পর্ব–০১

তিলে নাকি তালটা মিলে,
পোলার হাতে কভু ছোট্ট একটা কলা’ও দিলে,
লোকে বলে নাকি বুড়া বাবামার মনটা গলে, শুনেছি তাদেরে কাছে পাওয়া যায় ।
ভুখারে অন্ন দিলে পেটভরে,
তৃষিতরে জলপান ও রোগীর সেবা যেজন করে,
একদিন ওরে এ ভুবন ধন-জন সব ছেড়ে, সকলেই যখন চলে যাবেযে মরে,
ক্ষুদ্র কোন দানও তবু ওরে,
না, কোনদিন মুছে যাবেনা শতকোটি বছরে,
লেখা রবে তা, সে এক আজব সোনালী খাতা খোদার আরশের ঘরে,
খুশীতে তার উপরে যায়যে খোদার মনটা ভরে, উথলে উঠা তার বিগলিত করুণায় ।
ভিখারী কাতরে যা বলে,
মাখলুকের রিজিক কেমনে চলে,
কেউকি অনাহারে মরে লোকের দয়া না হলে,
সে কি সত্য নাকি ঐ বুলি শুধু ধনবানদের মন ভুলাবার ছলে,
না তা নয়, তাহলে কি আর কাউকে পাওয়া যেতো কভু ঐ দানকারীদের দলে,
একটি টাকা কেউ দান করিলে দুনিয়ায়, আখেরাতে নাকি সে তার সাতস সত্তর গুণ বেশী পায় ।
যেমনই বা যতই হোক সে দান,
ক্ষুদ্র কিবা বৃহত যাই হোক তা ওরে অনন্য মহান,
কথা মিথ্যে নয়, সব দানেরই আছে বা থাকিতে হয় কিছু বিনিময় প্রতিদান,
নাহলে কেমনে বলো তারা, বন্ধু কিবা আপন হয় ও রহে সে পিরীতির মান,  
কেজানে কেনরে ঐ মহান দাতা,
রেখেছেন যতনে ধরে তার সব গোলামেরই একখানা দেনা-পানার খাতা,
তবে কি দয়াময় বিধাতায়,
তার গোলামের কাছে ওরে ঠিকই কিছু পেতে চায়, আর সে আছেন অপেক্ষায় বসে ঐ আশায় ।
কেন এত নেয়ামত ও এত দান,
না চেয়ে কেমনে ওরে জগতের সবে পান,
না ই যদি সে তার, কোন প্রতিদান ও বিনিময় পেতে চান,
তরতাজা প্রাণ ছোট্ট এ জীবন,
স্ত্রী ও সন্তান, ভাই-বন্ধু কত প্রিয় ঐ আপন জন,
অগণিত ঐ বিত্ত-ধন, ভোগ-বিলাস ও বিনোদন,
কেন আবার হঠাৎ মরণ এসে সবকিছু তার অবশেষে করেযে হরণ,
ডানে-বামে, আগে-পিছে ও সংগে থেকে আজীবন, গোপনে নিরাকারে লুকিয়ে অজানায় ।
সারাক্ষণ তীক্ষ্ণ ঐ চোখে চোখে,
দিবানিশি বারোমাস যখন যেখানে যেমন বসবাস রাখে সে তারে দেখে,
যা তার আপনার ভাবে,
সমুদয় ঐ সবকিছুইতো সে ওরে সহসা হারাবে,
আহারে ধরে নিয়ে যাবে তাহারে মালামাল ও বিত্ত-বেসাত ধন চারিদিকে সব ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলে রেখে,
জানেনা সে যে এমনই এক রাজ প্রহরীর প্রহরায়, ঐ নজরবন্দি থেকে নাই যার কোন পালাবার উপায় ।
এক মহারাজা মহাজন,
কি নাই তার ও কি পারেনা সে করিতে সাধন,
আর বলো কি চাই কার, নিমেষে মিটিয়ে সবার সব চাহিদা ও প্রয়োজন,
দিয়ে অন্ন-বস্ত্র ও দাওয়াই তার, মহাবিশ্ব জোড়া এক পরিবার করিছে করিবেন চিরকাল লালন পালন,
সেতো ছিল মনিবের ঘোষণা করা অংগীকার ও দায়,
এক রাজার এক দেশ নাই যার করুণার শেষ, নাহলে বলো তার অসহায় গোলাম আর যাবেরে কোথায় ।

পর্ব–০২

সেইতো দাদন মহারাজার,
মানুষের তরে অগণিত ঐ দান তার মহাকরুণার,
না বুঝিলে তা কোন অধম গোলাম,
বলো আর রলো কই তার, সে ঐ মহাসৃষ্টির সেরা হবার দাম,
চোখ থেকেও যারা রইলো কানা,
তাই বুঝি তাদের ওরে বাহিরে ও ঘরে কিছুই চেনা-জানা হলোনা,
আহারে বলো তবে, অবুঝ ঐ মূর্খদেরে কে আর কেমনে কবে এতকিছু দেবেরে বুঝায় ।
দিনরাত আজীবন পেরেশান,
কত ভাবনা, কত শ্রম অবিরাম হরদম ছুটিছে দুরন্ত উজান,
আচমকা দিয়ে একটা হেচকা টান,
একদিন মানুষের এ জীবনের হঠাৎ ওরে হবে অবসান,
আসলে ছিল সবই যে ফাঁকি ও ধার, নিয়ে যাবে প্রভু কেড়ে তার দেওয়া সব দান ।
হোক সে আমীর, পেয়াদা, প্রহরী, ‍উজির ও নাজীর উঁচু খানদান,
মালিকতো নহে একজন অতি সাধারণ ইজারাদার, কেনরে চাহে এত ক্ষমতা ও সম্মান,
মাটির এ খাঁচার ভিতরে রাখা চুপচাপ গোপনে বসে থাকা, পোষ না মানা মানুষের অদেখা ঐ অবাধ্য প্রাণ ।
ওরে তাই এ জীবন ভাই ও তার প্রতিটি ক্ষণ মহামূল্যবান,
বসে নিরালে একা হিসাব করে দেখা, এ জীবনটার লাভ-ক্ষতি আর দেনা-পানা কি সমান সমান,
শত কাজ আর নানা ঝামেলায়,
নাকি শুধু ভোগ আর আরও পাওয়ার আকুল নেশায়,  
হারিয়ে অনেক সময়, বুঝি দাড়িয়ে ক্লান্ত জীবনের শেষ প্রান্ত কঠিন সীমাণায়,
অজানায় আজও রয়ে গেছে কত অনাদায়, কেন তবু ভুলে যাওয়া ও ভুলে থাকা মহারাজার দানগুলির দায় ।
শুধাবেন ক্ষোভে মহারাজ,
ওরে কি ছিল তোমার অতিব সহজ সেই কাজ,
কেন বুঝনি কত কবি সাহিত্যিক, দরবেশ, মাওলানা ও দার্শনিক করেছে বয়ান ও ওয়াজ ।
কেন হয়নি কোন ভাবনা ও দায়বোধ, এতটুকু চক্ষুলাজ,
যখন হবে মরণ, হতে পারে হবেই কাল কিবা পরশু না হলেওবা আজ,
দেখাতো হবেই হিসাবও দিতেই হবে, ঐ খাতাটা তহসিলদার রেখেছে যতনে করে ভাজ,
কে ঠেকাবে ওরে কোন সেনাপতি, অশ্বারোহী লাখো সিপাহী হাতে চমকিত তরবারি কিবা
মহাবীর তীরন্দাজ ।
তবু দর্পে বিচরে, কেনরে নাই কোন ভয়,
তবে কিরে মোর লেখনীর সত্য চিরন্তন অমোঘ ঐ বাণীতে সংশয়,
তাই কি এত বাহাদুরি, একেতো চুরি তার উপর দুঃসাহসী সিনাজুড়ী, উদ্ধত চলন ও বলন আর এ বাহারি অঙ্গসাজ ।
একটাই শুধু দুদিনের এ জীবন,
ওরে সময় গেলে হয়না কারো আর কভু হবেনা সাধন,
কি হবে আর দিয়ে তব রুপার পালঙ্ক, হিরার মুকুট ও সোনার সিংহাসন,
খুলে নিবে সবে কায়তন, নাকফুল আর গায়ের যত অলংকার ও যত সকল দামী ঝলমলে বসন ।
বলো তার আসলে কি ছিল প্রয়োজন,
কেন ওরে চাহে সবে আরও বেশী ধন, ভুল ও ভোগেতে বিভোর অবুঝ এ ভোলা মন,
বিফলে তব মরণ হলে,
যখন তব সবকিছুই হবে পরের ও যাবে বেদখলে,
তুমি এমনই নিঃস্ব, অক্ষম ও অসহায় হবে, কেউ নাহি পাশে রবে ও দরদী হবে তখন কি উপায় ।  
ভয়ে কাতর ও ম্রিয়মাণ লাজ,
কন্ঠে রহিবে না সেদিন কারো কোন জবাব কি আওয়াজ,
আর হবেনা কেউই পাবেনা, হোকনা যেবা তার ক্ষমা ও করুণার যতই সকরুণ মোহতাজ ।
ঢলে পড়া পড়ন্ত বেলা,
ঐতো ভাংগিছে হিজলতলার সাজানো পসার রঙের মেলা,
আর কত ভুলে থাকা ও অবহেলা,
এবারতো হলো তবে, একে একে ওরে সবে বাড়ী ফিরে যাবার পালা,
ছেড়ে দিয়ে ফেলে রেখে সাথিদের সনে, হতো নিত্য যত হল্লা করা তামাসা ও হরষের মজার খেলা ।

পর্ব–০৩

ভিনদেশে ওরে বানিজ্য সফরে আসিয়া,
মহাজনের দাদন খাওয়া ও তা শেষে ভুলে যাওয়া যত দেউলিয়া,
ভর্ৎসনা করিবেন খোদায় খাতাটা খুলিয়া, কি দিয়েছ মোরে তুমি আমা হতে কি নিয়া,  
কান পেতে ঐ শোন, গোধূলি অস্তাচলে কি কথা চুপিসারে যায় সে বলে দেখনারে বারেক ফিরে চাহিয়া ।
কেন নাই কোন ভয়, একবারও দেখেনা তারা ভাবিয়া,
দলে দলে পাখীরা ছুটছে কুলায় সমস্বরে পুলকে হরষে বিধাতার গুণগান ও মহিমা গাহিয়া,
খোদার বিধান ও রেওয়াজ তার দুনিয়ায়,
নাই ফিরাবার, রুধিবার কিবা কৌশলে তা বদলে দিবার কোন উপায়,
পুণ্য-গুনাহ ও দেনা-পানার হিসাব, বিচার ও রায় ঘোষণায় কেজানে কে তার কোন শাস্তি-পুরস্কার পায় ।
ঐ সে গহীন আঁধার রাতে,
কোন বন্ধু কিবা ভাই কেউতো নাই রবেনা সাথে,
প্রহরী লাঠিয়াল কোন দলবল কিবা সামাণ্য কিছুও সম্বল তোমার দুখানা হাতে ।
নেই কারো ঐ পথ-ঘাট চেনা,
সুদূর অচিন দেশ দিগন্তের কোন লেশ বা ঠিকানা জানা,
কোন ভুলেতে রলি সবে মজে ও মেতে,
দিন ফুরালো সন্ধা হলো হরষের দোলনায় ওরে দোল খেতে খেতে,
সবাই বেচুইন, নাজেহাল, পেরেশান ও বেহাল,
বাদশা, আমীর, সেনাপতি, কারো নাই গতি ননীর পুতুল কিবা রাজার দুলাল,  
পথেই গভীর রাত শেষে ওপারে যেতে, যদি পার-ঘাটাতে তরী-মাঝি সবই তুই ফেলিসরে হারায় ।
ওরে কি ছিল ঐ চুক্তির ধারা,
জগতের যত ঋন খেলাপী ও নানা অপরাধে আসামী হয়েছে যারা,
কেমনে হয়ে রয়েছে তারা এত উদাসীন, বাড়িয়ে আপন ঋনের বোঝা দিশাহারা ও পথহারা ।
পিছন হতে মুখোশধারী কারা,
করছে তাদেরে জানিনা কেনরে বা কোনদিকে তাড়া,
কেন তবু তারা সব ভুলে,
কোন মোহ কি গলদ এমন ছিলযে তার মূলে,
মহারাজার চমৎকার সব উপহার পাবার সাধ ও ভরসাগুলি রেখেছিল শিকায় তুলে ।
কেউকি এত দাদন খাটায়,
সবই যদি তার ওরে হায় লোকসানে যায়,
দুনিয়ার যত গোলামেরে ভাগ করে দেয়া ছিল ঐ একখানাই দায় ।
খোদার পরিচয় খুব কঠিন কাজ নয়,
তার বাণী আর ঐ আলো ও ভালোটা বিলাতে সারা বিশ্বময়,
বাতাস দিলে তা ভাসিয়ে আকাশ দিবেযে ছড়ায় কে ঠেকায় তার মালিকের ক্ষমতার জয়,  
তবে কোন শর্তে তা জানতে হবে, বিধাতায় এ জীবন দিয়েছিল তোমায় কোন লাভে ও কি আশায় ।
জীবন কেন এখন মিথ্যা ও মন্দের আঁধার ঘরে,
করেছে তাদেরে আধমরা ও ম্রিয়মাণ, বিজয়ের পিছুটান হেন প্রাণগুলি যেন নিরবে হাহাকার করে,
এমন একটা বীজতলা গড়া,
সবার জীবন যেন হয় পুণ্যময় আর শান্তি ও সুখেতে ভরা,
শুরুতে ছিলতো দামাল যৌবন, আজ নাহয় ঘিরেছে অনটন ও কাবু করেছে জরা,
শুধু ওরে এইতো, খোদার জমিনে তার আলো ও ভালোটার চাষাবাদ আর ঐ পণ্যটার বেঁচা-কেনা করা ।
খুব শক্ত করে,
তোমার ঐ রশিটা তারা দুহাতে ধরে,
সবায় টিকেট ও সিট পায় ও আরামে যেতে পারে তাতে উঠে বসে চড়ে ।
থমকে গিয়ে চমকে উঠে, দেহটা কাঁপে ডরে,
নিমেষে তাড়িয়ে দিয়ে হারিয়ে মেঘ-ভেলাদের যায় ছাড়িয়ে দুরন্ত গতির ঝড়ে,
দিগন্তহীন ঐ আকাশ-মাঠ হয় পার, তব করুণা বিনা বলো সাধ্য কার শূন্য তাদের ঝুলিটা পুণ্যে ভরে,
মহাবিস্ময় অবাক চমৎকার, তোমার শাহী কুটুমবাড়ীতে যাবার, অদেখা সোনার আজব ঐ উড়াল গাড়ীটায় ।

পর্ব–০৪

সবারই শান্তি, কল্যাণ ও মঙ্গল হয়,
সেইতো দুই জীবনের লক্ষ্য পরম সাফল্য ও বিজয়,
মহারাজার ঋনে তা পরিশোধ বিনে কেউ যেন আর খেলাপী অপরাধী হয়ে না রয় ।
কেউ আর না হারে,
সহজে সবাই পার হয়ে যেতে পারে,
নিয়তির ফের তা নয়,
জোরে ঠেলে দিয়ে ফেলে তেজে ভয়,
কর্মের জের বা ফল হয়ে আসা আজাবের ঘেরটারে করে জয়,
নাই ক্লেশ, পেরেশানি, তাড়না ও আর কোন দায়,  
গিয়ে দরবারে তোমার পড়ে জগতের বাদশার অদৃশ্য ঐ দুখানা কুদরতি পায়,
এমনই যেন হয় নাই কোন ভাবনা-ভয়, নিদানের সব ঘাট পলকে ডিঙিয়ে যায় পুলক ও প্রশান্তির এক সিজদায় ।
খোদার অহংকার,
তার ঐ মহাসৃষ্টির শ্রেষ্ঠ সবার,
মানুষ যেন ঠিক তেমন মানুষই হতে পারে আর,
সব দায় সব গুনাহ মাফ হয়ে যায়, লভে বিধাতার পরম করুণার ছাড় ।
আর যত তার অপার মহিমার শ্রেষ্ঠ মহান পুরস্কার কার নসিবে জুটে কে নাহি চায়,
মহারাজার মহা করুণায় ভাসে, তার খাস কুটুম হবার দাওয়াত আসে আর সবে ঐ সম্মান ও সমাদরটুকু পায় ।
কোন জাত গোত্র নয়,
এক ইনসান কোন আদম সন্তান হলেই হয়,
জগত জুড়ে এক আল্লাহর রয়েছে এই একটাই শুধু বিশ্ববিদ্যালয়,
শুধু তাদের তরেই বলা, হয়নি যাদের আজও বিধাতার সনে ভাল করে জানা-পরিচয়,
কোন ছাড় নাই সবে ওরে তা জানতেই হবে – কে আমি, কোথা হতে, কেন ও কোন কাজে এসেছি কোথায় ।
সে যে মানুষ হবার সঠিক মন্ত্র,
নিজের কিছুই নেই যার এমন এক অতি আধুনিক যন্ত্র,
তবু শুধু দিনরাত আমার আমার,
সেযে এক মিথ্যে, অবুঝ বোঁকার অলীক ভাগাড় সুখ ও সান্তনার,
মাটির তৈয়ার এক স্বাধীন মেধার নিজে বানানো, স্বার্থের মোহে সবারে হার মানানো মধুর সে মন্ত্র ।
বেশী বিদ্যান বলেই কিরে বেশী অসহায়,
অজান্তেই আজীবন তারা ভুলের প্রশান্ত খেসারত ও শীতল মাসুল দিয়ে যায়,
সংগী তার যদিরে ঐ মনের গোলামী করে তবে যেটুকু সার যেন ত্রিগুণ তার অলীক হেন সুখ পায়,
ভুল যার দেখায় আর ভুল তার বুঝ ও ভাবনায়,
মননে, চলনে, বলনে ও সৃজনে, আপন রাজ্যে সেযে সর্বদা তারে শুধু ভুল পথ দেখায় ও সেদিকেই চালায় ।  
যেথা শুধু একেশ্বরবাদীগণ,
তার একজন নিবিষ্টমন ছাত্র হয়ে আমরণ,
জীবনের সব কাজ ও দায়গুলির সম্মিলিত সার জ্ঞান আহরণ,
মানুষ হতে ভাই নাম লিখিয়ে তাই, ধরিতে ও করিতে হয় ঐ সিলেবাসটাই অনুসরণ,  
যতদিন এ দেহটাকে দেওয়া ধার কিবা জমা রাখা বিধাতার উপহার এ প্রাণটা করে রহে ধারণ ও বহন,
নাহলে কেমনে হয় বা টিকে রয় ভালবাসা আর ঘুচাতে সব চাওয়া-পাওয়ার ব্যবধান ও দূরত্ব রাজা-প্রজায় ।
নাহলে নিশ্চিত মহা অবক্ষয়,
দুঃসহ গ্লানী ও যাতনাময় সে এক ব্যর্থতা ও পরাজয়,
মাটি, জল ও বাতাসে ছড়ায়ে আকাশবাণী,
যারা চায় নসিবে হয়, দুহাতে তুলে মাথায় লয়ে ও বুকেতে টানি,
ঐ মহাসত্য ও অমৃত জীবনের যত সব পাথেয় ও সুধা-পথ্য দেহমনে সাদরে লয়ে মানি,  
ভুলে গিয়ে ও ছেড়ে দিয়ে ঐ ভাব কিবা ভাবনা ও ধারণা, আমিতো ওরে ভাই কিছু আর বাকী নাই সকলই জানি ।

পর্ব–০৫

হৃদ ভুবনে সপ্ত রিপুর সনে,
পঠন, শ্রবণ, কথন, মনন, লিখন ও দরশনে,  
অনুক্ষণ আজীবন অতি যতনে চতুর্দশ ইন্দ্রিয়ের মহামিলনে,
সব পথ খুলে যাবে, অমূল্য রতন পাবে, প্রশান্ত হবে মন নিঝুম বিজন গহীনে, তার সনে কথোপকথনে ।
জুটে এসে ভির করে মন জানালায়,
নিতে এসে অপেক্ষায় রয়েছে সে যে দুয়ারে দাড়ায়,
হলে ধারণ সামাণ্য সাধন, তৃতীয় নয়নে কেউবা সামনেই সব খুঁজে পায়,
দেখো আড়ালে বুঝিবে হারালে, দূর অসীম অজানায় খাঁচার পাখীটা ওরে জনমের তরে না যেতে পালায় ।
শুধু নহে তা এক মহাদর্শন বিদ্যাপীঠ বা পাঠশালা,
সারাক্ষণ, চিরখোলা তার সকল দরজা ও জানালা,
নাই কোন বন্ধ ও ছুটি বা কামাই আর ঐ দুয়ারে যে পড়েনা কখনও তালা,
মহাকাশ মহাজ্ঞান ও অপার ঐ বিজ্ঞান সমাহার বিধাতার দেওয়া উপচে ঢালা যেন গড়িয়ে পড়ে যায় অবহেলায় ।
ঐ মানুষ হবার,
বিধাতার বড়ই সাধ ছিল যার,
কথায়, কাজে ও মননে সদা তার সব গুণ চর্চা ও সাধনার,
সোহাগে বদনে ও সারা গায় স্বর্গের স্বপ্নীল গাঢ়ো সবুজের রঙ দিয়ে মাখিয়ে ভরায় ও সেই মায়াতে জড়ায় ।
এক আল্লাহ নিরাকার,
তারই বানানো এ মহাজগত ও মহাবিশ্বটার,
স্রষ্টা, দাতা, দাদনের মহাজন, লালন, বিচার, ক্ষমা ও অসীম করুণার,
সেযে অদেখা প্রভু একজন, তবু ষোলআনা মালিকানা শুধু তার একার,
সব ঐ সত্যবাণী যা অমোঘ সত্য বলেই জানি ও মানি, করে তা বারবার প্রকাশ ও প্রচার,
লভে তার মহান পুরস্কার কতজনে জীবনে ও মরণে ধন্য হয়েছে ও হবে পুণ্য জমায়, ক্ষমা ও করুণায় ।
হয়েছিল বিধাতার ঐ খেয়াল মহতি,
মাটির পৃথিবীতে তার প্রতিনিধিত্ব করার লাগি মানুষ সৃষ্টির সুমতি,
দম্ভ, হিংসা ও অহংকার নেই, শতভাগ বিশ্বাস, নির্ভরতা ও মুখাপেক্ষিতা তার রবের প্রতি,
মহাজগতের সেরা গ্রহ ও কুল-মাখলুকের শ্রেষ্ঠ জীব, চিনেছে জেনেছে যেবা করেনা কভু নিজ বা পরের ক্ষতি ।
কতযে খাবার আর কতনা রকমারি ফসল,
বাহারি শোভার শত রঙের মৌ মৌ সৌরভ আর মধুভরা অগণিত ফুল-ফল,  
সাগর-নদীর জোয়ার-ভাটার অবিরাম কলকল,
বারোমাস হ্রদ, দীঘি, পুকুর, বিল-ঝিল আর ঝর্ণা, বৃষ্টির ও কঠিন বরফগলা জল ।
পাহাড় ও ঘন সবুজের তৃণ-তরুর বন,
মায়াতে জড়ায়, নির্মল বায়ু ছড়ায় ও আবেশে ভরায় চোখ ও মন,
কত দান আর নেয়ামতে ভরা আবাস হলেও পরম সুখের, মাত্র দুদিনের মানুষের এ দুনিয়ার জীবন ।
অধম গোলাম কি মূল্য বা দাম দেবে আর,
কবে কেমনে শোধ হবে তোমার ক্ষুদ্র প্রতিদান বা বিনিময় দেওয়া তার,
কতটুকুই দেখেছ তুমি তার, আজও রয়েছে দেখা বাকী সহস্র অবাক বিস্ময় মহাসৃষ্টির অপার করুণার ।
ছাড়া শুধু করা তার শুকরিয়া অপার,
ঐ মহান স্রষ্টা, পালক, দাতা, মালিক, মনিব ও প্রভু দয়াময় বিধাতার,  
আটকে থাকে হায় অল্প দূরেই গিয়ে তা থেমে যায়,
অদৃশ্যমান ঢাকনায় তৃতীয় চক্ষু ফুটেনি যার, সাধ্য কার ঐ সব দেখিতে পায় এ দুচোখের ক্ষুদ্র সীমাণায় ।  
দিয়েছেন দয়া করে,
কারে কেন তার সহস্র দান ও নেয়ামতে ভরে,
আবার অশান্তি, অনটন, আপদ, নিদান ও সংকটের বেড়াজালে গিয়ে পড়ে,
কতজন আজীবন যেন বন্দি হয়ে নিরবে সয়ে সয়ে বড় কোণঠাসা অসহায় রয়েছে তার আপন ঘরের জেলখানায় ।  

পর্ব–০৬

আরেকটা তীক্ষ্ণ বিচক্ষণ চক্ষু আছে যার,
প্রকাশে গোপনে দেখায় অদেখায় তার ঐ মহাজগত বাহার,
তত্ত্ব, তথ্য, শোভা, ভয়াল ও ভয়ংকর, দুঃক্ষ-কষ্ট ও মন্দ-ভালো সব দেখিবার,
বসে ঘরে নিদ্রায় বা জাগরণে নিশিদিন এ মহাবিশ্ব বিচরে, আসমানি আলোর জ্বলছে পিদিম মনের ভিতরে যার ।
খোদার দুনিয়ার জমিনে,
শূন্য হাতে লেংটা এসে কতজনে,
তাইতো রয়েছে তাদের আকন্ঠ ডুবে রাজার ঋনে,
দুদিনের হোকনা তবুতো পেলো কতকিছুর মালিকানা কোনকিছু না কিনে,
গহীন আঁধার রাতে বলো দেখিবে কেমনে তারা হায়, দেখেনা যারা ঝলমলে এই আলোভরা দিনে ।
কোথায় হবে ঠাই কোনদিকে গতি,
ঢেলে দিয়ে তার অযুত রুপ আর নিযুত ধনে সাজালো বসুমতি,
তার অসীম করুণার দিলেন খুলে সব দুয়ার, করতে হেথা ভ্রমণ আর ক্ষেতি-চাষ ও বানিজ্য বসতি ।
যদিওবা কারো হয়রে এমন,
সহস্র বছরের আয়ু আর হাজার কোটির চেয়ে আরও বেশী ধন,
তবুও অপার ঐ বাহারী সৃজন,
জানি না হতেই তার সব নয় অতি সামাণ্যটুকুই দেখা সমাপন,
যদিও দেখিতে মন চায়, শিরে লয়ে তার বিশাল ঋন সব ধন আর এ জীবন একদিন হবে বিলীন যাবেযে ফুরায় ।
শুনেছি বলেন গুণীজন,
আল্লায় নাকি বান্দারে তার ধারে দিয়ে ধন,
নানাহ পরীক্ষায় ফেলেন ও সহস্রবার যাচাই করেন তার মন,
লোকে বলে খোদার দেওয়া অঢেল ঐ ধন, আবার সে তা কাইড়া নিতে লাগে কতক্ষণ ।
দেখেছি আমরা তা আজীবন,
সহস্র ঘটনা ইতিহাস কহে বুকে লয়ে বহে করেছি পঠন,
লোভ, ক্রোধ, হিংসা, অহংকার ও জুলুম আনিবেই আনিবে নিশ্চয় দানিবে অধঃপতন,
শত শতাব্দী ব্যাপী করেছে যারা ধংস ও নিধন কত রাজ্য, লোকালয়, জাতি, বংশ, সমাজ, পরিবার ও জীবন ।
নিমেষে নিত্য এ জগতময় ঘটে কত অঘটন,
কেমনে হয় ঠেকাবার মত নয়, এমনই শত অসাধ্য ধংস সাধন,
সৃজন, নিধন, জয়-পরাজয় মেনে নিতে কষ্ট হয় আকাশ-পাতাল রদবদল ও পরিবর্তন,
হতে পারে নিজ কর্মদোষে, পড়ে বিধাতার ক্ষোভে ও রোষে কিবা দিতে হয় কত ইমতেহান জীবনে এমন ।
ওরে যার ধন তার,
রয়েছে ষোলআনা মহান দাতার সে অধিকার,
ইচ্ছা ও এখতিয়ার দেওয়া, না দেওয়া কিবা কারোটা আবার কেড়ে নেবার ।
রাজারে ঘার ধরে পাঠিয়ে দিয়ে দেশান্তরে নির্বাসন,
সে যদি চান কভু পথের ভিখারীকেও করেন দান, কেড়ে নিয়ে তার সোনার সিংহাসন,
ধন, জন, সুখ-বিলাস ও বিনোদন,
জুলুম, অত্যাচার ও জবরদখল ক্ষমতার ছোট্ট এ জীবন,
দান, বন্টন ও বিতরণ যখন যারে যেটুকু যেমন চাহে ঐ মহান মালিক, দাতা ও মহারাজার মন ।
দিয়ে এত আয়ু ও এত ধন,
হবে কি লাভ তাতে আর বলো কিবা তার প্রয়োজন,
শুধু তা আমার একার নয়,
তবে সে ওতো ওরে হবে এক গ্লানি ও দুঃক্ষময় পরাজয়,
মাটির মানুষ যার ভিতরে মাটির মন,
আমার মতন ও জগতের যত অন্ধ, অক্ষম ও অসহায়গণ,
হে প্রভু সবইতো তোমার জানা, কোথায়যে এমন ধন্য মহান জীবন আছে কয়জন,
যার ছোয়ায় মুছে যায় সব গুনাহ ও সব দায়, যদি না হয়রে মম এক পাহাড় সম এমনই কোন পুণ্য সাধন ।
আমি যাতে,
কোন এক দিবসে কিবা রাতে,
বসে আনমনে মোর আঙ্গিনাতে যেনরে পেলাম হাতে,
যদিরে কভু এমন হতো, আমি ঘুম হতে উঠে দেখিতাম কোন এক সুপ্রভাতে ।

পর্ব–০৭

ডালভাত ছাড়া মোর কিছু নাই হাড়িতে,
অতিথি হয়ে এসেছি মহারাজার বিশাল ঐ কুটুমবাড়ীতে,
যেথা হয়না কিছুই চাহিতে, বরং নিজ ইচ্ছা মত মন যাহা চায় তাহাই পেতে,
চমৎকার বাহারি শত খাবার ও ফল, দেখেই জিবে আসে জল খুশবুতে পেট ভরে যায় না খেতে,
এসেছি আমি হয়ে তার মেহমান মনে লয়ে ঐ সাধ বেড়ানোর নামে হেথা চিরতরে থেকে যেতে,
দারুণ উঞ্চ অভ্যর্থনা ও সে এক সাদর সম্ভাষণ,
মহা নিদানের কঠিন আখেরাতে একলা সফরে, পেয়ে তার খাস কুটুম হবার আগাম ঐ পত্র নিমন্ত্রণ ।
বোঁকার মন পেয়ে পরের ধন করে আমার আমার,
হবেইতো এমন, বন্ধ যার চোখ ও মনের নিযুত জানালা আর অযুত দুয়ার,
কেমনে বুঝিবে সে গিয়েছে যে মোহজালে ফেঁসে, কোনটা পরের আর কোনটাযে আসলে নিজের তার ।
কষ্ট, ক্ষোভ ও আক্ষেপের বচন খোদার,
পরের ধনে পোদ্দারি ও বাহাদুরি আর এ কোন স্বেচ্ছাচারি ও তুগলকি কারবার,
যখন এমন হবে, কেউ আর কিছু নহে কার,
অপার করুণার আধার বিধাতাও হবেন তখন নির্মম, নিষ্ঠর, নির্দয় ও কাহহার ।
সাফায়াত ছাড়া কে হবে পার,
কেউ রবেনা ফিরে দেখা ও কান পেতে শোনার,
দয়াময় মহান আল্লার কারো তরে কোন দয়া বা ক্ষমাই রহিবেনা আর,
শুধু আখেরী নবীজী ছাড়া,নেইরে আর কারো সে সাধ্য কিবা অধিকার,
কিবা এমন কেহ, একটুখানি কোন সহমর্মিতা, সাহায্য বা সহযোগিতা ও করিতে ‍কারো উপকার,
ইয়া নাফসি, ইয়া নাফসি, ইয়া নাফসি – আকাশে বাতাসে ধ্বনিত হবে শুধু ঐ একই কাকুতি মিনতির সকরুণ হাহাকার ।
ওরে সব হারাবার পর,
অন্ধকার কবর যখন হবে চির জনমের বসত ঘর,
হাশরের ময়দান,
ক্ষুধা ও পিপাসায় ছটফট আনচান,
সবে অধীর ও অস্থির ছুটাছুটি, বড়ই বেচুইন ও পেরেশান,
শুধু নিজে কেমনে সবার আগে পাবে ত্রাণ হেন অন্ধকার, মুস্কিল ও নিদানে মহাভয়ংকর ।
শেষে বুঝিলেও তবে আর,
বলো কি দরকার ও কি লাভ হবে কার,
যখন ছুটবে চারদিকে সবাই, কোন দিকে কোন পথ নাই, সাধ্য কিবা সুযোগ কারো হবে পালাবার ।
যদি আচমকা একদিন,
তা না হয়ে, মাথায় লয়ে মস্ত ভারী এক বোঝা মহারাজার ঋন,
এমনওতো হতে পারে সহসা এসে গেলো ডাক,
কহে রাজ প্রহরী তব প্রাসাদ, সিংহাসন ও যত ধন-রতন এখানেই সবকিছু পড়ে থাক,
যদি বলে জলদি করি এখনই চলো মন,
এইতো সমন আর সময়ও হাতে তার অতি অল্প কিছুক্ষণ,
পৃথিবী হতে সেইতো শেষ বিদায়, আর আসেনা যে চলে যায়, লোকে যারে কয় মরণ,
হে মহারাজা মহাজন, না হয় যেন মোর হেন জীবন, লয়ে অপূরণ শত শুভ সাধ ও নেক বাসনার যতি ।
সকালে যেজন রাজা সন্ধায় সে ভিখারী,
এক পুরুষেই সব শেষ, নির্বাসনে নিরুদ্দেশ প্রিয় বাড়ী-গাড়ী ভিটা ছাড়ি,
কেউ কেউ পায় সাফল্য বিজয়, কারো অবক্ষয়, কেউবা অসহায় বৈরাগী হয় তার সবকিছু হারি ।
কে বুঝে খোদার লীলা ভেদ,
একবার যদি পড়ে তার ক্রোধ, রোষ কিবা ক্ষেদ,
এতকিছু দিয়ে কেন শেষে সব কেড়ে নিয়ে আবার তারে খালিহাতে করে উচ্ছেদ,
বিত্ত-ধন আছে বা নাই, এ সংসারে দেখেছি ভাই, জীবনে ও মরণে তার করুণা বিনে মানুষ কত অসহায় ।
মোর অনুভবে ও চেতনায়,
জাগ্রত সচেতন মন, মেধা, মনন ও কলমের মাথায়,
সব আছে হেথা তৃতীয় চোখের দরশনে, গহীন অজানায় যা চাহেন দয়াময় বিধাতায়,
শুরু হতে শেষ সবই এক সূতায় গাঁথা খুজলেই পাওয়া যায়,
দুই জীবনের পথ ও পাথেয়, গন্তব্য, পারাপার, ঠিকানা আর রাজা ও প্রজার দেনাপানা, সমুদয় দান ও দায় ।

পর্ব–০৮

আমি তার ও সে আমার,
জানিনা কবে থেকে হয়েছিল ঐ মিতালি এই দুজনার,
সৃষ্টির চিরন্তন এ বিধান ও কৌশল মহাজ্ঞানী ও বিচক্ষণ এত বড় জগতের এক বিধাতার,  
যেথা হতে মোর একদা হয়েছিল আগমন, ঐ পথে হেথাই আবার ফিরে যাওয়া, রদ নাহি এ ফয়সালায় ।
আপদ, নিদান ও সংকটে,
মন্দ-ভালো যখন যেখানে মোর কপালে যা ঘটে,
আমার সকল কাজে, নিত্য সকাল সাঁঝে মননে, চলায় ও বলায়,
আগুনে পুড়িয়ে খাটি করে যারে তার মন চায়,
ফেলে দিয়ে সাগরের লোনাজলে, ডুবিয়ে চুবিয়ে ধুয়ে আবার টেনে তুলে ডাঙায়,
মহারাজার ক্ষমতা, অধিকার ও দায়,
তবে কি সে তারে সবাইকে চিনাতে, জানাতে, দেখাতে ও বুঝাতে চায়,
মোর সংগে রহে, কষ্ট-বেদনা সহে ও সবটুকু ভার বহে আর আমারে সে হাত ধরে পথ দেখায় ও চালায় ।
স্বপ্নগুলি ভেংগে যাবার পর,
কেন বলে আবার পোড়া ভিটায় বাঁধিতে ঐ ঘর,
প্লাবন এসে নিয়ে যায় সব ভাসায়,
জবানে বলা কিবা লিখনের আগে নিমেষে সব ঘটে ইশারায়,
পাওয়া ও না পাওয়া কিবা হারিয়ে যাওয়া জীবন ও জগতের সবকিছু তার কলমের আগায়,
হাতে আর কিছু নাই একেবারে নিঃস্ব, ভাংগা পরাণে যখন ভাটির টানে কেন সে আবারও মাটির মায়া ও আশা জাগায় ।
সমর্পন ও বিসর্জন শুধুই নামে তার,
তুচ্ছ সৃজন আমার যেন কালো মেঘে ঢাকে বারবার,
যেথা আছে পুণ্য ও একটু সম্মান এমন সামাণ্য কিছু চাহিদার,  
আর কি সহজ ও ভাল কোন কাজ নেই, রয়েছে যেথা হালাল রোজগার,
আমার সকল লেখার সে ইতো প্রথম পাঠক, হাত ধরে নিত্য যে আমারে অগণিত কবিতা লেখায় ।
কৃচ্ছতার সাদামাটা মম এ জীবন,
তবু ধনী হতে নাই মোর আর কোন পণ কিবা রণ,
কি আশা, সাধ ও বাসনা সবইতো তার জানা, এ মনেতে রেখেছি গোপন,
মোর সুখ, হরষ ও বিনোদন প্রতিক্ষণ আলহামদুলিল্লায়, যত মম বকবক শুধু তারই ঐ স্তুতি গাঁথায় ।
মাটিতে বুনি তার আলো ও ভালোর বীজ,
সুফল ফলাই তা দিবে সে সবারে বিলাই, আমার কি সবইতো তার নিজ,
বাতাসে সুবাস ছড়াই নিবে উপরে তুলি সপ্ত আকাশে যার শাহী মসনদ, দরবার, দপ্তর ও দহলিজ ।
করেছিতো আমি ঘোষণা,
নেই মোর কোন অনীহা, আপত্তি কিবা কিছুতে মানা,
রাজ ইচ্ছা ও ফরমায়েশে আমিতো সব সময়ই সবকিছুতে রাজি,
তার অক্ষয় অমর প্রাণ,
দয়া করে আমারে যখন করেছেন ধারেতে দান,
দুদিনের এ জীবন লয়ে এত মোহে বন্দি হয়ে, আমি নহে রাজি ধরতে আর কোন বাজি ।
করবো খুশীমনে আমি সেই কাজ,
অধম গোলামেরে যা দিবেন হাতে তুলে মনিব মহারাজ,
ভাল যে কোন কাজে মনেতে সুর বাজে নেই মোর দ্বিধা, ভয়, ঘৃনা বা লাজ,
অনুক্ষণ আমাকে দিবেন মনিব তাই যাহা মোর প্রয়োজন, আমি শুধু তার ঐ করুণার মোহতাজ ।
মিথ্যা ও মন্দের কঠিন এ জীবন,
তাই সত্য সুবচন তাওতো এক ক্ষুদ্র সৃজন ও পুণ্য সাধন,
তার করুণায়,
পুণ্যময় সে পরম পাওয়ায়,
আমার বড় ইচ্ছে হয় আর এ মনটা চায়,
ঐ একই আরজি, আকুতি, মিনতি ও নিবেদন শুধু তাকেই জানায়,
তার লাগি উৎসর্গ মোর ক্ষুদ্র দান বা অণুদানগুলি যেন বেড়ে আর দায়গুলি সব মুছে যায়,
সেই কাজ তা যেমনই হোক,
তাতে কি আসে যায়বা আমার যা বলে বলুক লোক,
আমি তাই করিব করিতে করিতেই একদা মরিব, নেই কোন ভয়-লাজ আমাকে দিয়ে রাজায় যা করাতে চায় ।