লোকটাকে উপর থেকে দেখে,
একদম বোঝার উপায়ই ছিল না:
যে সে আদতে এক চলমান মৃতদেহ!
মাথার চুল নিয়ম মতো রাখত কালো,
আর ঠোঁটে হাসি টি ও ছিল বেশ চলনসই।
নানা ব্যথা লুকিয়ে রেখে সোজা চলতো বেশ!
জীবনের সব রসে জারিত হয়ে এইভাবে,
সেজেছিল সে অনেকের মতো এক সংসারী মানুষ!
জীবনের রুক্ষতা সয়ে সয়ে হয়নি সে স্থবির,
হয়ে গিয়ে ছিল বটে উদাসীন।
ভরে রাখত বুকের মাঝে কত কথা।
ছু মন্তরে ধেয়ে আসা সব উপহাস অনায়াসে তুলে দিত,
ধোঁয়ার মতো হাওয়ায়, তারপর আবার পথ চলতো -
যেমন চলে এই জীবন, যেমন নদী -
একলা আপন মনে।
একদিন এলো বয়ে খুশির উৎসব,
যখন ধুয়ে গেছে এ পৃথিবী, হারিয়ে আমোদে।
নবান্নের অকৃপন প্রকৃতি ভরে গেছে ফুলের গন্ধে, ফসলের প্রাচুর্যে।
প্রগল্ভা বসন্ত সেদিন উচ্ছ্বাসে, যৌবন মাদকতায় মাতোয়ারা!
সেই রঙ কি লাগলো খানিক লোকটার মনে!
ভাবনা এলো সে কি তাহলে:
এখনো জীবিত অনেকের মত!
কে বলে তার সূর্য অস্তমিত!
যেমন ঐ দুর আকাশের পরে।
উজ্জল আলোর ফোঁটায় ফোটা সন্ধ্যাতারা-
সেও তো কবেকার প্রাচীন নিরবতার কবিতা,
আজো কোনো কথা না বলে কত কথা তবু বলে !
নিজেকে নিঃশেষ করেও কত অশেষ!
নীচে পড়ে তার ধুসর পৃথিবীর সংসার:
কত না পাওয়ার ঠোঁট ভারী অভিমানের তরলতায়-
ঘাম, ব্যথা, ক্লেদ, নিয়ে এক গলা জলে দাঁড়িয়ে মানুষ,
বুঝি অপেক্ষায় আরো উজ্জ্বলতর এক স্ফটিক ভোরের,
চোখের জলে স্লেট মুছে আবার নতুন করে শুরু,
জীবনের বর্ণপরিচয়, নতুন দিনের এক নতুন সরলতায়।