ফেলু মিয়ার পরাবাস্তব
আবিদ আনোয়ার
জীবনের কাছে হেরে গেছে ফেলু, বহুকাল উদ্বাস্তু উন্মূল:
কোথায় শিকড় তার--করটিয়া নাকি ভাগ্যকুল
এখন নিশ্চিত করে জানে না তা কেউ;
ভাসমান জনস্রোতে সেও এক বহমান ঢেউ
দুখের কিনার খুঁজে কাটিয়েছে যৌবনের পনেরো বছর,
কখনো বাঁধেনি কোনো রমণীর উমে-ভরা স্বপ্নময় ঘর।
দারুণ বিনয়ী যুবা, বরাবর অভিযোগহীন
ভাগ্যের লাটিম হয়ে ঘুরে-ঘুরে কাটিয়েছে দিন।
যদিও দেখেছে ফেলু রাতারাতি কত লোক হয়ে গেছে লাল--
রিলিফের মন্ত্রী থেকে বীমার দালাল
তবুও কস্মিনকালে ভাবেনি এ-সম্পদের সেও ভাগীদার,
কেননা সবাই জানে ফেলু এক বিনয়ের দিব্য অবতার।
এখন প্রায়শ ফেলু কথা বলে টোকা দিয়ে বুকে
’পরন্তু বিক্ষত পরাচৈতন্যের গভীর অসুখে:
ফেলু কোনো লোক নয় যেন সে প্রচণ্ডতম চিৎকারের নাম
প্রায়শ আকাশ অব্দি ফুলে ওঠে পেশী তার সবল সুঠাম!
আঁকেনি কখনো যাকে সুলতানের ক্ষিপ্র কোনো তুলি
সে-হাতে সূর্যের দিকে ছুঁড়ে মারে প্রচণ্ড ডাংগুলি।