যদি পারো,- তবে তুমি-
একটিবার ফিরে এসো নন্দিনী!
দূরের ঐ সুনীল আকাশটাকে-
আমার বাড়ির ছাঁদ বানাবো।
টকটকে ঐ লাল সূর্যটাকে-
দেওয়ালে কুলুঙ্গীর এক কোণে-
মাটির প্রদীপে জ্বালিয়ে রাখবো!
নদীটাকে সংসারের নলকূপ বানাবো!
ধূসর মাটিটাকে শীতলপাটি করে-
নন্দিনী তোমায় বসতে দেবো!
তুমি মাথা রাখতে চাইলে-
চিতল এই সু-পুরুষ বুকটাকে-
আমি নাহয় বালিশের মতো-
আলগোছে তোমায় এলিয়ে দেবো।
অবসন্ন চোখে আমার বুকে,
তুমি নাহয় মাথা রেখেই-
অসম্ভব শান্তিতে ঘুমিয়ে পড়বে।
আমনিশার মতো ঘন কালো-
এলোকেশী চুলে চাঁদনীর আলো!
বিলি কেটে একাকিত্বের ইজেলে,
তুমি কী অভিমানেই থাকবে?
যদি পারো, - তবে তুমি-
আবারও ফিরে এসো নন্দিনী!
কিছু দিতে না পারি!
অন্ততপক্ষে এইটুকু তো পারবো!
এক মুষ্টি পান্তা ভাতে-
একটুকরো শুকনো লঙ্কার সঙ্গে-
ঝাঁঝলো একটা ছাঁচ পেঁয়াজ!
আর - এক চিমটি নুন।
পরিধান করার জন্য তোমাকে-
ঢাকায় শাড়ি না দিলেও!
বেহাব্রু ঢাকতে মোটা বস্ত্রটুকু-
আমি তো দিতে পারবো!
ফুঁটো চালের ফাঁক দিয়ে--
পূর্ণিমায় ঝলমলে আলোরা এসে,
রোজ রাতে তোমার শরীরে--
আলতো স্পর্শে ছুঁয়ে যাবে।
আঁধারে শতশত জোনাকী পোকা-
তোমার সেই ছোট্র সংসারটা-
আলোয় আলোকিত করে রাখবে।
ঝিঁঝিঁ পোকার দল তোমাকে-
নিঃশৃত সুরে, - বিরহ প্রেমে-
নিত্য দিন গান শোনাবে!
তীক্ষ্ম আলপিনের মতো সূঁচালো-
মশকির প্রহরী দায়িত্ব সামলানো!
তবুও তুমি ফিরলে না!
আর ফিরতেও চাইলে না!
যদি পারো, - তবে তুমি-
একটিবার ফিরে এসো নন্দিনী!
আমি তো ছিলাম-- আছি!
আর আগামীতেও থাকবো আমি!
নন্দিনী শুধু তোমারই প্রতীক্ষায়!
আজ প্রতিটা মূহুর্ত হৃদয়-
শুধু যে তোমাকেই খোঁজে!
অশ্রুসিক্ত নয়ন সরসীও যেন-
বেলা-অবেলায় আছিলায় এই হেন-
শুধু তোমাকেই দেখতে চাই!
গুমনামী মন সেও যে-
শুধু তোমারই কথা ভাবে!
কানে কানে প্রতিধ্বনিত হয়-
তোমার সেই সুমিষ্ঠ কণ্ঠধ্বনি।
শুধু একটিবার আজ তুমি--
নন্দিনী! - খুব করে ভালোবেসো!
শুধু একটিবার ফিরে এসো--
কালের ক্ষয়ে বহুযুগ আমি-
শুধুই প্রতীক্ষার প্রহর গুনছি!
এই বুঝি প্রতীক্ষার প্রহর-
শেষ হবে-- আর, - আর -
তুমি শুধুইl আমার হয়ে-
ফিরবে এই নষ্ট নীড়ে!