গ্রীষ্মের তাপে সারাদিন অস্থির,
রাত্রির বাতাসে নিশ্বাস স্বস্থির।
সম্মুখে ধানখেত, ধানেদের দুলুনি,
বাম পাশে বেলি গাছ, ফুলগুলো চালুনি।
বাতাসটা ছেঁকে আসে, বেলির স্নিগ্ধতায়।
ডান পাশে আমগাছ, ভূতুড়ে বাড়িটায়।
মাঝখানে বসে আছি, পিছনেই দরজা।
ধুপ করে পড়ে যাবে, নেই কোনো ভরসা।
আসমানে তাকালে তাঁরাগুলো গুনা যায়,
চুপচাপ শুনশান, কারো কোনো সাড়া নাই।
খক করে হাসি শুনি, বুক করে ধুকপুক।
চারিধারে কেউ নেই, আওয়াজটা অদ্ভুত।
ভয় পেয়ে চলে যাবো, প্রস্তুতি নিয়েছি।
দেহ খানা নড়ে না, এই বুঝি মরেছি।
চোঁখ কান খোলা আছে, দেখি শুনি ঠিক ঠাক।
হাত পা থেমে আছে, আওয়াজ আসে খাক খাক।
বাতাসটা থেমে গেলো, ধানখেত নড়ে না।
বেলি গুলো পড়ে গেলো, স্নিগ্ধতা ছাড়ে না।
আমগাছ নড়েচড়ে, হেটে যায় সামনে।
জিন ভূত এলো নাকি, পালাবো যে কেমনে?
আমগাছ আলো হলো, দুধসাদা রঙ্গের।
হেলে দুলে নাচছে, হাসে কত ঢঙ্গের।
ধীরে ধীরে আমগাছ, নারী হলো গঠনে।
চুলগুলো বেণি করা, সাদা শাড়ি পড়নে।
ভৌতিক কারসাজি, ছুটে যাবো কোথা রে?
গলাতেও স্বর নেই, আজ বুঝি মরি রে!
নীল নীল দাঁত গুলো, যেই বের করেছে,
শঙ্কায় দৌড়াই, এই কাজ সেরেছে!
হাত পা নড়ে না, দৌড়িয়ে লাভ নেই,
চিৎকার দিতে হবে, স্বরহীন গলাতেই।
❝চুপ করো বাছাধন❞ ভৈতিক কণ্ঠ।
❝এক ফোঁটা কথা আছে, বসো এক দন্ড❞।
স্বর নেই সুর নেই, পানি নেই গলাতে।
ছুটতেও পারি না যে, পারি না পালাতে।
❝সারাদিন কোথা থাকো, দেখিনা যে আজকাল?
গাল দুটো ফোলা কেন? চোঁখ দুটো কেন লাল?❞
জবাবটা কেমনে দেই, আমি আজ বাকহীন।
স্বর নেই গলাতে দয়া করে বুঝে নিন।
ভূত তার ছোঁয়া দিল, বাকহীন গলাতে।
আলতো ফুঁ দিলো, 'বোবা' রোগ সরাতে।
যেই আমি স্বর পেলাম, ডাক দিলাম ❝ও মাগো!❞
কেউ নেই আসে পাশে, প্রতিধ্বনি ❝ও মাগো!❞
এইভাবে স্বর পাবো, ভাবি নাই কোনোদিন।
গাছটায় পানি দিতাম, শোধালো সে সেই ঋণ।
বড় হও গাছ ভাই, পানি দিবো আমি রোজ।
দূরে আর যাবো না, রোজ রোজ নিবো খোঁজ।
সবকিছু ঠিকঠাক, ধান গাছ বাতাসে দেয় দুল।
ডানপাশে আমগাছ, বামপাশে স্নিগ্ধ বেলি ফুল।
২৫ শে এপ্রিল ২০২২