এ এক অবাক করা বন, সারি সারি তরু।
হাজার রঙের পাতা সেথায় লম্বা এবং সরু।
এমন বন আর একটিও কি এই ভূমেতে আছে?
একটি তরুর একটি পাতাও পড়েনি তো খসে।
এমন ঘাস দেখিনি আমি কোথাও কোনোদিন,
মাটির সাথে লেপটে আছে, হাজার রঙে রঙিন।
পাখ পাখালি ডাকছে শত, কিচিরমিচির ধ্বনি,
ডাকছে দূরে মায়া হরিণ কান লাগিয়ে শুনি।
একটা হলেই হবে আমার অদ্য রাতের ভোজ,
কী আর হবে একটা গেলে আসব না তো রোজ।
ধনুর বাণ দিলাম ছেড়ে, লক্ষ্যভেদিল মায়া হরিণ।
একটি গাছের সকল পাতা পড়লো খসে সেদিন।
সেথা রক্তস্রোতে লাল হলো হাজার রঙের ঘাস।
যেথা মায়া হরিণ ছাড়ল তার সর্বশেষ নিঃশ্বাস।
রাত দুপুরে ভোজন হলো, লাগল খেতে বেশ।
আদেশ করি হরিণ ভোজন গল্প যেন মাতায় নাকো দেশ।
দুদিন বাদে বাগান ছেড়ে রাজ্যে আসি যেদিন।
সাবধান করি, কেউ না জানুক খেয়েছি লাল হরিণ।
পরের ভোরে চাকর এসে বলছে কানে কানে,
হরিণ ভোজন গল্প নাকি বনের মালি জানে।
শুধাই তাকে ❝এমন গুজব কোথায় পেলে শুনি?❞
মালি বলে, ❝দারোয়ানকে বলে গিয়েছে মনু গোয়ালিনী❞।
বুঝতে আমার নেই যে বাকি, রাণি আমার বাজিয়েছে এই বীণ।
এসেই তাকে বলেছিলাম, অলিক বনে খেয়েছি লাল হরিণ।
পরের বছর নতুন করে শাণিয়ে বাণ আর অসি
রাজ পেয়াদা সঙ্গে নিয়ে অলিক বনে আসি।
দুচোখ হলো ছানাবড়া, হৃদয় হলো ভার,
একটি গাছের একটি পাতাও নেইকো গাছে আর।
ঘাসগুলো সব রক্তলাল, পাখির ডাকও বিলীন।
সারাবনের কোথাও নেই আর একটিও মায়া হরিণ।