কী কারণে আজ মনে পড়ে তাকে ক্লান্ত দুপুর বেলা,
ছেলেবেলা তার হাত ধরে ধরে কত যে খেলেছি খেলা।
একবার হেসে এসেছি কাছে, আবার গিয়েছি সরে।
কেন সে স্মৃতি আসছে আজ এত বছর পরে!
দুপুর হলে গাছের ছায়ে বসতো দাদু চেয়ারে,
হরেক রকম ছন্দ হতো, কিচ্ছা হতো আসরে।
দাদুর হাতের লাঠি, পায়ের খড়ম কখনো গিয়েছে হারিয়ে,
আমরাই তা লুকিয়ে রেখে, আমরাই দিয়েছি ফিরিয়ে।
একদিন দাদু ডেকেছিল কাছে, ❝কাছে আয়, কাছে আয়,
রাখবি কি মনে আমাকে তোরা, হারায়ে যদি যাই?❞
সাড়ে তিন হাত মাটির তলে দাদুর হয়েছে ঠাই,
এই কবিতা বলছে, ❝দাদু, ভুলি নাই। ভুলি নাই❞।
দাদুর যাওয়ার কদিন পরেই বু'র করুণ দশা,
বয়সের ভারে নুইয়ে গিয়েছে, হারিয়েছে তার দিশা।
কত যে কথা বলেছি তাকে, ধরেছে যখন রোগে।
দাদুর কথা আমাদের বু ভুলেছে সবার আগে।
এতো বছর পর কেন আজ শত স্মৃতি জাগে?
তাদের কাছে চলে যেতে হৃদয় ভিক্ষা মাগে।
একবার বু বলেছিল আমায়, ❝এদিকে আয়, কলা পেকেছে গাছে❞।
শাড়ির আচলে লুকিয়ে দিয়েছে সব, ভয় তার অন্য জনে দেখে পাছে।
এমন করে লুকিয়ে লুকিয়ে সবাইকে দিয়েছে সব ঢেলে,
বৃদ্ধ বয়সে অবাক সাহসে হৃদয় ধরেছে মেলে।
অসুখের ভরে কমাস পরে বু গিয়েছে দাদুর কাছে চলে।
ফাঁকি দিয়ে ক্লান্ত চোখে, বোবার মতো, কোনো কিছু না বলে।
ভিক্ষা মাগি খোদার কাছে, ❝হে খোদা দয়াময়,
দাদুর কবরে, বু'র কবরে যেন জান্নাতি হাওয়া রয়❞।