নিশ্চিন্দিপুরের দরিদ্র ব্রাহ্মণ ছেলে
সেই অপু --- অপূর্ব রায়।
কল্পনাবিলাসে সে মাততো।
তার মন যেত শুধু
সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা প্রকৃতির দিকে।
সে কারোর পরোয়া না করে দেখত প্রকৃতির দৃশ্য।
অবাক হয়ে তা দেখত বিশ্ব।
বনের মধ্যে ছুটে চলা
বর্ণপরিচয়ের 'খ'এ খরগোশ,
প্রাগৈতিহাসিক কুঠির মাঠ,
গ্ৰামের বাইরে রেলের রাস্তা,
মহাভারতের মহা কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ,
সর্ব-দর্শন-সংগ্ৰহে শকুনির ডিম,
নরোত্তম দাশের কাছে থাকা প্রেমভক্তি-চন্দ্রিকা ---
এ সবই তাকে নিয়ে যেত কল্পনাজগতে।
বাস্তব জগতে আর ফিরে যেতে মন নেই।
কেউ তাকে প্রকৃতির দৃশ্য দেখায় বাধা দিলে
অভিমানে তার চোখে আসত অশ্রুজল।
প্রকৃতিমায়ের কোলে ও স্নেহে সে বেড়ে উঠত।
পড়াশোনা ফাঁকি দিয়ে ঘরের বাইরে যেত
আর প্রকৃতির টানে ঘুরে বেড়াত।
সঙ্গী তার দিদি দুর্গা।

অপুর মতো কত ছেলে আছে এই বিশ্বে,
যাদের সব কিছুতে কৌতুহল,
যারা প্রকৃতির স্নেহে লালিত,
যারা প্রকৃতিমাকে ভালবাসে প্রাণভরে।
বিভূতিভূষণ তা বলেছেন নিখুঁত ভাবে।
ওনার লেখা শুধু ছোট শিশুদের নয়,
সবাইকে নিয়ে যায় কল্পনার দেশে।
আমরা সেই দেশে পাড়ি দেওয়ার স্বপ্ন দেখি।
আমরা কাল্পনিক হতে বড় ভালবাসি।


(০২.০১.২০২৩)