ফিরে যাইতাম চাই
আল আমিন চৌধুরী স্বপন

যত দূর তত কাছে টানে, এ কথাটা সত্যি!  
একটি নৈশব্দ দেয়াল ভেংগে ইচ্ছে করে ফিরে যাই অতীত জীবনে!

ঘর ছাড়া মানুষ গুলো কেন যেন শুধু নদী খাল বিল সড়ক জনপদ, সবুজ অরণ্যে ঘেরা
নিজ বাড়ীর আংগিনায় মনের আবেগে ঘুর ঘুর করে ফিরে!  

খাবার চিবানোর সময় গাল কিম্বা জিব্বায় কাঁমড় লাগলেই বলি, বাড়ী থেকে কে যেন মনে
করছে !
হাটা চলায় হুচট্ খেলেই ভাবি একটু বসে যাই, কেননা সামনে বিপদ থাকতে পারে। হাত
থেকে কিছু পরে গেলে চমকে উঠে বলি, কপালে দূরগতি আছে! আসলে কিছুই না,
অন্যমনষ্ক হওয়ার কারণেই ঘটনাগুলি ঘটে থাকে।

যখন আমার হাতে খুঁড়ি, অ আ ই ঈ লিখতে গিয়ে কতবার স্লেলেট পেন্সিল ভেংগেছি, তার
তো কোন নেই হদিস। এই ভাবেই অতীত ভেংগে ভেংগেই বর্তমানে এসেছি।

কাড পেন্সিল দিয়ে দাগাদাগি করে ঘর বাড়ী নদী গাছ-গাছালি আঁকা আঁকি করে নিজ
গ্রামকে ভালবাসতে শিখেছি। যত দূরেই থাকিনা কেন, সেই মেদহীন পেন্সিলে আঁকা
গ্রামীন ছঁবি এখনও মন থেকে মুছে ফেলতে পারিনি।
দুই ঠোটের মাঝে রঙ পেন্সিলের দাগ লাগা ছাঁপ, আয়নার সামনে দাঁড়েলেই এখনও
দেখতে পাই আমার ছোট বেলার রঙ মাখা প্রজাপতি দিন।

জুমা বার বাবার অপেক্ষায় উঠানে বসে থাকতাম, নামাজ শেষে মসজিদ থেকে নিয়ে
আসবে বাবা মিলাদের শিন্নি, কাগজের ঠোঁঙায় ভরা বাতাসা আর আমিরতী! বাবা নেই,
এখন তো আর অপেক্ষাও  নেই, আছে শুধু বাবার স্মৃতি।

চাপ কলের পানি খেতে গিয়ে বুকের জামা ভিঁজিয়েছি কত শত বার, এখন শুধু স্মৃতি মন্থন
করে চোখের জলে ভিঁজি।

আমার প্রান যায় উড়ে যায় ঐ দীগন্ত ফুঁড়ে, তবুও আমি ছোট নাদী ইছামতির পাড় ঘেসে হেটে চলি মনের আনন্দে।

কেউ যদি পারো যাদু দিয়ে-
আমার মাথায় চাপ দিয়ে ছোট করে দাও আমারে, আমি হাফ্ প্যান্ট পড়ে আবার যেতে চাই সখের পাঠশালাতে।


আমাকে যদি ডেকে নাও পিটি ক্লাশে
বাঁশির হুইসেল শুনে এখনও লাইনে দাঁড়িয়ে যাই খেয়ালের বসে।
পিটি স্যারের কমান্ড শুনে, ভাবনার মাঝে এখনও আরামে দাঁড়াই আবার সোজা হই।

মনে পড়ে সেই সব, প্রতিদিন ভোরে জেগে উঠতাম সূর্য উঠার আগে জোটবেধে মসজিদে
যাইতাম কোর'আন পড়া শিখতে। আলিফ, বা, তা, ছা সুদ্ধ উচ্চারণ এখনও শুনতে পাই
হুজুরের কন্ঠ থেকে।

যতই পড়ি, যতই শুনি, ভেবে হই অস্থির, এখনও আমি যেতে পারিনি "আলিফ"র কাছাকাছি।