লিখব না বলেই ঠিক করেছিলাম।
হতভাগা মাঝি সেদিন গান ধরেছিল,
সে এক লোকগীতি, কি গান?
বলে কাজ নেই, আধুনিকতার ছোঁয়াতে
ঐ গান তোমার কি পোষাবে?
ভারী চমৎকার গলা জান।
জনহীন এক তেপান্তর, বিপুল জলরাশি,
চোখে পড়ে জঙ্গলভরা দ্বীপ, ঝিরঝিরে
মৃদু বাতাস, উড়েছে ফুরফুরে মন,
ডানা মেলে বসে পড়েছে,
চিরাচরিত সেই কবিতার পাতাতে।
“বাবু, নৌকা টানবেন নাকি?”
আমি চেষ্টা করার লোভ সামলালাম না।
দম গেছে, কিছুক্ষন পর,
“না এটা তোমারই কাজ বাপু”।
হেসে, “ দিন, আমাকে দিন”।
মনের আনন্দে সে আবার গান ধরল,
কলকল শব্দ, পাখীদের কিচিরমিচির,
বাঁশ বন থেকে ধাবিত হালকা আওয়াজ,
ভাঙিয়েছে ঘুম, মায়াবী নিঝুমতার।
মাছ ধরে, নৌকা টানে, আর............
“বাবু, সংসারই চলে না, এত দাম.........
কি করে ছেলে মেয়েকে পড়াইব?......”
উত্তর না দিয়ে চুপ করে ছিলাম।
“সেদিন কলকাতা থেকে বাবুদের দেখা... ,
আমাদের সুখ দুঃখ পুছতে”...... একটু হেসে,
“ঐ যে ইলেকসান আসছে, এখন মাঝে মধ্যেই
ঢুঁ মাড়ছে......... এরপর তো মইরা গেলেও......”
দেখতে দেখতে......
ক্ষতবিক্ষত জগতের গোঙানি থেকে দূরে...
দ্বীপটির কাছে পৌঁছে গেছি,
সেখানে রৌদ্র ছায়ার যুগলবন্দী খেলা চলছে।
“যান, দ্বীপটি একটু ঘুইরা দেখুন......”
সারি সারি গাছ, হরেক রকম আওয়াজ...
হাজার হাজার মানুষের কান্নায় গলা মিলিয়েছে।
চুপচাপ অনেকটা হেঁটে, বসে পড়েছি ঘাসে,
ছায়ার শীতলতায় শুয়ে শুয়ে গাছের পাতার ফাঁকে,
নীল আকাশ উঁকি মেরেছে, ভুলিয়েছে আমাকে
কয়াল মাঝিদের যন্ত্রণাময় তীক্ষ্ণ সুরকে।