এই শুক্রবারে গিয়েছিলাম নূরপুর কবরস্থান মসজিদে
ডান পাশে জামাতের শেষ দিকে বসেছিলাম রোদে।
হঠাৎ করে কে যেন কাঁদে অশ্রুভেজা চোখে।
খানিক পরে এলান এলো অমুকের মায়ের জানাজা,
সবাই যেন কাতারবন্দী করে।
বুকখানি শীতল মোর, অশ্রু এলো চোখে,
মায়ের মুখখানা দেখিনি সেই যে কবে রে।
জানাজার মাঝে কোনো যেন ভাই বলে,
"এ পাড়াতেই জন্ম মায়ের, এইখানেই বেড়ে ওঠে,
হঠাৎ করে মা হারালাম, ক্ষমা করিও সেই মারে।"
"পুতুলের মতো ছিল মায়ের মুখ, আজ মা লাশ হয়ে,
কতবার ডাকি মা মা মা বলে, কেন মা আজ নীরব হয়ে।"

একটু পরে শুরু করিল হুজুর জানাজার নামাজ,
আমি তখন কমলের মায়ের জন্য করিলাম দোয়ার নিয়ত।
ডানে বামে সালাম ফিরিয়ে সবাই যখন যাচ্ছি লাশ কাঁধে নিয়ে,
পাশে ছিল এক দাদা বুড়ো, বলিল, "কবে যেন বাপু ছেড়ে....।"

কবরখানা সাদা ঝকঝকে, কত কবর গোরস্থানে,
বাচ্চা কাঁধে এক ভাই ছোট্ট বাবুরে কয়,
"বাবু তুমি যাবা, আমি যাবো, মা যাবে, আরও যাবে,
তোমার ভাই লিপু, এই যে কবর বাড়িটাতে।
এই বাড়িটা ভালো লাগে আমার, তোমার কোনটা লাগে?"
পরক্ষণেই বাবুটো বলে, "তুমি যাবা, আমি যাবো, আবার যাবে ভাই লিপু,
যেইখানে আমরা সবাই, লাগবে না কেন ভালো আব্বু।"

আমি ছিলাম পাশে, শুনেছিলাম তাদের কথা,
আসলে কি যেতে হবে যেমনে যায় মানুষ আজব ঘরে।
ও মা, কবে কবর দিয়েছি সেই মালু দাদারে,
কভু যেন দেখি না আর, নাই যেন ফিরে।

হেটেছিলাম পথ খানিক, তিন মুষ্টি মাটি কমলের মারে দিয়ে।
পাশে দেখি কত ছেলে কান্না করে অঝোরে মোনাজাতে।

আবার দেখি সাদা বালি, দেখি কাঁচা কবর কার,
শেয়ালের গর্ত বুঝি করেছে নতুন আরেক ঘর।