সে এক, দিন ছিল।
আমরা ছিলাম সবাই আত্মিয়ের মত!
রোজগেরে একজন কি দুই
পরিবারের সবাই ছিল খুশিতে তাদের স্নেহাশ্রিত।
বটচ্ছায়া ছিলেন দাদু-ঠাকুমা।
এক ছিটের থানে ফ্রক থেকে ফতুয়া হয়ে যেত অনেকের।
কালিপুজোয় বয়স মাফিক ভাগ হতো বাজির।
রেশনের চাল চিনি সুজি, ধরা
আর গম ভাঙিয়ে ক্যানেস্তারা ঠাসা বিস্কুট বানিয়ে তুলে রাখা
মা মাসি কাকিদের এই ছিল বড় কাজ!
কুল শোকানো রোদের নিঝুম দুপুরেও
হাতে মলাট দেওয়া বইয়ে
জেগে থাকত শরৎ বাবুর 'চরিত্রহীন'।
কচিকাঁচাদের পড়ার বইয়ের ফাঁকে লুকিয়ে ঘুরত
স্বপন কুমারের ডিটেক্টিভ: 'আঁধার রাতের যাত্রী'
এল.টি.সি পেয়ে বছরে একবার সপরিবারে স্বাস্থ্য উদ্ধারে
মধুপুর যাওয়া ছিল কর্তার সাধের।
জোড়া পোস্টকার্ডে বড়দের চিঠি লেখা ছিল সম্মান দেখানো।
ভাই ফোঁটার সকালে বোনের বাড়ি ফোঁটা নিতে ছোটা।
রেডিওর এরিয়ালে মহালয়ার ভোরে আভিজাত্যের ছোঁয়া
সুকন্ঠী টেলিফোন অপারেটরের "নাম্বার প্লিজ"!
মৃতের উদ্দেশ্যে চিলেকোঠা ছাদে আকাশ প্রদীপ জ্বালা
ইষ্কুলের রচনায় আসত "চাঁদের মাটিতে মানুষের অবতরন!"
বিশেষ বিশেষ খবরে ছিল দেবদুলাল বন্দোপাধ্যায়!
আলোচনায় ইডেনে মনসুর আলী খান পাতাউদির সেঞ্চুরি।
অপেক্ষার আম গাছে ঘুড়ি আটকিয়ে থাকা বিকেল
পুজোয় মামা মাসি পিসিদের আগমনে নতুন কিছু পাওনা।
আবদারে আদরে
পড়া শিকেয় তুলে হাতির পাঁচ পা দেখা।
সন্ধ্যে হলেই লোডশেডিং
সে এক দিন গেছে
আমরা ছিলাম সবাই আত্মিয়ের মত।