নিমতায় আমাদের বাড়ির ঠাকুর ঘরের জানালা দিয়ে ভোরের রোদ এসে পড়ত রোজ ই।
পূর্ণিমা চাঁদের প্রেক্ষাপটে লক্ষী ঠাকুর এর যে বড় ছবিটা,
ফি-বছর পুজো হতো! তার কোল ঘেঁষে।
ঐ তেরছা রোদ ঘিরে কত যে নাচ দেখেছি ধুলো কণিকার!
কিন্তু সেদিন ব্যাপারটা ঘটল প্রকৃতির সাথে একান্তই ব্যক্তিগত!
বিকেলের বৃষ্টি ধোয়া নির্জন নীল আকাশের নীচে সুর্য জ্বেলেছিল,
পড়ন্ত সোনালী রোদের টর্চ লাইট!
পুকুর পাড়ের আলফান্সো আম গাছটা সেই আলোতে,
উদ্ভাসিত হয়ে প্রাণ ফিরে পেয়েছিল আবার!
রঙীন নেগেটিভের ভিতর চোখ রাখার মতন করে দেখলাম,
চরাচর ভেসে যাচ্ছে নরম কাঁচা-হলুদ আলোয়!
ছেলেবেলার পরিত্যক্ত লাটাই এর সুতোর উল্টো টানে,
ফিরে এল সেই ফেলে আসা কাল এক লহমায়!
সেই আলোয় দেখলাম চালা ঘরে পড়ে আছে আজও:
সেই গ্রামোফোন, পুঁচকে সীটের ট্রাই সাইকেলটা,
এক হাত ভাঙা পুতুল,উঠোনের সেই তুলসী তলা!
পাতাবাহার গাছগুলো তে বসন্ত এসেছে আজ!
পোষা বেড়াল গুলো রয়ে গেছে তবু আজও কারো অপেক্ষায়, বুঝি বড় মায়ায়!
স্মৃতি-মাখা-ধুলোয় পড়ে আছে ব্যাপ্ত জীবনের অনেক খোলস।
নির্জন চিলেকোঠা ছাদ, একলা পাঁচিল পরেছে আজ সব নিরবে বিলীন হওয়ার সাজ!
অস্ফুট কান্না এসেও নিঃশব্দ রইলো হৃদয়,
এই জীবনের শেষ এক নির্বাক চলচ্চিত্রের মত।