবটুকু দায়ভার,
দেখুন মেডাম তা নয়তো হবার,
বলুন কেমনে হয়, আমি এমন একজন গরীব মানুষ বিত্তধন, বাড়ী-ঘর ও ঠিকানা কিছু্ই নাই যার ।
হয়ে পরিবারের আদালতে,
আজ আমি এসেছি ওরে, ঘর হতে বেড়িয়ে এক কাপড়ে নিরুদ্দেশের পথে,
ভাগ্যাহত এক পলাতক আসামী,
হয়ে গেছি আজ আমি সবার কাছে অতিশয় কমদামী,
আমি শুধু একজন বিবাদী,
অপরাধ না করেও কেন হলেম অপরাধী,
কি উপায় ভাই যেখানে ঘরের সবাই হয়েছে জোট বেধে বিবাদী,
যদিরে বনের সব গাছ হয় শাখাহীন, তবে কেমনে হবে কোথায় সাকিন, বলো আমি গিয়ে বাসা বাধি ।
কেমনে কোন সাহসে,
ঐ চাঁদ ছোবগো আমি মাটিতে বসে,
পায় কি ওরে সবটুকু সবে, সে আশায় ভালবেসে,
এতবড় দায় তুলে নিয়ে ছোট্ট মাথায় না পেরে হেরে যায় যদিগো অবশেষে ।
মাটির মানুষ মাটির দেশে,
রঙীন মেঘের ভেলায় চড়ে ভেসে মেতে হরষে,
কারো দিন যায়, কত কষ্ট-বেদন ও ঝামেলায়, দুদিনের এই ভ্রমণে এসে,
সহিতে না পেরে ভার, যদিরে মোর বেঁকে যায় ঘাড়, যাইগো আবারও আমি নানা যাতনে ফেসে ।
দিয়েছে মোরে চালিয়ে জোরে,
একাকি চলার যেথা নাই কোন ভয় কিবা দায়-ঋন ওরে,
হাজার বছরের পথ এ জগত ছাড়ি, দিবে অসীম আকাশ পারি এক পলকে উড়ে,
সুন্নাতি উপায় এ হিজরত,
কিছু নাই যার খোদার ভরসাই তার সাহসী বাহন পংখীরাজ রথ,
নাহি দ্বিধা সংসয় আছে জয়-পরাজয়, কোটি যাযাবর পথিকের এইতো সফর, অচিন প্রান্তহীন পথ ।
সেওতো এক সুন্নাতি জীবন,
হওয়া এক অসহায় বন্ধুর একটু সহায় ও অবলম্বন,
যার যাহা নাই তারে দিয়ে তাই, ক্ষুধায় অন্ন, তৃঞ্চায় জল ও বেদনায় বিনোদন ।
বোঝাটা তার জেনে ভার, নিজ মাথায় টেনে তুলে লওয়া,
সোহাগ ভরে হাতদুটি ধরে তার, সারা জীবনের সুখ-দুঃখের দরদী ভাগিদার হওয়া,
ঘরপতি হয়ে বিবির কাজ ও দায়গুলি মাথায় লয়ে, দুজনে দুজনার বাহন ও আধার হবার করা পণ ।
আছে ভালবাসা ভরা মন,
নরম মাটিতে মাখানো জল ঠিক যেন এমন,
কোমল ও শীতল ভিজা মাটির মতন অপার ঐ সহন,
নেই প্রতিবাদ ঘাত-প্রতিঘাত আসুক ওরে যখন ও যতই যেমন,
এক শর্তে হতে পারি রাজি, তাহলে ডাকুন কাজি, যদি পাই ঠিক তেমন মানুষ আমি একজন ।
পর্ব – ৪০
মেনে লবে মনে করে তারা,
হয়না আলোকিত চাঁদ যে তারার কিরণ ছাড়া,
হয়ে রবে মশগুল, মম ক্ষুদ্র তুচ্ছ আকুল মধুর প্রেমে মাতোয়ারা,
দেবো তারে মন, করবো সাদরে গ্রহন, শুধু ভালবাসা ছাড়া আর কিছু যার নাই চাওয়ার ও প্রয়োজন ।
যদি বহিতে না পারি,
আগের মত আবারও যদি আমি যাইগো হারি,
চাহিনা আমি এত সুখ, ভোগ-বিলাস বিনোদন, এত ধন ও এই মনোরম বাড়ী-গাড়ী ।
যদিগো আমি তা আবারও হারাই,
অনেক ভেবে এবার তবে ঠিক করেছি আমি তাই,
ওরে সুখ সুখ করে, কভু আমি কাঁদিবনা আর তা পাই বা না পাই,
অজানা ভয়ে আমি ভেবে মরি যাই,
শেষে না আবার আমার লুকিয়ে থাকার, আস্থার নিরাপদ ঠাই সুখের এ জায়গাটা হারাই ।
আর কি ওরে তবে,
এ জীবনে তা হবে মোর মন্দ নসিবে,
ভাবিলে তা আমার মাথাটা যেন বারবার যায়রে ঘামী,
যদি আর না খুঁজে পাই সামাণ্য সুখ ও সম্মানের ঐ একখানা ঠিকানা ও ঠাইটুকু আমি ।
আপনি কত মিষ্টি আর এতযে সুন্দর,
আঠার মত লেগে থাকে চোখ, যেথা একবার ওরে পড়েগো নজর,
এক তৃষিত পাখী বাঁকা দুটি আঁখি, বুকেতে যার বহিছে অসুখের হাহাকার করা দামাল ঝড়,
হলেমইবা নাহয় আমি আলোর সওদাগর,
এমন মানুষ যার নাই বাড়ীঘর, আর যে এত সুন্দর তার কি বলেন কভু মানায় এমন বুড়ো বর ।
সে কেমনে হয় অভাগী ওগো এতকিছু যার,
দেখেছি অনেক ওরে ভেবে ও হিসেব করে, শুধু স্বামী ছাড়া ভরপুর বাকী সবইযে রয়েছে তার ।
কষ্টগুলি ঢাকি,
নিজেরে লুকিয়ে রাখি,
শত বিষন্নতার কাছেও মানিনি হার,
মোখের ঐ হাসিটা রেখেছি ধরে হারাতে দেইনি আর,
সব থেকেও যেন কিছুই নেইগো আমার, ছাড়া বুকভরা শুধু অসীম ঐ শূন্যতার হাহাকার ।
তৃষিত এক চৈতালী বালুচর,
উড়ায় বালুকা হঠাৎ মাথার উপর,
এলোমেলো ঘূর্নিবায়ুর দুরন্ত সে চক্কর,
শুকনো পাতা, ময়লা কাগজ বাজে ঝনঝন মরমর,
বাঁশের রুয়া, আদল, পালা, টিনের দোচালা ঘর করে কড়মড়,
যাচে তপ্ত ভুতল একটু শীতল জল, আসুক তা লয়ে আষাঢ়ী ঢলের বাদল-ঝড় ।
রবো কি এমনই আজীবন,
আমি কি পাথর, নাই মোর কোন প্রয়োজন,
দুটি চোখ এই মন আর, বাসনাগুলি মোরে অহরহ করে জ্বালাতন ।
অনাদরে দূরে দূরে,
বলো আমি কতদিন ওরে রবো পড়ে,
ঘুমহীন রাত কাটে আর এ দেহটার ভিতরে বহে বৈশাখী দামাল ঝড়,
ছটফট ক্ষুধা ও পিপাসায়, শূন্য ঘরে একা বিছানায়, কত আর হাহাকার হয়ে তার অচেনা পর ।
পর্ব – ৪১
আমার এখন চাই,
নাঁচাবে মোরে নাগীন বাঁশরী বাজাই,
হোক সে বন্ধু কালো কিবা সুন্দর তাতে মোর আপত্তি নাই ।
রুপ দিয়ে বলো কি হবেগো আমার,
অর্থ-কড়ি ধন, প্রতিদিন আজীবন হয়যে দরকার,
বিদ্যার ক্ষিণ আলো, তারচে বেশী ভাল করে অনেক বেশী উপকার,
তা’ওতো ভরেনি ওরে আমার আপন ভুবন ও মনের ঘর,
এমন একজন যাদুকর, বাহুতে প্রবল ঝড়, সুজন বন্ধু ও রসিকা নাগর, কালভ্রমর কিবা মধুকর ।
কত সুখ এ জগতে বেশী ধন আছে যার,
সেতো কেবল বাহিরের দেখায়, কেজানে কি বেদন ভিতরে তার,
সেই ধনেও পারেনা ভরে মন, করে আজীবন গোপনে হাহাকার,
সুজন বন্ধুর সনে প্রকাশে ও গোপনে রাত কিবা দিনে না যদি হয় চাহিলে মনে মধু অভিসার,
সে কিগো পরাজয় আমার,
মনেহয় তা আর কিছু নয় ছাড়া আপনার, এক অপকৌশল এ দুয়ার হতে আমাকে ফিরিয়ে দেবার ।
কবে হবে মম বুকের ভিতর,
সাতরঙ মাখা ও মধুময় ছবি আঁকা খুবইযে সুন্দর,
গড়া একখানা ঘর, বন্ধুয়ার সুখ ও ভালোবাসার কল্পনার সে মিলন বাসর,
ওসব কথা শোনলে আমার মাথায় লাগে আগুন ও গায়ে আসে জ্বর, আর দেহের ভিতরেও উঠে ঝড় ।
আমি যদি বলি, এতকিছু আমি বুঝিনা আর,
বিদ্যা, রুপ, বাড়ীঘর ও বিত্তধন তার ওসব কিছুই আমার নেইযে দরকার,
বরং এখন যা কিছু ওগো রয়েছে আমার,
হলে বন্ধন ও বশীকরণ দুজনার মন, সবই তখন দুয়ার খোলা ধন হবেযে আপনার ।
ওসবে কোনই লোভ নেই আমার,
কাঙাল আমিযে একটু সুখ, সম্মান ও ভালবাসার,
আর শুধু ঐ দীনতাগুলি আমার যেটুকু জানায় আপনার ।
বলবে সবাই পুলিশ পুলিশ আর শোনে সেই সোর,
না যেন হয় রহিতে বসে লাজ ভারে কভু আমারে বন্ধ করে ঘরের দ্বোর,
মেখে আমি সারা গায় ঐ সরমের ঘোর, সেজে রবো হয়ে যেন এক হতভাগা পলাতক বোকা চোর ।
আমার ঐ ঘাটতিগুলোর,
মিলে কি হামেশা রঙীন রাত ও সোনালী ভোর,
নহে কিছু আর, ওরে আমি ভাই শুধু পেতে চাই তার অল্প একটুখানি ছাড় ।
তাছাড়া আর কিছু নাই মোর চাওয়ার কিবা দরকার,
শুধু সাধ দুহাতে চিপে এক মৌচাকের ঢিপে, নাক ডুবিয়ে মধু পান করিবার,
তাছাড়া ওগো আপনার ও আমার,
দুজনের মাঝে বয়সের অনেক ব্যবধান, মিথ্যে নয় সেটিও বিষয় ভালকরে একবার ভেবে দেখিবার ।
বিদ্যা কম, বয়স বেশী ও অর্থহীন,
এমন স্বামীকে নিয়ে ভাই, কেমনে আপনার কাটিবে দিন,
স্বেচ্ছা নির্বাসনে,
পালিয়ে গিয়ে থেকে আত্তগোপনে,
বাকী জীবনের দিনগুলি যে কাটাতে চায়, ভাবছে বুঝি তাই হবে তার লাগি সমীচীন ।
পর্ব – ৪২
বিধাতার করুণার দান হয়যে অতুল,
মানুষ কখনো ওরে হয়না বুড়া পাকিলেও তার দাড়ি-চুল,
কত দেখেছি ও শুনেশুনে তাই শিখেছি, খোদায় চাহিলে মরা গাছেও ফুটে শত ফুল ।
আমার এ সাধ ও বাসনা মনে,
ছেড়ে দেবো সংসার একজন সৎ, দক্ষ ও মহৎ জনে,
পাকা খেলোয়াড়ের হাতে, চাইযে বিলীন হতে নিঝুম গহীন রাতে অতি গোপনে,
কি হয়েছে, তাতেও হতে পারে পরম সুখের ঘর, জীবন সুন্দর এবং দেহমন চাংগা ও হরষে রঙীন ।
বাইরের দেখা ও ধারণাটা হতেও পারে ভুল,
রাঙা আমটা’ও হতে পারে টক ও সুরভিহীন রয়েছে কত সুন্দর ফুল,
নিশ্চয় ওরে তা ভুল নয়, কালো কুকিলের কু রবেও কত তপ্ত পরাণ হয় শীতল ও হরষে মশগুল ।
বুঝেছি ওসব কথা বলে বলে,
চালাকি করে আপনি ওরে নানান ছলে ও কৌশলে,
কি লাভ হবে তাই দিয়ে আমার, হোক এ দুনিয়াটা যতই সাজানো রঙীন,
আমাকে হতাশায় হারিয়ে, চাহিছেন বুঝি দিতে তাড়িয়ে, মোর চোখে ধূলো দিয়ে করে এ মনটারে মলিন ।
আমি বলে রাখি ভাই,
সবকিছু আপনাকে ওরে পরিস্কার করে খুলে তাই,
একটা ভিজা মাটির মন,
দূরে ও গহীনে দেখার ছোট্ট একটা অদেখা নয়ন,
বলছি তা বারবার, শুধু একটুখানি ভালবাসা ছাড়া আমারযে ভাই আর কিছুই দেবার মত নাই ।
শুয়ে শুয়ে আমি গল্প শোনাবো,
আপনি চাহিলে লোকের মনের ছবিও এঁকে দেখাবো,
কবিতা লিখে হতাশায় থাকা ও আঁধারে ঢাকা সব জীবনে দীপ্ত আলো ছড়াবো,
সোহাগ ঠাই পেলে, মাথা রেখে কোলে, ঐ রুপ সাগরে আমিযে কেবলই শুধু ওরে হাবুডুবু খাবো ।
আপা, আমি কিছুদিনের সময় চাই,
এ বিষয়ে গভীরভাবে ভেবে দেখবো, তবেগো আমি আপনাকে জানাবো তাই ।
তাতে কোন খোটা নাই,
যতদিন বাঁচি, যদিওবা কাজ করে খাই,
কাজে বাড়ে সম্মান, সুস্থ এ দেহখান ও তাতেই মনে সুখ পাই,
আপনাকে ওরে বলে রাখি আমি, বাড়ী ফিরে যদিও ওরে আর কোনদিন যাইবা না যাই ।
চিরদিন ওগো হবে মোদের জীবনে রবে তাই,
বুক ভরা দুজনের সুখ, সুনাম ও লাভ দেখবো দুজনে মিলে খুঁজে তা কোথা পাই,
দীর্ঘদিনের অদেখায় হয়তো সবাই,
ভুলে যাবে হায়, ভাববে ও বলবে লোকে হয়তো সে আর বেঁচে নাই,
কোন বিভুঁই অজানায়,
মুসাফির বেশে হায় বুড়ো বয়সে হয়তোবা মরণ হয়েছে তার কেজানে আহা কোথায় ।
মধু সুখ আপনার কাছে,
সবটুকু তার যেটুকু লুকানো আছে,
জানিনা দুহাত ভরে তাই আমি পাবো কিনা ভাই,
আস্থা, সম্মান, নির্ভরতা ও গোপনীয়তা আর উঞ্চ ভালবাসার চির জনমের নিরাপদ ঠাই ।
পর্ব – ৪৩
প্রিয় নবীজীর প্রথম বিবাহ আর,
এক সুন্নাতে ওরে,
যদি আমি ঐ রশিটা ধরে,
সব ঘাট ডিঙিয়ে কোনমতে পেয়ে যাই পার,
একটুখানি পেলে ছাড়, করুণায় বিধাতার, নতুন জীবন পরম সুখের হতেওতো পারে দুজনার ।
দোষ কি, কোন বাধা নাই তাতে,
কোন তফাৎ ওরে বিদ্যা, বয়স, ধন ও রুপ কিবা জাতে,
রঙরস ভরা বাজিমাত করা সব সুখ, বিনোদন ও ধনরতন তাদের হাতে,
দেখেছি সে প্রথায় বিয়ে হয় বৃটিশ রাজ পরিবার, তারাই জিতে সব মজা তাদের পাতে,
বিজন ঘরে জড়াজড়ি করে আপনি রাণী আর রাজা হবো আমি আপনার, নিঝুম তিমির গহীন রাতে ।
দীনতার কারণে যাহা আমি এ জীবনে নাহি পাই,
বিনিময়ে তার নহে কিছু আর, চাহি আমি আপনার শুধু ঐ ভালবাসাটাই,
বিয়ে করে লভে মর্যাদা ও ক্ষমতার আসন,
জাত-কুল, মান, ধন ও বিদ্যা যাই থাক বা নাথাক ওরে তার বরের তেমন ।
ভাগ্যবান ওগো হয় যেজন,
অনেক সুখ ও সম্মান এনে দেয় ঘরপতির বিয়ে ও ধন,
ধন নহে প্রিয় শুধু মোরে দিও, সুখটা’ই চাহে মোর মন,
ঐ বেশী ধন কারেও আবার বানায় অমানুষ করে চরিত্র হনন ও কারোবা সুখ হরণ,
অগাধ ধন আর সম্মানের অধিকার,
নাহয় নাহোক মালিকানা, জীবন জুড়ে রহে সুখ, আরাম ও রঙ-তামাশা আর ভোগের বাহার ।
এক ধনীর কনের সনে,
কিবা কোন বিত্তশালীর বিধবা বিবিকে দার গ্রহনে,
পথ হারিয়ে পেরেশান হন ভাগ্যবান এমন কতযে অভাগা জনে,
আবার ঐ বিবাহের কারণে স্বামী-স্ত্রী দুজনে হন অপার সুখ-বিলাসের ভাগিদার ।
জীবনের যত চাহিদা ও প্রয়োজন,
ওরে হাতে না পেলে তার সবটুকু কিবা সব উপকরণ,
তাদের কি হয় জীবন অসার,
যাদের জীবনে ছিল শুধুই আঁধার, শূন্য উত্তরাধিকার,
না তাহা নয়, বরং দেখেছি বেশী ধন, সুখ-আরাম ও বিলাসিতা যার,
ভাল নয়, হয় ঢের অপচয়, ঘিরে ঘন অন্ধকার তাদেরই জীবন যেন করে দেয় ছারখার,
বেশী দায়ভার ও বেশী ঋন মহারাজার, হবে তার হিসাব ও শাস্তি কঠিন, নিদানের ঘাটগুলি সব হওয়া পার ।
দেখেছি কত বাদশাহ্ আমীর,
হয়ে গেছে আহারে যুগে যুগে একেবারে পথের ফকীর,
আবার কতনা ভিখারী কিবা পথের ছেলে ওরে কিছুই আর কেউ ছিলনা যার,
ছিন্ন বস্ত্র ফেলে পলকে যেমন যাদুর খেলা খেলে, কে দিয়েছে ঢেলে কেমনে গড়েছে সে বিশাল ধনের পাহাড় ।
হে পন্ডিত মানুষগণ,
রেখে যাওয়া আপনার বিপুল বিত্ত-ধন,
কুক্ষিগত ও পুঞ্জিভুত যা করেছ কামাই তুমি সারা জীবন,
সে আশা নিয়ে, দিবে তব উত্তরাধিকারীদের ধনী বানিয়ে, করিতে সুখ, আরাম, আনন্দ ও ভোগ-বিনোদন ।
পর্ব – ৪৪
ওরে না হলে তব ঐ বিত্তধন হক্ক ও হালাল উপার্জন,
হলেওবা তা হালাল, আজ বাদে কাল বদলে সময় কেজানে ওরে হয় কেমন,
কেজানে কি আছে নিয়তির লিখন,
কার মন ও মানসিকতাইবা হয় কখন কেমন,
তাদের সকলের চলন, বলন, মনন, কর্ম্ম, আচরণ ও জীবন যাপন,
ওয়ারিশগণ নিজেদের সাধ বাসনার উপর যাদের নেই বা ছিলনা কোন শাসন নিয়ন্ত্রণ,
তাই তারও কোন নিশ্চয়তা নাই, যদিওবা হয় তবু তা দুতিন পুরুষের বেশী নয়, নহে তা অক্ষয় চিরন্তন ।
এ জীবন হবে যখন,
অসাড়, অক্ষম, অসহায় ও অচেতন,
ওরে করবে তার আপন ঘরে চুপিসারে পলায়ন,
খাঁচা ছেড়ে অজ্ঞাতসারে মাটির দেহটা ঝেড়ে তব রুহ্টা যখন,
সব ফেলে যাবে ফিরে মন, হবে অবসান দুনিয়ার জীবন, তারেই লোকে কয়যে মরণ ।
পাশে নেই কোন আপন স্বজন,
কিবা আর হাতে কোন টাকা-কড়ি হলে তোমার দশাটা এমন,
বলো কি উপায় হবে শেষে, গিয়ে একা অচিন বিভূঁই বিজন দেশে তুমি করবে কি তখন ।
যদিরে ভাই আপনার,
রেখে যাওয়া ঐ সমুদয় ধনগুলি দুনিয়ার,
যেথা রবেনা আর খবর জানা কোন মালিকানা, নিয়ন্ত্রণ ও অধিকার কিবা এখতিয়ার ।
মমতা ও সব দায় আর,
ভুলে যায় ছেলেমেয়েরা তাদের সবার,
পরজীবন ভুলে রয়, কেউ কেউ হয় দেউলিয়া করে স্বেচ্ছাচার,
না নিজে পুণ্যবান নাহি করে দীনজনে দান ও না দেয় ঐ পুণ্যের ভাগ আপনাকে আর ।
যদিরে হয় অহরহ অপচয় কিবা তার,
নতুন মালিকের বিপথে চলা কিবা কোন কুকাজে ব্যবহার,
ভাবুনতো ভালকরে একবার,
পরম ঐ নিদানের পরকালেও তা আপনার,
বরং নিশ্চয় হতে হবে তাদের ঐ পাপের কিছুটা ভাগিদার
কবরের বেহালে হবে কি লাভ আর করবে তা কি এহসান বা উপকার,
ছোট্ট এ এক জীবনে সবটুকু শূন্য হবে যা মরণে, এত ধন তবে আর বলো কার কিবা দরকার ।
তাই ওরে ভাইজান,
থাকিতে হাতে কিছু ধন ও এ দেহে প্রাণ,
বলি আমি ওরে মনভরে নিজের দান নিজ হাতে নিজেই করে যান,
রাজার খুশীতে ঢেলে মণ-প্রাণ,
বিয়ে করে দুনিয়ায় রেখে যাওয়া নেক সন্তান,
তা যেন আলো ও ভালোর সাজানো এক বিশাল বাগানে সহস্র কোটি চারা লাগান,
দুঃসময়ে ঢের পুণ্য আর,
রাঙা ফল ও সোনালী ফসলটা তুলতে গোলায় তার,
নিজ হাতে কিবা বিছানো শূন্য পাতে পেতে আপনার, করবে যখন দুনিয়া জুড়ে সবে হাহাকার ।
পর্ব – ৪৫
নিশ্চয় তা ওরে খোটা নয়,
দুই জীবনের সকল বিজয় বা পরাজয়,
কথায় নহে শুধু কাজেই মানুষের হবে হয় আসল পরিচয়,
মোটেও মিথ্যে নয়, এই কাজেই মানুষ জীবনে মরণে দুই জগতে সেরা, ধন্য ও অনেক বড় হয় ।
মূল্যহীন, অলস কিবা কর্মহীন জীবন,
সবল হয় ও সে বেঁচে রয় সকল ভালোয় চিরকাল আমরণ,
ওরে বেশী বহন ও বেশী সহন,
কাজ করে খাওয়া ও খেটে খেটে ঘামে ভিজে যাওয়া যে দেহমন,
সেজন চিরতর রয়যে অমর, ঘর ও বাহির তার হয় সুন্দর, দীপ্ত আলোয় পরম ভালোর হয় সাধন ।
সচেতন বোধ বিবেকের ডাক,
আখেরী নবীর মহান তরিকা, আকিদা ও আখলাক,
ভালকথা, ভালকাজ ও পুণ্যের বিজয় ও সফলতার পুরষ্কার সবাই পাক,
শান্তি, সুনাম ও সুখের লাগি, এসো অসাড় সকলে জাগি, চিরদিন এ বিশ্বজগতে তাই টিকে থাক ।
ছিলনা বলে আমার ধন,
না পেয়ে কোন ভোগবিলাস ও বিনোদন,
যা দেখেছে মোর পরিবার, যত স্বজন ও সন্তানগণ,
মম জীবনটারে ফেলে তারা রঙের বাহারে করেছে অবমূল্যায়ন,
হয়তো ছিলনা বলে তাদের নয়ন, দেখেনি কভু তারা মোর কোনই সফলতা কিবা মহাঅর্জন ।
মোর নাকি কোন প্রাপ্তি ও সাধন নয়,
শুধু বড় আশা, বড় কথা, বড় স্বপ্ন ও ব্যর্থতা আর পরাজয়,
না দেখে বা না পেয়ে কোন রঙমাখা বিলাস ও বিনোদন কিবা ঐ সাধন,
বারবার তারা ফিরে ঘুরে, দেখেছে আমার এ জীবন জুড়ে অপার দীনতা আর ধূসর অনটন ।
সেই অজুহাতে ও অপরাধে তাই,
আমার স্ত্রী ও সন্তানগণ অকপটে একজোটে মিলেযে সবাই,
সে কি নয় করে কোণঠাসা ও অপমান,
এই বুঝি হতে পারে এত কষ্ট আর ঐ ত্যাগের প্রতিদান,
নির্যাতন ও পীড়ন যতই সয়েছি তাই,
কেমনে তা মেনে লই, কেমনে বা সুখী হই, বলো আমি তার সব ভুলে যাই,
করে মরমের উপর চরম অত্যাচার ও জ্বালাতন,
দিয়ে অক্ষমতার এক পাহাড় অপবাদ মম জীবন বিষাদ, আমারে দিয়েছে তারা অঘোষিত বিসর্জন ।
ওরে ওদের কোন দোষ নাই,
একটু সুখ ও স্বচ্ছলতা আর বাড়ীগাড়ী এ যুগের চাওয়াতো ওটাই,
নিয়তির এইতো লিখন,
সম সুখ-সাফল্য বিজয়, বিত্তধন ও ভোগ-বিনোদন,
যতই তারা হোক বিদ্যান থাক দুনয়ন, সবার কি হয় সব জানা পায় তার দরশন,
এ জীবনে কারো হয় কারোবা নয়, কজনের আছে সে বোধোদয়, সবার কি দেখা হয় নশ্বর এ জীবন ।
আক্ষেপে একদা আমি তাই,
ঠিক করিলাম, কোন আশ্রমে গোপনে বহুদূর নির্বাসনে চলে যাই,
মনের অমিলও ঘটায় ঘরেতে সুখের গরমিল, যদিও কেউ কেউ গোজামিলে দিন কাটাতে চাই ।
কতজনে হায় শেষে যায় পরকীয়াতে জড়াই,
অন্তরে অন্তরে পুড়ে, অসুখের অনলে কত ঘর যায় ভেংগেচুরে তার হিসাব নাই,
কেউবা আবার সুন্দরী বউ ও সুন্দর পরিবেশ ফেলে কালো বউয়ের সনে ঘর করে গিয়ে দূরে পালাই ।
পর্ব – ৪৬
তার সনেই বাধিব জোড়,
সুখে-দুঃখে রবো জড়িয়ে প্রেমেতে বিভোর,
হাতে হাত ধরে দুজনে, যেতে হয় যাবো বনে, মজিলে মজার ঘোর, হলে তাতে ঐ বন্ধুয়ার সুমতি ।
হতে স্বামীহারা কোন লক্ষ্মী বধূয়ার ঘরপতি,
আমারতো ভাই তাতে নাই, কোন অসুবিধা, আপত্তি, দ্বিধা কিবা ক্ষতি,
মানুষতো কভু মানুষ হয়না,
কিসের মানুষ না জাগিলে বুকে মমতা ও করুণা,
আপদে নিদানে ও বিপদে পড়ে যখন আর পথ খুঁজে পায়না,
কেউ শোনেনা যাদের নিরব অসহায় কান্না, ঐ সকল মানুষ ও অন্য জীবের প্রতি,
কি অসুবিধা নিলাম তুলে মাথায়, পিতৃস্নেহ আদর ও মায়ায় অভিভাবকের দায় ঐ বধূয়ার পিতৃহীন সন্ততি ।
কি হবে করে বিদ্যা, রুপ কিবা বিত্ত-ধনের বড়াই,
বলুনতো কি দাম আছে এ জীবনের ভাই, সুখটাই যদিগো আমি নাহি পাই,
কত সতী সাধ্বী রমণীর ঘরে পতি নাই বলে, নানা কষ্ট ও সমস্যায় ভাবছে বিফলে তার এ জীবনটাই ।
যদিগো তা ভাগ্যে জুটে বা খুঁজে পাই,
নহে অসহায়, নাই মোর কোন দায় কিবা পিছুটান কোনটাই,
সে এক নতুন জীবন,
মেনে লয়ে ওরে ঐ স্বেচ্ছা নির্বাসন,
দুঃক্ষ নাই, কিছু হারিয়েও যদিরে শেষে তবু কিছুটা সুখ আমি পাই ।
কতজনে ওরে আহারে খুঁজে ফিরে তাই,
সুখ সুখ করে নিরবে কেঁদে মরে, পথেপথে বিজনে গোপনে ঘুরে বেড়াই,
নহেতো বেশী সুখ বেশী ধন, কিবা বেশী ভোগ-বিনোদন শুধু আমি একটুখানি সুখইতো পেতে চাই ।
হয়তোবা বলেই ভাল চায়,
বেশী খেতে বারণ, ইচ্ছেমত খেতে দিতে নাহি চায়,
এত নিষেধ মানা, মেনে চলা ওরে আসলেইযে হয়ে পড়ে বড়ই কঠিন দায়,
বধূ যদি কভু পতির গুরু হয়ে যায়,
অপরাধী ও দাগী আসামীর মত শুধুই জেরা করিতে চায়,
বারবার প্রশ্ন করে বিরক্তিতে ভরে, কেন-কেন-কেন, ঐ স্বরেই কেবলই যেন ধমকায়,
এত "কেন" বলো শোনতে ভাল লাগে কার, সব কেনরই কি উত্তর আছে নাকি তার জবাব দেওয়া যায় ।
আর চাহেনা মন,
সবাই ভাবে অবুঝ শিশুর মতন,
কিছুই যেন এখন তারা জানেনা ও বুঝেনা এমন,
সব বুঝেও, এই বুড়োকালে কেমনে আবার তেমন শিশু হয়ে যাই,
বুড়ো বাবামা মূর্খ, অবুঝ ও বোকা – বড়ই পীড়া দেয় এখন সন্তানের ঐ ধারণাটাই,
নিরবে গোপনে ভেবে মনেমনে বড়ই কষ্ট পাই,
কোন কথায়, বুদ্ধি বা পরামর্শে যখন দেখি হেথা আর কোন কদর, ভূমিকা, গুরুত্ব বা অবদানই নাই ।
তবে বলো এখানে কেন আর,
এত মজার খানা ও সুখ-আরামেরইবা কার কি দরকার,
মান ও মূল্য যদি নাহি পাই,
করেনা পরামর্শ ও চায়না কেউ মতামত তাই,
মন বলে বাকী দিনগুলি ভাই, এবার নাহয় আমি আশ্রমে গিয়েই কাটাই,
অতিশয় সাদামাটা ও সাধারণ ঐ যারা সবাই,
যেথা নাই কোন ভেদাভেদ, হিংসা ও হার-জিতের লড়াই কিবা ঘৃন্য ঐ নীচতার বড়াই ।
পর্ব – ৪৭
কারো এ জগতে কেউ নাই কিছু নাই,
আবার কেউবা এমন তার ঘরই যেন হয়েছে বন তাই,
সব থেকেও তা ফেলে রেখেই গোপনে সেজন ওরে এসেছে পালাই,
যেথা কোন দন্দ কোলাহল প্রতিযোগিতা কিবা ভোগ-বিলাস ও বিনোদন কিছু নাই,
সেইতো সুখ ওরে অনেক পাওয়া যেথা নাই অপবাদ অপমান কোনটাই,
অনেকে ভাবেন নিজেরে মূল্যহীন, চাহেন নিরবতা, দায় ও ঝামেলাহীন একাকি দূরে গিয়ে থাকেন তাই ।
অসহায় যত দীনজনে,
দান করিবেন হেটে হেটে পথে পথে গোপনে,
যার কিছু নাই আর কেউ নাই, দিনভর ঘুরে ঘুরে তাদেরে খুঁজে বেড়াই ।
না হওয়া চাই কভু পরনির্ভর,
যতই জীবনে আসুক নিদান ও ঝাপটা ঝড়,
মনটা যেন একেবারে না যায় মরে, মুখাপেক্ষি হও ওরে শুধুই খোদার উপর ।
এ পৃথিবীটা ওরে অ-নে-ক বড় ও অতিশয় সুন্দর,
আপনার চেয়েও আপন তোমার হতেও পারে কোন অচেনা পর,
কতজনে বন্ধু খোঁজে, একেবারে শূন্য খাঁখাঁ ও বিজন যাহার মনের প্রাসাদ ঘর,
যাদের নাই কোন ঠাই, নাই বাড়ী-ঘর,
নাহলে কেমনে ওরে খেয়ে-পরে বাঁচে এমন লাখো কোটি ঐ মুসাফির যাযাবর ।
যেজন ওরে কাজ করে খায়,
উত্তম সেজন নিজেই যেবা হয় নিজের দায়,
পারেনা তবু চেষ্টাটা ছাড়েনা ও হারেনা যদিওবা সে পড়ে যায়,
বারবার উঠে দাড়াতে চায়, বুক বাধে শুধু বিধাতার ভরসায় আপদে নিদানে যেবা তরায় ।
এ মহাবিশ্বটার একক মালিক মহাজন,
বিশাল তার পোষ্য পরিবার দিয়ে সব প্রয়োজন করছে লালন-পালন,
খোদা’ই তার সহায় ও জিম্মাদার, সেতো তার অংগীকার, আর তাতেই বেশী খুশী হন বিধাতায় ।
কেজানে কে কোন কারণে কিসের লাগি,
বুঝি পেতে কিছু সম্মান ও স্বাধীনতা, হতে আত্বনির্ভর হয়তো গিয়েছে ভাগি,
কত বৃদ্ধ বাবামা, বিদ্যান ও বিত্তশালী,
কেউ একাকি কেউবা আবার দুজনে হয়ে দুজনার গিয়ে মিলি,
লয়ে মনে সুখের বিলাস, মানুষ নামের এক জিন্দা লাশ, গড়েছে আবাস দূরে কোন আশ্রমে যাই ।
লোকে জানতে চাহে তাই,
বলি তারে হাসি মোখে ভাল আছি ভাই,
মনকে মনেমনে বলি বাকী জীবনটা ভাল থাকতে চাই,
ভাল খাবার ভাল পরিবেশ নাই দরকার, বড় বিষয় এ স্বচ্ছন্দ ও প্রশান্তিটাই,
সুখের লাগি বিবাহ করিব ও গোপনে হেথা লুকিয়ে রবো পেলে ঐ কাঙ্খিত নিরাপদ একখানা ঠাই ।
নেই তাতে কোন ক্ষতি,
হবো নাহয় আমি প্রিয়সীর ঘরপতি,
কিসের খোটা যদিওবা কোন কাজ করে খাই,
আরাম নহে সম্মান ও স্বাধীনতা আর মনের সুখটাই পেতে চাই,
আমিও সবারে করিব বর্জন, সে এক আত্তগোপন যদিরে কভু আমি সে সুযোগ পাই,
পলায়ন মাঝপথে, বিফল মনোরথে, বুঝি আমি পেলাম খুঁজে যা মোর কাছে নাই ঐ সে অমূল্য রতন ।
পর্ব – ৪৮
এত বিদ্রুপ, ভর্তসনা ও তিরস্কার,
ঐ অবহেলা ও অপমান আর কতদিন কিবা কতবার,
একই কথার পীড়ন বারবার সারাক্ষণ, শুনিতে সহিতে বলো এ জগতে ভাল লাগে কার ।
হয় ঐ ঘরে আমি ফিরে যাবোনা আর,
দূর বিজনে নিরজনে গোপনে পাতিব নতুন কোন মধুময় সংসার,
কিবা কভু গেলেও, রাখিব যতনে ঢাকিব নির্বাসনে, নিরাপদ ঐ সুখের আবাসন আমার ।
সত্যবাদী ঐ কন্ঠটা যেন তার,
নানা কষ্ট আর বিষন্নতার আবেগে তখন রয়েছিল হয়ে ভীষণ ভার,
দেখেছি আমি যেন তা এসে উঠিছে ভেসে বারবার,
প্রসন্ন রাখার শত চেষ্টার কাছেও মেনে হার, নয়ন ও বদনে ফুটে ছিল তার একটা নিরব হাহাকার ।
দার্শনিক, সাহিত্যিক, লেখক ও কবি,
কে আছে তোমার বন্ধু, সংগী-সুহৃদ, বান্ধব কিবা কোন বান্ধবী,
জানি আমি তার, ক্ষিপ্ত মম বিবি সাহেবার ক্ষেদ, আর যাই বলুক সে এ জীবনের ভেদগুলি সবই ।
যাওনা করো গিয়ে,
কাশর ও ঢাক-ঢোলক বাজিয়ে,
মন চায় যারে, কোন সুন্দরী যুবতী রাজকন্যারে আজই তুমি বিয়ে ।
কারো কাছেইতো সবকিছু নাই,
একটু সুখের আশায় তাইতো ওরে ছুটছে সবাই,
বয়সতো নয়, এক সুজনের সনে মিতালি করে আমি সুখ পেতে চাই,
একটু সুখের লাগি গভীর নিশীথে জাগি করিছে নিরব ক্রন্দন সবকূল হারিয়ে,
মনে নাবলা কষ্ট-বেদনা এমন শত দুঃখীজনা, আকুল আকুতির ঐ হাত দুখানা তুলে বাড়িয়ে,
দেখোনা কাতর বদনে, তারা জলহীন বিষন্ন নয়নে, দাতা ও পালক প্রভুর দরবারে রয়েছে ঠায় দাড়িয়ে ।
যার কাছে সব আছে,
কেন সে আসবে তোমার কাছে,
কি করবে বলো, সে এক বুড়ো স্বামী দিয়ে,
কোটি রমণীর ঘরে তাদের বুড়ো স্বামীকে রেখে তারা পালিয়ে,
তবে কি ওরে সবে অন্য কোন যুবককে আবার গিয়ে করেছে গোপনে বিয়ে,
তোমার দেখার সীমানাযে অতিশয় কম ও ফেলেছ বুঝি তুমি সে বোধ-বিবেকটুকু হারিয়ে,
এক রাজকুমারী আর ঐ মালীর ছেলেটা ওরে, একদা হাত ধরাধরি করে কেন যে গিয়েছিল পালিয়ে ।
বাবামারতো হচ্ছে মিলন, সত্তর আশিতেও এসে দাড়িয়ে,
দেহ ও মনের চাওয়া বা প্রয়োজন, দেওয়া যায় কি ওরে তা কভু ঠেলে তাড়িয়ে,
আছে যার যৌবন সংগীর প্রয়োজন, প্রিয়জন হারা নারী-পুরুষগণ, এমন যারা করবেইতো তারা বিয়ে ।
জীবনের রুঢ় বাস্তবতা,
লুকানো মনের গোপন কষ্টের কথা,
কতজনের কতকিছু নাই, নাবলা অজানা সে বারতা,
নিরাপদ শান্তির ঠাই ও সুখের বড়াই, স্বামী হলো স্ত্রীর রোদ-বৃষ্টির ছাতা,
বুক ফাটে তবু মোখ ফুটেনা যদিও সে কষ্টের তাড়না যায় সহনের সব সীমাটুকু ছাড়িয়ে,
পিতামাতাগণ ভুল করছেন ঠিক বয়সে বা ঠিক সময়ে, তাদের ছেলেমেয়েদেরকে সুপাত্রে বিয়ে না দিয়ে ।
না পেলে তা হয় হতাশা,
তারেই লোকে কয় প্রেম বা ভালবাসা,
হতেও পারে বলো তা কজনে পারে, না হলে জীবন খাসা,
যদিরে মনের কাছে কভু কারো দেহটা হারে, তবেই তা হয়রে মহাসর্বনাশা ।
পর্ব – ৪৯
আমরা সবাইতো সুখী হতে চাই,
ওরে যার যাহা নাই, ঐটুকু দিয়ে বা হাত পেতে নিয়ে তাই,
কেউ কম কেউ বেশী কারো মোটেও নাই,
তবু এ পাওয়া নাপাওয়া নহে কারো খোটা, কিবা নেই কোন বাহাদুরী-বড়াই,
স্বামী-স্ত্রীর বাধা জোড়, সুস্থ্য সবল দীর্ঘায়ুটার মন্ত্রযে এটাই,
নারী-পুরুষের দুটি দেহ-মনের যে বিনিময়, নহে তা উপেক্ষা বা অবজ্ঞার বিষয়, সেইতো বিয়ে ।
আমি বলি ওরে যেজন অবুঝ কানা,
বোকার নেই ধারণা, তাকেযে বুঝানোও যায়না,
এত সোজা নয় ওরে, এ জীবনটারে খুব ভালকরে চেনা ও জানা,
এ জগতে সব ধন সব সুখ, সব লোকে পায়না ও সকলের কাছে তা সমভাবে হয়না বা থাকেনা ।
শুধু রুপ, ধন ও বিদ্যার কিবা দাম,
জীবনের চাইই চাই কিছু হর্ষ-পুলক, বিনোদন ও সুখ-আরাম,
এ দেহমন ভরেনাতো ওরে কারো কখন, দিয়ে নিজ যোগ্যতা ও ধন কিবা শুধু বাপ-দাদার নাম ।
ঘর ভেংগেছে যার,
কিবা একজন বিধবা ছাড়া আর,
তার গুমরে কাঁদা বুকের ভার, কে বুঝিবে পতিহারা সতী নারীর কিযে হাহাকার ও সে কষ্টবেদন ।
ঢের বিদ্যা, রুপ ও ধন,
কি লাভ তাতে, কিবা বড় জাতে, যদিরে হারে দিতে না পারে সুখ বিনোদন,
বয়সও কম, দেহেও রয়েছে তার ভরা যৌবন,
অদেখা বিরহের ঢলে আজও পায়নি বলে সে একজন জীবন সংগী সুজন,
দেখেছি ভরেনি ভরেনা, অস্ফট হাহাকার ও ক্রন্দন করা অনাদর অযতন ভরা কত সহস্র জীবন ।
বয়স, বিদ্যা ও রুপ কিবা ধন নয়,
সত্য বচন, সুখী হতে এ জীবনে বড় বেশী প্রয়োজন হয়,
যে হাতের পরশে যাদুর সম্মোহন,
না মানা হার, যায়না করা অস্বীকার কিবা নিবারণ এমন,
যায়না দেখানো কিবা কারেও বলা, ভুলে থাকা বা এড়িয়ে চলা যা করে জ্বালাতন,
এ জীবনে বড় প্রয়োজন সুবোধ, সুবচন ও ভিজা মাটির মন,
ওরে আমরণ সুখে-দুঃখে জীবনের প্রতিক্ষণ, সুজন সংগী রসিক ও রংগী ভালমানুষ বন্ধু একজন ।
হোকনা সে যতই রাজপুত বাহাদুর,
সবাইতো চায় রাতটা যেন পায় আরও মাতাল ও মধুর,
সবইতো আমার জানা,
কভু তুমি আর খুঁজে পাবেনা অজানা ঐ সুখের ঠিকানা,
তোমার দৌড় আর, অসীম তব ঐ স্বপ্ন-আশার, অচেনা চলার পথটার সীমানা ।
তুমি দেখতে কালো,
জানি, নাহয় তুমি মানুষটা ভালো,
ভাল মানুষের এখন আর কোন দাম নাই,
তাই ভালোরা কেউ আর না করে সে বড়াই গৃহকোণে সবে রয়েছে লুকাই,
এই ভালটা দিয়ে আজতো আর ওরে কিছুই হয়না,
কোন ভাল মানুষেরে, কেউ আর আজ ওরে ধরেনা গণায়, কোন কাজেও ডাকেনা বা টেনে লয়না ।
ছিল কত বড় জাত,
দেখেছি এখন তারা খেতেও পায়না ভাত,
গুণে নয় ধনেই হয় সফল, এখন আর মানুষে খায়না জল, মানুষের ঐ বিদ্যা, রুপ বা ভালটা ধুয়ে ।
পর্ব – ৫০
যদিও বলের কাম করে কল,
অর্থ বা ধন ছাড়া এ যুগের জীবনই যেন রয় অঁচল,
অর্থই এ যুগের সকল রুজি, পুঁজি,পাথেয় বা সম্বল, জীবনের দেহ ও মনোবল,
যা বলেছ ভাই যদিও সত্য হয় তার বচন সকল,
ধন, বয়স, বিদ্যা ও রুপ-যৌবন সব থেকেও সুখ বিনা এ জীবন বিফল, যা কিনতেও পাওয়া যায়না ।
ধনেরযে ওরে অনেক লম্বা হাত,
কাছে তার সবাইযে মানে হার, একেবারে কূপোকাত,
ধনের পিছে দেখি ছুটছে সবাই, মান ও মরণের ভয় নাই, ধন্য হতে চায় সবে এই ধনের চরণ ছুয়ে ।
থেকেও ঢের রুপ, যৌবন, বিদ্যা ও ধন,
কেন অগণিত রুপসীর দেখি দুঃসহ এক সংগীহীন জীবন,
বিলিয়ে অবারিত ঐ রুপ-যৌবন,
নন্দিত নরকে চড়ে সোনার চড়কে হর্ষ বিনোদন,
সুখ বিহন করে নৃত্য ভরে চিত্ত নেশার ঝিলে সে কোন অবগাহন,
কি গলদ তা জানা দরকার, ছোট্ট এ জীবনের লাগি সহসা একবার, ধুয়েমুছে হওয়া শুদ্ধ ও শোধন ।
ভুল ধারণা ও ভুল দরশন,
ওসব থাক বা না থাক ওরে যেখানে একটু জীবন,
হোক তা বেশী কিবা কম হরষে বরণ, আমরণ হরদম একজন সুজন সংগীর বড় বেশী প্রয়োজন ।
এ জীবন একখানা বাগান,
অবিকল যেন তাই নারীর এ দেহখান,
সব থেকেও ভরপুর কেনরে গোপন ঘরে তা ম্রিয়মান,
করিতে আদর ও যতন যাচে যাহা দেহমন ফিরে পেতে তাজা প্রাণ,
প্রয়োজন সুজন সংগী একজন রংগী বন্ধু সোহাগী রসিক স্বামী পরম প্রিয় ও দামী পেতে সুসন্তান ।
যারা সুখ, সুনাম ও সফলতা চান,
দুজনেরই চাই এক মন, নয়ন ও একই দেহ-প্রাণ,
বিনা প্রিয় স্বামী-স্ত্রী ও সন্তান হয়না জীবনের কষ্ট ও হতাশার অবসান,
ঐ বন্ধু বিহন ছারখার আনচান এ জীবন,
কেন মনেহয় এমন যেন এক দিগন্তহীন মাঠ বড়ই নিঝুম, বিবর্ণ, বিরান ও বিজন,
তাই সে বীজতলা সাজাতে চাই নিপূণ মালি দিয়ে জল ঢালি রহিতে খোশখোশালি করে তার সন্ধান ।
হয়না কেন হতে চায়না যেন প্রভাত,
রঙ মাখানো এ ভুবন যেন তার, ঘন আঁধারে ঢাকা এক সুদীর্ঘ রাত,
সে যাতনা পার হতে চায়,
কল্পনার সে শান্তিপুর কে জানেরে কোথায়,
আর কতদূর ঐ মধুপুর, ডাকে তবু কেন আড়ালে লুকায়,
খুঁজে বেড়ায় নাহি পায়, চঞ্চল এ দেহমন পদতলে পিষে দলে, সবকিছু ঠেলে পিছনে ফেলে থুয়ে ।
কখনও ভাংগা তরীর হাল,
কখনও ঢাল, কখনবা তা হয়যে মশাল,
তাই কিরে, ধনহীন মানুষেরা এ সমাজে কাঙাল,
উঠে দাড়াবার খুটি, মসৃণ চলার পথ ও শক্ত হাতের লাঠি,
রঙীন চশমা, সোনার দুধের বাটি ও কারুকাজ করা চিকন শীতল পাটি,
কেউ কেউ ভাবে এ ধনই বুঝি সব ক্ষমতা, সুখ, সক্ষমতা ও সফলতার প্রকৃত মূল,
বেশী ধন যার, এ জগতটাই যেন হাতে তার, সাতখুন করেও হয়না তার কোন অপরাধ কিবা ভুল ।
পর্ব – ৫১
কে করেছে তোমারে মানা,
জানোনা, ধনহীন মানুষ এ জগতে এখন যেন অঁচল ও কানা,
বুঝেছি আমি তার, ঐ চেলেঞ্জ ছিল প্রতি আমার, অসহায় এক অক্ষমতার বুকেতে আঘাত হানা ।
বলো কি আছে তোমার,
সে ছিলো এক নিদারুণ মানষিক নির্যাতন ও অত্যাচার,
যাবো আমি কোথায়,
বুঝিনি সেদিন কি করা উচিৎ বা কি করা য়ায়,
কূল ছিলনা আমার সে ভাবনার, কোনদিকে খোলা পালাবার আছে কিনা তার কোন পথ বা দুয়ার ।
জানালো সবিনয়ে, সাধ আছে সাধ্য নেই,
কেমনে কার মন রাখি মন পাই, বলো আমি কারে কিবা দেই,
ধন ছাড়া এ জগতে মনের কিবা দাম,
ভালবাসা নয় সবে চায় বিলাস, বিনোদন, সাফল্য ও সুখ-আরাম,
কোথায় আছে কার কাছে পায় দাম, মূল্যহীন এখন সব ভালকথা, ভালমানুষ কিবা কোন ভালকাম ।
মানুষ হতে কেউই নয় ওরে,
সবাই শুধু ধনে বড় হতেই আজকাল লেখাপড়া করে,
বুঝি তাই, মানুষ নামের অনেকেই এ সমাজে দেখতে পাই, আজও পশুর দলে আছে পড়ে,
তাই বুঝিরে ভেদবিচার নাই, হোকনা তাই বামহাতের কামাই, পাপ-পুণ্য যাই কিবা হালাল ও হারাম ।
ঘুষ, তছরুপ বা আত্তসাত,
কত ভাল ছিল, পলকে হতো যদি কোন বাজিমাত,
সাদা-কালোয় কি আসে যায়,
আলাদিনের যাদুর চেরাগটাই যেন শুধু সবাই পেতে চায় ।
ডাংগায় ধরিতে মাছ,
হতে রাতারাতি আংগুল ফুলে কলাগাছ,
ঐ বুঝি ওরে সোনার হরিণটা পালিয়ে যায়,
ধর ধর পাপ-পুণ্য ভুলে প্রায় সবায়, দুরন্ত বেগে তার পিছে পিছে ধায়,
ঘাটে ঘাটে বারবার হেরে যায়, ভেবে পাপ-পুণ্য ও ন্যায়-অন্যায়, ধনের প্রতিযোগিতায় সব সাদা মন ।
কেউ মনমরা, কারো বদন মলিন,
তাই আজ এখানেই থাক, বাকী গল্পটা নাহয় অন্যদিন,
বলবো সবারে, ঘরে ও বাহিরে যদিরে শেষ হয় মোর সবটুকু জানা ও সব বকেয়া দায়-ঋন ।
কতদিন নেই তার দেখা,
পুরাতন কথা ভাবছি বসেবসে একা,
ছিল আমার একজন বয়োজেষ্ঠ ও প্রবীণ শিক্ষিকা,
তার উক্তি – সারা জীবনেও নাকি হয়না সমাপন কারো সবকিছু শিখা,
উচ্চ শিক্ষিত ও পন্ডিত, অতিশয় মজবুত ছিল তার ভীত, যার কাছ থেকে নেয়া যায় নানা দীক্ষা ।
তার বচন হতে পারে সত্য চিরতর,
কালোই নাকি পুরুষের আসল রুপ, উত্তম, শোভন ও সুন্দর,
কেজানে কি ভেদ, পাশ্চাত্যের শ্বেতাংগ মহিলাদেরও নাকি এখন কালো পুরুষের উপরই বেশী নজর ।
যাই হোক বিদ্যা ও ধন সামলে সকল ঝড়,
তার বিজয়, সুখ ও সুনামের আসন নাকি হয় শুধু সুস্থ্যতা ও সততার উপর,
মনে পড়ে গিয়ে তার ঐ কথাগুলি, ঘুরছিল কেবলই এখন তা আমার চনমন উচাটন এ মনের ভিতর ।
পর্ব – ৫২
সুখ যে মনের ব্যাপার,
জনে জনে ও দেশে দেশে তার,
রকম ও ধরণের হয়যে হেরফের ঐ তফাৎটার,
কম ধন ও কম পাওয়ায়ও নাকি কারোকারো হতে পারে সুখটা অপার,
সেইতো অনেক ওরে এক পরম পাওয়া, বিধাতার নেয়ামত ও উপহার,
তেজে হাহাকার সুখে বুক ভরাবার ঐতো রশদ সম্ভার, ওরে হাতে কিবা ঘরে যেথা যেটুকু রয়েছে যার ।
সাদা, কালো, রাঙা,
নয়া ও পুরাতন কিবা কিছু ভাংগা,
জীবনটারে ভরাতে পারে, রাখে খুব সরস ও চাংগা,
পানকৌড়ি ও কচ্ছপের দারুণ শীতে মজার রোদ পোহাবার একটু ডাংগা,
নিশ্চয়ই তা করুণার দান দয়াময় বিধাতার, যখন হয় যেমন তা মেনে নেবার মানসিকতা আছে যার ।
সুখ-দুঃখ ভাই,
সমস্যা নহেতো কোনটাই,
আবু হকে সবারে ডেকে কয়,
রোখো স্বরণে ওরে, মনের নাম যে মহাশয়,
ওরে তারে বুঝাতে, সহাতে ও মানাতেই হয়, তাহলেই নাকি এ দেহটায়ও সব সয় ও তা সে মেনে লয় ।
এ জীবনে শুধু ওরে ধন নয়,
সুখী হতে সবার আগে এই মনটারই বেশী প্রয়োজন হয়,
আর যে সহে ও যেবা বহে, সব দশায় টিকে রহে, জ্ঞানীজনে কহে তারইতো হয় সাধন সবকিছু জয় ।
বলো কার সমস্যা, দুঃক্ষকষ্ট ও অনটন নাই,
জীবনের আছে মন্দ-ভাল, চড়াই ও উৎরাই,
গুরুজনের মোখে শুনে হয়েছে জানা, পুরুষের বয়স লাগেনা সুখী হতে তার চাই শুধু ঐ পৌরুষটাই ।
অল্প বয়সেই দেখি ভাই,
কতজনের যৌবন অকালে যায় হারাই,
না হতেই পাতিলের তলাটা কালো কেন তাদের বিচ্ছেদের খবর পাই,
আবার হয়না তা পুরাতন বা বাসি শুনেছিযে অনেক তাই,
আশিতেও নাকি কারোকারো রহে ভরপুর যৌবন ও প্রজনন সক্ষমতা দুইটাই,
সুখতো বিধাতার নেয়ামত, শুধুই তার করুণায় হয়, ওরে নিশ্চয় তা বয়স, বিদ্যা, রুপ কিবা বিত্তে নয় ।
যৌবন কারে কয় যৌবন,
মৌ মৌ সৌরভে মতোয়ারা যে কুসুম কানন,
চোখের নেশা, দেহের ক্ষুধা ও মনের পিয়াসটা চনমন টনটন,
আকুল উচাটন, মৌমাছি ও ভ্রমরের গুঞ্জন, গুনগুন ভনভন,
উঞ্চ ভালবাসার মধুর খাবার, দুরন্ত দামাল মিঠেকড়া নোনতা ও টক-ঝাল মাতাল শিহরণ ।
আর না দিতে পেরে তা সামাল,
তার সনে মিলিয়ে তাই সুশোভন সমন্বয় ও হর্ষ তাল,
থেমে যায় যখন ঝড় থরথর ঐ কম্পন,
বুকের উপর অপরুপ মনোহর ঐ পিরামিড দুখানার নাঁচন,
তারপর কিছুক্ষণ, হঠাৎ যেন দখিনা সমীরণ এসে দিয়ে যায় এক শীতল প্রশমন,
রসিক ও সুস্থ্য সবল মন ও দেহটাই,
দেহ ও মন ভরাবার আসল সম্বল যার এজগতে আর কোনই বিকল্প তার আজও নাহি খুঁজে পাই ।
পর্ব – ৫৩
দুইজনের একজন,
স্বামী-স্ত্রীতে হলে একদেহ একমন,
জানি জীবনের তরে চাই কিছু ধন, খুবই তা প্রয়োজন,
তা যে কোন একজনের হলেইতো ওরে চলে যায়রে কেটে ছোট্ট এ জীবন ।
করিতে আপন দায় পালন,
পেতে পরম প্রিয়জনের ভালবাসার মন,
আত্ত মর্যাদার ঐ আসনটি করিতে দৃঢ়তায় ও সম্মানে সংরক্ষণ,
স্ত্রী ও সন্তানের ভরণ পোষণের লাগি জানি কিছু টাকা প্রয়োজন, তাই করা চাই উপার্জন ।
এবার অতি গোপনে,
একজন ঘটক বাড়ীতে ডেকে এনে,
দিলাম নগদ তিনহাজার টাকা তার হাতে তুলে গুণে,
বললাম সাবধান, বিষয়টি অতিশয় গুরুত্বপূর্ণ ও গোপনীয় রাখিবেন তা মনে ।
পাত্র মেনেজার সাহেবের কাছে তাকে পাঠালাম,
উনাকে জানাবেন আমার সশ্রদ্ধ সালাম আর এ পয়গাম,
খবরদার তা না যেন রটে, হয় জানাজানি কানাকানি কোন বদনাম,
কদিন বাদে সে, ফিরে এসে বললো হেসে, উনিও আপনাকে দিয়েছেন সালাম,
খুশী হয়ে বলেছেন, আপনি মেডামকে বলবেন, আমি উনার প্রস্তাব সসম্মানে গ্রহন করিলাম ।
এবার তাকে বললাম, বিষয়টা গোপন রাখবেন,
আমি মেনেজার সাহেবের সংগে কথা বলবো, যদি আল্লাহ রাজি থাকেন,
লোকের কাছে যেন তা না হয় জানা,
সাবধান, আপনাকে আর কখনো উনার কাছে যেতেও হবেনা,
কাউকে কিছু বলতে কিবা করতেও হবেনা, শুধু যখন খবর দেই দয়াকরে চলে আসবেন ।
তারপর, বেশ কিছুদিন পর,
বসে ছিলেম আশায় নিজের কানে শোনব আমি সে খবর,
মেনেজার সাহেব ফোন করলেন, বুঝি শেষ হলো আমার সে প্রতীক্ষার উঞ্চ মধুর প্রহর ।
ভেবে ঠিক করেছি আজই,
আপা, আমি আপনার ঐ প্রস্তাবে হয়ে গেছি রাজি,
তবে একটা শর্ত আছে যদি সেটুকু পাই,
আজই অনলাইনে, আপনাকে একটা ডিজিটাল চুমো খেতে চাই,
ডিজিটাল কিবা ফরমাল ও ইনফরমাল আমি যেন ওগো পাই তার সবটুকু আর সবটাই,
একটা কেন যেখানে আর যত খুশী হবে তাই,
যেভাবে ও যেমনে, এসে মধুবনে ওরে সেইক্ষণে, তাতে আমার কোনই বাধা কিবা আপত্তি নাই ।
তবে বলতেই হবে ভাই,
এখনতো আর ওরে কোন ভয় নাই,
তার আগে ব্যাপারটা আমি ভালকরে জানতে চাই,
যখন সে আশা আমি পেয়ে গেছি আর, খুব আশাবাদীও হয়েছি তাই,
বলেছিলেন আপনি নাকি বুড়ো, তা বুড়োর কেন এখনই এমন ভিমরতি হলো সে রহস্যটাই ।
শুনেছি তিনি খুব নামাজী,
অতিশয় পরহেজগার ও হেন একজন হাজী,
তবু কখন কোন মতি হলে সে, শেষে ধরে বসে কোন বাজি,
এখন দেখছি, মেনেজার আমার বুড়োতো নয় বুঝি সে হতে চায়রে গাজী,
উল্টো তারে মনেহয় যেন সে একজন অতিশয় রসিক, সেরা দুষ্ট ও বেজায় ভারী পাজি ।
পর্ব – ৫৪
কালকে যদি আসতে চাই,
আসুননা, তাতে কোনই অসুবিধা নাই,
আমার প্রিয় অতিথিকে আমি সুসমাদর আমন্ত্রণ জানাই,
কিছুতো আমি আনবোই, তা যেন হয় আপনার খুশী ও সেরা পছন্দটাই,
খালিহাতে আসতে পারবোনা, কি আনবো দয়াকরে আমারে তা আগেই বলে দিবেন ভাই ।
ঐ শুভদিনটি আসবে কবে,
তাও, আর কি বাকী ও কি কাজ আমাকে করতে হবে,
কোন ভুল করে যেন আমি শেষে, অপরাধী কিবা কারো কাছে সামাণ্য ছোট হয়ে না যাই ।
হে প্রভু তোমার ও লোকের দায়,
এ দুনিয়ায়, কিবা কঠিন রোজ হাশরে যার সব অজানায়,
কভু যেন আর নাহি বাড়ে, তব এ গোলামের ঘাড়ে, বরং তা ওরে শেষ বা শোধ হয়ে যায়,
আমি নাহয়, সব আরজি আমার লবোযে তুলে বা ফিরায়,
নাহয় আমি দেবো নারাজি, যদিও পুলক শিহরণ ও একটুখানি সুখ-বিনোদন মম এ মনটা চায় ।
শেষ হলো বুঝি প্রতীক্ষার প্রহর,
তারপর সে এই প্রথম এলো, দীর্ঘ পথ চাওয়ার চল্লিশ দিন পর,
মেনেজার সাহেব আবার এলেন, পুলকে মরমে বাজিল বীণা ভুবন মম ফের যেন সাজিল সুন্দর ।
ভেবে ভেবে যখন আমি নিজেও আকুল,
দেখলাম হাতে যেন লুকানো তার বড় একগুচ্ছ সাদা গোলাপ ফুল,
তা কেন লাল বা গোলাপী নহে, জাগিল মনে কত সে প্রশ্ন আর ফুটিল নতুন আশার শত মুকুল ।
কেজানে কোন সাধক সুজন কিনা যার শুদ্ধ সবল মূল,
নাহলে স্বেচ্ছা নির্বাসনে, এসে দূর বিজনে, স্বজন বিহনে দিচ্ছে সে তার এ কোন আজব মাসুল,
বুঝিলাম হয় কি মন বিনিময় বিনে এই ফুল,
নিশ্চিত হলাম হয়তো এমনই হবে, নহে সে এমন একজন অবলীলায় করা কোন সাধারণ ভুল ।
আমি তাহারে,
খুউব ভাল করে আহারে,
অদেখা প্রেমের ডালা সাজিয়ে রঙ মাখানো বাহারে,
থালা ভরে,
হৃদয় উজার করে,
প্রথমে টক-ঝাল ও পরে দই-মিষ্টি ও আরও কত ফল-ফলাদি খাওয়ালাম ।
আমি যেন মনে মনে,
তৈরী হলাম গোপনে জোড় বাঁধিতে তার সনে,
যে ভাষা কথা কয় নয়নে নয়নে, আমি নিরবে গোপনে কৌশলে রাজিটা আমার তারে জানালাম ।
দেহে লয়ে ভরপুর রুপ,
জ্বালাতন করা যৌবন, চঞ্চল মন যেন এক তুষের অনলের স্তুপ,
ঘরেতে কোণঠাসা ও প্রশান্ত একেবারে চুপ,
তারা ছাড়া বিপথে যারা রঙ মাখানো কুৎসিত ভয়ংকর পংকীল কূপ,
দিশাহারা বিধবা, তালাকি ও বুড়ো হয়ে যাওয়া কুমারীদেরে কষ্টে পোড়ানোর গন্ধ ও ধুঁয়াহীন ধূপ ।
রঙীন চশমায় ঢেকে দুটি নয়ন,
কিবা কপট লাজে নত ঘুমটায় লুকিয়ে রেখে আপন বদন,
আজব এ ভুবন ও তার বহুরুপী মানুষগণ,
কতজনে জানিনা এত সহজে কেমনে ওরে মালিক হয়ে যায়, এক বস্তা বিদ্যা ও এক পাহাড় ধন ।
পর্ব – ৫৫
কত ভাল মানুষের আহা শত অনটন,
চারদিকে যেন নিদানের ঘের, কাটিছে হেন এক কষ্টের জীবন,
চলছেনা যেন এ দেহটা আর,
বলো কে তুলে নেবে ও বহিবে মম সেই বিষম ভার,
জানেনা কেহ হয়েছে কেন এ দেহের চেয়ে তিনগুণ বেশী মনটার ওজন,
কতজনে মজার ভোগ বিলাসে, হরষে টাকা উড়িয়ে বাতাসে, করছে উপভোগ ঢের উল্লাস ও বিনোদন ।
ওরে সুযোগ ও সময়,
তা যেমনই কেন ওরে না হয়,
কভু কারো তরে সে ওরে বসে থাকার নয়,
অনুকূল প্রতিকূল যাই হোক, আসুক কু বা সুভাগ্য লয়,
বিলম্বে শুরু করা জীবন পায়না পথ বরং সে ওরে হারায় গতি,
যে করে মূল্যবান সময়ের অপচয়, সে করিছে নিশ্চয়ই তার নিজেরই ক্ষতি,
যতই থাকুক তার রুপ, যৌবন আর বিদ্যা ও ধন, সে নহে আসলে ওরে বুদ্ধিমান কিবা বুদ্ধিমতী ।
বয়ে চলে যায়,
বসে রহেনা কারো অপেক্ষায়,
কারেও নাহি ডাকে, নহে সে পিছন ফিরে চায়,
কে পেলো আর কেবা হারালো, বলো তাতে তার কিবা আসে যায়,
কে এলো আর কে এলোনা তাতে তার কি ক্ষতি,
সকলই মিছে ও যাতনাময়, যদিরে না হয় সুজন কারো বধূ কিবা পতি,
যদিও তার সে যাওয়া দেখা নাহি যায়, মিথ্যে নয় নিশ্চয় ক্ষিপ্র অতিশয় তার সে অদেখা গতি ।
ভাবছি শুয়ে ওরে যখন চারপাশ নিঝুম ও নিরব,
বিয়ের ঘর কিবা জীবন সংগী যে যেমন চায়, ওরে পায় কি সবে তার সব,
বিধাতার দান সবে ওরে পায় কি সমান, ধন-জন বিদ্যা রুপ হর্ষ-পুলক বিনোদন বিলাস ও বৈভব ।
ঘুম ভেংগে যাওয়ায়,
দেখি সংগীহীন শুয়ে আমি শূন্য রঙীন বিছানায়,
হু হু করে হঠাৎ নিরবে কেঁদে উঠে মন নাবলা গোপন হতাশায়,
মন যারে চায়, চোখ বুজে দুটি হাত বাড়িয়ে যখন তারে আর সে নাগালে নাহি পায় ।
উঠে তাই বসিলাম,
তারপর জীবনের হিসাব কষিলাম,
হাড়ে হাড়ে আমিযে ওরে ঐ কষ্ট যবে অনুভব করিলাম,
এ ভুবন যখন নিঝুম নিরব, সংগী বিনা জীবন কতযে অসহায়, দুঃসহ আর কম দাম ।
করে দেয় দেহের আরাম,
মনের সুখ ও এ চোখের শান্তির ঘুমটুকু হারাম,
গল্প শুনে ও খুউব অল্প জেনেই তার, শুধু বিশ্বাসে আমি যার কাছে গোপনে হার মানিলাম ।
লোকের মুখে শুনে শুনে তার প্রচুর সুনাম,
কেমনে কোন্ ক্ষণে গহীন গোপনে, জানিনা আমি তার প্রেমে মজিলাম,
ভেবে সুজন দিলেম তাহারে মন, সে কি বিষপান ভাবিয়া রতন নিজেরে আমি যারে দান করিলাম ।
সমস্যার বেড়াজাল বেফানা,
কত ভরা যায়, ছোট্ট যে এ আধারখানা,
ঘরে ও বাহিরে সব এলোমেলো একা আমি যেন আর পারছিনা,
কেজানে ছেলেমেয়েরা ঠিকমত স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসায় যাচ্ছে বা লেখাপড়া করছে কিনা ।
পর্ব – ৫৬
হিসাবপত্রে অনেক কারচুপি ও গড়মিল,
কি লাভ মুরগীর ছানা পুষে যদিরে তা নিয়ে যায় এসে চিল,
সহসা তার হাতের ছোয়ায় যেন ভরেছে ফের কাঁচা সোনায় মাটি ও ঝিল,
আহা গড়েছিল তাহা কত যতন ভরে, মোর প্রয়াত প্রিয় স্বামী ওরে, করে তিল তিল,
কি হবে হাল চষে বিরান মাঠে, সব ব্যবসা যদি উঠেই লাটে, অনেক বেড়েছে ব্যাঙ্কের দায়-দেনা ।
পরপুরুষে কি নেবে এত দায়,
নাকি তা কভু ঘর ও সমাজের চোখে ওরে শোভা পায়,
তাই দক্ষ হাতে সপে দিয়ে সব দায়, চলছি এগিয়ে আমি ওসবের সমাধান ও সুখের আশায় ।
পেলে বন্ধু সংগী সুজন,
হয়তো হবে সহজ, অনেক কঠিন কিছু সাধন ও সমাপন,
অ দাদাভাই আমি বলেছিলাম তাই, আর এমনই ছিল মোর জীবনের গল্পটার বিবরণ,
এখন জেনেশুনে সে সত্য কহন,
যে নেবে আমার এ সংসারটার সবটুকু দায়ভার, এমনই একজন সংগী আমার চাই রয়েছে বড় প্রয়োজন ।
সহস্র বচন,
ঠিক হলো পরে দিনক্ষণ,
দাদাজানের আপ্রাণ চেষ্টায় হলো সাধন,
আমন্ত্রণ পেয়ে তারা সবে করিলেন এ বাড়ীতে আগমন ।
মরহুম স্বামীর এক চাচা ও এক বড় ভাই,
আমার মামা ও ছোটভাই, অভিভাবক কেহ যেন আর বাদ নাই,
হলো আমার সনে ও আমার শ্বাশুড়ির সংগে তাদের সকলের অনেক কথোপকথন ।
হাতে গণা মুরুব্বি কয়জন,
করা হলো তাদেরে সাদামাটা নিমন্ত্রণ,
এলো সমাজের বিশিষ্ট গণ্যমান্য পঞ্চায়েত সাতজন,
কাচারি ঘরে করা হয়েছিল ভাল ভাল খাবারের সুন্দর এক আয়োজন ।
হয়েছিল কেনা আগেই তার,
অগ্রিম বেতন বাবদ পেয়ে নগদ টাকা পঞ্চাশ হাজার,
ছেলেমেয়েদের কাপড়-জুতো, শ্বাশুড়ির শাড়ী ও ছোটবড় সবার জন্য সব উপহার ।
নতুন বউয়ের শাড়ী, জুতো ও সব সাজ প্রসাধন,
সংগে করে যতনে বাক্সে ভরে, কেউ যেন তার না পায় দরশন,
একখানা সোনার আংটি ও বেলীফুলের মালায় তারে আমি সাদরে করিব বরণ ।
গাঢ়ো সাত রঙের সাতখানা কাঁচুলি,
আপন হাতে পরাবো তারে আমি, খুলিয়া মোর প্রেমের ঝুলি,
লগ্ন মধুর হলে তারে কিছু না বলে,
যখন যাবে সে ওরে সোহাগে একেবারে গলে,
আর সবটুকু সুখ নিতে তার, পড়বে এসে আমার গায়েতে ঢলে,
বিগলিত অপার পুলক ও বাহার, আমিই তা আবার অকপটে অনায়াসে নেবোযে খুলি ।
ঘটক সংগে করে নিয়ে এলো বর,
প্রচুর মিষ্টি ও পানসুপাড়ী সাজাতে একখানা নতুন ঘর,
আরও যা যা দরকার বাকী নেই তার কিছু্ই আর, ছিল আজিকার দিনে প্রয়োজন ।
পর্ব – ৫৭
উনি বলেছেন, শুনেছি ওনার কাছে,
কোন স্বর্নালংকার লাগবেনা, আমার তা অনেক আছে,
যে আমাকে তার নিজেকে করেছে দান,
তার লাগি শুধু কিনেছি রুপার নূপুর, হিরার নাকফুল ও সোনার নোলক একখান,
তাই হবে মোর ঢের, পেলে একটু সমাদর ও সম্মান,
সাজিয়ে তাহারে গাঁয়ের বধূ, কোলে তুলে নিয়ে খাবোযে মধু, জুড়াব মম এ ক্ষুধিত তৃষিত প্রাণ ।
জীবনের এমন সুঘটন,
দেখেছে বা এ জগতে শুনেছে তা কয়জন,
কাজী সাহেব ও স্থানীয় মসজিদের ইমাম সাহেবও করেছেন আগমন ।
বিয়ে হয়ে গেলো,
একসময় সবার খানাপিনাও শেষ হলো,
চলছিল মজার কত গল্প অড্ডা অবিরত, তারপর যে যার মত একে একে সবাই চলে গেলো ।
সময় আর ফুরায়না যখন,
হাড়েহাড়ে বুঝিলাম আজ আমি এখন,
সংগী ছাড়া মানুষের এ জীবন কত যে মূল্যহীন,
দুনিয়ার দিনগুলি বিরস ও অঁচল আর বাড়ন্ত পরকালের ঋন ।
পরম প্রতীক্ষার গুণছি প্রহর ও লগন,
ভালো বাসিবে, সে যে ওরে আসিবে কখন,
আর আমার পরম চাওয়া-পাওয়ার সেই সে মধুক্ষণ,
একই বাড়ীর দুই ঘরে বসে, গোপন হুতাশে অধীর চনমন আমরা দু’জন,
দুজনেই পেলাম নতুন বন্ধু, ভাটির বয়সে উজানি যৌবন, শুরু হলো দুজনের এক অন্য জীবন ।
পেয়ে ঐ মহৎ পরিচয়,
মাটির মানুষ কেমনে ওরে এত বড় হয়,
পাঁচলাখ টাকার মোহরানা,
আমার জন্য সে নিজেই আর কোন দেনা রাখলোনা,
না দিয়ে ও না চেয়ে তাই, জানিনা কেমনে হয়ে গেলো একেবারে পরিশোধ,
অবাক, মুগ্ধ ও ধন্য হলাম, পেয়ে তার উদার মহানুভবতা, মমতা ও শ্রদ্ধার ঐ শ্রেষ্ঠ মহান বোধ ।
টানিছে মোরে, ধরে জোরে মোর বাসনার টুটি,
জানিনা আমি একখানা মাটি নাকি কোন ধাতব দাবার গুটি,
চুম্বকের টানে জোরছে যেন তার পানে, আহা পাগলের মত তা চলিছে ছুটি ।
আহা দুর্নিবার সে ক্ষুধা,
সাধ্য কার ফিরায় তা হতে কিবা করে রাখে জুদা,
সুখ বাসনার কাছে হেরে, দূর্নিবার ঐ পিয়াস হতে নিজেরে, করিতে না পেরে আর প্রতিরোধ ।
পরম শ্রদ্ধায় এ হৃদয়,
ভাবছে বসে পেয়ে তার সে মহানুভবতার পরিচয়,
কবে কেমনে হবে তার সনে, প্রকাশে গোপনে নায্য সঠিক তার প্রতিদান ও বিনিময় ।
অ দাদাভাই আজিকে আমি তোমার,
মায়া যাদুর সুখের ঘরে দিয়ে গেলাম ছোট ভাইটিরে আমার,
তাকে চোখে চোখে তুমি দেখে রেখো,
আদরে যতনে তোমরা দুজনে ওরে উঞ্চ আবেশে জড়িয়ে থেকো,
এই আশা ও ভরসায় আজ আমি গেলাম চলে, হয়তো কখনো কোন অন্যথা হবেনা তার ।
পর্ব – ৫৮
তুমি যেওনা সেকথা ভুলে,
পরম প্রেম রয়েছে বিধাতার সৃষ্টির মূলে,
মরণের পরে আবার, নিয়ে যান তার কাছে তুলে,
আপন সত্তা দিয়েছেন ভরে উজার করে মাটির খাঁচাটার ভিতরে খুলে ।
দেখেছি আমি তৃতীয় চক্ষুটা মেলে প্রভু কত বড়, কত মহান ও করুণাময়,
মধুর ঐ ভালবাসায় কেউ যেন না হারি আর মোরা করতে পারি দুজনায় দুজনারে জয় ।
তা নহে কোন ভাবনার বিষয়,
সালাম দাদাভাই সালাম, পেওনা ওরে তুমি কোন ভয়,
দোয়া করবেন তাই যেন দাদা হয়,
আর তেজে ও টুটি সকল দোষ-ত্রুটি ও অবক্ষয়,
আপনার চাওয়াটা’ই যেন পূরণ হয় ও এই ঘরে টিকে রয় আজীবন অটুট ও অক্ষয় ।
ঘরে ঢুকেই আমি নব বধূয়াকে আমার সালাম জানালাম,
সালামের জবাবের পরে আমি তার হরষে ভরপুর পরম উঞ্চ মধুর অভ্যর্থনা পেলাম,
আমার যেন আর তড় সইছিলনা ওরে,
দরজা এঁটেই তুলতুলে তার বাড়িয়ে দেওয়া হাতটা ধরে,
চাঁদটা আমার হাতে পাওয়ার খুশীতে ওরে আকুল এ মনটা যেন নিমেষে গেলো ভরে,
কাছে টানা পাশে ডাকা, মেহেদীরাঙা নকসা আঁকা, ঝটিকা আমি সামনে দুপা তার দিকে এগিয়ে গেলাম ।
মুখে মাশাআল্লাহ বলে মনেমনে ভাবলাম,
হে বিধাতা তোমার, এ কোন উত্তম ও সরস নেয়ামত আমি হাতে পেলাম,
দুষ্টুমি ছাড়া প্রেমযে বিরস কিবা তার দাম,
হাতের তালুতে কাতুকুতু দিয়ে তাই ঈষৎ সুড়সুড়ি দিলাম,
পরম সোহাগে টেনে তার ঐ হাতখানা এনে আমি উঞ্চ একটা চুমোও খেলাম ।
আহা কি মহাসুখে,
সহসা দুহাতে তাকে চেপে জড়িয়ে ধরে বুকে,
সজোরে আলিংগন করে আমি তার ঐ অভ্যর্থনার ফিরতি সেরা উপহার দিলাম,
তারপর শেষে এক নিমেষে, লাল ঠোটে তার, আমার আকুল ভালবাসার একটা মধুর ছাপ লাগালাম ।
সাদরে আমি নিয়ে তারে একটা চেয়ারে বসালাম,
তারপর গলে তার তাজা ফুলের মালা পরালাম ও তাকে মিষ্টি খাওয়ালাম,
সময় সময় কোন কোন কল্পনা বা পরিকল্পনা মিছে হয়ে যায়, তাই আমি বুঝিলাম বাস্তবতারই বেশী দাম ।
এবার তার ঘুমটাখানা সরালাম,
বললো শাড়ীর আঁচল এখন আর আমার কিবা কাম,
সোবহানাল্লাহ, এক পলক রুপ দেখে বধূয়ার আমি যেন আধা জ্ঞান হারালাম ।
করিতে চাহিলে চরণে প্রণাম,
সবার আগে আমি তারে সেই সুযোগটা দিলাম,
পরম আদরে দুহাতে ধরে, তুলে আমি তারে বুকেতে টেনে নিলাম,
বুকের ঐ উঁচুনিচু ভাজে সোহাগে নাক-মোখ গুজে দিয়ে ঘষে ও হাত বুলিয়ে নেশায় ভরালাম ।
চাহিল যখন মোর দুষ্ট মন,
তুলতুলে তার নিতম্বের উপর কিছুক্ষণ,
পরমানন্দে আমি পেলাম যে নেয়ামত দামী হেথা ঘুরে বেড়ালাম,
দুহাতে তারে ঝাপটে ধরে বুকের ভিতরে, সৌরভে গেল মন ভরে আহা সেযে কি সুখ ও আরাম ।
পর্ব – ৫৯
যেটুকু যেখানে পেলাম নাগালে খোলা,
এবার প্রথমে আমি তার কপাল, ডানা, কাঁধ, ঘাড়, পিঠ, গাল ও গলা,
কেজানে কত একটা চুমোর দাম, চোখ, নাক, কান, ঠোট, বুক ও নাভিতে অগণিত চুমো খেলাম ।
হয়না যেথা করা লোভ সম্বরণ,
এমন আরও অনেক জায়গা যাচে দরশন ও পরশ বিচরণ,
সাদর আহবান ও আমন্ত্রণ, না পেলে মাতাল শিহরণ বা না হলে ওরে তার জাগরণ,
হয়নাযে প্রেমের স্বাদ পূরো আস্বাদন বাড়তি মাত্রা যোগ, লীলা উপভোগ ও লেনদেন তার সবটুকু বিনোদন ।
আজ আর আমি বলবোনা তার নাম,
বিনিময় করে যেমন চাহে মন, মনটা ভরে দুজনেই সে মধু করে পান ধন্য হলাম,
সরমে বাধা হয় আরও যত কাম,
একফোটা রস আর একবিন্দু ঘাম, যাদুর সরস সোহাগ পরশ সবটুকু সুখ ও আরাম ।
তা কত মধুর, পবিত্র ও পুণ্যময়,
বুঝাবার মতও নয়, কেমনে কি দিয়ে হবে তার প্রকৃত বিনিময়,
তাই দুহাতে টেনে ধরে সোহাগে পাগল করে, প্রথমে তারে কোলে তুলে নিলাম,
দারুণ নেশায় যেন সে মোর দেহটায় মিশে যেতে চায় হেন পাগল করে দিলাম,
প্রতিক্ষণে চলছে উঞ্চ আদর,তাকে নিয়ে আমি তারপর বিছানায় গিয়ে বসলাম ।
দুহাতে বারবার ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে ধরে,
নানা কৌশলে তাকে আমি উঞ্চ দামাল আদরে,
একাকার হয়ে শেষে,
দুই দিগম্বর যেন পাগলের বেশে,
মৌবন বসন্ত সমীরণ টলমল ঝিলের পারে এসে,
দুজনে দুজনারে জড়িয়ে হাতপা ছড়িয়ে বিছানায় গড়িয়ে শুয়ে পড়িলাম,
আলো-আঁধারী দিয়ে ঠেলে, উজ্জল বাতিগুলি সব জ্বেলে, সে আলোয় আমি ওরে ঘর ভরিলাম ।
লাজ ভয় ঝেড়ে ফেলা,
বসন হরণ, হারজিতের মাতাল খেলা,
সে যেন সুখ-হরষের নেশার সুরা কানায় কানায় পূরা এক পেয়ালা ।
বিজন ঘরে নয়ন ভরে,
মধুভরা মৌচাক দুহাতে সজোরে ঝাপটে ধরে,
বুঝি শুরু হলো মোর, রাঙা বধূয়ার নাঙা রুপ দেখিবার পরম সুখের পালা,
ঐ লাজ হরণ বিবসন প্রিয়তম প্রিয়জন দিলোই যখন, সাজিয়ে তার সে সুধার অবারিত অপার ডালা ।
হঠাৎ আমার পড়লো মনে, মালা কই আংটি কই,
সরমে মরে গেলাম মরমে, কেনযে মাঝেমাঝে আমি এমন বেসামাল ও ভুলামন হই,
কি হবে ওসব দিয়ে, করেছি যখন বিয়ে, খাবো ও খাওয়াবো যত চাহে মন, আমি কি ঐ মধুবন বধূয়া নই ।
দিও যা তব মনে চায় পরে,
আর পারিনা আহারে, এখন আগে আমারে ঝাপটে ধরে,
নিয়ে যাও তব বুকের ভিতরে, মন ভরো বন্ধু মধু পান করে, আর ঐ শীতল ঝিলের জলে আমি ডুবে রই ।
দুজনের তৃষিত বুকের জ্বালা,
দেহমন হয়েছে টনটন উতলা আকুল ও মাথাটা ঝালাপালা,
কি হবে আমার আংটি মালায়,
মনযে এখন ওগো শুধু চায়, তোমার প্রেমের অতল গহীন তলায় হারিয়ে যায়,
মেতে রবে সারাক্ষণ অন্য কিছুই আর নাহি চায়,
বলোনা কি করি ওরে, এ দেহমন দারুণ নেশায় গিয়েছে ভরে, জলদি করে চলোনা এখনই মোরে হেথা লই ।
পর্ব – ৬০
হোক যাই মেনে লব তাই জয় পরাজয়,
উহু, এখন আর ভাই ভিন্ন কোন কথা নাই কিবা অন্য কাজ নয়,
অলিখিত সেই শর্ত ও সন্ধিতে আমিযে হয়েছি বন্দি, ওগো তারেইতো সবে ভালোবাসা কয় ।
উঞ্চ মাতাল মধুর সুখে,
কপট অভিমান মেখে রাঙা সারা মুখে,
দুহাতে টেনে সে আমার মোখটা রেখে সজোরে চেপে ধরে তার বুকে,
হয়েছে মাতাল হেন ব্যগ্র ঐ যুগল স্তনাগ্র যেন চায় পরম আদরে অনায়াসে মোর মুখেতে যায় ঢুকে ।
বললো না বন্ধু না,
এখন আর আমি তোমার কোন কথা শোনবনা,
এসে মধুবনে, নাক ডুবিয়ে নিরজনে, গহীনে মিলেমিশে দুজনে শুধুযে মধু খেতে হয় ।
হয়েছে যখন অধিকার জয়,
এখন যে অন্যসময়, গায় তার কোন বস্ত্র নয়,
প্রেম ভালো গরম গরম, তাই আর কিসের সরম কিসেরইবা ভয় ।
আর কি বলো তাহলে দেরী সয়,
ক্ষুধিত পরাণ ও তৃষিত হিয়া যাতে মোহিত আকুল হয়,
প্রিয় ভোগ সমাহার জিবে জল একাকার, আঁখি যেথা একেবারে আঠা লেগে রয়,
এবার ডাকিছে দুজনার মাতাল মধু অভিসার, বুঝি তাই আমরা দুজনে অন্য ভুবনে হারিয়ে গেলাম ।
একেবারে টইটুম্বুর,
কানায়কানা যেন তা হয়েছে ভরপুর,
ঘন আঠালো রসে দুয়ারখানা সিক্ত মজাদার ও পিচ্ছিল,
বাসনার ঐ পোকাগুলি হায়, করিছে সারা গায় তড়িৎ ছুটোছুটি ও কিলবিল,
সেকথা আমি কেমনে কই, যেন হাবুডুবু থইথই সে এক অঠাই ডুবসাঁতার অথই সুখের ঝিল ।
উপচে পড়া ঐ উঞ্চ মধুর,
পৌছিতে গাড়ীটা যেন সে অচিন শান্তিপুর,
ক্ষিপ্র গতি মনেহয় ওরে অতি কাছাকাছি, আর নহে তা বেশী দূর,
হারাতে রাজিনা ভাই, আমিও তা নাহি চাই সে মজার মহড়ার একটি ক্ষণ, একফোটা কিবা একতিল ।
টক-ঝাল নোনতা ও কতযে মিষ্টি,
বিধাতার নেয়ামত সমাহার সে যেন তার এক অপার অপরুপ সৃষ্টি,
পরম হরষের মাতাল ছড়াছড়ি,
লুটোপুটি খেতে খেতে আমিও করছি যেন ঐ রসের উপর গড়াগড়ি,
কিছুক্ষণ পর পর শুকনো জিবের উপর, খেজুর রসের মত ফোটায় ফোটায় যেন তা পড়ছে ঝড়ি ।
ভাবটা এমন যেন প্রাণপণ রণ, না যেন হয় হার বাঁচি কি মরি,
বুঝিলাম এখন আর নাই কোন অবকাশ, বিরতি কিবা ছাড় যতই তারে মিনতি করি,
বুঝি সেই তরাসে আমি হায় একদম চুপ, একটু নড়েচড়ে না যায় শেষে বৈঠা ছুটে, ডুবে এই রসের তরী ।
বহিছে তুমুল ঝড় খড়কুটো সব যাচ্ছে উড়ি,
তার সনে আমার মন লভে ঐ শিহরণ হয়েছে যেন এক উড়ন্ত ঘুড়ি,
খুটিগুলি সব থরথর কড়কড় নড়বড়, চাইছিল মন খুশীতে তখন আমিও দিই দুহাতে তুড়ি ।
যায়না তা মোখে বলা কেমনে তুলে ধরি,
সে কি এক মাতাল সুখের মধুর পীড়ন এ জগতে নাই যার কোন জুড়ি,
হেন তোলপাড় যেন এখন আর কেউ নহে কার, ওরে বুঝতে নারি আমি এখন তার গলে ধরি নাকি পায়ে পড়ি ।
পর্ব – ৬১
দারুণ মজার ডুব সাঁতার,
কেমনে থামি, না হয়ে ঐ থইথই বিশাল অথই দরিয়াটা পার,
এই বয়সেও এত ভার এত ধার,
তা হলো বিষয় যেন পরম এক রহস্যময় ভাবনার,
জানিনা সে কোন কেরামতি, সত্যই তা মোর বুঝা হয়েছিল বড়ই কঠিন ও ভার ।
ধবধবে সাদা লম্বা চুল ও দাড়ি,
যদিও তার কাছে আমি, ঐ মজার খেলাতে গিয়েছি হারি,
এক নায়ে চড়ে দুজনে আমরা গলাগলি ধরে, গেছিনু বেড়াতে শান্তিপুরের সুখের বাড়ী ।
শেষে মুগ্ধতায়,
দিশে হারায় এখনও উদোম গায়,
এই দারুণ শীতে পরম খুশীতে, মরম মুখর পঞ্চ সুখের সংগীতে, দুহাতে পেঁচিয়ে ধরা তার গলা নাহি ছাড়ি ।
ষাটের উপরে বয়স হয়েছে যার,
বলোনা তোমরা সবে ওরে, কি পরম ভাগ্য আমার,
তিনঘন্টার সফর দেখিলাম রাতভর, তিরিশের টগবগে জুয়ানি ও মর্দামী তার,
ভাষা নেই আমার তা কারেও বুঝিয়ে বলার, পেলাম আমি তৃতীয় বিয়ের প্রথম ভালবাসার যে চমৎকার উপহার ।
অসীম ও অপার,
কুদরতি ও রহমতি ঐ বেহেস্তী সুধার,
বুঝিলাম আমি অবশেষে,
ঢেউয়ের দোলনার মত দোল খেয়ে যেন মেঘেতে ভেসে ভেসে,
হরষের কূলেতে এসে তা আমার তরে, ঠিক যেন ছিল হেন নেয়ামত বিধাতার, শতকোটি টাকারও বেশী মূল্য যার ।
পরিতে দিলোনা মোরে বসন,
কি করা ঠিক তাই হবে, যা চাহে মোর বন্ধুর মন,
আমাকে নিয়ে বিছানা থেকে নামলো, কোন্ মতলব কেজানে আটছে আবার সে এখন ।
সব বাতিগুলি নিভেয়ে,
একে একে দুটি জানালা খুলে দিয়ে,
আমাকে ধরে জড়িয়ে বরান্দায় গিয়ে শেষে দুজনে নিলাম আসন ।
বাদেই কিছুক্ষণ,
আমাকে টেনে তার কোলে তুলে নিলো যখন,
বুঝিলাম কি হবে এখন,
রাত দুটো বেজে গেছে ঠিক তখন,
শুরু হলো পাগলের মত সেই চুম্বন ও দুহাতে সজোরে স্তন মর্দন ও মন্থন ।
একটু ঘুমিয়ে উঠি, প্লীজ আর নয় এখন,
তারপর আবার খেয়ো যতক্ষণ চাহে মন,
তোমার বিছানায় না, তা মোর আছে জানা তাহলে কি হবে তখন,
আমি পাশের কামড়ায শোব, পেলাম তাতে আমি আমার প্রিয় স্বামী সাহেবের সদয় অনুমোদন ।
আমিতো আছি, থাকবো ওগো আজীবন,
যাবো কোথায় একবার তোমার জালে ধরা আমি পড়েছি যখন,
বিনয়ে মিনতি করে চুমো খেয়ে বললাম ঘুম পাচ্ছে আমার, শরীরটাও দুর্বল লাগছে ভীষণ ।
একবার যখন রাজিই হলো,
খুশী হলেও কিজানি কি হয়, তবুও আমার মনে ভয় ছিলো,
একটু পরে সে চুপচাপ এসে আমার গায়ে একটা চাদর জড়িয়ে, বাতিটা নিভিয়ে দিয়ে চলে গেলো ।
পর্ব – ৬২
বড়জোড় দুঘন্টা হবে হিসাবে পেলাম,
নিরাপদে আমি বেশ এখনও যার কাটেনি রেশ, মজার ঘুমই ঘুমিয়েছিলাম,
আরও ঘুম দেহটার ছিল প্রয়োজন,
আমার পিছনে চাদরের তলে এসে করলো শয়ন কেউ একজন,
আর কে হবে, টের পেয়েও রলেম আমি একেবারে অনড়, ঠিক তা না জানার ভান করার মতন ।
মাঝেমাঝে দুষ্ট হাত তার করছিল হেথা বিচরণ,
যেথা মোর রসের ভান্ডার, আর একটু ছোয়াতেই শুরু হয় তার নিঃসরণ,
নিতম্বেও টের পাচ্ছিলাম, শক্ত দন্ডটার আলতো পরশ পরপর কিছুক্ষণ,
আমার নগ্ন রানের উপরে উঠে এলো তার পা, একহাতে শক্ত করে পেচিয়ে ধরলো মোর দুটি স্তন ।
ঘর্ষণ, মর্দন, কম্পন ও শিহরণ,
আমিতো মানুষ, তা পারি আর বলো কতক্ষণ,
এবার পিছন ফিরে বললাম, আরেকটু সময় দিতে পারলেনা যখন,
কি আর করা ওহে জুয়ানির চূড়া, ভালবাসার ঝিলের জলে নাইতে আসার সাদর আমন্ত্রণ ।
দিলাম তারে একটা গরম চুম্বন,
এই সুযোগে সে আমার একটা ঠোট মুখে নিয়ে, শেষে পালাক্রমে দুটিই করছিল চোষণ,
তা হতে ছাড়া পেতে, বুদ্ধি করিলাম, জিভটা বাইরে ঠেলে এগিয়ে দিলাম, তাই সে খুশী মনে করলো গ্রহণ ।
কি বলিব কেমন ঐ সে লৌহ দন্ড,
লোহা কাঠের তৈয়ার ষাড় গরুর খুটা, যেন অক্ষয় ও অখন্ড,
কেজানে সত্য বলতে গেলে,
আমাকে ঢুকিয়ে দেবে নাকি আবার শেষে বিরহের জেলে,
আমার নিত্য রাতের ঘুম, সারা দেহে দিয়ে দারুণ নেশার ধুম, করেছে যেন একেবারে পন্ড ।
দেখার মত, কিযে চমৎকার,
জীবনে আর দেখিনি, বুঝি দেখেও সাধ মিটেনা তার,
তাই দুহাতের মুঠোতে পূরে চেপে মুটকরে ধরে ও নেড়েচেড়ে মন ভরাবার সাধ জাগে বারবার,
ঐ দুষ্টুমি করতে বেশীক্ষণ সুযোগ দেয়না সে, বলে এই ছাড়ো ছাড়ো নাহলে এখুনি হয়তো বমি করে দেবে খবরদার ।
যখন একবার শুরু করে সে ঐ রণ,
জানিনা কোথায় কোন সুদূরে উড়ে যায়, তার ভালবাসা তখন,
কে বুঝাবে বা থামাবে তারে, যেন তার এ মজার খেলার পুতুলটারে আজই করে দেবে লন্ডভন্ড ।
৫.৪ আর মাত্র ৬০কেজির হাল্কা ঐ মানুষটার,
৬-৭ লম্বা ও তেমনই শক্ত ও মোটা অবাক করা শোভা তার ঐ বারাটার,
সেকথা শুনেছি অনেক ওরে,
সতী নারীর ভাগে নাকি এমন সুজন গুণী পতিই পড়ে,
সুখের স্বর্গটা একেবারে হাতের মুঠোয় আর যেন তার ঘরের ভিতরে, বড় বড় খাড়া বুনি হয় যার ।
এত খেয়েও যেন পেট ভরেনা তার,
কিছুতেই যেন কভু সে, মানতে চাহেনা হার,
আজব ব্যাপার, দুতিন ঘন্টা বাদেই সে খেতে চায় আবার,
যদিও মন নাহি চায়, গিয়েও অন্য বিছানায় যদি চেষ্টা করি একটুখানি ঘুমাবার,
দুতিন ঘন্টা না ঘুমাতেই, আমি টের পাই আগমন তার,
আমি মেনে যাই হার, আমায় যাদু করা তার ঐ পাগল নেশার কাছে মাতাল ভালবাসার আদরটার ।
পর্ব – ৬৩
বলো এমন সাধ্য কার,
আগুন লাগিলে গায়, আমি মেনে যাই হার,
দেহে নাই কোন বল, হাত-পা এখন দুর্বল অবস ও অসার,
যখন রসে টলমল হয় দারুণ পিছল, আমার দেহ-ঘরের খোলাযে ঐ দুয়ার,
সব রাগ শেষে, গলে টসটসে রসে হলে টলমলে একাকার, বলো আমি তারে কেমনে ফিরাই আর ।
নিত্য যদি এত মধু ঝড়ে,
কতক্ষণ থাকা যায় পিছন ফিরে ও মুখ কালো করে,
যখন ফাটা ডালিমটা মুখে নেয় পূরে,
দুহাতে টেনে চেপে ধরে, মম স্তনযুগল পালা করে নেয় তার গালে ভরে,
সে তুফানে বলো হাতপা ছড়িয়ে কে নাহি লুটিয়ে পড়ে,
সে আমারে বলে ওগো সে ভাবনা এখন থাক, শেষে শুকিয়ে যাবেনাতো মৌচাক দুএক বছরে ।
রাতভর ঐ যাদুর লাঠিটা দাড়িয়ে থাকে,
অক্টোপাশের মত সে জড়িয়ে থেকে আমারে অবিরত ব্যস্ত রাখে,
বন্ধু বলে, তোমার গন্ধ পেলেই এ পাজিটা এমন করে, কেমনে বুঝাই ও মানাই বলো আমি তাকে,
গোখরোর মত নিরবে শুধু ফোস ফোস করে, দেখে মনেহয় যেন মহাজন রাগে টনটন, আমারেই কাছে ডাকে ।
পাকা খেলোয়াড় প্রেমের ওস্তাদ ও গুরু,
কিছুতেই শেষ হতে চায়না যেন একবার খেলা তার হলে শুরু,
শিষ্য যার যাদুর ঐ লৌহ দন্ড,
খাটি রসিক প্রেমিক, নিশ্চয় নয় সে নির্মম কিবা কোন পাষন্ড,
নিজে নাঁচেনা তবে নাঁচাবার দারুণ মন্ত্র জানে,
তার হাতের খেলনা হয়ে, চুপচাপ মিশে থাকি জড়িয়ে, জানিনা কোন সে মজার নেশার টানে ।
বোকার ধারণা ওপারে রঙীন,
তবে সেকি হবে সমীচীন নাকি বাড়াবে মহাজনের ঋন,
জানি হওয়া তার প্রতিকূল, এখনযে হবে বড় ভুল ও একেবারেই অসার ।
একাত, ওকাত, উপুর ও চিৎ,
নেশার ঘোরে মাঝেমাঝে ফিরে পাই সম্বিত,
তাই আমি নহে হতে চাই, ওরে কভু তার বৈরী কিবা বিপরীত,
হয়ে সে খাঁচায় বন্দি, করে তার সনে মিতালির সন্ধি, ধরেছিনু গহীনে একই সুরে গীত,
যখন ছিল একই লক্ষ্য ও ঠিকানা দুজনার,
তখন সেইতো সঠিক ওরে সবকথা শোনা ও মাঝির কাছে মানা ষোলআনা হার ।
চেটেপুটে আমি স্বাদ নিলাম যার,
দেখলাম বাহাদুরি, নিপুণ ওস্তাদি ও কারিগরি তার,
আজও স্মৃতিকথা মনে পড়ে সে দিনটার,
একযুগ হয়ে গেলো পার, পাঁচ ফোড়নের দারুণ মজার ঐ সে চাটনিটার ।
অবয়ব তার যেমন তেমন,
ছিল বাহারি ও চমৎকার সদা তার বসন,
অতিব কোমল ও মধুর বচন, সুশোভন ব্যবহার, মধুর ও মোহন আচরণ ।
সুবোধ ও সুজন হলে দুজন,
সুস্থ্যতা ও সততায় ভরা একটা সতেজ দেহমন,
জীবনের সুখ, সুনাম, সম্মান ও সাফল্যের তরে যা ওরে অতিব প্রয়োজন ।
পর্ব – ৬৪
মম নয়ন ও দেহ-মন দুই’ই সে করেছে হরণ,
অপার মুগ্ধতার অনন্য এক ভালো লাগায় ভরপুর ছিল সে আজব বশীকরণ,
শুধু নয় সে সুজন কাজেও পটু অসাধারণ, বুড়োকালে আমি এমন একজন চেংড়া বন্ধু পেলাম ।
রণ ভংগের পরে বললাম,
সরি সরি, কেমন আছেন মাই ডিয়ার মেডাম,
খুউব ভালো আছি স্যার,
মম গলাটা জড়িয়ে ধরে দুহাতে তার,
বললো সোহাগে মোরে, ওগো প্রিয় স্বামীজান আমার,
মহা ধুমে মেতে তের মজা খেতে এতক্ষণ ওরে আমি মজে ছিলাম যার,
কিসের সরি বললাম তারে ফিসফিস করি, অ ভাই কেমনে বলি তুমিযে কত পাকা খেলোয়াড় ।
বিনা সওগাত বুঝি বাজিমাত,
কিযে মধুময় বলার মত নয়, হলো সুখময় এ রাত,
মোর দেহটারে ক্লান্তিতে আহারে দিয়ে কাবু করে একেবারে কাত,
বললো কে বলেছে, পরম পাওয়ায় ভরে গেছে মোর আঁচল তল ও বিছানো বিশাল পাত ।
কত বড় ঐ মহান দাতা মহাপাকজাত,
যদি ওরে এটুকু পাই চাইনা আমি মিহি শাড়ী সাজ-প্রসাধন ও চিকন চালের ভাত,
ঝড়ের ভালবাসায় বিভোর মাত,
ক্লান্ত সুখের ঘুমের পর চোখ মেলে পাওয়া সোনালী প্রভাত,
আমার সারা জনমের সেরা উপহার, তার দুহাতে তুলে ধরে মাথায় রেখে মোর দুটি হাত ।
বিধাতার ভেদ বুঝা বড় দায়,
সুজন জীবন সংগীর কোন বিকল্প নাহি এ দুনিয়ায়,
তার ভালবাসায় কিযে দারুণ সুখ ও মজা, সেকি কভু ওরে কোটি টাকায় কিনতে পাওয়া যায় ।
কোন বাজারে তা বলো কি দামে বিকায়,
তা যদি হতো ওরে তবে ধনীরা সবটুকু তার কিনে নিয়ে যেতো সাফ করে কুড়ায়,
কেউ পায়না তা, দিয়েও তার দাম কোটি টাকায়,
আবার কারো ঘরে হায়, খোদার নেয়ামত গড়াগড়ি যায়, লভে তাই বিনা পয়সায় ।
কায়ঃমনে প্রভুর চরণে তাই কোটি শোকর জানালাম,
জীবন কাটে যেন মানুষ হয়ে আর, ওপারে যাই লভে মহারাজার খাস কুটুমের দাওয়াত ও দাম,
কথা শুনে তার আমিযে পরম খুশী ও মুগ্ধ হলাম,
তারপর, বিধাতার যে নেয়ামতের এত দাম আর এতক্ষণ যেথা আমি মজেছিলাম ।
মধু ঝড়ায় খুশবো ছড়ায় যেই ঘাম,
মাছি বসা ও ধূলি পড়া ওরে জানি তার গায় বিলকুল হারাম,
তা কভু না হয় যেন বাসি, আমি তাই ঐ মজার খাবারগুলো সহসা চাদরে ঢাকিলাম,
শুনি ভোরের মধুর আযানখানি, মম তন্দ্রাটুকু দিলো হানি, নিমেষে লাফিয়ে উঠে তাই আমি বিছানা ছাড়িলাম ।
কিছু এমন ঋন আছে,
যা হয় লোকের ও খোদার কাছে,
যদিরে ঐ ঋন কভু এ জীবনে পরিশোধ না হয়,
তা কেমনে হবে, রাজার ঋনতো কোন কালেও এজীবনে শোধ হবার মত নয়,
শোধিতে তাই হামেশা সবাই দিতে হয় কিছু প্রতিদান ও বিনিময়,
নাহলে সমূহ নিদান ও ভয়, শুধু বিবেকবান লোকের ওরে সতেজ বিবেকের ঘরে রহে ঐ খতিয়ান চির অক্ষয় ।
পর্ব – ৬৫
তবে তা সময় সময়,
কথায়, কাজে ও দানে হতে পারে বা হয়,
তিলেতিলে দিনেদিনে দিয়ে তার সামাণ্য প্রতিদান ও বিনিময়,
নাহলে বলো ধনহীন ভালো মানুষের, কেমনে হতো ঢের সাধন বা পেতো আসল বিজয় ।
যদিগো পারি তার বন্ধু হতে,
নিত্য আমি দেহমনে যেন এই নবজীবনে কোনমতে,
কেমনে তা বিনে, বিনাদামে কিনে ঐ মনটারে দুজনারই জীবন হবে সুখময়,
আমার প্রেমের সহস্র্র মধুময় উপহারে, আমি চাহি তাহারে মোহিত বাহারে করিতে ষোলআনা জয় ।
শুধু আমি আর আমার আমার,
ওরে মন এ জীবনটাতো শুধু নয় তোমার একার,
সুখে-দুঃখে ও মন্দে-ভালোয় তা স্বামী-স্ত্রী সমানে সমান দুজনার,
যদিরে পারো এখনই সবটুকু এই আমিত্ব ছাড়ো, কি হবে দিয়ে তব দুনিয়ার এ ধনের পাহাড় ।
মরণ এসে ভাই যখন হবে এমন,
তুমিই নাই তখন আবার, তোমার কিসের বিত্ত-ধন,
মরণ তোমার ওরে করিবে চিরতরে, সব কিছু হরণ,
শুধু দান করা ধন, করে পুণ্য সাধন,
হোক তা অতিশয় কম বা ঢের বেশী সাধ্য কিবা মন যেমন,
চাহে যেটুকু যেমন, তার দাতার নামেই তা জমা হয়ে রয় অক্ষয় ও মহাচিরন্তন,
মরে গেলে রাজাওতো হয় শূন্য ও সর্বহারা, তবে বলো আর কিসের কোন্ মালিকানা কিবা বাহাদুরি তার ।
চলছে দুনিয়া জোড়া বোঁকার ব্যবসা,
মিথ্যে আর ভুলে ভরা অকুল মোহ ও মায়ার সহস্র স্বপ্ন-আশা,
করেছ কবে কোন ভালকাজ আর,
হিসাব করে দেখো, কতটুকু দান ও হযেছে করা রয়েছে কি পুণ্য তোমার,
আকাশে বানাবে প্রাসাদ বাগান-বাড়ী, করেছ কবে কার কোন কল্যাণ, মঙ্গল ও সেবা উপকার ।
অ মূর্খ কানা তা কেমনে হয় তোমার,
এ জীবনটাতো মহারাজার এক করুণার দান সমাহার,
যাই বলো ধন-জন রাখিও তুমি স্বরণ তা শুধু মনিবের দেওয়া দুদিনের ধার,
অদৃশ্য অগণিত কেমনে জানিবে তা এক নগণ্য অধম ভৃত্য, অপার সে নেয়ামত ও উপহার ।
তুমি হলে এক ইজারাদার,
যতদিন দুনিয়ার এ জীবনটা তোমার,
অগণন, অফুরান ধনজন আর যত তার সুখ-সম্ভার,
হয়নি এতদিন যেথা আলো ও ভালোর কোন ক্ষেতিচাষ ও বসবাস যার,
যদিও জীবন দিবস পসর আলোক পসার, ভাষা নেই বুঝাবার, মরণে তার কত অসীম অন্ধকার ।
সারা বেলা,
সাজানো এক মোহমেলা,
তব সব সম্পদের সবই পাবে ও খাবে অন্য লোকে,
আর পরম সুখে থাকার এ সোনার দেহটা তোমার, অযতন ও অবহেলায় খাবে মাটির পোকে ।
মিছেই সবাই শুধু ভাবি ও বলি আমার আমার,
তোমার ভাগের পাওনাটা তোমাকে দিবে কিনারে, কোন ঠিক নাহি তার,
জীবনের এইতো নিয়ম, যেমন শূন্য হাতে আসা তেমনই যাওয়ার,
আসলে একটা ফাঁকির খেলা, কিছুই তার নয় তোমার, শুধুই এক বোকার সান্তনার ভোগ-দখলের অধিকার ।
পর্ব – ৬৬
যাই হোক তাই,
তা আদায় কিবা পরিশোধ হয়েছে কিনারে ভাই,
একবারতো তা ওরে গহীনে গবেষণা করে, আসল সত্যটা তার নেই কিরে জানা দরকার ।
নিয়েছ আজীবন মহাজনের যে দাদন,
দিয়েছ তার কত মূল্য বা কি বিনিময় প্রতিদান, কোন্ বিদ্যান, ধনবান ও ক্ষমতাশালীগণ,
কতটুকু হয়েছে পরিশোধ বা আদায় আর,
কতটুকুইবা আজও ওরে অনাদরে তব বাকী পড়ে রয়েছে তার,
জীবনের মালিকের কাছ থেকে নেওয়া, তারপর শেষে সব ভুলে যাওয়া তব বকেয়া ঋন দায়ভার ।
কবিতা দিয়ে কি হবে হয়,
মূর্খ যারা তাদেরকেতো বুঝাবার মত নয়,
লভে বেশী ধন ও ভোগ-বিনোদন ভাবে বুঝি হয়েছে তার মহাবিজয়,
ওরে আমি সামান্য যেটুকু জানি, সত্য বচনে ঐ চিরসত্য বাণী, ছড়াতে চাহি তাই সারাটা দুনিয়াময় ।
মহারাজার পরিচয় ও ঠিকানা,
কত তার শক্তি বা ক্ষমতা আর ক্ষমা ও করুণা,
জগতে আজও এমন রয়েছে কত ভাগ্যাহত যারা নির্বোধ, বধীর ও কানা,
কেন বানালো সে এ মহাবিশ্ব দুনিয়াখানা ও করিল মানুষ সৃজন,
কি লাভে কি আশায় ও গোলামের কাছে সে কিবা চায়, মহাবিশ্বপ্রভু স্রষ্টা, পালক, মালিক ও মহাজন ।
জীবনের বইখানা হাতে লয়ে পড়েনা,
বিচক্ষণ ও জ্ঞানী-গুণীজনের কথা কেনযে দেমাগে ধরেনা,
যার এত অঢেল ধন, তবু কেন ছোট মন, মহারাজার কোষাগারে জমা করেনা,
কিছু বলতে গেলেও বলে,
বাহাদুরি, অবজ্ঞা ও বিদ্রুপের ছলে,
হয়েছে দেখা বিশ্বের যত দেশ ও মহাদেশ,
ওরে ওসব আমার সেই কবেইতো হয়ে গেছে পড়া শেষ,
ছাড়া শুধু প্রদীপের তলের, যা রইলো হয়ে চির রহস্যের ঘের, ছোট্ট ঐ আঁধারখানা মোর সবইতো জানা ।
ঐ কবিতার কিবা লাভ কিবা দাম,
নাই অর্থ কিবা কোন রস-মজা শুধুই কি তবে ফাটাতে নাম,
কাগজের বুকে অকারণ আঁকজোক, কিছুই বুঝেনা সাধারণ লোক, বৃথাই ঝড়ানো সে ঘাম,
কলমের কালি ও কাগজের নিশ্চয়,
জীবনের মূল্যবান সময় আর অর্থেরও দেখি হয় অকারণ অপচয়,
যদিওবা তা এখন নয়, মরণের পরে হবেই হবে ওরে, জানা তার হয় কিবা পরিণতি ও পরিণাম,
যেথা নাই কোন সৃষ্টির ভেদ সে বাণী ও পাঠ, বিজন বিরান এক প্রান্তহীন মাঠ, জীবনে-মরণে তার কিবা কাম ।
যেথা নাই আলো ও ভালোটার,
সামাণ্য আলোক শিখা আঁধারে অচেনা পথটা দেখাবার,
মোটেও তা মিথ্যে নয়, শুধুই মনেহয় যেন তা কোন এক বদ্ধ পাগলের প্রলাপ আর,
যা শুধু বাড়ায় জীবনের ঋন, কাগজে লিখে তাই যা মূল্যহীন, তুমি কি চাও তবে কুড়াতে সে অলীক সুনাম ।
যেটুকু আমার হয়েছে জানা,
তা বিচক্ষণ পাঠকগণের বিষয় মানা কিবা না মানা,
সে নহেতো আমার, ওরে জীবন যার শুধু তার নিজেরইতো ঐ ভাবনা,
জানা দরকার, অতি জরুরী এ বিষয়খানা,
কেমনে কাটিবে কোথায় মরণের পর অদৃশ্য, অমর ও অনন্ত তব বাকী জীবনখানা ।
পর্ব – ৬৭
কে পাবে কোন্ শাস্তি পুরস্কার,
আর কোথায় কেমন হবেযে আবাসন কার,
সে ঠিকানা আর সবই তার অন্তরালে যা আজও অজানা,
লভে কেমন জীবন কোথায় কার কাটিবে কেমন, বেহেস্তখানা নাকি আগুনের এক জেলখানা ।
কেড়ে নিতে বিধাতার সব দান,
এ দেহটার ভিতরে থাকা অসহায় তব শান্ত নিরীহ প্রাণ,
লয়ে এক অদেখা সমন, যত প্রিয়জন ও বিত্তধন করিতে হরণ দিবে নির্মম এক আচমকা হানা ।
অদেখা দস্যুর মতন,
হঠাৎ মরণ এসে একদা নিরবে যখন,
শুধু পুণ্য বিনা জীবনের সব অরজন ও যত মালিকানা নিমেষে করিবে হরণ ।
কি লাভ হবে আর তবে, তা বুঝিলেইবা তখন,
কে দিবে সময়, মানিবার সুযোগ আর পাবেইবা কখন,
তবে আর বলো ফুটিবে কবে, আজও যাদের হায় ফুটেনি ঐ নয়ন,
জগতের যত ঐ মূর্খ সুচতুর সুবিদ্যান, হতভাগা পন্ডিত, বিত্তবান ও ক্ষমতাশালীগণ ।
মোখে মিঠা কথা বলে,
বদনে মুখোশ ও রঙ মেখে সারা গায় মহাবীর দর্পে চলে,
সদা তারা স্বার্থবাজ, লোকে মানেনা তবু আপনি রাজ, মোহ ভোগ-বিলাস ও সুবিধাবাদীর দলে ।
কথায় কাজে মিল নাই,
তবুও কেমনে করে সেরা হবার বাহাদুরি ও বড়াই,
সুবক্তা তবে দেখেছি তারা এমন, যা মুখে বলে তা নিজেরাই করেনা পালন ।
আমি তাই লিখিলাম ভাই তাই লিখিলাম,
দীনতা করেছে মূল্যহীন, নেই কোন যার জীবনের দাম,
কি মূল্য তার বড় মন আর শত শুভ ঐ সাধ বাসনার, বিধি যার হয়েছে বাম,
সে যে বড় অসহায়, অদেখায় তার মাথাভারী দায়, না রহিলে দুনিয়ায় কোন দান কিবা ভাল কাম ।
কেমন সে ক্ষমতাবান,
মহল ও দপ্তর যার উপরে তার, নীচে খুটিহীন সাত আসমান,
নেই কোন ক্লান্তি নহে পেরেশান,
ইশারায় নিমেষে সব ঘটে হয়ে যায় সৃজন, নিধন, সমাপন ও সমাধান,
কজনে মানুষ হয়েছে আর, জানে ঐ অজানা ভেদ তার, প্রথম আসমানে ঝুলন্ত এ মহাবিশ্ব জগতখান ।
হতেও পারে তা মহামূল্যবান,
সে রাজা এতই মহান ওরে, একবার সে যদিরে চান,
অধম অক্ষম ও নগন্য গোলামের, তুচ্ছ ক্ষুদ্র সামাণ্য কোন পুণ্য বা অণুদান,
যদিরে তার মনোপুত হয়, রাজারে গোলামের দেওয়া ঐ একটু সময় আর দেমাগের ঝড়ানো একফোটা ঘাম ।
কে বানালো এত সুন্দর এক পৃথিবী আর,
কে দানিলো এ শ্রেষ্ঠ জীবন যার, এত মজার সুখ ও ভোগ সম্ভার,
জানিলে বলো কি নাম তার,
লেখিয়া গাহিয়া শোনাতে চাওয়া মোর প্রভু বিধাতার,
অফুরান দান ও নেয়ামত ভান্ডার, রহস্যে বিমোহিত আকুল করা তার যে মহাসংসার ।
পর্ব – ৬৮
কত মহান ও উদার,
কি জানো তুমি তার অপার প্রেম ও করুণার,
অসীম ক্ষমতা ও রুপ-গুণ আর এ মহাজগতে তার মহাসৃষ্টির অরুপ বাহার ।
কেউ যদি প্রশ্ন করো আমি তা কেমনে জানিলাম,
হোক তা যতই মূল্যবান অনেকেই দেখি পায় একেবারে বিনাদাম,
কায়ঃমনে চাহিলে কারো কারো যায় মিলে, না ঝড়িয়েও তার এ দেহটার কোন ঘাম ।
যদিরে একবার মনের ঢাকনা খুলে যায়,
কেউ আর বলবেনা কানা, নেই মানা ঘরে বসে ওরে সব দেখায়,
অবিরত কায়ঃমন চেষ্টায় ও ঠায় বসে থেকে সে আশায়, অবশেষে ভাই আমিও তাই দেখিলাম ।
এই বুড়োকালে এসে তবে আজ ওরে সবে জানতে পেলাম,
বিশ্বজোড়া খোলা তার পাঠশালে, আমি সেই মোর বাল্যকালে যেই নাম লিখিয়েছিলাম,
সহস্র অযুত আমি তার শুধু পরীক্ষা দিলাম আর পরীক্ষা দিলাম,
আজও জানা হলোনা, জানিনা কেমনে কবে তা হবে জানা, আমি পাশ করিলাম কি না করিলাম ।
সিলেবাস ও বই হাতে পেয়ে এতদিনে,
খাতা-কলম ও একখানা খেজুর পাতার বিছানা কিনে,
ভাবনায় পড়ে যাই যখন শুনি, ডুবে আছি আমি মহারাজার মহাঋনে,
জানিনা ছেড়ে যেতে হবে কিনা শেষে, কোন ডিগ্রী আর কিবা তার কোন ছাড়পত্র বিনে,
আমি নাকি আজ ওরে সবে তার দপ্তরে, কত সবর যত ত্যাগ ও শত সাধনা করে আসল ছাত্র হলাম ।
মূর্খ ছাড়া কে করে বলো ঐ পন্ডশ্রম,
ভুল আর ধোকার বলয়ে থাকা যে বোকার নাই ভরসা এক দম,
এক বিধাতার,
কি জানো তুমি, তার ঐ মহাসম্ভার,
ছড়ানো সাজানো তার এ মহাজগত মহাসংসার,
মহাসুন্দর এতবড় স্থাপনার আকাশ ও মাটির সবটুকু আলো ও ভালোটার ।
কে করেছে সৃজন,
কেবা তার মালিক ও মহাজন,
জানো কি কেউ ঐ মহান রাজার ঠিকানা ও সীমানা তার রাজ্যটার,
এবার প্রশ্ন হলো কতটুকু তুমি তার করেছ প্রচার ও প্রসার, সেকি ছিলনা ওরে তোমার গুরুদায়ভার ।
ঢের বিদ্যা ও চৌকস বিজ্ঞান,
করেছে মানুষেরে বিচক্ষণ ও তীক্ষ্ণ বুদ্ধিমান,
দিয়েছে নানা সমস্যা, পেরেশানি, তাড়না, শত আপদ ও নিদান,
রয়েছে তার শতকোটি দান ও নেয়ামত অফুরান আর সবর, সালাত ও বিচক্ষণতায় তার সব সমাধান ।
কিছু চতুর কানা,
বিত্তশালী ও বিদ্যান সবজানা,
প্রভুর কাছে কেন রইলো তারা, যেন হার না মানা ।
যাবেনা কিরে তার কাছে ফিরে,
সবটুকু তার চরণে পড়ে, এ দেহ-মনের নত শিরে,
অপরাধী আসামী হয়ে, তার জীবনের মাথায় লয়ে, মহারাজার দেনা-পানার ঐ হিসাবখানা ।
পর্ব – ৬৯
এমনই বোকা, কত তার অজানা তাই জানলোনা,
না জিতে গেলোযে ঠকে, তবুও নিজেরে তারা হেথা সমর্পন করলোনা,
বুঝি গজালো ডানা, উড়ে আর ঘুরে চারদিকে ছিড়তে চাহিলো যারা আপনার অটুট সীমানা ।
নাস্তিকের মগজে শয়তানের আস্তানা,
বিনম্র ও অবনত হলোনা উদ্ধত অহংকারী অন্তরখানা,
নিশ্চিত হবে জাহান্নাম দুনিয়ার যত বেঈমান ও নাফরমানের ঠিকানা,
কেন তারা মুঠ করে ধন রাখলো ধরে, দীনজন কিবা অসহায় মানুষের তরে ছাড়লোনা,
কই তবুওতো মরণটারে ফিরাতে তারা কিবা, কেউ তার দুনিয়ার ধনগুলি সংগে করে নিয়ে যেতে পারলোনা ।
না দেখে না পড়ে ও না লেখে,
না চিনে, না কিনে, না জেনে, না শোনে ও না শিখে,
লাভক্ষতির বেঁচাকেনার বিশাল এ বাজার হতে হায়,
কান পেতে যারা না শোনে আর সুবচন বাণীর পানে নাহি ফিরে চায়,
যদিরে খালি হাতে, কাঙালের মত এক আঁধার রাতে, তারা সবে হায় ফিরে চলে যায়,
তবে কে লবে তার দায়, নিদানে কে নিবে তরায় আর কেজানে কি হবে আখেরাতে শেষটায় তাদের উপায় ।
জীবনের মালিক আর,
একক স্রষ্টা ও প্রতিপালক এ মহাবিশ্বটার,
বৃথা জনম এ ভবে তার, হলোনা যার এ জীবনটারে জানা যে পোষ্য গোলাম হতভাগার ।
আজও ভালকরে হয়নি যার নিজেরে চেনা,
জীবনের পেশা ও ব্যবসাটা যেন তার দুধ বেঁচে মদ কেনা,
বলো তবে কেমনে হবে, মরণ ও পরকালটা তাদের জানা,
যে চিনেনা প্রভু মহাজন, জানবে সে করে কেমন, কার কাছে তার কত দেনা ।
মিথ্যে অসার,
হোকনা যতই সুখের পসার,
সবাই আর সবকিছু তার কত পর, ছোট্ট ও নশ্বর তার এ জীবনখানা ।
যতই গজেছে পাখনা কিবা ডানা,
পায়নি আজওতো খুঁজে এক আকাশের সীমানা,
হতভাগা পেলোনা খবর, দেখলোনা তার বাহির ও ভিতর, কেমনে পাবে সে মনিবের পরিচয় ও ঠিকানা ।
বিদ্যা ও জ্ঞানের বহর,
আঁধার রাতের পথ হারানো ধূ ধূ মরুবালুচর,
সে এমনই একজন আসলেই যে বড় দূর্ভাগা ও কানা,
অজানায় মাথাভারী ঋন-দায়, আহা দুই জীবনই তার হায় একেবারে মিছে ষোলআনা ।
রচয়িতা/লেখক/কবি
আবু হক মুসাফির
(আবু সাইয়িদ মোহাম্মদ মাহমুদুল হক)
সেল ফোন-০১৬২৭৮ ৯৪৭৯৭/০১৩০১৭ ১৯৫৫৩
Email-abuhaawk@ymail.com & dactarkhana24@gmail.com