প্রিয়ংবদা,
আমি পশ্চিমবঙ্গে,আর তুমি ঝাড়খণ্ডে
তোমাকে কথা দিয়েছিলাম
আর মাত্র পঁয়তাল্লিশ দিন পরেই ফিরে আসব,
তোমার হাতে তুলে দেব এক মুঠো জোছনা
যা দিয়ে ছেলে আর মেয়েটার লজ্জা নিবারণ করবে
মগজে জ্ঞানের সলতে জ্বালাবে
নিরেট অন্ধকার উদরে ছেড়ে দেবে এক ফিনকি আলো।
এক আকাশ রোজগার করেছিলাম,
কিন্তু ফিরবার কয়েকদিন আগেই কোভিদ উনিশের দৌরাত্ম্যে থেমে গেল চাকা।
আমি এখানেই আছি
দুর্মূল্যের যাঁতাকলে টাকাগুলো পেশায় হয়ে গেল।
শিরায় শিরায় স্বপ্নগুলো রোগ হয়ে বাসা বাঁধছে
প্রায় পঞ্চাশ দিন আমি বসে আছি
আর টাকা নেই,
খাবার নেই
শুধু আমি আছি একটা খড়কুটোর মতো।
পাশের নালা থেকে শাক তুলি
পুকুর থেকে কুড়িয়ে আনি গেঁড়ি-গুগলি-শুক্তী
শুকনো পাতার আগুনে সেগুলি সেদ্ধ করে
কোন মতে জীবনের চাকাটি ঘুরিয়ে চলেছি।
কতদিন দেখা হয়নি তোমার সাথে
কতদিন অভাবের দাউ দাউ আগুনে পুড়ে যাওয়া ঠোঁট দিয়ে আমায় স্পর্শ করনি
কতদিন ছেলে মেয়েদের মুখে শ্রদ্ধার বাবা ডাক শুনিনি।
জানিনা আর কোনদিন তোমার বিনুনি চুলের গন্ধ পাবো কিনা,
ছেলে-মেয়ের কোমল হাসির স্রোত আমার বুকে আছড়ে পড়বে কিনা!
তোমার হাতের আদুরে রান্না করা দু'মুঠো অন্ন খেতে পাবো কিনা!
জানিনা,তুমি কেমন আছো কিভাবে আমার সংসার কে রেখেছো
আমার ছেলে মেয়ের পেটে জোছনা খেলে তো?
ওদের মগজে জ্ঞানের শিখা জ্বলবে তো?
আমার মরুভূমিতে এক পশলা বৃষ্টি দিতে থাকবে তো প্রিয়ংবদা?