(এটি একটি কাল্পনিক গল্প, কিন্তু কল্পনার আড়ালে বাস্তব ছবিটি তুলে ধরা হয়েছে)

সে সরকারি স্কুলের ছাত্র, নাম তার নন্দন।
তার ঘরসংসার দরিদ্র, এটাই তার জীবন।

এর মাঝে তার খেলা ছিল, ছিল লেখাপড়া।
তার শিক্ষার প্রসংশায় মুখরিত হত গ্রাম পাড়া।

সবাই ভাবত— লেখাপড়া করেছে সে এমতাবস্থায়।
এখন সেই প্রশংসা আর নেই, সবই যায় হারায়ে।

রোজ নন্দন তার স্কুলের অবস্থা দেখতে পায়।
দেখে— শিক্ষার দুর্নীতি আকাশ ছুঁয়ে যায়।

শাসকেরা করেছে স্কুল নিয়ে নোংরা রাজনীতি।
ভোটের সময়ে স্কুল হয়েছে ভোটকেন্দ্র— এ কী নীতি?

মে ও জুন— দুই মাসে দীর্ঘক্ষণ গরমের ছুটি।
এই ভ্যাপসা গরম ছাত্রটির কাটে শুধু খেয়ে রুটি।

না আছে তাদের পয়সা কোথাও বেড়াতে যাবার।
না আছে তাদের টাকা মোবাইল ল্যাপটপ কেনার।

ওদিকে সংসদ বলেছে, অনলাইন ক্লাস করতে হবে।
কিন্তু গরীব ছেলেটা তার জন্য কোথায় মোবাইল পাবে?

কোথায় পাবে সে পড়ার বই? বাজারে তা অমিল।
এই অবস্থার কবলে পড়ে ভেঙে যায় তার দিল।

আবার স্কুল থাকে ফাঁকা, থাকে শিক্ষকের অভাব।
শাসক দল কিচ্ছু বোঝে না— এটাই ওদের স্বভাব।

নন্দনের ইচ্ছে— বড় হয়ে ডাক্তার হতে চায়।
কিন্তু শিক্ষা? পড়াশোনা? চুকে গেছে। হায়!

পুরোপুরি ভুলে গেছে সে সতেরোর নামতা।
এখন জীবন কাটে তার খেয়ে রুটি, পান্তা।

তার বন্ধুরাও সেই দশায়, একই সাগরে ভাসে।
বেসরকারি স্কুলের ছাত্ররা তাদের দেখে হাসে।

ব্যঙ্গ করে, মজা করে, করে গালিগালাজ।
কী ক্ষতিপূরণ দেবে তবে এই সুশীল সমাজ?

এই বাংলার হাজার হাজার নন্দনদের ভবিষ্যৎ
হয়ে গেছে অন্ধকার; ওরা হাঁটছে ভুল পথ।

বাপ-মায়েদের ভরসা এখন বেসরকারি স্কুল।
কখনো কি ফুটবে নন্দনদের জীবনের প্রথম ফুল?

কোনোদিন কি খুলবে সরকারি স্কুলের বন্ধ তালা?
স্কুলে যেতে পারবে কি নন্দন, কানন, মালতীবালা?

নন্দন জাগে, প্রতিবাদের আগুন জ্বলে তার বুকে।
ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে থাকে; সে দাঁড়ায় রুখে।


(১৪/০৬/২৪)
মালদা