একটি কোমল নরম হাত
আমার মাথার উপর
আলতো করে আদর মাখা
স্নিগ্ধতা ছড়ায়
চিবুক বেয়ে বেয়ে
শিহরণ জাগায়।
কি অপলক দৃষ্টি!
কি মায়ায় আচ্ছন্ন দুচোখ
মুখ তার বড়ই চেনা চেনা
তবুও কে সে?
কেনই বা আমার কপালে বার বার
চুমুর প্রলেপ একে দিচ্ছে।
অন্যপাশে খুবই পরিচিত মুখ
বারোটি বছর পরম যত্নে
আমার পাশে থাকা
সুখ-দুখ কাতরিয়ে বেড়ানো রমনী।
শরীরের ভাজে ভাজে আমার হাতের
স্পর্শে বুঝি রুক্ষ আমার ত্বক
অস্থিমজ্জায় অসারতা।
দীর্ঘকাল আমার কেটেছে হয়ত
পৃথিবীর বাইরে কোথাও।
হয়ত ভাবি সকালের ভাঙ্গা ঘুম
নয়ত স্বপ্নের কোনো বারিধারা।
চারদিকে শুধুই চোখ আর চোখ
কেউবা হাসে, কারো চোখে অশ্রুপাত।
কত ছোট্র আমার খুকুমণি
করতো খেলা আমার বুকের পাজরে
ঘোড়া গাড়ি লাটিম গাড়ি
চোর পুলিশ কত কি!
ভোর বেলার অ্যালার্ম
ডান হাতে ঘুমন্ত সেই ছোট্ট পুতুল
আজ কত বড়!
'বাবা আমি তোমার খুকি'
'বাপজান তুই উঠ'
একুশ বছর না দেখা দু'মায়ের মুখ,
আমি না; ছিল আমার নিভৃত নিথর দেহ
বদলে যাওয়া দেহ দেখেছে ওরা
শুধু আমায় ছাড়া।
খানিক দূরে মায়ের মুখ খানি
ভেসে একটা মোচড় দিয়ে উঠে।
কি হয়েছে আমার?
তীব্র আঘাতে ছিন্ন মস্তিষ্কের প্রবাহ,
থমকে দিয়েছে আমার সময়।
ত্রিশের এক যুবকের একুশটা হেমন্ত গেছে
একুশটা শিমুল না দেখে।
একান্ন-বায়ান্নর দুয়ারে দাড়িয়ে ত্রিশকে
হাতড়িয়ে বেড়ানো এক দুর্ভাগার ইতিহাস।
বিবর্তন হয়েছে সময়ের,
আমার দেহের,
নয়তো আমার হৃদয়ের।