আমি ধার্মিক হতে চাই না,
যে ধর্ম আমাকে মানবিকতা শেখায় না।
মানবতার কল্যাণে যার নেই কোন কাজ,
গত বাধা রীতি-নীতি আর বিশেষায়িত সাজ।
আমি সে ধর্ম মানতে চাই না,
যে ধর্ম আমার বর্তমানে রাখে না।
যার বানী আমাকে সংসার ছেড়ে, সমাজ পালিয়ে,
ধরে বেধে রাখে বায়বীয় অমলে, মায়ায় জড়িয়ে।
আমি এমন ধার্মিক হবো না,
যে ধার্মিকতায় পৃথিবী আমার হবে না।
পৃথিবীকে গড়ার মানসিকতার দমন করতে ছাড়ে না।
দান দিয়ে আর অবদান দিয়ে দুনিয়া সাজিয়ে রাখে না।
আমি এমন ধর্ম মানি না,
যে ধর্ম আমার পৃথিবীকে নিয়ে ভাবায় না।
পৃথিবীর কোন ভালো মন্দের দায়ভার কাঁধে নেয় না।
মানবতার কোন কল্যাণ কাজে ভুমিকা কিছু রাখে না।
আমি এমন উপাসনা করি না,
যে উপাসনা আমার জীবনকে গড়ে তোলে না।
আমাকে শিখিয়ে মানবের মাঝে শ্রেষ্ঠ প্রমাণ করে না।
শিক্ষার ছাঁচে, ক্ষনে ক্ষনে আঁচে আমার গঠন গড়ে না।
আমি এমন উপাসনা মানি না,
যে উপাসনা আমার বিবাদ বিমুখ করে না।
ভায়ে ভায়ে করি হানাহানি, ভাগ করি দ্বীনে সীমানা,
ভাগ হয়ে গিয়ে দলে দলে করি দ্বীন কায়েমের বাহানা।
আমি এমন ঈমান রাখি না,
যে ঈমান আমার হৃদয়কে কোমল করে না।
প্রভুর ভয়ে ভীত করে হৃদয়, অসহায়ে সহায় হয় না।
একা নিরালায় নির্যনে থেকে মন্দ হতে ফেরায় না।
আমি এমন ঈমান আনি না,
যে ঈমান আমার পাহারাদারী করে না।
খেয়ানাতের একটু সুযোগে খেয়ানত করা রোখে না।
ভিড়ের ফাকে খেয়ালী ছলে দৃষ্টি সংযত রাখে না।
আমি এমন কিতাব পড়ি না,
যে কিতাব আমার হৃদয়ে সাড়া ফেলে না।
কিতাবের বানী আমি বুঝি না, বুঝতেও আছে মানা।
নিষেধ আছে কৌতূহলেও জানা বোঝার গবেষণা।
আমি এমন কিতাব মানি না,
যে কিতাব আমার জীবন চালাতে পারে না।
শুধু কিছু সময় সুরে সুরে পড়ে, তোলা সুরের মূর্ছণা
অনর্থক, অকারণে নষ্ট করতে সময় আমি চাই না।
এসব নয় কোন ধার্মিকতা,
বরং ভন্ডামীর সার্থকতা,
একেই যদি বল ধার্মিকতা,
তবে অধার্মিকতাই আমার সার্থকতা।