(আল্লাহর ঢেলে দেওয়া এক ভয়ংকর গযব – হার না মানা অজ্ঞাত ও অদৃশ্যমান প্রাণঘাতী মহামারী করোনা ভাইরাস, ভুলুন্ঠিত বিশ্বময় প্রসারিত নিরব কান্নারত ন্যায়বিচার, পদদলিত মানবতা, একেবারে মোখ থুবরে পড়া আধুনিক বিশ্বসভ্যতা, শিখরে উঠে গ্রহ-উপগ্রহে মহা আড়ম্বরে দাপিয়ে ঘুরে বেড়ানো ও অবশেষে পা পিছলে ভুতলে আছড়ে পড়া মহাবিজ্ঞানের করুণ অসহায়ত্ব, একদিকে মানুষের ধনের প্রতি বিপুল মোহ, প্রতিযোগিতা, উপার্জন ও বিলাসী ভোগবিনোদনের ঝলমলে জীবন আর অন্যদিকে গৃহহীন ক্ষুধার্ত ও পীড়িত কোটি মানুষের নিরব আর্তনাদ ও হাহাকার, দূরন্ত দাপটের সুদৃঢ় অবস্থানে থাকা অবাধ পাপাচার, জুলুম, অত্যাচার, পক্ষপাত, দূর্নীতি, অনিয়ম ও অবিচার, ন্বিঃস্বের ভাগের ধন নির্ভয়ে লুন্ঠন ও আত্মসাৎ, মানুষ মারার মহড়া ও মহোৎসব, সবখানেই ক্ষমতাবানদের ক্ষমতার অপব্যবহার ও আধিপত্যতা, তামাসার সমঝোতা ও সালিসি মোড়লি দরবার এবং সব মিলে বিধির বিধিবিধানের অবাধ্যতা ও সীমালংঘণ, ভেংগেপড়া বিশ্ব কৃষি, শিল্প, বানিজ্য, খাদ্য ও স্বাস্থ্য ব্যাবস্থা সহ সম্ভাব্য আসন্ন সমুদয় নাজুক ও নাজেহাল অবস্থার পাঁচালী এবং শ্রষ্টার স্বাভাবিক ক্ষোভ ও প্রবল রোশানল, তদুপরি বিধাতার অপার করুণার বয়ান ও মহানিদানে নিপতিত বিশ্ব মানবগোষ্ঠির পক্ষে মহান আল্লাহপাকের দরবারে আমাদের সকাতর আকুল প্রার্থনা)
        
দর্পন - ০১
  
রাব্বানা আতেনা, হে প্রভু তুমি করোনা মানা ।
আমারতো ওরে সবই জানা,
তুমি কত বড়, আমিতো নয়রে কানা,
কি আছে কি নাই তব, আছে মোর সেই ধারণা,
মহাশক্তিধর, যতটা প্রলয়ংকর তারচেয়ে বেশী তব করুণা ।
নিমেষে তুমি সব করিতে পারো,
হেন কিছু নাই, তব অজ্ঞাতে হয় কিবা তুমি যেথা হারো,
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।
দেখে কষ্ট পাই, তবুও লয়েছি মানি,
তার ভেদ নাহি বুঝি, মোরা কেউ তা নাহি জানি,
অনটন আপদ আর নিদান, যেন তাদের নিয়তিরে লয়ে সদা করে টানাটানি,
কারেও দিয়েছ ধন এত ঢের যেন পূরো একসের, আবার কাউকে মোটেও দাওনি,
হে মহান দাতা, বলো তারা যাবে কোথায় নির্দয় হয়ে ক্ষোভে তুমি ফিরালে তব মোখখানি ।  
তব অসীম অপার ধন ও ক্ষমা,
বলোতো কার লাগি তা রেখেছ তুমি করে জমা,
সেতো কোনদিন কমেনা, সবারে ঢেলে দিলেও কভু হয়না আর হবেওনা তা একটু উনা ।
হে প্রভু তুমি গোলামের একমাত্র ভরসা ও সান্তনা,
এ মহাজগতে তোমারইতো শুধু একক মালিকানা,
শোভিত ফুল-ফল সম যেন হয় সফল, মোদের দুনিয়া ও আখেরাতের জীবন দুখানা,
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।
সেকি ওরে তাহলে,
আমি তোমার এক গুনাহগার বান্দা বলে,
করছো যাচাই দিয়ে নাদিয়ে, কারোটাবা কেড়ে নিয়ে, নানা দীনতা ও অক্ষমতার ছলে, জীবন মম ধন্য করো,
শূন্য ঝোলাটা আমার পুণ্যে ভরো,
আলো ও ভালোর চাষে আমারে লাগাও, খাটাও ও টেনে ধরো ।
আমিতো রাজি, তুমি যখন যেমন যাহা চাও,
আমারে দিয়ে হে প্রভু তুমি, তেমনই ঠিক তাই করিয়ে নাও,
হে বিশ্বভুমির জমিদার, তোমার আলোর বীজতলার চাষে আমাকে তা ভরাতে দাও,
তব রোশনীর যেথা, ছড়ানো ও মাখানো ভরানো বাহারি আবীর ঐ জালেতে জড়াও,
ঝেপে রেখেছ দ্বোর, বুঝি তাইকি আজও রলো মোর এত অনটন পেরেশানি তাড়না,
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।
এক ভাগ্যাহত,
পেয়েও অঢেল অবিরত,
ভরেনি হৃদয় তার, যেন মনের মত,
কোন আক্ষেপে ঐ প্রাণ যেন হতাশায় ম্রিয়মান ও সংকুচিত,
ভেবে মরে, ঐ দূর আকাশে বীজতলার চাষে, বুঝি চারাগুলি তার হয়নি আজও অংকুরিত ।
হে মনিব তুমি করোনা মানা,
কেনরে হয়নি তবু মোর ঢের শেখা, চেনা ও জানা,
বুঝি ছিলেম ডুবে ভুলে,
মোহে ও লোভে, দাওনা এবার কূলে তুলে,
দীপ্ত আলোর ছটা ঢুকার তরে, দাওনা মোর সবকটি জানালা দুয়ার খুলে ।
তাইকি হয়নি ঐশী দেখা, হয়ে ছিলেম বলে অবুঝ কানা,
মাফ করে দাও, তুমি দয়া করে দাও মুছে আমার সকল গুনার খতিয়ানখানা,
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।

দর্পন - ০২

তাই বুঝিরে হয়নি তোমায় দেখা, কভু খুঁজে পাওয়া,
পরম আলোর সকল ভালোর অতল ঐ ঝিলের জলে ডুবিয়ে নাওয়া,
কোন সে দ্রোহে রঙের মেলায়,
বিভোর মনের ঘরে, হরষে চড়ে মেঘের ভেলায়,
মজে ছিলাম কোন সে মোহে, হয়ত সে এক দারুণ মজার খেলায়,
দিনযে চলে গেছে হায়, কোন খেয়ালে যেন শিশুর মতন অনাদর অযতন ও অবহেলায়,
কত স্বপন আর শত সুখের আশার, নয়নে মনে গজিয়ে উঠা কল্পনার সে এক বিশাল ডানা,  
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।
তুমি ফিরিয়ে দিওনা,
হয়েছে জানি বেসুমার গুনা,
অসহায় গোলামের শূন্য এ হাত দুখানা,
হে দুই দুনিয়ার বাদশার বাদশাহ, তুমি আর করোনা মানা,
আর কোন পালক, দাতা বা প্রভুর নাম পরিচয় নাইতরে আমার জানা,
তাড়িয়ে দিলে বলো যাবো কোথায়, নাই কোন ঠাই নাইরে উপায়, কোন আশ্রয় বা ঠিকানা,
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।
ইয়া রাব্বুল আলামীন,
দয়া করে আমাদের সবারে ক্ষমা করে দিন,
হারিয়ে সময় হয়েছে লোভে পরাজয়, এখন দিশাহারা বেচুইন,
যত গুনাহ চাহি মাফি চাহি পানাহ, মওকুফ করে মোর আপনার বকেয়া যত দাদনের ঋন,
সব খাতা আর খতিয়ান হতে মুছে দিন,
সেই ভাবনায় ও পেরেশানি তাড়নায় মনটা মলিন,
না রহে যেন আর, কোন কলংক বা কালিমার দাগের সামাণ্য চিন,
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।
লজ্জাতে মোখ লুকাই,
হেন ছোট হয়ে যেন কভু নাহি যাই,
হতে পারি তবু চিরধন্য যদি তব পয়গাম পাই,
এক নগন্য অধম, বরেণ্য হওয়া সেতো মনিবের বড়াই,
সুশীতল শান্তির ছায়া পরিমল, ঐ আংগীনায় চির জনমের এক ঠাই,
তব মহা রাজবাড়ীটার,
অপার সে শোভা শুধু একবার দূর হতে দেখিবার,
জাগে বাসনা,
বিনাদামে যাবে কেনা,
হবে যার চির জনমের মালিকানা,
ছেড়ে দিতে হবেনা কভু আর, কেউ তা কেড়েও লবেনা,
যার যেমন রুচি, পছন্দ ও খুশী যেথা মন চায় খাবে সে তাই দাড়িয়ে-বসি নেই মানা,
ঘুরেফিরে হেটে, শুনেছি রাজ কুটুমের লাগি রহিবে মজাদার, নিত্য হাজার রকমের খানাপিনা,
শত ষোড়শী পঞ্চরসি রুপসীগণে মাতাল বায়, সুবাসিত কেশ আর ওড়না উড়ায় সারাক্ষণ আনাগোনা,  
হয়ে লক্ষ ফুল ও ফলের সৌরভে মগন মোহনা,
আবেশে মাতোয়ারা বাহারি পাখীদের মোহন মদির, হবে মধুর সে গান শোনা,
আসামী হয়ে দাড়িয়ে না গিয়ে হারি,
আখেরাতে যেনগো আমি, হেন এক মোমিন হতে পারি,
পুণ্য নাই কোন মম দানের কামাই, তবু সে আশা কেনরে ছাড়িতে নারি,  
তোমার খাস কুটুমের অতিথিশালা, যেন পাই এমন একখানা ঝিল-বাগানের নীল আকাশের বিশাল সবুজ প্রাসাদ-বাড়ী,
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।

দর্পন - ০৩

হে মহা পাকজাত,
তব শাহী দরবারে তুলেছি দুইহাত,
নেই তব এতটুকু অবিচার কারচুপি বা পক্ষপাত,
কবুল করো, মোদের এ সকরুণ সকাতর আরজি ও মুনাজাত,
তুমি করুণার সাগর,
রোশে ক্ষোভে ভয়ংকর মহাতান্ডব ঝড়,
ইচ্ছে হলে লন্ডভন্ড করো সাজানো এ ভুবন কত সুন্দর,
আপদে নিদানে পরম বন্ধু আপন, তবুও নহে কভু তুমি হও কারো পর,
যার কেউ নয় আপন, এ জীবন যেন পোড়াবন নেই বলে অর্থ-বিত্ত ধন ও বাড়ীঘর,
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।
তারা নানা দীনতায়,
ধনেজনে বিদ্যায় ও ক্ষমতায়,
মজলুম, অক্ষম, দূর্বল ও বড় অসহায়,
অতি কষ্টে চলে, ঘাম বেঁচে দিন এনে দিন খায়,
তবু তুমি ছাড়া আর কোন প্রভু তারা নাহি মানে, কারো কাছে কভু নাহি যায় কিছু নাহি চায়,
তুমিনা করুণার আধার,
ত্রিভুবনে তুমি বিনে প্রভু মোদের নাই কেহ আর,
এত সৃজন, জীবন-মরণ লালন-পালন বেঁচে থাকার যত নেয়ামত ও উপহার,
ঐ সাধ্য আর আছে বলো কার,
কোন সাহায্য উপকার কিবা হেন কিছু করে দান দুঃক্ষ-কষ্ট দূর করিবার,
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।
বলো তুমি ছাড়া প্রভু মোদের আর কে আছে,
তুমি যদি চাও, কতনা ফুল ফুটাও ফল ধরাও শুকনো মরা গাছে,
দুহাত পেতে চুপিচুপি চায় যত নিঃস্ব অসহায়, তোমার গোলাম বলো যাবে কোথায় কার কাছে ।
তুমিনা সবই পারো,
যখন যাহারে যা খুশী বাঁচাও মারো,
মহাশক্তিধর, সবার বড়, কভু নাহি কারো ধার ধারো,
জানি হেন কেহ নাহি, তোমারইতো তপঃস্তুতি গাহি, তব কাছেই শুধু চাহি, যার কাছে তুমি হারো ।  
যারা বিশ্বাসী অনুগত,
দেখা-অদেখায় দেহমনে পূঁজায় রত,
বলো সে কঠিন ইমতেহান তুমি নিবে আর কত,  
হাতে কাজ নাই, পকেটে টাকা ও ঘরে কিছুই খাওয়ার মত,
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।
অনেক আশায়,
কার কি নাই, কে কি চায়,
যার পোষ্য তারইতো পালনের দায়,
তুমিতো জানো পরম নির্ভরতা ও মুখাপেক্ষিতায়,
ধর্য্য ধরে তারাতো রয়েছে পড়ে, তব মোখপানে নিরবে তাকায়,
গোমরা অবাধ্য যারা দেখি যেন কেন কেমনে তারা, বারোমজা খায় আর তেরোসুখে দিন কাটায় ।
এত অনটন, নাই নাই,
তবু রয়েছে তব জালেতে জড়াই,
অদৃশ্য নিরাকার জেনেও ঐ বিশ্বাসে তবু তাই,
তার উপর দিয়েছ আপদ ঢেলে, এক মহামারী রোগবালাই,
এখন তবে দাও দাওয়াই, দাও আরোগ্য শাফা, একটু তব করুণার ঠাই,
যারা দেহমনে প্রকাশে গোপনে সারাক্ষণ, সবখানে করে তব বড়ত্বের প্রকাশ, প্রচার ও বড়াই ।  
ঐ রশিটা টুটে যেতে পারে জানে,
ছুটে যেতে চায়, তবু প্রাণপণে হায়, মাটিতে বসে দুইহাতে কষে ধরে টানে,
অতি দরকার তবু পায় কি না পায়,
তারা অন্য মনিব খুঁজতে ওরে তবুওতো কভু কোথা নাহি যায়,
তবুতো আশা ছাড়েনা, কষ্ট পায় তবু মন্দ হতে পারেনা, হেন দশা কেন শুধু তাই জানতে চায়,
সেইতো বিজয়, জবাব পাবেনা সেতো সবারই জানা,
তবু ওরে নয়ন মগজ মন মনন ও শির অবনত করে তোমার কাছেই হার মানা,
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।

দর্পন - ০৪

যাদের আছে পাহাড় সমান ধন,
বদলে দাও প্রভু, তাদের সবার মানষিকতা ও মন,
তারা যেন হয় করে মন জয়, আর তেমন নহে সেই আগের মতন,
এখন হতে যেন হয়, সুবোধ কোমল ঠিক যেন কাদাজল হেন সদয় হৃদয় ও সুজন ।
মরে গেলে শেষে কে খাবে,
সবাইতো সবকিছু ফেলে রেখেই চলে যাবে,
তবে এত ধন, কি দরকার কি প্রয়োজন,
চৌদিকে মোহের ঘের, অল্প কদিনের ছোট্ট এক জীবন,
সবাই আসলে পর হয়ে যায়, জীবনে ছিল সে যতই আপন প্রিয়জন,
দেখেছি এমনইতো হয়, এ জগতে কেউ কারো নয়, কখনও কারো হলে মরণ,
এইতো মোদের জীবন এই আছি এই নাই, কারো আগে কারো পরে হয় গমন,
কোন মালিকানা আর নাহি রয় সবই হারায়, সকলইতো পরের হয়ে যায়, যত ছিল তার নিজের অর্থ বিত্ত-ধন ।
ধনের নেশা সেতো এক মনের রোগ,
যত পায় তত চায়, আরও পাওয়ার নেশা হয় তাতে যোগ,
হে বিত্তবান যেটুকু করেছ দান, কিবা সুপথে/সুকাজে ব্যয় ও তব জীবনে ভোগ,
শুধু সেটুকুই ছিলযে তোমার বাকীটা নয়, দেখিব সবে কবে তাদের হবে, ঐ সে সহজ ও সত্য বোধন ।
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।
যা বলি ওরে আমার আমার,
যার তরে এত রণ, এত হুংকার হাহাকার,
কত বাহাদুরি আর কতনা তার নাবলা অহংকার,
মরে গেলে কবে কেউকি শুনেছ দুনিয়াতে আর রহে তার,
সেতো মিছে মোহ, কিছু করিবার কোন শক্তি ও সুযোগ বা অধিকার,
পড়েকি তার ভাগে,
আর কি তার কোন কাজে লাগে,
মরণে দুনিয়ায় ফেলে রেখে যাওয়া কারো ঐ বিপুল বিত্তধন,
ছিল যার, কিবা লাগিবে তার, কি লাভইবা হবে আর তাতে তখন কিবা কবে কখন,
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।
তব করুনা নাহলে,
পড়েছি অথই অকূল সাগর জলে,
মিশে মন্দের দলে, সংগী হয়ে ও বিপথে চলে,
আপন দোষে পরেছি আমি সোনালী ফাঁস আপনার গলে,
গহীন রাত, ঘন কালো অন্ধকার, এইকি জীবন ওরে গেলো বিফলে,
মহারাজ বিধাতার রোশের কবলে,
অর্ধেক বিশ্ববাসী পড়েছে এখন এ কোন মহাসর্বনাশী রোগের ছোবলে ।
বিজ্ঞান ও সভ্যতার পরিনতির সমাচার,
ভাগ্যের নির্মম ফের, অকারণে হলো কত বেকার,
পীড়িত কতজন করছে মরণের সনে, প্রাণপণ লড়াই বাঁচার,
চারিদিকে নানা প্রশ্ন নিরব উৎকন্ঠা কোটি জনতার একই নিরব হাহাকার,
কারো কাজ নাই, কারো টাকা নাই পকেটে, কারোবা নাই ঘরেতে সামাণ্য কোণ খাবার ।
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।

দর্পন - ০৫

কৌশলে সবে, শুধু নিজে বাঁচিতে চায়,
ধোকায় থাকা বোকার দল সেকি আছে তব সাধ্যের সীমানায়,
ব্যক্তি ও কর্তৃপক্ষ কেজানে কত মিথ্যা বলে কিবা সত্য লুকায়,
কোন ছলে কিবা কোন বলে মানুষ নাহি পারে, সব জেতে ও সবকিছু পায়,
যদি আক্রান্ত হওয়া, অনাহারে থাকা ও এ মহামারীতে মরণটা ঠেকানো শেষে না’ই যায়,
আর অসহায় কোটি কোটি মানুষ অজ্ঞাতে অনিচ্ছায় ঢুকে পড়ে নির্মম ঐ করোনা যম এর মৃত্যুর তালিকায় ।
বিদ্যান, পন্ডিত, বিত্তশালী ও ক্ষমতাবানদেরইতো বেশী দায়,
নতুন জীবন গড়া, মরার আগে একবার মরা, আত্মশুদ্ধিতা ও সততা সবাইকে শিখায়,
মৃত্যু থেকে বাঁচার জন্য নয়, মরার পড়ে সুন্দর ও সুখময় অবিনশ্বর এক নবজীবন লাভের প্রত্যাশায় ।
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।
মরণের কোলে,
পড়ছে যেন সবাই ঢলে,
বাঁচার উপায় এখন কে দেবে কারে বলে,
এ দুনিয়াটারে সাজানো কত বাহারে, এক বিধাতার কুরছি তলে,
এ মহাবিশ্ব ভুবনে,
যাবো কোথায়, কোনপথে এখন কোনদিকে কেমনে,
মন্দতো নহে, সবার জন্য ভালোইতো চাই, সে উপায় বলে দাও সহজে তা হবে যেমনে,  
তুমি ছাড়াতো আর,
কোন প্রভু নাই এ গোটা দুনিয়ার,
তাহলে তব করুণা, ক্ষমা ও সাহায্য ছাড়া আর,
বড় অসহায়, বলো তা কার দায়, বিশ্ববাসীরে কে বলো এখন করিবে উদ্ধার ।
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।
কোথা হতে এলো করোনা,
হে প্রভু দাও শাফা দাওগো পানা,
কবে কেমনে যাবে তব এ বালাই গযবখানা,
বাঁচার উপায় কি, সে যেন ভাব দেখাচ্ছে ছেড়ে না যাওয়া ও হার না মানা,
বিশ্বের যত বিজ্ঞানী, গবেষক ও দার্শনিক সবাই যেন ব্যর্থ, কেন কেউ তার কিচ্ছু জানেনা ।
মরছে বৈদ্য কবিরাজ নার্স ও ডাক্তার,
তবে উপায় কি হবে, বেশুমার রোগীর চিকিৎসা করবে কে আর,
তাই মনেহয় তবে,
সিংহাসনে বসেই ভাবছে সবে,
হাসপাতালে রোগী ভর্তি করার আর কিইবা দরকার,
শুধু রোগ ছড়াবে, তারচে ভালো মরুক যে যার বাসায় থেকে আপনার,
তারপর, গিয়ে স্বাস্থ্য গবেষণা ও স্বেচ্ছাসেবী দল, কাঁধে নিয়ে ঐ সে গুরুদায়ভার,
করিবে সব কাজ যেখানে যা করা দরকার, নমূনা সংগ্রহ ও লাশটা দাফন করে তা করিবে উদ্ধার ।
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।

দর্পন - ০৬

কোন ঔষধ নাই,
হাসপাতালেও যেন ঠাই,
তার কোন চিকিৎসাও নাই,
এ কেমন কথা, শুনছি ওরে ভাই,
দেখিনা এসো তবে, খুঁজে মিলে আমরা সবাই,
কোন প্রতিষেধক বা প্রতিরোধক তার যদিবা কোথাও পাই,
আপন সুরক্ষার উপকরণ নাই,
মরিছে অনেক ডাক্তার বুঝি কি সেকারণেই তাই,
সে আয়োজন কিবা তার নিশ্চয়তা বলো এখন কেমনে কোথা পাই,  
আপন ঘর কিবা হাসপাতাল হোক যাই,
শুনছি কেউ কেউ ভয়ে, অতিশয় কাতর হয়ে, নাকি যাচ্ছে পালাই,
কার নাই ভয়, বাঁচিতে বলো কে চাহেনা, ডাক্তার কিবা রোগী, মানুষতো সবাই,
আপন ঘর, নিজ এলাকা কিবা হাসপাতাল, কোথাও যেন আর নাই তার নিরাপদ বিশ্বাসের ঠাই,
কেউবা আবার সামাজিক নিন্দা, অবহেলা ও তিরস্কারের ভয়ে আপন রোগটারে তার রাখছে গোপনে লুকাই,
এ কিসের লক্ষণ, আলামত ও চিহ্ন,
বাড়ী, মহল্লা, পাড়া, স্বজন, পরিবার ও সমাজ হতে মানুষ হয়ে পড়ছে ছিন্ন,
এক ঘরেতেও রোগীর কাছে যাওয়া কিবা তার সেবা পাওয়া বন্ধ, বাসন-গ্লাস, বস্ত্র ও থাকা-খাওয়া সবই ভিন্ন,
তা অতি প্রয়োজন তবু কেন নাই,
রোগীর সঠিক সেবা, পরিচর্য্যা ও মনোবলতো আগে চাই,
এটা তার মানবিক পাওনা, হচ্ছে উল্টো তাই হয়ে পড়ছে সে আরও দূর্বল সাহস হারাই,
বড়ই নির্মম ও করুণ, এই মানুষ কেমনে করছে আবার শিক্ষা, ভদ্রতা ও বড় জাতের গালভরা বড়াই,
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।
মসজিদগুলি রহিছে ফাঁকা,
যদিও যথাসময়ে আযান দিয়ে হচ্ছে ডাকা,
সবাই কর্ম্মহীন,
আর কত ধার কর্জ ও ঋন,
আপন গৃহে নিশিদিন অলস অন্তরীণ ও মনমরা হয়ে থাকা,
কেউকেউ সতর্ক, সচেতন ও সাবধান,
মানছে, সরকারী ফরমান ও যত সব তার স্বাস্থ্যবিধান,
কেউবা এখনও চালু রেখেছে তার, হেয়ালী মনের একগুয়ে খেয়ালে চলনের চাঁকা,
আল্লাহর বেরহমত, সবই বন্ধ এখন,
আহারে হচ্ছেনা মুর্দার নাওন, কাফন, জানাজা ও দাফন,
একটু ভাবুন যারা বিজ্ঞ ও বিচক্ষণ,
কেন এ বিপর্য্যয়, কেন হচ্ছে এমন, এর কি কোনই নেই কারণ,
এসব কিসের পরিনতি,
কোন কাজের ফসল কিবা অবদান ফলাফল, কবে তার অব্যাহতি,
যারা আসলে হয়নি এখনও ইনসান,
তাদেরও অনেকে বড় মোখ করে বলেন, ওরে ভাই আমিতো মুসলমান,
যে আল্লাহ করিল সৃজন,
দিলেন মোদেরে দয়া করে মানুষের জীবন,
যার ইচ্ছায়ই, হয়তো হঠাৎ অজানায় হবেরে আবার মরণ,
ধন-জন, কত সুখ যখন যেমন চাহে যার মন, ঢের ভোগ-বিলাস ও বিনোদন,
হয়ে যার দাস, যার রাজ্যে আজীবন বিনা করে বসবাস ও যার খাবারই প্রতিদিন সারাক্ষণ করিছে ভক্ষণ,
যার হাতেই তার প্রাণ,
ষোলআনা সব নেয়ামত ও দান,
পন্ডিত, সমাজপতি ও যত বড় ক্ষমতাবান,
দাও সঠিক বুঝ, দেখাও সুপথ, দাও আবার তাদেরে সাচ্চা ঈমান,
হয়তো তাদেরেই বলে বেঈমান,
লভেও এত মজা ও এত সুখের জীবন কত অকৃতজ্ঞ প্রাণ,
হয়েছে অবাধ্য করছে সীমালংঘণ, সেই খোদারই কেমনে হয়েছে তারা এত নাফরমান ।
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।  

দর্পন - ০৭

কই গেলো সব আয়ুর্বেদ শাস্ত্রীর দল,
প্রকৃতির দান রয়েছে শত অফুরান ফুল-ফল,
সহস্র গাছগাছালির পাতা, লতা, শিকড়, মূল ও বাঁকল,
চাঁদে ও মঙ্গলে যারা বেড়াতে যায়,
আগে বুঝিনি, এ বিশ্ব জগত ও তার মানুষ এখনও কত অসহায়,
এখন দেখি হায়, বিজ্ঞানের সব অর্জন আর কিবা তার ঐ অহংকার ও বাহাদুরি সকলই অসার ও বিফল,
তবেকি এখন তারা সবে, আজ যত কবিরাজ আয়ুর্বেদ,
ব্যবসা নহে সফল, সংসারও অঁচল তাইকি তাদের মনে জমেছে অনেক ক্ষেদ,
আজীবন সারাবছর কেন সবে এলোপ্যাথি খায়, তাইকি এখন মরুক - ধরেছে কি তারা এই জেদ ।
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।  
কি লাভ হয়েছে ওরে,
দেখনা ভেবে একটা সঠিক হিসাব করে,
বলনা বিজ্ঞজন ভেবে আহারে,
সবখানে জিততে চায় তা যেন পারেও, কেবল মরণের কাছেই হারে,
এতধন করবি কি, অ মানুষ জানিসকি তা কে খাবে, কে পাবে, দিয়ে যাবি কারে,
তবু আরও চায়, বিনাদামে কেনে নাহলে কেড়ে লয় যেন কিবা এখনও ঠকায় যদি পারে ।
অসৎ ও হারামের ধন তিনপুরুষেই নাকি শেষ হয়ে যায়,
বাস্তবেও দেখেছি অনেক, কতজনের ধন তার তিরোধানের পর শৃগাল-কুকুর ও কাকে-বকে খায়,
সব উত্তরাধিকারী নিঁখোজ, নিরুদ্দেশ কিবা গেছে মরে,
বাড়ীতে বাদুরে বেধেছে বাসা, ইমারতের ইটগুলি একটা একটা করে খসে পড়ছে ঝড়ে,
দূরন্ত দাপট ও প্রবল প্রতাপ,
নিঃস্ব ও দূর্বলের উপর ছিল তাদের কত প্রভাব ও চাপ,
লোকের সনে অত্যাচার ও দূর্ব্যবহার এবং ধনের পাহাড় কিছুই নিতে পারেনি তারা সংগে করে ।
এত অর্থকড়ি ধন সোনাদানা,
এত ভোগ-বিনোদন, বুঝি করেছে তাদেরে অবুঝ কানা,
বেশী পড়া, বেশী শেখা, সবকিছু জীবনের সব উপকরণ বেশী পাওয়া ও বেশী জানা,
বিত্ত-বেসাত বাড়ীগাড়ী ও নগদ টাকার টাল, বুঝিরে আজ ঘরে হয়েছে কাল থরেথরে সাজানো করে রাখা ভাজ ।
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।
যম বলছে ওহে অত্যাচারী,
ঐ শোন, মৃতদের স্বজনের করুণ আহাজারি,
এসো এবার পারলে ঠেকাও, আজ যাবো আমি তোমার বাড়ী,
বলো কেমনে কোথায় যাবে পালিয়ে তব বিধাতার এ বিশাল রাজ্যটা ছাড়ি,
করেছ লোকেরে জীবনে যত জুলুম, খুন, আর্থিক ও মানষিক অত্যাচারের হুকুমজারি,
তার কাছে ছবি তুলে রাখা আছে সব, সহ তব কন্ঠ আওয়াজ,
তুমিকি চিনো তারে কে সে, মহাআদালতের মহাবিচারক মহাবিশ্বটার মালিক ও মহাজন মহান মহারাজ ।
চেনাজানা আছে মোর,
কোন ঘর কোনদিকে তার জানালা-দ্বোর,
তব পরিচয় ও নাম ধাম,
আছে ঐ ফিরিস্তিও জীবনে করেছ তুমি যত সুকাম-কুকাম,
সব পথঘাট ও ঠিকানা, আসা-যাওয়া মোর কেউ টের পায়না, আমি সকলের দৃষ্টিও ওরে এড়াতে পারি ।
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।

দর্পন - ০৮

জগতের যত অত্যাচারী ও জুলুমবাজ,
এই বুঝিরে শেষ সুযোগ ও শেষ সময়, শুদ্ধ-শোধন হবার আজ,  
সমন এসেছে মরার, নাই কিবা ছিলনা যার বিধাতায় বিশ্বাস, কোন ভয় কিবা লাজ,
কারো ছাড় নাই, আগেও মরেছে এখনও মরছে কত রাজকন্যা, রাজপুত্র, বাদশাহ ও মহারাজ,
যত মিথ্যাবাদী অপরাধি ঠক-প্রতারক, মারছে ও মেরেছে পরের হক জগতের যত শঠ ও ধোকাবাজ ।
চরম নিষ্ঠর, বর্বর ও নির্মম তাই,
কত বিজয়, কতনা অর্জন ইতিহাসেও হয়েছিল ঠাই,
এত মান-সম্মান, এত বিত্ত-ধন, অসম শক্তিমান কেনইবা হবেনা বড়াই,
দূরন্ত ক্ষমতার দাপটে ছিলনা স্বরণ,
ভুলে গিয়েছিল বিধাতারে, আর তারওযে আছে মরণ,
চেংগিস খান, হালাকু খান, হিটলার, ষ্ট্যালিন ও টিক্কা খান আজ কেউ নাই,
জানো কি কই তারা, বলো আজ তোমাকে কেমনে আমি ছেড়ে দিয়ে যাই,
ওরে হুশিয়ার সাবধান,
ইচ্ছে হলেই কেড়ে নেবো ধন-জন প্রাণ,
আর কত অবজ্ঞা অমান্য করা বিধাতার বাণী ও ফরমান,
সুন্দর দুনিয়ায়, মানুষের জীবন ছিল মোর পরম এক নেয়ামত ও দান,
আমিতো বলেইছিলাম, হবে তার হিসাব-নিকাশ হবেই হবে তা একদা অবসান,
কেউ যাবে আগুনের জেলখানায় আর, কেউ হবে আমার অতিথিশালার খাস চির মেহমান,
করোনি বিশ্বাস, হয়েছ অবাধ্য করেছ সীমা লংঘন, ভুলে ছিলে হবেযে মরণ, করবে কি এখন সূতা ধরে দিলে টান ।
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।  
করবে কি, যাবে কোথায়,
এ মহানিদানে বলো তোমার এখন হবে কি উপায়,
কেউকি এমন আছে ওরে তুলে লবে যে তার নিজ মাথায়,
বিধাতার কাছে তোমার অনাদায় দায়গুলি আর বেশুমার গুনার দায়,
ইতিহাস স্বাক্ষী, হেন কত বাদশাহ রাজন,
বদলে গিয়ে হয়েছিলে পশু লভে তার ক্ষমতার আসন,
ছিলনা কোন মিল কথায় ও কাজে, ছিল শুধু মধু মাখানো সুবচন,
তাই দিয়ে কত প্রাণ, কত ধন-মান ও লোকের অধিকার করেছ লুন্ঠন ও হরণ,
করে কূটকৌশল দিয়ে বাহুবল সেজে আপনি মোড়ল সিংহাসন দখল ও পরের ধন আহরণ,
দূর্বল ও অবলার সান্তনার মিঠামিঠা মিথ্যে বুলি,
দেখি কিছু নাই খুলি, একেবারে শূন্য তার ঐ মোহময় গল্পের যাদুর ঝুলি ।  
যত জুলুমবাজ,
কান পেতে শোন আওয়াজ,
করবে কি, যখন পড়বে মোর আসমানী বাজ,
জীবনের যত ভোগ-বিলাস বিনোদন বাহারি শতরঙ সৌখীন সাজ,
বেশী সময় পারবোনা দিতে, আমারযে পড়ে আছে অনেক দায় ও অনেক কাজ,
তুমি মজে ছিলে, কত মন্দ শত অন্যায়-অপরাধ আর ভুলে, হয়ে শুধু ভোগ, ধন আর ক্ষমতার মোহতাজ ।
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।
বাজিছে ঐ মৃত্যুর ঘন্টা,
ধূয়েমুছে ঠিক করো তব চোখ ও দেহমনটা,
মনেহয়, এসেছে ঘনিয়ে কাছে তোমার ঐ অমোঘ মরণ ক্ষণটা,
অতীতটা করো স্মরণ, সহো করো বরণ সে যাতন, নিজেই দেখো এখন নিজের পতনটা,
বলো কি তব আশা কিবা কামনা,
রাজার কাছে তোমারকি আছে কোন দেনা বা কতটুকু পাওনা,
পারলে তবে এখন ঠিক করো ভেবে তা কেমন হবে, তোমার মরণের পরের ঐ জীবনটা,
হও বিচক্ষণ, সাবধান ও হুশিয়ার,
তুমি একেবারে ধন শূন্য কিবা নিঃস্ব হওয়া আর,
তুমি সবার পর ও তব সব ধন হাতছাড়া বা পরের হয়ে যাবার,
ঠিক করো তা, থাকিতে হাতে ধন, করো মন খুলে দান হয়ে মহৎ ও উদার,
বিলি-বন্টন যাকে যা করার বা দেবার, করো তার আগেই সবকিছু তোমার করা দরকার,
কেজানে তা এমন হতেও পারে, ঐ দানে সবঘাট হয়ে পার পেলে পেতেও পারো তুমি মহাপুরস্কার ।
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।

দর্পন - ০৯

কোন লাভে কোন আশে,
কিবা কোন শর্তে বা ওরে কোন বিশ্বাসে,
বলো তব সব ধন, দিয়ে যাবে তুমি কাকে বা যাদেরকে,
শেষে যদি আর তারা কেউ, তোমার ঐ বিশ্বাস ও তাদের কথা না রাখে,
ব্যাস্ত রহে আপন আপন লাভের কাজে, লোভে ও যাদুর নেশায় মত্ত-বিভোর হয়ে মজে থাকে,
পুণ্যের কামাই সঞ্চয় ও সম্বল যদি তোমার সংগে না থাকে, তবে ঐ নিদানে নিশ্চিতই তুমি পড়বে বিপাকে,  
বঞ্চিত করোনা যারা হবে তোমার উত্তরাধিকার,
আর নিজেই নিজের চোখে দেখে ও আপন হাতেই তোমার,
তৃপ্তিতে মনভরে দান করে যাও, পাবে নিশ্চিত বিনিময় প্রতিদান তার,
কবরে যখন কাটিবে তোমার জীবন বড় অসহায়, একাকি ও অন্ধকার,  
যদি বিপথে ব্যয় হয়, কেউ নেই ওরে তা ঠেকাবার মতও নয়, লয়ে তব ঐ ধন সম্ভার,
যেহেতু ঐ ধন ও উত্তরাধিকারী দুইই তোমার, জেনে রেখো তোমাকেই নিতে হবে সে গুনার সবটুকু দায়ভার,
বলছি শুধু তাদেরে বেশী ধন দিয়ে যেওনা, আসলে যা কাল হয় আর কোনই নিশ্চয়তা বা তেমন আশাও নেই যার,
যদিরে এমন হয় হাতে তোমার সময় বেশী নাহি আর,
মরণ নামের ঐ সফরে, কে যাবে ওরে সংগে তোমার,
আর কি কি সামান নিবে তুমি সংগে করে, তা নাও তল্পি গুছিয়ে তড়িঘড়ি এবার হও তৈয়ার ।
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।
যদি ঐ নিদান দূর্যোগ ও দূর্বিপাকে,
সবাই পরম ক্রোধে ও ঘৃনায় একে অপরের দিকে পিছন ফিরে মোখ ফিরিয়ে থাকে,
আত্মীয় স্বজনও যেন কেউ কারো নয়,
ধনী ও গরীবের মাঝে এমন ব্যাপক দূরত্ব ও প্রভেদ তৈরী হয়,
বন্ধু ও প্রতিবেশী যেন কোনকালেও ছিলনা তাদের তেমন কোন চেনাজানা ও পরিচয় ।
পর হয়ে আছো ও সবারে পর করেছো এ ধারণায়,
মানুষ কি ওরে আত্মীয়ের বাড়ী, শুধু খেতে কিবা আর কিছু পেতেই যায়,
নাকি ঐ সম্পর্কটা ছিল আত্মার, বিনিময় ভরপূর ভালোবাসা আর দোয়া কিবা তার শুভ কামনায়,  
মানুষে মানুষে ব্যবধান আগেইতো ছিল,
এবার বুঝি রাগ করে বিধাতায়, তার সে নেয়ামতটুকুও কেড়ে তুলে নিল,
কাছে নয় দূরে, টানা নয় ঠেলা, হেন অবহেলা যেন ঝেড়ে ফেলা, বিশ্বাসে নয় ঘৃনা ও অবিশ্বাসে ভরিল,
এ সমাজটারে যা ছিল মমতার বন্ধনে বাঁধা এক বিশ্বপরিবার, এবার তা অসম্প্রীতি ও অপ্রীতিতে নতুন করে গড়িল,  
কেড়ে নিয়ে মায়া মমতার ছাতা, উল্টোটা তার ব্যাপক প্রসার করিল,
ছিড়ে যোগাযোগ ও ভালোবাসার বন্ধন, এ সমাজ তথা এই মানুষেরাইতো তা একদা তৈরী করেছিল,
আপন স্বার্থ কিবা বেশী লাভের আশায়ই ধনীরা শেষে, এখন এসে একোন বিপদে যেন সমাজে একঘরে হয়ে পড়িল ।
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।

দর্পন - ১০

চরম মানবিক অবক্ষয়,
আর মানবতার এক মহাপরাজয়,
তা যদি হয়েও থাকে সেতো ওরে একদিনে সৃষ্ট নয়,
ঐ বৈষম্য ও বৈরীতা শত বছরে সভ্যতারে করেছে ঘৃন্য কলংকময়,
মানুষে এবার, যদি এই সুযোগে মানুষ না হয়,
তবে মনেহয়, সামনে হয়তো রয়েছে আরও অনেক বৃহত বিপর্য্যয়,
ভাতৃত্ব, বন্ধুত্ব ও মমত্ববোধ গেলো কই,
আপনজন হয়েও কেন ধনীগণ, স্বজন গরীবের প্রতি মোটেও দরদী নই,
সমাজে ধন আর সাধ্যের এক বিশাল ভারসাম্যহীনতা,
কারো উপচে পড়ছে যেন উড়ছে বাতাসে হেন এমন অঢেল ধন, কারোবা অসীম দীনতা,
তবে কি তারা ধন কমে যাবার ভয়ে,
মমতার বদলে তলেতলে বুকভরে হীনমন্যতা লয়ে,  
বাহিরে বাহারি সাজ, দীন নহে তবু কেনযে চলছে ঐ দীনতা বয়ে,
ইচ্ছে করেই দূরে সড়ে থেকে, পর হয়ে ও পর করে রয় কারো আপন না হয়ে,
এ সমাজের যত কালো টাকার ধনবান,
ভেবে মরে, এখন তবে এই ধন কি করে, এ ভাবনার নেই অবসান,
স্তুপাকারে গুদামে কিবা ঘরে পুঞ্জিভুত করার আকুল অপার বাসনা লয়ে, রয়েছে তারা পেরেশান ।
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।
অ মূর্খ বিদ্যান ও বিত্তশালীগণ,
তোমাদের ভাগ্যবান ওয়ারিশ ও উত্তরাধিকারীগণ,
ভাবছ কি করবে, কেমনে চলবে ও কি খাবে হায় তারা কাটাবে জীবন,
তব ধনে নাহয় তারা হলোইবা মহাভাগ্যবান, শেষে আমি যদি কেড়ে লই কি করবে তখন,  
আজীবন তবে কি জ্ঞান করেছ আহরণ, আজওতো দেখি হয়নিরে দেখা, শেখা ও চেনাজানা   সমাপন,  
বলো সে কি তোমার দায়,
নাকি তব সাধ্য আছে, সে ক্ষমতা বলো কে দিয়েছে তোমায়,
তাদের সুখ, সৌভাগ্য ও ধন, আগামী জীবন, তবেকি এখন হতে তুমিই করিবে নির্ধারণ, বন্টন ও নিয়ন্ত্রণ ।
খোদার কাজ খোদারই দায়,
তা কেমনে হয়, যদিরে মানুষে করিতে চায়,
তার এক ইশারায়, কেউ ধনী কেউবা পথের ভিখারী হয়ে যায়,
সবই শুধু তারই মুঠোয়, অদৃশ্য এক নিমেষের সাধ্য ও সক্ষমতার আওতায়,
তারা কারা, কেনইবা চায়,
এ পৃথিবীটা যেন বিরান এক মরুভূমি হয়ে যায়,
তাদের কেন এত মাথাব্যথা, নেমে আসুক তার অর্ধেক জনসংখ্যায়,
কারো আপন কাজে হস্তক্ষেপ মানুষেইতো মেনে নিতে চায়না, কেমনে তা মানিবে বলো খোদ খোদায় ।
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।
বিজ্ঞ বিচক্ষণ হয় ঈমানদার,
কি পড়েছ কি শিখেছ, কেমনে তবে হও দাবীদার,
তুমি মুসলমান, তা হতে হলে সবার আগেযে মানুষ হওয়া দরকার,
সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ – মানুষ হওয়া এত সোজা নয়,
চাহিলে আগে করো, অসহায় মানুষ ও সকল জীবের মনটারে জয়,
পরীক্ষায় পাস না হলে, এ জীবন যাবে বিফলে, তবে কেমনে হবে কঠিন সব ঘাটগুলি পার,
দেখনি কত রাজার সিংহাসন, জীবন ও সমুদয় ধন নিমেষে করেছি আমি, এখনও করি হরণ ।
আবার এমন কত ভিখারী,
নাই যাদের কোন ঘর, একমুঠো চাল, চুলা কিবা হাড়ি,
আমিযে দিতে-নিতে সবই পারি, দিয়েছি কত জনেরে পাহাড় সম ধন, রাজ্য, রানী, মুকুট ও সিংহাসন ।
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।  

দর্পন - ১১

প্রস্রয় দিলে যদি শুরু হয় আসা-যাওয়া আনাগোনা,
শেষে কজনকে দেবো আর, বলো কাকেইবা কেমনে করবো মানা,
কেমনে তাদের মন ভরাবো, আছে কি সে ধারণা,
কিছু লোকের কাছে হবো অপ্রিয় ও মন্দ কিবা পর, আসলেই জটিল এ বিষয়খানা,
তাদেরে তাড়ায় হয়তোবা এই ভয়,
রাখিতে চাহিছে নাকি করে তা সুরক্ষিত ও চিরঅক্ষয়,
এই ধন, ভোগবিলাসী ও আয়েশি জীবন সে কিরে হয়েছে সহজে অর্জন বা জয়,
যদি তারা চায় আর, কিছু কিছু করে সবাইকেই দিতেই হয়,
যদি কমে যায়, এই ভুল ধারণা, ভাবনা ও ভয় এত কষ্টের অর্জন, কেমনে ধনলোভীগণ তা মেনে লয় ।
শেষে যদি যখন আসে কঠিন একটা দুঃসময়,
ক্ষুধার্ত অসহায় গরীবেরা হিংস্র বন্য ও দলবেধে সব একত্র হয়,
এমনি করেই ওরে যদিরে ভেংগে পড়ে, ধনীদের ঐ প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বলয়,
বিশ্বজুড়ে দেশেদেশে অরাজকতা বিশৃংখলা, শুরু হয় রাহাজানি, হানাহানি ও লুন্ঠন ।
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।
ধনীরা হয়ে পড়ে কোণঠাসা অসহায় ও নিরন্ন,
আর খেটে খাওয়া কর্ম্মহীন দরিদ্র ক্ষুধার্ত মানুষেরা হিংস্র ও বন্য,
প্রশাসন ও রাজ দরবার,
একেবারে থেমে গিয়ে মেনে লয় ঐ হার,
সচল সবুজ ও সজীব এ পৃথিবীটা হয়ে পড়ে ধূসর অচল ও অসার,
অকেজো ও অক্ষম, যারা ছিল আজীবন শত সুখে-ধনে মোহিত, গর্বিত ও মহাধন্য,
এত রঙ মাখানো, নিখুঁত শত কারুকাজ ছবি আঁকানো, বড় সখে বিধাতার সাজানো এ ধরণীটা এক অরণ্য,
বিশ্বকানন লন্ডভন্ড,
হয়েছে তারা অতি পাষন্ড,
সবকিছু একেবারে তচনচ পন্ড,
ধ্বংস কিবা নব সৃজন,
পূরাণের মাঝেও ফের এক শুভ বিবর্তন,
বিধাতার সে এক আজব বাসনা যদিরে হয় যেদিন যখন,
যদিবা হয় কখনও চাহে মন, ধুয়েমুছে সাফ করে সব ভেংগেচুড়ে করে সংশোধন,
মিথ্যা, মন্দ ও কালিমা নয়, নতুন পরিচয় ভালোরা সবে চায় তাই যেন হয়, সুন্দর ও নব এক শুভসাধন ।  
মনেহয় তারাই বুঝি উত্তম,
তারা কত নিষ্ঠর বর্বর নির্মম ও ঘৃন্য অধম,
প্রকৃতিতে ও এ সমাজে নাই যেন সুস্থ্য ও পবিত্র দম,
যারা দূর্বল অক্ষম অসহায় ও যাদের সবকিছু একেবারে কমকম,
চাঁদ-বদনের বাহারি পোষাকের মানুষগুলি কোন কারণে বন্ধু না হয়ে যেন হয়েছে তাদের যম,
তারা কারা বিশ্বজুড়ে যূগযূগ ধরে লাগিয়ে রেখেছে অযথা দাংগা ও যুদ্ধের আগুন,
নির্বিচারে নিরপরাধ নিরস্ত্র ও নিরীহ নারী-পুরুষ ও শিশু-বৃদ্ধদেরে তামাসা ভরে অকারণে করছে খুন ।
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।  
রাজ্য চাই মানুষ রাজার,
সুশাসন সুবন্ধন সাম্য ও সমতার,
ভুখন্ডের সীমানা হবে ভিত্তিতে তার জনসংখ্যার,
গণভোট হবে সমাধান তার, যত সকল বিতর্কের সমাহার,  
সবার কাছে সব ধর্মের আচার ও অনুসারীগণই হবেন বিশেষ শ্রদ্ধার,
ধর্মশালাগুলি হবে ভক্তি ও বিনয় শিখার পাঠশালা ও মানুষ গড়ার আদর্শ খামার,  
ধর্মকর্ম্মে সবাই স্বাধীন, পালিত হবে ও রবে বিশ্বজুড়ে তা চিরদিন বাধাহীন যার যে ধর্মাচার ।
শুধু ঐ সে আর্ত হাহাকার,
শোনা যায় যেন, মজলুমের অস্ফুট চিৎকার,
হয়তো দেখিব সত্য হয়েছে তাই, আর কেউ নহে আপন কার,
এ অবস্থা যদি তিন বছর ধরে চলে আর,
মহামারী ও অনাহারে তিনকোটি মানুষের হয় প্রাণ সংহার,
তবে কি ওরে এ বিশ্বটা জুড়ে, বহিবে রঙীন জলের সুখের জোয়ার,
ধনী দেশগুলি আর পৃথিবীর সব ধনীরা মহাখুশীতে ঐ জলে কাটিবে হরষে সাঁতার,  
তবে কি কোনকোন দেশ, কিবা বিশ্ব নেতারা কেউকেউ তাই চায়, কৌশল প্রণেতা ও সমর্থক তার,
কে সামলাবে আর কে লবে তার দায়ভার,
যদি সবারই একই দশা, কে করিবে কার সেবা কিবা উপকার,
সবাস খোদার দ্রোহী দাস,
করিছ সবে আপন এ মহাবিশ্বটার চরম সর্বনাশ,
কবে দেখিব মন দেখিতে চায়, রণহুংকার আর ভরাডুবি তব তরীটার,
কথা মিথ্যা নয়, এখনও কেন যুদ্ধ চলে ও মহড়া হয়, দূরপাল্লার ক্ষেপনাস্ত্র মিসাইল পরীক্ষার,
আধমরা জাতিসংঘ,
হাত-পা ভেংগে দেবেকি খেলা ভংগ,
কেউ ধুকেধুকে মরে, আর কেউবা করে হরষে রংগ,
বিশ্বের যত বড়রা শীর্ষে উঠিতে খুঁজিছে সোনালী লম্বা একটা যাদুর চংগ,
বিশ্বশান্তি পরিষদ, বিশ্বখাদ্য সংস্থা, বিশ্বস্বাস্থ্য ও পরিবেশ সংস্থা হারাবে আস্থা ও হারাবে প্রাণ সবুজ-সোনালী এ পৃথিবীটার ।
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।

দর্পন - ১২

আবহাওয়া ও পরিবেশ ভারসাম্যটা হারায়,
সম্ভাব্য অনাগত ঐ দুঃসময় আসে কেউ যদি না’ও চায়,
তবুও বৈশ্বিক ঐ মহা বিপর্য্যয় ও বিবর্তনের আগ্রাসী মহামন্দ ছোয়ায়,
এ মহাবিশ্ব ভুবন ও প্রকৃতির ধরণ অস্বাভাবিকভাবে হঠাৎ যদি আমূল বদলেই যায়,
হেন অনাকাংখিত ঘটনা,
কে ঠেকাবে শুরু হলে তা, আচমকা দিলে হানা,
অবাক বিস্ময়ে চুপকরে দেখিবে সবে,
তিলেতিলে মৃত্যুর কোলে একএক করে সবাই ঢলে পড়িবে,
দুই বিশ্বযুদ্ধে মিলেও যা ঘটেনি, হয়তোবা তারচেয়েও বেশী ক্ষতি এবার হবে,
দুনিয়ায় মানব সৃষ্টির ইতিহাস,
বিশ লক্ষ বছর ধরে মাটির এ দুনিয়ায় তার বসবাস,
তারও বহু আগে, পৃথিবী সৃষ্টি করে হয়েছে তাতে একেএকে কতনা প্রাণের চাষ,
অবিরত বিধাতার ধ্বংস নিধন ও সৃজন,
ইতিহাস ও বিজ্ঞানে রয়েছে তার অগনিত অদ্ভুত ও ভয়ংকর উদাহরণ,
কার দোষ না পেলে ঐ দীক্ষা, এ সবইতো হয়েছে মানুষের শিক্ষা শাস্তি কল্যাণ মংগল শান্তি ও উন্নয়নের কারণ,
কি ধন রেখেছে ধরে,
বিধাতা জীবের তরে,  
এ লোকালয় সুন্দর সমতল,
দূর্গম ঐ পাহাড় ও গহীন বন-জঙ্গল,
নগর, প্রাসাদ ও দূর্গ ভেংগে সাগরের জল করে তল,
জেগে উঠা ভূমি নতুন বসতি, ক্ষেতিচাষ, গোচারণক্ষেত্র হতে পারে জলমহল,
পারলে ঠেকাও একটা নিধন, সামাণ্য ধ্বংস কিবা তোমার মরণ, থাকে যদি তব কোন সাধ্য কিবা বল,
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।
না, তা নহে মহাপ্রলয়,
অশনি সংকেত আসন্ন সমূহ দুঃক্ষ যাতনাময়,
হতে পারে মহাপ্রলয়ের এক প্রাক ইশারা বা আলামত ও তার খন্ড প্রলয়,
তা বিধাতার অবাধ্য বিপথগামী ও অত্যাচারী অপরাধীদের কারণে ঢালাও শাস্তি বলেইতো মনেহয়,
দূর্গ-প্রাসাদ কোথাও নিরাপদ নয়
অন্যায়, অপরাধ ও অহংকারই এনেছে এই মহাঅবক্ষয়,
স্বীকার করো সব অপরাধ, মানো গোলামীর হার, তার আনুগত্য, বশ্যতা ও পরাজয়,
বিজ্ঞান ও সভ্যতার নামে দেখেছি কত অশ্লীলতা ও পেয়েছি পশুর মত বর্বরতার শত-সহস্র  নগ্ন পরিচয় ।
অত্যাচারী অপরাধী ধনবান ও বিত্তশালীগণ,
যদিরে অন্ধকার দেশে হয় ভ্রমন ও অসহায় এক নতুন জীবন,
শুধু চিন, ভারত ও বাংলাদেশ মিলেই অসহায় মৃত্যু হলে এককোটি জন,
কিবা এ দুনিয়ায়ই হলে এমন এক দুঃসহ জীবন,
সোনাদানা ও অর্থ সবই আছে, শুধু খাবার নাই তবে কি হবে তখন,
গাড়ী আছে তেল নাই, বাড়ীতে বিদ্যুত গ্যাস ও পানি নাই, কি করবেন ঐ ধনীগণ,
যেথা ডাক্তার নাই কোন ঔষধও নাই, তবে কোথায় যাবেন ঐ ধনী ও অসুস্থ্য দরিদ্রগণ কি করিবে তখন,
ক্ষমতাসীন যত রয়েছে সকল,
সর্দি-কাশি জ্বর হলেই যেসব দেশে যেতেন বেধে দল,
তারাই এখন যেন হয়েছে মৃত্যুপুরি, থামছেই না নেমেছে যেই মরণের ঢল,
নিজেদের পাপের কারণে,
আবার আমরা যাবোকি চলে বহমান ধ্বংসের ঢলের সনে,
হাজার বছর পিছনে, যদিরে ঠিক এমনই হয় পাচ্ছি ভয় ও বসে আমি ভাবছি যেমন,  
এমন কি হতে পারেনা, শুধু শিকর, বাকল, তৃন, লতা-পাতা ও তার ফুলফলই বাঁচাবে বিশ্বের কোটি জীবন ।
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।

দর্পন - ১৩

কারো কোন কাজকাম নাই,
নাই দুহাতে সুদ ঘুষ ও হারামের কামাই,
কেজানে কদিনের তরে ঐ ধ্বস থেমেছে এখন,
দূর্নীতি অনিয়ম ক্ষমতার অপব্যবহার ও সীমালংঘন,
কত অন্যায় অবিচার অত্যাচার নির্যাতন জুলুম ও নিপীড়ন,
কেজানে প্রভু, ধন্যবাদ তাদেরে তবু, কদিনের তরে তারা হয়েছে সংশোধন,
তাই মন বলে অনেক ক্ষতি হলেও, শত গুনাহের হাতেপায় যেন এখন পড়েছে বাঁধন,
আলসেদেরই এখন বেশী মজা, শুধু মোবাইল টিপা’ই যেন কাজ,
নাই ইটাখোলা ও গাড়ীর ধুঁয়া কিবা কোন হর্নের বিকট আওয়াজ,
ভালোই হয়েছে নাই কোন যানজট,
হাতের অনেক জরুরী কাজও যা করে দিত ওলটপালট,
পাল্টে গেছে বড়বড় শহরগুলির ছুটে চলা আর আগে যাবার ঐ নগ্ন দৃশ্যপট,
চিরন্তন ঐ প্রতিযোগিতা নাই, কে আগে যাবে কার,  
পায়ে হেটে বা সাইকেলে চলা পথিক নাকি গাড়ীগুলির ড্রাইভার,
দেখেছি অসাবধানতায়, এমনি করেই কত প্রাণ যায়,
কালো পথ লাল, আচমকা মৃত্যু, নিত্য আহা সড়ক মহাসড়কের যন্ত্র দানবের দূর্ঘটনায় ।
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।
একজন ব্যস্ত চঞ্চল স্বামী ও বাবা,
হয়ে গেছে যেন এখন, প্রাণহীন অসার ও হাবা,
দেহ ও মনটা চব্বিশ ঘন্টা সময় ধরে,
জীবনে এই প্রথম, একসংগে এত কাছাকাছি সবাই ঘরে,
স্বামী-স্ত্রী ও বাবা-সন্তান একে অপরে,  
সবাই সবার জানের জান, কত পেরেশান যখন কেউ থাকে বাহিরে ।
পুরুষের কি কভু ঘরকাজ করা সাজে,
তবু এখন দেখি সাহেবেরা কেউ জড়সড় নহে সেই লাজে,
কত ভালোবাসে, দাড়িয়ে বিবিদের পাশে, করছে সহায়তা তারা গৃহস্থালী সব কাজে,
জীবনের সব প্রয়োজন উপচে পড়ে,
উথলে উঠে উঞ্চ মধুর পরশ ও সোহাগ আদরে,
কিছু বাকী নাই মন যেন তাই সবার গেছে একেবারে কানায় কানায় ভরে,
আর যেথা অনটন প্রাণপণ শুধু রণ আর রণ, টানাপোড়নের নির্মম পেষণে পড়ে,
মধুর প্রেম যেন হায়, পালিয়ে যেতে চায়, নাহলে নিরবে কেবলই ছটফট হাহাকার করে,
যদিও কবির কলমে আঁকা জীবন যেন এখন আটকে থাকা এক বিশাল ফেরী মাঝনদীর চোরা বালুচরে,  
এখন আবার নামাজ কায়েম হয়েছে কত ঘরে,
সোবহানাল্লাহ - স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানেরা মিলে ঘরে জমাতে নামাজ পড়ে ।
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।  
কোলাহলময় জনবহুল শহর এখন একেবারে শান্ত,
হাজার পেশার খেটে খাওয়া কোটি জনতার ব্যস্ত চলাচল হয়েছে যেন ক্ষান্ত,
কি করে কেমনে চলে কি খায় তারা, ভেবে আমি হয়ে পড়ি দিশাহারা, পাইনা খুঁজে তার প্রান্ত,
চরম গরমে ক্লান্ত পথিকের ছাতা,
বড় বড় ঐ বৃক্ষগুলি দাড়িয়ে উঁচু করে তাদের মাথা,
সহস্র শাখা তাদের সেজেছে যেন আবার লয়ে ধূলীহীন ঘন সবুজ পাতা,
সবুজের এমন হরষে মাতন,
পাখীদের নির্ভয় কলকাকলিময় অবাধ বিচরণ,
না চেয়েও এখন,
নাই প্রকৃতি ও পরিবেশ দূষণ,
নির্মল বায়ু ও বৃষ্টিরযে বড় বেশী প্রয়োজন,
পাচ্ছি আমরা মানুষের অনেক মংগলময় ও মূল্যবান অর্জন,
এ সবই নাহয় বুঝলাম,
এসব পেলাম কিবা নাইবা পেলাম,
মানুষের সুস্থ্যতায় বেঁচে থাকার জীবনায়ুরওযে অনেক বেশী দাম,
তারচেয়ে বেশী প্রয়োজন ও বেশী মূল্যবান,
বিশ্ব জুড়ে দারিদ্রতা বিমোচন – সবার তরে অন্ন, বস্ত্র, স্বাস্থ্যসেবা ও বাসস্থান ।
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।
আমি জানতে চাই ও খুঁজে বেড়াই,
এখনও অসীম জানার বাঁকী রয়েছে পড়ে যেথা যাহা তাই,
প্রভু আমি সামাণ্য যেটুকু জানি তাহা চাই,
ঘরে ঘরে সবার তরে অন্তরে বাহিরে দিতে মোর বাসনা ছড়াই,
ঐ আলোর পিয়াস ও করে ভালোর চাষ হতে চাই তব প্রিয় গোলাম দাস, যেন আমি ঐটুকু পাই ।
প্রভুরে একটাইতো মোদের জীবন,
মানুষ সৃজনের তোমার লক্ষ্য যেন হয়রে সাধন,
দয়া করে দাও তাই, যেন আমরাও সবে পাই তার স্বাদ আস্বাদন,  
তাই করাও যাহা তুমি চাও, যেন গোলাম ও মনিব দুজনেরই সুবাসনাগুলি হয়রে পূরণ ।
বিদ্যান, ক্ষমতাধর ও বিত্তশালীগণ,
না’ই যদি বাঁচেরে জীবন তথা হলে তব মরণ,
তবে কি করবে, কি হবে আর দিয়ে তোমার এই এত বিত্তধন,
জিম্মাদার ও ত্রাণ বন্টনকারীগণ,
দুঃক্ষময়, চারিদিকে যা শুনছি ও দেখছি এখন,
নাকের ডগায় যেন শেষ দম আর দুয়ারে দাড়ায়ে তার মরণ,
একি অবাক কান্ড, এখনও কেন মানুষ দেখি এত লোভী ও অমানুষ এমন,
দরিদ্র অসহায় ক্ষুধার্ত মানুষের খাবার তারা করছে চুরি, আত্মসাৎ ও লুন্ঠন ।
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।

দর্পন - ১৪

করোনার অনেক মহান অবদান,
হয়েছে নরম মাটি গলে অনেক কঠিন পাষাণ,
যদিও অনেক হরেছে ও বহু টুটেছে,
দেখি এ পংকিল সমাজে বাহারি অনেক ফুলও ফুটেছে,
সব দীনতা ও হীনমন্যতা ভুলে,
ফুটেছে নয়ন, টুটেছে যেন আঁধার মনের সব জানালা দুয়ারগুলি গেছে খুলে,
পাড়া ও মহল্লায়,
স্থানীয়ভাবে সব এলাকায়,
চলছে পূরোদমে দরিদ্র ও অসহায়, মানুষের ত্রাণের কাজ ধনীদের কাছ থেকে চাঁদা তুলে,
অনেক স্বার্থবাজ,
যারা ছিল চালবাজ ও ধোঁকাবাজ,
বদলে ফেলেছে যেন তাদের পথ ও জীবনের সাজ,
বহুদিন পরে পেয়েছে কোন ভালো কাজ, অনেক গলদ ছিল যাদের মূলে,
আবার কিছু মানুষ নাম লিখিয়েছে পশুর দলে,
কেউবা ক্ষমতার দাপটে, গায়ের জোরে কিবা অর্থ ও বাহুবলে,
আবার কেউবা পড়ে লোভ মোহ ও অনটনের নির্মম ঘের কঠিন ফের যাতাকলের তলে,
এ সমাজে কত মানুষ আছে নানা ধোকা প্রতারণা ও চালবাজি করেই চলে,
শিক্ষা নাই কোন দক্ষতা ও গুন, কিবা জীবিকা ও উপার্জন - কি করে তারা খাবে তাহলে,
জেগেছে কারো উদারতা, মহত্ব, করুণা ও মানবতা,
মানুষের তরে হতে পারে তা এক, জাগরণ জোয়ার শুভ নব বারতা,
হে প্রভু, আমার হয় এমন ধারণা,
কভু তারা আর করবেনা কোন জুলুম অন্যায় অবিচার অপরাধ ও গুনা,
লোকের সামনে তারা এ দুনিয়ায়,
যদি নিজ গুনাহের আযাবের বোঝা চোখে দেখে হায়,
অংগীকার করে আর, আপনার হাতে নিজের মাথে তা লয় তুলে,
তাহলে হয়তো কিছুটা সংশোধন হবে, নাহলে আবারও তারা সবই যাবেরে ভুলে,
দয়া করে মাফ করে দাও এবার,
শেষবারের মত সংশোধনের সুযোগ দাও তাদেরে আর একবার ।
হে প্রভু মহাপাকজাত,
না যদি কেহ মেনে লয় তব হেদায়াত,
তবে আর বলো দোষ কার, তারা না চাহিলে নাজাত,
তোমার ও আখেরী নবীর পক্ষে তা ছিল, আমার লিখিত দাওয়াত,
কি আছে জানিনা ঐ পাপিষ্ঠদের মন্দ কপালে, তব ইচ্ছে হলে তারা যাক নিপাত,    
নিজের কাল, জাতের কলংক ও সমাজের পংকিল আবর্জনা তবে হোক তব অভিশম্পাত,
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।
তুমি যদি চাও,
তবুও নাহয় এবার বাঁচাও,
হে প্রভু সুস্থ্যতায় বেঁচে আছি তাই,
তব শাহী দরবারে অপার শুকরিয়া জানাই,
সাধ্য সুযোগ সবই দিও তুমি করোনা মোরে একাজে মানা,
অসহায় মানুষেরে আমার কিছু দান ও সেবা উপকার করার হয়যে বাসনা,
যদি দাও পানাহ সামাণ্য পূণ্য করার সুযোগ তবে তাই হবে মোর মরণে বাঁচার উপায় ও জীবনে সান্তনা,
তুমি দাওগো তোমার গোলাম সবারে তার,
দেখুক ও ভোগ করুক অর্জিত তার অর্ধেক নায্য শাস্তি ও পুরস্কার,
প্রয়োজন জানা, হোক মজবুত বিশ্বাসখানা, এ জীবনে যে যার কর্ম্মে যেটুকু তারা হয়েছে পাওনা ।
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।
এমনটাই চাই তাই যেন হয়,
একটা নতুন পৃথিবী হয় সুখ-শান্তিময়,
সত্য আর অক্ষম, অসহায় ও দূর্বলেরই হয় বিজয়,
কেউ কারো আর গডফাদার কিবা নকল নষ্টপ্রভু ও হুমকি নয়,
হতেও পারে, যারা বেঁচে রবে দেখিবে লোকে হতবাক হয়ে ঐ সে বিস্ময়,
বড় বড় দেশগুলি সব হয়তো ভেংগে টুকরো টুকরো হবে, তারা ছোট ছোট দেশে যদি পরিনত হয় ।
মানুষগুলি সব পাগলের মত ছুটছে বনে,
কারো শুধু এই ভাবনা জুলুমের হাত থেকে বাঁচিবে কেমনে,
আবার ঔষধি গাছের আকুল সন্ধানে,
কেউবা রোগ-বালাই হতে মুক্তি লভে চাহিছে বাঁচিতে প্রাণে,
সব জুলুমের হলে শেষ,
বদলে যাবে সর্বহারা বিশ্ব বস্তিবাসীর বেশ,
পলকের আগে সময় লাগে তোমার তাতে শুধু এমন এক নিমেষ,
পুণ্য রাজার সুশাসনে যদি ধন্য হয় বিশ্বময় এমন এক নতুন সমাজ ও সোনার দেশ,
সেতো কঠিন কিছু নয়,
প্রভু তুমি শুধু, কুন বললেইতো সবকিছু হয়,
তা হয়কি নাহয় সে মোর ভাবনা নয়, রাখিলাম দরবারে তোমার এই আরজিখানা আমি করে পেশ ।
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।  

দর্পন - ১৫

যদি বিধির এমন করুণাই হয়,
সবকিছু ঘটে অনুকুল আর হয় ভালোয় ভালোয়,
তবেই সবে আসিবে ফিরে এই প্রত্যয় নাহলে আর কভুই নয়,
বসতি ক্ষেতি-চাষ, স্বজন, ঘর-সংসার ও মায়ার কারণে,
যদি সাধারণ এক প্রজায় রাজা হয়, আর অত্যাচারী রাজা চলে যায় বনে স্বেচ্ছা নির্বাসনে,
শান্তিপ্রিয় নিরীহ মানুষেরা করেছে পণ, সব ছেড়ে নাহলে বাকীটা জীবনই তারা কাটাবে বনে,
মহাশক্তিশালী বড় দেশগুলি শূন্য হলে আর দরিদ্র ছোট দেশগুলি ধনী হলে খুব মজা হবে তখন জীবনে ।
খলীফা ওমর ও হাজী মোহাম্মদ মহসিন,
সম্রাট নাসিরউদ্দিন ও শেখ মুজিব আর কি আসিবেনা কোনদিন,
কবে শোধ হবে তাদের, চৌদিকে যাদের সীমানার ঘের, দারিদ্রতার অচল একটা ঘানী টানার আজীবন ঋন ।
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।  
মানবতা অবহেলিত,
তা দেখে দেখে হই আমি পরম মর্মাহত,
এ সমাজেই হয়েছে তাদের জঘন্য সব কুকান্ড প্রমানিত,
মরমে ঘা লাগে, করুণা জাগে কি করিব আমিযে এক অক্ষম ভাগ্যাহত,
দয়া দরদ মমতা বিবেচনা সুবিচার, সহানুভুতি ও সহযোগিতা কবেই হয়ে পদদলিত হয়েছে নিহত,
মানুষগুলি সব পশু হয়েছে সেই কবেইতো, তবে জানিনা কেমনে,
তাইকি বঞ্চিত কোণঠাসা সব ভালো মানুষেরা যেন পালিয়ে বাঁচিতে চায় গিয়ে গহীন বনে,
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।  
তোমার কাছে আছেও তাই,
মোরা এমন একটা নতুন পৃথিবী চাই,
যেথা ধর্ম, বর্ণ ও ভাষা হোকনা তা যার যাই,
শান্তিতে, সম্মানে ও নিরাপদে সবাই বাঁচতে চাই,
প্রতিবেশী দেশগুলি সবে হয় যেন খাটি বন্ধু কিবা ভাই,
বিশ্বজুড়ে মিতালি হবে শান্তি-সুখে তেমনই রবে ছোট-বড় সবাই,
একই পিতা বাবা আদমের সন্তান আমরা সবাই, মানুষে মানুষে কোন তফাৎ ও ভেদাভেদ নাই ।
ধর্ম ও ভাষা হোক যার যাই,
সবার উপরে মানুষ সত্য, সব মানুষই একে অপরের ভাই,
সত্য, ন্যায় ও মজলুমের বিজয়ের ডংকা বাজা,
এ জুলুম ও অত্যাচারের মৃত্যুদন্ডই হওয়া চাই, তার নায্য সাজা,
কোন ধর্মাচার, উপাসনালয় কিবা অনুসারির উপর কেউ পারবেনা হতে চড়াই,  
একটাই ঘর, এক পরিবার, কারো মনে নাই হিংসা বিদ্বেষ ক্রোধ কিবা কোন বাহাদুরি ও বড়াই ।
এমন রাজ্য ও রাজা চাহে সবাই,
দায় লবে ও হবে নিরীহ, অসহায় ও মজলুমের সুরক্ষার ঠাই,
কোন মিথ্যা মন্দ অপরাধ কিবা অপরাধীর তরে, কোন অনুকম্পা বা পক্ষপাত নাই,
সত্য, সুন্দর, হক ও ন্যায় বিচারক, যে হবে দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালন এমন রাজা’ই আমরা চাই ।
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।  
শুধু এইতো সকলের আশা,
মানুষে মানুষে হবে ও চিরকাল রবে ভালোবাসা,
তাই হোক প্রভু তবে তাই হোক,
এমনই চায় বিশ্বের যত নিরীহ শান্তিপ্রিয় অসহায় লোক,
দস্যিপনা কেউ চায়না,
প্রভুর কাছে গোলামের এইতো উপাসনা,
ভালোবাসেনা কেহ কুটিলতা, কপটতা ও ধোকা-প্রতারণা,
তারা যেন সবখানে ইতিহাসের মত হারে,
দুরন্ত দাপটে মাথা উঁচু করে আর কভু যেন উঠে না দাড়াতে পারে,
বড় শক্তির বড় দেশগুলি যারা যুদ্ধ বাঁধায়, পাষবিক উম্মাদনায় নিরপরাধ মানুষগুলিরে মারে,
তারা চরম স্বার্থবাজ,
আসলে আসল দাংগাবাজ ও জুলুমবাজ,
এটাই লক্ষ্য এটাই চায়, এটাই যেন তাদের কাজ,
ধ্বংস নহে, ক্ষুধার্তরাই যেন কেড়ে লয়,
সব কথাই মধুর মিথ্যা বচন সবই তাদের অভিনয়,
মহাশক্তির অবসান হোক ও হোক তাদের সব সম্পদের ক্ষয়,
যারা প্রভাব খাটায়, আধিপত্যটাই চায় তাদের হোক চরম ভরাডুবি ও পরাজয়,
সত্য ও ন্যায়ের রাজ সারা বিশ্বজুড়ে যেন কায়েম হয় এবং তা অমলিন চিরদিন মাটির জগতে টিকে রয় ।
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।    

দর্পন - ১৬

করো করুণা,
করো প্রভু মার্জনা,
কবুল করো মোর এ আরজি ও প্রার্থনা,
হে প্রভু রক্ষা করো, বাঁচাও মারো, তুমি করোনা তা মানা,
জানি অন্যায় অপরাধ হয়েছে মোদের পাহাড় সমান,
কেমনে করিব তা অস্বীকার, তোমার কাছে যার রয়েছে হাজার স্বাক্ষ্য-প্রমাণ,
উদ্ধার করো, হে প্রভু মহান,
তুমিযে করুণাময়, বড়ই মেহেরবান,
ক্ষমা করে দাও, হেফাজত করো, করোহে ত্রান,
হেদায়াত করো, দেখাও আলো ও ভালোয় ভরা সহজ সরল ঐ পথখান,
আরোগ্য করো, দাও সবারে সুস্থ্য পুণ্যময় দীর্ঘ জীবন, নিরাপদ সুখশান্তি ও সম্মান করো দান,
যারা বিশ্বাসী অনুগত তবু অসহায় মজলুম,
ক্ষুধা ও রোগ যাতনায়, তারা ঢের কষ্ট পায়, নিরবে সব সয় তবুও চোখে নাই পানি নাই ঘুম,
তবু রয়েছে বসে তব দয়ার আশায়,
কেউ নাই কিছু নাই, তারা একেবারে নিরুপায় অসহায়,
দূর করে দাও অনটন, যেন তারা পেটভরে খেতে আর রোগে চিকিৎসা পায়,
দূর্বল ও অক্ষম, যেটুকু যা আছে তা’ও কমকম, আরোগ্য করো সাহায্য করো বাঁচাও তাদের প্রাণ ।
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।  
মাফ করে দাও সকলের সব অপরাধ,
দূর করে দাও, যার যত আজীবন কষ্ট ও বিষাদ,
ধনী গরীবের চিরন্তন গোপন ঈর্ষা, বিদ্বেষ, বিরোধ ও বিবাদ,
যাদের হাতেপায়ে, চোখে ও দেহমনে দেওয়া আছে তব বিধানের বাঁধ,
সামর্থ্য নেই কোন ভালো কাজ করে, অন্তরে তাই গোপনে কেঁদে মরে অপূর্ণ কত শুভ সাধ ।
চাহিলে তুমি করো ঐ বাসনা পূরণ,
যারা চাহে করে, সামাণ্য কিছু মহৎ সৃজন,
সুচিন্তন ও সত্য-সুবচনে হতে চায় তারা সুবোধ সুজন,
অনুভবে চেতনায় বুঝি হয়েছে ওরে, বোধ-বিবেকের জাগরণ,
আর কোন ভালো কাজ নাই, বুঝি তাইতো শুধু বসে গবেষণ ও দরশন,
তার শত রঙ বাহারে অবিরত সারাক্ষণ, কাগজে কলমে দমেদমে জীবনের সহস্র গল্প লিখন,
এমন একজন,
ফুটেছে যার তৃতীয় নয়ন,
বলো কবে লাভ হবে মোর সে জীবন,
রয়েছে আকাশের মত অসীম ও সাগরের মত গহীন মন,
দেখিব আমি হয়েছে তার, মানুষ হবার সে অপার সাহসী সাধনার সাধন ।
যারা চোখ থেকেও কানা,
মানেনা বিধান কিবা তার সীমানা,
তারাও আজ যাচে করুনা,
তুমি মোখ ফিরিয়ে থেকে করোনা তাদেরে মানা,
দিওনা সে হাতগুলি ফিরায়,
যারা ক্ষমা চায় অপরাধী আত্মার অনুশোচনায়,
এবার নাকি সব বিত্তশালী ও অপরাধী আসামী,
গোপনে তারা নাকি করেছে এমন পণ, তোমার পথে দান করিবে, হবে ভালো মানুষ, শ্রেষ্ঠ ও দামী ।
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।  
করিছে নিরবে গোপনে প্রার্থনা,
কত নেককার দরবেশ ও আউলিয়া তোমার জানা,
বলিছে বলবেনা আমার আমার, আর নাকি ঐ ভুল করিবেনা,
আগের মত শত অন্যায় অপরাধ, জেনেশুনে ও ইচ্ছে করে আর কোন গুনাহ ।
এ মুনাজাত প্রভু করো কবুল,
ক্ষমা করে যার যত অন্যায় অপরাধ দোষ-ত্রটি ও ভুল,
তাদেরে মানুষ করো, যারা শুধু ধন আহরণ ও আপন ভোগেবিনোদনে রহে মসগুল ।
তারা নাকি সব বুঝে এখন,
তারে নাকি চিনেছে এবার যার দান এ জীবন, এই এত নেয়ামত ও ধন-জন,
সেতো দুদিনের ধার, আসলে দাদন,
যখন ইচ্ছে হবে তা কেড়ে লবেই লবে ঐ মহাজন ।
তা কি লোকের বিশ্বাস হয়েও হয়না,
যার ধন সে’ই করিবে হরণ তাকি মনে পড়েনা,
কেনযে তারা পুণ্যময় কাজে বিনিয়োগ কিবা দান করেনা,
মরণেতো সবই হারায়, হাতছাড়া হয়ে যায় সবকিছু পূরো ষোলআনা,
টাকাটা হয়ে যাবে হাতছাড়া – হয়তো জীবনটারেই হয়নি তাদের একটুও জানা,
বলে অবুঝ বোঁকা মন, কমে যাবে তার ধন, বুঝি তাইতো তাদের এই মিথ্যে ভয় ও ভুল ধারণা ।
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।

দর্পন - ১৭

কেমনে দেখিবে কানায়,
কেউকি দেখেছ এই এত বড় দুনিয়ায়,
কোথাও এমন মনিব ওরে, যে কভু নিজে নাহি খায়,
বিশ্বজুড়ে তার কোটি গোলাম ও সৃষ্টিরে হাজার মজার খানা আজীবন পেটভরে খাওয়ায়,
মেতে রয়ে এক দারুণ মজার খেলায়,
কোন হেয়ালে সারাটা দিন, না বলে মোরে গেছে চলে হায়,
বিভোর ও বিলাসী এক উড়াল মন,
নানান কাজ আর ছিল তার এক ব্যস্ততার জীবন,
আহা সুধীগণ, বলো মানুষ হবার সময় তারা আর পেলোবা কখন,
এত ধন রয়েছে যার,
সবকিছুতে বাহার ও অমিতাচার,
সকল কাজে ছাপমারা এক আধুনিকতার,
বাসনার কাছে হার মেনেছে, আত্মার উপর অত্যাচার,
সহন, সাধনা ও বিসর্জন বিনা হয়কি সাধন,
স্বাধীনতার নামে দেখি স্বেচ্ছাচারিতা, সেযে এক সীমানা লংঘন,
অনুগত ও বিশ্বাসীগণই প্রিয় হতে ঠাই পান,
চাই সাচ্চা ঈমান, নাহলে ভাই কেমনে হবে বলো মুসলমান,
আল্লাহর বিধানের অবাধ্যতা নয়, গোলামী কি হয়, অধীনতা ও আনুগত্য অতিশয় প্রয়োজন ।
দেখেছি অনেক যত বেশী হয় ধন,
জানিনা কোন কারণে, তত ছোট হয়ে যায় যেন মন,
এ জীবনটারে লয়েছে গড়ে তারা যেন সাতরঙে ভরে সাজানো তাদের মনের মতন,
আজ ওরে হলে মরণ,
ঐ মরণে সবকিছুই হারাতে হবেই যখন,
ধন আর ভোগবিনোদনের সে এক ভিন্ন জগত,
কোন মানুষের মরণ হওয়া মানেইতো যেন তার কিয়ামত,
অ মুসাফির বাসিন্দা তবে, সুযোগ আর হবে তার কবে, হতে শুদ্ধ শোধন, বিচক্ষণ, সুবোধ সুজন ও সৎ ।
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।  
যারা চোখ থেকেও অন্ধ,
তবু তুমি দিওনা তোমার, করুণার দুয়ার করে বন্ধ,
থেকেও এত বিদ্যা ও এত ধন কেনরে লোকজন হয় এত মূর্খ ও কপাল মন্দ,  
আর কত পথ চাও,    
এবার গর্জে উঠুক চমকে দাও,
হে মহারাজ, অদেখা তোমার আসমানী কামান,
একেশ্বরবাদী আসল মানুষ, হোক বা নাহোক সে মুসলমান,
দাও সবারে নির্মল নিঃশ্বাস, সুস্থ্য-সবল শান্তির আবাস, বিশ্বজুড়ে ঐ সুবাতাস করোহে দান,  
গোলাবারুদ নয়, চাহি যেন ফাঁকা আওয়াজ হয়, যেন পায় ভয় আর সবে হয় তারা শুদ্ধ ও সাবধান,  
ঢেলে দাও রহমত,
দান করো তব শত নেয়ামত,
তাদেরে দেখাও প্রভু তাদেরে দেখাও, তোমার অসীম অপার কুদরত, কেরামত ও কুয়ত ।
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।  
অচল বিশ্ব মানুষের জীবন,
স্থবির হয়ে পড়েছে গোটা বিশ্ব ভুবন,
বদলে যাওয়া জলবায়ু হাওয়া, পরিবেশ ও প্রকৃতি,
কেজানে তা শেষে হয়, কেমন তার ধরণ, কোন রেওয়াজ ও রীতি,
আসন্ন হুমকির মোখে দেখছি এখন,
সারা বিশ্বের মানুষ ও তোমার সকল জীবের জীবন,
কেন আমি ভাববো তা বসে একা,
তবু আমি বলে গেলাম, আমার উৎকন্ঠার কথা ও লিখে ঐ লেখা,
দেখি পাই কিনা এমন জন, পরম সাহসী ও বিচক্ষণ, দল বাঁধিতে আমার সংগে দেখা,
প্রতিটি শব্দ ও বাক্যই মূল্যবান,
যাদের ঢের আছে,
না’ও হতে পারে তাদের কাছে,
যারা পেয়েছেন ও আকন্ঠ ডুবে আছেন ধনের মাঝে অনন্য এক সুখী জীবনের সন্ধান,
যাদের কিছু নাই ও কেউ নাই, তদুপরি অসহায় এখন পূরো বিশ্বটাই, তারই করুণ পতন পাঁচালীর বয়ান,
এ বিশ্ব-ঘর কি শুধু আমার একার,
শত কোটি জনতার, তাতে আছে কত নেককার, পোষ্য সবাই এক বিধাতার ।
হাতে নেই একটু সময়,  
দেখেছি সচরাচর এমনইতো হয়,
ঐশী অনেক নেয়ামত প্রাপ্তি হতেও তারা বঞ্চিত রয়,
দূর্ভাগ্যময়, যাদের ধর্য্য কম বিরক্তি বেশী তাদের মেজাজ করে রেখেছে দখল ও জয় ।
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।

দর্পন - ১৮

চাষীর মাথায় হাত কেমনে পূঁজি উঠাই,
ক্ষেতের ফসল ধরছে পঁচন কোন ক্রেতাই নাই,
মহা বিপর্য্যয় ধ্বস, এ আপদ ও নিদান হতে লও তড়াই,
তারা কেমন আছে, তাদের কি উপায় মাওলা,
দুই কোটি শ্রমিক আর ঐ তিন কোটি যারা রোজকার ফেরিওয়ালা,
একজনে একদিন কাজ করে কামায় আর, সাতজনের পরিবার খায় তিন কিবা দুইবেলা,
নতুন করে এ বিশ্বটারে দাও গড়াই,
নেককার দলপতি ও ঐ নেতাইতো চাই,
আমরা সকলে যেন খুউব ভালো মানুষ হয়ে যাই,
তোমার ইচ্ছে না হলে তাই,
যত অনাচারী পাপাচারী না ফেরার দেশে দেও তাড়াই,
মংগল ও কল্যাণে বিশ্ব মানবতার জয়গানে জগতটারে দাও ভরাই ।
সারা বিশ্বজুড়ে যত তোমার গোলাম,
জীবনে চাহে তারা একটু শান্তি-সুখ, নিরাপত্তা ও আরাম,
তা যদি নাও হয়, সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ হবার মত দাও একটু সুযোগ, সম্মান ও দাম,
তাও যদি নাহি পাই,
দুঃক্ষ নাই প্রভু কোন দুঃক্ষ নাই,
দিওনা পাঠাই, বাঁচতে চাই প্রভু বাঁচতে চাই, হতে নির্মম কঠিন তোমার ঐ আযাবের জাহান্নাম ।
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।  
এ এক পবিত্র মহান দোয়ার মাহফিল,
কবুল হতেও পারে, দয়াময় বিধাতার দয়া হলে একতিল,
আসুন আমরা সবাই হাত উঠাই,
সম্মিলিতভাবে কাতরে দোয়া করি ও দোয়া চাই,
হে প্রভু রহমত ঢেলে দিন, বিধাতার কাছে এ মিনতি জানাই,
মিথ্যা ও মন্দটারে ফেলে পদতলে,
এসো দলেপিষে মারি সবে মিলে একদলে,  
সিপাহী হই কাফেলা বানাই,
ঐ সবার হাতে ধরি ভাল করে বলি তাদেরে বুঝাই,
না বুঝিলে না মানিলে আঘাত করি, নাহলে যদি আর নাজাত নাহি পাই,
তাহলে প্রতিবাদ করি, দূর্বার প্রতিরোধ গড়ি, তাছাড়া বুঝি আরযে বাঁচার কোন গতি নাই,
চারিধার ঘিরেছে ঘন অন্ধকার,
পাপের পরিনতি নিশ্চিত ধ্বংসটায় বিশ্বময় একাকার,
মাটির এ জগতে আর মিথ্যা ও মন্দটার দেবোনা ঠাই, এসো করি এ অংগীকার,
তাই করো প্রভু তুমি যাহা চাও,
মানুষ নামের সব পশুগুলিরে এবার মানুষ বানাও,
নাহলে আলো ও ভালো আর সত্য ও ন্যায়ের রাজ মোদেরে দাও,
জানিনা কেমনে হবে তুমি কবে করিবে, কায়েম করিতে ইচ্ছে হলে তাদেরে তাড়াও,
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।

দর্পন - ১৯

একজনের তিন জীবন,
হয়েছে চেনাজানা হয়েছে দরশন,
যত ধন-জন, সুখ-শান্তি ও যখনই হোক মরণ,
সাফল্য বিজয় হয়বা নাহয়, নিজেরে যারা তার দরবারে করতে পেরেছ সমর্পন,
শির রেখে তার চরণে নিরবে গোপনে একটু সবর, সেতো এক বিশাল বিসর্জন,
যে যাই বলে তুমি হেরেছ তাতে কান দিওনা, করোনা তা শ্রবণ,
আসলে তারাই নির্বোধ কানা, হয়নি এখনো কিছুই জানা, ধন্য জীবন তব হয়েছে তোমারই সাধন ।
এসো সবাই পূত পবিত্র হই,
কে দেবে ঠাই, বলো পালিয়েইবা যাবো কই,
রাজা উজির মহাসেনাপতি কেউইতো তার জালের বাহিরে নই,
এইতো সঠিক সময়,
এমন সুযোগ জীবনে আর কভু না যদি হয়,
দুহাত ভরে ঝুলিতে করে যার যত ইচ্ছে ওরে তার করুণা কুড়িয়ে লই,
মনটারে ভালকরে ধুই, সে আমি আপনি তুমি ও তুই, আমরা সবাই যেন এমনই শুদ্ধ-শোধন হই,
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।  
চাহিলে মন চাহিলে দিল,
এ মহান মাহফিলে ঘরে বসে হোন সামিল,
আহসান পাবে, দূর হবে সব আপদ নিদান বালাই ও মুস্কিল,
তাই যেন হয় তাই যেন পাই, আসুন আমীন  - আমীন  - আমীন আমরা বলি সবাই ।
কারো হয়কি নাহয় তা বিশ্বাস,
বুঝি মোদের আপন দোষে পড়ে বিধির রোশে এ বিনাশ,
না না এ করোনা শুধু কোন রোগ নয়, আসমানী গযব ও কালের শ্রেষ্ঠ ত্রাস,
আমার ধারণা বলাও যায়না, হয়তোবা তা করে যেতেও পারে সারাবিশ্বের মানুষের এক মহা সর্বনাশ,
ছোটছোট ভালো কথা ও কিবা ভালো কাজ,
পিছনে ফেলে আসা কোন দিন, হয়ত আগামীকল্য কিবা আজ,
সত্য চিরদিনই হয় মহাপুণ্যময়,
ছোট বলে কি তা বলতে কিবা করতে তাই হয় লাজ কিবা ভয়,  
হোক সে পুণ্য যতই ক্ষুদ্র, হতে পারে তাতে হয়তো শোধ মহজনের ঋন ও কোন বিশাল বিজয় ।
সব অদেখা গোপন তোমারতো সকলই জানা,
দূর করে দাও, তব সব গোলামের সকল দুঃক্ষ-কষ্ট অনটন যাতনা-বেদনা পেরেশানি ও তাড়না,
হে প্রভু পরওয়ারদেগার, বলো কি নাই তোমার কাছে আর তুমি কি পারনা ।


            রচয়িতা/লেখক/কবি

             আবু হক মুসাফির
(আবু সাইয়িদ মোহাম্মদ মাহমুদুল হক)
সেল ফোন-০১৬২৭৮ ৯৪৭৯৭/০১৩০১৭ ১৯৫৫৩
ইমেইল-abuhaawk@ymail.com   &  dactarkhana24@gmail.com