রতনের জন্য
মো ফাত্তাহান আলী
এখনো ওর কথা মনে হলে, অঝোরে চোখ বেয়ে নামে জল,
কোথায় আমার শৈশবসাথী, যে ছিলো সুখ-দুঃখের পরশমল।
সুঠাম দেহ, প্রাণোচ্ছল হাসি, ভাবি আজও বারেবার,
সন্ধ্যা হলে মাঠে বসে গল্প, সে দিনগুলো কোথায় হারাল?
খেলার ছলে ঝগড়া হতো, কতই না হাসতিস রে তুই,
অনিন্দ্য সেই প্রভাত গেছে, মাছ ধরার দিনও আর কই?
সেদিনের স্মৃতি ভাবতে ভাবতে, চোখ দুটো হয়ে ওঠে লাল,
রাত হলে খড়ের ঝোপে, কেউ করে না অপেক্ষা আর।
দুষ্ট ছিলি, আমিও ছিলাম, বন্ধুত্ব ছিল অটুট সেথা,
সে ভেবে লোকে বলত বারবার, " ছেলেটাও বুঝি নষ্ট হলো হবে একই দশা "
ঈদের দিনে শুর্মা আতর, পড়িয়ে দিতিস আমার চোখে,
আমরা মিলে ছুটতাম মাঠে, আনন্দ ছিল দিগন্তলোকে।
বড়দহের মাঠে কেটেছি ধান, রোদে পুড়ে ঘাম মুছেছি,
কৃষাণ সেজে স্বপ্ন বুনেছি, ভবিষ্যতের পথ খুঁজেছি।
সেসব দিন তো গেল চলে, ভয় পেতাম ভবিষ্যতের ঢেউ,
কিন্তু ভাবিনি হঠাৎ একদিন, শুনতে হবে—"রতন আর নেই!"
লম্বা রশি, গলায় তোর, এমন করে কেন করলি রে?
কী ছিল তোর দুঃখ এত, কাঁদিয়ে গেলি নিরবে!
আমায় কেন ঋণী করলি, সেদিনের হারানো স্মৃতি ,
শৈশবের যত প্রতিশ্রুতি, মাঠের খেলা, হাসির ধারা।
বন্ধু তুই রয়ে গেলি, স্মৃতির পাতায় চিরদিন,
ভুলবো না তোকে কখনো, থাকবি হৃদয়ের অমলিন।