সিগারেট হাতে,
দাঁড়িয়ে সাত তলার ব্যালকনির জানালাতে,
অনেকটাই রাত,
নিঝুম নিস্তব্ধ মায়াবী অন্ধকার,
থেমে গেছে,
দিনব্যাপী দাপাদাপি আর ব্যাস্ত প্রতিযোগিতা,
ল্যাম্পপোস্টের আলোয় মিশেছে,
কুয়াশার অমায়িক রূপ,
হারিয়েছি আমি,
আমারই সন্ধানে ঐ দূরে মেঘের আড়ালে।

আজকের অস্তিত্ব যেন অতীত,
মাটিতে মেশা জীবাশ্ম মাত্র,
কানে অসহ্য লাগে,
হাসি-কান্না-প্রেম-বেদনার তীব্র প্রতিধ্বনি,
লোভ লালসা, মায়ার আষ্টপিষ্ট বাঁধন,
পারছে না আর আটকাতে,
চাওয়া পাওয়ার জাল ছিঁড়ে,
আমি চলেছি আমিত্ম দর্শনে।  

নিছক কোলাহলের দূরে,
শরীরের ঘেরাটোপের বাইরে আমি অশরীরী,
ঘুটঘুটে অন্ধকারে ধেয়ে চলি,
এক আলোকিত পরমাত্মার সন্ধানে,
বসবাস অযোগ্য ধরণীতে সহ্য হয়না,
রক্ত মাখা মেকি মানুষের গন্ধ,
মৃত্যুর ওপারে আমি বিচ্ছিন্ন,
অসীম বিলীন শূন্যে পরম সুখ তন্দ্রা মগ্ন।


নেমে এসেছি রাস্তায়,
সিগারেটের আগুন পুড়িয়েছে বায়বীয় যন্ত্রণাকে,
হালকা ঠাণ্ডা বাতাসে দাঁড়িয়েছি,
শান্ত শীতল নিজ প্রতিবিম্বের সম্মুখে,
গভীর ধ্যানমগ্ন বৈরাগী আমি,
মানবিক জটিলতাকে করেছে ছিন্ন ভিন্ন,
পরমান্দের কেন্দ্রবিন্দুর উত্তাপে,
জীবনের হিসাব নিকাশ হয়েছে ভস্মিত।

খ্যাতি-অখ্যাতির জলীয় বাষ্প উবে গেছে,
সর্বত্যাগী সন্ন্যাসীর বেশে,
উত্তাল সমুদ্র গ্রাস করেছে,
হিংসা-ঘৃণা-কামনার লালায়িত পিপাসাকে,
অহমবোধের দাবানলে অহংকারের গ্লানি,
ছাই হয়ে উড়ে গেছে,
উজ্জ্বল দ্যুতি হয়ে আমি দেখিয়েছে ,
অভ্রান্ত নিছক শরীরী পতনকে।

সিগারেটের শেষ টানে,
নিরাকার আমি মিলিয়েছে মহাজাগতিক ব্রহ্মান্ডে,
ভাঙ্গা দেওয়ালে নিক্ষেপিত আকার হারিয়েছে,
স্মৃতির অন্ধকারময় ইতিহাসের পাতাতে।