১ ।।
একটা বছর দশেকের বাচ্চা নিজের পরনের জামাটা খুলে,
নিজেই পরিস্কার করতে লাগলো কমপার্টমেন্টের মেঝেটা।
আমি সাইড লোয়ারে ব'সে অনেকক্ষণ ধরে দেখছিলাম ছেলেটাকে।
ওর জন্য আমার পকেটে দু টাকা আছে ...
২ ।।
একটা পাঁচ বছর বয়েসের বাচ্চা মেয়ে আমার গা ঘেঁষে
দৌড়ে ছুটে গেল কমপার্টমেন্টের ভেতর দিয়ে। ওর গায়ে
কয়েক শতাব্দীর স্নান না করা দুর্গন্ধ।
আরও দুটো ছেলে ওর পেছন পেছন বাঘের মত ছুটল।
দুটো টয়লেটের মাঝের প্যাসেজে,
ঝাঁপিয়ে পড়ল ওরা মেয়েটার ওপর।
মেয়েটার ভিক্ষে করা পাঁচ টাকা ওরা কেড়ে নেবেই ...
আমি ওদের তিন জনের মুখের দিকে এক ঝলক তাকালাম।
এবং প্রচণ্ড ভয় পেয়ে ঢুকে গেলাম টয়লেটের ভেতর ...
৩ ।।
মাথায় ধুলো ভর্তি এক মা ( বয়েস বোঝার উপায় নেই)
অনেকটা মানুষের মতই দেখতে একটা বাচ্চাকে স্তন দিচ্ছে
ট্রেনের পা দানির পাশে বসে।
ওর বুকের হুক সবসময় খোলাই থাকে। নিজের রক্তের জন্যে
ওর বুকে দুধ নেই, পৃথিবীর জন্যে আছে !
আমি প্রাণী দুটোর মুখের দিকে এক ঝলক তাকিয়ে আঁতকে উঠি।
এক নিঃশ্বাসে ছুটে যাই নিজের জায়গায়। মুখ ঘুরিয়ে দিই জানলা থেকে বাইরের দিকে।
৪ ।।
কিছুক্ষণ পরে এক অন্ধ ভদ্রলোক এলো গান গাইতে গাইয়ে।
সামনে হাত দুটো ভিক্ষার মত করে বাড়ানো, ঠিক কী চাইছে ঠাওর করতে পারলাম না।
লোকটার মুখের দিকে তাকিয়েই আমার শরীরে কাঁপুনি লেগে গেল।
নিজের সীটের তলায় ঢুকে পড়লাম। সিটিয়ে গেলাম
আমার লাগেজ গুলোর সাথে। হৃৎপিণ্ডের শব্দের সাথে
তাল মিলিয়ে দেখতে লাগলাম, কতক্ষণে লোকটি আমার
জায়গাটা পেড়িয়ে যায় ...
৫ ।।
আমি শুধু বুঝতে পারছিলাম না,
এদের সবার মুখ হুবহু এক রকম কেন ...