বাবাসাহেব,
আপনি আমাদের চোখে শুধুই সংবিধানের জনক।
আপনার হাত ধরে যে বিশাল গ্রন্থ
গোটা দেশের কাছে হয়েছিল প্রকাশিত,
সেই গ্রন্থের মর্যাদা রক্ষা করার কথা ছিল,
দেশের শাসনব্যবস্থা, অর্থনীতি উন্নত করারও কথা।

গীতা, বাইবেল, কোরান যেমন
মানুষকে মানুষ হওয়ার, পৃথিবী দেখার পথ দেখায়,
তেমনই এই সংবিধানের
দেশের কোটি কোটি নাগরিককে আদর্শের পথ
দেখানোর কথা।
কিন্তু সেই পথ কি এখনো খোলা আছে?
সেই পথে কি দেশ চলছে?
তবে ধর্মে ধর্মে অস্পৃশ্যতা, মতবিরোধের হানাহানি,
নেতাদের মধ্যে সত্যি মিথ্যে মামলার দ্বন্দ্ব,
মানুষে মানুষে ঘৃণা, দাঙ্গা, খুনোখুনি —
এসব কেন?
দেশের সভ্যতা, সংস্কৃতি, মান সম্মান কেন তলানিতে?
দেশের ইতিহাস কেন এত রক্তাক্ত?
কেন বিপন্নতা? কেন ধ্বংসের আশঙ্কা?

আর যে গণতন্ত্রের স্বপ্ন আপনি দেখিয়েছিলেন,
আমাদের রাজ্যে তার প্রকাশ নেই। এখানে
শাসনের বিরুদ্ধে কথা বললেই গ্ৰেফতার করা হয়;
মিছিল, আন্দোলন করলেই পুলিশ-লেঠেল পাঠিয়ে
লাঠির মার খাওয়ানো হয়,
ব্যারিকেড দিয়ে বাধা দেওয়া হয়।
আর সাধারণ মানুষ —
তাদের বেঁচে থাকার মানে কী?
              স্বাধীনতার মানে কী?
             অধিকারের মানে কী?

মতপ্রকাশের অধিকার, শিক্ষা স্বাস্থ্যের অধিকার,
অস্পৃশ্যতা থেকে মুক্তি, ধর্মনিরপেক্ষতা
সংবিধানের পাতাতেই থাকে, কাজে লাগে না।
তবে কীসের এই সংবিধান? কীসের গণতন্ত্র?
আর কী-ই বা আপনার আদর্শ?
সারা দেশ আপনাকে চেনে শুধু
সংবিধানের জনক হিসেবে,
কিন্তু আজকাল সেই সংবিধানের কোনো মূল্যই নেই।
মূল্য নেই আপনার মতো মানুষের আদর্শেরও।
আমাদের গায়ে লাগে।
আপনারও হয়তো গায়ে লেগে থাকবে।


(১৩/০৪/২৪)
৩১শে চৈত্র ১৪৩০