উপলব্ধিতে আজ আমি বাবা,
তুমি আমার অবুঝ ছোট্ট শিশু,
যেমন ছিলাম কয়েকবছর আগেই,
উপলব্ধিতে সন্তানও হয়েছি আশু।
আমি প্রতিটা মুহুর্তে উপলব্ধি করেছি,
আমার পিতাসত্তা দ্বারা,
কেমন ছিলেন আমার বাবা,
আর কতটা অবুঝ, অচেতন ছিলাম আমরা।
আমি উপলব্ধি করেছি,
তপ্তরোদের আড়াল করতে,
সে কি হৃদয় ক্ষরণ!
বৃষ্টির শীতল পরশ থেকে বাঁচাতে,
সহস্র কষ্ট বরণ।
উপলব্ধি করেছি,
ক্লান্ত শরীরের নেতিয়ে পড়া ঘুমের মাঝেও,
সন্তানের শ্বাসপ্রশ্বাসের ওঠানামাতেও,
একটু নড়া-চড়া আর ক্ষীণ কন্ঠস্বরেও,
ঘুম থেকে লাফিয়ে উঠে,
বাবারা স্নেহের পরশ বুলিয়ে দেয়,
সন্তানের নরম পিঠে।
উপলব্ধিতে আজ আমি সন্তানও বটে,
তোমার মাঝে আমি দেখি আমাকে,
আমার পিতৃসূলভ আচরণে দেখি বাবাকে,
আর অজান্তেই অকৃতজ্ঞ, অবুঝ,
আর চিরঋণী ভাবি নিজেকে।
আজ উপলব্ধি করি,
কতটা ভালোবাসাকে ভেবেছি বাড়াবাড়ি,
কত অবদানকে ভুলেছি তাড়াতাড়ি,
আবেগ, উৎকণ্ঠা, কল্যাণকামীতাকে,
অবজ্ঞা করে, চলেছি তাদের মতের আড়াআড়ি।
আমি জানি এসবই হবে হয়তো আমার সাথেও,
তুমিও হয়তো একদিন উপলব্ধি করবে,
কিন্তু সেদিন তুমি আমার মতই হবে নিরুপায়,
জগতের ঘুর্ণিপাকে ঘুরতে থাকবে,
শুধু ভাববে,আবার কখনো কাঁদবে,
কিন্তু বাবাকে দিতে চাওয়া সম্মান, মর্যাদা, আর সেবার,
সিংহভাগই অপূর্ণ থেকে যাবে।
উপলব্ধি করেছি আরো,
এমন কতশত ছোট-বড় অনুভূতি,
সব অনুভূতির প্রকাশ ভাষাতে হয় না,
অনেক কিছুই বোঝানো যায় না,
তেমনি উপলব্ধির বাবা আর সন্তান হয়েও,
আজ আমি সবকিছু বোঝাতে পারবো না।
উপলব্ধি এটাও হলো...
এটাই হয়তো জগতের রীতি,
সবাই এভাবে জীবনের সময় ক্ষয় করে,
উপযুক্ত সময় পেরিয়ে, ধীরে ধীরে,
নিজ নিজ জীবন থেকে, বারে বারে,
উপলব্ধি করতে পারে।
কিন্তু প্রয়োগের যথেষ্ঠ সময়, সুযোগ,
রবে না তার দ্বারে।
উপলব্ধি বলে দেয়...
মায়ের ব্যাপারগুলো মায়েরাই ভালো বোঝে,
যদিও বাবারা কিছুটা আঁচ করতে পারে,
তবে সেটা আসলে কখনোই সঠিক নয়,
তাদের উপলব্ধিই যোগ্য বর্ণনা হতে পারে।