রাতের আঁধারে একটি মেয়ে ধর্ষিত হয়েছিল,
হাসপাতালে যখন তাঁকে নিয়ে আসা হল--
তাঁর নাম জানতো না কেউ! - শুধু জানতো,
"মেয়েটিকে রীতিমতো ধর্ষণ করা হয়েছে।"
নার্স থেকে ডাক্টার - কেরানি থেকে ঝাড়ুদার-
সবাই জানলো, হাসপাতালের এমার্জেন্সিতে,
আজ আর একটা রেপড কেস এসেছে!
ডাক্তারবাবু এসে নার্সকে জিগ্যেস করলেন--
'রেপড কেসটা কত নম্বর বেডে আছে?'
মা-বাবা আত্মীয়রা যখন ছুটে এলেন,
তাদের উদ্দেশ্যেও জিগ্যেস করা হল--
'আপনারা কি রেপড কেসটির বাড়ির লোক?'
চমকে ওঠার সময়টুকুও বোধহয় পেলেন না।
ওই রেপড কেসের বাড়ির লোকজন।
আচ্ছা মেয়েটির নাম যেন কি ছিল?
ক্ষণিক পরে পুলিশ এলেন তবে সঙ্গে--
গুটিকয়েক সাংবাদিক আর মিডিয়ার দল।
সবাই এসেছে রেপড কেসটি কভার করতে।
ডাক্তারের অনুমতিতে দুজন পুলিশ ঢুকে--
মেয়েটির বয়ান নিয়ে বেরিয়ে গেলেন।
খুব ভালোভাবে কাগজে'ও লিখে নিলেন--
মেয়েটির শরীরের আঘাতের দাগগুলি।
ঠিক কোথায়, - কতখানি গভীর ছিল--
কিন্তূ মনের দাগগুলি শুধু বাদ পড়ে গেল!
মেয়েটির নাম যেন কি ছিল?
পরের দিন সকালে খবরের কাগজ গুলোয়--
প্রথম পাতায় অবশ্য স্থান পেল খবরটি।
সকলে খুব মনোযোগ সহকারে পড়লেন--
রেপড হওয়া সেই মেয়েটির খবর।
অনেকে চাইলো রেপিস্টরা যেন উপযুক্ত শাস্তি পায়।
মেয়েটির বাবা মা'ও পেলেন কত শত সহানুভূতি
তারা যে রেপড হওয়া মেয়ের বাবা-মা!
পাড়ায় তো এখন যে কোনো লোক--
একডাকেই যেন বলে দিতে পারে,
রেপড কেসের মেয়েটির বাড়ি কোনটা?
আচ্ছা ওই মেয়েটির নাম যেন কি ছিল?
এরপর কেটে গেছে বেশ কিছু বছর--
ধরা পড়েছে নরকের সব কীটগুলো।
মনের জোর ছিল রেপড হওয়া মেয়েটির!
আদালতে শনাক্ত করা হল সবকটাকে--
তবে উকিলের জেরায় বারবার বলে গেলো--
পরপর ঘটে চলা অশ্লীল সেই সব ঘটনাগুলি।
আবারও বলতে হল তাকে ঠিক--
কীভাবে? - কতবার ধর্ষিত হতে হয়েছিল!
আচ্ছা কেউ কি বলতে পারেন--
অই মেয়েটি ঠিক কতবার রেপড হল?
শুধু কি সেই আঁধার রাতেই?
নাকি আদালতেও তাঁকে ধর্ষিত হয়ে ছিল?
শুধু কি শারীরিক নাকি মানষিক'?
কোন দিকটা বেশি নির্মম ও পশবিক ছিল?
আছে কি কোনো উত্তর? - আছে তো বলুন?
আচ্ছা মেয়েটির নামটা যেন ঠিক কি ছিল?
জানি আজ আর কারও মনে নেই--
তবে সেদিনের রেপড কেসটা খাসা ছিল!