এক দেশের এক ফকির সাধক, গাছের নিচে বাস,
রাস্তা ঘাটে ঘুরেফিরে সে চলে বারো মাস।
কাঁধে ঝুলানো পাটের ব্যাগ, হাতে বাঁশের লাঠি,
গান গেয়ে, সাধন করে জীবন চলে খাঁটি।
একদিন এক ভদ্র লোকে ফকিরের হাতে 'মোরগ' করে দান,
পুলকিত ফকির কতদিন পর পাবে রান্না মোরগের ঘ্রাণ।
এসব ভেবে ফকির বাবা মোড়লের বাড়ি উঠে;
ফকির দেখে মোড়লের চোখে অবহেলার ছায়া ফুটে।
ফকির বলে— “আমি এক সাধক ফকির, করবেন না হেলা;
এই দিলাম মোরগ, রান্না করে খাওয়াবেন একবেলা।”
কী যেন ভেবে মোড়ল বলে— “একটু বসেন এখানে।
রান্না হলেই আসবে খাবার, দিপ্রহরের ক্ষণে।”
আয়োজন করে ভিতর ঘরে মোরগ রাঁধা হলো,
মোরগ না দিয়ে ফকিরের থালে শুধু ডালভাত দিলো।
কাসার থালায় এসেছে খাবার। ফকির বাবা শোধায়—
“এ তো শুধু ডাল দেখছি! মোরগ গেল কোথায়?”
মোড়ল বলে— “দেশের যে হালচাল! দিয়েছেন মোরগ হয়েছে ডাল।”
এরপর মোড়ল ভেতর ঘরে গেলে, খাবার খেয়ে ফকির চালে দারুণ চাল।
কারুকার্যের কাসার থালা ব্যাগে ভরে রেখে মাটির বাটি রাখে সেথায়।
মোড়ল এসে বলে— “এ তো দেখছি মাটির বাটি! কাসার থালা কোথায়?”
ফকির বলে— “আমরা ফকির সাধক, দেশে-দেশে হাটি,
দিয়েছেন সুন্দর কাসার থালা, হয়েছে মাটির বাটি।”
(লোকগল্প অবলম্বনে)