পথের ধারে তপ্ত রোদে বসে থাকা -
উদাস, মলিন, ধুলোমাখা ঐ ছোট্ট মুখটার পানে
কোনদিন চেয়ে দেখেছো? দেখোনি চেয়ে?
আমি দেখেছি।
আমি পড়েছি গ্রীষ্মের প্রখর তাপে শুকিয়ে আসা ঐ তৃষ্ণার্ত চাওনির ভাষা,
সেই অবসন্ন ক্লান্ত চাওনি যেনো -
শহরের পথ চলতে থাকা ব্যস্ত মানুষদের ডেকে প্রবল আবেগে বলতে চায় ---
আমি ক্ষুধার্ত
আমায় দু-মুঠো খেতে দাও।।
ভারী ভারী মোট বওয়া ক্লান্ত, অবশ ঐ ঘর্মাক্ত দেহটার পানে,
কোনো দিন চেয়ে দেখেছো ? দেখোনি চেয়ে?
আমি দেখেছি --------
আমি শুনেছি,
গ্রীষ্মের প্রখর তাপে তাদের দেহ নিংড়ে ঝড়ে পড়া
নোনা জলের স্রোতের শব্দ।
যে শব্দের প্রতিটা ঢেউ তরঙ্গে একটা চাপা আর্তনাদ প্রবল আক্রোশে চিৎকার করে বলে ওঠে ---
আমি ক্ষুধার্ত
আমায় দু-মুঠো খেতে দাও।।
বাড়ী বাড়ী বাসন মাজা কোনো সন্তানের জননীর
ক্ষয়ে যাওয়া, ছাল ওঠা, ঐ শক্ত হাতের পানে
কোনো দিন চেয়ে দেখেছো ? দেখোনি চেয়ে?
আমি দেখেছি -
আমি অনুভব করেছি ---
সেই ক্ষত বিক্ষত কোমল হাতের স্পর্শ।
সে স্পর্শ যেনো নিজের প্রতিটি শিড়াকে তীব্র অভিলাষে জাগরিত করে, কান্না চাপা করজোড়ে
বলতে চায় ----
আমি ক্ষুধার্ত
আমায় দু-মুঠো খেতে দাও।।
গভীর রাতে তুমি মিছিলের স্লোগান শুনেছো?
শোনোনি? আমি শুনেছি।
মধ্যরাতের নিস্তব্ধতাকে কোনো সীমাহীন আকুলতায় চুর্নবিচূর্ন করে,
একদল মশালধারী রুগ্ন, শীর্ণ, শরীর -
রাতের অন্ধকার পথে দলে দলে এগিয়ে চলেছে।
তাদের ঐ স্ফীত শিড়া বেড়িয়ে আসা তৃষ্ণার্ত গলায়
একটাই স্লোগান আকাশ বাতাস কে মুখরিত করে বলছে ----
আমরা ক্ষুধার্ত
আমরা ক্ষুধার্ত
আমরা ক্ষুধার্ত
আমাদের দু- মুঠো খেতে দাও