ভূমিকা – বিবাহ না হওয়া পঞ্চাশোর্ধ একজন রুপসী, বিদ্যান ও বিত্তশালী কুমারী রমণীর করুণ আর্তনাদ ও তার অশ্রুহীন অস্ফুট কান্নার অব্যক্ত কাহিনী । কলমে আঁকা এক সামগ্রিক জীবনালেখ্য । কঠিন তিক্ত বাস্তবতা ও তৃতীয় চোখের দেখায় সহস্র ধরণ ও রঙ বাহারের পরিপাটি ও এলোমেলো এ মানব জীবনের আদ্যোপান্ত । অজানা, অপ্রিয় ও এক রুঢ় কালো ইতিহাস । বিষাদের বলয়ে বিদগ্ধ কোণঠাসা আলো ও ভালোটার ফরিয়াদ । এ গল্পকাব্যে বিষাদ বাসিনী জনৈক রমণীর কষ্টকর জীবন-কথা ও খোদ খোদাতায়ালার আদেশ, মূল্যবান আশার বাণী ও বয়ান সমূহ কাব্যকারের কলমের জবানে উদ্রিত হয়েছে ।
হতে পারে তার কোন কিছু হারানো, জীবনের এ কাব্য-গল্পটার সবটা না পড়ে হয়ে গেলে কেউ ক্ষান্ত । বিচক্ষণ পাঠকগণেরা সাধারণতঃ হোননা কোন বিষয়ের পড়া থেকে বিরত, খুঁজে পেতে তার অন্তরালে বা অভ্যন্তরে লুকিয়ে থাকা জ্ঞানের সঠিক মর্ম, দিক কিবা সাফল্য ও বিজয়ের আবছা প্রান্ত । জীবন রণে যারা ভীষণ ক্লান্ত, বিষন্ন, বিব্রত ও হতাশ, ফলে খুঁজে পাচ্ছেনা প্রশান্তির সঠিক দিক বা ঠিকানা ও ঠাই তাদের জন্য এ কবিতাটি হতেও পারে পাথেয় সমেত এক দিগদর্শন কম্পাস । গহীন রাতের অন্ধকারে গভীর সাগরে দিক হারানো উদভ্রান্ত কোন নাবিকেরে নির্ভীক করে দেয় যে ভরসা ও কূল হারানোদের কূলে তুলে নেয় অদৃশ্য যে কুয়ত বা মহাশক্তি এ কাব্যটির বাণী ও পাঠ তারই সারকথা ।
পর্ব–০১
ছিলনাতো ওরে মোর কোন পিছুটান,
ফড়িং এর মত নেঁচে আর দিনভর পাখীর মত গাইবো গান,
হলো দেখি সব উল্টো, হলেও তা আজব খুঁত হীন বিধাতার সব ফয়সালা ও বিধান,
আজ বুঝি মোর কল্পনার স্বপ্ন আশা ও জীবন ভাবনার বাস্তবতার যত সব ব্যবধান,
সোনার দোলনায় দুলে, জীবনের শুরু ও শেষ সবকিছু ভুলে, পরম সুখে কেটে যাবে এ সোনালী জীবনখান ।
জানা হলো কেন, কত জমিদার রাজাধিরাজ,
জানিনা তবে জানতে মন চায়, কোথায় কেমন আছে তারা সবে আজ,
তদারকি করে, ঘুরেফিরে যেন ভয়ংকর রণ হুংকার সাজ,
কত মানুষের একজনের খাবার তিনজনে খেয়ে দিন যায়, তবু ঠিকঠাক তাদের ঐ রাজকীয় তাজ,
যাদের ছিল অনেক বিত্ত-ধন, দূর্দন্ড প্রতাপ, ঐ ক্ষমতা ও ভোগ-বিলাসের কত আস্ফালন, তবে প্রয়োজন হয়নি তাই ছিলনা কোন কাজ ।
অগণিত চামচা চাটুকার রাজা জমিদার বৃটিশের অবদান,
ইতিহাস কহে মিথ্যা নহে, যুগে যুগে উত্থান ফের আকাশের মালিকের ইশারায় হয়েছে অবসান,
ঠেকায় বা ফিরায় সাধ্য কার,
রাজারও হবে সাজা বিচারকেরও কঠিন বিচার,
ছিল এমনই স্বেচ্ছাচার, কে আছে আর তাদেরে দিবে ছেড়ে হয়ে যাবে পার, যদিরে অদৃশ্যের ঐ এক মহারাজায় চান ।
তাদের আওলাদ-ওয়ারিশ,
আর কেউতো তাদেরে করেনা কুর্নিশ,
রক্তে যাদের শুধু অন্যায়, অবিচার ও জুলুমের বিষ,
খুঁজেও আজ জানিনা কেন, মিলেনা তাদের কারো আর কোন হদীস,
কেন তারা তাদের পরিচয়, প্রাসাদ, খাসমহল, বাগানবাড়ী, ঘোড়ার গাড়ী, জলমহল, জমিদারী ও ঠিকানা সর্বস্ব হারান ।
বাবা মস্ত সওদাগর,
নানান দেশে তার ছিল কত বানিজ্য সফর,
কিনতো সে জায়গা ও বাড়ী তার পছন্দ হলে প্রতি বছর বছর,
শাহী আড়ত ও গদি, আমদানী মালামাল রাখার সারি সারি ছিল অগণিত পাকা গুদাম ঘর ।
বিশাল বড় এক মহাজন,
ছিল বানিজ্য নগরী জুড়ে ছড়ানো তার দাদন,
আমার বাবা, পুঁজিপতি খান বাহাদুর চৌধুরী সমসের ইমরান খান,
তার একমাত্র ভাগ্যবতী কন্যার দামান হবে কল্পলোকের রাজকুমার এক মহা ভাগ্যবান,
যার এত রুপ, এত বিদ্যা ও এত ধন, বুঝি রঙীন আশার সমারোহে অনায়াসে তার কেটে যাবে ছোট্ট এ জীবনখান ।
অ সুন্দরী ওরে,
কে আর কবে বিয়া করবে তোরে,
কতকিছু এ জীবনে আসে ও যায় জোয়ার-ভাটার তোড়ে,
বিয়ে-সাদী কিবা কপালের সুখ, সেতো হয়নারে কভু অর্থ কিবা ঐ নাম-যশের জোরে,
ছাই হয়ে যায় পুড়ে, নদীতে কিবা ঝড়ে নিয়ে যায় ভেংগে-চূরে, পথের ভিখারী হয় রাজ ও দেখি রাজায় ফকির পরদিন ভোরে ।
আল্লাহপাক দয়ালু মহান দাতা ও নির্দোষ,
কেউ যেন শিরতাজ, রাজ্য নেই প্রজা নেই তবুও রাণী-রাজ, কেউবা পাপোষ,
তবু কেন কেউ পায়, কেউ পায়না, কেউবা আবার পেয়েও হারায়, কেউ অশ্রুহীন বিষাদ রোদনে কারো দিলখোশ ।
রুপ, ধন, বিদ্যা ও যৌবন,
জীবনের মূল্যহীন অলংকার আজ আছে কাল নেই কিছুক্ষণ,
হতে পারে রঙমাখা চাকচিক্যময় এ জীবন, তবে দিতে পারেনা তা সুখ, পুলক ও বিনোদন ভরা দেহমন ।
পর্ব –০২
নিজ গুণে কেউবা পায়,
কেউ পায়না কিবা আপন ভুলে কেউ পেয়েও হারায়,
বিধাতার অনন্য সে নেয়ামত ও অমূল্য দান, কেউ খুঁজেনা বা চায়না ও পায়না বলো কি ভেদ তার কি কারণ ।
সবাই সুখী হলেইবা বিধাতার কি ছিল ক্ষতি,
আবু হকে বলে, কেন ওরে তাহলে মহাকরুণার আধার হয়না তার ঐ সুমতি,
বিশ্বাসী প্রিয় বান্দাগণ,
ক্ষমা, করুণা ও প্রাপ্তীর লাগি সদা করেন নিবেদন,
নিরবে সহেন ও তবু বিনয়ে রহেন আশা ও নির্ভরতায় জানিয়ে কাতর মিনতি,
হয়তোবা কারো সবরের পরীক্ষা লন, আবার কারোবা কর্ম্মদোষেই কভু সামাণ্য কঠোরও হন প্রভু তার প্রতি ।
অনেক বিদ্যা করেও অর্জন, হয়নি বুঝি কিছুই শেখা,
নাহলে কেন হয়েও সেরা,
কি বলবো তাকে রেশমী রঙীন চাদরে ঘেরা,
সবকিছু থেকেও ঢের যেন পূরো একসের কেন আজ তুমি এত নিঃস্ব ও একা,
মিথ্যে নয়, হাতে যখন ছিল অনেক সুযোগ ও সময়, হয়তোবা অহমে নিজের দোষ-ত্রুটি ও ভুলগুলি হয়নি দেখা ।
মেজাজটা গরম,
উচাটনে বন্ধ যেন হয়ে আসছে দম,
সবার ভাগে এত সুখ আর কেনরে আমার তরে বিধাতায় দিল তা এত কম ।
মেজমেজ করা সারাটা গা,
সবার আছে তোর কেন নাই, তুইও খা,
ঐ জ্বালাতন ও সোহাগ যাদুর পীড়ন আহা কিযে মজা ।
সেকি ওরে কভু ভুলা যায়,
টালমাটাল ও কিছুটা বেসামাল মন যখন তাহা চায়,
চোখ ও মনের ঐ ক্ষুধা ও তৃঞ্চা কারেও বলতে মানা, বলা যায়না, তা বুঝানোও বড় দায় ।
কে কার কষ্টটা নিতে চায়,
বোধ, বিবেক ও বিবেচনা যার মিশে গেছে হাওয়ায়,
বুঝালেও আর কি লাভ, হয়ে আছে তার সবটুকুই সয়লাব মন্দ ভাবনা, কলঙ্ক ও গুনায় ।
কত ভাল খাবার যদি হয়রে হালাল,
আজ জুটেনি পেলে নাহয় চুটিয়ে খাবো কাল,
যাই হোক তাই, ঠান্ডা-গরম কিবা তিক্ত, মিঠা ও টক-ঝাল,
হলোইবা নাহয় তা, একটু কম রসালো, কম মধুর ও নহে নজর কাড়া লাল ।
বড় কষ্ট আহারে,
কেনযে দেখছি হায় এ সংসারে,
হলে বিত্তহীন একালে গুণীজনও সবখানেই হারে,
সব গুণ ঢাকা পড়ে যায়, তার পাওনা মানটুকুও হারায় কে মূল্য দেবে তাহারে ।
নাই কোন ঋন আছে অবদান তবু লোকসমাজে বেহাল,
পন্ডিত ও জ্ঞানী তবু দশের সনে যেন পারেনা বরং বিব্রত হয় মিলাতে বা হতে সমতাল,
হায়রে পথহারা জমানা, ভালকথা, ভাল চিন্তা, ভাল কাজ ও ভাল মানুষের ক্রমেই যেন কমছে দাম ও হচ্ছে বড়ই আকাল ।
কত ঘর হায়,
নিরবে গোপনে ভাঙছে পরকীয়ায়,
বিদ্যান অবিদ্যান, বিবাহিত অবিবাহিত কেনযে এপথে যায়,
আলো ও ভালোটারে আঁধারে ঝাপটে ধরে গিলে খেতে চায়,
ভেঙে যায় অনুশাসনের ঢাল, প্রবোধ না মানা প্রয়োজন ও ভয়ংকর ঐ পরিবেশটা না দিতে পারলে সামাল ।
পর্ব –০৩
তাইতো বিধির বিধান,
ডেকে বলে সবারে ওরে এখনই হও সচেতন ও সাবধান,
মানতেই হবে নাহলে সুখ নাই দুই জীবনের দুই ভবে, তার কষ্ট আর দুঃক্ষটা হবে অফুরান ।
কেন বুঝেনা বোঁকা মন,
নাহলে তা হয়না জীবন,
এ জীবনের লাগি সবারই একজন,
আমরণ প্রতিদিন আজীবন সারাক্ষণ, হয় বন্ধু জীবনসংগীর প্রয়োজন ।
যার নাই ওরে চোখ ও মন,
তার কাছে কি দাম আছে এ বাণী ও বচন,
জলের মাছ ডাঙায় আর বেঁচে থাকা বলো হবে তার কতক্ষণ,
নাহলে মনেহয় হবেই নিশ্চয়, দুঃসহ বিষন্নতা সে যেন এক হেন কঠিন জীবন জিয়নে মরণ ।
সবই আছে তার কাছে, তবু যেন জেলখানার মতন,
শান্তি-সুখের ঘর, সে যেন এক ধূধূ বালুচর, কারো কাছে তা যেন আবার পোড়াবন,
সব নারী ও পুরুষ হয় যদি সে আসল মানুষ, মধুময় এ ভুবন,
স্বামী ও স্ত্রী দুইজনে হলে একমন, একে অপরের হেন নেয়ামত যেন রসেভরা পূরো একসের ও মূল্যবান রতন ।
হোক না সে এক দারুণ মজার ঘুম,
ভাঙলেও ভালো পেয়ে বন্ধুর যাদুর হাতের পরশ ও উঞ্চ মধুর চুম,
সোহাগে মাখিয়ে দিয়ে সারা গায় সাতরঙ কুমকুম,
ঐ দামাল ভালবাসার যারই হোক জিত কিবা হোক হার, সে এক দারুণ মাতাল বলিখেলার ধূম ।
নিঝুম গহীন রাতে,
এক বিজন ঘরের শূন্য বিছানাতে,
অকারণে ঘুম ভাংগা অসহায় দেহটা ছটফট কাতরাতে,
তা দেখেছে বলো কজনে, ঐ দগ্ধ অনল দহনে, যেন কষ্টের দরিয়ায় ঐ তাড়নায় সাঁতরাতে ।
ঘুমঘুম নেশার ভারে,
গহীন রাতে নিবারিতে ঐ দারুণ ক্ষুধা ও পিাপসাটারে,
হায় কেমনে বুঝিবে কোথায় গিয়ে সুখ খুঁজিবে, কিযে কষ্ট ও যাতনা লুকানো রয়েছে তাতে ।
জীবন হয়না কভু একজনে,
কি হবে দিয়ে আমার এ বিদ্যা, রুপ ও বিত্ত-ধনে,
কেউ কি জানে রাতটা কত বড় ও কতযে কষ্টের, যেমনই কেটে যাক দিনে,
পা হতে মাথার এ দেহটার ষোলআনা অধিকার হবে যার, নেই উপষম হুতাষের দম ঐ রসিক ও সুজন বন্ধু বিনে ।
না চাহিতে বাবামায় সবকিছুইতো দেয় কিনে,
কেন তবে আমরা সবে, সময়ে হায় শুধু ঐ সুখ পাখীটা নিলামনা চিনে,
গিয়েও কভু গাঁয়ের বাড়ীতে বেড়াতে,
যদিরে সর পড়া খাটি দুধে ভাত না পড়ে সোনার থালার পাতে,
কি হবে দিয়ে আমার এত শান-শওকত আর রুপ, বিদ্যা, বিত্ত-ধন ও তার গালভরা এই বড় জাতে ।
তাই চাইনা আমার,
গো-মহিষাদির একটা সুবিশাল খামার,
কি প্রয়োজন, আর কিইবা লাভ তাতে,
প্রায়ই দুপুরের খাবারে কিছু গোমাংস যদি না পড়ে মোর পাতে,
দুঃক্ষটা কি হবেনা চরম, না পেলে মধুর সাথে এক পেয়ালা গরম, ঘন খাটি দুধ প্রত্যহ রাতে,
বলোনা ভাঙলে আড়ং আর যতই হোকনা দরকার, কিছু কি কিনতে পাওয়া যায় যত টাকাই হায় তার থাকনা হাতে ।
পর্ব – ০৪
পায়চারি বিচরণ তার ঘরে ও আঙিনাতে,
পুণ্য ছাড়া মরণকালে ওসব কি যায়, নাকি বলো কভু যাবে কারো সাথে,
হবে কি লাভ আর জানিনা কার কোন উপকার, লয়ে মাথাভারী ঋন ঐ সে কঠিন ও অসহায় আখেরাতে ।
তাই চাইনা আমার,
গো-মহিষাদির একটা সুবিশাল খামার,
কি প্রয়োজন, আর কিইবা লাভ তাতে,
প্রায়ই দুপুরের খাবারে কিছু গোমাংস যদি না পড়ে মোর পাতে,
দুঃক্ষটা কি হবেনা চরম, না পেলে মধুর সাথে এক পেয়ালা গরম, ঘন খাটি দুধ প্রত্যহ রাতে,
বলোনা ভাঙলে আড়ং আর যতই হোকনা দরকার, কিছু কি কিনতে পাওয়া যায় যত টাকাই হায় তার থাকনা হাতে ।
রুপ, ধন, বিদ্যা ও জাত কেউ কি ধুয়ে খায়,
তেমন বেশী তা থাকা না থাকায়, কার কিইবা এমন আসে যায়,
তাতে কি কভু ওরে দেহ-মন ভরে,
অদেখা বেসামাল এক উথাল-পাতাল ঝড়ে,
কেউ দেখেনা, বলাওতো যায়না তা কেউরে,
প্রাণেতো মারেনা, মাথায় তুলে কেন সে মাটিতে ফেলে আছড়ে,
কেমনে তা নিত্য সহি ওরে, নির্মম হরষে গহীন রাতে এসে যেন আমারে শুধু চূরমার করে ।
কি লাভ বলো মাগো আমার,
দিয়ে এত বিলাস, জৌলুস আর চাকচিক্য বাহার,
কোথা রাখিব, কারে দিবো, কি করিব আমি দিয়ে এত শাড়ী ও ঐ গহনার পাহাড়, আমার মরার পরে হবে তা কার ।
যেথা কিছু নেই মোর,
ছাড়া দেহমনে ও ঘরে শুধু ঘন হতাশার ঘোর,
রাত গভীরে তাড়ায় মোরে, রাক্ষুসে কালো দুহাতওয়ালা এক বিবেকের চোর,
হেরে যায় পারেনা, অবক্ষয় একবার যদি দেয়গো হানা, সাধ্য কার তা কভু রুধিবে কি ঐ লৌহ কপাট বিশাল দ্বোর ।
এপাশ ওপাশ গড়িয়ে,
পা দুখানা যখন যেমন খুশী দুদিকে দিয়ে ছড়িয়ে,
কি পেতে চায়, ছুড়ে ফেলা কোলবালিশটারে কি নেশায় আবার সাদরে বুকে টেনে ধরে জড়িয়ে ।
সোনার পালঙ্ক ছেড়ে জীর্ণ কুটিরে পালাতে,
চারপাশে বারবার ঘুরে-ফিরে বেড়ানো তার ক্লান্ত দুখানা হাতে,
অন্ধকারে হাতরে হাতরে ঘুমভাংগা আধো চক্ষু বুজে এক নিঝুম, নিরব ক্ষুধাতুর রাতে,
হতাশার নিরব হাহাকারে ক্ষিপ্ত, বিষন্ন ও পীড়িত হয় মন, বন্ধুরে খুঁজে আর না পায় যখন তার ঐ শাহী বিছানাতে ।
তরতাজা বেগুন ও শশার,
যার কাজ কেবলইতো সাজে ওরে শুধু তার,
শুনেছি বিজ্ঞজনে বলে, নহে তা ওরে কাজ তেমন কোন গুনাহর,
তবে মোটেও যা ভাল নয়, নিশ্চিত একটাতো পরাজয়, লাগি নিজ দেহ ও মনের স্বাস্থ্যটার ।
এ মাষ্টারবেসন,
হতে পারে হয় সামাণ্য কিছুটা বিনোদন,
মিটেনা সাধ, ভরেনা মন, তা দুচার দিনের জরুরী বিকল্প সাধন,
তবে অকপটে সবে বলতেই হবে যে হবে, তা হাজার ভালো তার চেয়ে যা অপার ভয়ংকর ঐ পরকীয়ার ।
মিথ্যে ঐ প্রহসন বোঁকার,
দুধের স্বাদ তার হাড়ি ধোয়া ঘোলে মিটাবার,
বৃথা চেষ্টা, মিটেনাতো ঐ ক্ষুধা ও তেষ্টা, বাড়ায় ক্ষতি ও নেশার ঋন, একেবারে অর্থহীন ব্যবহার ।
পর্ব – ০৫
বিয়ে করা তেরোবার,
তালাকের পরে কিবা স্বামী-স্ত্রীর তিরোধান হবার,
কি ক্ষতি, হোকনা ঐ দুজনার মধুর মিলন একশত ত্রিশ হাজার,
পুণ্যময় উভয়েই খুশী হয়, ইচ্ছে কিবা যখন যেমন চাহে মন ও দেহটা পারে যার,
যে যাহা কয়, তা কোন দোষের নয়, বরং নিশ্চয় তা রুখবে গুনাহ, অবক্ষয় ও সমাজের ঐ যত অনাচার ।
অবৈধ যৌনাচার,
মজাটা তার জানা হয়েছে একবার,
মনেহয়, কিশোর ও তরুণ ছেলেমেয়ে যেন বাদ নেই এখন কেউই আর,
হাতে-পায়ে মুজা, যায়না রুপ-যৌবন দেখা ও বয়সটা বুঝা, শুধু চোখদুটি ছাড়া আর কিছুই দেখা যায়না যার ।
কে শিখালো প্রেম, যদি মাদ্রাসায় পড়ে,
বয়স তেমন নয়, সদা পর্দায় চলে ও সবে বলে দেখি থাকে ঘরে,
তা কেমনে হয়, তবুওতো সত্য যদিও বিশ্বাসযোগ্য নয়, অবাক বিস্ময়ে সবে ভেবে মরে,
কেমনে তারা গুরুর সনে, হায় কোন কুক্ষণে ঐ ভালবাসা উঠে গড়ে ও স্বতঃস্ফর্ত হয়ে তারা যৌন মিলন করে ।
তারা সবাই ভালো,
বাবা-মার মুখ নাকি করছে আলো,
কোন সাহসে তারা দ্বীনী বা ইসলামী শিক্ষার অমর্যাদা করে,
যতক্ষণ না বাতাসে তার কলঙ্ক ছড়ে আর, লোকের চোখে কলঙ্কের ঐ অঘটনটা ধরা পড়ে ।
জীবনের এ মূল্যবান পাঠ ও শিক্ষা,
নিত্য প্রতিক্ষণ যার ফুটেছে তৃতীয় নয়ন, দেখাবে সুপথ ও দেবে দীক্ষা,
যারা বুকে ও শিরে বিশ্বাস, বিনয় ও ভক্তিভরে তা করে ধারণ, পায় রবের ঢের নেয়ামত, ক্ষমা ও করুণা ভিক্ষা ।
সার্চ লাইটের আলো নেই যার, আঁধারে অচিন পথ চিনিতে তার,
হতে পারে মস্ত ভুল, তবে হারাবে সে দুকূল, মহাবিপদ সংকুল ঐ নিদানে হয় অনেকের হার,
অতি আধুনিকতা কিবা ওভার ষ্মার্টনেস আর, বিজ্ঞান খুলে দিয়েছে একই মহাসড়কের দুদিকে যার দুখানা প্রসস্থ্য দুয়ার ।
বয়স যাদের বিশ/ত্রিশ/চল্লিশ,
বিবাহিতরা স্ত্রী/স্বামী ঘরে আছে যার তারা কেন হায় এই পথে যায় ইস,
অবিবাহিতরা যখন সংগীহীন ও বাধনহারা, খেলোইবা নাহয় কভু তারা মধুতে মিশানো কয়েক চুমুক বিষ ।
সবাই তারা জানেতো সবই,
কলেজ ভার্সিটির ছেলে-মেয়েদের রয়েছে অনেক বন্ধু ও বান্ধবী,
চোখ আছে যার নিশ্চয় দেখা হয়েছে তার, ঐ জড়াজড়ি ও মাখামাখির বেহায়া ছবি,
একটা দারুণ মজার জিনিস আছে, খেয়েছিস কি কভু, চলনা আমার সংগে যাবি একদিন তা চুটিয়ে খাবি ।
অবাধ বিচরণ ও মেলামেশা দেহ-মন যদি চায়,
বন্ধুত্বটাতো আছেই, তাই উভয়ের ইচ্ছায় একদিনতো তা হয়েই যায়,
সরম ও ভয় একবার যদি ভাঙানো যায়, তবে আর কে তাদেরে তা হতে ফিরায় কিবা থামায়,
কিসের ভাবনা ঠেকাতে সামনের যত অঘটন, সবকিছুই যখন অনায়াসে হাতের কাছে সারাক্ষণ পাওয়া যায় সস্তায় ।
৩০/৪০ পার হয়ে যায়,
কেনরে তবু কেউই তারা বিয়ে করতে নাহি চায়,
হতে পারে, অনায়াসে নিখরচায় ও বিনা দায় মন চাহিলেই যখন তা পায় ।
হেয়ালি ভাবনা ও খেয়ালি চলন সহজ ও সুন্দর জীবন ভরেছে পাপাচার ও জটিলতায়,
শেষে পড়ে গিয়ে ফাঁদে, শত বিষাদে গুমরে কাঁদে, বাকীটা জীবন কাটে বড়ই দুঃক্ষ, কষ্ট আর হতাশায়,
জীবন মানে রণ আর সংসার এক উম্মুক্ত রণাঙ্গন, বিকৃত এ দরশন কেজানে হায় কে ঢুকিয়ে কবে দিয়েছে তাদের মাথায় ।
পর্ব – ০৬
ভালবেসে বিয়ে করায়,
নহে, বেশী আগ্রহ তাদের পরকীয়ায়,
নেই কোন খরচ, দন্দ-লড়াই ও নেই কোন তার দায়,
যেটুকু সুখ ও মজা তা যেন বাড়তি পাওয়া, হারাতে চায় কোন সে বোকায়,
কেউ কি তাদের এমনও ভাবে, কি হবে আর সন্তান দিয়ে, অযথা জড়িয়ে বিয়ে ও সংসার এর ঝামেলায় ।
তবে কে লবে তার দায়, যদিরে সত্যই কভু হায়,
বিধাতার সৃজনের এ জীবন ও জগত, সাজানো সংসার একবার ভেঙে যায়,
মন্দ কাজের ফলাফল কি কভু ভাল হয়, এভাবেই একদিন অনেক ছেলেই ঐ পৌরুষটা ফেলে হারায়,
যদিওবা শেষে কেউ বিয়ে করে বা কারো বিয়ে হয়, এ জীবনে সুখ পাখীটার দেখা তারা কেউই আর কোনদিন খুঁজে নাহি পায় ।
পাত্র-পাত্রী বা বর-কনে,
যখন শিক্ষিত ও বয়সে পাকা হয়েছে দুজনে,
যদি চায় তবে তাতে কার কি ক্ষতি, কেন ভাবেনা সরকার ও বিজ্ঞজনে,
হয়না ঐ দাম্পত্য জীবন কভু সুন্দর ও সুখের, দুজনের পারস্পরিক অন্তরংগ সহযোগিতা বিহনে ।
তাই যদি হতো ধনীরা বাজারের সব সুখ নিয়ে যেতো কিনে,
আর সুখ সুখ করে সারা জনম ভরে, হায় তড়পাতো যত অসহায় দরিদ্র মানুষগণে,
কঠিন ও ভারী দাবী ও শর্তগুলির বদলে, একটা সহজ লিখিত সমঝোতা চুক্তি করে, তারপরে যেতে বিবাহ বন্ধনে ।
বিয়ের বোঝা ও দায়,
কার কি দাবী আছে কে কি পেতে চায়,
অনেকের লাগি তা বেশী ভারী বোঝা ও ভীষণ চাপ হয়ে যেন না যায় ।
বিয়ের আনন্দ ও সুখটা যেন তারা ষোলআনা পায়,
নানা অভিযোগ ও অনটনে এ জীবনটা যেন তার সুরভিত ছন্দ ও গতি না হারায়,
সবে জানতে হবে, কার কি দেবার সাধ্য আছে আর কিবা কে তাতে সম্মতি, নারাজি ও অপারগতা জানায় ।
উপহার উপঢৌকনের নামে যৌতুক,
কারো উল্লাসের নাই শেষ, কারো মোখ ফুটেনা ফেটে যায় বুক,
কেউ পারেনা, কারোবা যায় চলে মান,
খোরপোষ, মোহরানা ও জাঁকজমকের চাই ই চাই একটা অলিমা অনুষ্ঠান ।
চিরকাল পুরুষই হবে পরিবারের প্রধান আর,
কিবা মিশেমিলে দুজনে ভাগ করে নিলে কি ক্ষতি সবটুকু ঐ দায়ভার,
দোষ কি বহিলে বেশী ভার, স্বামী বা স্ত্রী সাধ্যটা বেশী যার,
এমনতো কোন কথা নেই, চিরকাল কেবল স্বামীর পোষ্যই হতে হবে সোহাগের প্রিয় বিবিজান তার ।
কে কার পোষ্য কিবা কে কার অধীন,
এমন ভাবনায় ও এসব কথায় অনেক বেড়ে যায় দূরত্ব ও ঋন,
সবার জীবনেই আছে ও থাকে এমন কিছু ঋন যা ওরে শোধ করা যায়না কোনদিন,
সবাই হওয়া চাই কোমল, আপোষ, সরল ও তরল যেন ছলছল ঝর্ণার জল, ভালবাসা কভু হয়নারে কঠিন ।
শুধু বাহিরের নয় জানতে হবে খবর ভিতরটার,
এ জগতে নাহলে দুজনের সলা ও মাসওয়ারায় চলে, শান্তি-সুখের কত সহস্র সংসার,
সাধ্য, সক্ষমতা, সামর্থ্য ও যোগ্যতা বেশী কিবা অধিক অবদান ও ভূমিকা যার, ক্ষতি কি হলে তার আরেকটু বেশী সম্মান ।
চিন্তাবিদ ও সমাজপতিরা সব গেলো কই,
জানিনা কিসে ব্যস্ত তারা, পেরেশান ও দিশেহারা কি লই,
ত্রাণ কিবা হরণের মালামাল ও ক্ষমতার ভাগাভাগিটা হতেইযে বুঝি হবে সই,
নিত্য সারা বছর খাবার টেবিলের চাই, চিড়া, মুড়ি, খই, বারোমাসি পিঠা, ফল, নানারকম মিষ্টি ও দই,
পশ্চিমারা এখন জ্ঞান-বিজ্ঞান, ইতিহাস ও শান্তির লাগি পড়ছে কোরআন, সবকিছু পাশে রেখে থুই অতীব উদগ্রীব হই ।
পর্ব – ০৭
আর আমাদের ধনীর দুলাল-দুলালী ইয়ং জেনারেশন,
হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট কটেজ ও ডিজে পার্টির ক্লাবে গিয়ে নির্ভয়ে ও নির্দ্বিধায় করছে এখন,
উদ্দাম নাঁচানাঁচি, ঢলাঢলি ও মদ্যপানের উত্তাল বিনোদন,
তাদেরই ছেড়ে দেওয়া সব কালচার, সভ্যতা ও উন্নয়নের পতন “ফ্রি সেক্স ও লিভ টুগেদার” অনুসরণ ।
ঐ অবক্ষয়ের মহোৎসবের মাতাল উল্লাস ঢলে,
নাইবা দেখা গেলো চোখের জল, কত সংসার পুড়ে ছাই হয় মনের অদেখা অনলে,
এনে দিতেও পারে আসমানী আপদ ও নিদান ও সভ্যতার পরাজয়, না হলে সহসা তার সংশোধন কিবা সকলে সই ।
মাথায় ঘুরপাক খায় ও মাথাটা যেন দেয় ঘুরায়,
বিয়ের সাধ ও পরিকল্পনা, অনেকের সে গতিটাও যেন থমকে দাড়ায় কিবা পথ হারায়,
কত প্রয়োজন এমনি গোপনে হেরে যায় ও মার খায়,
মানুষের বানানো বিধানের কাছে, বলো কোন সে কল্যাণ, লাভ ও সুখ আছে, এমনি করেই নিভৃতে ও নিরবে হায় ।
ইসলামের জন্মস্থান,
পুণ্যভূমি যেথা শতভাগ মুসলমান,
হয়তো শুনে অবাক হবেন ও কষ্ট পাবেন অনেকে তা জেনে ।
জানা দরকার কোন দোষে কি কারণে,
এখন তারা বনপোড়া সংগীহারা পাখীর মতন দুঃসহ বিরহ তাড়নে,
দিবানিশি তারা পুড়ে মরে,
অন্তরে ত্রন্দন ঢেউ চোখেতে কোন অশ্রু নাহি ঝড়ে,
মুখে মেকি হাসি, আসলে আনমন উদাসী বিধবা/বিপত্নীক ও ঘরভাংগা যত পুরুষ ও রমণীগণে ।
সে দুঃখের কথা আহা তারা বলবে কার সনে,
আমার দেশেও আছে, কে দিবে সঠিক গণনা করে তা দেখাবো কেমনে,
কত রুপসী ছেড়ে আসা স্বামীর বাড়ী ও কুমারী নারীর বয়স কবেই হয়েছে চল্লিশ পার বিবাহ বিহনে ।
মা তুমি কোথায় আজ,
নেই আর কোন তোমার ঝামেলা ও দায় কিবা কাজ,
বলো একি হলো, জনমভর জীবনটারে সবে মিলে সাজিয়ে গেছ করে দিয়ে কত ভাজ,
আড় চোখে যেন সব চেনা লোকে আমার দিকে কেন চায়, খোঁচার কথায় মজা পায়, পরোক্ষ খোটায় বদনে দেয় লেপে লাজ ।
শুয়ে আছো শান্তির ঘুমে কবরে,
তব হাত-পা গুটিয়ে অসাড় চুপ আঁখি দুটি বন্ধ করে,
ফেলে একা ও ঢেলে দিয়ে সবকিছু আমার কপালে আর প্রশান্ত নিরব বাবার মাথার উপরে ।
জীবনের কত রঙ ঝলমলে আলো আর ঘুটঘুটে আঁধারের কত ধাপ,
অধ্যায়, ধরণ ও রণ তার উপর রয়েছে মরণ, কেউ ভাবে সেটি বুঝি কোন এক অভিশাপ,
অজ্ঞতার সে এক মহাপরিতাপ, কপালে সবার তা সয়না, হয়না যার জীবনে কভু আর করা যা নিরুপণ ও পরিমাপ ।
না, তবে দূর্ভাগা কিবা হতভাগা যারা,
হতেও পারে আপন কর্ম্মদোষে বড়ই অভিশপ্ত হয়ে পড়েছে আজ তারা,
ভাবে ও বলে কিছু কুলাঙ্গার হতচ্ছাড়া,
হয়তো পায়নি বলে সুজন পিতা-মাতা ও সুশিক্ষার গুরুজন অসহায় হাবুডুবু বেচারা,
নাঁচো ও গাও, ফূর্তি করো যাও, আর কোন কাজ নেই খাও ও ঘুমাও, ডুবে অন্ধকারে আজ তারা নাকাল, পেরেশান ও দিশাহারা ।
আকাশদীক্ষার ঐ প্রথম বাণীটা হলো “পড়ো”,
দুহাতে ঝাপটে ধরে, লুফে নিয়ে তা পরম যতনে সাদরে বুকেতে ধারণ করো,
এ অধমের কথা কেউ তব দেমাগে ধরো কি নাইবা ধরো,
মানুষের লাগি স্রষ্টার প্রথম আদেশ,
সেইতো শুরু নহে শেষ, রয়েছে আরও কত সহস্র দিক নির্দেশ,
না মানিলে মননে, বলনে ও চলনে মাটি ও আকাশের দুই জীবনে কেউই করেনা পাস হয়না বড় ।
মানুষ হয়না মানুষ, জীবনটাকে ভাবে রঙের ফানুস, পড়া ছাড়া,
বলোনা তবে ওরে, কবে হবে কেমন করে, সকলের তরে ভাল কাজ করা ও ভাল কিছু গড়া,
বিশ্বজোড়া এ পাঠশালাটার সে বাণী ও পাঠের আসল পড়াটা ওরে আজও তাদের হায়, অনেকেরই হয়নিযে একটুও পড়া ।
পর্ব – ০৮
কেউই পড়তে চায়না,
এত ব্যস্ত সবাই যেন সে সময়ই পায়না
যারা বেশী বিদ্যান, তারা ভাবে আমারতো ঐ সবই জানা ।
কম বিদ্যানগণের এমনই একটা ধারণা,
কি আর বলবে সে, হয়তো নতুন কোন গল্প শোনাবে আজব ও অজানা,
আর বিদ্যাহীনেরা পড়বে কি ওরে, তাদের ঐ চক্ষু দুটিতো কাজ করেনা ।
জানিনা কেন, মূর্খ যারা তাদেরকে তারাতো করেনা গণনা,
দেশের মানুষ কি তাহলে ওরে গণতন্ত্র কিবা কোন রাজনীতিবিদই আর চায়না,
ভাবে দিবে হয়তো আবার তারা, কোন মিথ্যা বুলির পাল্টা অভিযোগ, কুৎসা রটনা, বায়না কিবা বাহানা,
আর দার্শনিক, শিক্ষাবিদ, সমাজপতি, সাহিত্যিক ও চিন্তাবিদ যারা দেশের জ্ঞানের খামার শূন্য যার আবেগ, অনুভুতি ও চেতনা ।
ইউটিউব যখন হয়েছে এখন উপার্জনের বড় কারখানা,
একটু কেন ভাবেনা, হারাচ্ছে শ্রদ্ধা ও সম্মান দেশের বড় বড় মাওলানা,
কেন নয়, যত তুচ্ছ, নগণ্য ও বিশ্রী বিষয়গুলি যদি হয় তাদের ঐ ওয়াজের মূল আলোচনা,
তবে কি উপায়, তারা যাবে কোথায়, যারা নিরীহ, সরল ও অসহায়, চারদিকে সবখানে যখন এত ধোকা আর প্রতারণা ।
তারাইবা শোনবে কেন, কে করিবে তাদেরকে মানা,
এসব বিষয়, তিনটি চোখ রয়েছে মিথ্যে নয় যাদের মাথায় বাড়ায় দূর্ভাবনা,
কে করিবে এ দায় পালন, কবে হবে তাদের সংশোধন, তাই আর কি উপায় করা বিনা শুধু নিরবে ঘৃণা ।
নাহলেতো হতোই তাদের চেনা,
মূর্খ কিবা বিদ্যান অনেকেইতো আছে কানা,
একের ভিতর দুই, রেখেছে বিধি লুকিয়ে থুই, এ জীবনখানা ।
হামেশাই যাদের হয় দুধ বেঁচে মদ কেনা,
এমন কথাও যায় শোনা, হায় পরিবারের ভিতরেই নাকি চলছে জেনা,
বলে তা নিছকই প্রয়োজনীয় এক বিনোদন, এটাকে তারা কেউ অপরাধই মনে করেনা ।
চেয়েছিলেন খোদা মেহেরবান,
দুনিয়ার বাদশাহর ঐ সে চিরমহান বাণী ও ফরমান,
লভে জগতের সব মানুষেরাই হয় যেন পুণ্যে ঘেরা, তার মনের মত সেরা ইনসান ।
রবের চাওয়া আসল মানুষ, যার সাচ্চা ঈমান,
চায়নি খোদায় ও নহে তারা গণনায়, উত্তরাধিকারে পাওয়া নামের মুসলমান,
দুনিয়ায় এসে, স্বাধীনতা পেয়ে চুক্তি ভেংগে শেষে, ফিরে যেতে হবে দেশে তা ভুলে একেবারে বদলে যান,
সবার মত অবিরত আমিও চাই, অতি আধুনিকতার ঝলমলে আলোর তলের অন্ধকার, অকল্যাণ ও যত সব অমঙ্গল হোক অবসান ।
হয়ে যেতেও পারে বিবর্ণ ও আধমরা,
বাহারি ঢঙে ও শত রঙে রাঙানো বিধাতার এই বসুন্ধরা,
অজানায় রয়ে গেলো অনাদায় কত কাজ ও শত দায় কল্যাণ ও মঙ্গলে ভরা,
মগজে ঢুকেনি কেন ঐ ঐশী আলো, কেমনে পসিবে ভালো যেথা জানালা-দুয়ারগুলি সব বন্ধ করা,
আকাশ, বাতাস, বনাঞ্চল, ঝর্ণা-পাহাড়, সাগর-নদী, আলো-বাতাস, মাটি-জল ও সহস্র ফুল-ফল দিয়ে যে ভূতল সাজানো ভরা ।
এমনই এক নেয়ামত ও দান,
মহাকাল চিরন্তন অনন্ত ও অফুরান যার সঠিক মূল্যমান,
সে এক অবক্ষয়, ভয়ংকর ও করুণ পরিণতি,
এ জীবনে হয়না হবেনা পরিশোধ বা পূরণ, অনাদায় ঐ ঋন আর কোনদিন কখনও যে ক্ষতি ।
তবে আর কবে পরিশোধ হবে ঋন,
বয়ে চলা মাথাভারী এক অদেখা বোঝা যেন ভীষণ কঠিন,
রঙীন আলোর ঝলকে যে মন সারাক্ষণ, হয়েছে ও রয়েছে মজে অসাড়, বিভোর ও মলিন ।
পর্ব – ০৯
অন্ধ কিবা বধীর ও কানা,
লাভ দূরে থাক হায় আসলই বুঝি গেলো ষোলআনা,
চতুর সকল ফড়িয়ার দল, লুকিয়ে রাখা ও ভুলে থাকা মহাজনের দাদনের হিসাবখানা,
ব্যবসা কিবা আলো ও ভালোর চাষ করিতে আসা আর হলোনা, তাই বুঝি ঐ ফরমানই আজ হলো আসামীর পরোয়ানা ।
মিথ্যে হলো সোনালী এ জীবনখানা,
হয়নি বলে তেমন কিছুই দেখা, পড়া, শেখা ও চেনা-জানা,
কোথা হতে এ জীবনের হয়েছিল শুরু আর, কোন পথে কোথায় তার শেষ ঠিকানা,
কেউ টেনে তুলে নেয়না, এত পড়েও এখন রয়েছে পড়ে বিষম ফেরে, তাই বুঝি এত পেরেশানি, বিড়ম্বনা ও তাড়না ।
বাবা তার ঘরে অসুস্থ্য বিছানায় পড়ে,
বন্দি হয়ে ও সবকিছু সয়ে নাবলা কষ্টটা বুকেতে ধরে,
বিরস, বিবর্ণ, বিজন চিতাবাড়ী শ্বশান, কোন কারাগার বা মরু প্রান্তরে,
হলেও তা জাতের বাহাদুরি, কি লাভ হয়েছে আমার বলো তাতে কি কভু এ মনটা ভরে,
দাড়োয়ান, আয়া, ড্রাইভার, কেয়ার টেকার ও ম্যানেজার সবাই সারাদিন বিনয়ে সালাম ঠুকে ও যেন ভয়ে মরে ।
আগে মা ও মেয়ে দুজনে মিলে ওরে,
দামের জিনিস কত ছেড়েছি বড় অবহেলা ও বাছাবাছি করে,
তা দেখেদেখে সয়েসয়ে ধীরে ধীরে একদা সেই বাবা এখন বদলে গিয়েছে নিথর পাথরে,
নিরব দর্শক বাবা কখনও কিছুই বলতোনা আহারে, হয়তোবা তোমার ও আমার নানা উপহাস, বিদ্রুপ ও বকুনির ডরে ।
কে যেন পিছন হতে মোরে বিস্ময়ে বলে কিরে,
বাধবি কবে ভালবাসার বাসা, গাঁথবি সূতায় মধুর শত আশাগুলিরে,
ফুটবে ছানা, ঢেকে রাখবি দিয়ে অদুটি ডানা ঐ নীড়ে,
এপারে বসে কোন হুতাশের হতাশায় হেন এত বিমর্ষ কেনরে,
কেমনে কবে সাত সাগর ও তেরো নদী দিয়ে পারি তুই ওরে যাবি ঐ তীরে,
এখনও করিসনি বিয়ে, কে তোরে চিনে খুঁজে নিবে দাম দিয়ে কিনে কোটি মানুষের ভীড়ে,
কথার আওয়াজ শুনতে পেলাম, আসলে হেথা কেউ নাই, দেখে তাই অবাকও হলাম, আমি ওরে সেদিকে ফিরে ।
এ কেমন অবহেলা,
জীবন নিয়ে কি ওরে কভু যায়রে করা খেলা,
যাই করিস তুই, দুরন্ত ছুটে কিবা থেকে শুই, ভাটির টানে পড়ছে বেলা,
এ দায়তো রয়েছে মাথায়, গড়তে হবেই হবে মাটির এ ভবে সাজাতে কানন একখানা বিশাল বীজতলা,
আকাশবাণীতে আছে অনন্ত পুণ্যের খামার, শুয়ে থেকে কবরে আর চিরকাল ভাগ পাওয়া তার কৌশলে বলে দেওয়া ঐ ফয়সালা ।
নাহয় এখন হয়েছে বিকাল,
তাতে কি, আঁধার রাতের পরেওতো রয়েছে এক সোনালী সকাল,
বসে থাকা নয়, হাতে কাজ লয়ে সামনে এগুতে হয়, নহে কোন হতাশা কিবা ভয়, ডাকছে আগামীকাল ।
ছেড়ে দিয়ে ভাংগা ডাল,
খোদার নামে সাহসে এখনই দে ওরে মাটিতে ফাল,
হয়েছে তোর এ কোন দশা, সম্বল শুধু ঐ ভরসা, দেহ-মনের এ কেমন মন্দ হাল ।
মাঝি ছাড়া এক ভাংগা তরীটা নাকাল,
নাই বৈঠা, নাইরে ছৈ, পাটাতন ও গলই শুধু একখানা ছেড়া পাল,
কেমনে হবি পার, ডিঙিয়ে নদী ও পাহাড়, ক্ষিপ্র ধারার ঝর্ণার জলে হাবুডুবু নেয়ে ঐ ঝাপটা ঝড় দিয়ে সামাল ।
আঁধার রাত সাথে নেই কেউ,
একটার পর আরেকটা এসে আছড়ে পড়ে বড় বড় ঢেউ,
যত অবিশ্বাসী ও পথহারার দল,
বানিয়ে ঢাল, দিয়ে বিধাতার ক্ষমা ও করুণার বিশ্বাস অটল,
মনের ভিতরে নিয়ে ঠেসে ভরে, ঐ ভরসা, নির্ভরতা আর অফুরন্ত সাহস ও মনোবল ।
পর্ব – ১০
ওরে মহারাজার দরবারে যেতেই হবে যখন,
যার হাতে ভাই, সঞ্চয় ও সম্বল হয়েছে ও রয়েছে লয়ে তাই যেটুকু যেমন,
আজ নাহোক কাল, গহীন রাতে, সকাল, দুপুর ও বিকাল, ক্ষণিক দেরী নয় হঠাৎ যখন আসিবে সমন ।
সেইতো অনেক, এক পরম পাওয়া,
পথ ফুরানো রাজবাড়ীর দিকে ক্রমশঃ দ্রুত এগিয়ে যাওয়া,
হতে পরীক্ষায় পাস,
তার প্রিয় বান্দা, যত গোলাম ও দাস,
চাই ই চাই, অন্য বিকল্প নাই, তার জমিনে করা আলো ও ভালোর চাষ,
নেই মানা হালাল ভোগ-বিনোদন, আয়েশ ও বিলাস,
পঠন, জ্ঞান আহরণ ও বিতরণ, সত্য বলা ও সুপথে চলন চাহেন রাজায় আমরণ বারোমাস ।
আদিষ্ট হয়েছিল গোলাম,
তা নহে, মানুষ হয়ে জন্মেছ বলেই পাবে সবাই শ্রেষ্ঠ হবার দাম,
কাজের উপরেই দাম, হবে শাস্তি ও পুরস্কার নাহলে কেন বানালো খোদায় এতগুলি জাহান্নাম ।
আমিও আদিষ্ট হয়েছিলাম,
দুনিয়ার জীবনে এইতো ছিলো, এটাই হলো খোদার লাগি সবার কাম,
শুধু নহে পেটের লাগি উপার্জন, সুখ-আরাম ও ভোগ-বিনোদনের তরে ঝড়ানো ঘাম,
শুধু আমি নহে, সারা জাহানের মানুষ যারা ঐ এক রাজার গোলামীর খাতায় একবার লিখিয়েছে তার নাম ।
কে বুঝাবে তারে যার মন্দ কপাল,
যে কাঁদে কাঁদুক বসে গাছের তলে দেখে ঐ ভাঙা ডাল,
বিশ্বাসীগণে করে নিঃস্ব ও দীনজনের সেবা, উপকার ও দান একখানা তিল পাবে সহস্র তাল,
ধন আছে মন নেই, এমন কৃপণের অনটন রহে চিরকাল,
হাতে লয়ে তার মহান পুরস্কার, ডাকছে বিধাতায় ওরে আয় অ অন্ধ-বধীর যত বিভোর বিবেকের চোর আপদে কাঙাল ।
জীবন আমার হলো কেনরে জুয়ার তাস,
তারাই কেন দুঃসময়ের সংগী আমার, তাদের সনেই আজ সারাক্ষণ বসবাস,
আজ আর নেই কোন মোর সাধ-বিলাস,
যার কিছু নাই আর, এক জিন্দা লাশের কেন তবু বেঁচে থাকার আকুল উচ্ছাস,
বয়ে গেছে দিন, কমেনি বরং দিনে দিনে মোর বেড়েছে ঋন, কষ্টের স্মৃতিগুলি সব হয়েছে আজ দুঃখের মলিন ইতিহাস ।
ছিল ভুল ঐ দরশন,
আঁকাবাঁকা ও পিচ্ছিল পথেই তাই সদা চলন,
কেন সত্যগুলিরে সামনে তুলে ধরে, অকপটে তা সবারে হয়নি সাহসে বলন ।
দুঃসহ যাতনা সহন, না আমিতো এমন জীবন কভু ওরে চাইনি,
যেথা সব সুখ, প্রশান্তিতে ভরে দেহ-মন মাথা ও বুক, তার কাছে একবারওতো কেন যাইনি,
রুপ ও ধনের মোহ করেছে নিত্য দ্রোহ, তাই বুঝিরে একজন সুজন জীবনসংগী বন্ধু ওরে আমি আজও খুঁজে পাইনি ।
নিজে ভুল করে বিপথে চলে ফাঁদে পড়ে,
এখন বলি কই আমার ঐ পুরস্কার, কি পেলাম বলো আমি সবরে,
বিলাস আছে, হর্ষ-পুলক ও বিনোদন কিবা সুখ নেই, যদিও ঘরখানা আলোয় ঝলমল করে,
কেন আমি এই বাড়ীতে, অন্ন এখনও অচল বাবার হাঁড়ীতে, একাকি রয়েছি পড়ে সাজানো আমার এই বিরস বিশাল ঘরে ।
একটা কঠিন সময় আসে,
শুধু ঋন আর ঋন, কেউ নাহি বসে এসে দাড়ায় পাশে,
সবে জেনে যায় আমি কত হায় বিফলে, মন খুলে হেসে কথা নাহি বলে একটু ভালবাসে ।
রয়েছি আমি নিদানে পড়ে হয়ে বড় অসহায়,
ক্ষমা করে দাওনা মোরে হে বিধাতা, বদলে এ জীবন মম তব করুণায়,
শুনেছি প্রভু, মরা গাছে নাকি ফুল ফুটে আর মরা নদীও জলে ভরে যায় তোমার ক্ষুদ্র কৃপায় ।
পর্ব – ১১
প্রতিদিনের গুপ্ত প্রহরে,
সবকিছু মোর যাচ্ছে কমে যেন পালা করে,
একজন ভাল বন্ধু ও দাওনা একটুখানি সুখে ভাটির এ জীবন ভরে,
কবুল করো এ মোর কাতর যাচনা, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারোনা ওরে,
ঝিলের জলে নেয়ে আসা ঘন সবুজ পাতাগুলি, বদলে রঙ প্রেমের বাঁধন খুলি একএক করে যাচ্ছে পড়ে ধূলায় ঝড়ে ।
নারীর অমূল্য ধন তার সতীত্ব ও রুপ-যৌবন,
বলো কেবা আর কেমন করে তা রাখবে ধরে তার সারাটা জীবন,
আসে চৈতী খরা, সব পাতা ঝড়ে পড়া, রঙ ও সুখের শীত-বসন্তের হয়ে গেলে সমাপন ।
জানকি মা এখন আমার বয়স কত,
বিয়ে হয়নি, সন্তান নেই তবু আমি হয়ে গেছি ঠিক তোমারই মত,
এইতো জীবন, অযাচিত ও অবাঞ্ছিত ঘটবে হামেশা এমন অপ্রিয় কত সে ঘটন অগণিত ।
বয়স এখন আমার পঞ্চাশের উপরে,
তা নিয়ে কে, একটু ভাবে কিবা কভু দেখেছে গণনা করে,
বাহিরে দেখি মেকি অট্টহাসির মাতন, নাবলা যাতনার হাহাকার অন্তরের অন্তপুরে,
আমি একা নই, বিধবা, তালাকপ্রাপ্তা, বন্ধা ও আমার মতন পোড়া দেহ-মন কুমারী এমন রয়েছে বিদগ্ধ কোটি ঘরে ।
বিয়ের কোন বয়স নেই, নেইরে বাধা সময়,
একজন সংগীর খুউব প্রয়োজন, যদি যখন দেহ-মনে তাহা কয়,
দুজনে রাজি হয়, দুজনকে স্বামী ও স্ত্রী রুপে মেনে লয় তবে আর কোন দেরী করা ঠিক নয় ।
পুণ্য কাজে বাধা হতে শয়তান বেশী লিপ্ত হয় ও ব্যস্ত রয়,
সুখ খোদার নেয়ামত ছেলের হাতের মোয়া নয়, যারা জানে আকাশ হতে নিজে চেয়ে লয়,
ভালমানুষ দুইজন স্বাক্ষী হয়ে হুজুর পড়াবেন বিয়ে আল্লাহর নাম লয়ে ও করবেন দোয়া তাদের কপালে যেন সুখ হয়,
বরকনের পানচিনি ও কিছু খুরমা ছাড়া এত ঢাকঢোল, জানাজানি, হৈচৈ সোরগোল ও খানাপানির জরুরত নাহি পড়ে ।
গড় আয়ুর হিসাবে এখন আমার ভিসার মেয়াদ শেষ,
হবেইতো তাই কোন ভুল নাই, অচিন এক দেশে হঠাৎ একদিন হবোই হবো নিরুদ্দেশ,
শূন্য হাতে আঁধার রাতে, একভাঁজ সাদা কাপড়ে পা হতে মাথা সারাদেহ ঢাকা এক সংগীহীন অসহায় মুসাফির বেশ ।
গোলামেরে বিধাতায় করেও এত দান,
দাতায় চায়নিতো কভু তার কোন দাম, সে এতই মহান,
তাই এটাই সবচেয়ে বড় কাজ ও দায়, সত্য বলা, সুপথে চলা ও করা খোদার গুণগান ।
সে সফর নিশ্চয় হবে চিরতরে,
আর কি হবে এ জীবন সুন্দর মাটির এ ভুবনে ওরে,
কাজ ও দায়গুলি সব হোক সমাপন, কিবা থাকুক তা পড়ে অনাদায় অনাদরে,,
গেলে মরে স্বামী-স্ত্রী একে অপরের তরে ও আওলাদ-ওয়ারিশ হাত তুলে বাবা-মার লাগি তারা আজীবন দোয়া করে ।
না হলে বিয়ে ও সন্তান,
হলোনা সাজানো একটা পুণ্যের বীজতলা ও বাগান,
বুঝেনা বিনিময় ও প্রতিদান, তবু থেকেও ঢের চাহে আরও পেতে ফের, চাহেনা করিতে দান ।
বলো কেমন ঐ বানিজ্যখান,
কেমনে বন্ধুত্ব হয়, না হলে দুজনার দেয়া-নেয়া একেবারে সমানে সমান,
গ্রহীতার কাছ থেকে তার সমুদয় পুঁজি ও দান, ইচ্ছে হলেই তা উঠিয়ে নেন বা করেন প্রত্যাহার দাতায় যখনই চান ।
একজন দাদনের খাতক ও অন্যজন মহাজন,
কে বড় কে মহান ও কার বেশী অবদান, তবে মন ওরে হিসাব করে দেখোনা এখন,
ভিনদেশে বানিজ্য সফরে এসে, মোহ ও ভোগের চাওয়া-পাওয়ার জটিল রোগে ফেসে, অবশেষে বিফল মূল্যবান এ জীবনখান ।
পর্ব – ১২
মানুষ তাই বিয়ে করে,
সংসার মানে সাজানো বাগান ও বীজতলা গড়ে,
তারপর মরণের পরে শুয়ে থেকে কবরে, অনন্তকাল ধরে পুণ্য হাছেলের তরে ।
ক্ষেপে গিয়ে যদি খোদায় বলে অকৃতজ্ঞ বেঈমান,
এক কাজে অনায়াসে এত লাভ, কেন তবু করিবে না শোকর অ নাফরমান,
বিনোদনে বিনোদন চাঙ্গা হলো মন ও দেহখান,
বিনা কষ্টে পেলে আওলাদ ওয়ারিশগণ, তবু কেন দমে দমে নয় ঐ মহান দাতার গুণগান,
দুনিয়ায় রেখে যাওয়া ভালকাজগুলি আর বিধাতার পরম নেয়ামত ও দান, বাবা-মার সওয়াবের খামার রেখে যাওয়া তার ধন ও সন্তান ।
হায়রে বিয়ে কি ভুল আমি করিলাম,
এখন বসে হিসাব কষে দেখি আমার এ জীবনের শূন্য দাম,
মাথাভারী ঋন, একেবারে মূল্যহীন জীবনের যত ঘাম ঝড়ানো ও মরণে হারানো সহস্র কাম ।
আর কিছু থাক বা নাই,
স্বামী ও সন্তানের একটা সুখের সংসারতো সবার চাই ই চাই,
জীবনের লাগি আসলে শুধু একজন,
ভালমানুষ সংগী ও বন্ধুই সবার আগে ও সবচেয়ে বেশী প্রয়োজন,
নাহলে এ জীবনই বৃথা, সবকিছু বিরস ও তিতা, একেবারে মূল্যহীন এক লোকসানি খাত অবক্ষয়ী প্রহসন ।
আমার ধনইতো এখন,
পরে খায় ও পড়ে আছে অকাজে একেবারে নিষ্প্রয়োজন,
এখন মনটা কাঁদে কহিয়া,
পোড়া বুকের একটুখানি সুখের তরে দেই তার সব বেঁচিয়া,
তাই দেবো, অবশেষে ভুল আর মিথ্যে মোহ ও কুহেলিকার কাছে যখন আমি গেলাম হারিয়া,
যদি সুখ না পাওয়া যায় তবে কি হবে আমার বলো তা দিয়া,
তার ঐ রুপ, বিদ্যা, কাচা বয়স যা হতেওতো পারে মন্দ ও নিরস, আর এত বিত্ত-ধন গাঁটে সঞ্চয় করিয়া গেলে মরিয়া ।
কতকাল সহিব এ শাস্তি,
বহিব জীবনের যা নহে প্রলেপের এ অশান্তি,
ছিলনাতো ওরে মোর কোন অনটন, কিবা অন্য আর কোন কিছুরই ঘাটতি,
কি কারণ তার, তবু হলোনা এ রুপের কাটতি, কি ভুল বা অপরাধ বলো কেন হলো মোর এ করুণ পরিনতি ।
হে দয়াময়, আমিতো কভু কারো করিনি কোন ক্ষতি,
বিধাতায় যদি বলে হ্যা করেছো, নিজে ঠকে আরেক জনকেও ঠকিয়েছ, তাদের কি গতি,
যাদের দুনিয়ায় আসার কথা ছিল আমার নেকবান্দা হয়ে ও অনেক নেয়ামত লয়ে, আওলাদ-ওয়ারিশ তোমাদের ঐ হাত ধরিয়া ।
সেইতো জীবন ওরে সেইতো জীবন,
এ জীবন ও জগত এক মহাবিশ্ববিদ্যালয় ও কর্ম্মশালা, হয়েছে এত মূল্যবান আছে বলেই তার মরণ,
কি ক্ষতি হলেইবা তা অতি সাদামাটা ও সাধারণ,
কি লয়ে করেছো রণ, বুঝিবে ফলাফল তার নিজ হাতে পাবে যখন,
পরবাসে ভিনদেশে, যাযাবর মুসাফির হয়ে এসে ওরে কি প্রয়োজন এত বেশী বিত্ত-ধন,
সারা বেলা দাতার খেলা দেওয়া, না দেওয়া ও কেড়ে নেওয়া চিরন্তন,
কার কি আছে আর কিবা কার নাই সকলই ওরে পরীক্ষা ভাই, চলছে ও চলবে তা মহাকাল, আমরণ ও প্রতিক্ষণ ।
আপন ভুবনে আজ আমি বড় একা,
এককিত্বের ঐ বিষন্নতা সারাক্ষণ কুড়ে কুড়ে খায় তারে যায়না দেখা,
এত বিদ্যা আজীবন কি পড়েছি, এখন দেখি তার সকলই ধোকা আর মেকি কিছুই হয়নি জানা ও শেখা ।
কি নাই আমার কাছে, সবইতো ছিল ও আছে ভরপুর,
স্বজন ও সখী, আয়া, দাড়োয়ান, ড্রাইভার ও প্রতিবেশী, তবু আমি যেন ওরে ভিনজগতে আছি বহুদূর,
একটা সময় ছিল চারপাশে যখন মৌমাছি ও ভ্রমরের ভনভন ঘুরঘুর,
এখন ঘিরেছে মোরে এমন এক কারাগার নাই যার কোন জানালা দুয়ার, নিরব ও বিজন ঠিকই তা দুঃসহ ও বিরহ বিধূর ।
পর্ব – ১৩
আসলে তাদের কেউই আপন নয়,
দেখেছি জগতটারে জেনেছি ভালকরে সবার পরিচয়,
নদীর জল ছলছল কলকল, বৃষ্টির রিমঝিম কত মধুর,
আজ আর কেন ভাল লাগেনা ফুলের হাসি ও পাখীর গান, মনভরানো জগতের ঐ যত সুর ।
হলোনা জীবন কেন এমন মধুময়,
যেথা নাই দ্বিধা সংকোচ, সংসয় আর কোন ভাবনা ও ভয়,
না একথা নহে সঠিক কেউ কারো নয়, মরে গেলে মন এমনই কয়, সে কি তবে জীবন হয় ।
এ জীবন কত সুন্দর ও মায়াময়,
কেন তবু দেখিতে হয় রুপসী, বিদ্যান ও ধনীর দুলালীদের পরাজয়,
চল্লিশোর্ধ কুমারী ও আশিভাগ তালাকের যৌবন বয়সের সবই, কেন শুধু তাদের মধ্যেই হয় ।
যা ছিল হবার রঙীন ও সুখময় তা কেন আনিলো দুঃক্ষ বয়,
ভয়ংকর বাহির ও ভিতর, মনন, কথা ও কাজ যদিরে এক না হয়ে অমিলের হয়,
খুলে মন না হলে কথোপকথন, বহন ও সহন, সারাক্ষণ সুখ-দুঃখের লেন-দেন, ভাগাভাগি ও বিনিময় ।
এ জীবন নেয়ামত আর এত সুন্দর দুনিয়াখানা,
এতদিন ধরে এত পড়ে কি শিখলি, দেখছি কিছুইতো হয়নি জানা,
অপার মজার স্বাদ নেওয়া তার, যত সৃজন আর ঐ দাতারে কেন আজও হলোনারে চেনা,
হিসাবের বেলায় হয়তো শেষে বলবে খোদায়, দিলাম ওরে আমি তোরে নয়ন তিনখানা তবুও কেনরে রইলি কানা ।
মানুষের ঐ তৃতীয় নয়ন,
ওরে কোনটা সেরা নয়, লুকানো রুহ ও মন,
আজব ও মূল্যবান তীক্ষ্ণ এক যন্ত্র সার্চলাইট, অণুবীক্ষণ ও দূরবীক্ষণ ।
হাত-পা ও মাথাটার কি ওজন,
আরও কতকি আছে, রেখেছি তা আবৃত করে দিয়ে বসন,
আমার এমনই কুদরতি দান, অতীব মজার ও মহান পরম সে নেয়ামত রসময় ও গোপন,
কোন অনুতাপ, অভিযোগ ও আফসোসে আর কোন লাভ হবেনা আর ফিরেও পাবিনা কখন, একবার ওরে তা হারাবি যখন ।
সত্য সুবচন,
মাটির মানুষের এ দেহ-মন,
কেজানে কার আছে আর, কার নেই ঐ সে বোধন,
বিনা চেষ্টায় ওরে কিছু কি পাওয়া যায়, ভেবেছ এমনি বুঝিরে হয়ে যায় সাধন,
তা অপরাধ নয়, জায়েজ ও হালাল নিশ্চয়, ওরে মন সে এক রসের মিথ্যে নয় যাদুময় উপভোগ ও বিনোদন ।
এক ঘরের বাসিন্দা দেহ ও মন,
সুস্থ্য রাখে ও সতেজ করে, পরশের হরষে ভরে নিত্য জীবন,
কি মোহন করে সম্মোহন, আছে তার ক্ষুধা ও পিপাসা, কত স্বপ্ন-আশা, সাধ-বাসনা ও নাবলা চাহিদার নানা প্রয়োজন ।
সকল ইন্দ্রিয় ও রিপুগুলি,
কখনো কখনও যেতে চায় ও যায় যেন শিকল খুলি,
পাপ-পুণ্যের বিধান ও অনুশাসনগুলি যেন তারা ক্ষণিকের তরে যায়রে ভুলি ।
এদের মাঝে ঐ দুটি চোখ ও অদৃশ্য মন,
সময়ে অসময়ে ও কাজে অকাজে সবচেয়ে বেশী করে জ্বালাতন,
হঠাৎ কখনও যখন চায়, তারে সামলানো হয় যেন কিছুটা দায় ঐ উল্লাস ও মাতাল বিনোদন,
তাই নিতে হয় সবে সাদরে নিরবে মেনে, বিয়ে এ জীবনে খোদার বিধানের বিনিসূতার আজব ভালবাসার অদেখা এক বাঁধন ।
নারী কিবা পুরুষ হোক সে যেজন,
ওরে যখন জীবনে আসে অতি গোপনে বসন্ত যৌবন,
এদেরে না যায় ছাড়া, ও না যায় সহজে পারা, আসে তাদের কাছে কিছু হারমানার ক্ষণ ।
ক্ষুধা ও পিপাসার অন্ন ও জল আর রাতের ঘুমের মতন,
তার হয় প্রয়োজন বিপরীত জাতের সারাক্ষণের বন্ধু ঠিক যেন এমন জীবনসংগী একজন,
তাই তাদেরে ভাই, যেন অন্য উপায় নাই, দেহের ভিতরে, সোনার খাঁচায় পুড়ে করতেই হয় তোষণ, যতনে লালন ও পোষণ ।
পর্ব – ১৪
দিনে তিন/চার বার যদি খাবার খেতেই হয়,
নিত্য আটঘন্টা না ঘুমালে এ দেহটারে কাবু করিতে চায় অদৃশ্য এক অশান্ত বলয়,
প্রতি তিনদিনে তবে একবার যৌন মিলন হবে, তা কেন নয়,
বিজ্ঞজনেরা কহে ওরে সে কি নহে, স্বাভাবিক নিয়মের এক অস্বাভাবিক ব্যত্যয় ও মস্তবড় পরাজয় ।
ঐ বয়সের আওতায় পড়েছে যারা বা যেজন,
কেন এমন সত্য বললেই বিরক্ত কিবা নাখোশ হবে সবে, তারা কেন অবিবেচক এমন,
যৌন চাহিদার উম্মেষ কিবা বিবাহের ইচ্ছা প্রকাশ নৈতিক অবক্ষয় বা চারিত্রিক পদস্থলন নয়, এক স্বাভাবিক আচরণ ।
সুবেশী ও চাঁদবদন,
কে করিবে তা অস্বীকার, ছাড়া শুধু ঐ অতিশয় স্মার্ট ও মিথ্যাবাদীগণ,
তবে ভালমানুষগণেরে সদা হতেই হয় এমন,
জীবনের সবখানে সংযম, বৈধতার নিয়ম, ভাগে যদি হয় হোক একটু কম, শালীনতার সীমাণা ও বিধির বিধানের পালন ।
জীবনের প্রতিক্ষণ পড়ায় থেকো,
এখনওতো সময় আছে, শেখার সব উপায়ে জানতে শেখো,
তুমি একজন তার অতি সাধারণ ছাত্র আর এ জীবন ও জগতটা ওরে সেকথা মনে রেখো ।
অদেখা শিক্ষালয়,
নিশ্চয় এক মজার তবে রহস্যময়,
অজানায় মননে, কথায় ও কাজে অণুক্ষণ পরীক্ষা দিতে হয়,
ওরে মন খুলে তৃতীয় নয়ন জগতের দশধারে ও জীবনের ওপারে ভাল করে একটু তাকিয়ে দেখো ।
নাহলে নিশ্চিত অসহায় পরাজয় তৈরী থেকো,
হাতে কোন কাজ নাই, সীমিত সময় যাচ্ছে ফুরাই, বসে আলো ও ভালোর ছবি এঁকো,
খুঁজতে খুঁজতে যদিরে কভু তা যায় মিলে, তবে আসমানী নূরের ঐ রুপালী ঝিলে ডুবিয়ে নেয়ে সারা গায়ে তা হরষে মেখো ।
জ্ঞান হবে ভরপুর,
তুমি হবে বিচক্ষণ, আসল মানুষ ও সাধন প্রচুর,
ওরে পেতেও পারো স্বর্গ তোমারই ঘরের আঙিনায় ও হৃদয় অন্তঃপুর,
যা বলে কোরআন ও আধুনিক বিজ্ঞান, দেখিবে ছোয়া যায় হোকনা সে যোজন যোজন যতই দূর ।
শুনেছি পাবে তার চিরস্থায়ী মালিকানা,
মহারাজার পালিত পোষ্য ও প্রজা হয়েও দুঃক্ষজনক নিজেরে না চেনা,
হবে নিমেষে পার, বিনাদামে তার অসীম সীমাণার আকাশের ঐ প্রাসাদ কুটুমবাড়ীটা নিজ নামে যাবে কেনা ।
ওরে অবুঝ বিদ্যান মন,
অতি ছোট আর, এ একটাইতো তোমার দুনিয়ার জীবন,
মূর্খের দলে থেকে যেন না হারাও পরম সৌভাগ্য এমন,
তার যত দান আর নেয়ামত অপার চেটেপুটে মজা নাও, তা শুধু পাওয়া ওরে একবারই যখন,
এখনই শুরু করো সম্বল গুছাতে, নাহলে শূন্যহাতে কোন এক আঁধার রাতে, চিরনিদ্রায় চোখ বুজিলে কি উপায় হবে তখন ।
বলছি আমি তোরে, ওরে বিয়ে করছিস না কেন,
ষোলআনা সব থেকেও কানায় কানা, শেষে ওরে তুইও আমার মত হেরে না যাস যেন,
আর কিছু থাক বা না থাক, না পেলেও তা নহে বিপাক, শুধু দুজনেই হওয়া প্রয়োজন ভালমানুষ আর দুজনার বন্ধু সুজন ।
যেখানে যেজনে জোড় বাধিলে,
যাবেই যাবে মিলে বুকভরা সুখ, কে ফিরায় তা খোদায় চাহিলে,
শুনেছি কত এমন,
ছাইয়ের টালের তলেও নাকি পাওয়া যায়রে রতন,
সাত রাজার অঢেল ধন, তাও একদিন ফুরিয়ে গেছে, আজ তারা আর কেউই বেঁচে নেই এখন ।
পর্ব – ১৫
অতি সাধ করে,
তারে সবকিছু দিয়ে ভরে,
একদা বিধাতায় করিলেন আদম সৃজন,
দেখিলেন বেহেস্তে একাকি বিচরণ করা তার অতি বিষন্ন মন,
সবইতো ছিল তার সবইতো আছে, তবে তার মন খারাপের ওরে আর কি কারণ,
আদমে কি চায়, বুঝিলেন তা দয়াময় বিধাতায়, বুঝি তার নিশ্চয় একজন সংগীর বড় প্রয়োজন ।
কেন আমি একা এখন,
কার দোষ, কার ভুল কিবা তার কারণ,
ওসব খুঁজে ও বলে হবে কি তার প্রশমন বা ক্ষতির পূরণ,
জীবনসংগী বিছানায় যেজন রংগী, প্রতিদিন প্রতিক্ষণে যারে হয় প্রয়োজন,
তবে এখন নিজেরে প্রশ্ন করুন, বাবা আদমের সংগী নর না দিয়ে কেন বিধাতায় দিলো নারী একজন ।
অহমের বাজী ধরে,
কিবা কারো সনে বাহুর বলের পাঞ্জা লড়ে,
অসম্ভব কিছু নয়, জিতে যাওয়া এ ভুবনে হয়তো হতেও পারে ঠিক তেমনই করে ।
ভেবেছ কি মন,
ওরে তুমি করবে কি তখন,
একাকি অন্ধকারে অচিন ঘাটগুলি যখন,
ভয়াল ও ভয়ংকর এক এক করে পার হতেই হবে,
যার কোন নমুনা কিবা অভিজ্ঞতা ছিলনা ওরে রঙীন এ মাটির ভবে,
প্রতিটি দমের সব মনন, চলন, বলন ও সকল কাজেরই হিসাব লবে,
অ মুসাফির, যেদিন তুমি আর রবেনা শত ক্রোড়পতি, বিচারপতি, সেনাপতি কিবা রাষ্ট্রপতি মরণের পরে ।
ঐ সে কঠিন নিদান ও বিপাকে,
কে আসিবে তব ক্রন্দন শুনে কিবা ঐ সকাতর ডাকে,
মহজগতের এক মহারাজ ও মহাজন,
যার হাতে ছিল ও আছে সকল সৃজন, লালন-পালন, সুখ –ধন,
হয়েছিল সৃষ্টির সেরা তারপর সহস্র মিথ্যা, মন্দ ও পাপেতে ঘেরা মানুষের অসহায় মরণ ।
আছে কি নাই ওরে তা স্মরণ,
তাই কি এমন বেপরোয়া, ভাবছে নিজেকে দুধের ধোয়া পাপীগণ,
এ জগতে শুনেছি ঠকেনা ও হারেনা সেজন, রয়েছে নাকি যার বেশী বুদ্ধি, সাহস ও ঢের বিত্ত-ধন ।
সব দেখে ও সব জানে বিধাতায়,
কেমনে কোথায় বলো ঐ সকল কর্ম্মগুলি রাখিবে লুকায়,
বিদ্যা, রুপ, বুদ্ধি, জাত-কুল, মান ও বিত্ত-ধন রাখিও স্মরণ সব মিথ্যে ও অসহায়,
যখন যেখানে ওরে রাতে কি দিনে অ মানুষ যাই করেছো আজীবন,
মনের গহীনে মন্দ-ভালো যে বাসনাই রয়েছে প্রকাশিত বা গোপন, সব কথা-কাজ হয়েছে রাজ খতিয়ানে নিবন্ধন ।
সময় হারাইয়া এখন বুঝিলাম,
খোদার কাছে মানুষের কত সম্মান ও তার জীবনের যে কত বেশী দাম,
বিধিরে আমি রয়েছি নিদানে ও বিষাদে পড়িয়া,
তুলে নাও তুমি মোরে ধরিয়া, আপন দোষে নিজের ভুলে সুখের জীবন দুঃখে ভরেছি সময়ের কাম সময়ে না করিয়া ।
এ পাঠ করে পঠন,
পেয়েছি আমি প্রকৃত জীবনের দরশন,
হয়েছে আমার নব আশার সঞ্চার, অসাড় সব চেতনার জাগরণ ।
পর্ব – ১৬
আমি এখন করবো বিয়ে,
দুহাতের বাঁধনে মোরে শক্ত করে ধরে জড়িয়ে,
পায়ে আলতা, হাতে মেহেদী ও খোপায় বেলীফুলের মালা দিয়ে,
হাতে লাল কাচের চুড়ি, রেশমী ফিতা ও একটা ঢাকাই লাল শাড়ীর নতঘোমটা পরিয়ে,
কোন দাবী কিবা চাওয়া নাই, একজন ভালমানুষ শুধু আমি চাই, অ বন্ধু সুজন যাও জলদি এসে আমারে নিয়ে ।
ওরে বিদ্যান ও চতুর মূর্খের দল,
রাজার ঋন সে কি মহাকালের আবর্জনায় পড়েছে তল,
না রে না, যদি হয় এত ভুল আর দিতে হয় তার অফুরন্ত মাসুল, হলে একবার এ জীবনটা বিফল ।
দুজনের মিলনেইতো হয় জীবন,
দেখেছি কারো জীবনই চলেনারে জীবনসংগী বিহন,
সবকিছু থেকেও যেন নেই কোন সম্বল, গরমের হাতপাখা ও শীতে যে পশমী কম্বল,
জিয়নে মরা প্রশান্ত বিহবল, অন্তরে অস্ফুট ক্রন্দন, মুখে মেকি হাসি তবে কেন চুখে তার নাই কোন জল ।
নর ও নারী দুজনায়,
হারিয়ে সংগী স্বামী ও স্ত্রী হয়ে পড়ে বড়ই একা, অঁচল ও অসহায়,
বিয়ে না হলে কিবা কভু জোড় ভেঙে গেলে সব থেকেও যেন তারা একেবারে নিঃস্ব ও সর্বহারা এ দুনিয়ায় ।
মহারাজার দান,
তুচ্ছ কিবা ক্ষুদ্র কিছু নেই, সকলই অনন্য মহান,
বিত্ত-ধন কারো নেই, কারো কম, কারো বেশী আবার কারোবা তা পাহাড় সমান,
পা হতে মাথার এ সুস্থ্য, সবল ও সচল দেহটার এ জীবন কোনটা দামে কম আর কি নহে বলো তার মহামূল্যবান ।
কি দেয়নি খোদায় স্ত্রী ও সন্তান,
অসহায় দীনজনে করেও সামাণ্য সেবা, উপকার ও দান,
যাবে কি এ জীবনে কোনদিন শোধ করা ঐ ঋন, কিবা দেওয়া বিধাতার দানের প্রতিদান,
একটু ফিকিরে ও ভাবনায়, কেমনে হবে কারো সেবা, উপকার, মঙ্গল ও কল্যাণ হওয়া যায় অনায়াসে মহাপুণ্যবান ।
নাহলে মোটেও নয়,
ক্ষুদ্র ভাল কাজেও প্রভু খুব খুশী হয়,
তাই হতেও পারে, পরিশোধ ও দেওয়া তার বিনিময়,
রাজার সনে চুক্তি করে মেনে লওয়া দায়গুলি যদিরে অনাদায় নাহি রয়,
যদিরে কথায়, কাজে ও চলনে সদা রহে তার জীবনের অন্তরে ও বাহিরে মরণ ও খোদার শাস্তির ভয়,
ভক্তি, বিশ্বাস, সম্মান, নির্ভরতা ও বিনয় এবং পরম মান্যতায় করে দিন গুজরান তার সকল বিধি-বিধান ও ফরমান ।
কেনরে এ জীবন,
শূন্যহাতে একাকি, যার জানতে চাহে মন,
জানবে নিজেই সে, কে আমি কেনরে কোথা হতে এখানে আগমন,
পাওয়া হলো বাবা-মা, ভাই-বোন, নিজ পরিচয়, বাড়ী-ঘর, ঠিকানা, বিদ্যা, উপার্জন ও কত বিত্ত-ধন ।
একে একে তারপর,
এলো স্বামী-স্ত্রী, সন্তান, সাজানো সংসার কত মনোহর,
কত স্বপ্ন আশা ও মায়া-ভালবাসা যেন সবাই পরম আপন এ জগতে কেউই আর কারো নহে পর ।
আসলে তা নয়,
ধীরে ধীরে যার সবকিছু চেনা-জানা হয়,
মাটির দুনিয়ায় দুদিনের পাঠ ও কর্ম্মশালার এ সফর,
আসা-যাওয়ার, পাওয়া না পাওয়ার ও পেয়েও হারাবার এ চির প্রথার উপর,
সবার নয় শুধু যার হয়, অনুভবে ও চেতনায় সে পায় একেবারে ভিন্নরকম সৃষ্টির অনুপম সে ভেদ-খবর ।
আসলে সে যেন পুতুল খেলা,
ঠিক যেন তা ওরে এক অবুঝ শিশুর ছেলেবেলা,
সাজানো কানন, হাজার পণ্যের সমাহার বাহারি পসার দারুণ মজার রঙীন মেলা ।
পর্ব – ১৭
সহসা এলে মনিবের ডাক,
যেখানে যা যেমন আছে ঠিক তেমনই ওরে পড়ে থাক,
মূল্যবান বেসাত ও নগণ্য সাধারণ সামান এর মাঝে আজ আর দেখিনা কোন ফারাক,
এসবের আর মায়া করে কি হবে, দেখি এমনি করেইতো চলে যায় সবে, আসা-যাওয়ার সে এক দারুণ মজার ঘুরপাক ।
কত প্রিয় কথা হায় রইলো নাবলা,
বিভোর হেলায় খেলায় হঠাৎ নাবলে যখন ফুরলো বেলা,
না তা নয়, তবুও শেষে সবকিছু রেখে ফেলে ও সবারে ছেড়ে তড়িঘড়ি ফিরে ছুটে চলা ।
কত পড়া আহা হয়নি পড়া,
শত দায় ও মনে চায় হেন কত ভাল কাজ হয়নি করা,
যার এত ধন, শানশওকত ও ক্ষমতার বহর,
খোদায় হাসে, ঝোপ-ঝাড়ের পাশে চির ঠিকানা ভিজা মাটির একখানা ছোট্ট কাঁচাঘর ।
বলো আর কি করার আছে,
ফুরালে সময় সবারে যেতেই হবেযে ফিরে তার কাছে,
ভাঙ্গিল ঘোর শেষ সময়ে জানা হলো মার, এ দুনিয়ার সবকিছুই আর সবাইযে আসলে কত পর ।
শূন্যহাতে একদা যেভাবে হয়েছিল আগমন,
একেবারে ঠিক যেন তেমনই আজ এক নব সফরের যাত্রা শুরু হলো এখন,
আসার কালে সেদিন ছিল মোর চেতনা, সংগে কত ধন, শত নেয়ামত ও অপার দান বিধাতার অগণন ।
ষোলাআনা অক্ষম ও অঁচল হয়ে,
লোকের কাঁধে চড়ে অচেতন এ দেহটা লয়ে,
দেওয়া নেওয়া শেষ, হয়েছে অবসান সকল চাওয়া ও পাওয়ার,
চির বিদায়ের কালে, আহা আজ কেন এমনই বেহালে, শুধু ঐ হিসাবের খাতাটা ছাড়া আর,
সংগে আমার কিছু নাই আর ছাড়া নিজের, শুধু কষ্টের কামাই সারা জীবনের, অদেখা যত পাপ-পুণ্যটার সমুদয় রোজগার ।
চক্ষু বন্ধ কর,
ওরে তুই এই গাড়ীটাতে চড়,
তারপরে দুহাতে শক্ত করে এই রশিটারে ধর,
যেটুকু জানিস ও যা পারিস ওরে তোর প্রভুর নামে তাই শুধু পড় ।
উপরে নীলাকাশ, ছাড়া শনশন বাতাস আর নয়দিকে কিছু নাই শুধুই যেন দেখছি ধূসর,
অনুভবে চেতনায় ভয় আর উৎকন্ঠায় ভরপুর, তবু ঐ বিধাতার করুণার ভরসায় নির্ভর,
কে যেন বললো, ওরে ভয় নেই আমিতো সংগে আছি হোসনে অধীর, অ সত্য বলা ও সুপথে চলার বীর মুসাফির যাযাবর ।
হলেও জায়গাটা একেবারে অচেনা, দারুণ খাসা,
তবে যেথা হতে হয়েছিল দুনিয়ায় আগমন, মনেহয় হেথাই যেন আবার ফিরে চলে আসা,
কি চমৎকার, চোখ জুড়ানো অপরুপ সুন্দর,
ঝিল-বাগানের এক বিশাল প্রাসাদ, এখন হতে ওরে এটা শুধু তর,
বিমুগ্ধ করা নয়ন ও বিমোহিত হলোযে অন্তর,
কি করবো দিয়ে ভাবছি আমি, কি দরকার ছিল আমার একার লাগি এত দামী ও বিশাল সুরম্য প্রাসাদ বাড়ী-নঘর ।
এটা মহারাজার খাস কুটুমবাড়ী,
আর মরণ নেই, কখনো আর এখান থেকে তোমার যেতেও হবেনা ছাড়ি,
ওরে বলবেন খোদায় পাক জবানে, আমি যা বলেছিলাম মহাপবিত্র কোরআন এ, নয় কি এটা সত্য প্রমাণ তারই ।
তোর নামেই হয়েছে কেনা,
ইজারা নয় ওরে, চিরস্থায়ী মালিকানা,
না, নাইরে কোন আর বকেয়া হিসাব কোন দায়-দেনা,
অগণিত খেদমত তাবেদার, ঘুরঘুর করা কত হুর দেখবি করা যায় কিনা তা গণনা,
থাকা-খাওয়া, আয়েশ-আরাম ও ভোগ-বিনোদন সকলই চিরকাল পাবে ফ্রি কোন কাজ কিবা মূল্য বিনা ।
সত্য বলেছি শোধিতে মোর দায়,
যদিরে খোদার করুণায় একবার তা আদায় বা কবুল হয়ে যায়,
মহারাজার কুটুমবাড়ী, যদিও সুদূর অচিন ও অসীম সীমাণায়,
তাহলে আর কে আমারে পায়, খোদার নামে পৌছে যাবো ঐ সঠিক ঠিকানায়,
আমি যার ছাত্র, পড়ছি, যা পড়েছি, শিখেছি ও জেনেছি মহারাজার মহান অদৃশ্যমান ঐ মহা বিশ্ববিদ্যালয়টায় ।
নিশ্চয় এ নহে কোন মোর বানানো গল্প,
মহাদুনিয়ায় যেদিকে চোখ যায় তাই লিখেছি–দেখছি, দেখেছি ও চিনেছি যেটুকু অল্প,
হতে তিরিশ পারা মহাপবিত্র কোরআন,
মহাজগত ও জীবনের এটা মোর এক অতি সংক্ষিপ্ত বয়ান,
যদিরে হয় পরিশোধ তার কাছে আমার, সমুদয় দায় ও ঋন,
তাতেই খুশী ও ধন্য আমি না পেলেও খোদার পুরস্কার, আকাশের ঐ কুটুমবাড়ীখান তার শুনেছি প্রান্তহীন ।
কার হলো সমাপন মহামূল্যবান এ পাঠখানা,
আর ফিরে দেখা, অজানাকে জানা ও শেখা কিবা বোধোদয় কার হলোনা,
যেটুকু লাভ-ক্ষতি যার, হয়েছে ও হবে সেটুকুই তার শুধুই নিজের একার, অন্য কারোই তাতে হায় কিছুই যায় আসেনা ।