দিদিমণি, দিদিমণি, আসবে যখন এসো!
দিদিমণি, তুমি কী আর আমায় ভালোবাসো!
দিদিমণি, মোহনবাঁশি তমাল তরুমূলে--
বাজিয়ে ছিলেম, তুমি তখন মালতী ইস্কুলে।
ডেস্কে বসেই অঙ্ক কষো, - ছোট্ট সেই ক্লাস ঘরে।
খবর নিও দিদিমণির বর, - আসলেই কি করে !
তুমি তখন নবম শ্রেণী, - তুমি তখন শাড়ি--
আলাপ হলো তোমার আমার সুলেখাদের বাড়ি।

শহর থেকে ঘুরতে এলেম লেখা পড়ায় ভালো!
কে বলেছে দিদিমণি তুমি ভীষণ কালো?
আমায় দেখে এক দৌড়ে পালিয়ে গেলে ঘরে--
বাবা আমার শহর ঘুরে আজও ফেরি করে!
কুঞ্জে অলি গুঞ্জে তবু, ফুটেছিল তো মঞ্জুরী!
গ্রাম্য সরলতায় বেনীমাধবের মন গিয়েছে চুরি!
তুমি তখন নবম শ্রেণী, - বয়স বেড়ে ষোলো--
ব্রিজের ধারে লুকিয়ে যেদিন তোমায় দেখা হলো!

দিদিমণি, দিদিমণি, এতোদিনের পরে--
সত্যি বলছি এখন কেন আমায় মনে ধরে?
প্রেমিকা নেই বলবো কাকে সেসব দিনের কথা
এক ঝলকে ভেবেই নিলে! জীবন আমার বৃথা!
দেখলে কাকে পাশে তুমি, অপূর্ব কোন আলো
আনেক হয়েছে স্বীকার, আমার জীবন কালো
প্রার্থনা কাদের জন্য, কতটুকুই ভালো হলো।
চোখ জুড়িয়ে অভিমানে - তবু থেকো ভালো।

এখন রাতে ঘুমাতে যায়, ঘুম আসেনা চোখে!
চা-দোকানে বিছানা পাতা, - মশার কামড় নাকে!
লজ্জা হয় নিজেই দেখে! - তুমি একতলা ঘরে!
জোয়াল কাঁধে দুলাল, প্রেম বিলাসিতা সংসারে!
আজ জুটে, কাল জুটাবো - কালের ঘরেই শনি!
শিক্ষিত চা-ওয়ালা, - তুমি যে সেলাই দিদিমণি!
কেন আগুন, দিদিমণি - আগুন জ্বলবে কেন?
নষ্ট মেয়েও মেয়ে হয়, - তবে আত্মহুতি কেন?

বেণীমাধব, বেণীমাধব, মনেই যখন ধরে--
চা দোকান সোনারপুরে, আসতে পারো ফিরে!
দিদিমণি দিদিমণি এতোদিনের পরে--
সাধ জেগেছে সুযোগ পেলে যাব মালতীপুরে!
জানিনা তুমি থাকবে কিনা আমার পথ চেয়ে-
অভিমানের পালা সেরে,  তোমার সিঁথি ছুঁয়ে!
রাজপুত্তুর এসেছে কিনা, -- তোমার হৃদয় জুড়ে
আসবো ঠিকই সময় করে পাষাণ বেদী ফুঁড়ে!