ভূমিকা - এটি জীবন থেকে নেওয়া অর্থাৎ তৃতীয় নয়নে দেখা একটি জীবন দরশন মূলক কবিতা । অনেকটা ছোটগল্পের আদলে রচিত এ দীর্ঘ কাব্যে অংকিত হয়েছে কল্পিত এক মায়া-ভালবাসার আজব সংসার । পাবেন সেকি আস্থা ও নির্ভরতার নাকি একেবারে মেকি ও ফাঁকি, নিছক মোহ ও দায়সারা অভিনয়ে ভরা, মরীচিকায় গড়া সকলই যেথা রয়ে যাওয়া বাঁকী এমন নকল ও অসার । জানবেন তাতে কার হলো জিত আর কারইবা হার । বিচিত্র রঙে সাজানো এ বিশ্ব জগত এবং জীবনের এক অসীম অপার শাশ্বত ও সার্বজনীন রুপ এর কলম-চিত্র যা হয়তোবা সকলের দৃষ্টিতে একই রকম না’ও হতে পারে । হয়তো কারো কাছে তা তেমন ভালো না’ও লাগতে পারে, আবার কারো চোখে লাগতেও পারে দারুণ চমৎকার । তাই তা যাচাইয়ের সুযোগটা না হারিয়ে একবার পড়ুন ।
আপনার তৃতীয় চোখে ভালকরে একবার দেখুন বৈচিত্রময় এ নশ্বর জীবনটাকে । ঘরে বসে দরশন করুন বিচিত্র বৈশিষ্ট ও স্বভাব আচরণের সব মানুষগুলিকে । জানুন জীবন কত রহস্যময়, ক্ষেত্র বিশেষে কত দূর্বিসহ ও করুণ এবং মানুষ কত অসহায় আর জীবনের ভিতরে লুকানো রয়েছে কত জীবন্ত অবক্ষয় । অনেক পাঠকের জন্যই হয়তো তাতে রয়েছে শিখার অনেক মূল্যবান উপাদান । স্রষ্টা ও তার এ মহাসৃষ্টি তথা জীব-জগত ও আমাদের এ জীবনটাকে বিশদভাবে জানার যে পড়া তারচে উত্তম পাঠ আর কি হতে পারে । কত পন্ডিত মনীষী রাস্তার ময়লা কাগজ কুড়িয়ে লাইটপোষ্টের আলোয় দাড়িয়ে পড়েছেন । আর আমরা ঘরে গদিআঁটা নরম চেয়ারে বা সোফায় বসেও কেন পড়তে পারিনা ।
ওরে ভাই কাব্যের পরিসর বা আকার দেখেই ক্লান্ত হয়ে যাবেন না যেন । প্রিয় পাঠকগণের কেউ কেউ, যাদের ধর্য্য কম বা আসলেই হাতে সময় নেই হয়তোবা তারা কবিতাটি বড় ভেবে বা বৃহদাকার জেনে তা পঠনের শুরুতেই, পাঠকালীন সময়ে কিবা পাঠ শুরুর আগেই আগাম ক্লান্ত হয়ে পড়তে পারেন । তাই এ বিষয়টি বিবেচনায় এনেই তা পঠনের সুবিধার্থে তথা ক্লান্তিহীন করার লক্ষ্যে ছোট ছোট পর্বে ভাগ করে দেয়া হয়েছে । শুরুতে যতটুকু ভাল লাগবে পড়বেন । পরবর্তীতে যদি আবার ইচ্ছে করে বা যখন ইচ্ছে করবে বা সময় পাবেন ধারাবাহিকভাবে তা পড়তে পারবেন বা পড়ার সুযোগ রয়েছে । তবে একথা বলে রাখা ভাল যে,  ছোটগল্পের আদলে রচিত জীবন ও মানুষের এ গল্প-কবিতাগুলোর একাধিক তথা কমপক্ষে ৩/৪ টি পর্ব একটানা না পড়লে যেমন তার স্বাদ খুঁজে পাওয়া কঠিন, ঠিক তেমনি পূরো কবিতাটি না পড়ে তার পরিতৃপ্তি পাওয়াও সম্ভব নহে । যে কোন পাঠ্য বিষয়ের পরিপূর্ণ স্বাদ ও মর্ম আহরণের জন্য তার পাঠকের প্রশান্ত মানষিক স্থিরতা ও উৎকর্ষতাটাও অতিশয় প্রয়োজন ।      
প্রসংগত উল্লেখ্য যে, কাব্যটি বড় কি ছোট তা নহে তার মুখ্য বিচার্য্য বিষয় বরং তার অন্তর্নিহিত ভাব ও বিষয়বস্তুটাই মূল্যবান যার যথার্থ মূল্যায়ন হওয়া আবশ্যক । কাগজে-কলমে অংকিত বৈচিত্রময় জীবনের পাঁচমিশালী গল্প-চিত্র একটু বড়তো হবেই । পঞ্চরসের জীবনের গল্পের স্বাদ পেতে হলে একটু সময়তো দিতেই হবে । আপনি নিশ্চয়ই লক্ষ্য করে থাকবেন যে, কতজনে প্রতিদিনই পূরো খবরের কাগজটাই পড়ে ফেলেন । আবার কতজনে নিবিষ্ট মনে পড়তে থাকেন বড় বড় উপন্যাস, মহাকাব্যগ্রন্থ, বৈজ্ঞানিক সৃজন, কোটি বছরের এ মহাবিশ্ব ও মানব সৃষ্টির ইতিহাস এবং আকাশবাণীর সর্বশ্রেষ্ঠ, সর্বশেষ ও পরিপূর্ণ জীবন-বিধান এর মহাগ্রন্থ মহাপবিত্র কোরআন শরীফ । এ পঠনতো ওরে ভাই, নহে নিছক বিনোদন বরং সহস্র তথ্য লাভ, জ্ঞানার্জন, সত্য আবিস্কার ও এমন কিছু মূল্যবান শিক্ষণ যা করে সকলের তরে অনুক্ষণ অমৃত সুধা বিতরণ ।  
জীবনে দেখা, জানা ও শেখার কোন শেষ নেই যারা এটুকু বুঝেন ও মানেন এবং আরও কিছু দেখতে, জানতে ও শিখতে চান শুধু তারাই পড়েন । যারা এমন আপনি কি তাদের দলে নেই । আপনি কি এমনটা ভাবেন যে, আপনি বিদ্যান, সুবিজ্ঞ ও বিচক্ষণ আর আপনার দেখা, শেখা, চেনাজানা ও অর্পিত কাজগুলি সব হয়ে গেছে সমাপন । তাই যদি হয় তবে নিশ্চয়ই আপনি জ্ঞানী ও সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ হওয়া আলোকিত ভালো মানুষদেরই একজন । তাই যদি হয় তবে এখন জগতবাসীর প্রত্যাশা ও জিঙ্গাসা, কেন বক্ষে ধারণকৃত ঐ আলোটুকু আপনি বিতরণ করছেন না । ঐশী আলো আর তার ঐ সকল ভালোগুলিতো কারো নিজের একার জন্য নয় । তাই নিজের জ্ঞানটুকু লোকের মাঝে বিলিয়ে দিতে হয় । নাহলে সত্য প্রকাশ ও প্রচারের দায়গুলি অবহেলায় অনাদায় ফেলে রাখার দায়ে রয়েছে অপরাধী হবার ভয় ।
ঐ অপারগতা সে কি তবে আপনার দীনতা নাকি ব্যর্থতা একবার তা যাচাই করে দেখা দরকার বলে মনে হয় । যদি এমন প্রশ্ন হয় - আপনি কে, কোথা থেকে এবং কেন এ দুনিয়ায় এসেছেন, কতদিন এখানে থাকবেন, কি কাজ নিয়ে এসেছেন ও কতটুকু তার সমাপন করেছেন এসবের হিসাব দিতে হবে বৈকি । মরে গেলে কোথায় যাবেন ও এ ধন-সম্পদ ও বিত্ত-বেসাতগুলি কি করবেন বা কাকে দিয়ে যাবেন এবং তাতে আপনার কি লাভ ও কিইবা ফায়দা ইত্যাদি আরও কতকি । ভালকরে ভেবে ও জেনেবুঝে ঐ প্রশ্নগুলির সঠিক বা সন্তোষজনক জবাব দিতে পারলেই হয়তো কেবলমাত্র হতে পারে পাশ, দুস্তর পারাবার হওয়া পার ও কারোবা উচ্চতর ধাপে উত্তরণ ।    
চিরন্তন সত্য বচন ও জীবনের এমন কোন লেখাই আবর্জনা নয়, বরং রাস্তায় পড়ে থাকা ধূলি-কাদা মাখানো ছিন্ন কাগজের টুকরায় যা লেখা আছে হতে পারে তা’ও এমন শ্রেষ্ঠ কোন বাণী ও পাঠ যা দিনের আলোয় পাথেয় আর পথ হারানো অন্ধকার রাতের ধ্রুবতারা । শুধু তাই নয়, হয়তোবা হতেও পারে তা পরকালে আপনার মুক্তির সনদ । আমি তাই অনুরোধ করছি পড়ুন, সব লেখা বা মুদ্রিত কাগজই পড়ুন । অবজ্ঞা বা অবহেলা নয় বরং সাদরে তা হাতে লয়ে পড়ুন । আর এই পড়তে বলাটাই হলো মানুষের প্রতি সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহতায়ালার প্রথম বাণী ও নির্দেশ । বিজ্ঞ, বিচক্ষণ ও আলোকিত মানুষ এবং লোক সমাজের চোখে সুজন ও কোরআন এর ভাষায় শ্রেষ্ঠ মানুষ হতে হলে এই পড়ার কোন বিকল্প নেই । এ পঠনই মানুষকে ভাবায় ও প্রশ্নগুলির জবাব খুঁজে এনে দেয় । আর এসবের গহীনে চিন্তনই হলো গবেষণা যা মানুষকে দার্শনিক তথা প্রকৃত মানুষ বানায় । ফলে ঐ রশিটায় ধরেই তারা মাটিতে বসেই ঐ অসীম আকাশের সোনালী সিড়িটা ছুতে পায় ।    
যাদের সময়ের বড়ই অভাব এবং যাদের ধর্য্যের অনেক দীনতা রয়েছে বলেই পড়তে চাননা বা পড়তে পারেননা তারাই হতভাগ্য বঞ্চিতদের অন্যতম এবং তাদের অর্জন কিবা প্রাপ্তিতেও রয়েছে অ - নে - ক শূন্যতা বা ঘাটতি । আমরা কেউ পড়ি কিবা না’ই পড়ি তথা কিছু জ্ঞান লাভ ও পুণ্য সঞ্চয় করি আর নাইবা করি এবং বিত্তশালী কিবা বিত্তহীন যেমনই হইনা কেন একদিন আমাদের এ জীবন সময়টাতো ফুরোবেই । তখন কি আমরা কিছু জ্ঞান অর্জন, কিছু ভালকাজ করা ও পুণ্য হাছেলের জন্য চাইলেই বা শত চাইলেও পুনঃরায় আবার দুনিয়ার জীবনে ফিরে আসতে পারবো । আলো ও ভালোয় ভরা কোনকিছু পঠন, বলন ও লিখন এ সবই শ্রেষ্ঠ কাজ । কোন ভালকে যারা মন্দ ভাবেন বা বলেন হোক তা কোন ক্ষুদ্র মনন, বচন বা কাজ এবং অরুপ কোন পঠন, গবেষণ, লিখন ও সৃজনকে আবর্জনা ভেবে অবজ্ঞা বা অবমূল্যায়ন করেন, আপন অজান্তে তারাই হয়তো হয়ে রয়েছেন এ মহাজগতের আবর্জনা অথবা ঐ ভাগাড়ে বেঁচে থাকা অজ্ঞাত কোন হীন নগন্য জীব ।
একবার আমার বড় কবিতা পাঠ করেই দেখুননা - হয়তো কখনও তা মনেই হবেনা বিরক্তিকর বা সময়ের অপচয় । বরং তারপর কি হলো, লেখকের আর কি বক্তব্য এলো কিবা আরও কি জানার বাকী রয়ে গেলো ঠিক এমনই অনেককিছু জানা এবং আপনার মনের অনেক প্রশ্ন ও তার জবাব খুঁজে পাওয়ার একটা প্রবল অন্বেষায় হয়তো আপনাকে টেনে নিয়ে যেতেও পারে তার প্রান্ত অবধি । এ পঠনে হয়তো হতেও পারে এ রহস্যময় জগত ও জীবন তথা মানুষ সম্পর্কে নতুন কিছু জানা । কিছু পেতে হলে ভাই কিছু দিতেই হয় - এ প্রথাতো চিরন্তন বিনিময় ।
অনেক সময় দিয়ে লেখক যা লিখেছেন তাতে একটু সময় দিয়ে হয়ত আপনি পেতেও পারেন এমন কিছু মূল্যবান পাঠ যা নহে বিজন বিরান তৃণহীন মাঠ বরং যেথা ছড়ানো এমন কিছু সোনালী ফসল-বাণী যা হয়ত রাখবে ধরে কেউ যেন না যায় কর্দমাক্ত ড্রেনে কিবা গভীর কুয়ায় পড়ে । অধিকন্তু রাখবে ধরে, আলো ও ভালোয় তাদেরে আনবে টানি । একবার তা পরখ করতে গিয়ে নাহয় একটু ঠকলেনই তাতে কিইবা এমন আসে যায় । ক্ষুদ্র এক টুকরো রতনের আশায় কতজনেইতো বিশাল ছাইয়ের টাল ঘাটে আর তা উড়িয়ে দেখে । আপনিও নাহয় কৌতুহল বশতঃ কিবা অনুসন্ধিৎসু হয়েই সেই প্রত্যাশায়ই দুচারটা ছাইয়ের টাল একটু ঘেটে বা উড়িয়ে দেখলেন ।  

পর্ব – ০১

এক দরিদ্র বাবার সন্তান,
সুফি, সাধক, সৎ ও আদর্শ বাবামা,
বড় পরিবার, ছেলেমেয়ে ছিল তাদের নয়জন,
টানাপোড়নের সংসার, সারা বছর লেগেই আছে থাকে অনটন ।
শুধু মেধাবী ছিল বলেই কি তা সম্ভব হয়েছে,
নাকি ছিল বাবামা ও ভাইবোন সবার ত্যাগ ও সহনের সহযোগিতা,
ছেলে কিবা মেয়ে বয়সে যে বড় তার দায়ও হয় একটু বেশী সেকি মিথ্যা,
শিক্ষিত হলে উপার্জনের সক্ষমতা বাড়ে আর রোজগেরে হলেযে আসে স্বচ্ছলতা,
হাতে টাকা এলে তথা পকেটে বা ভেনেটিবেগে টাকা থাকলে মনটাও নাকি একটু প্রশস্ত হয় ।
লোকে বলে এমনটাই নাকি হওয়া স্বাভাবিক,
তবে সবকিছু নিয়ম-নীতি কিবা আদর্শে চলেনা বা হয়না একথা’ও সঠিক,
বৃদ্ধ বাবামার স্বপ্ন ও আশাগুলি হয় তীব্র সঁচল,
যে বয়সে বড়, বেশী শিক্ষিত, রোজগেরে ও অধিক স্বচ্ছল,
এমন সন্তানের উপরেইতো তাদের প্রত্যাশা বেশী এবং শক্ত হয় মনের বল ।
ছোট্ট গৃহকোণে যেন বন্দি,
পড়ন্ত বেলায়, করবে কিবা যাবে কোথায়, নিয়তির সনে করে তাই আপোষ ও সন্ধি,
হয় একটু আশার ঠাই একমাত্র অবলম্বন,
বৃদ্ধ অঁচল অক্ষম ও ‍উপার্জনহীন, মাথায় শেষ না হওয়া কত দায়-ঋন, হেন বাবামার সন্তানগণ,
কিবা তার ছোট ভাইবোনের কি কোন নিরব আবদার কিবা অব্যক্ত আশা নেই নাকি তা থাকতে পারেনা ।
একজন কন্যার গল্প বলছি,
লোকে বলে সে মেধাবী, বিদ্যান ও ভাগ্যবতী,
না ভেবে কারো দুঃক্ষ-দুর্গতি, ব্যস্ত হলো লয়ে তার একার গতি ।
ছিল এত কষ্টের যে বিশাল অবদান,
কেন একবারও ইচ্ছে হলোনা দিতে তার সামাণ্য প্রতিদান,
কেমন বিদ্যান তারা, ভুলে যায় যারা, সব কথা ও কাজেরই রয়েছে একটা পরিনতি ।
এ কেমন জীবন ও সংসার,
আমি নহে কারো আর কেউ নহে আমার,
আরও কত বেশী ভালো হতো হলেরে তার সুমতি,
ক্ষতি কি দোষ নেই, যদিওবা এমন হয় শুধু আমি ও আমার পতি,
আমি বলি না, সেযে মূর্খ ও ধূর্ত, নাহলে কেউকি ওরে কভু করে তার নিজের ক্ষতি ।
সে ছিল এমএ পাশ,
না, কাটতে হয়নি কখনো তাকে ঘোড়ার ঘাস,
কেমনে বুঝিবে বোধ-বিবেকের জগত যার এখনও অন্ধকার,
তার এ কৃতিত্ব বা বাহাদুরি ও জীবনের যেটুকু প্রাপ্তি তা কি ছিল শুধুই তার একার ।
ছিল সে চাকুরীজীবি, ইস্কুল ও কলেজের শিক্ষিকা,
অনেক বড় স্বার্থবাজ, আর এ বিষয়ে সে ছিল বড়ই নিপুণ ও পাকা,
বলবো কি দিয়েছে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়,
সে ই ভালো জানে কোনটা জয় আর কোনটাবা বিপর্য্যয়,
চাকচিক্য কিবা সাফল্য ওরে সে নহে বিজয়,
তোমরা যাকে কহো বিজয় তার আড়ালেও রয়েছে লুকায় কত পরাজয়,
অহং, আত্মকেন্দ্রিকতা, লোভ, হিংসা, পরশ্রীকাতরতা ও অবক্ষয় জানিবে পরে কতযে বিনাশময় ।
মানুষের তৃতীয় নয়ন ফুটে,
শুনেছি শিক্ষায় নাকি মনের আঁধার যায়রে টুটে,
সব জানালা দুয়ার যায় খুলে,
কানন যেমন সেজে উঠে সাতরঙে বিকশিত নানান ফলেফুলে,
বাবামার অনেক কষ্টের শেষে গিয়েছে বুঝি কপাল খুলে,
হতাশার তরীটা যেন ভিরেছে এবার আজিকে এসে একটু আশার আলোকিত কূলে ।
ঐশী আলো ও ভালোয়,
উদারতা ও মানবতায় ভরেযে হৃদয়,
তাইতো মানুষ জ্ঞানী, বিচক্ষণ ও আসল মানুষ হয়,
বুঝি এখন আর হয়না তেমন, বদলে গেছেরে দিন-কাল,
লোকে বলে সে নাকি ধরে শক্ত করে, বেহাল বাবামায়ের পরিবারের হাল,
সব দেখছি এখন যেন উল্টো, সেকি তবে তার নিজের নাকি বাবামা ও ভাইবোনের পরাজয় ।

পর্ব – ০২

ঐ অসহায় ভাইবোনদেরে,
গিয়েছিল ভুলে সে গিয়েছিল ছেড়ে,
এক এক করে না টেনে তুলে তাদেরে হাতটা ধরে,
ভাগ্যের ফেরে যারা হয়েছিল দিশাহারা গিয়েছিল যেন গভীর খাদে পড়ে,  
চারদিক হতে ঘিরেছে যাদের, আপদ ও নিদানের লোৗহ ঘের, ভেংগে গিয়েছিল সব ডাল ।
কাছের মানুষগুলি এখন অনেক দূরে,
একাকি তারা উঠেছে গিয়ে চুপটি করে যেন পালিয়ে, পরম সুখের এক প্রাসাদ পুরে,
এত চেনা ঐ মানুষগুলো লাগছে অচিন,
বদলে গেছে, এখন আর নেই কেন সেই আগের দিন,
নেই মানুষের দায়বোধ কিবা বিবেকের ঘরে কারো তরে কোন ঋন,
হয়েছে দুয়ার বন্ধ চোখ থেকেও যারা অন্ধ, তাদেরই দেখি ভরা বসন্ত সারা বছর সবকিছু রঙীন ।
তবে এমনই দেখেছি যেন সেজন ওরে সব ভুলে,
নিজের নায়েই শুধু উড়িয়ে রাঙা পাল শেষে লাফিয়ে একাকি উঠেছে গিয়ে বিশাল নদীটার ঐ কূলে,
বুঝি খুলেছে কপাল যেন সে মুক্তি পায়,
হঠাৎ একদিন, এক পাত্র তাকে দেখতে এসে তার বিয়ে হয়ে যায়,
ছিড়ে এক বাঁধন জড়িয়ে অন্য মায়ায়, চলে গিয়েছিল সে অচেনা চাঁদের দেশে ভুলে সব দায় ।
বর তার শিক্ষিত ছেলে,
সাদা কিবা কালো তা যে যাই বলে,
সরকারী চাকুরে, দুই হাত ভরে নাকি সে টাকা কামায়,
বিয়ের পরে স্বামীর হাত ধরে, একদা সে তার শহরের বাসায় চলে যায় ।
তবুও ভরা একবুক ক্ষিণ আশায়,
আরতো কেউ আসেনা ফিরে একবার ওরে যে চলে যায়,
যাবার কালে বুঝিরে খুশীর তালে, পিছন ফিরে সে আর একবারও নাহি চায়,
বাকীরা সবাই তার যাবার পথের পানে দাড়িয়ে ঠায়, মলিন বদনে সিক্ত নয়নে চুপচাপ রহিল তাকায় ।
কেউতো কারো ভাগ্য বদলাতে পারেনা হায়,
যদিও কেউবা একটু দুঃখের ভাগ নিতে চায়,
রেখে একটি স্নেহের হাত কারো কাঁধে ও পিঠে কিবা মাথায়,
একটু দরদী হয়ে, একটু সাহস লয়ে, কখনো এসে যদি কেউ পাশে দাড়ায়,
দেখেছি কত সেওতো উঠে দাড়ায়, হঠাৎ পিছলে পড়ে যার পা ভেংগে যায়,
ধাক্কা দিলেতো দেখেছি অঁচল গাড়ীটাও আবার চলে, একটু সাহস আশা ও মনোবল যদিরে কেউ পায় ।  
বোঝার উপর যার শাকের আঁটি,
সোজা হয়ে আর ওরে যে, পারেনা সে যেতে হাটি,
সেতো কভু নাহি চায়, কাসার দুধের বাটি কিবা একখানা চিকন শীতল পাটি ।
এইতো তার একটু আশা ও অনেক পাওয়া,
কোনমতে কঠিন এই দিনগুলি পার হয়ে যাওয়াই আকুল চাওয়া,
দুর্গম ঐ পথটা তড়িঘড়ি, বাঁচি কি মরি উঠে আবার শুরু করি, ছুটে পার হয়ে যাওয়া ।
ঐ সে অচিন পথের মাথায়,
শুনেছি নাকি ওরে মাঝেমাঝে তারে খুঁজে পাওয়া যায়,
দিনভর সারা বছর বিজন ঐ তিন পথের বাঁকে,
ক্লান্ত সুজন পথিক যদি পায়, এমন কোন সওয়ারির আশায়ই বুঝি সে ঠায় দাড়িয়ে থাকে ।
চুপিসারে নাকি ছেড়ে চলে যায় ঠিক সন্ধায়,
কেউ টের নাহি পায়, সারা গাঁয় এ তল্লাটে কিবা সারাটা পাড়া মহল্লায়,
অনেকের কাছে তা আজও অজানায়,
যাদের মাথা আছে, ঐ ভেদ শুধু তাদেরেই নাকি গহীনে ভাবায়,
সোনার ঐ উড়াল রথপংখীটা নাকি যায়,
পলকে যা উধাও হয়ে প্রিয় তার যাত্রী লয়ে অসীম আকাশের ঐ পথটা মিশে মেঘে না হাওয়ায় ।  

পর্ব – ০৩

হয়েছে তারা কেমন বিদ্যান,
বাবামার ঋনের কথা যারা বেমালুম ভুলে যান,
তবুও তারা আশায় থাকেন, মোখ খুলে যদিও কিছু চান কিবা না’ই চান ।
এটা বাবামার হক তারা পায়,
কেন বলে দিতে হবে, তারা কি শিখিল তবে, সন্তানের দায়,
এ জীবনটা একখান চিটচিটে অঁচল ঘানি,
কেউ তৈল পায়, কেউ শুধু খৈলটাই দিনভর তবু তা যায় টানি,
কেউ ঘুরেঘুরে শুধু গোবরটা কুড়ায়, অযথাই কিরে তবে তার সেই কাজ ভরা যা হয়রানি ।
মানুষ করিতে ওরে তার বাছাদেরে ভাবনা টানটান,
দিনভর রোদে পুড়ে বারবার ঘাম ঝেড়ে, প্রাণপণ ঠেলেছে যারা ঐ ঠেলাখান,
ভর্তা ভাজি শাক ও ডাল-ভাত খেয়ে জীবন কাটান,  
আজীবন এত ত্যাগ ও বিসর্জন, বিনিময়ে তারা তার ওরে কি পান,
এতযে সহন ও বহন কেন তবু দেয়না, পায়না তারা বলো সামাণ্য তার একটু প্রতিদান,
যারা নিয়তির ফেরে, আটকা পড়ে নিদানের ঘেরে, রয়েছিল হয়ে বড়ই নাজেহাল ও পেরেশান ।
আছে ঐ মহাজনের দাদনের মস্তবড় ঋন,
বাবামা, ভাইবোন ও লোকের পাওনা’ওতো শোধিতেই হবে একদিন,
যে করেছে সৃজন দিয়েছে ধনজন ও এ জীবন, তারও বদন ও মন হয় একদা ক্ষিপ্ত, বিষন্ন ও মলিন,
বিধাতায়ও তার পাওনাটুকু ঠিকঠাক পেতে চায়, রলেও সে অদেখায় হয়ে মূর্খের কাছে চির অচিন ।
কি লাভ হলো, বলো ঐ বিদ্যায় ও শিক্ষায়,
মানুষ নামের মানুষগুলিরে, মানুষ বানাতে ওরে তা যদিরে হেরেই যায়,
অনুভবে চেতনায়,
দেখি নাই তার যেন কোন দায়,
কেন দিতে নাহি শুধুই পেতে, খেতে ও নিতেই চায়,
কেন এত শূন্যতা, ঘাটতি ও দীনতা চেপেছে ঘারে তাদের ঐ ভোতা বিবেকের বোধ ও বিবেচনায় ।
স্বামী ও স্ত্রী তারা দু্ইজন,
লোকে বলে বিধাতায় নাকি, লোকেরে ঢেলে দিয়ে ধন,
যাচাই করেন মানুষের মন, তা আবার কেড়ে নিতেইবা দাতার বলো লাগে কতক্ষণ ।
ছিল স্বামী তার ঠিক তারই মতন,
একই রকম একজন, অতি ছোট মন ও বড়ই কৃপণ,
এই আছে এই নাই, দুদিনের ওরে ভাই মানুষের ছোট্ট এ চকচকে জীবন,
বিধাতা তার বান্দারে সহস্র পরীক্ষা করে, কেড়ে নেয় অদৃশ্য হাতে যখনই আবার চাহে তার মন,
কেন এত ভুল কিসের বড়াই, কে ঠেকাবে ভাই শেষে হঠাৎ মরণ এসে যখন করিবে হরণ লোকের সপ্তধন ।
মহাজনে হিসাব লবেন তার,
কোন ভাল কাজ, কেমনে কে ধন করেছে ব্যয় আর,
কেমনে ভোগ ও ব্যবহার, দান কিবা তার কতটুকু ভাগ দিয়েছে কে বিধাতার ।
কে তা কিভাবেইবা করেছে উপার্জন,
শুনেছি মেয়েরা নাকি হয়, বাবার অতিশয় আদরের ধন,
চোখের মণি, আহলাদে আবদারে পেটে না ধরেও হয়ে যায় তারা মায়ের মতন ।
এক বুড়োর কন্যা,
এখন এক সাহেবের স্ত্রী,
হয়েছে সে সাত সন্তানের গর্বিত জননী,
কেজানে যোগ্যতায় নাকি কপাল গুনে হয়েছে বিবিসাব এত ধনী,
নাহলে এত ধন, শিক্ষিত সন্তানগণ, বুঝি সে কি ছিল তবে এক মস্তবড় সোনার খনি,
স্বামী ও সন্তানগণ তার,
অঢেল ঐ ধন ও রঙের বাহার,
মূর্খ ও কানাগণ ছাড়া তা জানাযে সবার,
দুনিয়ায় যতবেশী বিলাস ও ভোগ-বিনোদন যার,
আখেরাতের হিসাবখানা হবে তার, ততবেশী কঠিন ও ভার,
যার বেশী অনটন ও কষ্ট-যাতনা অপার,
মানুষের এ জীবন মানে কজনে জানে করুণার দান বিধাতার,
দেওয়া এক পরম নেয়ামত ও ‍উপহার, কিছু কাজ, কিছু দায় আর শত-সহস্র পরীক্ষার সমাহার ।  

পর্ব – ০৪

কাজের লোকজনের কাছে একজন কৃপণ বিবিসাব,
স্বজনের নয়, নহে বিধাতার দেনার ভয়, বুঝতো সে শুধু তার নিজ লাভের হিসাব,
সুন্দর সাহেবের কালো বউ, হয়তো বুঝিবা তাই শান্তির চেয়ে অশান্তিতে ঐ ঘর হয়ে ছিল সয়লাব ।
দুজনেই পেনপেন ঘেনঘেন সারাদিন,
মেজাজ খারাপ, বচন রুক্ষ ও বদন রহিত তাদের হামেসা মলিন,
সেতো ঘরের কথা, কেজানে বাহিরে লোকের ও খোদার কাছে রয়েছে তাদের কত ঋন ।
দরিদ্র এক ভাইয়ের বউ, দেখতে ছিল সে সুন্দর,
আর বুঝি তাই, বিবিসাবের সবটুকু রাগ তার উপরই গিয়ে পড়তো হয়ে ঝড়,  
সাহেব দেখাতো তারে অতিশয় ভক্তি, শ্রদ্ধা ও বিনয়, কেজানে তার উপর পড়েছিল কিনা
তার সুনজর ।
তাই বুঝি নানান সময় নানা উছিলায়,
খবর পাঠাতো সাহেব, বলতো তারে বেড়াতে যেতে বাসায়,
বাসায় কোন অনুষ্ঠান হলে বা কভু বেশী মেহমান এলে এত ঝামেলা ওরে কেবা সামলায় ।
বিবিসাব তার মনের ঝাল মেটাতো,  
ভিতরে ভিতরে যখন সে তেলেবেগুনে জ্বলেপুড়ে খাক হয়ে যেতো,
তারে দিয়ে ঘরের সব কাজ করিয়ে তবেই যেন জল পড়িত তার অঢেল ঐ ক্রোধ ও হিংসায় ।  
কৌশলের নকল অভিনয় সুন্দর,
প্রতিশোধ নিতো সে যেন সারাটা দিনভর,
দুজনেই নিজের কাজে হায় ঘনঘন কাছে ডাকিত তারে,
এই খেলাটা ছিলযে এমনই মজার যেন দেখি কে বেশী তারে খাটাতে পারে,
ছিলযে তা কত কষ্টকর যেন এক বিড়ম্বনার ঝড়, দিয়ে তারে মানষিক নির্যাতনের অত্যাচারে ।
দেখিব কে জিতে কে হারে,
এমনই যেন হুকুমের উপর সদা রাখিত তারে,
পাটা-পুতার ঘষাঘষিতে হেথা মারিচের যেন হতো মরণ আহারে,
এ মজার খেলার কেজানে কেমন প্রতিফল তার শেষে পড়বে এসে তাদের কার ঘারে,
কোন অধিকারে নিরীহ ঐ মানুষটারে, এক বাঁদীর মতন যখন তখন কেন নিয়েছে খাটায় বিনা পয়সায়  ।
এক ঢিলে দুই পাখী মারা,
ক্রোধে ও হিংসায় যেন সে ওরে ছিল দিশাহারা,
ভিতরে ভিতরে ক্ষতবিক্ষত ঐ ঝড়ে তবু যেন কিছু বলিতে না পারা,
তারা কি ভাবেনি কভু বুঝেনি তার উচিৎ সাজা ও প্রতিদান ‍নিশ্চয়ই একদিন পাবে তারা,  
আর কি কোন পথ ছিলনা তার, তাকে শাস্তি দেবার এমনই ক্ষিপ্ত উগ্র জটিল, কুটিল ও কঠিন হওয়া ছাড়া ।
সাহেবেরে বকা দিত, বলে ইতর,
ভেংগে দেবো আমি তর ঐ কুবাসনার প্রাসাদ ঘর,
বুঝেছি বুঝেছি ওরে মতলব তর,
জানিরে আমি জানি সব, ঐ সুন্দরীর উপর পড়েছে কুনজর,
এটাই ছিল তার ধারণার, সাহেবের গোপন মোহ বাসনার গালে কষে মারা এক তীক্ষ্ণ চড় ।
চরম প্রবল থাকে ও হয় নারীর চার দিক,
পুরুষের চেয়ে বেশী, হলেও দূর্বল তার মেধা ও পেশী, একথা সত্য সঠিক,
হিংসা, ক্রোধটা এক অদৃশ্য লেজ, যৌন বাসনার তেজ, ঘারের রগটা বাঁকা ও উগ্রতার ঐ সন্দেহ বাতিক ।
ঘরের সব কাজ করানোতো হয়ে গেলো,
তাতেই বিবিসাব খুশী, মনে তার বেশী সুখ ও পরম প্রশান্তি পেলো,
বয়সে ছোট হলে কি নেই তার কোন অন্তর,
অশিক্ষিত কিবা গরীব বলে কি ঐ স্বজনেরা সবাই হয় তাদের পর,
নেই বা ছিলনা কি তার কোন অভিযোগ ও হাহাকার,
ঐ জুলুম আর অবিচারের শাস্তি কিবা বিচার চাহিবার অধিকার বিনে পয়সার ঐ বাঁদীর উপর ।

পর্ব - ০৫

আমি তা ওরে নাহি জানি,
মাবাবার দোয়া সে পেয়েছে কতখানি,
কখনও ছুতে পারেনি তারা ঐ দুজনের চরণ,
যতটুকু দেখেছি ও জানি পায়নি সে তার শাশুড়ি ও স্বামীর মন,
দরিদ্র স্বজন কিবা দাসী-বাঁদীর কিরে নাই মন, কষ্ট আহাজারি অভিযোগ ও অস্ফুট ক্রন্দন ।
যাই হোক যেমন,
কেটেছেতো ভালোই তার জীবন,
ঐ স্বামী বেচারার কবেই হয়েছে মরণ,
শুনেছি নাকি সাহেবের সব জায়গা বাড়ী ও বিত্তধন,
দেশে থাকা তার তিন মেয়ে তাদের মাকে দিয়েছে সমর্থন,
কোন্ কৌশলে বলে, কিবা কার বুদ্ধিতে ওরে করেছে সে তার সব হরণ,
লেখিয়ে নিয়েছে, নাকি নিজেই লিখে দিয়ে গেছে, বিবিসাবই হয়েছে তার মালিক এখন ।
ডাকো উকিল ও বেরিষ্টার,
আমরা আছি মা তোমার সংগে, বলব করব ও দেবো যখন যা লাগে তোমার হয় দরকার ।
আরও ধন চাই তার,
এমনই ইচ্ছে ছিল তাদের বাবার,
তাই শুনেছি নাকি এক এক করে সব পুত্ররা তার,
তাই অবশেষে, সবাই কায়ক্লেশে, যে যার মত বিদেশে করেছে গমন হয়েছে পার ।
অঁচল ও অসুস্থ্য এক বৃদ্ধ বাবা,
এক সময়ের চটপটে চতুর এখন যেন বড়ই অসহায় এক হাবা,
অস্ফুট স্বরে কাঁদে এক বাবায়,
আমার এত আদরের সন্তানেরা কে কোথায়,
তোরা সবে ওরে, জলদি করে একবার আমার কাছে আয়,
এই বয়সে মম কাতর দেহে, কেন রাহুর নির্যাতনের এমন কঠিন করাল থাবা,
কাবু করেছে এক শহুরে সাহেব বাবুকে, নিশ্চয় আর কিছু নয় শুধু তার অযতন অবহেলা আর বয়সের ভার ।
কেউ নেই ছিলনা তা দেখার,
তাইতো বুঝি বন্ধ করে সে দিয়েছিল একবার,
বিবিসাব তার, ৩/৪ দিনের তরে ঔষধ, সেবা ও সঠিক খাবার,
যাবি কোথায় দেখাবো মজা দেখাবো ধার, ফেলেছি তোরে এক ফাঁটা বাঁশের কেচিতে এবার ।
সব লিখে দিবি নাহলে নাই ছাড়,
ছিল পাঁচটি বাড়ী, তিনটি দোকান ও দু্ইখানা প্লট তার,
তোর এত বিত্তধন ও সব জায়গা জমি আর,
শুধু একখানা বাড়ীইতো ওরে ছিলযে শুধু নামেতে আমার,
তাই নিতে ফিরিয়ে, সময়ে কি অসময়ে, মনে নেই তুই করেছিলি মোরে কত জ্বালাতন ও দূর্ব্যবহার ।
অ বিবিসাব, বলো এই এত ধন,
দুদিনের ছোট্ট এ জীবনে তার ছিল তোমার কি প্রয়োজন,
সেতো মালিকানা নয় কানার কাছে তাই মনেহয়, সে এক মিথ্যে মোহ প্রলোভন,
যদিরে আখেরাতে না পাও তা হাতে, ঢাল হয়ে না রহে সাথে, কাজে না লাগে ছাড়া শুধু দুনিয়ার ভোগ-বিনোদন ।
দেখিও ওরে থাকিও সাবধান হে ধনীগণ,
লোহাড় শিকলে বুকেতে বেঁধে রাখিও ধরে তোমার সে ধন সারাক্ষণ,
কেজানে কে কখন এসে, হঠাৎ করে তা শেষে হরণ বা লুন্ঠন, আজীবন করে রণ যত ধন করেছ আহরণ ।
তাই বুঝি বিবিসাব তার,
খেললো নির্মম চতুর খেলা শেষ বেলাটার,
সঞ্চিত সব ক্রোধ, ক্ষোভ ও তার ঐ ধন-সম্পদের লোভটার,  
করবে বলে ভোগ, স্বামীর প্রতিশোধ নেবার এমন সুযোগ, হাতছাড়া তাই সে করেনিতো আর ।
বাহ্ ! ঘটনাটা কি চমৎকার,
জানিনা তা শুনে লাগলো কেমন আপনাদের কাছে কার,
তারপর, ঐ বেচারার আর নাহি ঘর, ঠিক দু’তিন দিন পরেই আইসিইউতে মরণ হয়েছিল তার ।

পর্ব - ০৬

মন ও মানষিকতা এমনই ছিল তার,
কিসের স্বজন, কমে যাবে ধন, শুধু আমি আর আমার পরিবার,
দেখিনি ও শুনিনি ওরে, ছিল কষ্টের যে ঘরে, আপদ ও নিদানের নিরব আর্তনাদ ও হাহাকার ।
তাহা পড়েনি তার নজরে,
কভু করেনি দান মন ভরে হেথা মুঠ করে,
কেন হেথা পদধুলি নাহি পড়ে,
যেথা অনটন কিবা আপদে সদা ছিল ভরে,
সে ধন করেনি কোন পরোপকার, কেন ছিলনা হতে পারেনি তাদের ঐ হাত দুখানা সামাণ্য সহযোগিতার ।
ঐ মালিক সাহেব কই এখন,
হরিলুট চলছে লয়ে যার এত মমতার সব বিত্তধন,
আজ বুঝি হায় সব বৃথা হয়ে যায়, অপচয় হলো ওরে সবটাই অকারণ,
সারা জীবনে রাতে ও দিনে, আহা সে যাহা দুইহাতে কত কষ্টে করেছিল প্রাণপণ সে উপার্জন,
নেই কোন দায়বোধ যার, কিবা যে করেনা তা স্বীকার, সেজন কেমনে বলো তা করবে পালন ।
সেতো ওরে তিন পুরুষে নয়,
এক পুরুষেই হবে সাবার ও নিঃশেষ এখনতো তাই মনেহয়,
বিবিসাব করিছে বিক্রয় ও দুই ছেলেরে বাদ দিয়ে বাকীটা ছয় ভাগে সম হারে বন্টন,
চতুর এক জামাতা সুযোগ পেয়ে দালালির নামে, বেশী দামে বেঁচে কমদাম দেখিয়ে করছে ঢের উপার্জন ।
জুলুমকারীর নিশ্চিত নেই ছাড়,
কুটকৌশলে হরণ, দূর্ব্যবহার, করেছে যত অন্যায় ও অবিচার,
ভুলে গেছে নাকি হবেযে মরণ আর, তখনই হিসাব লবেন মহাজন তার ও করিবেন সবার বিচার ।
হোকনা তা সামাণ্য এক চুল,
যে করিবে দুনিয়ায় ক্ষুদ্র অন্যায়, অপরাধ ও তুচ্ছ ভুল,
অন্য কেহ নয়, দিতেই হবে শুধু তাকেই দিতে হয়, নিশ্চয় তার খেসারত আর উচিৎ মাসুল ।
দিবেন হক্কের হাকিম,
ক্ষুদ্র ধূলিকণা সম পুণ্যের পুরস্কার ডিম,
কিবা হতেও পারে তা অফুরান, অগণন, সুবিশাল ও অনন্ত অসীম ।
দিবেন শাস্তি অপরাধ ও গুনার,
বেশী নয়, শুধু যেটুকু নায্য পাওনা হয় সেটুকুই তার,
না ঝড়িয়ে খোদার লাগি একফোটা ঘাম,
শুধু ধন আর ধন, কেটেছে জীবন ভোগ-বিনোদন, সুখ ও আরাম,
যারা ওরে অবোধ অবিবেচক,যত স্বার্থবাজ ও চরম নিমকহারাম,
কেমনে বুঝিবে, ভাল মানুষ আর ক্ষুদ্র ভাল কথা ও ভাল কাজ কিবা তার পুণ্যটার কিবা দাম ।
যার নাই দীনজনে কোন দান,
পরের তরে একটুখানি সহযোগিতার অবদান,
খোলেনি তৃতীয় নয়ন, ভোতা হয়েছে তার বিবেকখান,
কষ্ট পাওয়া কষ্টে থাকা কত স্বজন, অব্যক্ত ভাষায় সামাণ্য কিছুইতো চান,
কেমনে করে শ্রেষ্ঠ হবার বড়াই আর, নিজেরে ভাবে সে ওরে হয়েছে বুঝি সাচ্চা মুসলমান ।
হোকনা বেশী বিত্তধন,
অতিশয় ছোট যার রুচি আত্মা চোখ ও মন,
নহে তা আকাশের মত অসীম উদার ও অতল গহীন সাগরের মতন,
বলি তাই ওরে ভাই, হতে হলে মুসলমান সবার আগেযে সবারে মানুষ হওয়া প্রয়োজন ।
পান করেনা সাগর তার বুকভরা জল,
বৃক্ষ কভু খায়নারে তার শত ফুলফল,
যতই হোক তা রাঙা ও মিষ্টি রসেভরা একেবারে টলমল,
কেমনে বুঝিবে তা কৃপণ ও বখিল যাদের পাথরের দিল, আর ঐ বিফল স্বার্থপরের দল ।

পর্ব - ০৭

সাগর-নদী ও গাছেরা বলে, দিয়ে অপবাদ ও ধিক্কার,
মানুষ হলোনা কেন মানুষেরা, দিলোনা মূল্য ও পেলোনা আলোটা শিক্ষার,
সৃষ্টির সেরা অ বিদ্যান মানুষেরা,মিথ্যা-মন্দ ও মোহেতে ঘেরা মর্মটা তার,
উজার করে দিতে পারা, কত ধন্য হয়েছে তারা, সৃষ্টির তরে হতে পেরে সামাণ্য দয়ালু ও উদার,
দান করা আর লোকের সেবা ও উপকার, কিবা পরকে খাওয়াবার কিযে সুখ ও আনন্দ পরিমল ।
যারা শিখতে চায়,
বই খাতাকলম ও সময় তারা সবই পায়,
ছোট্ট ঘরের বাইরে এসে চোখ খুলে যদিরে একবার সুদূরে তাকায়,
খোলা আকাশ, হয়ে প্রিয় দাস, নাম লেখায় বিধাতার খাতায় বিশ্বজোড়া তার ঐ খোলা পাঠশালায় ।
তারা ওরে সবকিছু পায়,
যারা খাটি গোলাম বিশ্বাসে ও নির্ভরতায়,  
অনায়াসে তারা পাশ করে যায়,
ভয় দেখানো যত, অজানা সহস্র শত তার কঠিন পরীক্ষায়,
নিয়মিত অবিরত হাজিরা দিতে হয়,
কোন কষ্ট নেই,নহে টাকার অপচয়,
পাশ-ফেল জয়-পরাজয় কোনটাই কঠিন নয়, শুধু আশা ও চেষ্টায়ই তার সব ঘাট পার হওয়া যায় ।
যারা ভাবে আমি পন্ডিত,
স্বরণে পড়েনা মরণ, গাহেনা স্রষ্টার গুণগীত,
অসাড় আত্মা বিভোর বলয়ে লাপাত্তা কখন তা পাবে ফিরে সম্বিত,
যা আছে চারিদিকে, সোনালী কিবা ফিকে, সব ফেলেছি শিখে,  মনেহয় তারা আসলেযে তার ঠিক বিপরীত ।
দুনিয়ার যত অগণিত বিশ্ববিদ্যালয়,
সহস্র বার পেয়েছিতো তার ঐ একই ঘৃন্য জঘন্য পরিচয়,
সুদৃশ্য সারি সারি উঁচু ইমারত আর মোটা মোটা বই,
ঘুরছে তারা মাথায় লই, দেখাও মোরে কই আজও তারা মানুষ হলো কই,  
যতই বিখ্যাত শুনি ও তারা কয়,
সন্তানেরে মানুষ বানাতে হেথা পাঠাতে লাগে ভয়,
মানুষ না হয়ে দেখি অধিকাংশই গাধা-গরু, চোর-ডাকাত আর খুনীও হেথা তৈরী হয় ।
চকচকে বদন,
পেতে ক্ষমতা চায় আরও বেশী ধন,
পাঞ্জা লড়ে ও প্রাণপণ সারাক্ষণ শুধু করে তারা রণ,
সৌখীন পোষাক, দামী গাড়ী ও রঙীন সুরম্য কত তার প্রাসাদ বাড়ী,
তবু অর্থবিত্ত লয়ে সারাবেলা, করে তারা হারজিতের দন্দ লড়াই খেলা ও নোংড়া সব কাড়াকাড়ি ।
ঐ বিবিসাব তার একজন,
জলন্ত সে এক জীবন্ত উদাহরণ,
যাই হোক ওরে, কই দামখানা তার,
যেই হাত থেকে পেয়েছে বা নিয়েছে দান সে অনেকবার,
কুটুম হয়ে পাওনাদারের দাবীর লাঠিটা হাতে লয়ে খেয়েছে কত খাবার,  
ক্ষুদ্র হলেও সেযে ছিল বিশাল ওরে, যদি হয়ে থাকে তা মন থেকে দেওয়া কোন উপহার ।
ছিল এত টাকাকড়ি ও ধন যার,
কেন রন্ধ্রে রন্ধ্রে তার, শিরা-উপশিরায় ছাপ দীনতার,
সেতো নবীর তরিকা করা সেবা, দান ও দেওয়া ধার,
তবু করিতে পারেনি কেন, আজও কারো কোন সামাণ্য সেবা ও উপকার,
ভাগ্যে জোটেনি, আর কি তা হবে কভু যা পারেনি, দিতে কারো সামাণ্য বিনিময় কিবা প্রতিদান তার ।
খেতে ইচ্ছে করে লোকের ঘরে হরেক মজার খাবার,
যে ঘরে খেয়েছে সবে মনে নেই তা কবে মনেহয় তবে নিশ্চয় হবে অনেকবার,
ঐ স্মৃতি ছোটলোকি ও ঘৃন্য কৃপণতার,
আফসোস করে আর খাওয়ায়, ফুরিয়ে গেলো কি করা আর,
কুটুমের পাতে তুলে দিয়ে একটু ঝোল দুফালি আলু ও একটুকরা হাড় চামচ ঘুরিয়ে তিনবার,
যে খাওয়ায় জানি সে মহাভাগ্যবান, যদিও ওরে খায় হোক যত মেহমান, নিজ কিসমতেই তার নিজের খাবার ।

পর্ব - ০৮

ঐ বিবিসাব, চোখ থেকেও ছিলযে কানা,
একবারও চোখে পড়েনি নাকি মনে ধরেনি তা হয়নি জানা,
যার নাই চক্ষুলাজ তার কেন এত সাজ কিবা বিবেকের কোন বোধ তাড়না,
কেমনে বুঝি বলো মেনে লই, এত বিদ্যানের ছিলনা ওসবের কোন ধারণা,
ইচ্ছাটাই ছিলনা যার, কেমনে খাওয়াবে সে আবার দেবে ফিরতি খানা, ধন হলেইতো সবে সবকিছু পারেনা ।
দূরে থাক খাবার কিবা উপহার,
বিবিসাবের ছোট মনখান করেছে তা প্রমাণ সে বারবার,
সে কি দশটাকা পায়,
জানিনা কেনইবা তবে কোন হিংসায়,
কেন এমন যেন অকারণ, তেলেবেগুনে সে জ্বলে যায়,
তবে কি তাই, দিতে নহে রাজি হেন পাজি যেন শুধু খেতে ও পেতেই চায়,
তবে কি এই ক্রোধে ওরে কেমনে সে উঠে দাড়ালো হায়, হাত না পেতে কিবা না গিয়ে ঐ দরজায় ।
নহে তা একদিন কিবা শুধু একবার,
কাকের মত ভাবে চোখ বুজিলে কেউ তা বুঝি দেখলোনা আর,
কখনো শুক্ষ্ণ কখনোবা পরোক্ষ, বুঝি ভাবে হেন বুদ্ধিমতী জগতে আর কেহ নেই সম তার,
ঐ ঘরের ঘরনী-সাহেব ও তাদের সন্তানের সনে করেছে সে এমন কত অকারণ শত দূর্ব্যবহার,
লোকে বলে বড় হলে নাকি হয় তার,
বড় মন, বেশী বহে, বেশী সহে ও বেশী তার দায়ভার,
তাকি বলে দিতে হয়, কথা মিথ্যে নয়, কেউ ছোট হলে থাকে তার বেশী পাবার অধিকার ।
ভাবে এই বুঝি তার হয়েছে জিত, হলেও হার,
হয়তো পেয়েছে, কিবা নিশ্চিতই সহসাই পাবে সে পুরস্কার,
মন্দ ও ভাল ছোট কি বড় যেমনই হোক, জীবনের সকল কর্ম্মগুলি তার,  
বোকারা’ই বুঝি হয় অতি চতুর, ঠিক এমন যারা তাদেরে বলো বুঝাবার সাধ্য কার,
অ বিবিসাব, ধনে বিদ্যায় ও বয়সে বড় বলেইতো তা হয়েছে আপনার লাগি অতিশয় ঘৃনা ও লজ্জার ।
অপবাদ নয়, কিবা কোন অভিযোগও নয়,
যখন মনেহয় যেন সে এক অবাক বিস্ময়,
হয়নি ক্ষতি যারা সয়েছে, শুধু অনুভবেই একটু কষ্ট হয়,
কেমন মানুষ, আজব চমৎকার ঐ ব্যবহার, নাই কেনরে লোকলজ্জার ভয়,
মিথ্যে নয় সত্য বচন, স্মৃতির ঝুলি আপনাতে যায় খুলি ও কষ্টগুলি আপনি অকপটে কথা কয় ।
ছিল জুড়ে বিবিসাবের জীবন,
কেমন লাগলো, শুনে তার এ কর্ম্ম ও আচরণ,
নহে রটনা, শত তিক্ত ঘটনা দিতে চাহি তার অল্পকিছু বিবরণ ।
মূর্খ বিদ্যান ঐ মানুষগণ আর,
তাদের অঢেল বিত্তধনের প্রতি রহিল ঘৃনা, তিরস্কার ও ধিক্কার ।
গল্প বলছি তার অল্প কয়খান এবার,
এই বুঝিরে আহা বড়র গুণ আর বিদ্যা ও তার গুণের সমাহার,
শুনুন সবে,
চুপকরে বসে নিরবে,
কেউবা কিছুক্ষণ মজায় ডুবে রবে,
কেউ অবাক হবেন, কারোবা কিছুটা কষ্টও হবে,
হয়তো কেউবা তারে খুঁজে বেড়াবেন গল্প শোনার পর, ঐ বিবিসবাবের দীনতা, নীচতা ও হীনমন্যতার ।
কেউবা বাড়ীঘর ও ঠিকানাটা তার,
তারাই জুড়ে আছে একটা বৃহত অংশ পীড়িত এ সমাজটার,
তাসের ঘর বিদ্যা ও ধন কিবা ক্ষমতার আসন ভরেছে তাদের জীবন দিয়ে নানা সুখ-সম্ভার,
তারাই সবার বড় ও সবার সেরা,
মরু বালুকায় ধূলিঝড় এসে নিবে উড়ায়, সোনালী মেঘের ডেরা,
চলছে মজার জীবন,
কতনা তাদের ভোগ-বিনোদন,
নাই বুঝিরে তাদের মরণ, রঙীন চাদরে ঢাকা লোহাড় খাঁচায় ঘেরা তাই বুঝি তারা ধারেনা তার কোন ধার ।

পর্ব - ০৯

(এক)
একবার এক মজার সফরে,
গ্রামের বাড়ী থেকে সবে মিলে তারা যাবে শহরে,
ভার্সিটি পড়ুয়া চটপটে ভাইয়ের মেয়েটি তার সবার আগে বাসে উঠে দুজনের একটা সিট নিলো দখল করে ।
সফর সংগী ছিল তারা চারজন,
ভাবলো যাক, একটা ব্যবস্থাতো হলো মা ও ফুফু দুজনে বসার মতন,
সিট দখল করা ঐ মেয়েটি ও তার মা আর,
ঐ বিবিসাব তার ফুফু ও ক্লাশ টেনে পড়া তার মেয়েটি ছোট বোন তার ।
মা ও মেয়ে দুজনার কাছেই যে ছিল শ্রদ্ধার,  
আপন সম্মানটুকু অবলীলায় নিজেই সে, করিল আজ নিমেষে ছারখার ।
চরম স্বার্থবাজ আর,
কাছ থেকে এক শিক্ষিত অভদ্র মূর্খ মার,
আহা কি শিখিল আজিকে, সংগে থাকা ঐ কিশোরী মেয়েটিইবা তার,
স্বামীর বড়বোন কিবা বাবার বড়বোন, কি দেখালো আজিকে সে আজব চমৎকার ।
নিমেষে ঐ বিবিসাব, এক অবাক কান্ড ঘটালো তখন,
ব্যাপারটা দারুণ মজার ও চিরদিন মনে রাখার মতন,
ভালোরে দাদা ভালো,
লম্ফ দিয়ে সে এক নিমেষে ডিঙিয়ে এলো,
সবার আগে চট করে ঐ সিটে গিয়ে সে নিজে বসে গেলো,
তারপর সংগেসংগে টান দিয়ে এনে তার মেয়েটাকে নিয়ে এসে তার পাশে বসালো,
মেয়েকে নয় বরং তার মামীকে বসানো তার উচিৎ ছিল
বয়সে বড় শিক্ষায় বড় ও ধনে বড় হয়েও হায় সবারে আজ সে কি শিখালো,
এই বুঝিরে শিক্ষার গুন, না ছড়িয়ে আলো তার স্বজন ও ছোটদের মন, ঘৃনার কালিমায় সে ভরালো ।
যেমন বিবিসাব ঠিক তেমনই তার ঐ মেয়ে,
ছোট ভাতৃবধূ ভাবে, ননস ও তার মেয়ে দিলো এক ইতিহাস বানিয়ে,
মর্মাহত মা-মেয়ে বাক হারিয়ে,
চুপচাপ তাদের দুজনের ভাড়াটা মিটিয়ে দিয়ে,
মাথার উপরের ঐ রডটা ধরে, মুঠ করে হাত বাড়িয়ে,
কষ্ট, বিস্ময় আর বিষন্নতার এক বিশাল পাহাড় ওরে মাথায় নিয়ে,
ভালবাসার মন থেকে, ঐ স্মৃতি অন্তরে ঢেকে রেখে, দিলো চিরতরে তাড়িয়ে ।
সামাণ্য চক্ষুলাজ আর,
ভদ্রতা, শ্রদ্ধা, ভক্তি, বিনয়, সৌজন্য ও শিষ্টাচার,
আদব তমিজ আখলাক ও সুন্দর ব্যবহার কি মেনেছে হার, কাছে ঔদ্ধত্য ও বেহায়াপনার ।
দেশ হতে আজ কে দিলো তাড়িয়ে, কোথা গেলো হায় সবকিছু পালিয়ে,
একটুখানি সুখ ও আরাম কি এতই দামী,
এক কিশোরীর সামনে মাতৃতুল্য শ্রদ্ধার তার বয়স্ক মামী,
এদেরকেই বুঝি লোকে বলে বেয়াদব ও হারামী, ঐ আপুটি যে এই সিট দখল করে দিলো সে রলো দাড়িয়ে ।
ওরে যত শিক্ষিত অবোধ কানা,
শিখতে কিবা ভদ্র হতেতো শুনেছি কোন টাকাই লাগেনা,
শুনেশুনে ও দেখেদেখে এ জগতে কতজনে শেখে, শানিত হয় ভোতা বিবেকখানা,
হোক সে নাহয় ছোট, ক্ষতি কি হলে আরেকটু চেনাজানা,
দোষ কি তাতে কোন দাগ লাগবেনা জাতে, তবে কিসের লাজ কেবা করেছে মানা,
নিজেরে যে বড় বলে সেতো বড় নয়,
শুধু কথায়, কাজে ও আচরণেইতো হয়যে লোকের পরিচয়,
আকাশ নূয়ে ছুয়েছে মাটি তাই বলেতো সে ওরে ছোট নয়,
লোকে যারে বড় বলে,সে ইতো ওরে শুধু আসলে বড় হয়,
মাটির মানুষ মাটিতেই যার বসবাস,
আগুনের জ্বিন ও ফেরেস্তারে ডিঙিয়ে ও কাটিয়ে পাশ,
দেখোনা সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ হবার মর্জাদা লয়ে, হয়েছে মহারাজার প্রিয়তম দাস,
আহারে মূর্খ অর্বাচীন, জানিনা কবে শোধ হবে তাদের ঋন, এসব গুরুর বচন কবে তাদের হবে জানা ।  
এখন প্রশ্ন করে শান্তিপ্রিয় ঐ নিরীহ জনগণ,
যারা হয়েছে অবাক ও কষ্ট পেয়েছে এমন বিবেকবান ও সচেতন,
অজ্ঞ হলে কেন, না হয়ে বিচক্ষণ,
ঐ ছোটলোকি করে কি পেলে ওরে ছোট মন,
কি লাভ হয়েছে তাতে ও নগদে কিবা পেয়েছ হাতে তখন,
কিবা রয়েছে কি আশা, দুনিয়ার কামাই তব আখেরাতে যার হবে সাধন,
দীনতার সে হীন পুরস্কারযে পেয়েছে তারা ও অদেখায় অজানায় সে করিছে তাই বহন,
তাদের কি আজ হয় অনুভব, নির্লজ্জ ও ঘৃন্য ঐ স্মৃতিগুলি সব, কভু অনুধাবন কিবা অনুশোচনায় পড়ে স্বরণ ।

পর্ব - ১০

(দুই)
যতই হোক স্বজন,
ছিল যত নাবালক ও শিশুগণ,
অতিব কাছের, আদরের কিবা আপন,
ঐ বিবিসাব আর, তার ঐ মেয়েটি ছিলযে এমন,
মায়ের দীক্ষায় ও মায়েরই আদর্শে করেছে তার জীবন গঠন ।
বেড়াতে কিবা করিতে ভ্রমণ,
রিক্সায় চড়ে তাদের সনে কোথাও গেলে কখন,
যে বয়সের ২/৩ জন অনায়াসে নিজের কোলে বসিয়েই নেবার মতন,
শুধু শক্ত করে একটু কষ্ট রাখাটাই ধরে, কোন সমস্যাই ছিলনা ওজন ।
ব্যাপারটা হতবাক করার মতন,
যা ছিল দৃষ্টিকটু,অনভিপ্রেত ও আসলেই অতিব অশোভন,
শুনেছি লোকের মোখে, শিশুরা নাকি হয় ফেরেস্তার মতন,
তাই যদি হয় ওরে তবে বলো কেনরে, ঐ বিবিসাবের এত ঘৃনা ভয় কেন ছিল এমন ।
নাই কিরে বিবেক নাই কিরে মাটির মন,
নাকি ছিল কখনও আগে, ভোতা হয়ে গেছে তা আজ এখন,
তাই বুঝিরে নাই, গিয়েছে বনেতে পালাই, সব তার বোধন ও বিবেকের দংশন,
নারী হয়েও ছিল তার মমতাহীন কঠিন পরাণ, শিশুর প্রতি অবজ্ঞা, ঘৃনা ও অবহেলা করছে প্রমাণ এ ঘটন ।
কেন এত ছোট ও নিকৃষ্ট মন,
হয়নি যা হওয়া উচিৎ, মরম ও বিবেকের ছিল আবেদন,
কেন হয়েছে তার বিপরীত, কেউকি চায় ঠান্ডা জল যখন প্রচন্ড শীত, এ কেমন উদ্ভট আচরণ ।
ঐ বিবিসাব কি দিবেন মিটিয়ে,
জগতের সব মানুষের তৃঞ্চা ও যাচনা, তার জবাব দিয়ে,
যাদেরে অনায়াসে কোলে করে, নেওয়া যেতো কেন তাদেরে, নিতো সে রিক্সার পা রাখার জায়গায় বসিয়ে ।
শ্রদ্ধা জানাতো বলে বাবামায়,
ফুফু বলে জানতো,
বুঝি পীরের মতই যেন তারে মানতো,
হঠাৎ কেনরে তাতে এতটাই টান পড়ে যায়,
জোয়ার ভাটার নদীটা যেন হায় চৌচির হয়ে ফেটে গিয়েছে শুকায় ।
বিনয়ে গলে হায়,
একেবারে ঢলে পড়িত তার গায়,
ছেলেমেয়েরা আজ সবায়, মনেহয় মোখ ফিরিয়ে নিয়েছে ঘৃনায়,
ছোট ছোট ছোটলোকি কথা ও কাজগুলি কি ওরে কভু ভুলা যায়,
অকারণ নিগৃহীত ও ধিকৃত হয়েছে, ঠেলে দিয়েছে পিছে অহংকার ও অবজ্ঞায়,
গেছে চলি ঐ সে কঠিন দিনগুলি, কষ্টের মলিন স্মৃতিগুলি, দেউড়ীর কাছে আজও রয়েছে দাড়ায় ।  
এখন প্রশ্ন করে ঐ শান্তিপ্রিয় নিরীহ স্বজন বা জনগণ,
যারা হয়েছে অবাক ও কষ্ট পেয়েছে ছিল এমন বিবেকবান ও সচেতন,
অজ্ঞ হলে কেন, না হয়ে বিচক্ষণ,
ঐ ছোটলোকি করে কি পেলে ওরে ছোট মন,
কি লাভ হয়েছে তাতে ও নগদে কিবা পেয়েছ হাতে তখন,
কিবা রয়েছে কি আশা, দুনিয়ার কামাই তব আখেরাতে যার হবে সাধন,
দীনতার সে হীন পুরস্কারযে পেয়েছে তারা ও অদেখায় অজানায় সে করিছে তাই বহন,
তাদের কি আজ হয় অনুভব, নির্লজ্জ ও ঘৃন্য ঐ স্মৃতিগুলি সব, কভু অনুধাবন কিবা অনুশোচনায় পড়ে স্মরণ ।
হতে পারে তা বাবামার অজ্ঞতার দরশন,
বেশী শিক্ষায়, বেশী বয়সে কিবা লভে ঢের বেশী হারামের ধন,
হিংসা, ক্রোধ ও পরশ্রীকাতরতায়ও বিকৃত হয়ে যেতেও পারে, দেখেছি বদলে যায় কত মানষিকতা ও মন ।

পর্ব - ১১

তার কারণ,
কেজানে ওরে কখন,
মরণ এসে কার সবকিছু করে হরণ,
সবাইতো তার কর্ম্মের ফলটাই পায়,  
কেউ হরষের আমোদে কেউবা কষ্টের নিদানে পড়ে যায়,
মহাপবিত্র কোরআন এর বাণী, কজনে তা জানি ও মানি, বলেছেন যা খোদায় ।
লেখা আছে সব খাতায়,
কেউ যেন তার ঐ আদালতে হায়,
কভু ওরে না ঠকে যায় এবং হক বিচারটা পায়,
ওজন হবে যে করেছে যা পুণ্য-গুনা সব তুলে নিয়ে পাল্লায়,
বিশ্বাসীরা সবাই, কারো সন্দেহ ভয় নাই, রয়েছে সেই আশা ও ভরসায় ।
নহে শুধু খতিয়ানে ছবি তুলে রাখা আছে সব বিধাতার কেমেরায়,
কেমনে লোকে করিবে অস্বীকার, কৃত তার সব অন্যায় ও অপরাধ আর গুনাহগুলির দায়,
ক্ষুদ্র ভাল-মন্দ ও তুচ্ছ পুণ্য-গুনাহগুলি সবার জায় জায়, যাবেনা মুছে কিবা যাবেনা কভু তা হারায় ।
সব বিচক্ষণ ও বিজ্ঞজন,
করেন তার জীবনের হিসাবটা এখন,
এ জীবনে এমন কি ধন ওরে তার হয়েছে সাধন,  
সংগে যাবে ও সংগে রবে চিরকাল পাশেই পাবে হলেও মরণ,  
শিক্ষিত সাবালক ছেলেমেয়েরা পারতো ও উচিৎ ছিল করা তা সেদিন তখন,
তাদের বাবামার করে মনোযোগ আকর্ষণ, নীচ ও নোংড়া স্বভাব আচরণগুলি তাদের করে দেওয়া সংশোধন ।
(তিন)
যারে দেখতে নারে এলে হেন গ্রামের কোন মেহমান,
কিবা স্বজনের এমন কোন ছেলেমেয়ে বেড়াতে এলে তিনি খুব বেশী ভয় পান,  
হায় - রাম রাম,
এই বুঝি হলো কলংক বদনাম,
ডুবিল মান-সম্মান গেল তার উঁচু জাত কুলখান,
যদি এমনই হয় তবে, ওরে শেষে কি উপায় হবে, ভেবে তাই পেরেশান,
বিষয়টি ভাবনার, যার সনে সন্তানের তার, হয়তোবা হয়েও যেতে পারে মনের আদান প্রদান ।
লভে দিকহারা উঁচু খানদান,
হয়েছে লাগামছাড়া বিদ্যান কৃতি সন্তান,
অনেকেই তারা এখন, হয়ে গেছে আধা ইহুদী ও খৃষ্টান,
নিশ্চয় ঐ বিবিসাব মাতাজী তাদের, তা দেখে অনেক বেশী সুখ ও আনন্দ পান ।
অ ভাই মেহমান,
কবে বাড়ী ফিরে যেতে চান,
তাদেরে তাই মোটা চালের ভাত খাওয়ান,
আসলে কৌশলে তা অবজ্ঞার বারতা ও পরোক্ষ এক অপমান,
তাতে যেন তারা কম ভাত খান,
নতুবা বুঝে অপমান, মানে মানে যেন তারা শীঘ্রই চলে যান,
বলে তারা নাকি,
জানি ওরে তা’ওযে এক ফাঁকি,
মোটা চালের ভাত খেতে চান ও তাতেই নাকি বেশী খুশী হন ও বেশী মজা পান ।
এমন ব্যবহারও করেছে বহুবার,
হতাশ আর অপমান, হাতে করে নিয়ে গিয়ে উপহার,
দিয়ে তাই হাতে তার, শেষে আসতে হয়েছে ফিরে ঐ বাড়ী থেকে সবে অনাহার,
নিয়েছে দাওয়াত করে, দেখেছি ঘুরে সারাঘরে, ফাঁকা খাবারের টেবিল ও শূন্য সব ডেকচি-হাড়ি তার ।
কি প্রয়োজন ছিল দাওয়াত করিবার,
কে খুঁজেছে ওরে, কার কাছে খাবার,
বুঝি তারাই পারে,
লানত চেপেছে যাদের ঘারে,
সম্ভবতঃ তারাই চরম ভাগ্যাহত অজান্তে হারে,
শুনেছি কভু কোন কুটুম ওরে, বাড়ী হতে ফিরে গেলে অনাহারে,
তাদেরে কে বলিবে কে বুঝাবে হায়, নিমেষে তা নাকি পৌছে যায় মহারাজ দরবারে ।
মূল্যহীন তাদের ধন-রতন আর তারাই অভিশপ্ত পরিবার,
এ শিক্ষা কোথায় পেলো, কে শিখালো এই খেলাটা অবহেলা ও ঘৃন্য তামাসার,
সেতো আত্মঘাতি ও মহা ভয়ংকর,
তবু কেমনে দর্পে দাড়িয়ে সে, জলন্ত এক পাটাতনের উপর,
নির্বোধেরা দোষ দেখেনা আপনার, বুঝিবা সেখান থেকেই সূচনা হয়েছিলো তার ধ্বংসটার ।
এ খেলার খেলোয়াড়,
আপন হাতে আপনার অজ্ঞাতে তার,
কেমনে পারিল, নিজের পায়ে কেন সে মারিল তীক্ষ্ণ কুঠার,  
গর্দভ হবুচন্দ্র রাজার মত, নিজ আদেশ পালন রত, সখ হলোকি তারও শূলে চড়িবার,
তা যেন অনেকটা এমন শাস্তি তার যে, আপন হাতেই জ্বালিতে হলো অনল তাকে গায়েতে আপনার ।
এখন প্রশ্ন করে ঐ শান্তিপ্রিয় নিরীহ জনগণ,
যারা হয়েছে অবাক ও কষ্ট পেয়েছে এমন বিবেকবান ও সচেতন,
অজ্ঞ হলে কেন, না হয়ে বিচক্ষণ,
ঐ ছোটলোকি করে কি পেলে ওরে ছোট মন,
কি লাভ হয়েছে তাতে ও নগদে কিবা পেয়েছ হাতে তখন,
কিবা রয়েছে কি আশা, দুনিয়ার কামাই তব আখেরাতে যার হবে সাধন,
দীনতার সে হীন পুরস্কারযে পেয়েছে তারা ও অদেখায় অজানায় করিছে সে তাই বহন,
তাদের কি আজ হয় অনুভব, নির্লজ্জ ও ঘৃন্য ঐ স্মৃতিগুলি সব, কভু অনুধাবন কিবা অনুশোচনায় পড়ে স্মরণ ।

পর্ব – ১২

খোদার বিধান ও তোর নবীর ফরমান,
আর তার শ্রেষ্ঠ বন্ধু আখেরী নবীর আখলাক ও তরীকা যেবা ভাংতে চান,
কোন বিদ্যান ও বুঝমান তা করিলে রদ,
ঐ দুষমনির ক্ষুদ্র দোষে, কেঁপে উঠিতে পারেযে রোষে, জাহানের বাদশার আকাশের মসনদ ।
অতি বিশাল কিবা তুচ্ছ, নগন্য ও অধম,
যে কোন সৃজন ও জীবন হতে পারে অবসান এক নিমেষের কম,
ইনসান, সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ ও উত্তম,
বিধাতার যতনে গড়া এ বিশ্বজগত অতিশয় মনোরম,
ধ্বংস নিধন হেচকা টানে, কখন কেমনে হবে কেউ নাহি জানে, কেড়ে নিয়ে দম ।
মানুষ নামের কিছু জানোয়ার,
দর্প ভরে ও দম্ভ করে আহা কতসে অহংকার,
হাতে লয়ে গোলাম হয়ে, কতযে তীর-ধনু ও ঢাল তলোয়ার,  
যার হাতের সৃজন ঐ মহারাজার সনে, ‍উদ্ধত বেয়াকুফ যুদ্ধ করিতে হয়েছিল তৈয়ার ।
আজ কোথায় তারা আর,
কোথায় তাদের ঐ সিংহাসন, প্রাসাদ ও রত্ন ভান্ডার,
আজ কোথায় তারা হিংস্র পাষাণ চেংগিস খান, হালাকু খান, টিক্কা খান ও হিটলার ।
কি ছিল মহারাজার ঐ যুদ্ধের হাতিয়ার,
আর আবরাহা, নমরুদ, সাদ্দাদ ও ফেরাউনরা কেমনেবা হয়েছিল ছারখার,
আছে কজনের জানা, তার পরিনতি খানা, কিইবা হয়েছিল শেষে তাদের পরিনতি বা পুরস্কার ।
তাইতো ওরে ভাই,
কিছু শিখতে হলে ইতিহাস পড়া চাই,
এসো না করে পঁচা বিদ্যাটা ও বেশী জানার বড়াই,
আমরা সবাই জানি, ওরে জানতে হলেযে পড়ার কোন বিকল্প নাই ।
আবু হকে বলে,
পড়ে তার রোষানলে,
না হতে তারা সমূলে হালাক,
যত মন্দ কপাল অন্ধ মানুষগুলির চোখ ফুটে যাক,
আর বিধাতার ঐ করুণার দুয়ার খুলে সবাই তার মহানুভবতার ক্ষমাটুকু পাক ।
মানুষ নামের ঐসব মানুষদের,
চারপাশে যাদের মিথ্যা-মন্দ ও মোহের ঘের,
কেজানে কখন ঐ গুনাহগুলি তাদের যেন পূরেছে পূরো এক সের,
ঢের বেশী তাদের ঐ অপরাধ অন্যায়,
মাথা হতে পড়ে মাটিতে, না যেতে ওরে তা চৌদিকে ছড়ায়,
অপরাধ জুলুম ও গুনাহগুলি, হঠাৎ বস্তার মোখটা গিয়ে খুলি, পুড়ে খাক হয়ে ধুয়েমুছে সাফ হয়ে যাক ।
রয়েছে এত বিত্তধন,
জানিনা কেন তবু এত ঘৃন্য ও ছোট মন,
যাদের এত অনটন যেন খাচ্ছে হাবুডুবু ও করিছে সদা সন্তরণ,
সেদিকে যায়নি মন, জানিনা তার কি কারণ, কেন কভু পড়েনি চরণ তার একটু কৃপার নয়ন ।
করেনা স্বজনেরে দান,
সদকা যাকাত তা’ও ওরে নহে ‍দৃশ্যমান,
মাঝেমাঝে মৃত মাবাবার নামে যদিও সে এসে মানুষ খাওয়ান,
হলেও তা ছোট করে, তবু ডেকে সব ভাইবোনেরে, এ কাজের শরীক হতে খরচের ভাগ চান ।

পর্ব - ১৩

মেয়েদের বাসায় গেলে,
বলে মোটা চাল কিনে দিয়ে যাই, তোরা সময় না পেলে,
চাকর বাকরে ভাত বেশী খায়, যদিরে হয় চিকন চাল ও ঢের তরকারি পায়, কি লাভ ওরে অযথা টাকা ফেলে ।
তার বানানো ছিল একটা ব্লেক ট্রাইএংগেল,
তা হলো একটা মরমে আঘাত হানা যাতনা ও পীড়নের সেল,
ছিল সে দক্ষ পটু, সামাজিক বা পারিবারিকভাবে কাউকে করতে কাবু ও ঘায়েল,
দূর্বল মানুষের দূর্বল জায়গায় আঘাত করে মানষিক অত্যাচার ও নির্যাতনের সে এক অদৃশ্য জেল ।
এমন একটা আজব অদৃশ্য ফাঁদ,
কর না দিলে বা পূঁজা না করিলে জড়াবে দন্দ বিবাদ,
সবাইকি নষ্ট লোকেরে দেয় সাবাসি, করে জিন্দাবাদ ।
কারো হাতে তুলে দেয় চাঁদ,
কত মিথ্যে রটনা ও অনভিপ্রেত কষ্ট বিষাদ,
কারো জন্য হাওয়া যেন বিনাদামে পাওয়া জীবনের এক বাড়তি দাওয়ার স্বাদ ।
তবে কি চেয়েছিল সে, গড়বে নিজে ষত প্রাসাদ,
আর যাকে খুশী মেরে কথার ঘুষি অজানা ক্রোধ ও হিংসায় করে দিতে চায় তার জীবন বরবাদ,
সে ভাবনা কেন ভাবেনা, দিয়েছে বাদ,
ভাংবে কেমনে সে, নিথর দেহটার মাটির খাঁচার কঠিন পাষাণ গরাদ,
কারো সাফল্যের সিড়ি ও সুনাম আর কারো লাগি তা অকারণ নিন্দা কুৎসা কলংক অপমান ও অপবাদ ।
সাধ্য কার প্রতিবাদ করে,
ভয়ে মরে কখন নাজানি কোন পেঁচে পড়ে,
কোন দোষ খুঁজে বের করে,
লাগিয়ে দিত সে পেঁচাল শান্তি সুখের ঘরে,
এখন তার সুখের প্রাসাদই গেছে যেন ওরে ধূলায় ধ্বসে পড়ে,
নাইরে যেন ভাই, এখন তারই কোন ঠাই, বিশ্ব বিচরে তাই বহুরুপী এক রুপ কিবা বেশ ধরে ।
বড়ই কোনঠাসা ও একা ওরে,
হয়তোবা তার দিন যায়, তবুও পরম সুখে ও মজায়, কোটি টাকা বেগে ভরে,
সব সয়ে মেনে লয়ে চুপকরে,
বিদ্যা, রুপ ও বিত্ত-ধন কিবা সুখ-শান্তিটার ওরে,  
জনেজনে তা হয় তফাৎ, কেজানে কে আপন বিচারে কোনটার কত মূল্য ধরে,
যাই হোক তাই, যেজন তাকে বয়কট করে গিয়ে স্বেচ্ছা নির্বাসনে সে’ই এখন যেন সুখ-শান্তির শিখরে ।
আবু হকে বলে ওরে ভাই,
নাইরে এ জগতে আমার কিছু নাই,
লোকে বলে নাকি তার আকাশের তলে, নাই মোর নিরাপদ মান ও ঠাই,
ওরে ভাই যে বলুক যাই,
আমার নহে আমি করি তার ক্ষমতার বড়াই,
প্রভু মোরে কভু ওরে, চিরতরে ছেড়ে যায়নি ও যাবেনারে তাই,
বিধাতার অপার করুণার দান, এ দেহে তার প্রাণ ও আমার হাতের এ কলমটাই,
সত্য রচি ও যার খাই তার গুণ গাই, তাই লেখি চারপাশে, গহীনে ও দিগন্তে যা দেখতে পাই ।
তৃতীয় চক্ষু মেলে দিনেরাতে,
তুলে মাথায় সাদরে লুফে নিয়ে মোর দুইহাতে,
হয়তোবা চাহি বলে তাই,
জীবনের মালিক রেখেছেন বাঁচাই,
ক্ষুদ্র কাজে বেশী লাভ হেন কিছু যদি পাই,
পাবার আশে তাই খুঁজে ফিরি ও ঘুরে বেড়াই,
ঐ পুণ্যে ঝোলাটা পূরাতে, আলোটা না ফুরাতে ভাই,
ছিড়ে মোহ ঘের তার খাস গোলামের, খতিয়ানে নাম লেখাতে চাই,
যদিরে একবার খুলে যায় তার করুণার দুয়ার, তবে কিছু নাহি চাই আর ওরে তা আমি পেয়ে যাই ।

পর্ব - ১৪

না হয়ে মহিয়সী, মহান মহত ও উদার,
দূর্ব্যবহার, তামাসা, ভর্ৎসনা ও তিরস্কার করে সে বারবার,
দুহাতে পিছনে ঠেলে ঠেলে,
হঠাৎ দেখি, কখনযে গেছে চলে রেখে একেলা ফেলে,
পর করেছে পর হয়েছে, ইচ্ছে করেই গড়েছে দূরত্ব ও ব্যবধান এক বিশাল পাহাড় ।
ইচ্ছে ছিল প্রশ্ন করে জানবো সব,
মন আমারে বললো না, থেমে যাও হয়ে রও নিরব,
কভু কোনদিন দেখা হলে,
তা’ও আর হয়নিতোরে এ মনটি আমার চায়নি বলে,
গুটি গুটি পায়, শুধু তারই ভরসায়, একাই চলেছি না গিয়ে আর ঐ ধনীদের দলে ।
তাতে কার হয়েছে জিত আর,
হিসাব করে জানা যাবে পরে, কতটুকুইবা ঠক হয়েছে কার,
দূরেই রয়েছি পড়ে, সে হতে মম পাতার কুটিরে, ঐ প্রাসাদে ফিরে যাইনিতো কভু আর ।
কোন অভিযোগ নহে, প্রতিশোধ নিতেও চাহিনা তার,
ক্ষুদ্র মম কোন দান কিবা অবদান, যদিও ওরে থেকে থাকে সহযোগিতার,
চাইনা লোকের বিনিময় প্রতিদান তার, কোন বিচারের ভার সেওতো শুধু দয়াময় বিধাতারই এখতিয়ার ।
সপ্ত আকাশের মহারাজ দরবার,
আমি নিশ্চিত জানি, যেথা পক্ষপাতহীন সুবিচার,
পাই কিবা না পাই, আশা রাখি আখেরাতে পাবো তার পুরস্কার,
অফুরন্ত ভান্ডার তার, দানের ঐ হাত আর দিল তার অপার ক্ষমা ও করুণার ।
শুনেছি ক্ষুদ্র দান, কথা ও কাজেই হয়,
পরজীবন অসীম পুণ্যময়, তাইতো বিজয় ও অফুরন্ত সুখময়,
কে বলেছে তা মিথ্যা বচন কিবা স্বর্গ নয়,
মহারাজার খাস কুটুমের সাজানো ঐ প্রাসাদ বাড়ীটা যদি জনমের তরে জয় ।
তবে তাই হোক,
যে যাই বলে তারা বলুক,
নিশ্চিত পাবে প্রতিদান, মূর্খ বিদ্যান বেয়াকুফ ধনকুব ও নিন্দুক যে যার আপন কাজের জিম্মাদার ।
কালিমাগুলি ধুয়ে যাওয়ার তরে,
অবিরত, সহস্র শত দিবস রজনী ধরে,
ঐ রোশনীর ঝিলের জলে শুধু ডুবিয়ে নাওয়া,
হবে এ জীবনে সেইতো আমার পরম সাধনার পাওয়া,
লভে তার অপার শক্তি ও করুণার ঠাই,
জানি মোর কেহ নাই কিছু নাই, তবুওযে ‍বুকভরা সুখ আমি খুঁজে পাই,
সে’ইতো আমার সংগী সেরা, শোকর ও সান্তনার ডেরা, মহারাজার হেন গোলাম হবার বড়াই ।
বলতে পারো সে এক অদৃশ্য জাল,
দিনকে বানিয়ে যন্ত্রনা ও জ্বালাতনের রাত জ্বেলে বিভেদের মশাল,
ছিল তার অমোঘ হাতিয়ার কুট-চাল,
আজ আর নেই তার কোন ঢাল, নিজেই বড় অসহায় ও বেহাল,
পারিবারিক বা ঘরোয়া খাঁচা, করা হতো অকারণ তামাসায় ভীষণ পেরেশান ও নাজেহাল ।
ছিল সহোদর ছোট দু্ইবোন মিলে ত্রিরতন,
ঐ ব্লেক ট্রাইএংগেলের তিনকোণে দাড়ানো তারা তিনজন,
সে ফাঁদ ছিল যেন ঠিক কাফিলার আঠার মতন,
পালাবার যেন আর পথ নেই, একবার ধরা পড়েছে যেজন,
বিবিসাবই ছিল তার অধিপতি, দলনেতা, অধিনায়ক ও সরদার বা কেপ্টেন,
শুধু একবার সে বাঁশীতে দিলে ফুৎকার,
নিমেষে ছুটে এসে হাজির হতো যেন ঐ ভক্ত দুই খেদমতদার,
ফুটবলের মাঠে যেমন থাকে একজন রেফারী ও দুইজন তার লাল পতাকার লাইন্সমেন ।

পর্ব - ১৫

ছিল তারা বিবিসাব এর তাবেদার ও চাটুকার,
একটু লোভী, কিঞ্চিত সুবিধাভোগী, প্রতিদান কিবা বিনিময়ে তার ।
ঐ লাইন্সমেন দুইজন,
উস্কানি, ইন্ধন, দেওয়া তীক্ষ্ণ ও তীব্র ফোড়ন,  
অবিরত দিতো তারে হয় কুমন্ত্রণা নাহয় সহযোগিতা ও করিত অন্ধ সমর্থন,
যে পড়েছে একবার তাদের রোষানলে, মজার ঐ খেলার ছলে নানা কৌশলে, তার সুখ-শান্তি ও মান করিত হরণ ।
বুঝি খোদা ও তার বান্দার সনে করিত মস্কারা,
বিবেক ও মেধার বুঝি হয়েছিল মরণ, দিত সারাক্ষণ তাদের গুরুকে আস্কারা,
কেন এমন হয়েছিল হায়, আরকি ভাল কাজ ছিলনা বিধাতার এত বড় দুনিয়ায়, পায়নি খুঁজে তারা ।
ঐ দুজনের একজন,
কবেই করেছেন সে পরপারে গমন,
আর অন্যজনের মনেহয়,
ভেংগেছে ভুল, মনেও ঢুকেছে মরণের ভয়,
তর্কে ও কথায়ও সে, কারো কাছে হার মানার নয়,
বয়সে তিনের ছোট, তবে কুটিলতা ও কুমন্ত্রণায় তারই বিজয়,  
তাই হয়তো এসব থেকে হাত গুটিয়ে ও মোখ ফিরিয়ে সে লয়েছে এখন ।
বুঝিরে এখন হয়না আর,
তাদের হাতে নাই কিবা মিলেনা কোন এমন শিকার,
হতে চামচা, চাটুকার ও তাবেদার,
তা যেন এক কুৎসা, সমালোচনা ও গুনাহের খামার,
হেন সদস্য আর কোথায় পাবে, নষ্ট গুরুর ভ্রষ্ট শিষ্য হতে বলো আর ভাল লাগে কার,
ভক্তি, বিনয় ও শ্রদ্ধায়,
তারা যখন যেমন বলিবে কিবা চায়,
নিজের ইচ্ছা নহে, তাদের ইচছার কুমতলবের দায়,
যেজন সদা ভক্ত অনুগত হয়ে, লানতের বোঝাটা নিজের মাথায় লয়ে রহিবে তাদের সবার ।
ষড়যন্ত্রের ঐ কালো ট্রাইএংগেল,
এখন ঝুলছে শুধু ঐ বিবিসাবের গলে, অসহায় নতশিরে হয়ে তা ফেল ।
সুখের সংসারে আহা ছিল কি যাতনাময় দিনাতিপাত,  
কতকি আরও যে যেমন চমক দেখাতে পারো, করো কোটি টাকার বাজিমাত,
পরের সেবা, উপকার, কল্যাণ আর দান ও দোয়ার লাগি দিয়েছিল হায় দয়াকরে বিধাতায় যে দুটি হাত ।
মেধা, মন, নয়ন, বিবেক ও মনন,
উল্টো করেছে কত জুলুম, হক, মান ও অধিকার হরণ,
যখন কেহ সবকিছু অতি বেশী পায়,
সরল কোমল ঐ হাতই দেখেছি শেষে, অতিশয় লম্বা ও কলুষিত হয়ে যায়,
লোভ মোহ ও স্বার্থে পড়ে, নিজ খেয়ালে আপন দাপটে ভরে, কত রাতকে করে দিন আর দিনকে রাত ।
কেবা খুশী আর কেবা হলো বেজার,
তাতে নেই কোন মোর ভাবনা, কিছুই যায় আসেনা আমার,
যার নাই কোন ধন কিবা ভোগ বিনোদন সমাহার,
স্বজন আপন ও বন্ধু কিবা ভাই, তার জীবনতো নহে হয়ে রয় অঁচল কিবা অসার,  
শুধু নহে ঐ বিবিসাব,
যত বিত্তশালী কানা যাদের নাই জীবনের হিসাব,
কথায় বড় কাজে ঠনঠন, অসার গালভরা বুলি আর যত বড়বড় খেতাব,
লেখকের সনে এ জীবনে হোকবা নাহোক, কি প্রয়োজন কোন স্বার্থবাজ ও জুলুমবাজের সদভাব,  
চিরসত্য অমৃত মধুর বাণী,
আমি যেটুকু জানি ও ধরেছি বুকে লয়েছি টানি,
দিলেম বাতাসে ভরিয়ে আকাশে ছড়িয়ে সবার তরে, পড়ুক ঘরে ঘরে জনে জনে তার সুপ্রভাব ।  
থামবে যখন জীবনের সব পেরেশানি কলরব,
বেশী কাতর ও তাড়নায় পাথর হবে দুনিয়ার যত বিদ্যান ও ধনীরা সব,
হেরে গিয়ে ছেড়ে এসে দিয়ে ক্ষান্ত,
যদি বিশ্বাসী হতো আর সবকিছু জানতো ও মানতো,
গহীন আঁধার রাত, বন্ধ আঁখি ও বাঁধা পাও-হাত, কোথা পাবে খুঁজে প্রান্ত,
শুয়ে আঁধার ঘরে বিজন ও নিরব, দিতে জীবনের শুরু থেকে শেষ একেবারে পূরোটা হিসাব ।
অনেক বিত্ত-ধন আর,
অংকিত হলো সে আজব রুপ তার,
এক প্রেম ভালবাসা, স্বপ্ন-আশা ও মায়া-মমতার সংসার,
কেজানে তা অভিশম্পাত কিনা জীবিত বা মৃত অতিশয় মর্মাহত কোন আত্মার,
নাকি পরকালের লাগি রয়েছে যা বারোআনা বাঁকী হেন ফলাফল তাদেরই ছোটবড় ঐ কর্ম্মগুলির সমাহার ।

পর্ব - ১৬

তার সনে ছিল কিসের বাদ কিবা বিসম্বাদ,
তবে কি তাই হয়তো তারে গণায়ই ধরে নাই, করেনি বলে উচ্চবাচ্য কিবা কোন প্রতিবাদ,
নূন আনতে যাদের পান্তা ফুরায়,
আহা দেখেছি যেন হায়, বুঝি টেনে আনতে ছিড়ে যায়,
ফেলেছে তাদেরে অকারণ, কত ঝামেলা বা খাছারায়,
তবু কেন হয়েছিল হেন, মারমুখী যেন প্রতিহিংসায় নাকি কোন সে জিঘাংসায়,
কে সুধাবে জবাব পাবে, কবে তা জানা হবে নাকি চিরকাল রবে তা অজানায়,
কেমনে কবে শোধ হবে তাদের ঋন,বয়ে বেড়াবে তারা আর কতদিন ঐ দায়,
ছিল সময় এমনই কঠিন যাদের,
চারিধারে অজানা নিয়তি, কত নিদান ও নানা অক্ষমতার ঘের,
করেছে জেনেবুঝে তবু,
চক্ষু বিবেক ছিল তবু বুঝতে তারা চায়নিতো কভু,
কোন খেয়ালে তবু স্বেচ্ছায়, তাদের উপরে করেছে হায়, কতনা আর্থিক ও মানষিক অত্যাচার ।
সত্য বলে যাই গোঁধূলী সাঁঝের বেলায়,
মেতেছিল তাদের দুসময়টারে লয়ে মজার এক তামাসার খেলায়,
কে বুঝিল কে শিখিল কিবা ‍কে বুঝিল শিখিল না, তাতে বলো হায় মোর কিবা আসে যায় ।
সে কোন বাহাদুর হতচ্ছাড়,
হবে নিরুপায় সবকিছু হারায় করবে সবে হাহাকার,
আকাশের আলোতে নিজের ভালোতে বাঁচার ঐ পথটা খুঁজিতে হবে যে যার,
হয়ে রবে বেচুইন পেরেশান, না পেয়ে তার পথখান, উজির নাজির কাজী মন্ত্রী সেনাপতি গাজী ও বাদশায় ।
বলছি সবারে ডেকে খবরদার,
এখনও সময় ও সুযোগ আছে হও সাবধান হুশিয়ার,
যার যার আপনার,রুজি ও পূঁজিতেই হতে হবে পার,
একঘরে এত আপন,
বাবামা ভাইবোন ও স্বামী-স্ত্রীগণ,
মিথ্যে নয় এ বচন, নির্মম সত্য রাখিও স্বরণ, কেউ কভু এতটুকু দায় নিবেনা কার ।
পেলোনা জ্ঞানের পরিচয়,
বিদ্যান হওয়া ও জ্ঞানী হওয়াযে এক কথা নয়,
হলে বিদ্যান দেখেছি কেনযে তারা, পাগল হয় ও পেরেশান রয়,
কে বলিবে কোনটা সাধন, কে শিখাবে কারে কোনটাযে বিজয় আর কোনটা অবক্ষয়,
পেতে আরও ধন, বেশী ভোগ-বিনোদন ও সব ক্ষমতা ও বল অনায়াসে করিতে দখল ও জয় ।
বিদ্যান না’ও হতে পারে জ্ঞানী,
আবার অবিদ্যানওযে হতে পারে হয় মহাজ্ঞানী তা জানি,
কত মুনী ঋষি সুফী সাধক পন্ডিত ও জ্ঞানীর বড় কষ্টেইযে কাটে তার জীবনখানি ।
ঢেউয়ের পরে আসে ঢেউ,
আপন ও বন্ধু-ভাই যেন এ জগতে নাহি কেউ,
কেউবা বোঝাই ঠেলাগাড়ীটা ধীরে ধীরে,
পিছের চালক এলো কিনা বারবার তাই সে চাহিছে ফিরে,
চেয়ে দূর অস্তবেলায়, ক্লান্তি আর হতাশায়, একটু জিরায় ঘাম ঝেড়ে ফের একাই চলছে টানি,
আসে ঝড়ের পরে ঝড়, এমন ভাগ্যটারে মেনে লয়ে জনমভর, টেনে চিটচিটে একখানা অঁচল ঘানী ।
জ্ঞানেই ওরে চক্ষু ফুটে,
ছিড়ে যায় ঘের ভিতর বাহিরের সকল আঁধার যায় টুটে,
তবুও বিভোর নেশার টানে, সোনালী সুখের পানে, হন্নে হয়ে যায়নারে সে কভু ছুটে,
আলোর মেলায় আসন জুটে, এসে জ্ঞানের পরশে দেখেছি শেষে, নামের মানুষগুলি সব আসল মানুষ হয় ।  

পর্ব - ১৭

নেই কিরে মূর্খ বিদ্যানগণের স্বরণ,
খালি হাতে যেতেই হবে চলে, সবারে হলে মরণ,
সব রেখে ফেলে যে জীবন বিফলে দুনিয়ার সব বিত্তবেসাত ধন,
ছিল যার দান হলে সময়ের অবসান, এই ধন সেই মহাজনই আবার করিবেন হরণ ।
কারুনের এত ধন যে করেছিল দান একদিন,
তার হুকুমেই তা আবার রাতের অন্ধকারে হয়েছিল অজ্ঞাতসারে সমুদয় ভূগর্ভে বিলীন,
কেউ টের নাহি পায়,
কেমনে হলো কেহ দেখে নাই হায়,
সবে উঠে দেখে, আর কিছু নাই দিনের বেলায়,
হায় মিশে গেছে সব, নেই হৈ চৈ কলরব, মরুভুমির কাঁকর বালুকায়,
কারুন নিজে, তার সব ধন ও সুরম্য বিশাল প্রাসাদ বাড়ী,
যত তার ঐ লোকজন,
রতন ভান্ডারের চাবিগুলি যারা করিত বহন,
প্রহরী পেয়াদা ও কর্মচারিগণ, আর যত তার উত্তরাধিকারী,
দম্ভ অহংকার হিংসা বড়াই আর কৃপণতাটাই বুঝি ছিল তার ধ্বংস ও পতনের কারণ ।
মানুষ গড়ার বিধাতার পাঠশালা,
যাদের সব ইন্দ্রিয়গুলি তীক্ষ্ণ সচেতন ও রয়েছে সদা খোলা,
তারা পাঠ করে ও শিক্ষা লয়,
আকাশের ঐ আলোতেই সবে তারা আসল মানুষ হয়,
এ বিশাল প্রকৃতিটারে, দুহাতে ঝাপটে ধরে দেমাগে ভরে, ধাপগুলি সব করে জয়,
যদিরে একবার খুলে যায় তৃতীয় নয়ন,
হবে সব দেখাশেখা ও চেনাজানা, খোদায় আর বলবেনা কানা, সফল জীবন হবে সাধন ।
নিত্য ঘুরেফিরে প্রান্তহীন চারিদিকে,
অন্তরালে থাকা গহীন গাঁথুনীতে ঢাকা নিপুণ নয়নের নিরিখে,
মানুষ নামের মানুষ নয়,
শিরে বুকে ও বদনে,
চলনে বলনে কাজে ও আচরণে,
লয়ে শ্রেষ্ঠ হবার সব গুণাগুণ ও সেই কাজগুলিই পরিচয়,
একটা বিশাল বীজতলা গড়ে,
আর বিধাতার ঐ আলো ও ভালোটার কোটি চারা রোপণ করে,
মাটিতে বসে ঐ রশিটা আর আকাশে উঠার সোনালী সিড়িটা কষে ধরে, কেউ কেউ হয়ে যাবে পার ।
কেউ কষ্ট করে পড়ে পড়ে শিখে,
কেউ শিখে শোনে শোনে আর কেউবা দেখে দেখে,
সেতো হবে পরাজয় হার, এ জীবনটা শেষ হবে যার, দেখাশেখা ও চেনাজানা বাকী রেখে ।
কি আর করা ভাই,
বড় সাধ ছিল হলোনা যখন তাই,
কেমনে তাদেরে আমি মানুষ হবার মন্ত্রটা শিখাই,
বলো ওরে তবে তারা শিখবে কবে, এখনও যখন আর শিখে নাই,
একটা কাফেলা বানিয়ে, তাদের সবারে সংগে নিয়ে, যেথা ফেল নাই আমি ঐ পাঠশালে যাই ।  
কি উপায় হবে কে নিবে তড়াই,
পাগলের মত সবে দিকবিদিক ছুটে ক্লান্ত ও হতাশ হবে তাই,
শেষ ভরসা আশ্রয় ও করুণার ঠাই,
বড় অসহায় ঐ ধনীদের ছিল বখিলতা অহং ও বড়াই,  
ছুটাছুটি করে খুঁজে, অস্থীর পেরেশান ও বেচুইন হবে ঐ সবাই,
মনে বড় আশা লয়ে, দুহাত পেতে কাতর হয়ে, তারা দাড়াবে হেথা যাই,
যখন সব হারিয়ে শূন্য হাতে,
কাঙালের মত ঘুরবে অবিরত ঐ সে আঁধার রাতে,
দয়ার সাগর কেন হয়েছে আজ এত কঠিন ও পর, ঐ মহারাজার দরবারটা যদি আর না খুঁজে পাই ।
ঐ বিবিসাব ও তার পরিবারের সবারে,
শুধু তাদের, যারা এখনও ঘন অন্ধকারে রয়েছে পড়ে,
ঠিক এমনই যারা যেনরে পথহারা, রয়েছে খোদার বিশ্ব পরিবারে,
আমার বড় ইচ্ছে করছে বাল্যশিক্ষা বইটা কিনে হাতে তুলে দিই একখানা করে,
বিধাতার মানুষ গড়ার পাঠশালে ভর্তী করাতে চাই, যেন থাকিতে জীবন মানুষ হতে তারা পারে সবাই ।