শ্যামলী এখন সবে মাত্র সতেরো--
সদ্য কুঁড়ি ফোঁটা যৌবন তাঁর পাপড়ির মতো-
মেলে ধরেছিল ফরাসি চামড়ার শুভ্র শরীরে!
নিরালায় বিষণ্ণতার দুপুরে এক ভ্রমর এসে--
হুল ফুটিয়ে সবটুকু মধু শুষে নিয়েছিল।
পাপড়িগুলো ঝরে যাওয়ার আগেই--
আজ শ্যামলী বিয়ের সাঁজে!
জানো শ্যামলীর বিয়ের বয়স হয়নি!
তবে অনেক আগেই পাঁচ জনের কাছে--
ওর দেহ দান করা হয়ে গেছে।
তবে তোমরা কি বলবে ওকে?
চরিত্রহীনা? -- গণিকা? -- নাকি পতিতা?
কেন ও তো দ্রৌপদীও হতে পারতো?
পাঁচজনই একসঙ্গে ওকে ভালোবেসে ছিল;
তবে কেন তার বেলায় আলাদা কথা হবে?
কেন ওকে পতিতা রুপি নারী হতে হবে?
মুখ থেকে ভকভকে তরলের গন্ধ বেরানো--
পাঁচ-প্রেমিক একসঙ্গে ওর বুকের ওপর,
সেদিন একের পর এক ঝাঁপিয়ে পড়েছিল,
শুধু ভালোবাসার চিহ্নটুকু এঁকে দেওয়া জন্য!
পঁচিশটা নখের ক্ষতবিক্ষত চিহ্ন ছিল শরীরে।
রক্ত ঘামে পিচ্ছিল হয়েছিলো শ্যামলীর উরু!
বাব্বা সে কত্তো ভালবাসা পেল মেয়েটা!
হ্যাঁ গা শ্যামলী সত্যিই বড় ভাগ্যবতী বটে--
তাবাদে এমন দুর্দিনে পাঁচ প্রেমিকের ভালোবাসা!
কার কপালে জোটে বলো হে বিবেক-বাবু?
তবে পাঁচজনেরই প্রয়োজন মেটার পর--
তারা যে যার পথে চলে গেছে।
শুধু নিতম্ব চুঁইয়ে তখনও কিছু প্রেমসুধা,
গড়িয়ে পড়ছিল খোলা আকাশের নিচে,
সবুজ শোভিত ফুল শয্যার খাটে।
তারপর থেকেই শ্যামলী কেমন পাল্টে গেছে!
লজ্জার সম্ভ্রমটাও যেন খোলস ছেড়েছে।
দিনে দিনে বাড়টা ক্রমশ বেড়েই চলছিল,
শুনলাম বুড়ো বাপটাও এবার তাই--
ঠিক করেছে পাপ বিদেয় করবে!
আর তাই; -- তাই আর কি!
বিয়ের ছলে একটু দেখতে আসা।
কিন্তু ওমা, -- এ আমি কি দেখছি!
শ্যামলীর চোখেও মনে হচ্ছে জলের স্বচ্ছবিন্দু
ওভাবে আমার দিকে তাঁকিয়ে আছে কেন?
কোমল স্পর্শি টানাটানা চোখদুটো--
কি যেন বলতে চাইলো মনে হচ্ছে!
এই তো বিবেক-বাবু আপনার সমস্যা!
আরে মশাই ছাড়ুন তো--
একটা বেশ্যার জন্য কদর করা।
চোখ না দেখে অন্যকিছু দেখুন না মশাই--
মালীর বাগান তো সামনেই সাজানো।
ওই যে হরিণী গলাটা দেখুন--
তাতে ওই বরমালাটা গলার ফাঁস হয়ে,
কেমন সুন্দর ঝুলছে বলুন তো!
আর ওটা কি?
কী যেন খাচ্ছে মনে হচ্ছে--
হ্যাঁ, - ওটাই তো সেই রাটকিল অমৃত!
আচ্ছা তাহলে কি বলবেন শ্যামলীকে?
দ্রৌপদী, গণিকা নাকি পতিতা?
আর এই সমাজকেই বা কি বলবেন?
স্বর্গ, নরক নাকি পতিতালয়?