ভক্ত কহে, "প্রভু, মোরে কী ছল ছলিলে!"
দেবতা কহিল, "মোরে দূর করি দিলে।
জগতে দরিদ্ররূপে ফিরি দয়াতরে,
গৃহহীনে গৃহ দিলে আমি থাকি ঘরে।"
— রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
(বাংলাদেশে চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতারের বিরুদ্ধে সে দেশের আনাচে কানাচে, এমনকি কলকাতাতেও হিন্দুরা প্রতিবাদ করছে। সেই প্রতিবাদের প্রসঙ্গেই এই লেখা।
* এটা কোনো নির্দিষ্ট ধর্মকে প্রচার করার জন্য নয়। আমি ধর্মীয় প্রচারে বিশ্বাস করি না।
এখানে "দেবতা" বলতে চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে বোঝানো হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার সেই দেবতাকে বঞ্চনা করেছে, ঠিক যেমন রবীন্দ্রনাথের "দেবতার বিদায়" কবিতায় গৃহহীন মানুষকে এক দেবভক্ত বঞ্চনা করেছিল।
এই "দেবতা" শব্দের আবার অন্য মানে আছে— নিভৃত প্রাণের দেবতা, যিনি ক্রমেই হারিয়ে গিয়েছেন ধর্মীয় বিভাজনের ফলে। অনেক সময়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্মও সংখ্যালঘু ধর্মকে অত্যাচার করে। তাই "শুধু রাজনীতি নয়, ধর্ম-ও কম যায় না")
দেবতা থাকেন সবার মনে, সব ধর্মে।
দেবতার প্রকাশ ঘটে মানুষের কর্মে।
দেবতার স্থান আমাদের হৃদয়-মন্দিরে।
দেবতা থাকেন আকাশ থেকে সখাত নীড়ে।
এসব বুঝতে আমার হয় না অসুবিধা।
কিন্তু এখন — দেবতার স্থান বলো কোথা?
দেবতা কি থাকেন ভারতে, বাংলাদেশে?
যদি থাকেন, তবে তিনি থাকেন কোন বেশে?
তিনি কি থাকেন সব ধর্মের মানব-হৃদয়ে?
বলো কেউ, দেবতাকে কোথায় দেখতে পাওয়া যায়?
তুমিও কি জানতে চাইছ দেবতা কোথায়?
আসলে পৃথিবী ছেড়ে আজ দেবতা বিদায়।
রাজনীতি বঞ্চনা করেছে তাকে আজ,
তাই দিকে দিকে হিন্দুরা পরেছে যুদ্ধসাজ।
শুধু রাজনীতি নয়, ধর্ম-ও কম যায় না।
দেবতার মুখ দেখে তাই লজ্জা পাচ্ছে আয়না।
মানব-ধর্ম শেষ হল, হয়ে গেল খুন,
ধর্মীয় সমাজের বুকে তাই ধরেছে ঘুণ।
এই বঞ্চনা শেষ হোক, ছড়িয়ে পড়ুক ভালবাসা।
দেবতা আবার ফিরে আসবেন— এটাই আশা।
(২৮/১১/২০২৪)
মালদা