প্রিয় নদী ইছামতি
আল আমিন চৌধুরী স্বপন
যে চোখের সামনে স্মৃতি ঢেউ খেলে, তার চোখে চোখ রেখে আমি বেচেন খুঁজি তারে। যে
নদীর জলে জোঁয়ার আসে, তারই কিনার ধরে চলি আমি। স্রোতের কি আর কোন ঠিকানা
আছে! বহে নীরবধি। আমার তো ঠিকানা আছে, নামে মাত্র ইছামতি।
নদী বুঝে তার জলের প্রবাহ, বুঝে জলহীন পানি শূন্যতা, বুঝে ভাংগা-গড়ার
আত্মোপলব্ধির গভীরতা।
নীজের ভিতরে যে নদী আছে, আমি তাকে স্পর্শ করে বুঝেছি, বুঝেছি তৃষ্ণার্ত হৃদয়ে
সুপিয় পানির প্রয়োজনিয়তা।
আমি ভাবনায় ডুবে মরি, কখনও ভাসি, কখনও সাঁতার কাটি, কখনও ভাটা দেই, কখনও
এপার-ওপার দুই পারাপারে করি ছুটাছুটি, আমি পিছনে ফেলে এসেছি না ভুলা জীবনের
অসংখ্য স্মৃতি।
ওরে নদী, আমার যেমন কাঠ-খরা মন অশ্রু ঝরে না, তোরও তেমন ফাঁটা কপাল, শুকিয়ে
তোর দূরাবস্থা। আমি তো স্বচক্ষে সব দেখি, তোর বুকে জল নাই
স্রোত নাই
ঢেউ নাই
তুই বেঁচে থেকেও মরা নদী।
সেই যে কবে তোর পাড়ে বসে-
মাছ ধরেছি,
ঘন্টার পর ঘন্টা ডুবাডুবি করেছি
পাউ পোলো
হাত পোলো বেয়েছি,
জাল ফেলে হুররা দিয়ে
বর্শী পেতে কত মাছ মেরেছি।
প্রতিদিনের অভ্যেসটা ছিল তুই আর আমি। নাও নিয়ে টানাটানি, জল তরংগে ঢেউ
খেলেছি, জলের ছলে দেখিছে মাছের ফুটকলি। জীবন যেখানে যেমন, তোর বুকে জল
থাকুক বা না থাকুক তুই আমার প্রিয় নদী ইছামতি।