পর্ব ১
(মাধ্যমিকের আগে)

(ঋণ: 'রামধনু রং', সুচিত্রা ভট্টাচার্য)

উপন্যাসের শেষ দৃশ্যে—
যে মুহূর্তে ছোট্ট গোগোল
স্কুলের ছাদে চেয়ারের উপর দাঁড়িয়ে
দেখছিল আকাশে এক রামধনু,
শিক্ষিকার সাথে তার মা এসে
কাঁদতে কাঁদতে তাকে জড়িয়ে ধরছিলেন,
সেই মুহূর্তে হঠাৎ বাবা এসে প্রস্তাব দিয়েছিলেন—
অবশেষে গোগোলের সিলেকশন হয়ে গেছে।
প্রকৃতির বোধহয় বিশ্বাস ছিল —
গোগোল একদিন ঠিক পাশ হয়ে যাবে
বেস্ট স্কুল নয়, বেস্ট এডুকেশনের জন্য।
তাই হয়তো রামধনু দেখা দিয়েছিল।

এখন আমি ভাবতে থাকি—
আমিও যদি একদিন রামধনু দেখতে পেতাম...
সেই রামধনু দেখার মুহূর্তে খবর আসবে—
আমি পরীক্ষায় পাশ হয়েছি।
জীবনে শুধু একবার...
শুধু একবারই রামধনু দেখার সুযোগ পেয়েছি।
স্বপ্নে যদি সেই সাতটি রঙের মাঝে হারিয়ে যাই,
সেই সাতটি রঙের মেলায় ঘুরি,
তবে মনে মনে ভাববো—
'আমি মুক্তি পেয়েছি! মুক্তি! মুক্তি!..."

আমি একদিন রামধনু দেখতে চাই,
সাতটি রঙের মোহে অন্ধ হতে চাই,
সাতটি রঙের খেলায় রঙিন হতে চাই
সাতটি রঙের মাঝে হারিয়ে যেতে চাই
একদিন.....।


(০৩.০১.২০২৪)
******************************
পর্ব ২
(ফলাফলের দিনে)

জানুয়ারি মাসে 'রামধনু' (ছায়াছবি) দেখে
আমি মনের আকাশে দেখতে চেয়েছিলাম সেই রামধনু,
যে রামধনু সেই ছোট্ট গোগোল
স্কুলের ছাদে চেয়ারের উপর দাঁড়িয়ে দেখেছিল নীলাকাশে।
সেদিন তার সিলেকশন হয়ে গেছিল—
সেই আনন্দ প্রকাশ করতে চেয়েছিল রামধনু।

আমিও সেই তাকে দেখতে চেয়েছিলাম।
অবশেষে দেখা দিয়েছে সে মনের আকাশে।
হ্যাঁ, দেখা হয়েছে আজ রামধনু।
আমি পাশ করেছি মাধ্যমিক—
আজ দুপুরে সেই খবর পেয়ে হাসতে হাসতে লাফিয়েছি আমি।
ফোন কলে, হোয়াটসঅ্যাপে বড়দের "শুভেচ্ছা"
আর আমার "থ্যাঙ্ক ইউ"।

আজ মনে পড়েছে —
যে পরিস্থিতিতে আমি পরীক্ষা দিতে পেরেছিলাম,
যে পরিস্থিতিতে রাগ-চিৎকার করেছিলাম,
সেই পরিস্থিতির সুফল আজ পেয়েছি।
যে শুয়োরের বাচ্চা সেই পরিস্থিতি তৈরি করেছিল বাড়িতে,
সেই শয়তান মনে করুক— সে যা করেছিল ভুল করেছিল,
ভুলটাকে স্বীকার করুক, নিজেকে গালাগালি দিক।

এই দিন কখনো ভুলব না।
ভুলব না সেই রামধনুকে,
যে আনন্দবার্তা আমার মনে প্রচার করেছে।
দেখা হল রামধনুকে মনের আকাশে।
আজ আকাশে ঝকঝকে রোদ।


(১৩.০৫.২০২৪)