কথা তুমি জন্মেছিলে কবে,
সেই সে কোন অযুত বছর আগে।
কিবা তোমার জন্মদিন কিবা জন্মমাস
সভ্যতার আগে না পরে?
কোথা হতে বিবর্তিলে?
পাখিদের কলকাকলি,নাকি মেঘের গর্জন বা পশুর হুঙ্কার,হাতির বৃংহন নাকি অশ্বের হ্রেষা,
বাতাসের শনশন না ঝড়ের আস্ফালন ।
এসবই কি সযত্নে লালিত করেছে তোমার ভ্রুন?
অবশেষে কালের আবর্তে প্রকৃতির জঠর হতে
জন্ম নিলে তুমি মানবের মুখ গহ্বর হতে
মানব ধ্বনি হয়ে।
। সেই শুভক্ষণে কত বিচিত্র ধ্বনিতে
মুখরিত হত আকাশ বাতাস ।
চেনা কি যেত তখন পশু আর মানবের
বিচিত্র ধ্বনির তফাৎ ।
ধ্বনির শৈশব পেল শব্দের আকার।
বিশৃঙ্খল শব্দের স্রোত বয়ে চলল বহুকাল ধরে।
ধ্বনির কৈশোর এল অবশেষে।
ভাষা এসে শব্দকে বাঁধল শৃঙ্খল ডোরে।
ব্যাকরন এসে শৃঙ্খলিত ভাষাকে করল
আরও সুশৃঙ্খল।
আজ তুমি অসীম শক্তিশালী ।
তুমি আজ শক্তিশালী পরমানু বোমারও চেয়ে।
কথার মায়াজালে বন্দী আজ সমগ্র বিশ্ব ।
যার আছে কথার যাদু
সন্মোহিত সকলেই তার কাছে।
কথা শিল্পী,বাচিক শিল্পী ,কথক
কথায় মোরা মানব সমাজ।
কথা দিয়ে কিনে নিয়ে মানব হৃদয়
কেউ নেতা,কেউ মন্ত্রী ,কেউ উকিল,
কেউ বা ধর্মগুরু।
কথাই সৃষ্টি করে সাহিত্য সম্ভার,
কথায় সুর দিয়ে সৃষ্টি হয় গানের জলসাঘর।
কথা তুমি মায়াময়,মোহময়,অমোঘ শক্তিধর
কথা তুমি জাগিয়ে তোলো স্নেহ প্রেম ,ভালবাসা ,
বিশ্বাস মানব হৃদয়ে,
আবার তুমিই সৃষ্টি কর ঘৃনা ,হিংসা ,ঈর্ষা,বিদ্বেষ।
কথাতেই খুঁজি আমরা জীবনের মানে
জীবন বিনাশ হয় কথার সৃষ্ট অপমানে।
নরেনকে চিনল বিশ্ব শিকাগো সন্মেলনে,
শুধু কটি কথা দিয়ে - 'My brothers & sisters of America'
সুভাষ নেতাজী হলো,সেও তো কটি কথা দিয়ে
'আমায় রক্ত দাও
আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব'।
বোবার কোনো শত্রু নেই
কারন তার কোনো কথা নেই।
কথায় হাসা,কথায় কাঁদা,কথায় ভালোবাসা গড়া,'অসির চেয়ে মসি শক্তিধর'
সে তো কথারই নামান্তর।