হে মোদের জগজ্জননী মা দুর্গা,
তোমায় জানাই স্বাগত সভ্যতার ভাগাড়ে।
তোমায় জানাই স্বাগত মৃত্যুপুরীতে।
তোমায় জানাই স্বাগত নরকভূমিতে,
যেখানে মানুষরূপী জানোয়াররা বিরাজ করে,
ঘুরে বেড়ায় রাস্তাঘাটে, যেখানে সেখানে
আর খুন করে তোমার কন্যাসন্তানদের,
যারা এই পৃথিবীতে এসেছিল
ভয়হীন বেঁচে থাকার স্বপ্ন নিয়ে,
দেশের জন্য কিছু করার ইচ্ছে নিয়ে।
তুমিও তো প্রতিবছর আসো এই পৃথিবীতে
অশুভ শক্তির বিনাশ করে শুভ শক্তির উদয় ঘটাতে।
দেখো, একবার চেয়ে দেখো এই ভূমির দিকে।
দেখো তোমার বাপের বাড়ির চারপাশে কী হচ্ছে।
তোমার এক কন্যাসন্তান— "তিলোত্তমা"-র খুন ধর্ষণের বিচার চেয়ে
দেখো প্রতিদিন কত মানুষ, জুনিয়র ডাক্তাররা প্রতিবাদ করছে,
স্লোগান তুলছে, গান গাইছে জনপথে নেমে।
দেখো আমাদের মেয়েরা রাত দখল করতে নামছে দৃপ্ত ভঙ্গিতে রাস্তায়।
ওদিকে অসুরদের প্রশ্রয়দাতা শাসক ভয় পায়,
বলে কিনা, "এক মাস হয়ে গেল, এবার উৎসবে ফিরুন।"
সামনেই তোমার আরাধনা বলে কথা।
সামনেই তোমার আরাধনা, তোমার মর্ত্যে আগমন।
প্রতিবাদী আগুনে জ্বলন্ত হৃদয়ে বেজে ওঠে আগমনী গান।
শরতের প্রকৃতি দেয় জানান— "মা আসছে, পুজো আসছে।"
কিন্তু উৎসবে ফেরার কোনো ইচ্ছে নেই।
তবু চেনা ছন্দে শহরের বাজারে লোকারণ্য,
পাড়ায় পুজোর প্রস্তুতি উদ্বোধনের অপেক্ষায়।
নতুন জামাকাপড়, জুতো কিনতে মানুষের এত উৎসাহ।
তবু মনে মনে উৎসবে ফেরার কোনো ইচ্ছে নেই।
হে অসুরদলনী, "যুদ্ধং দেহী জয়ং দেহী",
তুমি এসো দৃপ্ত ভঙ্গিতে, এসো জ্বলন্ত আগুন হয়ে,
এসো দশপ্রহরণ হাতে,
বধ করো মানুষরূপী অসুরদের আর শাসককে।
সূচনা করো নতুন পৃথিবীর, নতুন জীবনের,
যেখানে শুধু মেয়েরা নয়,
প্রতিটি মানুষ নির্ভয়ে, নিরাপত্তায় বাঁচে, উদয় ঘটে শুভ শক্তির।
তোমার আরাধনার উৎসবে
শহর ভরে উঠুক কলরবে—
"সারা শহর দিচ্ছে ডাক,
তিলোত্তমা বিচার পাক!"
(০১/১০/২০২৪)