।। ২০২৩ ।। (৯ই আগস্ট থেকে)
--------------------------

কলকাতা প্রথম দেখেছিল ragging কালচার,
যার উৎস যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়।
বাংলা বিভাগের ছাত্র, মেন হস্টেলের ছেলে
স্বপ্নদীপের অস্বাভাবিক মৃত্যুতে
"মায়ের আঁচল" ছিল খালি।
সেই মা হয়তো ভাবেনি—
ছেলেটা গ্রাম থেকে শহরে পড়তে গিয়ে
অত্যাচারিত হতে পারে।
সেই মা হয়তো ভেবেছিল—
শহরে গেলে ছেলেটা অনেক কিছু পাবে,
কিন্তু ভাবেনি—
সেখানে নির্যাতন, নিপীড়ন সুলভে পাওয়া যায়।
কলকাতা জুড়ে প্রতিবাদ—
গানে, কবিতায়, মিছিলে, জমায়েতে, স্লোগানে।
কিন্তু বিচার? ছাই!
বিচারব্যবস্থা? সব ছাই!

।। ২০২৪ ।।

৮ই আগস্ট
---------

বাংলায় শিল্প-চাকরির সুযোগের স্বপ্নদিশারী,
যার স্বপ্ন ভেস্তে দিয়ে কয়েকটা অসভ্য বর্বর লোক
এসেছে ক্ষমতায়,
সেই কমরেড বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য হয়েছেন প্রয়াত।
শহরের রাস্তায় রাস্তায়, অলিতে গলিতে
"লাল সেলাম", লাল পতাকা, সাদা পতাকা
আর সেই শববাহী গাড়ি। ফুলসজ্জা। মৃতদেহ।
কিন্তু স্বপ্ন রয়ে গেছে
স্বপ্ন সত্যি হোক কি মিথ্যে, তা কখনো মরে না।

১০ই আগস্ট থেকে
---------------

আরেক অস্বাভাবিক মৃত্যু
কলেজে নয়, খাস নামকরা হাসপাতাল—
আর জি করে।
এক মহিলা চিকিৎসক অভয়ার মৃত্যু
এক নৃশংস পুরুষের হাত ধরে—
মাঝরাতে।
(এরকম ঘটনা ঘটছে যুগ যুগ ধরে)
আবারও প্রতিবাদ, মিছিল, জমায়েত, স্লোগান
কলকাতা জুড়ে।
আবারও সেই বিচারের অপেক্ষা।
(কিন্তু বিচার এ দেশে পাওয়া যায় না)

মারা যাওয়ার আগে বুদ্ধবাবু কি ভাবতে পেরেছিলেন—
যাদের নিয়ে তিনি এত স্বপ্ন দেখতেন, এত ভাবতেন,
সেই যুব সম্প্রদায়ের ভবিষ্যৎ, স্বপ্ন
এ শহরে ধুলিসাৎ হয়ে যেতে পারে?
মৃত্যু হায়েনার মতো হানা দিতে পারে?
দরজায় কড়া নাড়তে পারে?

যে শহরে শিক্ষার সুযোগ পাওয়ার স্বপ্ন দেখে
গ্ৰামের ছেলেমেয়ে, লোকজন
কিংবা নিম্নবিত্ত পরিবার,
সেই শহরেই যদি থাকে ভয়ের আবহ, নিরাপত্তাহীনতা,
তবে কী লাভ সেখানে গিয়ে পড়ে?
আর কী লাভ এত পড়াশোনা করে?
পড়াশোনা করা মানুষের যে নৃশংস চরিত্র থাকতে পারে,
সেটা কজন বলতে পারে, ভাবতে পারে?

এই নৃশংসতা থেকে বাঁচার কি কোনো বিকল্প আছে?

আর
কলকাতায় আগস্ট মৃত্যুর মাস,
মাসটা যেন হয়ে উঠেছে ভয়াবহ।

হায় রে আমার পুরোনো শহর!
কী যে হবে তোমার, কে জানে!
তোমার মান-সম্মান নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা
মালদায় থেকে দেখতে পাচ্ছি।
তুমি "সিটি অফ জয়" নও।
এখন থেকে তুমি "সিটি অফ ভয়"।

(ভালো যে, আমি আর কলকাতায় থাকি না)


(১২/০৮/২০২৪)