একদিন মনকে ডেকে শুধাই চুপিচুপি ,
মন তুমি কে?
মন তুমি কার?
আমি কি তোমার /নাকি তুমি আমার ?
কার অধীন তুমি?
কে তোমার নিয়ন্তা ?
হাজার প্রশ্ন আছে তোমাকে ঘিরে।
যত্র তত্র নিয়ে যাও,যেথায় যখন ইচ্ছা ,
যদিও কখনও থাকে আমার অনিচ্ছা ।
যখন বসে থাকি রাত্রির নিবিড় আঁধারে,
নক্ষত্র খচিত নিকষ কালো দিগন্ত বিস্তৃত
আকাশের নীচে।
মুগ্ধ হই এই অখন্ড বিশ্বের সীমাহীন পরিব্যাপ্তি নিয়ে,
তোমাতে সওয়ার হয়ে চলে যাই
সহস্রকোটি আলোক বর্ষ দুরে,সুদুর নক্ষত্রলোকে।
ভুলোক,দ্যুলোক ছাড়ায়ে মহাবিশ্বের অসীম
শুন্যতার মাঝে।
তোমার চোখে দেখতে পাই
গ্রহের ঘুর্নন,পৃথিবীর পরিক্রমা সূর্যকে ঘিরে।
চাঁদের মাটি ছুঁয়ে যাই
মঙ্গলে দিতে পারি পার।
আবার তোমাতে সওয়ার হয়ে মুহূর্তে চলে যাই
হিমালয়ের শীর্ষ চুড়ায়,
অথবা আটলান্টিকের অতল তলায়।

তোমাকে দিয়ে পেতে পারি
লাসভেগাসের বিলাস বৈভব মদিরার স্বাদ,
ক্যাসিনোর লাস্যময়ী নারীর ব্যাসন।
আবার মুহূর্তে হতে পারি নীরব প্রশান্ত ,
যেতে পারি শ্বেত শুভ্র বরফে মোরা পুন্যভুমির পথে,
কেদার বদ্রী গঙ্গোত্রীর প্রশান্তির মাঝে।

যখন বসে থাকি বর্ষাস্নাতশান্ত দুপুরে।
খোলা জানালার পথ ধরে উপভোগ করি
ঝাপসা হয়ে যাওয়া পুকুরের ওপারের ছবি,
বাতাসের সঙ্গতে নৃত্যরতা বৃষ্টি বঁধুর
দলবেঁধে আনাগোনা।
তখন তুমি নিয়ে চল বর্ষনক্লান্ত চেরাপুঞ্জীর
দুর্গম কোনো সবুজ বনাঞ্চলে,
যেন শুনতে পাই অবিরাম বৃষ্টিধারার
টুপটাপ নুপুরের ধ্বনি।

মন তুমি অতি চঞ্চল,ক্ষিপ্র তোমার গতি।
দেবতারও বোঝার অসাধ্য তোমার অস্থির মতি।
আলোর গতিরে পিছনে ফেলেছ,
বিদ্যুত মেনেছে হার।
যোগীরে করেছ যোগভ্রষ্ট
ধ্যান ভেঙ্গেছ তার।
কঠোর মুনি বিশ্বামিত্রে ভাঙ্গালে তুমি ধ্যান
মোহিনী এক উর্বশী দিয়ে,
মহাযোগী মহাদেব হলেন যোগভ্রষ্ট।
কামার্ত করলে তারে পার্বতীর তরে।

হৃদয় সাগরে ইন্দ্রিয়ের দোলায়
তুমি দুলছ অহর্নিশি,
বোধের অগম্য তুমি,তুমি যে চপলা
যেন তুমি বায়ুর্নাবমিব অম্ভাসি।