আমৃত্যু মানুষ বেঁচে থাকে প্রতীক্ষায়-
নিছক কিছু চকিত সুদিনের অপেক্ষায়!
দুর্ভাবনাহীন ক্ষণিক কাল ঘুমের অপেক্ষায়-
অবসন্ন ক্লান্ত শরীরেই মানুষের কালক্ষয়!
আজন্ম মানুষ বেঁচে থাকে অপেক্ষায়-
কোনো এক ভিন্ন মানুষের প্রতীক্ষায়!
শুধু এক চিমটি, - সুখের নেশায়--
মানুষ বাঁচে, স্বাভাবিক মৃত্যুর অপেক্ষায়।
মরণ হলে তো মানুষের অপেক্ষারা--
ক্রমশঃ হয়ে ওঠে বানভাসি কবিতা।
জীবনের দীর্ঘ প্রতীক্ষিত সেই প্রতীক্ষারা,
হয়ে ওঠে নবান্নের ভোরে ডাকা--
ভেজা পাঁচিলে বসে থাকা দাঁড়কাক!
সংঘর্ষের লড়াই নেয়ামতে বেঁচে থাক।
মানুষ যে বড্ড নিঃসঙ্গ প্রাণী।
সুযোগে, অবসরে, খোঁজে বিদূষী রমণী!
অথচ অর্ধেক পৃষ্ঠার সুইসাইড নোটেই--
সেইতো মানুষ কতজনের নামে বেনামেই--
কত কিছু লিখেও রেখে যায়।
সুইসাইডের কারণ যদি জানতে চাই--
শেষমেষ আবারও কাঠগড়ায় উঠে আসে-
মানুষের সেই চির অম্লান অসুখে--
মানুষের'ই একান্ত ব্যক্তিগত কিছু নিঃসঙ্গতা।
অন্ত-অলিন্দে গচ্ছিত কিছু চরম দূর্বলতা।
একদিন যে নিঃসঙ্গতার জন্ম দিয়েছিলে-
নিজের প্রতি নিজের আলতো অভিমানে।
আজন্ম'ই মানুষ বড্ড বেশি অভিমানী।
যতটুকু মানুষকে চিনি বা জানি!
হৃদয়ে তাঁর অভিমান জমাতে জমাতে-
একসময় প্রিয় কথাদের হারিয়ে ফেলে!
কেমন যেন অন্ধ-বোবা হয়ে যায়।
যদি একবার অভিমানের শিখরে পৌঁছায়-
সে সবকিছু এক্কেবারেই ভুলে যায়!
অলিখিত সুখ যেন খাবি খায়--
ব্যথাদেরও তো জন্ম-তারিখ ভুলে যায়।
দুর্ভাবনাহীন ক্ষণিক কাল ঘুমের অপেক্ষায়-
মধ্যরাতের লুকানো কান্নারা এক লহমায়-
নিশাচর পাখি হয়ে উড়ে যায়।
অনন্তকাল মানুষ তবু বাঁচে অপেক্ষায়!
কোনো এক ভিন্ন মানুষের প্রতীক্ষায়!
জাহাজীদের মতন অচেনা তীরে বসে--
একাকী নির্জনে আনমনে ক্ষয়িষ্ণু সুখে;
মানুষ ভিড়াবার গান গেয়ে যায়।
কেউ কেউতো আবার ডাইরির পাতায়--
অভাবের যত জমানো কথা লেখায়-
নিরুদ্দেশ হওয়ার বিজ্ঞাপন ছেপে যায়।
অভিমানের আড়ালে কিছু মানুষ স্বভাবেও-
মরে যায় প্রিয় মানুষটির অভাবেও।
আজন্ম মানুষ যেন উপভোগকেই ভালোবাসে!
ওইতো- ওই শরীরটুকুই যন্তে রাখে--
মনের কোনো খবর রাখবার সময়--
মানুষের কাছে আজও বেশ বিভীষিকাময়!