(কবিতাটি লিখেছিলাম লোকসভা ভোটের মরশুমে। আশ্চর্য, ভোটের পরেও দুর্নীতি ও ধর্ষণের "এই রাজনীতির অবসান" আমরা দেখতে পাইনি। ভোটের ফল ভোটারদের ভোগ করতে হচ্ছে)

১৪ই মার্চ, বিকেলবেলায় —
মা আর আমি গেছিলাম যাদবপুর
দাদু-দিদার সঙ্গে দেখা করতে।
তাদের ছেলে ও মেয়ে কাজ করে ব্যাঙ্গালোরে।

অটো ধরেছি দুবার।

প্রথমবার অটো চড়তে দেখা গেছে —
তৃণমূলের এক দল লোক মিছিল করতে
বড় বড় ঝান্ডা হাতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে —
জড়োসড়ো হয়ে।
অটো থামল একটা মিষ্টির দোকানের সামনে—
দাদু-দিদার জন্য মা মিষ্টি কিনছে,
আমি খাচ্ছি ভেজ চপ।
এমন সময়ে দেখি—
সেই লোকগুলো পায়ে পায়ে হাঁটছে,
স্লোগান তুলছে, ঝান্ডা ওড়াচ্ছে,
কয়েকজনের মুখে হাসি।
কতটা পথ হেঁটেছিল ওরা, জানি না।
মিছিল দেখে মুখে বানিয়েছি ক্ষোভের এক্সপ্রেশন।
কেউ তা দেখেনি।

দোকান থেকে বেরিয়ে আরেকটা অটো ধরেছি।
তাতেও চড়ে দেখি— মিছিল দূরগামী।
অর্ধেক রাস্তা দখল করা মিছিল
বেপরোয়া মিছিল—
কোনো গাড়ি চলছে না ঠিকমতো।
রোড ক্রসিংয়ে যখন পৌঁছাল অটো,
হঠাৎ কোথাকার মাইক ঘোষণা করল —
মহিলারা আগে মিছিল করবেন
(যদিও পুরুষ-মহিলা সবাই মিছিলে ছিল)।
সিগন্যাল হল সবুজ,
অটো চলল বাঁদিকে।
মিছিল এগোচ্ছে সোজা।
মূর্তিমান কবি সুকান্ত গালে হাত দিয়ে
চাক্ষুষ করছেন এ দৃশ্য।
আমার মনে হল—
সুকান্ত'দা কি এই রাজনীতির চেহারা দেখতে চেয়েছিল?
যেখানে মান-সম্মান চুরি, ধর্ষণ,
নেতাদের নোংরা কথা, কালো টাকা,
সেখানে দাঁড়িয়ে কবি কি দেখতে চেয়েছিলেন
এই রাজনীতির চেহারা?
আমরাও কি চেয়েছিলাম? কেউ কি চেয়েছিল?

হে বাংলার হতভাগা জনগণ,
আপনারা যদি এমন কিছু আর দেখতে না চান,
তবে ভোট দিয়ে এই রাজনীতির অবসান
ঘটিয়ে দেখান
দেখি — আপনারা নাগরিক কেমন।
কোন পার্টিকে আপনারা করবেন নির্বাচন!


(১৮/০৩/২৪)
মালদা